চলতি হিসাব ও মূলধনী হিসাবের তুলনামূলক লেনদেনের হিসাবে ভারসাম্যহীনতা থাকলে কি কি ব্যবস্থা নেয়া যায়?

লেনদেনের ভারসাম্য
লেনদেনের ভারসাম্যের হিসাব বলতে বিভিন্ন দিক থেকে বা বিভিন্ন হিসাবে একটি দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি
ও সরকারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য সকল দেশের নাগরিক, সরকার ও প্রতিষ্ঠানের যে লেনদেন
হয় তার সামগ্রিক হিসাব বোঝায়। এই পুরো হিসাবকে প্রধানত: দুই ভাগে ভাগ করে দেখানো যায়।
এগুলো হল : চলতি হিসাব ( ও মূলধনী হিসাব (
চলতি হিসাব এর মধ্যে অন্তভর্‚ক্ত আছে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান দুধরনের
আমদানি ও রপ্তানির হিসাব। দৃশ্যমান আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে আছে সবধরনের বস্তুগত দ্রব্যাদি।
আর অদৃশ্যমান আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে আছে সবধরনের অবস্তুগত সেবা (ংবৎারপবং) ধরনের পণ্য
সামগ্রী। এর মধ্যে আছে: নাগরিকদের থেকে বিদেশীদের জন্য প্রদত্ত সেবা (পর্যটন, জাহাজসহ
পরিবহন, বীমা ও ব্যাংকসহ অর্থকরী কাজ) থেকে প্রাপ্ত অর্থ, এ দেশে কর্মরত বিদেশীদের দেশে
পাঠানোর পর অবশিষ্ট অর্থ, মুনাফা, সুদ, প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ, চিকিৎসা, বেড়ানো, লেখাপড়াসহ
বিভিন্ন কাজে প্রেরিত অর্থ। যে সব কাজে অর্থাৎ, যে সব দৃশ্যমান ও অদৃশ্য খাতের আমদানিতে অর্থ
বাইরে যায় সেগুলোকে দায় (ফবনরঃ) এবং যেসব কাজে অর্থাৎ যেসব দৃশ্যমান ও অদৃশ্য খাতের
রপ্তানিতে অর্থ যোগ হয় সেটাকে ধরা হয় প্রাপ্তি হিসাবে। আমদানির চাইতে রপ্তানি বেশি হলে
আমরা বলি চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত ) হয়েছে, আর আমদানির চাইতে রপ্তানি কম হলে আমরা
বলি চলতি হিসাব ঘাটতি হয়েছে।
মূলধনী হিসাব এই হিসাবের মধ্যে অন্তভর্‚ক্ত আছে দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদে আমাদের
দেশ ও অন্যান্য দেশের মধ্যে মূলধন স্থানান্তর। দীর্ঘমেয়াদি মূলধন স্থানান্তরের মধ্যে আছে বিদেশী
প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ, বিদেশীদের এদেশে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ, আন্ত:সরকার দীর্ঘমেয়াদি ঋণ।
স্বল্পমেয়াদি মূলধন স্থানান্তরের মধ্যে পড়ে সবধরনের স্বল্পমেয়াদি ঋণ ও বিনিয়োগ।
উদ্বৃত্ত বা ঘাটতি
চলতি হিসাবে ঘাটতি মানে হল আন্তর্জাতিক ঋণগ্রস্থতা বৃদ্ধি। তার ফলে মূলধনী হিসাবে আবার উদ্বৃত্ত দেখা যায়।
লেনদেনের হিসাব = চলতি হিসাবের উদ্বৃত্ত/ঘাটতি + মূলধনী হিসাবের উদ্বৃত্ত/ঘাটতি = শূন্য
লেনদেনের হিসাবে ক্রমাগত যদি ঘাটতি বা উদ্বৃত্ত থাকে তাহলে তার প্রতিক্রিয়া প্রধানত: দুটো ক্ষেত্রে দেখা যায়:
১. ঘাটতি যদি দেখা যায় তাহলে স্থির বিনিময় হার নিয়ে একটি দেশ ক্রমাগত: বৈদেশিক মুদ্রার
মজুত হারাবার অবস্থায় পতিত হয় এবং আন্তর্জাতিক অর্থকরী সংস্থাসমূহের কাছে ক্রমবর্ধমান
হারে ঋণী হয়ে পড়ে। এই অবস্থা বেশি দিন চলতে পারেনা কারণ মজুত এবং ঋণের উৎস দুটোই
সীমিত। আবার যখন উদ্বৃত্তের অবস্থা দেখা যায় তখন দেশটির মজুত ক্রমান¦য়ে, অন্য দেশগুলোর ঘাটতি সৃষ্টির বিনিময়ে, বাড়তে থাকে। এর অভ্যন্তরীণ মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়ে মুদ্রাস্ফীতির
