বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হল ।
১। চাহিদার তুলনায় যোগান অপ্রতুল : বাংলাদেশে জনসংখ্যা অনুসারে খাদ্যশস্য, বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদির চাহিদা অনেক বেশী হলেও যোগান সে তুলনায় কম। তাই ক্রেতাদের মধ্যে দ্রব্য ক্রয়ের প্রতিযোগিতার ফলে অনিবার্যভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
২। বিশ্ব বাজারে মূল্য বৃদ্ধি : বাংলাদেশ মূলত একটি আমদানি নির্ভর দেশ। বেশীরভাগ পণ্যই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশ পণ্য আমদানি করে সে সমস্ত দেশে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির পাবার কারণে বাংলাদেশেও দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, বিদেশি ফলমূল, সুতা, কাপড়, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি পণ্যের মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
৩। চোরাচালান ঃ এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় চোরাই পথে মালামাল পাচার করে থাকে । ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কৃত্রিম সংকট দেখা দেয় । এতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় ৷
৪। জনসংখ্যা বৃদ্ধি : বাংলাদেশের আয়তন অনুসারে জনসংখ্যা অত্যাধিক বেশি। তার উপর জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে । তাই উৎপাদন যতটুকুই বাড়ছে তা জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলাতে পারছে না । মানুষ বাড়ছে অথচ জমি বাড়ছে না, বাড়ছে না খাদ্য উৎপাদন। ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে ।
৫। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি : মজুতদার, আড়ৎদার, মুনাফালোভী, ফটকাবাজ, চোরাকারবারী ইত্যাদি অসাধু ব্যবসায়ীদের বড় ভূমিকা রয়েছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে । ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে মজুদ করে রাখে এবং বাজারে কৃত্রিম পণ্যের সংকট সৃষ্টি করে । পরে ক্রেতাদের মধ্যে দ্রব্য কেনার ছড়াছড়ি শুরু হলে অনেক বেশি দামে বিক্রী করে এবং প্রচুর মুনাফা অর্জন করে । বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা বিশেষ বিশেষ দিন যেমন- রমযান মাস, দূর্গাপুজা, বড়দিন, ঈদ, বাংলা নববর্ষ ইত্যাদি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয় ।
৬। চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি ঃ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও প্রশাসনের দুর্নীতির কারণে আমাদের দেশের পরিবহন সেক্টরের সাথে এক শ্রেণীর চাঁদাবাজ, মস্তান চক্র গড়ে উঠেছে । রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এ সকল চাঁদাবাজরা পরিবহন সেক্টরে বিপুল চাঁদাবাজি করার কারণে দ্রব্যমূল্যের উপর বাড়তি চাপ পড়ছে, যা পরবর্তীতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করছে ।
৭। অনুন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা : বাংলাদেশে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা এবং অনুন্নত পরিবহনের কারণে একস্থান থেকে অন্যস্থানে মালামাল পৌঁছাতে নির্দিষ্ট খরচের তুলনায় অনেক বেশি খরচ হয়। এ বাড়তি খরচ ব্যবসায়ীগণ দ্রব্যমূল্যের সাথে যোগ করে। এর ফলে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায় এবং যার চাপ সাধারণ মানুষের উপর পড়ে ।
৮। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট : সিন্ডিকেট শব্দটা বাংলাদেশে খুবই পরিচিত। ব্যবসায়ীরা সকলে একজোট হয়ে সাধারণ মানুষকে শোষণ করে মুনাফার পাহাড় গড়ে তোলার জন্য দ্রব্যমূল্য বাড়ায়। এক্ষেত্রে সাধারণ ভোক্তাদের কিছুই করার থাকে না বাড়তি দামে দ্রব্য ক্রয় করা ছাড়া ।
৯। সরকারি নজরদারীর অভাব : সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন দপ্তর ও অধিদপ্তর এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের যেভাবে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করার কথা সেভাবে করে না। বরং সরকারের কিছু কিছু পদক্ষেপ দ্রব্যমূল্য না কমিয়ে বরং বাড়াতে উৎসাহিত করে।
১০। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নঃ বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। তাই সরকারী ও বেসরকারি নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে জনগণের মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান বাড়ছে ! জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে, চাহিদা বাড়ছে এবং দ্রব্যমূল্যও ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১১। জমির উর্বরতা হ্রাস ঃ যুগের পর যুগ আমাদের জমিগুলোকে সনাতনী পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে । তাই জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। দিন দিন উৎপাদন কমে যাচ্ছে। তাই মাথাপিছু জাতীয় আয়ও হ্রাস
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত