দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি Poverty Alleviation Programmes

দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি Poverty Alleviation Programmes
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দারিদ্র পীড়িত দেশ। বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেকের মত মানুষ তাদের আয় দিয়ে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে না। অর্থাৎ এদেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ চরম দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে। দারিদ্র্যতার এই অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার এর পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও এনজিও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেননা দারিদ্র্যমুক্ত পরিবার, দেশ ও বিশ্ব গড়ে তোলা এখন প্রায় সকল দেশেরই একটি প্রধান শ্লোগান । বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকারের মূল এজেন্ডাই দারিদ্র্য বিমোচন ।
সমাজের মানুষকে দারিদ্র্যের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য তথা সকল মানুষ যাতে তাদের ন্যূন্যতম মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে পারে সে ব্যবস্থা করার জন্য গৃহীত কর্মসূচি ও প্রচেষ্টাকে বলা হয় দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি ।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি Social Safety-net
বিশ্বমন্দার প্রেক্ষাপটে কে চাঙ্গা রাখা এবং দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে ২০০৮-০৯ অর্থবছরের প্রণোদনা প্যাকেজে আশু করণীয় পদক্ষেপ হিসেবে সামাজিক নিরাপত্তা (খাদ্য) খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৩০,৭৫১.১১ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য পলিসি সার্পোট হিসেবে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নিম্নলিখিত কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে ।
১। বয়স্ক, দুঃস্থ মহিলা, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, এতিম, প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন ভাতা হিসেবে নগদ প্রদান ও খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমের পরিধি ও বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে ।
২। সহস্রাব্দে উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) বিবেচনায় রেখে দারিদ্র্য বিমোচন পক্ষ্যমাত্রা অর্জনকল্পে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিক ক্ষমতায়ন খাতে ৩০, ৭৫১.১১ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নগদ প্রদান হিসেবে বয়স্ক ভাতা বাবদ ১৩০৬.৮০ কোটি টাকা, স্বামী পরিত্যক্তা দুস্থ মহিলাদের জন্য ৪৮৫.৭৬ কোটি টাকা, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ১২০০ কোটি বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন তহবিল বাবদ ২০০ কোটি টাকা, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মহিলাদের শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বাবদ ৪১.১৯ কোটি টাকা, ন্যাশনাল সার্ভিসের জন্য ২৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ।
৩। দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (PKSF), মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (MDF), সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (SDF), বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন (BNF), ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পনী লিমিটেড (IDCOL) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের কাছে ন্যাস্ত ক্ষুদ্র ঋণ ও বিনিয়োগ তহবিলসমূহের সঞ্চালন গতি বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে PKSF ও SDF এর ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি বাবদ যথাক্রমে ৮০ কোটি টাকা ও ১৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
৪। সরকারি শিশু পরিবার ও অন্যান্য নিবাসীদের খোরাকী ভাতা বাবদ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩০.৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । শহীদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রেশন বাবদ ২২.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । এছাড়া, দুর্যোগ অনুদান হিসেবে থোক বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা হয়েছে ।
৫। সরকারের রাজস্ব কার্যক্রম অব্যাহত এবং জোরদার করার প্রয়োজনে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের বিশেষ বাজেট সহায়তা (Budget support) গ্রহণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
৬। পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর, বিসিক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিদ্যমান ঘূর্ণায়মান ক্ষুদ্র ঋণ তহবিলসমূহের সঞ্চালন ও প্রচলন গতি বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে ।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য উপরিউক্ত পদক্ষেপসমূহসহ আরো কতিপয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিক ক্ষমতায়ন খাতে নিম্নলিখিত কার্যক্রমের অনুকূলে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে ।
১৩.১৭.২ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান কার্যক্রম Cash Transfer Programmes under Social Safety-net Programmes জানুয়ারি, ২০১৩-১৪ পর্যন্ত বিভিন্ন ভাতা বাবদ ৯০৮০.৬৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কর্মসংস্থানমূলক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেউণী কর্মসূচির আওতায় নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান বিষয়ক উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ সংক্ষেপে নিম্নরূপ।
বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি : বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত, অবহেলিত, আর্থিক দৈন্যতায় জর্জরিত বয়স জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত এ কার্যক্রমে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির জন্য ৯৮০.১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এর ফলে মাসিক ৩০০ টাকা হারে ২৭,২২,৫০০ ভাতা ভোগী উপকৃত হচ্ছে।
অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা : সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এ কর্মসূচির জন্য ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বরাদ্দ রয়েছে ১৩২.১৩ কোটি টাকা এবং ফেব্রুয়ারী, ২০১৪ পর্যন্ত ৯৯.১০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে । এ কর্মসূচির আওতায় মাসিক ৩৫০ টাকা হারে ৩,১৪,৬০০ লক্ষ প্রতিবন্ধী উপকৃত হচ্ছে ।
বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা দুঃস্থ মহিলা ভাতা কার্যক্রম ঃ গ্রামের দরিদ্র, অসহায় ও অবহেলিত মহিলাঁ জনগোষ্ঠী বিশেষ করে বিধবা ভাতা খাতে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দের অঙ্ক ৩৬৪.৩২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা । এর মাধ্যমে ১০ লক্ষ ১২ হাজার সুবিধাভোগীকে নগদ সহায়তা প্রদান করা হবে।
দরিদ্র মায়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা ঃ এ কর্মসূচির ২০১৩-১৪ অর্থবছরের লক্ষ্য অনুযায়ী নির্বাচিত ১.১৬ লক্ষ জন ভাতাভোগী মাকে মাসিক ৩৫০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি এবং অন্যান্য বিষয়ে সচেতনামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করে মা'দের দারিদ্র্য হ্রাস এবং মা ও শিশুর পুষ্টি উপাদান গ্রহণ বৃদ্ধি করা হবে । এ লক্ষ্যে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য ৪৮.৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ঃ এ কর্মসূচির আওতায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২ লক্ষ জন মুক্তিযোদ্ধার জন্য মাসিক ২০০০ টাকা হারে মোট ৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কর্মসূচিটি মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।
অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পোষ্যদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি ঃ এ কর্মসূচির লক্ষ্য মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পোষ্যদের আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মকান্ডের উপযোগী দক্ষ মানব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একক বা যৌথভাবে বিভিন্ন ট্রেডে দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান করা এবং সে দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃজনের লক্ষ্যে ঋণ প্রদান করা। ডিসেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত এ কর্মসূচির অনুকূলে ৫০.৮৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হয় যার বিপরীতে ৩০.৭১ কোটি টাকা আদায় করা হয় এবং আদায়ের হার শতকরা ৬০:৩৬ ভাগ ।
গৃহায়ন তহবিল Housing Fund
বাসস্থান মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর অন্যতম বিবেচনায় দেশের গৃহহীন, দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত জনগোষ্ঠী বিশেষ করে গ্রামীণ গৃহহীন পরিবারের বাসস্থান সমস্যা নিরসন তথা দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সরকার ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ৫০.০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে গৃহায়ন তহবিল গঠন করে। বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে এ পর্যন্ত তহবিল কর্তৃক প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ১৬০.৫০ কোটি টাকা ।
এ তহবিল হতে গৃহায়ন ঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে (এনজিও) মাত্র শতকরা ১০০ ভাগ হার সরল সুদে ঋণ প্রদান করা হয় এবং এ সংস্থাগুলো শতকরা ৫.০০ ভাগ হার সরল সুদে সর্বোচ্চ ১০ (দশ) বৎসর মেয়াদে ঋণ পরিশোধের সুবিধাসহ সহজ শর্তে উপকারভোগীদের অনুকূলে ঋণ বিতরণ করে থাকে । তাছাড়া, বেসরকারি সংস্থাগুলো সুবিধাভোগীদের আয়-বর্ধনের লক্ষ্যে বিভিন্ন আয়বর্ধক কর্মসূচি গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, এ ফান্ড হতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ সুবিধাভোগীদের অনুকূলে এ পর্যন্ত ১০.৮৪ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে ।
গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের গৃহ নির্মাণের জন্য এ কর্মসূচিতে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ পর্যন্ত মোট ২৪১.৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ বরাদ্দের বিপরীতে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ পর্যন্ত ১৬৭.০১ কোটি টাকা ছাড়করণ এবং ৫৭,৫৮৬ টি গৃহের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সারা দেশে মোট ৫২৩টি এনজিও ৬৪টি জেলার ৪৫০টি উপজেলায় গৃহায়ণ ঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়ণ করছে । এ পর্যন্ত ছাড়কৃত ঋণের বিপরীতে আদায়যোগ্য মোট ১২৭.০৬ কোটি টাকার মধ্যে ১০৯.৮৬ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে । মোট আদায়যোগ্য ঋণের তুলনায় আদায় হার শতকরা ৮৮.৪৬ ভাগ ।
খাদ্য সাহায্য কর্মসূচির আওতায় চলমান বিভিন্ন কর্মসূচি
On Going Various Programmes under Food Assistance Programme

কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচি : গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারের জন্য খাদ্য ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীন কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫০ লক্ষ জনমাসের জন্য ১,৪৫৬.৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ।
ভিজিডি ঃ এই কর্মসূচির আওতায় ২০০৯-১১ সাল পর্যন্ত ১৪,৯৯,২৭৭ জন উপকারভোগীকে প্রতি মাসে ৩০ কেজি হিসেবে ১৬.১৯ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তাসহ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে । ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭,৫০,০০০ জন উপকারভোগীকে প্রতি মাসে ৩০ কেজি খাদ্য সহায়তাসহ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং মোট ২ লক্ষ ৭০ হাজার টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে ।
ভিজিএফ এবং গ্রামীণ রক্ষণাবেক্ষণ (টেষ্ট রিলিফ-টিআর) : খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীন ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৮৫ লক্ষ জনমাসের জন্য ১,৩২৬.৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। টিআর কর্মসূচির আওতায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩৯ লক্ষ জনমাসের জন্য ১,২৯১.৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় চলমান কর্মসূচি/প্রকল্প On Going Programmes under Social Safety-net
দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাসের জন্য খাতভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচি ও অন্যান্য পদক্ষেপের সঙ্গে বিভিন্ন উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় গত ২০০৯-১০ অর্থবছরে কতিপয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় । এর মধ্যে অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান, ন্যাশনাল সার্ভিস, কৃষিখাতে জলাবদ্ধতা দূর এবং সেচের জন্য বিশেষ কার্যক্রম, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র, একটি বাড়ি একটি খামার কর্মসূচির অনুকূলে ২০১১-১২ অর্থবছরে যথাক্রমে ১০০০ কোটি টাকা, ২৯৩, ৭৪ কোটি টাকা, ২৫০ কোটি টাকা, ২ কোটি টাকা, ৭ কোটি টাকা এবং ৪৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
আশ্রষণ-২ (দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসন) প্রকল্প ঃ সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত ও গৃহহীন, ছিন্নমূল, নদী ভাঙ্গন কবলিত হতদরিদ্র পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সা করা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্প। ২০১১-১২ অর্থবছর পর্যন্ত এ প্রকল্পে ১০ ইউনিট বিশিষ্ট ৪৭টি ও ৫টি ইউনিট বিশিষ্ট ৩০৭টি (সিআইসিট) এবং ৫ ইউনিট বিশিষ্ট ৩১৬টি (পাকা) সর্বমোট ৬৭০টি পাকা ও সিআইসিট ব্যারাকের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে যা নির্মিত নির্মিত হলে ৩৫৮৫টি পরিবার পুনর্বাসনের সুযোগ হবে। মে, ২০১২ এর মধ্যে ৫ ইউনিট বিশিষ্ট আরও ২০০টি (সিআইসিট) ও ১২০টি ব্যারাকের (পাকা) কার্যাদেশ দেওয়া হবে, যাতে ১৬০০ পরিবার পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে। এছাড়া উপদ্রুত এলাকায় পুরাতন ব্যারাক হাউজের সংস্কার ও সুপেয় পানি সরবরাহের কাজ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের অনুকূলে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য বরাদ্দকৃত টাকার বিপরীতে ফেব্রুয়ারী, ২০১৪ পর্যন্ত ৫৫১.১০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে ।
