বাংলাদেশের সুদের হার ও পুঁজি বাজার ব্যাখ্যা কর ।

মুদ্রা ও ঋণ Money and Credit
ব্যাংক বহির্ভূত যা জনগণের হাতে নগদ আকারে থাকে এবং বিভিন্ন তফসিলী ব্যাংকে রক্ষিত জনগণের চাহিদা আমানতের সমষ্টিকে বলা হয় সংকীর্ণ মুদ্রা । সংকীর্ণ মুদ্রাকে M দ্বারা বোঝায় । কাজেই,
M1 = CU + DD
যেখানে, CU = জনগণের কাছে রক্ষিত কারেন্সী,
DD = ব্যাংকে রক্ষিত চাহিদা আমানত ।
অন্যদিকে, সংকীর্ণ মুদ্রার সাথে বিভিন্ন তফসিলী ব্যাংকে রক্ষিত মেয়াদী আমানত যোগ করলে পাওয়া যায় M2 ।
M2 = M1 + TD
যেখানে, M1= সংকীৰ্ণ মুদ্ৰা,
TD = তফসিলী ব্যাংকের মেয়াদী আমানত ৷
কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে কাগজের নোট ও ধাতব মুদ্রা চালু করে তার সমষ্টিকে বলা হয় কারেন্সী (CU) । অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রচলিত কারেন্সীকে নোট বলে ।
ব্যাপক, মুদ্রা সরবরাহ ২০০৯-১০ অর্থবছর শেষে ২২.৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, পূর্ববর্তী ২০০৮-০৯ অর্থবছর শেষে এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৯.১৭ শতাংশ। বছর ভিত্তিতে ২০১০-১১ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি পায় ২১.৬৬ শতাংশ। পূর্ববর্তী অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে এ বৃদ্ধির হার ছিল ২১.৯০ শতাংশ । এ সময়ে সাধারণ জনগণের হাতে থাকা কারেন্সী নোট ও ব্যাংক মুদ্রা (ব্যাংক বহির্ভূত মুদ্রা) ফেব্রুয়ারি ২০১০-এ ১৬.০৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৪.৮ শতাংশে। একই সময়ের ব্যবধানে তলবি আমানতের প্রবৃদ্ধি ৩৩.৬৯ শতাংশ থেকে ৩১.৭৮ শতাংশে এবং মেয়াদি আমানতের প্রবৃদ্ধি ২১.৪৫ শতাংশ থেকে ১৯.৮১ শতাংশে দাঁড়ায়। অর্থাৎ সাম্প্রতিক সময়ে জনসাধারণের হাতে থাকা কারেন্সী নোট ও মুদ্রার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ব্যাপক মুদ্রার স্থিতি ২০০৯-১০ অর্থবছর শেষে (জুন-২০১০ শেষে) ছিল ৩,৬৩,০৩১ কোটি টাকা, যা ২০১০-১১ অর্থ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে দাঁড়িয়েছে ৪.০৬,৭৮৫ কোটি টাকা ৷
বার্ষিক ভিত্তিতে ২০০৯-১০ অর্থবছরে আভ্যন্তরীণ ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭.৮৯ শতাংশ, পূর্ববর্তী অর্থবছরে এ বৃদ্ধির হার ছিল ১৬.০৩ শতাংশ। এ সময়ে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ পূর্ববর্তী ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৪.৬২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৪.২৭ শতাংশে দাঁড়ায়। তবে সরকারি খাতে নীট ঋণ ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৬.৫০ শতাংশ হ্রাস পায়। ২০১০-১১ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে বছর ভিত্তিতে ব্যাংক ব্যবস্থায় মোট আভ্যন্তরীণ ঋণ ২৬.৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই মাস থেকে এ বৃদ্ধির হার ছিল ১৩.৩৩ শতাংশ। এ সময়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই মাস শেষে ১৯.৫২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৮.৩৪ শতাংশে দাঁড়ায়, যা মোট আভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। বৈদেশিক বাণিজ্যে অর্থায়ন, কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ ঋণ এবং মেয়াদি শিল্প ঋণসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধিতে জোরালে অবদান রাখে । বার্ষিক ভিত্তিতে ২০০৯-১০ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ মুদ্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬.০৩ শতাংশ, পূর্ববর্তী অর্থবছরে এ বৃদ্ধির হার ছিল ৩৪.৪৫ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব‍্যাংকে নীট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধির ৪২.৫২ শতাংশ হলেও নীট অভ্যন্তরীণ সম্পদ হ্রাস পায় ২৬.১৩ শতাংশ। রেমিট্যান্স প্রবাহের উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে নীট বৈদেশিক সম্পদের এ প্রবৃদ্ধি ঘটে । অন্যদিকে, সন্তোষজনক রাজস্ব আয় ও সঞ্চয় পত্র থেকে সরকারের অর্থায়ন বৃদ্ধির ফলে ব্যাংক ব্যবস্থা হতে সরকারের নীট ঋণ গ্রহণ ঋণাত্মক হয়। ২০১০-১১ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে রিজার্ভ মুদ্রার প্রবৃদ্ধি পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই মাসের প্রবৃদ্ধি ২৪.৭ শতাংশের তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০.৭৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে । আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স প্রবাহের শুথ গতির ফলে নীট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি ২০০৯-১০ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে ৮৪.৩১ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস শেষে ৮১.৬৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে । ২০০৯-১০ অর্থবছরে ব্যাপক মুদ্রা গুণক জুন ২০০৯ শেষে ৪.২৭ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে জুন ২০১০ শেষে ৪.৫১ এ দাঁড়ায়। ২০১০-১১ অর্থবছর ফেব্রুয়ারি মাস শেষে ব্যাপক মুদ্রা গুণক দাঁড়ায় ৪.৬১ ।

সুদের হার Rate of Interest

মুদ্রাস্ফীতির চাপ ক্রমাগত বাড়তে থাকায় বাজারে মুদ্রা প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আগষ্ট ২০১০ থেকে রেপো ও রিভার্স রেপোর সুদের হার ১০০ বেসিস পয়েন্টস বৃদ্ধি করে যথাক্রমে ৫.৫ শতাংশ ও ৩.৫ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এতে বাজারে তারল্য প্রবাহ কিছুটা হ্রাস পায় এবং আন্ত:ব্যাংক কলমানির ভাড়িত সুদের হার ৬.৩৬ শতাংশে দাঁড়ায়। মুল্যস্ফীতির চাপ ঊর্ধ্বমুখী থাকার প্রেক্ষিতে রেপো ও রিভার্স রেপোর সুদের হার গত ১৩ মার্চ ২০১১ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্টস এবং সর্বশেষ ২৭ এপ্রিল ২০১১ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্টস বৃদ্ধি করে যথাক্রমে ৬.২৫ শতাংশ ও ৪.২৫ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে ।
৯১-দিন মেয়াদি ট্রেজারী বিলের ভাড়িত সুদের হার জুলাই ২০১০ এ ২.৪৩ শতাংশ থেকে মার্চ ২০১১ তে ৫.৪৮ শতাংশে দাঁড়ায় । ১৮২-দিন মেয়াদি এবং ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারী বিলের ভাড়িত সুদের হার জুলাই ২০১০ থেকে মার্চ, ২০১১ পর্যন্ত সময়ে প্রায় ২.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশ সরকারের ট্রেজারী বিল সমূহের (৫-বছর, ১০-বছর, ১৫ বছর ও ২০ বছর) ভাড়িত সুদের হারও এ সময়ে বৃদ্ধি পেলেও তা ১ শতাংশের নীচে রয়েছে ।
চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সিদ্ধান্ত এবং উৎপাদনশীল খাতসহ অন্যান্য খাতে সুদের হার হ্রাসের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ১৯ এপ্রিল ২০০৯ থেকে কৃষিখাত, বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে মেয়াদি ঋণ ও চলতি মূলধন ঋণ, গৃহায়ণ ও বাণিজ্যে অর্থায়ন খাতে ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ১৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল । মন্দা পরবর্তি পরিস্থিতি এবং কতিপয় ব্যাংক কর্তৃক আমানতের সুদের হার বৃদ্ধির প্রবণতার প্রেক্ষাপট সুদের হারকে বাজার ভিত্তিক করার জন্য কৃষি ও মেয়াদি শিল্প ঋণ ব্যতীত অন্যান্য খাতে সুদের হারের উচ্চসীমা তুলে নেয়া হয়েছে । তবে চলতি মূলধনসহ কতিপয় খাতে সুদের হার যাতে যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর ওপর নৈতিক চাপ (moral suasion) প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে । ভারিত গড় (weighted average) ঋণ প্রদানের সুদের হার জুন ২০০৯-এ ১৩.৪৬ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে জুন ২০১০-এ ১২.৩৭ শতাংশে দাঁড়ায়। একই সময়ে ভারিত গড় আমানতের সুদের হার ৮.২৬ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ৭,৪০ শতাংশে দাঁড়ায়। ফলে জুন ২০০৯-এ সুদের হারের ব্যাপ্তি (interest rate spread) ৫.২০ শতাংশ থেকে জুন ২০১০-এ ৪.৯৭ শতাংশে হ্রাস পায়। ২০১০-১১ অর্থবছরের মার্চ মাসে ভারিত গড় ঋণ প্রদানের সুদের হার ও আমানতের সুদের হার বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে ১২.৫২ শতাংশ ও ৭.৫০ শতাংশে দাঁড়ায় । তবে সুদের হারের ব্যপ্তি জুন ২০১০-এর তুলনায় প্রায় একই রয়েছে ।

