উৎপাদন শুরু ও বন্ধ বিন্দু(ইৎবধশ বাবহ
নিখুঁত প্রতিযোগিতায় শুধুনয় সকল ক্ষেত্রেই কোন্ অবস্থায় উৎপাদন করা যুক্তিযুক্ত হয়ে উঠলো আর
কোন্ বিন্দুতে উৎপাদন আর চালানো সম্ভব নয় সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিচে রেখার মাধ্যমে একটি
নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এই দুটো অবস্থা নির্দিষ্টভাবে দেখানো হলো।
চিত্র ৭.৩ : উৎপাদন শুরু ও বন্ধ বিন্দু
উৎপাদন শুরু বিন্দু(ইৎবধশ-বাবহ ঢ়ড়রহঃ): নিখুঁত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমরা দেখি উর্ধ্বগামী
গঈ রেখা উর্ধ্বগামী অঈ রেখার সর্বনি¤œ যে বিন্দুতে ব ছেদ করে উঠে যাচ্ছে সেখানে গঈ = অঈ =
অজ= চ = গজ হচ্ছে এবং এখানে মুনাফা শূন্য। এটি হচ্ছে উৎপাদন যুক্তিযুক্ত বিন্দু(চব)। নিখুঁত
প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দীর্ঘমেয়াদে এটাই ভারসাম্য বিন্দু।
উৎপাদন বন্ধ বিন্দু(ঝযঁঃফড়হি চড়রহঃ) : কিন্তুকোন প্রতিযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের এক
পর্যায়ে এরকম এক পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে যেখানে দাম ভারসাম্য বিন্দুর নিচে নেমে যেতে
পারে। আগের বিন্দুর তুলনায় দামের অবনতি উৎপাদন অব্যাহত রাখাকে হুমকির সম্মুখীন করে
তোলে। উপরন্তুএই দাম যদি নামতে নামতে এরকম বিন্দুতে আসে যখন চ = অঠঈ হয়, অর্থাৎ যখন
দাম গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সমান হয় তখন উৎপাদন অব্যাহত রাখা মানে মোট স্থির ব্যয় পুরোটাই
লোকসান। এই অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন যত হবে ততই ক্ষতি বাড়বে। সেজন্য এরকম বিন্দুতে
দাম (চং) নেমে এলে তাকে উৎপাদন বন্ধ বিন্দু(ংযঁঃফড়হি ঢ়ৎরপব) হিসেবে নির্দেশ করা হয়।
এটা এভাবেও দেখানো যায়:
ঞঈ = ঞঠঈ+ঞঋঈ
π =ঞজ - ঞঈবিদ্যালয়
অর্থনীতি পৃষ্ঠা - ১১৬
কিন্তুযখন, চ = অঠঈ
তখন, ঞজ = ঞঠঈ
অর্থাৎ, সেই সময়ে পুরো ঞঋঈ অপূরণীয় থাকে বা লোকসান হয়।
স্বল্পমেয়াদে উৎপাদন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাই গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলো নি¤œরূপে উপস্থিত করা যায় :
১. যদি দাম ন্যূনতম গড় পরিবর্তনীয় ব্যয় থেকে নিচে হয় (চ<গরহরসঁস অঠঈ) তাহলে প্রতিষ্ঠান
উৎপাদন করবে না। এর অর্থ এটা নাও হতে পারে যে, প্রতিষ্ঠান ঐ শিল্প ত্যাগ করবে। হতে
পারে, ঐ প্রতিষ্ঠান উৎপাদন আপাতত: স্থগিত রাখবে এবং দাম বাড়ার জন্য অপেক্ষা করবে।
২. যদি দাম ন্যূনতম গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সমান বা তার থেকে বেশি হয় (চ > গরহরসঁস অঠঈ)
তাহলে প্রতিষ্ঠান স্বল্পমেয়াদে উৎপাদন করবে। এবং এটি মুনাফা সর্বোচ্চ করতে চেষ্টা করবে দাম
ও প্রান্তিক ব্যয় সমান ( চ = গঈ) করবার মধ্য দিয়ে।
৩. প্রতিষ্ঠান তখনই মুনাফা করবে যখন ন্যূনতম গড় মোট ব্যয় থেকে দাম বেশি (চ > গরহরসঁস
অঞঈ) হবে।
দীর্ঘমেয়াদ ও শিল্প
এতক্ষণের যে আলোচনা তার অনেক কিছুই করা হয়েছে স্বল্পমেয়াদে একটি নির্দিষ্ট উৎপাদনী
প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে। ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে স্বল্পমেয়াদ ও একক প্রতিষ্ঠান বা
