বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কার্যক্রম ব্যখ্যা কর ।

সমাজকল্যাণ কার্যক্রম Social Welfare Activities
দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি বহুলাংশে নির্ভর করে দুঃস্থ, দরিদ্র ও অসহায় এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সার্বিক অবস্থার উন্নয়নের ওপর। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধী, এতিম, দুঃস্থ, দরিদ্র ও অসহায় এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন, মানব সম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় অপরাধপ্রবণ কিশোরদের সংশোধন, সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের পুনর্বাসন, দুঃস্থ ও অসহায় ছেলে-মেয়েদের লালনপালন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ পুনর্বাসন, পরিত্যক্ত নবজাতক শিশুদের লালনপালন, ভবঘুরে পুনর্বাসন, ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান, নিরাপদ আবাসনসহ বহুবিধ কার্যক্রম সমগ্র দেশব্যাপী পরিচালনা করছে।
কল্যাণ ও সেবামূলক কার্যক্রম Welfare and Service Delivery Programme
কল্যাণ ও সেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে হাসপাতাল সমাজসেবা/চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম, সমন্বিত অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম, দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়, ব্রেইল প্রেস, প্লাস্টিক সামগ্রী উৎপাদন কেন্দ্র, মিনারেল ওয়াটার প্লান্ট ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র অন্যতম । গরীব ও অসহায় রোগীদের সেবাদানের জন্য হাসপাতাল ও সমাজসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০১২-১৩ অর্থবছরে মোট ৩,৮৬,০২৯ জন গরীব রোগীকে ৯১টি ইউনিটের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা, মনস্তাত্ত্বিক ও চিকিৎসা সুযোগ প্রদান করা হয়েছে । ২০১৩-১৪ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতাল সমাজ সেবা কার্যক্রম থেকে উপকৃত সংখ্যা ২,৬৭,৮০৭জন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের নিজস্ব পরিবেশে এবং স্থানীয় শিক্ষালয়ে চক্ষুম্মান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমন্বিত শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে ৬৪টি জেলা শহরে সমন্বিত অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সামাজিক অবক্ষয় রোধ কার্যক্রম Addressing the Social Disintegration Programme.
অপরাধপ্রবণ কিশোর-কিশোরীদের চরিত্র সংশোধনপূর্বক সমাজে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। শিশু আইন, ১৯৭৪, শিশু বিধিমালা, ১৯৭৬ এবং জাতীয় শিশু নীতি ২০১১ এর ভিত্তিতে কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তর কাজ করে আসছে। এ যাবত তিনটি কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রের মাধ্যমে উপকারভোগীর সংখ্যা ১৮,৩০০ জন। প্রথম অপরাধ ও লঘু অপরাধে দন্ডিত অথবা বিচারাধীন অপরাধীদের জন্য প্রবেশন ও আফটার কেয়ার সার্ভিসেস এর মাধ্যমে পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে যার মাধ্যমে এ পর্যন্ত উপকৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ২০০ জন ও ৮৯৮ জন। সমাজসেবা অধিদপ্তর ভবঘুরেদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের জন্য ৬টি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র পরিচালনা করছে। এছাড়া, আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু-কিশোরী মহিলাদের কারাগারের পরিবেশ হতে ভিন্ন পরিবেশে রাখার জন্য দেশে ৬টি মহিলা ও শিশু-কিশোরীদের নিরাপদ
শ্রম ও কর্মসংস্থান Labour and Employment
উতম প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম একটি দ্রুত বিকাশশীল অর্থনীতির ভিত্তি রচনার লক্ষ্যে প্রয়োজন শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক বজায় রেখে উৎপাদনমুখী কর্মসংস্থান সৃ মধ্য भিচ দেশে অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে আধাদক্ষ ও দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দেশের শ্রম সেক্টরে সুষ্ঠু শ্রম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এবং শিল্প ও কারখানাসমূহে উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা, বিভিন্ন শিল্প এলাকায় শ্রম কল্যাণমূলক কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা, শ্রম সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ বাস্তবায়ন, শ্রম আদালতের মাধ্যমে শ্রম ক্ষেত্রে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং শ্রমিকদের জন্য নূন্যতম মজুরী নির্ধারণ। