বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অবস্থা তুলে ধর।State the situation of economic growth of Bangladesh.

বাংলাদেশ বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম । মাত্র ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ১৬ কোটি মানুষের বসবাস। মথাপিছু আয় কম এবং জীবনযাত্রার মান নিম্ন । জন্মহার এখনও অনেক বেশী, মৃত্যুহারও বেশি। রপ্তানীর তুলনায় আমদানী ব্যয় বেশী । তাই প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের লেনদেন ভারসাম্য প্রতিকূল হচ্ছে এবং বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতিকে ক্রমশ চ্যালেঞ্জের মুখে নিয়ে যাচ্ছে। জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান কম । প্রধান পেশা কৃষি হওয়া সত্ত্বেও কৃষি ব্যবস্থা অত্যন্ত অনুন্নত। এ সকল অবস্থার প্রেক্ষিতে আপাতত মনে হয় নিয়ে আশাহত হওয়া ছাড়া আর কিছু নেই । কিন্তু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে জাতির জন্ম, নিয়মিত নানামূখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে যে জাতির বসবাস তাদের নিয়ে আশাবাদী হতে হয় । কারণ, বিগত দুই দশকে র বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উন্নতি করছে । যেমন- মাথাপিছু আয় বেড়ে ১৩১৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে । জনগণের মৌলিক মানবিক চাহিদা বেড়েছে এবং জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে । তাই তাদের গড় আয়ু বেড়ে ৬৭ বৎসরে উন্নীত হয়েছে। জিডিপি-এ শিল্পের অবদান বেড়ে ২৯.৫৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের দেশজ সঞ্চয়ের পরিমাণ বেড়ে জিডিপি-এর ২২.০৯ শতাংশ হয়েছে। বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে এবং মৃত্যুহারও হ্রাস পাচ্ছে। ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে প্রতিবৎসর ৬% এর কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ২০১৩-১৪ অর্থবৎসরের শুরু থেকেই সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে মুদ্রাস্ফীতি কর্মে ৭.৫% এর কাছাকাছি এসেছে। আশা করা যায়, সামনের দিনগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি আরও কমবে। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ বেড়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়ছে। সরকার চেষ্টা করছে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য । উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এগিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ, এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। তাই বলা যায়, অপার সম্ভাবনাময় । বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল ।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন Economic Development

সাধারণত অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলতে কোন দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নকে বুঝায়। কিন্তু এক কথায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের সংজ্ঞা প্রদান করা খুবই কঠিন। কারণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলতে সঠিক কি বুঝায় সে সম্বন্ধে অর্থনীতিবিদগণের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ বিভিন্ন দৃষ্টিকোন হতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।
অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম ও বাট্রিক বলেছেন, “যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোন দেশের বা অঞ্চলের জনগণ সেখানকার প্রাপ্ত সম্পদের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে অব্যাহতভাবে মাথাপিছু দ্রব্য ও সেবাকার্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হয়, তাকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলে ।”
অর্থনীতিবিদ স্নাইডার বলেন, “অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলতে মাথাপিছু উৎপাদন ক্ষমতার দীর্ঘমেয়াদী বা অব্যাহত বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বুঝায় ।”
অর্থনীতিবিদ লুইস বলেন, “প্রতি ঘণ্টা কাজের ভিত্তিতে যদি উৎপাদন বৃদ্ধি পায় তবে বোঝতে হবে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটেছে ।”
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে দেশের কারিগরী ও মৌলিক বিজ্ঞানের প্রসার ঘটে, নতুন যন্ত্র ও উৎপাদন কৌশলের উদ্ভাবন ও প্রয়োগ সম্ভব হয় এবং সমাজব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন সাধিত হয় । সুতরাং অর্থনৈতিক উন্নয়ন এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা দীর্ঘ সময় ধরে একটি দেশের দ্রব্য ও সেবার উৎপাদনের পরিমাণ এবং মাথাপিছু প্রকৃত আয় বৃদ্ধি পায় এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার ও প্রয়োগ, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতি, দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার ও সামাজিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সম্ভব হয় । সমাজের মানুষের প্রকৃত আয় বৃদ্ধির সাথে অর্থনৈতিক কল্যাণ সাধনই হলো অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল উদ্দেশ্য ।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি Economic Growth

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বলতে কোন দেশের জাতীয় উৎপাদন ও মাথাপিছু প্রকৃত আয়ের চলমান বৃদ্ধিকে বোঝায় । অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মূলত উৎপাদন ও আয়ের পরিমাণগত বৃদ্ধির ধারণা প্রকাশ করে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে দেশের অর্থব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন বা উন্নয়ন ছাড়াই উৎপাদন ও মাথাপিছু প্রকৃত আয়ের অব্যাহত বৃদ্ধি ঘটে ।
Phillips Deane মনে করেন, "অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে জাতীয় আয়ের অব্যাহত বৃদ্ধি যার মাধ্যমে জাতীয় আয়ের সাথে সাথে মাথাপিছু আয়ও বৃদ্ধি পেতে থাকে।"
Friedman এর মতে, "অর্থব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন ছাড়াই এক বা একাধিক দিকে এর প্রসারকে প্রবৃদ্ধি বলে ।"
প্রবৃদ্ধির মাত্রা কম বা বেশি হতে পারে, যেহেতু এটা দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত না হয়ে মূলত উৎপাদনের উপাদান ব্যবহারের উপর নির্ভর করে ।
বিগত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে জাতীয় আয়ের বৃদ্ধিকে বিগত (ভিত্তি) বছরের জাতীয় আয় দ্বারা ভাগ করে শতকরা হারে প্রকাশ করলে যা পাওয়া যায়, তাকে বলা হয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার। সহজ কথায় জাতীয় আয় বৃদ্ধির হারকেই বলা হয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার। প্রবৃদ্ধির হারকে নিম্নোক্ত সূত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা যায় ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]