জাতীয় আয় পরিমাপের বিভিন্ন পদ্ধতি
 দ্বৈত গণনা সমস্যা
মূল্যসংযোজন পদ্ধতিতে জাতীয় আয় পরিমাপের সুবিধা

জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতি (গবঃযড়ফং ড়ভ ঘধঃরড়হধষ ওহপড়সব গবধংঁৎবসবহঃ)
একটি দেশের জাতীয় আয় পরিমাপের জন্য তিনটি ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। পদ্ধতি তিনটি হলো ঃ
 উৎপাদন পদ্ধতি
 আয় পদ্ধতি
 ব্যয় পদ্ধতি
যৌক্তিকভাবে বিচার করলে কোন দেশ এ তিনটি পদ্ধতির যে কোনটি ব্যবহার করতে পারে। কারণ কিছুটা সমন্বয় সাধন
সাপেক্ষে তিনটি পদ্ধতি একই ফলাফল প্রদান করবে। তবে কোন দেশ কোন পদ্ধতি ব্যবহার করবে তা নির্ভর করবে সে
দেশে প্রাপ্ত তথ্য এবং তথ্যের সত্যতা বা নির্ভূলতার উপর। আলাদা আলাদাভাবে প্রতিটি পদ্ধতিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যে
কোন একটি পদ্ধতি পৃথকভাবে একটি অর্থনীতির সার্বিক কার্যপ্রণালী এবং বিভিন্ন খাতের কর্মকান্ডের সামগ্রিক চিত্র প্রদান
করতে সক্ষম নয়। তাই সব কয়টি পদ্ধতির যুগপৎ ব্যবহার যেমন অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে, তেমনি
জাতীয় আয়ের হিসাবের নির্ভূলতা এবং সামঞ্জস্য পরীক্ষা করতে সহায়তা করে। এখন আমরা পৃথক পৃথকভাবে পদ্ধতি
তিনটির ব্যবহার প্রণালী ব্যাখ্যা করব।
উৎপাদন পদ্ধতি (চৎড়ফঁপঃ গবঃযড়ফ)
মোট জাতীয় উপাদানের সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে আমরা উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা পাই। উৎপাদন
পদ্ধতিতে জাতীয় আয় হলো একটি নির্দিষ্ট বছরে একটি অর্থনীতিতে উৎপাদিত সকল চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবার বাজার মূল্য।
আমরা জানি, একটি দেশ কোন নির্দিষ্ট বছরে চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণে মাধ্যমিক দ্রব্যও উৎপাদন
করে থাকে।
জাতীয় আয় পরিমাপ: একটি উদাহরণ
মনে করি, একটি দেশে দুটি মাত্র চূড়ান্ত দ্রব্য- রুটি ও মাখন উৎপাদিত হয়। প্রতিটি রুটির
দাম ২০ টাকা এবং প্রতি কেজি মাখনের দাম ৫০ টাকা। আরো মনে করি, প্রতি বছর ১০০টি
রুটি এবং ২০ কেজি মাখন উৎপাদিত হয়। এ কাল্পনিক উদাহরণে, দেশটির জাতীয় আয়
হবে (১০০২০) + (২০৫০) = ৩০০০ টাকা।

সুতরাং জাতীয় আয় পরিমাপের সময় অত্যন্ত সতর্কতার সাথে মাধ্যমিক দ্রব্যসামগ্রীকে হিসেব থেকে বাদ দিতে হবে।
অন্যথায়, একই দ্রব্যের মূল্য একাধিকবার হিসেব করা হতে পারে। অর্থনীতিতে এটাকে দ্বৈত-গণনার সমস্যা
বলা হয়। দ্বৈত-গণনা অর্থাৎ মাধ্যমিক ও চূড়ান্ত দ্রব্যসামগ্রী আলাদাভাবে হিসেব করলে জাতীয় আয়
প্রকৃত স্তর অপেক্ষা অধিক পরিমাপ ( করা হবে। একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক।
একজন আসবাবপত্র প্রস্তুতকারী কাঁচামাল হিসেবে কাঠ (মাধ্যমিক দ্রব্য) ব্যবহার করে থাকে যা সে করাতকলের মালিক
থেকে কিনে নেয়। আবার, করাতকলের মালিক গাছ (মাধ্যমিক দ্রব) চিরে কাঠ তৈরি করে, গাছ সে অন্যের কাছ থেকে
কিনে নেয়। মনে করি, গাছের মূল্য ১০ হাজার টাকা, প্রস্তুতকৃত কাঠের মূল্য ১৫ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্রের
বিμয়মূল্য ২০ হাজার টাকা। উৎপাদন পদ্ধতি অনুযায়ী, এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আসবাবপত্রের মূল্য জাতীয় আয়ের অন্তর্ভূক্ত
হবে। কারণ গাছ ও কাঠের মূল্য আসবাবপত্রের মূল্যে অন্তর্ভূক্ত। এখন যদি গাছ, কাঠ ও আসবাবপত্রের মূল্য পৃথক
পৃথকভাবে হিসেব করা হয় তাহলে পরিমাপকৃত জাতীয় আয় প্রকৃত জাতীয় আয় অপেক্ষা বেশি হবে। আলোচ্য উদাহরণে
যদিও প্রকৃত জাতীয় আয় ২০ হাজার টাকা, মাধ্যমিক দ্রব্যের অন্তর্ভূক্তির ফলে পরিমাপকৃত জাতীয় আয় হবে
(১০+১৫+২০) = ৪৫ হাজার টাকা। দ্বৈত গণনার সমস্যা এড়ানোর জন্য শুধুমাত্র চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবার মূল্য বিবেচনা করা
হয় বলে এ পদ্ধতিকে চূড়ান্ত উৎপাদন পদ্ধতিও বলা হয়।
দ্বৈত গণনার সমস্যা এড়ানোর দ্বিতীয় কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে মূল্য সংযোজন পদ্ধতি । এ
পদ্ধতিতে উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে ব্যবহৃত বস্তুগত উপকরণ এবং উৎপন্নেরমূল্যের
পার্থক্যসমূহ যোগ করে জাতীয় আয় পরিমাপ করা হয়। চূড়ান্ত উৎপাদন পদ্ধতি এবং মূল্য সংযোজন পদ্ধতির যে কোন
একটি ব্যবহার করে জাতীয় আয় পরিমাপ করা যায়। কারণ যৌক্তিকভাবে উভয় পদ্ধতি একই ফলাফল প্রদান করে।
উপরের উদাহরণে, গাছ থেকে কাঠ তৈরিতে মূল্য সংযোজন হচ্ছে (১৫-১০) = ৫ হাজার টাকা এবং কাঠ থেকে
আসবাবপত্র তৈরিতে মূল্য সংযোজন হচ্ছে (২০-১৫) = ৫ হাজার টাকা। গাছে প্রাথমিক মূল্য ১০ হাজার টাকা। সুতরাং
মূল্য সংযোজন পদ্ধতিতে জাতীয় আয় = (১০+৫+৫) = ২০ হাজার টাকা যা চূড়ান্ত দ্রব্য আসবাবপত্রের মূল্যের সমান।
তবে মূল্য সংযোজন পদ্ধতির অতিরিক্ত সুবিধা হচ্ছে, এ পদ্ধতিতে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অবদান সম্পর্কে তুলনামূলক
ধারণা লাভ করা যায়।
মূল্য-সংযোজন: চূড়ান্ত দ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হবার পূর্ব পর্যন্ত কোন কোন দ্রব্যসামগ্রী একাধিক উৎপাদন স্তর অতিμম
করে আসে। প্রতিটি স্তরে প্রাথমিক বস্তুগত উপকরণটি (সধঃবৎরধষ রহঢ়ঁঃ) শ্রম ও অন্যান্য উপকরণের সহায়তা ও
সংমিশ্রণে ভিন্ন আকার ও আকৃতিপ্রাপ্ত হয়ে অন্য একটি বস্তুগত উপকরণ বা চূড়ান্ত দ্রব্যে রূপান্তরিত হয় যা পূর্বের চেয়ে
অধিক দাম বা মূল্য দাবী করে। উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে দ্রব্যের দাম বা মূল্যের অতিরিক্ত সংযোজনকে মূল্য-সংযোজন
বলে। উদাহরণস্বরূপ মনে করা যাক, ১০০০ টাকার আখ থেকে শ্রম ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে ১৫০০ টাকার চিনি
তৈরি করা হলো। এক্ষেত্রে মূল্য-সংযোজন হলো (১৫০০-১০০০) = ৫০০ টাকা।
শিক্ষার্থীর কাজ
বাংলাদেশের জাতীয় আয় পরিমাপের সময় কোন ক্ষেত্রে সাধারণত: দ্বৈতগণনার সমস্যা দেখা দেয়? চিন্তা করুন ও লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]