ব্যক্তির উপরই জোর দেয়া হয় বেশি। বলা বাহুল্য, অর্থনীতি শুধুমাত্র একক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি দিয়ে
চলে না। এখানে অবশ্য বলা দরকার যে, প্রান্তিকতাবাদী অর্থনীতিবিদদের অবস্থান হল, একক বা
ব্যক্তি অর্থনীতিই মৌলিক। তাঁদের মতে, একাধিক ব্যক্তিক অর্থনীতি যোগ দিলেই সামষ্টিক অর্থনীতি
পাওয়া যাবে। স্যামুয়েলসন আবার বলেছেন, সমষ্টি অনেকসময়ই এককের যোগফল থেকে বেশি হয়।
সেজন্য সমষ্টিকে আলাদাভাবে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমরা পুরো সমষ্টি নয় খন্ডিত সমষ্টি নিয়ে
অর্থাৎ একক প্রতিষ্ঠানের বাইরে শিল্পক্ষেত্রে সমষ্টিগত আচরণ সংক্ষেপে উল্লেখ করবো। খেয়াল করুন,
প্রতিষ্ঠান বা ফার্ম যেখানে একক তখন শিল্প হল ঐ নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সকল প্রতিষ্ঠানের সমষ্টি। অর্থাৎ
একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান হলো একক ‘ফার্ম' আর সকল গার্মেন্টস মিলে হল গার্মেন্টস শিল্প। তাছাড়া
একাধিক স্বল্পমেয়াদ সময়কাল যোগ করা মানে অনেকসময় দীর্ঘমেয়াদ নাও হতে পারে। সেজন্য
দীর্ঘমেয়াদকেও আলাদাভাবে পর্যালোচনা করা দরকার। সেটিও এখানে সংক্ষেপে উল্লেখ করবো।
দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্য
স্বল্পমেয়াদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদের একটি বড় তফাৎ হলো স্বল্পমেয়াদে প্রযুক্তি এবং উৎপাদনের
প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির কোন পরিবর্তন হয় না। তার ফলে এগুলো অপরিবর্তিত রেখেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে
সঙ্গে শিল্পও ভারসাম্যে পৌঁছাবে। আর দীর্ঘমেয়াদে যেহেতুপ্রযুক্তিসহ উৎপাদনের প্রতিষ্ঠানের যাবতীয়
প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির পরিবর্তন হয় সুতরাং দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের যাবতীয় ব্যবস্থাবলী
পরিবর্তন করতে পারে, কোন প্রতিষ্ঠান বেরিয়ে যেতে পারে আবার কেউ প্রবেশও করতে পারে।
সেভাবেই দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্য তৈরী হবে।
চিত্র ৭.৪ : স্বল্পমেয়াদে ও দীর্ঘমেয়াদে শিল্পের ভারসাম্য
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদার যোগফল হিসেবে শিল্পের চাহিদা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যোগানের
যোগফল হিসেবে শিল্পের যোগান পাই। শিল্পের চাহিদা ও যোগান রেখা তাই বস্তুত: ঐ শিল্পভুক্ত
প্রতিষ্ঠানসমূহের যথাক্রমে চাহিদা ও যোগানের সমষ্টি। আমরা আগেই দেখেছি, স্বল্পমেয়াদে একটি
প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ করে দেবার অবস্থা তৈরী হয় তখন, যখন দাম গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সমান
হয় বা তার নিচে নেমে যায়। দীর্ঘমেয়াদে যেহেতুস্থিরব্যয় বলে কিছুনেই সেহেতু সবকিছুই
পরিবর্তনীয় ব্যয়। পুরো গড় ব্যয়ই হলো গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়। তাই আমরা দেখি শিল্পক্ষেত্রেও
দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দাম গড় ব্যয়ের সমান বা তার বেশি হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। শিল্পক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে যে ঘটনাটি ঘটে সেটি হল যদি দাম গড় ব্যয়ের চাইতে বেশি হয়ে