একটি বাড়ি একটি খামার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেশের ৪৮৩টি উপজেলার ১৭,৩৮৮টি গ্রামে (প্রতি ইউনিয়ন হতে ৯টি গ্রাম) বাস্ত যায়ন করছে। প্রকল্পটি সংশোধিত অনুমোদিত ব্যয় ১৪৯২.৯২ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নকাল জুলাই, ২০০৯ থেকে জুন, ২০১৩ পর্যন্ত। প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যসমূহ হচ্ছে ২০১৩ সালের মধ্যে গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে কৃষি, মৎস্য চাষ, পশু পালন ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে একটি কার্যকর খামার বাড়ি হিসেবে গড়ে তোলা, ঋণ সহায়তার মাধ্যমে প্রতি গ্রামে পাঁচটি করে প্রদর্শনী খামার গড়ে তোলা এবং অনিবাসী ভূমি মালিকদের ভূমিসহ গ্রামীণ সকল সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। এছাড়াও প্রকল্পভুক্ত পরিবারকে তাদের প্রয়োজনভিত্তিক গরু, হাঁ-মুরগি; ঘরের টিন, গাছের চারা ও সবজি বীজের ন্যায় সম্পদ সহায়তা প্রদান করা এবং পরিবারসমূহকে গ্রাম সংগঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মূলকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা । এ লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে এ প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ফেব্রুয়ারি ২০১২ পর্যন্ত ৪৮৩টি উপজেলায় ১৭,৩০০টি গ্রামে গ্রাম সমিতি গঠিত হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৪৮,২০০ টি পরিবারকে গবাদিপশু, ২১,০০০টি পরিবারকে টিনের ঘর, ১৪,৪৩০টি পরিবারকে হাঁস-মুরগি ও ৯৪,২৮০টি পরিবারে সবজি বীজ/গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছ। গ্রামের দরিদ্র মানুষকে ক্ষুদ্র সঞ্চয় সহায়তা (Micro saving support) দিয়ে নিজস্ব পুঁজি তৈরী করার লক্ষ্যে সদস্য প্রতি ২০০ টাকা মাসিক সঞ্চয় জমার বিপরীতে প্রকল্প থেকে ২০০ টাকা করে অনুদান হিসেবে প্রদান কার হয় । ইতোমধ্যে সমিতি প্রতি ৩৬,০০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে । এছাড়াও উপকারভোগীদের আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ড পরিচালনার নিমিত্তে ঘূর্ণায়মান তহবিল হিসেবে সমিতি প্রতি দুই কিস্তিতে ৭২,৮৫০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন, অনিবাসী ভূমি মালিকদের জমির ব্যবহার এবং নিরাপত্তা দান ইত্যাদি কার্যক্রমসহ প্রকল্প বর্তমানে বাস্তবায়িত হচ্ছে । প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১০ লক্ষ দরিদ্র পরিবারকে সরাসরি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে ।
ঘরে ফেরা: ঘরে ফেরা কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো বস্তিতে মানবেতরভাবে বসবাসকারী ছিন্নমূল মানুষদের স্বস্তিকর পরিবেশ নিজ এলাকার বাসগৃহে প্রত্যাবাসন এবং কর্মসংস্থানের জন্য ঋণ প্রদানের মাধ্যমে গ্রামের বিভিন্ন উৎপাদনশীল কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার করা। ১৯৯৯ সালে ঘরে ফেরা কর্মসূচিটি চালুর পর ২০০১ সাল পর্যন্ত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪.২৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল । ২০০৯-১০ অর্থবছরে কর্মসূচিটি পুনরায় চালু করা হয় এবং ৫ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ রাখা হয় । ইতোমধ্যে এ কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ২৪৫ জন বস্তিবাসীকে পুনর্বাসন করা হয়েছে ।
অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি Employment Generation Programme for the Poorest
২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১০০ দিনের কর্মসৃজন শীর্ষক কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় পল্লী অঞ্চলে অতি দরিদ্র কর্মক্ষম বেকার জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সারাদেশের জন্য ১,১৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় । এর বৈশিষ্ট্য হল বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলে অতি দরিদ্র বিশেষ করে এলাকার সক্ষম বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি, সার্বিকভাবে জনগোষ্ঠী ও দেশের জন্য সম্পদ সৃষ্টি করা এবং গ্রামীণ এলাকায় ক্ষুদ্র পরিসরে অবকাঠামো ও যোগাযোগ উন্নয়ন, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিবেশ উন্নয়ন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সারাদেশে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে ।
মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ Microcredit Programme for Self-employment of Women
এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো গ্রামীণ দুঃস্থ ও অসহায় মহিলাদের ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে তাঁদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা। ২০০৩-০৪ অর্থবছর থেকে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের নিমিত্ত ৬৪টি জেলার আওতাধীন ৪৭৩টি উপজেলায় ৩৭.৭৫ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং ঘূর্ণায়মান তহবিল হিসেবে উক্ত বরাদ্দ হতে ডিসেম্বর, ২০১৪ পর্যন্ত ১১৭.১২ কোটি টাকা. ১,০৪,৭৬৫ জন মহিলাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আদায়কৃত অর্থের পরিমাণ ৭৩.৫৬ কোটি টাকা । মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনার জন্য এ পর্যন্ত জাতীয় মহিলা সংস্থার অনুকূলে ২১.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ (আবর্তক) দেয়া হয়েছে । প্রাপ্ত অর্থ ঘূর্ণায়মান আকারে সংস্থার মোট ১০৮টি শাখা অফিসের মাধ্যমে মাথাপিছু ৫,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া, দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি'র আওতায় ২০০৯-১০ অর্থবছরে অনুন্নয়ন খাতে গৃহীত “ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান" শীর্ষক কার্যক্রমের অনুকূলে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১.০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে ।
দেশের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কর্মসংস্থান ব্যাংক Karmasangsthan Bank for Generating Employment for the Unemployed Youth
রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি বেকারদের মধ্যে সরল সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে থাকে। ৬৪টি জেলা সদরে এবং ১৪৫টি উপজেলা সদরসহ মোট ২০৯টি শাখার মাধ্যমে ঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মার্চ, ২০১২ পর্যন্ত মোট ক্রমপুঞ্জিভূত ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১৩৯১.৭৭ কোটি টাকা। জনপুঞ্জিভূত আদায়যোগ্য ১১৬৬.৮৩ কোটি টাকার বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ ১০৭১.৯৫ কোটি টাকা। ক্রমপুঞ্জিভূত আদায়ের হার ৯২ শতাংশ। দেশের ৬৪টি জেলার সুবিধা ভোগীর মোট সংখ্যা ২,৪৩,০৯৪ জন এব পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান রয়েছে ৮,৭৭,৫৬৯ জনের।
কর্মসংস্থান ব্যাংকের কয়েকটি বিশেষ ঋণ কর্মসূচি
শিল্প কারখানার স্বেচ্ছা-অবসরপ্রাপ্ত /কর্মচ্যুত শ্রমিক কর্মচারিদের কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা : কর্মসংস্থান ব্যাংক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শিল্প কারখানার স্বেচ্ছা-অবসরপ্রাপ্ত / চাকুরিচ্যুত শ্রমিক/কর্মচারিদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে স্বেচ্ছা-অবসারপ্রাপ্ত/শ্রমিক/কর্মচারিদেরকে প্রশিক্ষণ ও পুনঃকর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ২০০৪-০৫ ও ২০০৫-০৬ অর্থবছরে যথাক্রমে ১৭.৪৫ ও ২৩.৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দকৃত উক্ত অর্থ আবর্তক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় মার্চ, ২০১২ পর্যন্ত মোট ১৬,০২১ জন অবসরপ্রাপ্ত/কর্মচ্যুত শ্রমিক/কর্মচারীর অনুকূলে ৮৭.৪৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে এবং আদায়ের হার ৮১ শতাংশ ।
কৃষিভিত্তিক শিল্পে ঋণ সহায়তা কর্মসূচি ঃ কৃষিভিত্তিক শিল্পে ঋণ সহায়তা প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী কর্মসংস্থান ব্যাংক এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কর্মসংস্থান ব্যাংকের অনুকূলে ২০০৪-০৫ অর্থবছর হতে ২০০৮-০৯ অর্থবছর পর্যন্ত ছাড়কৃত মোট ৫০ কোটি টাকা হতে মার্চ, ২০১২ পর্যন্ত ২১৫২ জন উদ্যোক্তার অনুকূলে ৬০.২৯ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এ ঋণের আদায়যোগ্য ৫৬.৫৮ কোটি টাকার মধ্যে ৫১.৫৯ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। আদায়ের হার ৯১ শতাংশ। কর্মসংস্থান ব্যাংক কর্তৃক ২০১৫ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ ও আদায় সংশ্লিষ্ট তথ্য সারণিতে দেয়া হলো ।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম Activities under Ministry of Women and Children Affairs
নারী-
-পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণ, নারীদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১ গ্রহণ করে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। শিশু স্বার্থ রক্ষা ও অধিকার রক্ষা এবং শিশু কল্যাণের লক্ষ্যে জাতীয় শিশু নীতি গৃহীত হয়েছে। এ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্ত বায়নাধীন প্রকল্প/কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি), ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট ফর আল্ট্রা পুত্তর (ভিজিডিইউপি), মহিলাদের আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম, খাদ্য
