মুদ্রা ও আর্থিক বাজার সংস্কার Money and Financial Market Reforms<

মুদ্রা ও আর্থিক বাজার সংস্কার Money and Financial Market Reforms
মুদ্রা ও আর্থিক বাজার সংস্কার, আন্তর্জাতিক মানের ব্যাংক ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও দেশের সামগ্রিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার ভিত্তি আরও মজবুত, সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । ২০১১-১২ অর্থবছরে (জুলাই মার্চ সময়ে) গৃহীত এরূপ উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলো ছিল নিম্নরূপ ।
১। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তিকে সুসংহতকরণের লক্ষ্যে ব্যাসল-২ নীতিমালার আলোকে মূলধন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো ঋণ ঝুঁকি (Credit Risk), বাজার (Market) ও কার্যসম্পাদন (Operational) ঝুঁকি ছাড়াও তাদের সুপারভাইজরী রিভিউ প্রসেস এর আওতায় সামগ্রিক ঝুঁকির বিপরীতে পর্যাপ্ত মূলধন নিরূপণের পাশাপাশি অতিরিক্ত অন্যান্য সকল বস্তুগত ঝুঁকির বিপরীতে পর্যাপ্ত মূলধন সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ।
২। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কর্তৃক Hybrid মূলধন উপাদান হিসেবে Subordinated Debt ইস্যুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতোমধ্যে ৮টি ব্যাংককে Subordinated Debt ইস্যুর অনুমতি প্ৰদান ।
৩। মার্চেন্ট ব্যাংকিং, সিকিউরিটি ব্রোকারেজসহ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত অন্যান্য এ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী Consolidated/ Solo ভিত্তিতে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতের পাশাপাশি Solo ভিত্তিতে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতের ক্ষেত্রে সাবসিডিয়ারী প্রতিষ্ঠানে মূলধনী বিনিয়োগ ব্যাংকের প্রথম স্তর (Tire-1) মূলধন হতে ৫০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় স্তর (Tire - 2 ) মূলধন হতে ৫০ শতাংশ হারে বাদ দিয়ে হিসাবভুক্তিসহ ব্যাংকের সম্পদ পার্শ্বে-প্রদর্শিত উক্ত বিনিয়োগের সম্পূর্ণ অংশ বাদ দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান ।
৪ । ব্যাংকসমূহের সুপারভাইজরি রিভিউ প্রসেস মূল্যায়নের লক্ষ্যে Guidelines on Supervisory Evaluation Process (SREP) ইস্যু করার পাশাপাশি ব্যাসেল-২ এর ২য় পিলারের নীতিমালার আলোকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও মূলধন সংরক্ষণের মধ্যে সংযোগ স্থাপনপূর্বক স্ব স্ব ব্যাংক কর্তৃক নিজস্ব সুপারভাইজরি রিভিউ প্রসেস ডকুমেন্ট প্রণয়ন এবং সামগ্রিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সাথে সংযোগ রেখে মূলধন সংরক্ষণের নির্দেশ প্রদান ।
৫। সরকারি ট্রেজারী বিল/বন্ডের Markign to Market ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ন থেকে উদ্ভূত ক্ষতি রোধ করে তারল্য বৃদ্ধির প্রয়োজনে সরকারি সিকিউরিটিজ ধারণকারী প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদত্ত Liquidity support প্রত্রিয়াটি সহজতর করে তা Outright buy /sell এর পরিবর্তে Collateralized Repo লেনদেন হিসেবে বিবেচনাকরণ ।
৬। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের অভিহিত মূল্যের ওপর যথাক্রমে ১৫.০ শতাংশ এবং ৫.০ শতাংশ মার্জিন প্রয়োগপূর্বক অভিহিত মূল্যের অবশিষ্ট অর্থ Liquidity support হিসেবে প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ।
৭। তারল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাংকসমূহের ঋণ প্রদান সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে শুধুমাত্র সরকারি সিকিউরিটিজের প্রাইমারি ডিলারদের জন্য সাময়িকভাবে HTM (Held to Maturity) সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের পরিমাণ সংশ্লিষ্ট মাসে রক্ষিত সহজে বিনিয়োগযোগ্য সম্পদের ৮৫.০ শতাংশে উন্নীতকরণ । পুঁজি বাজার Capital Market
যে বাজারে দীর্ঘমেয়াদী ঋণপত্র এবং ঋণদানযোগ্য তহবিল নিয়ে কার্যক্রম চলে তাকে পুঁজি বাজার বা মূলধন বাজার বলে । পুঁজি বাজার বা মূলধন বাজারের কাঠামো দুই ধরনের হয়, ১। স্বল্পমেয়াদী ও ২। দীর্ঘমেয়াদী । প্রথম অংশে স্বল্পমেয়াদী সরকারী বণ্ড এবং বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার ঋণপত্রের লেনদেন হয় । দ্বিতীয় অংশে দীর্ঘমেয়াদী ঋণপত্রের ক্রয়-বিক্রয় হয়। পুঁজি বাজার বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্যকরী বা চলতি মূলধন এবং স্থায়ী মূলধনের যোগান দেয় ।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অত্যন্ত তেজিভাব থাকলেও মন্দা-পরবর্তী সময়ে পুঁজি বাজারে বড় ধরনের মূল্য সংশোধন ঘটে । ২০১০-১১ অর্থবছরের জুন মাস শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর বাজার মূলধন দাঁড়ায় জিডিপি'র ৪১.০ শতাংশ, যা ২০০৯-১০ ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জুন মাস শেষে ছিল যথাক্রমে জিডিপি'র ৩৯.০ ও ২১.৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাস শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে জিডিপি'র ৩৩.৭৭ শতাংশে। অনুরূপভাবে ২০০৯-১০ জুন মাস শেষে ডিএসই'র সাধারণ মূল্যসূচক পূর্ববর্তী অর্থবছরের জুন মাস শেষে ৩,০১০.২৬ থেকে ৯৮.৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬,১৫৩.৬৮ এ দাড়ায়। ডিসেম্বর ২০১০ মাস শেষে ডিএসই'র সাধারণ মূল্যসূচক ৮,২৯০.৪১ এ পৌঁছে যা, জুন ২০১০ এর তুলনায় ৩৪.৭২ শতাংশ বেশী । একইভাবে বাজার মূলধন জিডিপি'র ৪৪.১ শতাংশে পৌঁছে। জানুয়ারি ২০১১ মাসের শুরু থেকেই পুঁজিবাজারে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয় এবং মূল্য সংশোধন ঘটতে থাকে । সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৫ মে ২০১২-এ ডিএসই'র সাধারণ মূল্যসূচক হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৫,১৬১.২৩-এ, যা ডিসেম্বর ২০১০ এর তুলনায় ৩৭.৭৫ শতাংশ কম। উল্লেখ্য, জুন ২০০৯ এ বিও (Benificiary owners) একাউন্টের সংখ্যা ১৪.১৫ লক্ষ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে জুন ২০১০-এ দাঁড়ায় ২৫.৬৪ লক্ষে এবং জুন ২০১১-এ ২৬.৫০ লক্ষে দাঁড়ায় । ফেব্রুয়ারি ২০১২ মাসে বিও একাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮.১৩ লক্ষে । Price Earnings (P/E) Ratio জনুয়ারি ২০১১-এর ২৯.৩৫ থেকে কমে জুন ২০১১-এ ১৬.৫৫ এবং ফেব্রুয়ারি ২০১২-এ ১২.০৪ এ দাঁড়িয়েছে ।
সরকার পুঁজি বাজারের উদ্ভূত অস্থিরতা কাঁটিয়ে পুঁজি বাজারের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং বাজারকে যথাযথভাবে পরিচালনার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে তা সংশোধন ও পরিমার্জন করার মাধ্যমে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে । প্রাইভেট প্লেসমেন্ট এর মাধ্যমে প্রাইমেট লিমিটেড কোম্পানি এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধির জন্য নতুন বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংক-এর কার্যক্রমে অধিকতর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা আনয়ন করার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার বিধিমালায় সংশোধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে । সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্পন্সরদের উক্ত কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করা এবং কোম্পানি পরিচালকদের ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জর মালিকানা, ব্যবস্থাপনা ও ট্রেডিং কার্যক্রম পৃথক করার লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন (Demutualization of stock exchange) এর কাজ চলছে । গৃহীত এসব ব্যবস্থার ফলে আশা করা যায় যে, পুঁজি বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]