অতিরিক্ত মুনাফার সৃষ্টি করে তাহলে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান ঐ শিল্পে প্রবেশ করে; আবার যদি দাম গড়
ব্যয়ের চাইতে কম হয়ে লোকসান দেখা দেয় তাহলে পুরনো প্রতিষ্ঠান ঐ শিল্প থেকে বেরিয়ে যায়।
এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্য বিন্দুতে দাম, প্রান্তিক ব্যয়, ন্যূনতম দীর্ঘমেয়াদি গড় ব্যয় সমান হয়।
অর্থাৎ চ = গঈ = অঈ
বলা বাহুল্য, এই বিন্দুটি শূন্য মুনাফা বিন্দু। নিখুঁত প্রতিযোগিতার মডেলে দীর্ঘমেয়াদে শিল্পের এটাই
ভারসাম্য বিন্দু। এর অর্থ হল, শূন্য মুনাফা বিন্দুতে শিল্পের মোট আয় ও মোট ব্যয় সমান হচ্ছে।
ব্যয়ের মধ্যে উৎপাদনের সকল উপাদান নিজ নিজ পাওনা পেয়ে যাচ্ছে এটা এই মডেলের আরেকটি
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
স্বল্পমেয়াদে দাম যদি ন্যূনতম গড় পরিবর্তনীয় ব্যয় থেকে নিচে হয় তাহলে প্রতিষ্ঠান উৎপাদন
করবে না। যদি দাম ন্যূনতম গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সমান বা তার থেকে বেশি হয় তাহলে
প্রতিষ্ঠান স্বল্পমেয়াদে উৎপাদন করবে এবং এটি মুনাফা সর্বোচ্চ করতে চেষ্টা করবে দাম ও প্রান্তিক
ব্যয় সমান করার মধ্য দিয়ে। প্রতিষ্ঠান তখনই মুনাফা করবে যখন ন্যূনতম গড় মোট ব্যয় থেকে
দাম বেশি হবে। দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্য বিন্দুতে দাম, প্রান্তিক ব্যয়, ন্যূনতম দীর্ঘমেয়াদি গড় ব্যয়
সমান হয়।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. নিখুঁত প্রতিযোগিতায় দাম যখন গড় পরিবর্তনীয় ব্যয়ের সমান হয় তখন উৎপাদন অব্যাহত রাখা
অর্থ-
ক. মোট স্থির ব্যয়ের পুরোটাই ক্ষতি খ. প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বৃদ্ধি
গ. লাভ ক্ষতি শূন্য ঘ. সামান্য ক্ষতি
২. স্বল্পমেয়াদে কোন প্রতিষ্ঠান তখনই মুনাফা করবে যখন:
ক. যখন দাম ন্যূনতম গড় পরিবর্তনীয় ব্যয় এর সমান।
খ. যখন দাম ন্যূনতম গড় ব্যয় থেকে কম।
গ. যখন দাম ন্যূনতম গড় ব্যয় থেকে অনেক কম।
ঘ. যখন দাম ন্যূনতম গড় ব্যয় থেকে বেশি।
৩. দীর্ঘমেয়াদে শিল্পের ভারসাম্য বিন্দুতে কোনটি হয় নাক. দাম, প্রান্তিক ব্যয় ও ন্যূনতম দীর্ঘমেয়াদি গড় ব্যয় সমান।
খ. মোট আয় ও মোট ব্যয় সমান।
গ. প্রান্তিক ব্যয় ন্যূনতম দীর্ঘমেয়াদি গড় ব্যয় থেকে বেশি।
ঘ. ব্যয়ের মধ্যে উৎপাদনের সকল উপাদান নিজ নিজ পাওনা পায়।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. নিখুঁত প্রতিযোগিতায় স্বল্প মেয়াদে উৎপাদন সিদ্ধান্তের শর্তগুলো কি?
২. নিখুঁত প্রতিযোগিতায় দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্য বিন্দুতে কেন দাম, প্রান্তিক ব্যয়, গড় ব্যয় সমান হয়?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. চিত্রে উৎপাদন বন্ধ বিন্দুদেখান। কেন এই বিন্দুতে দাম থাকলে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন অব্যাহত
রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে?
২. স্বল্পমেয়াদে ও দীর্ঘমেয়াদে ভারসাম্যের প্রভাব কি? চিত্রের মাধ্যমে পরিষ্কার করুন।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত