বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জন্য অর্থসংস্থানের সমস্যা এবং সমাধানের উপায়

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জন্য অর্থসংস্থানের সমস্যা এবং সমাধানের উপায় Problems to Financing for Economic Development of Bangladesh and their Solution
উন্নয়ন পরিকল্পনার অর্থসংস্থানের বেলায় একটি দেশকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে। তবে সমস্যা থাকলেও তার সমাধানের বিভিন্ন উপায়ও আছে । নিয়ে এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল ।
প্রথমত ঃ তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জনগণের মাথাপিছু আয় কম বলে ব্যক্তি পর্যায়ে সঞ্চয় সংগ্রহের সুযোগ কম। আবার এসব দেশে শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধিও কম। ফলে কর্পোরেট সঞ্চয় কম। এ সমস্যা সমাধানের জন্য নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে ।
১। দেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প প্রবর্তন করা যায় যাতে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীরা আকৃষ্ট হয়।
২। ব্যাংকিং সুবিধা দেশের সর্বত্র সম্প্রসারণ করা দরকার যাতে ব্যক্তি পর্যায়ের সঞ্চয় একত্রিত বা সংগ্রহ করা সম্ভব হয় । প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান ব্যাংকিং ইউনিট এ ব্যাপারে কাজে লাগাতে হবে।
৩। দেশের মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব রোধ করা দরকার। তাহলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় স্থিতিশীল থাকবে । তাদের পক্ষে সঞ্চয় বেশি করা সম্ভব হবে।
৪। সম্ভব হলে সরকারী খাতে বেশি বেতনভোগী লোকদের বেতনের একাংশ সরকারী বঙ বা সঞ্চয়পত্রের আকারে পরিশোধ করা দরকার। এতে বাধ্যতামূলক সঞ্চয় (Forced saving) বাড়বে। তুরস্ক, ব্রাজিল, ঘানা ইত্যাদি দেশে এরূপ পদ্ধতি অবলম্বন করে অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় বাড়ানো সম্ভব হয়েছে ।
৫। বিভিন্ন সমবায় সমিতি এবং ব্যাংককে পল্লী এলাকার সঞ্চয় সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা যায়। ৬। ব্যক্তি পর্যায়ে বীমাকরণের অভ্যাস (Insurance habit) বাড়ানোর প্রচেষ্টা নেওয়া দরকার। ৭। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে আয় ও সম্পদ বৈষম্য দূর করতে হবে ।
৮। দেশে দীর্ঘমেয়াদী ভোগ পরিকল্পনা নেয়া দরকার যাতে উচ্চবিত্ত লোকেরা বিলাস জাতীয় দ্রব্যের ভোগ যথেচ্ছাভাবে না করতে পারে। এতে তাদের সঞ্চয় বাড়বে।
দ্বিতীয়ত : উন্নয়নশীল দেশগুলিতে রাজস্ব বাজেটের উদ্বৃত্ত যথেষ্ট পরিমাণে সৃষ্টি করা নানা কারণে সম্ভব নয় । এসব দেশে তাই রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যায় ।
১ । কর কাঠামো বিশেষ করে আয় কর, ভূমি কর এবং সম্পদ কর প্রগতিশীল করা দরকার । ২। রাজস্ব আয়ের সিংহভাগ প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে আদায়ের ব্যবস্থা নিতে হবে ।
৩ । অপ্রয়োজনীয় এবং বিলাসজাতীয় ভোগ দ্রব্যের উপর অতি প্রগতিশীল হারে ভোগ কর আরোপ করতে হবে।
৪ । কর প্রশাসন দক্ষ, সৎ এবং কর্তব্যনিষ্ঠ রাখতে হবে যাতে কর ফাঁকি ন্যূনতম স্তরে নেমে আসে। পাশাপাশি রাজস্ব ব্যয় কমাতে হবে ।
তৃতীয়ত ঃ রাষ্ট্রায়ত্ত এবং স্বায়ত্বশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক সময় নানা কারণে আশানুরূপ উদ্বৃত্ত পাওয়া যায় না । এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যায় ।
১ । এসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনা করা দরকার ।
২। দুর্নীতি রোধ এবং সম্পদের অপচয় কমানো দরকার ।
৩ । কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে আয় বাড়ে অথচ সে অনুপাতে ব্যয় না বাড়ে । এক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদান এবং শাস্তির ব্যবস্থা রাখা দরকার ।
চতুর্থত : অনেক দেশে মুদ্রা এবং মূলধন বাজার অনুন্নত বলে সরকারী ঋণ গ্রহণের সুযোগ কম থাকে । এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যায় ।
১ । প্রয়োজনে মুদ্রা এবং মূলধন বাজারের কাঠামোগত পরিবর্তন করতে হবে।
২। বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় সরকারী সঞ্চয়পত্র, বণ্ড, ট্রেজারী বিল প্রবর্তন করতে হবে যাতে
জনগণ এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেগুলো ক্রয়ে উৎসাহিত হয় ।
পঞ্চমত ঃ উন্নয়ন পরিকল্পনার অর্থসংস্থানের উৎস হিসাবে ঘাটতি অর্থসংস্থানের সীমাবদ্ধতা আছে । কারণ একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে ঘাটতি অর্থসংস্থান তীব্র মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি করতে পারে । তাই এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যায়।
১। ঘাটতি অর্থংস্থানের সীমারেখা নির্ধারণ করা দরকার। এ সীমারেখা জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি হার দ্বারা নির্ধারণ করা যায়। অর্থাৎ যে হারে জাতীয় আয় বৃদ্ধির প্রত্যাশা পরিকল্পনায় নেয়া হবে ঘাটতি অর্থসংস্থানের হার ঐ পর্যন্ত করা যেতে পারে।
২। যতদূর সম্ভব নতুন মুদ্রা সৃষ্টি না করে ঋণ গ্রহণ করে ঘাটতি অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা নেয়া উচিত । তবে বস্তুগত সম্পদের প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে নতুন নোট ছাপানো যেতে পারে ।
ষষ্ঠত ঃ বৈদেশিক ঋণ এবং সাহায্য শর্তযুক্ত হতে পারে। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি । এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যায় ।
১। কম সুদের হারে দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পে সাহায্য নেয়া দরকার ।
২। যতদূর সম্ভব শর্তবিহীন সাহায্য নিতে হবে ।
৩। বিদেশী বাজারে আকর্ষণীয় দেশীয় বণ্ড ছেড়ে বিদেশী মূলধন সংগ্রহ করা যায় কিনা তা ভেবে দেখা দরকার ।
৪ । উন্নত দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ, সাহায্য এবং অনুদান সংগ্রহের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেয়া যায় ।
৫ । সবশেষে কেবলমাত্র উৎপাদনশীল প্রকল্পের জন্য ঋণ ও সাহায্য নেয়া উচিত ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]