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। এছাড়া, শ্রমজীবি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, যুব সমাজে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জাতীয় শ্রমনীতির পুনঃমূল্যায়ন ও সংশোধন, নূন্যতম মজুরী পুনঃনির্ধারণ, শিশু শ্রম নিরসন বিষয়েও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য দেশের বিপুল সংখ্যক বেকার জনগোষ্ঠীকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে মানব সম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে দেশের ২৬টি জেলায় ৩২৫.৭৭ কোটি টাকা বায়ে ৪টি প্রকল্পের মাধ্যমে ২৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (মহিলাদের জন্য ৬টিসহ) স্থাপন করা হয়েছে। এ সকল কেন্দ্রে ১৯টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে এবং প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থানের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দেশে মানব সম্পদের দক্ষতার উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে 'জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি ২০১১' প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ নীতি বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন কৌশলের ক্ষেত্রে দিক নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নের সকল উপাদান ও সংশ্লিষ্ট সকল অংশীদারের আরো উন্নত সমন্বয় নিশ্চিত করবে।
অর্থ বরাদ্দ
২০১৩-১৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত মন্ত্রণালয়ে ৫টি প্রকল্পের অনুকূলে সর্বমোট ১২৭.১১ কোটি টাকা টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
নিপসম NIPSOM
বাংলাদেশের একটি জাতীয় জনস্বাস্থ্য (Public health) বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৪ সালে ঢাকার মহাখালীতে প্রতিষ্ঠান । এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে চিকিৎসা সেবার বিভিন্ন বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান করা। ১৯৯০ সালে এটি ইনস্টিটিউট স্কুল অব পাবলিক হেলথ এসোসিয়েশন এবং এশিয়া প্যাসিফিক কনসোর্টিয়াম ফর পাবলিক হেলথ এর সদস্য হয়। ১৯৯৯ সাল থেকে NIPSOM বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব মেডিকেল এন্ড সোশ্যাল সায়েন্সের এর অধিভূক্ত হয়। ২০০০ সাল পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন শাখায় প্রায় ১৪০০ চিকিৎসক স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেছে এবং প্রায় অব্যাহত রাখার জন্য শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বিশেষ বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। বৃত্তিপ্রাপ্তদেরকে এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরে ৪০০ টাকা এবং মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা হারে বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে । সংযোগ ঘণ্টা বৃদ্ধি
ইতোপূর্বে ১ম ও ২য় শ্রেণীর জন্য বাৎসরিক সংযোগ সময় ৫৯৫ ঘণ্টা এবং ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণীর জন্য ৮৩৩ ঘন্টা ছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে প্রায় ৪ হাজার দুই শিফটের বিদ্যালয়কে এক শিফটে রূপান্তরিত করার ফলে ১ম- ২য় শ্রেণী এবং ৩য় ও ৫ম শ্রেণীর বেলায় ঐ সংযোগ ঘণ্টা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮৯৩ ঘণ্টা এবং ১৪৮৮ ঘণ্টা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপবৃত্তি
দরিদ্র পরিবারের পিতামাতাগণ তাঁদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে না পাঠিয়ে উপার্জনের জন্য বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করেন অথবা পিতামাতার পেশায় সহযোগী হিসাবে নিয়োজিত রাখেন। এর ফলে বহু শিশু প্রাথমিক শিক্ষার পাঁচ বছর মেয়াদি চক্র শেষ না করেই বিদ্যালয় ত্যাগ করে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ৫,৬৮৭.২৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি শীর্ষক একটি প্রকল্পের ২য় পর্যায় (২০০৮-১৫) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রায় ৪৮.১৬ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে প্রকল্পের নীতিমালার আওতায় দরিদ্র পরিবারের এক সন্তান বিদ্যালয়ে প্রেরণের জন্য মাসিক ১০০ টাকা এবং একাধিক সন্তানের জন্য মাসিক ১২৫ টাকা হারে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। সম্প্রতি উপবৃত্তি প্রাপ্তির আওতা ৪০ শতাংশ হতে চাহিদা ভিত্তিক বৃদ্ধি করায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৭৮.১৭ লক্ষে উন্নীত হয়েছে । বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ
প্রতিবছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ অব্যাহত রয়েছে । বছরের শুরুতেই যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক পৌছে সে লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে । বিগত বছরে ৫০ শতাংশ নতুন এবং ৫০ শতাংশ পুরনো বই ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দেয়া হয়েছে। ২০১০ সাল হতে সকল শ্রেণীতে ১০০ শতাংশ নতুন বই প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে ১০ কোটি ৭৮ লক্ষ, ২০১৪ সালে ১১ কোটি ৬০ লক্ষ পাঠ্যপুস্তক এবং ২০১৫ শিক্ষাবর্ষে ১১ কোটি ৪৩ লক্ষ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে । আগামীতে ১০০ ভাগ নতুন বই বিতরণ অব্যাহত থাকবে ।
শিক্ষক নিয়োগ
মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে ও সৃষ্ট পদে শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে ৬০ শতাংশ শিক্ষিকা নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার আনুপাতিক হার ৬৪.২ বৃদ্ধি পাচ্ছে । প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি-২ এর আওতায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে রাজস্ব খাতে ৫৪১৪ জন সহকারী শিক্ষক পদে মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮২৬ জন প্রধান শিক্ষক, ১০,৬৪৫ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ চলমান আছে এবং রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও প্রায় ৯,২৬১ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম ধাপে ১,৫০০ শিক্ষক নিয়োগ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৭,৫০০ জন সহকারি শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
স্কুল বহির্ভূত ও কর্মজীবী শিশুদের কার্যক্রম
সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে দেশের সুবিধাবঞ্চিত, স্কুল বহির্ভূত, ঝরে পড়া এবং শহরের কর্মজীবি দরিদ্র শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে সরকার বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে । রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন প্রকল্প এবং শহরের কর্মজীবী শিশুদের জন্য মৌলিক শিক্ষা প্রকল্প (২য় পর্যায়) তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য । দেশের নির্বাচিত ১৪৮টি উপজেলায় ১,১৪০.২৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ৭.১৫ লক্ষ শিশু ২০০৪ হতে ২০১৩ সাল পর্যন্ত শিক্ষার সুযোগ পাবে । ইতোমধ্যে নির্বাচিত ৯০টি উপজেলায় প্রায় ২২.৫ হাজার শিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যাতে প্রায় ৭.৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রী শিক্ষার সুযোগ পাবে। দেশের ৬টি বিভাগীয় শহরের কর্মজীবী শিশু ও কিশোর কিশোরীদের উন্নতর জীবন অনুসন্ধানে শিক্ষা, নিরাপত্তা ও উন্নয়নমূলক কার্মকান্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ইউনিসেফ এর সহায়তার ৩০৩.৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের কর্মজীবী শিশুদের জন্য মৌলিক শিক্ষা প্রকল্প (২য় পর্যায়) বাস্তবায়িত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ৪টি ধাপে মোট ৬,৬৪৬ শিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ১.৬৬ লক্ষ শিক্ষার্থীকে মৌলিক শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম চলছে। এছাড়াও ১৯,১৩০ শিক্ষার্থীকে জীবনমুখী দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে ।
স্বাস্থ্যখাত উন্নয়ন
Health Sector Development

সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। এ কারণেই সরকারের উন্নয়ন কার্মকান্ডের মধ্যে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয় । সুস্বাস্থ্যের অধিকারী শিক্ষিত জনগোষ্ঠী দেশের জীবনমান উন্নয়নের, দারিদ্র্য বিমোচনে এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন এজেন্ডার মূল অঙ্গীকার হচ্ছে মানব কল্যাণ। সরকার এ অঙ্গীকার অনুযায়ী বিভিন্ন কর্মসূচির দ্বারা সুবিধা বঞ্চিত ও দরিদ্র জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে নিরন্তন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে এ খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ১৯৬৫ সাল হতে সরকারি পর্যায়ে পরিবার কল্যাণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করার হার সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময়ের ৫৪ শতাংশ হতে ৬১ শতাংশ (BDHS-2011) এ উন্নীত হয়েছে। মহিলা প্রতি মোট প্রজনন হার ১৯৭১-৭৫ এ ৬.৩ হতে ২০১১ এ ২.৩ এ নেমে এসেছে (BDHS-2011)। সম্প্রতি Maternal Mortality and Health Care Survey - 2011 এর রিপোর্টে দেখা গেছে বাংলাদেশে মাতৃ মৃত্যুহার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ২০০১ সালে ৩.