সঞ্চয় ও বিনিয়োগ Saving and Investment

২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশজ সঞ্চয় ছিল জিডিপি'র ২২.০৯ শতাংশ যা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাময়িক হিসাব অনুযায়ি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে জিডিপি'র ২২.৩০ শতাংশে। অন্যদিকে, বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জিডিপি'র ২৮.৯৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপি'র ২২.০৭ শতাংশ এবং সরকারি বিনিয়োগ ৬.৯০ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল জিডিপি'র ২৪.৪১ শতাংশ। যার মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপি'র ১৯.৪০ শতাংশ এবং সরকারি বিনিয়োগ ৫.০১ শতাংশ। বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতে সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয় জিডিপি'র ২৯.২৩ শতাংশ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাময়িক হিসাবে জাতীয় সঞ্চয় জিডিপি'র ২৯.০১ শতাংশ ।

পুঁজি বাজার Capital Market

২০০৯-১০ অর্থবছরে পুঁজি বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হলেও ২০১০-১১ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে নিম্নমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছরের জুন মাস শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এর সাধারণ মূল্যসূচক ৬,১৫৩.৬৮ এবং বাজার মূলধন জিডিপি'র ৩৯ শতাংশে দাঁড়ায়। পুঁজি বাজারের প্রতি সাধারণ জনগণের আগ্রহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এ সময়ে বাজার মূলধন ও মূল্যসূচকের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ডিসেম্বর ২০১০ শেষে ডিএসই'র সাধারণ মূল্য সূচক ৮,২৯০.৪১-এ পৌঁছে, যা জুন ২০১০-এর তুলনায় ৩৪.৭২ শতাংশ বেশি। একইভাবে বাজার মূলধন জিডিপি'র ৪৪.৯৬ শতাংশে পৌঁছে। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই পুঁজি বাজারে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১২ মে ২০১১-এ ডিএসই'র সাধারণ মূল্য সূচক হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৫৬১২.৫২-এ, যা ডিসেম্বর ২০১০ এর তুলনায় প্রায় ৩২.৩ শতাংশ কম। একইভাবে বাজার মূলধন জিডিপি'র ৩৩.০৫ শতাংশে নেমে আসে। Price Earnings (P/E) Ratio জানুয়ারী ২০১১-এ ২৯.৩৫ থেকে কমে ১২ মে ২০১১-এ ১৪.৬৫ এ দাঁড়ায় ।
সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ভূত পুঁজি বাজারের অস্থিরতা কাটিয়ে পুঁজি বাজারের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং বাজারকে যথাযথভাবে পরিচালনার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে তা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পুঁজি বাজারে তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়াসে আইসিবি'র উদ্যোগে ৫,০০০ কোটি টাকার 'বাংলাদেশ ফাণ্ড' নামে একটি মেয়াদবিহীন (Open end) মিউচ্যুয়াল ফাণ্ড গঠন করা হয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে পুঁজিবাজারে সংঘটিত ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে । প্রতিবেদনের বিভিন্ন সুপারিশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । এছাড়া, সরকার অবিলম্বে স্বল্পমেয়াদে এবং মধ্যমেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পুঁজি বাজারের উন্নয়ন ও প্রসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ।
বৈদেশিক খাত External Sector
রপ্তানী Export
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা গভীর হওয়ার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের চাহিদা ও মূল্য হ্রাস পাওয়ায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরের দ্বিতয়ার্ধে রপ্তানী প্রবৃদ্ধি কিছুটা শ্লথ হয়। রপ্তানী প্রবৃদ্ধির শ্লথ ধারা ২০০৯-১০ অর্থবছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বজায় থাকে এবং এ ৬ মাসে রপ্তানী প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ঋণাত্মক ৬.২৬ শতাংশে । মন্দা পরিস্থিতির উন্নতির ফলে ২০০৯-১০ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে রপ্তানী প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়ায় এবং জানুয়ারি- জুন, ২০১০ সময়ে রপ্তানী প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ১৪.৩৯ শতাংশ। সার্বিকভাবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে রপ্তানী ৪.১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৬,২০৪.৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয় ।

মন্দা পরিস্থিতি থেকে বিশ্বের অর্থনীতি বেরিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রপ্তানীখাতও তার অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম প্রাপ্তিকে রপ্তানী প্রবৃদ্ধি হয়েছে পূর্ববর্তী অর্থবছরের প্রথম প্রাপ্তি কের তুলনায় ২৯.৪৬ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রাপ্তিকে রপ্তানী প্রবৃদ্ধি আরো বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩.৫৩ শতাংশে দাঁড়ায় । তবে তৃতীয় প্রাপ্তিকে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে ৩৯.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সার্বিকভাবে ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানী ৪০.৮৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৮,283.28 মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। রপ্তানির এ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে মূল ভূমিকা রেখেছে ওভেন পোশাক ( ৩৮.৫৮ শতাংশ), নীটওয়্যার (৪৫.৮৯ শতাংশ), কাঁচাপাট (৬৯.২০ শতাংশ), পাটজাত পণ্য (৩৪.৮৮ শতাংশ), চামড়া (৩৬.৩৮ শতাংশ) এবং হিমায়িত খাদ্য (৫৩.৬২ শতাংশ) প্রভৃতি ।
সরকার রপ্তানী খাতকে সহায়তার জন্য ইতঃপূর্বে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের বেশকিছু সুবিধা বর্তমানেও অব্যাহত রেখেছে। পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার অন্বেষণের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজে ঘোষিত New Market Exploration Assistance এর আওতায় উদ্যোক্তাদের বর্ধিত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন বাজার হিসেবে জাপান, কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানির বাজার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সম্ভাবনাময় নতুন রপ্তানি খাত জাহাজ শিল্পেও সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। জানুয়ারি ২০১১ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে Generalised System of Preference (GSP)-এর আওতায় Rules of Origin শিথিল করায় এ অঞ্চলে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায় ।
আমদানি Import
২০১৩-১৪ অর্থবছরের মার্চ ২০১৪ পর্যন্ত মোট আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯,৭৭৩.৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৯-১০ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১০) আমদানি ব্যয় (সিআইএফ) পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৫৩ শতাংশ হ্রাস পেলেও অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকে এবং এ সময়ে ১৭.৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। সার্বিকভাবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে আমদানি ব্যয় ৫.৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৩,৭৩৮.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌছে । ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ, ২০১১) আমদানি ব্যয় ৪০.৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৪,১২৮.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে । বিনিয়োগ বৃদ্ধি বিশেষ করে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি, শিল্পের কাঁচামাল ও খাদ্যপণ্য আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সার্বিকভাবে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। অবশ্য আন্ত জার্তিক বাজারে জ্বালানিসহ পণ্যমূল্য বৃদ্ধিও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিতে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে । আমদানি পণ্যের ধরন থেকে দেখা যায় যে, ঋণপত্র নিষ্পত্তির ভিত্তিতে জুলাই-মার্চ, ২০১১ সময়ে পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মূলধনী যন্ত্রপাতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৩.৯৮ শতাংশ, শিল্পের কাঁচামাল ৫২.৪৩ শতাংশ, পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য ৪২.৯৭ শতাংশ এবং ভোগ্যপণ্য ৩২.৩২ শতাংশ । এ সময়ের মোট আমদানি নিরিখে এ খাতসমূহের অংশ হলো যথাক্রমে ৬.৫ শতাংশ, ৩৯.২৯ শতাংশ, ৯.৭৮ শতাংশ এবং ১১.৩০ শতাংশ। ঋণপত্র খোলার ভিত্তিতে এ সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পের কাঁচামালের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৬৯.৭৬ শতাংশ ও ৬৬.৪৩ শতাংশ, যা অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ইংগিত বহন করে ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]