বাংলাদেশের শ্রমশক্তির আকার, বৈশিষ্ট্য ও পেশাগত বণ্টন

শ্রমশক্তি ও কর্মসংস্থান Labour Force and Employment
দেশের শ্রমশক্তির সার্বিক চিত্র নিরূপণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো শ্রমশক্তি জরিপ (Labour Force Survey) পরিচালনা করে । বিবিএস কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ “Labour Force Survey- 2010” অনুযায়ী ১৫ বছর বয়সের উর্ধ্বে অর্থনৈতিকভাবে কর্মক্ষম শ্রমশক্তির সংখ্যা ৫.৬৭ কোটি, তন্মধ্যে ৫.৪১ কোটি শ্রমশক্তি (পুরুষ ৩.৭৯ কোটি এবং মহিলা ১.৬২ কোটি) বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। মোট শ্রমশক্তিতে কৃষিজীবীর অংশ পূর্বের তুলনায় কমলেও এখনও সর্বাধিক শ্রমিক কৃষিখাতে নিয়োজিত (৪৭.৩৩%) । উল্লেখ্য, ২০০৫-০৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী ১৫ বছর বয়সের উর্ধ্বে ৪.৭৪ কোটি শ্রমশক্তি (পুরুষ ৩.৬১ কোটি এবং মহিলা ১.১৩ কোটি)। এ দুটো জরিপকালে কৃষিতে শ্রমশক্তির হার প্রায় ১ শতাংশ কমেছে । শ্রমশক্তি জরিপ ২০১০ অনুযায়ী ৪৪.৪ শতাংশ (কৃষিতে ২৫.৫ শতাংশ ও অকৃষিতে ১৮.৯ শতাংশ) শ্রমশক্তি স্বকর্মে নিয়োজিত, যা ২০০৫-০৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী ছিল ৪১.৯৮ শতাংশ। লক্ষ্যণীয় যে, এ দুটো জরিপকালে স্বকর্মে নিয়োজিতদের অবদান প্রায় ২ শতাংশ কমেছে। এলএফএস ২০১০ অনুযায়ী দিনমজুর ও বিনা মজুরিতে পারিবারিক শ্রমে নিয়োজিতের হার যথাক্রমে ২১.৮ শতাংশ ও ১৯.৭ শতাংশ, যা পূর্ববর্তী জরিপ অনুযায়ী ছিল যথাক্রমে ১৮,১৪ শতাংশ ও ২১.৭৩ শতাংশ । তবে সর্বশেষ পরিচালিত জরিপে নিয়মিত নিয়োগকৃত কর্মীর হার ২.৪৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৪.৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে । ১৯৯৫-৯৬, ১৯৯৯-০০, ২০০২-০৩, ২০০৫-০৬ ও ২০১০ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী বিভিন্ন খাতওয়ারি শ্রমিকের (১৫ বছর বয়সের উর্ধ্বে) অংশ নিম্নের সারণিতে দেখানো হলো ।
বাংলাদেশের শ্রমশক্তির আকার, বৈশিষ্ট্য ও পেশাগত বণ্টন Size, Properties and Occupational Distribution of Labour Force in Bangladesh
(ক) শ্রমশক্তির আকার ঃ প্রচলিত মজুরিতে কাজ করতে ইচ্ছুক একটি দেশের মোট কর্মক্ষম জনসংখ্যাকে শ্রমশক্তি বলা হয়। ১৯৯১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ি শ্রমশক্তি বলতে বোঝায় জনসংখ্যার মধ্যে ১০ বৎসর ও তার অধিক বয়সের যারা কোন কর্মে নিয়োজিত কিংবা কোন কাজে নিযুক্ত হতে ইচ্ছুক এবং যারা পরিবারের যে কোনো লাভজনক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এ জরিপ অনুসারে যে সকল শ্রমিক পারিবারিক পরিমণ্ডলে বিনা মজুরিতে কাজ করে তারাও শ্রমশক্তির অন্তর্ভূক্ত। ১৯৯৫-৯৬ সালের "Labour Force Survey' অনুসারে বাংলাদেশে মোট বেসামরিক শ্রমশক্তি ছিল ৫.৬ কোটি যার মধ্যে ৩.৫ কোটি পুরুষ এবং ২.১ কোটি মহিলা। ২০০৫-০৬ সালের 'Labour Force Survey' অনুসারে বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ৪.৯৫ কোটি, যার মধ্যে ৩,৭৪ কোটি পুরুষ এবং ১.২১ কোটি মহিলা ।
(খ) শ্রমশক্তির পেশাগত বণ্টন ও বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির বড় অংশ এখনও কৃষিখাতে নিয়োজিত । বিবিএস কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ Labour Force Survey-2010' অনুযায়ী ১৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে অর্থনৈতিকভাবে কর্মক্ষম শ্রমশক্তির সংখ্যা ৫.৬৭ কোটি, তন্মধ্যে ৫.৪১ কোটি শ্রমশক্তি (পুরুষ ৩.৭৯ কোটি এবং মহিলা ১.৬২ কোটি) বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। মোট শ্রমশক্তিতে কৃষিজীবির অংশ পূর্বের তুলনায় কমলেও এখনও সর্বাধিক শ্রমিক কৃষিখাতে নিয়োজিত (৪৭.৩৩%) । উল্লেখ্য, ২০০৫-০৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ি ১৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে ৪.৭৪ কোটি শ্রমশক্তি (পুরুষ ৩.৬১ কোটি এবং মহিলা ১.