২ থেকে ২০১১ সালে ২.০৯-এ নেমে এসেছে। ১৯৯১ সালে কম ওজনের প্রায় ৬৬ শতাংশ শিশু জন্ম গ্রহণ করত যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৩.৬ এ (BDHS-2011)। ২০০৪ সালে দক্ষ ধাত্রী দ্বারা প্রসবের হার ছিল ১৬ শতাংশ যা বর্তমানে ৩২ শতাংশ (BDHS-2011)। উল্লিখিত সাফল্য সত্ত্বেও অধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধকল্পে এবং পরিবেশ অনুকূল ও টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে International Conference on Population and Development (ICPD), Poverty Reduction Strategy (PRS) Millennium Development Goals (MDGs) এর আলোকে জাতীয় জনসংখ্যা নীতির খসড়া প্রণীত হয়েছে । এছাড়া, ইতোমধ্যে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকার প্রত্যেক নাগরিকের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ ও চিকিৎসা সেবার আধুনিকায়ন ও প্রসারের ক্ষেত্রে বিগত এক দশক যাবৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে । যার ফলে প্রজনন হার ও মৃত্যু হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ নবজাত শিশু ও মাতৃ-মৃত্যু হার হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। এর ফলে এমডিজি-৪ অর্জনে সন্তোষজনক অগ্রগতির জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশ পুরস্কৃত হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে সরকারের উদ্যোগ ও সাফল্যে জাতিসংঘের নারী ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক সাউথ-সাউথ তথ্য প্রযুক্তি স্বীকৃতি প্রদান করা হয় । সারণিতে ২০০৫ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য সূচকসমূহের প্রবণতা দেখানো হলো ।
গরীব রোগীদের জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি পর্যায়ে পাইলট হিসাবে স্বাস্থ্য বীমা চালুর বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।
স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা এবং ই-হেলথ কর্মসূচি
১। মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি সরকারি হাতপাতালে (মোট ৪৮২টি হাসপাতাল) মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্য সেবা চালু করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণ এসব মোবাইলে ফোন করে হাসপাতালে না এসেই বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পেতে পারে ।
২। প্রতিটি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে আসা জনগণ সেবা না পেলে সে বিষয়ে অভিযোগ জানাতে বা সেবার মান বাড়ানোর পরামর্শ দিতে এসএমএস ভিত্তিক কমপ্লেইন/সাজেশন বক্স স্থাপন করা হয়েছে। অভিযোগ বা পরামর্শ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেন্দ্রে পৌঁছে এবং সেখান থেকে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ হতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এর নিকট প্রেরিত হয় ।
৩। সর্বনিম্ন উপজেলা পর্যন্ত দেশের প্রায় ৮০০টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে । HPNSDP-এর আওতায় কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে ।
৪। বিভিন্ন পর্যায়ে ৮টি হাসপাতালে উন্নত কোয়ালিটির ভিডিও টেলিমেডিসিন সুবিধা স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে রোগীরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারছে। প্রতিটি উপজেলা এবং জেলা হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা প্রদান করা হয়েছে । এগুলো টেলিমেডিসিন এর কাজে লাগানো হচ্ছে ।
৫। মিনি ল্যাপটপ হবে ডিজিটাল ডাক্তার, এই ধারণাকে সামনে রেখে কমিউনিটি ক্লিনিকে আহত রোগীদের টেলি মেডিসিন সেবা প্রদান, গ্রামীণ জনগণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য ভান্ডার আপডেট, জনগণকে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদানসহ স্বাস্থ্য জনশক্তির প্রশিক্ষণ, ই-মেইল ইন্টারনেটের ব্যবহারের জন্য ১৩,৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে HPNSDP কর্মসূচি হতে পর্যায়ক্রমে ওয়ে ক্যামেরাযুক্ত মিনি ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রদানের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে ।
৬। জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি, ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল সপ্তাহ, মায়ের দুধের পক্ষে প্রচারণার কর্মসূচিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে এসএমএস এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা প্রেরণ করা হয় । গর্ভবতী মায়েরা এসএমএস এর মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ পেতে পারেন। গত তিন বছরে প্রায় অর্ধ লক্ষ জনবলকে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে ।
পুষ্টি
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের যে চ্যালেঞ্জ তার মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা-১, ৪ এবং ৫ প্রত্যক্ষভাবে পুষ্টির সাথে সম্পৃক্ত । এ সকল চ্যালেঞ্জ অর্জনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসেস (NNS) সারাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়ায় পুষ্টিসেবা প্রদান করছে। দৈহিক পুষ্টি আহরণের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পরিচর্যা, খাদ্যাভাস পরিবর্তনসহ বুদ্ধিবৃত্তি ও মানসিক পুষ্টি বিকাশের মাধ্যমে সর্বপর্যায়ে বিজ্ঞানসম্মত পুষ্টিসমৃদ্ধ জীবন প্রণালী প্রবর্তনের জন্য জনসাধারণের সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা এর মূল লক্ষ্য । এই লক্ষ্য পূরণের জন্য অপুষ্টি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কার্যক্রমকে সহায়তা দিয়ে অদূর ভবিষ্যতে দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানো এবং সার্বিকভাবে দেশের


আর্থসামাজিক অবস্থার টেকসই উন্নয়ন সাধনের জন্য কাজ চলছে। পুষ্টি সমস্যা নিরসনকল্পে বর্তমানে NNS কে স্বাস্থ্য খাতের মূল স্রোতধারার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। NNS এর মাধ্যমে দেশে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিমোচন নিরসনে অগ্রগতি সাধিত হবে ও শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে হ্রাস পাবে এবং মাতৃ সেবার উন্নয়ন সাধিত হবে। বর্তমানে সকল জেলা, উপজেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাসমূহে Severe Acute Malnutrition (SAM) ব্যবস্থাপনায় উন্নতি করা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে শিশু অপুষ্টি রোধ করার জন্য ১৩০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে Integrated Management of Chilhood Illness Programme (IMCIP) এর সাথে সমন্বিতভাবে পুষ্টি কর্ণার চালু করা হয়েছে ।
কমিউনিটি ক্লিনিক
কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা একসাথে প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে । প্রতি ৬০০০ মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে দেশের সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা সেবাসমূহ নিশ্চিতকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। ২০০৯ সালে পাঁচ বৎসর মেয়াদী (২০০৯-১৪) Revitalization of Community Health Care Initiative in Bangladesh (কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প) শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। নতুন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত মোট ২,৮২৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ২০১১-১২ অর্থবছরে ১,২০৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে । প্রকল্পের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবাদানকারী হিসেবে ১৩,৫০০ জন কমিউনিটি হেলথ্ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রদেয় সেবা কার্যক্রম আরো জোরদার, গতিশীল ও সমন্বিত করে কার্যকরী উপজেলা স্বাস্থ্য পদ্ধতি চালু করার জন্য HPNSDP এর আওতায় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার শীর্ষক অপারেশনাল প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হয়েছে । কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রায় ৭৬.৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে এবং ১.৭ জন রোগীকে উচ্চতর সেবা কেন্দ্রে রেফার করা হয়েছে ।
স্বাস্থ্য সেবা
দেশের সর্বত্র প্রত্যেক নাগরিকের ন্যূনতম চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাঁদের কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন সম্ভব । পল্লী অঞ্চলে মাঠকর্মীদের মাধ্যমে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, যক্ষা, কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ ও ভিটামিন-এ এর অভাবজনিত অন্ধত্ব দূরীকরণ, কৃমিনাশক ঔষধ বিতরণ ও টীকাদান কর্মসূচি অব্যাহত আছে। এ সকল কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস পাবে, গড় আয়ু বৃদ্ধি পাবে, রোগ প্রাদুর্ভাব হ্রাস পাবে। Dengue, Swine Flu & SARS রোগগুলো বর্তমানে দক্ষতার সাথে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এছাড়া, ফাইলেরিয়া ও ম্যালেরিয়া রোগ ২০১৫ সালের মধ্যে নির্মূল করার পর্যায়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই).
