জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের উদ্যোগ

Initiatives of Bangladesh to Face the Climate Changes
বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global warming) জন্য কোনভাবেই দায়ী না হওয়া সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের এক নির্দোষ শিকার ( Innocent victim) বাংলাদেশ। এই বাস্তবতায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন (Adaptation) কার্যক্রমে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোর নিকট হতে ন্যায্য হিসাব পাওয়ার লক্ষ্যে গঠিত ক্লাইমেট চেঞ্জ নেগোশিয়েশন টিম ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নেগোশিয়েশনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
অভিযোজন ও প্রশমন Adaptation and Mitigation
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা ও অভিযোজন কর্মসূচি ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যে সরকার নিজস্ব তহবিল হতে ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন তহবিল গঠন করেছে। ২০১০-১১ ও ২১১-১২ অর্থবছরে উক্ত তহবিলে ৭০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ প্রদান করা হয় এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত সর্বমোট ২৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এই তহবিলের প্রধান উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কৌশল ও এ্যাকশন, ২০০৯ (Bangladesh Climate Change Strategy and Action Plan, 2009 ) ( BCCSAP 2009) এর বাস্তবায়ন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এই তহবিলটি পরিচালনা করছে । উক্ত তহবিল পরিচালনার জন্য সরকার একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেছে।
১। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড এর আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে:
(ক) ঢাকা শহরের গুলশান বারিধারা ও ধানমন্ডি এলাকা এবং চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ ও খুলশি এলাকায় বর্জ্য হ্রাস, পুনঃব্যবহার ও পুনঃচক্রায়ন (থ্রিআর) পাইলট উদ্যোগ বাস্তবায়ন শীর্ষক প্রকল্প;
(খ) ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম এর আওতায় ডিএনএ এর প্রকল্প মূল্যায়ন এবং উদ্যোক্তাগণের সিডিএম প্রকল্প তৈরীর সক্ষমতা অর্জন এবং সিভিএম বেইজ লাইন প্রস্তুত সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা;
(গ) সমগ্র বাংলাদেশের শহরগুলোর (পৌরসভা/মিউনিসিপ্যালিটিগুলোর) জৈব আবর্জনা ব্যবহার করে “প্রোগ্রাম্যাটিক সিডিএম” শীর্ষক প্রকল্প;
() "Community based adaptation in the ecologically critical areas through biodiversity conservation and social protection" শীর্ষক প্রকল্প;
(ঙ) পারকি বীচ এর পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা প্রকল্প;
(চ) জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরুপণ ও পরিবীক্ষণ কার্যক্রম জোরদারকরণের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় গবেষণাগারের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন শীর্ষক প্রকল্প ।
২। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফা
সালা প্রণয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড আইন ২০১০ প্রবর্তন করা হয়েছে ।
৩। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজন সংক্রান্ত প্রকল্পে সহায়তা দেওয়ার জন্য দাতা দেশ/সংস্থাসমূহের সহায়তায় Bangladesh Climate Change Resilience Fund (BCCRF) ২০১১ সালে গঠন করা হয়েছে। BCCRF হতে ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকার জনগণের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রণয়ন করা হয়েছে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা ২০০৯।
৪ । জলবায়ু পরিবর্তন অধিদপ্তর নামে একটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তর সৃজনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে । ৫। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাষ্ট ফান্ডের আওতায় পরিচালিত উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হচ্ছে “Strengthening Institutional Capacity of Climate Change Unit" । জলবায়ু পবির্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় গৃহীত উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকটি প্রকল্প নিম্নরূপ ।
(ক) পরিবর্তিত জলবায়ু উপযোগী ধানভিক্তিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প;
(3) Project on farm productivity and food security enhancement of the vulnerable farmers in the char areas of jamalpur and sherpur districts;
(গ) জলবায়ু পরিবর্তনে চরম হুমকির মুখে প্রতিকূল পরিবেশে অবস্থানকারী নারী ও শিশুর সুপেয় পানি সরবরাহ ও সামাজিক সুরক্ষাকরণ প্রকল্প;
(ঘ) পোল্ডার ৫ এর বেড়ী বাঁধ ও অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা প্রকল্প;
(ঙ) জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকবেলায় জলাভূমির বন পুনঃরুদ্ধার ও জীববৈচিত্র্য
সংরক্ষণ প্রকল্প,
(চ) জলবায়ু পবির্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন প্রকল্প ।