নিরাপত্তাহীন দরিদ্র মহিলাদের উন্নয়ন, শিশুর বিকাশে প্রাক-শিক্ষা প্রকল্প ইত্যাদি । ভিজিডি কার্যক্রমটি এ মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে বড় কার্যক্রম যার মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা ও প্যাকেজ ট্রেনিং প্রদান করা হচ্ছে। ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট ফর আল্ট্রা পুত্তর (ভিজিডিইউপি) প্রকল্প কর্তৃক অর্থ সহায়তা ও আয়বর্ধক সামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে ৮০ হাজার ভিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ মহিলাকে ২৪ মাস বৃত্তে মাসিক ৪০০ টাকা হারে আর্থিক অনুদান প্রদান করা এ প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্য। তাঁদেরকে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের চরম দরিদ্র বিশেষ করে মহিলা জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা, পুষ্টিমান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ১৭,৭১৫.৪২ লক্ষ টাকা এবং ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ ৬১.৩০ কোটি টাকা যার মধ্যে প্রকল্প সাহায্য ৬০ কোটি টাকা ।
জাতীয় মহিলা সংস্থার আওতাধীন স্বকর্ম সহায়ক ঋণ কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিল হতে প্রাপ্ত ১২০ লক্ষ টাকার তহবিল দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে । এর আওতায় ৫,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয় ।
এছাড়া দরিদ্র মায়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা, কর্মজীবী মহিলাদের জন্য হোস্টেল, ছোট শিশুদের দিবাযত্ন কেন্দ্র, মহিলা উদ্যোক্তাদের পণ্য বাজারজাতকরণের সুবিধার্থে বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র স্থাপন, বিভিন্ন স্থানে মহিলাদের জন্য দুস্থ মহিলা ও শিশু সাহায্য তহবিল, কৃষি ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে ও দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখছে ।
. দারিদ্র্য হ্রাসকরণে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের কার্যক্রম Activities of Rural Development and Cooperatives Division in Poverty Reduction
দারিদ্র্য ও চরম দারিদ্র্যের হার যথাক্রমে ২৫ ও ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে এ বিভাগ কর্তৃক প্রণীত স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত কর্মসূচিসমূহ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে । এ জন্য এ বিভাগের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থাসমূহের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, পল্লী জনগণের সার্বিক উন্নয়নসহ আত্ম-নির্ভরশীল করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম জোরদারকরণ, অর্থনৈতিক উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও মানব সম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে । পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প/কর্মসূচির মধ্যে একটি বাড়ি একটি খামার, সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (সিভিডিপি), ইকনমিক এমপাওয়ারমেন্ট অব দি পুওরেষ্ট ইন বাংলাদেশ (ইইপি) প্রকল্প দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে ।
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (সিভিডিপি)
Comprehensive Village Development Programme (CVDP)
এ প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য গ্রামের সকল শ্রেণী পেশার জনগোষ্ঠীকে একক সমবায় সংগঠনের আওতায় এনে তাঁদের আর্থ-সামাজিক তথা সামগ্রিক উন্নয়ন সাধন করা। ১৯৯৯-০৪ সময়কালে সিভিডিপি পল্লী উন্নয়ন মডেল হিসেবে রূপ লাভ করে। এর ধারাবাহিক সফলতার প্রেক্ষিতে পাইলট স্কীম হিসেবে দেশের ১৯টি জেলার ২১টি উপজেলায় ১৫৭৫টি গ্রামে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। ২য় পর্যায়ের জন্য প্রকল্পটি গৃহীত হয়েছে যা জুন ২০১৪ পর্যন্ত চলবে। এ সময়ে দেশের ৬৪টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় ৪২৭৫টি গ্রামে প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জানুয়ারি, ২০১৪ পর্যন্ত ৪২৭৫টি সমবায় সমিতি গঠিত এবং ৪২৩০টি সমিতি নিবন্ধিত হয়েছে। জানুয়ারি, ২০১৪ পর্যন্ত ৩,৫৮,৫৫৮টি পরিবারকে সিভিডিপি সমবায় সমিতির অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং ৫,২১,০৩৮ জনকে সমিতির সদস্যভুক্ত করা হয়েছে।
ইকনমিক এমপাওয়ারমেন্ট অব দি পুওরেস্ট ইন বাংলাদেশ (ইইপি) প্রকল্প Economic Empowerment of the Poorest in Bangladesh (EEP) Project
২০১৫ সালের মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশের মোট ১০ লক্ষ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ কর্তৃক দেশের চর, হাওড়-বাওড়, সমুদ্র উপকূলবর্তী ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকা, কাজের সংস্থান হয় না এমন শুষ্ক মৌসুমে অতি দারিদ্র্য পীড়িত অঞ্চল এবং পার্বত্যঞ্চলের আদিবাসীদের আর্থ- সামাজিক অবস্থার উন্নয়নকল্পে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৮৮৭.১৯ কোটি টাকা (ডিএফআইডি অনুদান ৮৮৪.০০ কোটি টাকা) এবং প্রকল্পের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ থেকে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত । ফেব্রুয়ারি ২০১২ সময়ে এ প্রকল্পের আওতায় ১,২৫,০০০টি অতি দরিদ্র পরিবারকে তাঁদের প্রয়োজন ও দক্ষতা অনুযায়ী পরিবার প্রতি ১৪,৫০০ টাকা (সর্বমোট প্রায় ৮০ কোটি টাকার) সম্পদ হস্তান্তর এবং বরাদ্দ প্রাপ্ত ভূমিহীনদেরকে খাস জমি প্রদান করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সম্পদ হস্তান্তর ও প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রমে ৪৭.১০ কোটি টাকা ব্যয়িত হয়েছে । এতে অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ১ লক্ষ ৮০ হাজার জন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরের এডিপিতে প্রকল্পটির অনুকূলে ১০৭.২১ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ফেব্রুয়ারী, ২০১২ পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ৫৩.৪১ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ৪৯.৮২ শতাংশ।
চর জীবিকায়ন কর্মসূচি (সিএলপি) প্রকল্প Char Livelihood Programme (CLP) Project
ডিএফআইডি'র অর্থায়নে বিশ্বব্যাপী বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের মধ্যে চর এলাকার দরিদ্র জনগণের দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে গৃহীত এ প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হওয়ায় British Expertise কর্তৃক International Awards 2008-09 প্রদান করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে মূল্যায়নে সিএলপি প্রকল্পটি বর্তমানে ১ম অবস্থানে রয়েছে। সফল বাস্তবায়নের ফলে ডিএফআইডি এ বিভাগের মাধ্যমে সিএলপি-২ বাস্ত বায়নের জন্য আরও ৭৮ মিলিয়ন পাউন্ডের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানের বিষয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেছে । এ প্রেক্ষিতে মোট ৭৯৪.৮৭৭৯ (জিওবি 12.52৭৯ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৭৮২.৩৫ কোটি) টাকা ব্যয় সাপেক্ষে চর জীবিকায়ন কর্মসূচি-২ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটি তিস্তা/পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্রের পার্শ্ববর্তী ৮টি জেলার (কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, পাবনা ও টাঙ্গাইল) ৩৩টি উপজেলায় ১২০টি ইউনিয়নে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
দারিদ্র্য বিমোচনে সমবায় অধিদপ্তরের কার্যক্রম Activities of the Department of Cooperatives in Poverty Alleviation
বর্তমানে সারাদেশে নিবন্ধিত মোট সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১,৭৯,৮৮০টি এবং প্রায় ৯০,০৯,৫৫৮ জন সমবায়ী প্রত্যক্ষভাবে সমবায় কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে । বিভিন্ন শ্রেণীর সমবায় সমিতির মধ্যে কৃষি ও কৃষক সমবায় সমিতির সংখ্যা ৬৯,৬৩৬টি; মহিলা ২৭,২৯৯টি, বহুমুখী ৩৫,৩৮৬টি; মৎসজীবী ৮,৬২৪টি; যুব ৫,৪০৭টি; সঞ্চয় ও ঋণদান ২,৯৫৭টি; পানি ব্যবস্থাপনা ১,৭৭২টি; কর্মচারী, শ্রমিক ও শ্রমিক কল্যাণ ১৭৪টি; দুগ্ধ উৎপাদনকারী ১,৪৮৬টি; তাঁতী ১,০৭৬টি; আশ্রায়ন (ফেইজ-২) সমবায় সমিতি সংখ্যা ১,২৮-৭টি এবং অন্যান্য সমবায় সমিতি সংখ্যা ২৩,২১০টি। এ সকল সমবায় সমিতির কার্যকরী মূলধনের পরিমাণ প্রায় ৭,৩৫৮.০০ কোটি টাকা। এ বিপুল পরিমাণ সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে সমবায় সমিতিগুলো দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে । সমিতিগুলো এ পর্যন্ত সদস্যদের মধ্যে প্রায় ১০,৯৮০.৯৯ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে এবং বিতরণকৃত ঋণের ৮,২৪৬.৯৫ কোটি টাকা আদায় করেছে । বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিঃ সমবায়
• খাতের বিশেষায়িত ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান যা প্রধানত কৃষি সমবায় সমিতির জন্য ক্ষুদ্র প্রদান করে থাকে । দেশের অন্যতম প্রধান তরল দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিঃ (মিল্ক ভিটা) গ্রামীণ সমবায়ভিত্তিক দুগ্ধ সংগ্রহ, দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াজকরণ এবং বিপণনের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়াতে সরাসরি অবদান রাখছে । বর্তমানে মিল্ক ভিটার সদস্য সমিতির সংখ্যা প্রায় ২ হাজার । ২০১১-১২ অর্থবছরে মিল্ক ভিটা প্রায় ৮ কোটি লিটার তরল দুগ্ধ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ পর্যন্ত প্রায় ৪ কোটি ১৮ লক্ষ লিটার দুগ্ধ সংগ্রহ করেছে ।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) Bangladesh Rural Development Board (BRDB)
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড দেশের পল্লী উন্নয়ন ও দারিদ্র্য নিরসনমূলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান । ষাটের দশকের প্রথমদিকে বিআরডিবি'র (তৎকালীন আইআরডি) উপর দ্বি-স্তর সমবায় পদ্ধতির (টিসিসিএ-কেএসএস) মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে বিআরডিবি ক্ষুদ্র ঋণ ও মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনের কাজ শুরু করে। বর্তমানে বিআরডিবি একদিকে মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ইউসিসিএ-কেএসএস পদ্ধতিতে ঋণ, প্রশিক্ষণ; বাজারজাতকরণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। অপরদিকে, দারিদ্র্য নিরসনমূলক উন্নয়ন প্রকল্পের/কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ঋণ, দক্ষতা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সেবা যথাঃ স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, স্যানিটেশন, গণশিক্ষা, এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ ও পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসন অব্যাহতভাবে প্রদান করেছে। শুরু থেকে বিআরডিবি এ পর্যন্ত ৭৪টি প্রকল্প/কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে যার বেশীর ভাগ ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান ও দারিদ্র্য নিরসনমূলক। বিআরডিবি বর্তমানে ৯টি প্রকল্প/কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
দারিদ্র্য বিমোচনে মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম Activities of Fisheries Department to Alleviate Poverty
মৎস্য অধিদপ্তরের অধিকাংশ কার্যক্রম দারিদ্র্য বিমোচনকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়িত হয়েছে। মৎস চাষ কার্য জোরদার করার জন্য রাজস্ব বাজেটের আওতায় ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির অধীনে লক্ষ্য গোষ্ঠীর মাঝে প্রায় ৪.৫ কোটি টাকা ক্ষুদ্র ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া সমন্বিত মৎস্য চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পের মাধ্যমে ২৩ কোটি এবং অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে আরো ২.৫ কোটিসহ সর্বমোট ৩০,১৬ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী তথা মৎস্যচাষী / মৎসজীবীদের দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও রাজস্বখাত হতে ঋণ প্রাপ্ত সুফলভোগীর সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজারে উন্নীত হয়েছে । সুফলভোগীদের মাঝে বিতরণকৃত ঋণের আদায়ের হারও বেশ উৎসাহব্যঞ্জক ।
দারিদ্র্য বিমোচনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) Information and Communication Technology (ICT) for Poverty Alleviation
দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য জাতিসংঘের সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইটিটি) ব্যবহার করে ২০১৫ সালের মধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে সরকার একটি থ্রাষ্ট সেক্টর হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে । বর্তমান সরকার (২০০৯- ১৩) তার নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যমে আইসিটি খাতের সম্ভাবনাকে স্বার্থক করে ব্যাপক কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য নিরসনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি প্রদান করে । ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্য কেন্দ্র স্থাপনের ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে ।
দারিদ্র্য বিমোচনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম Poverty Alleviation Programme under Ministry of Social Welfare
দুঃস্থ, দরিদ্র, অসহায় ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কার্যক্রমসমূহকে প্রধানত (ক) সামাজিক সংহতি ও দারিদ্র্য বিমোচনমূলক কার্যক্রম, (খ) সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, (গ) কল্যাণ ও সেবামূলক কার্যক্রম, (ঘ) সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধ কার্যক্রম, (ঙ) কমিউনিটি ক্ষমতায় কার্যক্রম, (চ) প্রশিক্ষণ, গবেষণা, মূল্যায়ন, প্রচার ও প্রকাশনা কার্যক্রম, (ছ) মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং (জ) পরিবেশ ও বন কার্যক্রম হিসেবে শ্রেণীভূক্ত করা হয়ে থাকে। সামাজিক সংহতি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনমূলক কার্যক্রম এর আওতায় দারিদ্র হ্রাসকরণের জন্য ৪টি কর্মসূচিকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম (আরএসএস), শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম (ইউসিডি), জনসংখ্যা কার্যক্রমে পল্লী মাতৃকেন্দ্রের ব্যবহার ও এসিডদগ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন কার্যক্রম।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]