HPNSDP-এর প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার অন্তর্গত ইপিআই কর্মসূচির আওতায় শিশুদেরকে রোগমুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। টিকার মাধ্যমে যেসব রোগ প্রতিরোধ করা যায়, তা প্রতিরোধ করে দেশকে রোগমুক্ত করার লক্ষ্যে ইপিআই কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টংকার, পোলিও, হাম, যক্ষা ও হেপাটাইটিস-বি রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা প্রদান করা হচ্ছে । এছাড়া ২.২০ কোটি এর বেশি শিশুকে ভিটামিন 'এ' খায়ানোর ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ইপিআই কভারেজ' এ বর্তমানে সবগুলো টিকা প্রাপ্তির হার (এক বৎসরের নিচে) ৮১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং দুই বৎসরের নিচে ৯৪ শতাংশ কাজ হয়েছে। এর মধ্যে বিসিজি ৯৫ শতাংশ, ডিপিটি ৩: ৯৭ শতাংশ, পোলিও ৩: ৯৫ শতাংশ, হেপাটাইটিস-বি ৯৬ শতাংশ (সূত্র : Bangladesh EPI CES 2009)। এছাড়া, দেশকে পোলিও মুক্ত করার লক্ষ্যে জানুয়ারী ২০১২ সালে ২০তম জাতীয় টিকা দিবস পালন করা হয়েছে ।
প্রজনন স্বাস্থ্য কর্মসূচি
বাস্তবায়িত সেক্টর কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলা ও সকল জেলা হাসপাতালে প্রসূতি সেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ‘মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম' কার্যক্রম এর আওতায় ডিসেম্বর ২০১১ পর্যন্ত ৪৬টি জেলার ৫৩টি উপজেলায় ৫,৬০,৫২৭ জনকে ভাউচার প্রদান করা হয়েছে এবং ভাউচারপ্রাপ্ত গরীব ও দুঃস্থ গর্ভবতী মহিলাদের উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৬ নাগাদ ১০০টি উপজেলায় ভাউচার স্কীম সম্প্রসারণ করা হবে। এছাড়া, এ পর্যন্ত প্রায় ১৩২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ জরুরী প্রসূতি সেবা (EMOC) চালু করা হয়েছে ।
চিকিৎসা শিক্ষা
বিভিন্ন বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান ছাড়াও মেডিকেল কলেজ গুলোতে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা হয়েছে যা মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের চিকিৎসা বিজ্ঞানে শিক্ষা লাভের সুযোগ সম্প্রসারিত করেছে। চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রমের কারিকুলাম হালনাগাদ ও গণমুখী করা হয়েছে। দেশের সরকারি পর্যায়ে মোট ২২টি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ছাত্রছাত্রী ভর্তি সংখ্যা ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ৩,৩৬৯ এ উন্নীত করা হয়েছে। নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষা উৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি পর্যায়ে আরো ৭টি ইনষ্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি স্থাপনের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত চিকিৎসা সহযোগী দক্ষ জনবল সৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মেধাবী ছাত্রছাত্রী ভর্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অভিন্ন প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করে মেধা তালিকা অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম চলছে।
পরিবার পরিকল্পনা সেবা
বাংলাদেশের দুর্বল আর্থসামাজিক অবস্থা এবং শিক্ষার কম অগ্রগতি হওয়া সত্ত্বেও পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির সাফল্য আশাব্যঞ্জক। এ যাবত পরিবার পরিকল্পনার সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে আধুনিক ও কার্যকরী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ। ২০১৬ সালের পূর্বে প্রতিস্থাপনযোগ্য জন উর্বরতা নিশ্চিত করা সরকারের মূল লক্ষ্য এবং এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য বর্তমানে জন উর্বরতা হার ২.৩ থেকে ২০১৬ সাল নাগাদ ২.০-এ নামিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে । যার মধ্যে অন্যতম হলো পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহীতার হার ৬১ শতাংশ থেকে ২০১৬ সাল নাগাদ ৭৪ শতাংশে উন্নীত করা। বর্তমান দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে মোট প্রজনন হার (Total Fertility Rate, TFR) বেশী এবং পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির গ্রহণকারীর হার (CPR) কম। এ অবস্থায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর TFR হ্রাস ও CPR বৃদ্ধিকল্পে বিশেষ করে বস্তি এলাকা, চরাঞ্চল, দুর্গম এলাকা, অনগ্রসর পল্লী এলাকা ও হাওড় এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম জোরদার করার জন্য এলাকাভিত্তিক কর্মকৌশল প্রণয়ন করে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ।
নার্সিং সেবা
দেশে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের জন্য সেবা পরিদপ্তরের গুরুত্ব ও দায়িত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণেই নার্সিং ব্যবস্থাপনা এবং এর সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সংযুক্ত বিভাগ হিসেবে ১৯৭৭ সালে একটি স্বতন্ত্র সেবা পরিদপ্তর গঠিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩০,৫৪৬ জন রেজিস্টার্ড নার্স রয়েছেন। এর মধ্যে ১৪,২০২ জন गा সরক চাকুরিতে, ১,০০০ জন নার্স বিদেশে এবং প্রায় ১০,০০০ জন নার্স দেশে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছে। ১৭৪ জন রেজিষ্টার্ড নার্সকে ৬ মাস মেয়াদি সার্টিফাইড মিডওয়াইফারি কোর্সে প্রশিক্ষণ ान করা হয়েছে। দেশে বর্তমানে ৪৪টি সরকারি নার্সিং ইনষ্টিটিউট ও ৪৬টি বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট বিদ্যমান আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশে ১০টি সরকারি নার্সিং কলেজ এবং ১৫টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে ৩৯টি নার্সিং ইনস্টিটিউট, ৯টি নার্সিং কলেজ ও ৫টি পোস্ট বেসিক নার্সিং কলেজ রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে সিনিয়র ষ্টাফ নার্সের ২,৬২০টি শূন্য পদের বিপরীতে ১,৭৪৭ জনকে নিয়োগ প্রদান এবং সহকারী নার্সের পদ হতে ২৭১ জনকে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে । দেশে অভিজ্ঞ নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ঢাকাস্থ শেরে বাংলা নগরে একটি এমএসসি নার্সিং কলেজ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে ২০১৬ সাল নাগাদ দেশে সেবিকার সংখ্যা ৪০,০০০ এ উন্নীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে ।
ঔষধ প্রশাসন ও ঔষধ শিল্প
ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ও চাহিদার কথা বিবেচনা করে এ দেশে উৎপাদিত ঔষধের গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার সম্প্রতি ঔষধ প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ঔষধ প্রশাসন পরিদপ্তরকে মন্ত্রণালয় সংযুক্ত অধিদপ্তর হিসেবে উন্নীত করা হয়েছে। ঔষধ শিল্পে Good Manufacturing Practices (GMP) অনুশীলনে অগ্রগতি ও উৎপাদিত ঔষধ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হওয়ায় বর্তমানে দেশে উৎপাদিত ১৮৭ ব্রান্ডের বিভিন্ন প্রকারের ঔষধ ও ঔষধের কাচামাল যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রায় ৮৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদিতব্য কয়েকটি ঔষধ ছাড়া প্রয়োজনীয় প্রায় সকল প্রকার ঔ বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। সর্বমোট ২৬৭টি এ্যালোপ্যাথিক ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বছরে ২৩,২১৪ ব্রান্ডের ১০,০০০ কোটি টাকার ঔষধ ও ঔষধের কাঁচামাল উৎপাদন করছে। দেশীয় চাহিদার প্রায় ৯৭ ভাগেরও বেশী ঔষধ বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবায় আইনগত স্বীকৃতি প্রাপ্ত প্রাচ্যের শাস্ত্রীয় ও পাশ্চাত্যের হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক ঔষধের অবদানও উল্লেখযোগ্য। ওষুধের গুণগত মান রক্ষায় নমুনা পরীক্ষা/বিশ্লেষণের জন্য বর্তমানে ২টি সরকারি ঔষধ পরীক্ষাগার রয়েছে। ইনষ্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ এর আওতাধীন ড্রাগ টেষ্টিং ল্যাবরেটরিকে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আওতাভূক্ত করে আধুনিক ল্যাবরেটরিতে উন্নীত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ল্যাবটিকে ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি (NCL) হিসেবে এবং আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরিতে উন্নীত করার কার্যক্রম সমর পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া, প্রান্তিক ব্যবহারকারীদের নিকট ক্রয়সাধ্য মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় ঔষধসমূহ সহজলভ্য করার জন্য ঔষধের তালিকা পুনঃমূল্যায়ন ও মূল্য নির্ধারণ
নীতিমালা সংশোধন করা হয়েছে। 'জাতীয় ঔষধ নীতি ২০০৫' হালনাগাদ করা হয়েছে এবং 'ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২' এর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হয়েছে ।
বেসরকারি স্বাস্থ্যখাত Private Health Sector
স্বাস্থ্য চিকিৎসায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার অর্থ অনুদানসহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে। বর্তমানে ৫৪টি মেডিকেল কলেজ, ১৪টি ডেন্টাল কলেজ এবং ৪২, ৩২৭টি শয্যাসহ ২,৫০১টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। পাশাপাশি ৫,৭২১টি উন্নতমানের ডায়াগনষ্টিক সেন্টার উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে । স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে এনজিওদের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির আওতায় এইচআইভি/এইডস ও পুষ্টি কার্যক্রম বাস্তবায়নে বেশ কিছু এনজিও সম্পৃক্ত রয়েছে। অনুমোদিত ৫২টি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি হতে সহযোগী মানবসম্পদ তৈরী করা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে ৪১টি blood bank চালু আছে ।
স্বাস্থ্য বীমা Health Insurance
সরকার কর্তৃক বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণের ফলে বিগত বছরগুলোতে স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে বিকল্প অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি, সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নত স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ এবং স্বাস্থ্য খাতে দক্ষতা অর্জন ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বীমা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে । প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু দারিদ্র সীমার নীচে অবস্থানকারী জনগণকে স্বাস্থ্য কার্ড প্রদানের মাধ্যমে বিনামূল্যে উপজেলা পর্যায়ে আন্তঃবিভাগীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে এবং এ উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে তিনটি উপজেলা নির্বাচন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রম অন্যান্য উপজেলায়ও সম্প্রসারিত হবে।
স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার
Reforms of Health Sector

স্বাস্থ্য খাতকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার জন্য স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কার্যক্রমে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান সংস্কার কার্যক্রমগুলো হলো,
১। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া, জনসংখ্যা নীতির খসড়া প্রণয়ন করা
হয়েছে, যা শীঘ্রই চূড়ান্ত করা হবে;
২। সেক্টর ওয়াইজ প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করা;
৩। সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নের সহায়তায় স্বাস্থ্য সেবাকে বহুমুখীকরণের পথ প্রশস্ত করা;
৪ । হেল্থ এডভোকেসী এবং ডিমান্ড সাইডফাইনান্সিং এর মত কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা সৃষ্টি করা;
৫। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নিয়মিত কার্যক্রমের মাধ্যমে পুষ্টি সেবাকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করে সারাদেশে পুষ্টি কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা;
৬। সকল জেলা ও বিশেষায়িত হাসপাতালে সেবা চালু করা;
৭। কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে ই-হেলথ চালু করা;
৮ । জন্ম নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করার লক্ষ্যে স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি জোরদার, পরিবার পরিকল্পনা অপূর্ণ চাহিদা পূরণসহ এলাকা ও লক্ষ্য ভিত্তিক পরিবার পরিকল্পনা সেবা কার্যক্রম জোরদার করা;
৯ । অগ্রাধিকার চিহ্নিত করে প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্বিন্যাস ও নীতিসমূহের সংস্কার সাধনের উদ্যোগ গ্রহণ; যেমন- বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, দুর্গম এলাকায় সেবা প্রদানকারীদের বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান এবং সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারীত্বের বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ;
১০! স্থানীয় সরকার বিভাগ ও বিভিন্ন এনজিওদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে নগরে স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা সম্প্রসারণ ও জোরদার করা ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]