৬। ২০০৯ সালে মালদ্বীপে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ ১১টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম; ১৩-১৪ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম; ১৯ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে অনুষ্ঠিত Bhutan Climate Summit for a Living Himalayas, 2011; ৮-৯ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত কার্তাজেনা ডায়ালগ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । অপরদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলার জন্য ইতোমধ্যে বন অধিদপ্তরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং জলবায়ু ট্রাস্টি বোর্ডের অর্থায়নে ৭টি প্রকল্প যেমন- (১) জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় সারাদেশ ব্যাপী ব্যাপক বনায়নের লক্ষ্যে চারা উত্তোলন প্রকল্প, (২) কেন্দ্রীয় অঞ্চলের কোর জোনে জলবায়ু পরিবর্তন স্থিতিস্থাপক বনায়ন প্রকল্প (৩) উপকূলীয় এলাকায় পানি উন্নয়নে বোর্ডের বাঁধ সংলগ্ন চর এলাকায় বনায়ন প্রকল্প ( 8 ) Revegetation of madhupur forests through rehabilitation of forest dependent local and ethnic communities project (<) জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন প্রকল্প (৬) Forest information generation and networking system project 4 (9) Reducing of carbon emission through establishment of sonaichari botanical garden, bhatiary, Chittagong project বাস্তবায়ন ।
বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে গৃহীত কার্যক্রম
Activities Taken to Control Air Pollution

পরিবেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বায়ু। দেশের বিভিন্ন স্থানের বায়ু দূষণ মনিটরিং এবং এর ফলাফলের ভিত্তিতে তা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। পরিবেশ অধিদপ্তর দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর যেমন- ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে সার্বক্ষণিক বায়ু মনিটরিং কেন্দ্র স্থাপন করেছে । এ সকল স্থান হতে সার্বক্ষণিক বায়ু মনিটরিং ফলাফল পাওয়া যায় ।
বাংলাদেশ সরকার বায়ু দূষণ রোধকল্পে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় পরিবেশ অধিদপ্তর বায়ুর মান উন্নয়নের লক্ষ্যে Clean Air Sustainable Environment (CASE) শীর্ষক প্রকল্পটি ২০০৯-১৪ মেয়াদে বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মূলত দুটি কম্পোনেন্ট
১। পরিবেশ-এই কম্পোনেন্টে ইট ভাটার নিঃস্বরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এই কম্পোনেন্টটি পেিবশ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে এবং
২ । যানবাহন-এই কম্পোনেন্টের আওতায় যানবাহন ব্যবস্থাপনা এবং কারিগরি দিক অন্তর্ভুক্ত। বায়ু দূষণ রোধকল্পে যে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা নিম্নবর্ণিত ।
৩। ইট প্রস্তুতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ;
৪ । শিল্প-কারখানায় বায়ু দূষণ রোধক যন্ত্রপাতি স্থাপনে বাধ্য করা;
৫ । যানবাহন হতে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও কঠোর আইন প্রণয়নকরণ;
৬। ব্যবহৃত জ্বালানীর গুণগতমান মাত্রা নিশ্চিতকরণ;
৭। বার্ষিক/পিরিওডিক যানবাহন নিঃসরণ পরিবীক্ষণ বাধ্যতামূলককরণ;
৮ । বায়ু দূষণকারী যানবাহন ও শিল্প-কারখানায় আইন প্রয়োগ জোরদারকরণ ।
শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণ Industrial Pollution Control
শিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ দূষণ এর মাত্রা সহনীয় পর্যায়ের মধ্যে আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়েই পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয় এবং এ ক্ষেত্রে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ অনুসরণ করা হয়। তীব্র দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে Effluent Treatment Plant (ETP) স্থাপন করার পরই পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয়ে থাকে । বৃহত্তর ঢাকা জেলায় শিল্প কারখানার সংখ্যা ও দূষণের মাত্রা সঠিকভাবে পরিমাপ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক বায়ু দূষণ সংশ্লিষ্ট সার্ভে এন্ড ম্যাপিং অব এনভায়রনমেন্টাল পল্যুশন ফ্রম ইন্ডাস্ট্রিজ ইন গ্রেটার ঢাকা এন্ড প্রিপারেশন অব স্ট্র্যাটেজিস ফর ইটস মিটিগেশন শীর্ষক একটি সমীক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে । শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক পরিকল্পনা
১। রাজধানীর আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ট্যানারী শিল্পসমূহকে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপন পূর্বক ঢাকার বাইরে সাভারে স্থানান্তর করা হবে;
২। দেশের সকল শিল্প ইউনিটকে জিআইএস ম্যাপিং এর আওতায় আনা হবে;
৩। দেশের শতভাগ শিল্প ইউনিটে ইটিপি স্থাপন এবং চালু রাখার ব্যবস্থা করা হবে;
৪। দেশের সকল নদী দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম জোরদার করা হবে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]