নিখুঁত প্রতিযোগিতার বৈশিষ্ট্যগুলো লিখুন। নিখুঁত প্রতিযোগিতায় ভারসাম্য বিন্দুর শর্তগুলো কি?

নিখুঁত প্রতিযোগিতার ধারণাটি অনেকদিন থেকেই অর্থশাস্ত্রে গুরুত্ব নিয়ে অবস্থান করছে। এ্যাডাম
স্মীথের ডবধষঃয ড়ভ ঘধঃরড়হ গ্রন্থে এই ধারণাটি আলোচিত হয়েছে কিন্তুতা কোন সুনির্দিষ্ট কাঠামো
পায়নি। ১৮৮১ সালে এজওয়ার্থ (ঊফমবড়িৎঃয) তাঁর লেখা গ্রন্থে এই
ধারণাটি একটি সুসংবদ্ধ কাঠামোতে উপস্থিত করার চেষ্টা করেন। ধারণাটি সম্পূর্ণ একটি চিত্র পায়
ফ্রাংক নাইটের লেখায়, ১৯২১ সালে।
নিখুঁত প্রতিযোগিতার বৈশিষ্ট্য
বাজারের যে কয়টি ধরন বর্তমান মূলধারার অর্থশাস্ত্রে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয় নিখুঁত
প্রতিযোগিতামূলক বাজার তার কেন্দ্রীয় অবস্থানে আছে। এটি এমন একটি চরম অবস্থা সম্পর্কে
বিশ্লেষণ করে যার বাস্তব অস্তিত্ব সম্পর্কে সকলেই সন্দিহান। তত্ত¡ অনুযায়ী, আমরা একটি বাজারকে
নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজার বলতে পারবো যখন তা নি¤েœাক্ত শর্তগুলি পূরণ করবে।
ক. অসংখ্য প্রতিষ্ঠান: এই বাজারে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান কাজ করবে। অসংখ্য হবার ফলে প্রত্যেকটি
প্রতিষ্ঠানের অংশ এতই ক্ষুদ্র হবে যে, পুরো উৎপাদন ও দাম নির্ধারণে তার কোন প্রভাব থাকবে
না। আর প্রবেশ বা প্রস্থানও বাজারের উপর কোন প্রভাব ফেলবে না। এখানে উৎপাদনী
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো দাম গ্রহীতা কোন ভাবেই দাম নির্ধারক (ঢ়ৎরপব সধশবৎ)
নয়।
খ. অসংখ্য ক্রেতা: এই বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও থাকে অসংখ্য। অসংখ্য ক্রেতা বাজারে উপস্থিত
থাকবার ফলে কোন একক ক্রেতার পক্ষে বাজারের উপর আলাদা কোন প্রভাব সৃষ্টি করা সম্ভব
হবে না। কোন একক ক্রেতার প্রবেশ বা প্রস্থান দিয়েও বাজারের কার্যক্রম প্রভাবিত হবে না।
গ. তথ্যের অবাধ প্রবাহ: এই বাজারে কোন তথ্যই গোপন নয়। দ্রব্যের মান, বিক্রেতার কৌশল
কোনকিছুই তাই ভোক্তাকে প্রতারণা করতে পারে না। সকল তথ্য প্রকাশিত থাকবার ফলে বাজার
কেবলমাত্র নৈর্ব্যক্তিক প্রক্রিয়া দ্বারাই পরিচালিত হয়।
ঘ. দ্রব্যের সমরূপতা: এই বাজারে সমরূপ দ্রব্যই উপস্থিত থাকে। অর্থাৎ সকল প্রতিষ্ঠানই এই
বাজারে একই দ্রব্য উৎপাদন করে।
ঙ. প্রবেশ ও প্রস্থানের স্বাধীনতা: এই বাজারে প্রবেশ বা এই বাজার থেকে প্রস্থানের ব্যাপারে
কোনরকম প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য বিধিনিষেধ থাকে না। অর্থাৎ যে কোন উৎপাদক বা ভোক্তা এই
বাজারে অবাধে প্রবেশ বা বাজার থেকে অবাধে প্রস্থান করতে পারবে।
এই শর্তগুলির কোন একটিও যদি পূরণ না হয় তাহলে তাকে আর নিখুঁত প্রতিযোগিতা বলা যাবে না।
সেটি কোন না কোন ধরনের অনিখুঁত বাজারের ধরন হয়ে যাবে।
নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দাম নির্ধারণ ও মুনাফা সর্বোচ্চকরণ
নিখুঁত প্রতিযোগিতায় উৎপাদন, দাম ও মুনাফা নির্ধারণের প্রক্রিয়া বোঝার জন্য সামগ্রিক বিশ্লেষণ ও
প্রান্তিক বিশ্লেষণ দুটোই ব্যবহার করা যায়। সামগ্রিক বিশ্লেষণে মোট আয়, মোট ব্যয় ও মোট মুনাফা
দিয়ে এবং প্রান্তিক বিশ্লেষণে আমরা প্রান্তিক আয়, প্রান্তিক ব্যয় এবং মুনাফার তথ্য থেকে ভারসাম্য উৎপাদন ও সর্বোচ্চ উৎপাদন বিন্দুবের করতে পারি।
প্রান্তিক আয় পরিবর্তনের হার এখন প্রান্তিক ব্যয়ের পরিবর্তনের হার থেকে কম।
নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কেউ দাম নির্ধারণ করতে পারে না। কারণ এখানে কোন একক
