বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫ এর বেশী হলেও বাংলাদেশ এখনও এলডিসিভূক্ত দেশের তালিকা থেকে বের হতে পারেনি। অথচ বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ শ্রীলংকা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। এর কারণ শ্রীলংকা মানব সম্পদ উন্নয়নে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা নিরবিচ্ছিন্ন বা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে । বাংলাদেশ যদি ৬ শতাংশ কিংবা তার বেশি: হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পরে তাহলে ২০২০ সালে নাগাদ জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়ে ১২০০ ডলারে ছাড়িয়ে যাবে । কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটা দুঃসাধ্য হলেও অসম্ভব নয় । উদাহরণস্বরূপ বলা যায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন তাদের ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির হার ধরে রেখেছে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে । সে কারণেই চীন তার বিশাল জনগোষ্ঠীকে নিয়েও মাথাপিছু আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশও তার বিশাল জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় নিয়ে মাথাপিছু আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে চীনকে মডেল হিসাবে ধরে চীন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। তবে চীনের মতো বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার বাংলাদেশের নেই । তাই বাংলাদেশকে আভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের পাশাপাশি বাহ্যিক বা বৈদেশিক সম্পদের উপরও নির্ভর করতে হবে । বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের বাহ্যিক নির্ভরতাকে চারভাগে ভাগ করা যায় । যথাঃ
১। বৈদেশিক সাহায্য;
২। বৈদেশিক বাণিজ্য;
৩। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এবং
৪ । বৈদেশিক বিনিয়োগ ।
বাংলাদেশে যদি ২০২০ সালের মধ্যে এলডিসি এর তালিকা থেকে বের হতে চায় তাহলে ২০২০ সাল পর্যন্ত *অবিচ্ছিন্নভাবে শতকরা ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে
চাইলে বিদেশ নির্ভরতা/বাহ্যিক নির্ভরতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিম্নোক্ত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে পারে ।
১। বৈদেশিক সাহায্য : বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ সঞ্চয় কম, সে তুলনায় বিনিয়োগ চাহিদা অনেক বেশি। সঞ্চয় ও বিনিয়োগের ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশকে বিদেশী সাহায্যের উপর
নির্ভরশীল থাকতে হবে আরও কয়েক বছর। বর্তমান সময়ের হিসাব অনুসারে বাংলাদেশকে প্রতি বৎসর বাহ্যিক উৎস থেকে প্রায় ১৫০ কোটি ডলারের মত বিদেশী সাহায্যের উপর নির্ভর করতে হবে ।
২। বৈদেশিক বাণিজ্য ৪৮ শতাংশ হারে অর্থৈৈনতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে চাইলে বাংলাদেশকে রপ্তানী বাণিজ্য সম্প্রসারণের ব্যাপারে বেশী মনোযোগী হতে হবে। বিশেষ করে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বৎসর রপ্তানী প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হারে অর্জন করতে হবে। রপ্তানী আয় বৃদ্ধির হার আগামী বছর লোতে আরও ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ।
৩। রেমিট্যান্স ঃ ১৯৯১ সালের পর থেকে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বিশেষ করে ২৩টি দেশ থেকে বাংলাদেশে অব্যাহভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ আসছে। তবে বিপুল অংকের যে রেমিট্যান্স বাংলাদেশে প্রতি বছর আসছে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ না হবার কারণে এই অর্থ অলসভাবে পড়ে থাকে । যদি এই বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা না যায় তাহলে বিদেশী সাহায্যসহ বাহ্যিক নির্ভরতার অন্যান্য সূচকের উপর চাপ বৃদ্ধি পাবে ।
৪। বিদেশী বিনিয়োগ : বাংলাদেশ সরকারকে ধারাবাহিকভাবে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে। রপ্তানী বাণিজ্য সম্প্রসারণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে যেন নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানো যায় । অন্যথায় বিনিয়োগের ক্ষেত্র ফুরিয়ে যাবে এবং এক সময় বিদেশী বিনিয়োগ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে । কাজেই দেশে নতুন নতুন বিনিয়োগের খাত তৈরী করতে হবে এবং বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে ।
উপরিউক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, বাংলাদেশ যদি বৈদেশিক খাত থেকে সম্পদ আহরণ করতে পরে এবং সেই সাথে মানব সম্পদ উন্নয়ন ঘটাতে পারে তাহলে আগামী ২০২০ সাল নাগাদ এলডিসি (LDC) তালিকা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবে । এমনকি ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে ।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত