অর্থনৈতিক ব্যবস্থাসমূহে অর্থনৈতিক সমস্যা ও সমাধান

মানুষের সব অভার পূরণ করা যায় না। সেজন্য মানুষ নির্বাচন প্রμিয়া অনুসরণ করে। নির্বাচন করতে গিয়ে সমাজকে তিন
ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। যে পদ্ধতিতে সমাজ কি, কিভাবে এবং কার জন্য এই প্রশ্নগুলোর সমাধান খুঁজে বের করে
সেটিই হচ্ছে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।
অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি সমাজ উৎপাদন, সম্পদের বন্টন ও বিনিময় এবং দ্রব্য ও
সেবার ভোগ এসবের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান প্রμিয়ার উপর ভিত্তি করে পৃথিবীতে বিভিন্ন
অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে:
১. ধনতান্ত্রিক বা বাজার অর্থব্যবস্থা।
২. সমাজতান্ত্রিক বা নির্দেশমূলক অর্থব্যবস্থা।
৩. মিশ্র অর্থব্যবস্থা।
৪. ইসলামী অর্থব্যবস্থা।
চিত্র ২.১.১ বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা
ধনতান্ত্রিক বা বাজার অর্থব্যবস্থা (ঈধঢ়রঃধষরংঃরপ ড়ৎ গধৎশবঃ ঊপড়হড়সরপ ঝুংঃবস)
যে অর্থব্যবস্থায় প্রতিটি ব্যক্তি বা ফার্ম উৎপাদন, বন্টন ও ভোগের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে এবং বাজার ব্যবস্থা
সরকারি হস্তক্ষেপমুক্ত থাকে, তাকে ধনতান্ত্রিক বা বাজার অর্থব্যবস্থা বলে। এ ধরনের বাজার ব্যবস্থায় প্রতিটি ব্যক্তি বা ফার্ম
কোথায় বিনিয়োগ করবে, কি উৎপাদন বা বিμয় করবে, কি দামে দ্রব্য বা সেবা বিনিময় করবে- এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার
ধনতান্ত্রিক বা বাজার
অর্থব্যবস্থা
সমাজতান্ত্রিক বা
নির্দেশমূলক অর্থব্যবস্থা
মিশ্র অর্থব্যবস্থা ইসলামী অর্থব্যবস্থা
অর্থনৈতিক ব্যবস্থা
অর্থনীতি ১ম পত্র
ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকে। অর্থাৎ ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় দ্রব্য বা সেবার দাম বাজারে চাহিদা ও যোগান এর মাধ্যমে নির্ধারিত
হয়। এখানে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বর্তমানে পুরোপুরি ধনতান্ত্রিক বাজার
অর্থব্যবস্থা না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার প্রায় কাছাকাছি অর্থব্যবস্থা
বিদ্যমান।
ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য ১. সম্পদের ব্যক্তি মালিকানা: ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় সম্পদ ও উৎপাদনের উপকরণ ব্যক্তি মালিকানার উপর ন্যস্ত
থাকে।
২. অবাধ প্রতিযোগিতা: সরকারের কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মুক্ত প্রতিযোগিতা বিদ্যমান থাকে।
৩. ভোক্তার স্বাধীনতা: এখানে প্রত্যেকের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বিদ্যমান। কি, কখন এবং কিভাবে উৎপাদন করা হবে
সম্পদের মালিক সে সিদ্ধান্ত নেয়।
৪. দাম ব্যবস্থা: চাহিদা ও যোগান ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় দ্রব্য ও সেবার দাম স্বয়ংμিয়ভাবে নির্ধারণ করে। চাহিদার স্থিত
অবস্থায় যোগান বাড়লে দাম কমে। আবার যোগানের স্থিত অবস্থায় চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে।
৫. মুনাফা অর্জন: উৎপাদন থেকে প্রাপ্ত আয় ও উৎপাদন ব্যয়ের মধ্যে ব্যবধানকে মুনাফা বলে। উৎপাদক সর্বনি¤œ খরচে সর্বোচ্চ উৎপাদন করে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করে।
৬. সমাজের শ্রেণিবিভাগ: ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পদের ভিত্তিতে সমাজের শ্রেণিবিভাগ করা যায়। তুলনামূলকভাবে
উচ্চবিত্তের সম্পদের মালিকানা সবচেয়ে বেশি, নি¤œবিত্তের সবচেয়ে কম এবং মধ্যবিত্ত মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে। এই
শ্রেণিবিভাগ থেকে সামাজিক বৈষম্যের চিত্রও পাওয়া যায়।
৭. অসম বণ্টন: ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় আয় ও সম্পদ বন্টনে অসমতা বা বৈষম্য দেখা যায়। সম্পদের ব্যক্তি মালিকানা
থাকায় সম্পদের বন্টন অসম হয়। এক্ষেত্রে যার সম্পদ যত বেশি তার আয় তত বেশি।
ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় উৎপাদন, বন্টন ও দাম প্রμিয়া এবং উৎপাদনের উপায়সমূহ সম্পূর্ণ ব্যক্তিমালিকানাধীন। এখানে
সর্বাধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে উৎপাদন কাজ পরিচালিত হয়। বাজার নিয়ন্ত্রিত হয় স্বয়ংμিয় দাম ব্যবস্থার মাধ্যমে।
এখানে ভোক্তা বা ফার্মের সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা থাকে। এ কারণে এ ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যে দ্রব্য বা সেবা
উৎপাদনে মুনাফা বেশি, ফার্মসমূহ সেই পণ্য উৎপাদন করে। এভাবে ‘কি’ প্রশ্নটির উত্তর পাওয়া যায়। আবার যে প্রযুক্তিতে
ব্যয় কম হবে বা উৎপাদন লাভজনক হবে সে পদ্ধতিতেই উৎপাদন হবে। এভাবে ‘কি’ প্রশ্নটির উত্তর পাওয়া যায়। আবার
যে প্রযুক্তিতে ব্যয় কম হবে বা উৎপাদন লাভজনক হবে সে পদ্ধতিতেই উৎপাদন হবে। যা ‘কিভাবে’ প্রশ্নটির সমাধান
করে। অন্যদিকে ভোক্তাদের সামর্থ্যরে উপর নির্ভর করে সামাজিক উৎপাদন তাদের মধ্যে বণ্টিত হয়। এভাবে ‘কার জন্য’
প্রশ্নটির উত্তর পাওয়া যায়।
এ ধরনের অর্থব্যবস্থায় দাম প্রμিয়া স্বয়ংμিয় বাজার ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। যা আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি।
অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথের ভাষ্য অনুযায়ী ‘অদৃশ্য হাত’ (রহারংরনষব যধহফ) দ্বারা বাজার ব্যবস্থা পরিচালিত। এখানে
চাহিদা যোগানের চেয়ে বেশি হলে দাম বৃদ্ধি পাবে। ফলে চাহিদার পরিমাণ হ্রাস পাবে। আবার চাহিদার চেয়ে যোগান
বেশি হলে দাম হ্রাস পাবে। এতে চাহিদার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এভাবে স্বয়ংμিয়ভাবে দামের ওঠানামাকে ‘অদৃশ্য হাত’
দ্বারা আখ্যায়িত করা হয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক বা নির্দেশনামূলক অর্থব্যবস্থা (ঝড়পরধষরংঃরপ ড়ৎ ঈড়সসধহফ ঊপড়হড়সরপ ঝুংঃবস)
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা এক ধরনের নির্দেশনামূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। এই অর্থব্যবস্থা ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার ঠিক
বিপরীত। যে অর্থব্যবস্থায় সম্পদ ও উৎপাদন উপকরণের মালিকানা রাষ্ট্রের এবং সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কেন্দ্রীয়
সরকারের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয় তাকে সমাজতান্ত্রিক বা নির্দেশনামূলক অর্থব্যবস্থা বলে। এ অর্থব্যবস্থায় দ্রব্যের দাম
নির্ধারণে স্বয়ংμিয় বাজার ব্যবস্থার কোনও ভূমিকা থাকে না এবং উৎপাদিত দ্রব্য ভোগ ও বন্টনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে।
১৯১৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে ভ−াদিমির লেনিন সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে চীন, কিউবা, উত্তর
কোরিয়া, সাবেক পূর্ব জার্মানীসহ কিছু দেশে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু হয়।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য (ঋবধঃঁৎবং ড়ভ ঝড়পরধষরংঃরপ ঊপড়হড়সরপ ঝুংঃবস)
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যসমূহ নিচে আলোচনা করা হলো:
১. সম্পদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা: সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সম্পদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা। এ