প্রতিষ্ঠান পুরো বাজার প্রক্রিয়ায় খুবই ক্ষুদ্র এবং অনুল্লেখ্য। এই বাজারে মুনাফা সর্বোচ্চ হয় যখন
প্রান্তিক ব্যয় দাম বা প্রান্তিক আয়ের সমান হয়। অর্থাৎ এই বিন্দুতে যে পরিমাণ উৎপাদন হচ্ছে তার
চাইতে উৎপাদন এক একক বাড়ালে আর কোন অতিরিক্ত মুনাফা হবে না। সেই কারণে এই বাজারের
চাহিদা রেখা আনুভ‚মিক হয় অর্থাৎ তা পূর্ণ নমনীয় চাহিদা প্রকাশ করে। অর্থাৎ একটি প্রতিষ্ঠানের
উৎপাদন যাই হোক না তা বাজারের দামের উপর কোন প্রভাব ফেলে না। তবে মনে রাখতে হবে, এই
অবস্থা সমগ্র শিল্পের জন্য প্রযোজ্য নয়। সমগ্র শিল্পে চাহিদা রেখা নি¤œমুখীই হয়।
ভারসাম্য বিন্দুর শর্ত, গজ = চ = গঈ। কিন্তুএই বিন্দুযে মুনাফা সর্বোচ্চকরণ বিন্দুতা প্রমাণিত
হবে তখনই যখন এই বিন্দুতে প্রান্তিক আয়ের ঢাল প্রান্তিক ব্যয়ের ঢালের চাইতে কম হবে। অর্থাৎ আমরা তা হলে নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারের কাম্যবিন্দুতে পৌঁছার ক্ষেত্রে স্তরগুলোকে নির্দিষ্ট
করতে পারি নি¤œরূপে:
গঈ = গজ ................... (১)
গজ = চ ................... (২)
গঈ = গজ = চ .............. (৩)
ফগজ < ফগঈ ................ (৪)
চিত্র ৭.২ : স্বল্পমেয়াদে নিখুঁত প্রতিযোগিতায় তিন অবস্থা
নিখুঁত প্রতিযোগিতার ধারণা আমরা সুসংগঠিতভাবে পাই উনিশ শতকের শেষে। নিখুঁত
প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কেউ দাম নির্ধারণ করতে পারে না। কারণ এখানে কোন একক
প্রতিষ্ঠান পুরো বাজার প্রক্রিয়ায় খুবই ক্ষুদ্র ও অনুল্লেখ্য। এই বাজারে ভারসাম্য সৃষ্টি হয় যখন
প্রথমত: প্রান্তিক ব্যয় দাম বা প্রান্তিক আয়ের সমান হয় এবং দ্বিতীয়ত: প্রান্তিক আয় পরিবর্তনের হার প্রান্তিক ব্যয় পরিবর্তনের হার থেকে কম।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারের অন্যতম শর্ত হলো:
ক. উৎপাদক বা ভোক্তার প্রবেশ বা প্রস্থানের স্বাধীনতা নেই।
খ. একক ক্রেতার প্রবেশ বা প্রস্থান বাজারকে প্রভাবিত করে।
গ. তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়।
ঘ. উৎপাদনী প্রতিষ্ঠানগুলো দাম গ্রহীতা, দাম নির্ধারক নয়।
২. উদ্যোক্তা মুনাফা শূন্য অবস্থায় পৌঁছায়
ক. একবার খ. দুইবার
গ. অসংখ্যবার ঘ. কখনই নয়
৩. নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কাম্য ভারসাম্য বিন্দুহবে তখনই যখনক. প্রান্তিক আয়ের ঢাল ও প্রান্তিক ব্যয়ের ঢাল সমান হবে।
খ. প্রান্তিক আয়ের ঢাল প্রান্তিক ব্যয়ের ঢালের চাইতে বেশি হবে।
গ. প্রান্তিক আয়ের ঢাল প্রান্তিক ব্যয়ের ঢালের চাইতে কম হবে।
ঘ. কোনটিই নয়।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ‘নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে উৎপাদনী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো দাম গ্রহীতা, দাম নির্ধারক নয়'- ব্যাখ্যা করুন।
২. নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ভারসাম্য বিন্দুর শর্ত কি?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. নিখুঁত প্রতিযোগিতার বৈশিষ্ট্যগুলো লিখুন। নিখুঁত প্রতিযোগিতায় ভারসাম্য বিন্দুর শর্তগুলো কি? ব্যাখ্যা করুন।
২. নিখুঁত প্রতিযোগিতায় একাধিক শূন্য মুনাফা বিন্দুথাকলেও কোন্টিকে কাম্যবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করা হয়? কেন? সমীকরণ সহ চিত্রের মাধ্যমে দেখান।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]