কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলন ( COP-15 )

Copenhagen Climate Summit
পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে করণীয় নির্ধারণের জন্য ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন-এ দুই সপ্তাহব্যাপী একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যা COP-15 নামে পরিচিত। এটাই জলবায়ু সম্পর্কিত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সম্মেলন। এই সম্মেলনে ১৯৪টি দেশ, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং অসংখ্য পরিবেশবাদী সংগঠন অংশগ্রহণ করে । উক্ত সম্মেলনে ১২০টি দেশের সরকার প্রধান সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধানগণ জলবায়ু সম্পর্কে একটি সমঝোতায় উপনীত হন যা কোপেনহেগেন সমঝোতা চুক্তি নামে পরিচিত। COP-15 সম্মেলনে গৃহীত চুক্তির প্রধান প্রধান দিকগুলো নিম্নে তুলে ধরা হল ।
১। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী কাৰ্বন নির্গমনের হার কমিয়ে আনতে হবে।
২। ২০১০ সালের শেষ নাগাদ একটি বাধ্যতামূলক আইনি চুক্তি প্রণয়ন করার জন্য সমঝোতার সংগে একটি সুপারিশ সংযুক্ত করা হয়েছে।
৩। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে উন্নত দেশগুলো তাদেরকে প্রয়োজনীয় অর্থ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে।
৪। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপসহ দ্বীপ রাষ্ট্রসমূহ, স্বল্পোন্নত দেশসমূহ এবং আফ্রিকার দেশসমূহকে । এই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে শিল্পোন্নত দেশসমূহ যৌথভাবে প্রতি বছর ১ হাজার কোটি ডলার করে সাহায্য দিয়ে যাবে ২০২০ সাল পর্যন্ত 1
কানকুন জলবায়ু সম্মেলন (COP-16 ) Cancun Climate Summit
জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব কিভাবে মোকাবেলা করা যায় কিংবা সম্ভাব্য ক্ষতি রোধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে ব্যাপারে মেক্সিকোর পর্যটন নগরী কানকুন সিটিতে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যা Conference of the Parties 16 (COP-16 ) নামে পরিচিত। COP-16 সম্মেলনে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । নিম্নে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত উল্লেখ করা হল ।
১। অভিযোজন (Adaptation) কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে Adaptation committee প্রতিষ্ঠা;
২ । যে সকল দেশে ১০টির কম Claen Development Mechanism (CDM) Project আছে সেসব দেশকে আর্থিক সহায়তা ও পর্যাপ্ত ঋণ সরবরাহ;
৩। Green Climate Fund গঠন;
৪ । Annex I ভূক্ত উন্নত দেশসমূহ ২০১০-১১ অর্থবৎসরে প্রতিশ্রুতি ৩০ বিলিয়ন ডলার অর্থ উন্নয়শীল ও স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে অভিযোজন ও প্রশমন খাতে প্রদান ।
৫ । ২০২০ সাল হতে উন্নত দেশসমূহ দীর্ঘমেয়াদে ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা প্রদান করবে ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহকে
৬। ৪০ সদস্য বিশিষ্ট একটি Transitional committee দ্বারা Green climate fund এর গঠন চূড়ান্ত করা;
৭। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের ২৪ জন প্রতিনিধি নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হবে । উক্ত বোর্ড দ্বারা Green climate fund ব্যয় করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৮। একটি প্রযুক্তি নির্বাহী কমিটি ও একটি জলবায়ু প্রযুক্তি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে Technology Mechanism অর্থাৎ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও বিনিময় ব্যবস্থা গড়ে তোলা ।
ডারবান জলবায়ু সম্মেলন (COP-17) Durban Climate Summit
গত ২৮ নভেম্বর ২০১১ থেকে ১১ ডিসেম্বর, ২০১১ সময়ে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে COP (Conference of Parties) 17 বা ডারবান জলবায়ু সম্মেলন আনুষ্ঠিত হয়। জলবায়ু সম্মেলনে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন রয়েছে। তার কয়েকটি নিম্নরূপ ।
১। Green climate fund এর কার্যক্রম শুরু ঃ Finance বিষয়ক নেগোসিয়েশনে উন্নত বিশ্ব অভিযোজন এবং প্রশমন হ্রাস কার্যক্রমে স্বল্প মেয়াদে উন্নয়নশীল দেশসমূহকে প্রতিবছর ১০ বিলিয়ন করে ২০১০-১২ সময়ে ৩ বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ ২০২০ সাল হতে যৌথভাবে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ।
2 | Technology Development and Transfer এর আওতায় 'Technology mechanism, Technology executive কমিটি এবং Climate technology centre and network প্রতিষ্ঠা ।
৩। Adaptation framework, Adaptation committee এর গঠন চূড়ান্তকরণ এবং LDC দেশসমূহের জন্য National Adaptation Plan (NAP) প্রণয়নে সহায়তা প্রদান ।
৪। সর্বোপরি কিয়োটো প্রটোকলের ধারাবাহিকতার বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা। ১ মে, ২০১২ দেশসমূহ তাদের Commitment এর পরিমাণ ঘোষণা করবে মর্মে ডারবানে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ।
দোহা জলবায়ু সম্মেলন (COP-18) Doha Climate Summit
২৬ নভেম্বর ২০১২ হতে ৮ ডিসেম্বর ২০১২ সালে কাতারের রাজধানী দোহায় জাতিসংঘের ১৮তম জলবায়ু সম্মেলনে সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য নির্ধারিত সময়ের পরও আলোচনা চালিয়ে গেছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন দ্রুত হ্রাসের জন্য ধনী দেশগুলোর সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে সম্মেলনে অভিযোগ তুলেছে উন্নয়নশীল দেশগুলো ।
কার্বন নির্গমন বা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য ধনী দেশগুলোই যে দায়ী, তা স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ধনী দেশগুলো । তবে তারা জানিয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তাদের কাছে অপর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে। তাই বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসে দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক সাহায্যের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়ার সুযোগ এখন নেই। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব করলেও গ্রিন হাউজ গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অব্যাহতভাবে সতর্ক বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে ধনী দেশগুলো বিপুল অংকের তহবিল দেবে বলে ২০০৯ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত ১৫তম জলবায়ু সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে দরিদ্র দেশগুলোকে ওই অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া এখনও সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। পরিবেশকর্মীরা বলেছেন, তারা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য ধনী দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে লজ্জিত। অর্থ সহায়তা, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ বণ্টন, কার্বন নির্গমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সম্মেলনে সংশিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে তুমুল বিতর্ক হয় । দোহা সম্মেলনের আশার দিক হচ্ছে, ছোটখাটো পরিসরে হলেও কিছু চুক্তিতে উপনীত হওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি প্যাকেজ প্রস্তাব, যার আওতায় দরিদ্র দেশগুলোকে ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় অর্থ দেওয়া হবে এবং পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানীর উৎস খোঁজা হবে । তবে কিয়োটো প্রটোকলে সই করেনি এমন দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ জরুরী ভিত্তিতে কমানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসেনি এই সম্মেলনে । কার্বন নিঃসরণের দিক দিয়ে এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে বিশ্বের প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]