ধরনের অর্থব্যবস্থায় সম্পদ ও উৎপাদনের উপকরণ ব্যক্তি মালিকানায় থাকে না। সকল সম্পদের মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে ন্যস্ত।
২. অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত: অর্থনৈতিক সকল কর্মকান্ড, যথা- দ্রব্য বা সেবার দাম নির্ধারণ, শ্রমিকদের মজুরি
নির্ধারণ, উৎপাদন, বণ্টন ও উন্নয়নের সকল পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকারের একচেটিয়া সিদ্ধান্তে পরিচালিত হয়।
৩. সামাজিক কল্যাণ: সমাজতন্ত্রে মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার ক্ষেত্রে অসমতা দূর করে সর্বাধিক কল্যাণ নিশ্চিত করা হয়।
৪. ভোগ ও বণ্টন ব্যবস্থা: এ অর্থব্যবস্থায় কোন দ্রব্য কতটুকু উৎপাদিত হবে, কে কতটুকু দ্রব্য ভোগ করবে তা
রাষ্ট্রীয়ভাবেই নির্ধারিত হয়। এখানে সমাজে যে যতটুকু অবদান রাখবে সে অনুপাতে বণ্টন করা হয়। ফলে এখানে
জাতীয় আয়ের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হয়।
৫. দাম ব্যবস্থা: এ অর্থব্যবস্থায় স্বয়ংμিয়ভাবে দ্রব্যের দাম নির্ধারণ হয় না। অর্থাৎ দ্রব্য বা সেবার দাম স্বয়ংμিয় বাজার
ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল নয়। এখানে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে দ্রব্য বা সেবা দাম নির্ধারিত হয়। এ কারণে
সমাজতন্ত্রে অবাধ প্রতিযোগিতা অনুপস্থিত।
৬. মুদ্রাস্ফীতির অনুপস্থিতি: যেহেতু সমাজতন্ত্রে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে এবং দাম ব্যবস্থা অনুপস্থিত, সেহেতু
মুদ্রাস্ফীতির উদ্ভব ঘটে না।
৭. শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা: সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তি পর্যায়ে সম্পদের মালিকানা না থাকায় শ্রেণি বিভেদ থাকে
না। তাই কেউ কাউকে শোষণ করার সুযোগ নেই।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান (ঝড়ষঁঃরড়হ ড়ভ ইধংরপ ঊপড়হড়সরপ চৎড়নষবস রহ
ঝড়পরধষরংঃরপ ঊপড়হড়সরপ ঝুংঃবস)
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় রাষ্ট্রই সকল ক্ষমতার ধারক। এখানে অর্থনৈতিক কার্যμম যথা: উৎপাদন, বন্টন, বিনিময় ও
ভোগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান, এই ধরনের অর্থব্যবস্থায় রাষ্ট্র কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার মৌলিক তিনটি সমস্যার
সমাধান করে দেয়। এখানে একদিকে ভোক্তা যেমন তার ইচ্ছা ও সামর্থ্য অনুযায়ী দ্রব্য বা সেবা ভোগ করতে পারে না
অন্যদিকে উৎপাদকও দ্রব্যের চাহিদা ও সামর্থ্য অনুসারে দ্রব্য উৎপাদন করে। এখানে কি উৎপাদিত হবে এবং কি পরিমাণ
উৎপাদিত হবে তা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশিত হয়। একইভাবে, কিভাবে দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদিত হবে বা কোন প্রযুক্তি ব্যবহৃত
হবে তাও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিচালিত হয়। সবশেষে, আয় ও সম্পদের বণ্টনও নির্ধারিত হয় কেন্দ্রীয় সরকার
কর্তৃক। সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তিগত মুনাফা সর্বোচ্চকরণ নয় বরং সামাজিক কল্যাণের জন্য সকল অর্থনৈতিক
কর্মকাÐ পরিচালিত হয়।
ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য
পার্থক্যের বিষয় ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা
সংজ্ঞা ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা হচ্ছে এমন একটি অর্থনৈতিক
ব্যবস্থা যেখানে মুক্ত বাজার এবং ব্যক্তি মালিকানা
বিদ্যমান। অর্থাৎ সম্পদের মালিকানা, উৎপাদন, বণ্টন,
ভোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তির পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা হচ্ছে এমন একটি অর্থনৈতিক
ব্যবস্থা যেখানে সকল সম্পদ ও ক্ষমতা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন।
অর্থাৎ এখানে ব্যক্তিগত মালিকানা নেই এবং উৎপাদন,
বণ্টন, ভোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তির স্বাধীনতাও থাকে না। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা
এ অর্থব্যবস্থায় বাজার ব্যবস্থা বিদ্যমান। জনগণ
উৎপাদনের উপকরণসমূহের মালিক। মুনাফার
উদ্দেশ্যে দ্রব্য বা সেবা উৎপাদিত এবং বিμি হয়ে
থাকে।
এ অর্থব্যবস্থায় উৎপাদনের উপায়সমূহের মালিকানা রাষ্ট্র বা
কেন্দ্রীয় সরকারের। এখানে সামাজিক কল্যাণ সাধনের
লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাÐ পরিচালিত হয়।
সামাজিক
শ্রেণীবিন্যাস
মূলধনের উপর ভিত্তি করে এ ধরনের অর্থব্যবস্থায়
সমাজে শ্রেণী বৈষম্য দেখা যায়। কিছু সংখ্যক
পুঁজিপতি বা ধনবান লোকের হাতে উৎপাদনের
উপায়সমূহ কুক্ষিগত থাকে। অন্যদিকে শ্রমজীবি মানুষ
তাদের মজুরি বা বেতনের উপর নির্ভর করে। এখানে
শ্রেণি বিরোধ বিদ্যমান।
এ অর্থব্যবস্থায় যেহেতু সমাজে যার যার অবদান অনুযায়ী
আয়ের বণ্টন হয়ে থাকে সেহেতু শ্রেণি বৈষম্য নেই। এ
কারণে শ্রেণি শোষণও নেই। অবাধ প্রতিযোগিতা
এখানে স্বয়ংμিয় বাজার ব্যবস্থা বা অবাধ প্রতিযোগিতা বিদ্যমান।
স্বয়ংμিয় বাজার ব্যবস্থা বা অবাধ প্রতিযোগিতা নেই।
মিশ্র অর্থব্যবস্থা (গরীবফ ঊপড়হড়সরপ ঝুংঃবস)
ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার সংমিশ্রণই হচ্ছে মিশ্র অর্থব্যবস্থা। অর্থাৎ মিশ্র অর্থব্যবস্থা এমন একটি অর্থনৈতিক
ব্যবস্থা যেখানে উৎপাদন, ভোগ, বণ্টন ইত্যাদি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্বয়ংμিয় বাজার ব্যবস্থার সাথে সাথে সরকারি নিয়ন্ত্রণ
ব্যবস্থার সংমিশ্রণ ঘটে। এ ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় অনেক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত ব্যক্তি বা ফার্ম বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে
নিয়ে থাকে। আবার সরকারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বর্তমান সময়ে কোন অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই বিশুদ্ধ ধনতান্ত্রিক বা বিশুদ্ধ সমাজতান্ত্রিক নয়। অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশসমূহে
এ দু’ধরনের অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যসমূহ দেখা যায়। অর্থাৎ এসব দেশে মিশ্র অর্থনীতি বিদ্যমান। যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান,
ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে মিশ্র অর্থব্যবস্থা প্রচলিত।
মিশ্র অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
১. সম্পদের মালিকানা: এ অর্থব্যবস্থার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে সম্পদের রাষ্ট্রীয় মালিকানার পাশাপাশি ব্যক্তি
মালিকানা বিদ্যমান। আবার উৎপাদনের উপায়সমূহের ক্ষেত্রেও ব্যক্তি মালিকানার পাশাপাশি সরকারি মালিকানা স্বীকৃত।
২. ব্যক্তিগত ও সরকারি খাতের সহাবস্থান: মিশ্র অর্থনীতিতে ব্যক্তিগত ও সরকারি খাত পাশাপাশি অবস্থান করে। এখানে
ব্যক্তিগত ও সরকারি খাতের শিল্প কারখানা একত্রে কাজ করে। এই অর্থনীতিতে ব্যক্তিগত খাতে মুনাফা অর্জনই লক্ষ্য তবে
সরকারি খাতে সামাজিক কল্যাণকে বেশী প্রাধান্য দেয়া হয়। অনেক সময় ব্যক্তিগত খাতের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও বিধি
নিষেধ আরোপ করা হয়।
৩. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: এখানে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে
বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাকে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার সাথে সমন্বয় করা হয়।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]