অবস্থাও সৃষ্টি হতে পারে।
২. যখন ঘাটতি দেখা যায়, তখন দেশের বিনিময় হারের উপর নিম্মমুখী চাপ পড়ে আবার উদ্বৃত্তের
সময়ে উর্ধ্বমুখী চাপ দেখা যায়। এই চাপের মুখে মুদ্রার বৈদেশিক বিনিময় হার পরিবর্তিত হবে
কি হবে না তা নির্ভর করবে ঐ দেশে বিদ্যমান বিনিময় হার ব্যবস্থার উপর।
লেনদেনের হিসাবে ক্রমাগত ভারসাম্যহীনতা দেখা গেলে নি¤েœাক্ত ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে থেকে এক বা
একাধিক গ্রহণ করবার সম্ভাবনা থাকে।
১. সেই দেশে চাহিদা ব্যবস্থাপনার নীতি গ্রহণ করতে পারে।
ঘাটতির সময়ে সংকোচনমূলক রাজস্ব বা মুদ্রা নীতিকেই যথার্থ বিবেচনা করা হয়। ধরা হয় এতে
আমদানি সহ সামগ্রিক চাহিদা কমবে। এবং উদ্বৃত্তের সময়ে সম্প্রসারণমূলক নীতিকেই কার্যকর
বিবেচনা করা হয়। বলা দরকার যে, অনেক সময় এসব নীতি একটি দেশের কর্মসংস্থান,
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যেমন, কোন দেশে একই সঙ্গে ঘাটতি
ও বেকারত্ব থাকলে সংকোচনমূলক ব্যবস্থায় বিরূপ ফলাফল হয়।
২. এটি আমদানি নিয়ন্ত্রণের দিকে যেতে পারে।
৩. এটি মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তন করতে পারে।
লেনদেনের ভারসাম্যের হিসাব বলতে বিভিন্ন দিক থেকে বা বিভিন্ন হিসাবে একটি দেশের বিভিন্ন
ব্যক্তি ও সরকারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য সব দেশের নাগরিক, সরকার ও প্রতিষ্ঠানের যে
লেনদেন হয় তার সামগ্রিক হিসাব বোঝায়। প্রধানত: চলতি ও মূলধনী এই দুই ভাগে পুরো
হিসাবকে ভাগ করা যায়। লেনদেনের হিসাবে ক্রমাগত ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে চাহিদা
ব্যবস্থাপনার নীতি গ্রহণ করা হয়। ঘাটতির সময়ে সংকোচনমূলক রাজস্ব বা মুদ্রা নীতি এবং উদ্বৃত্তের সময় সম্প্রসারণমূলক নীতিকে কার্যকর বিবেচনা করা হয়।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেক. দৃশ্যমান ও অদৃশ্য দুধরনের আমদানি ও রপ্তানির হিসাব।
খ. শুধুমাত্র দৃশ্যমান আমদানি ও রপ্তানির হিসাব।
গ. শুধুমাত্র অদৃশ্যমান আমদানি ও রপ্তানির হিসাব।
ঘ. শুধুমাত্র দৃশ্যমান আমদানি ও অদৃশ্যমান রপ্তানির হিসাব।
২. মূলধনী হিসাবের মধ্যে আছেক. প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ।
খ. বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ।
গ. বিদেশীদের জন্য প্রদত্ত নাগরিকদের সেবা থেকে প্রাপ্ত অর্থ।
ঘ. দেশে কর্মরত বিদেশীদের দেশে পাঠানোর পর অবশিষ্ট অর্থ।
৩. চলতি হিসাবের ঘাটতি দেখা দিলেক. বিনিময় হারের উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়।
খ. বিনিময় হারের উপর উর্ধ্বমুখী চাপ দেখা যায়।
গ. বিনিময় হারের উপর নি¤œমুখী চাপ দেখা যায়।
ঘ. বিনিময় হারের উপর তা কোন প্রভাব ফেলে না।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. চলতি হিসাব ও মূলধনী হিসাবের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করুন।
২. লেনদেনের হিসাবে ভারসাম্যহীনতা থাকলে কি কি ব্যবস্থা নেয়া যায়?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. লেনদেনের ভারসাম্য বলতে কি বোঝায়? লেনদেনের হিসাবে ক্রমাগত ঘাটতি বা উদ্বৃত্ত থাকলে তার ফলাফল কি হয়?

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]