১৩ কোটি) বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিল, যার মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক শ্রমিক নিয়োজিত ছিল কৃষিখাতে (৪৮.১০%) । এ দুটো জরিপকালে কৃষিতে শ্রমশক্তির হার প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। শ্রমশক্তি জরিপ ২০১০ অনুযায়ী ৪৪.৪ শতাংশ (কৃষিতে ২৫.৫ শতাংশ ও অকৃষিতে ১৮.৯ শতাংশ) শ্রমশক্তি স্বকর্মে নিয়োজিত, যা ২০০৫-০৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ি ছিল ৪১.৯৮ শতাংশ। লক্ষণীয় যে, এ দুটি জরীপকালে স্বকর্মে নিয়োজিতদের অবদান প্রায় ২ শতাংশ কমেছে। Labour Force Survey - 2010 অনুযায়ী দিনমজুর ও বিনা মজুরিতে পারিবারিক শ্রমে নিয়োজিতের হার যথাক্রমে ২১.৮ শতাংশ ও ১৯.৭ শতাংশ, যা পূর্ববর্তী জরিপ অনুযায়ী ছিল যথাক্রমে ১৮.১৪ শতাংশ ও ২১.৭৩ শতাংশ। তবে সর্বশেষ পরিচালিত জরিপে নিয়মিত নিয়োগকৃত কর্মীর হার ২.৪৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৪.৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে । ২০১০ সালে Labour Force Survey অনুযায়ী বিভিন্ন পেশায় শ্রমশক্তির হার শতকরায় নিম্নরূপ ।
বাংলাদেশের শ্রমশক্তির পেশাগত বন্টনের উপরোক্ত তথ্যসমূহের তুলনামূলক বিশ্লেষণ হতে দেখা যায় যে, কৃষিখাতে বাংলাদেশে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ক্রমশ কমছে এবং শিল্পখাতে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ক্রমাগত বাড়ছে ।
(গ) বাংলাদেশের শ্রমশক্তির বৈশিষ্ট্য : বাংলাদেশের শ্রমশক্তির আকার এবং শ্রমশক্তির বন্টন বিশ্লেষণের মাধ্যমে যে সকল বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় । নিম্নে সেগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো ।
১ । শ্রমের যোগান বেশি : বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় শ্রমশক্তির যোগান অনেক বেশী । প্ৰায় ৬ কোটি শ্রমশক্তির যোগান থাকলেও কর্মসংস্থান প্রয়োজনের তুলনায় কম । তাই বাংলাদেশে নির্ভরশীলতার হার বেশি।
২। নারী শ্রমিকের স্বল্পতা : বাংলাদেশে পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় নারী শ্রমিকের যোগান স্বল্প । মাত্র প্রায় ১ কোটি নারী শ্রমিক রয়েছে । তবে রাজনীতি ও অর্থনীতিতে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ বাড়ার সাথে সাথে নারী শ্রমশক্তির যোগানও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৩। অদক্ষ শ্রমিক : বাংলাদেশের শ্রমিকদের দক্ষতা কম। কারণ শ্রমিকদের অশিক্ষা, অসচেতনতা, পুষ্টিহীনতা, শারীরিক দূর্বলতা ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের শ্রমিকদের দক্ষতা কম এবং তাই মাথাপিছু উৎপাদনশীলতাও কম ।
৪। প্রাথমিক পেশাভিত্তিক শ্রমশক্তি : মূলত কৃষি নির্ভর । তাই এদেশের মোট শ্রমশক্তির ৬২.৩০% কৃষি এবং অন্যান্য প্রাথমিক পেশায় নিয়োজিত ।
৫। শ্রমশক্তির বৃদ্ধির হার বেশি : বাংলাদেশে বার্ষিক শ্রমশক্তি বৃদ্ধির হার ২.৩% যা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশ অপেক্ষা বেশি। শ্রমশক্তি বৃদ্ধির হারের চেয়ে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার কম। তাই আমাদের বেকারত্ব তো কমছেই না বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
৬। অসংগঠিত শ্রমশক্তি : বাংলাদেশের শ্রমিকদের মধ্যে কাজের পরিবেশ কিংবা মজুরি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কোন ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেই । বাংলাদেশের শ্রম বাজার অসংগঠিত ।
৭। গতিশীলতার অভাব ঃ বাংলাদেশের শ্রমিকেরা পরিচিত পরিবেশ, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, ভিটেমাটি ছেড়ে অন্য জায়গায় কাজ করতে যেতে চায় না। তাই বাংলাদেশের শ্রমিকদের পেশাগত ও ভৌগলিক গতিশীলতা কম। উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি অদক্ষ। বাংলাদেশের শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা কম । তাই জনশক্তি যেভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করার কথা ছিল তা করতে পারছে না ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]