বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ।এদেশের অধিকাংশ মানুষের প্রধান উপজীবিকা কৃষি। শ্রমজীবি মানুষের প্রায় ৪৮.১% (বিবিএস জরিপ ২০১০ অনুযায়ী ৪৭.৩০ ভাগ) কৃষি উপর নির্ভরশীল। মোট দেশীয় আয়ের ১২.২৭ শতাংশ আসে কৃষি থেকে।
বাংলাদেশ ভূখন্ডে প্রথম চা চাষ আরম্ভ হয় ১৮৪০ সালে চট্টগ্রাম ক্লাব প্রাঙ্গণে। তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সিলেটের মালনীছড়ায় দেশের প্রথম চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫৭ সালে। চা দেশের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল। বর্তমানে দেশে ১৬৬টি চা বাগান রয়েছে। সর্বশেষ চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয় পঞ্চগড় চা চাষের জন্য প্রয়োজন অধিক বৃষ্টিপাত সমৃদ্ধ পাহাড়ি ঢালু অঞ্চল। বাংলাদেশে চা বোর্ড গঠিত হয় ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রামে। বিশ্ববাজারে উৎপাদিত চায়ের মাত্র ২ শতাংশ চা বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। দেশে ৫৩,৮১৯.৩২ হেক্টর জমিতে চা উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৯ কোটি ৫৫ লক্ষ পাউন্ড। বাংলাদেশ বছরে চা রপ্তানি করে আড়াই কোটি কেজির অধিক। রফতানীকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১৫তম, উৎপাদনে দশম। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় পাকিস্তানে। বাংলাদেশ মোট ৩০ টি দেশে চা রপ্তানি করে। মোট উৎপাদিত চায়ের ৬৫% রপ্তানি করা হয়। দেশে সর্বাধিক চা উৎপন্ন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। এ জেলার শ্রীমঙ্গল থানায় বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত । চা মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার (১৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৯) দেশে প্রথম উৎপাদিত উন্নতজাতের চা হল বিটি-১২।
চা উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ দেশ চীন, রপ্তানীতে কেনিয়া। বাংলাদেশ চা উৎপাদনে দশম এবং রপ্তানিতে ১৫তম।
বাংলাদেশে সর্বাধিক গম উৎপন্ন হয় রংপুর জেলায়। তবে গম গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দিনাজপুর জেলার নশিপুরে। দেশে উৎপন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের কয়েকটি গম হলো অঘ্রাণী, আকবর, বরকত, ইনিয়া-৬৬, পাভন-৭৬, আনন্দ, কাঞ্চন, বলাকা, দোয়েল, শতাব্দী প্রভৃতি। দেশে বছরে উৎপন্ন গমের পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। শতাব্দী গমের ফসল হেক্টর প্রতি ৪.৫৫ মেট্রিক টন।
পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় (ভারত প্রথম), রপ্তানিতে দ্বিতীয়। এটি বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। বাংলাদশের মোট আবাদি জমির ৫ শতাংশে পাট চাষ করা হয়। দেশে একর প্রতি পাটের ফলন গড়ে ৬৯৬ কেজি। বর্তমানে দেশের প্রতিবছর প্রায় ৯.৫৩ লক্ষ একর জমিতে চাষ করা হয়। সাধারণত তিন ধরনের পাট উৎপন্ন হয়- হোয়াইট, তোষা ও মেশতা। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৫১ সালে। এ প্রতিষ্ঠান দেশে চারটি উন্নত জাতের পাট উদ্ভাবন করেছে। এগুলো হলো- BKRI তোষা, BJRI-৫, BJRI-৬, কেনাফজাত(শণপাট), এইচ.সি -৯৫। জাতীয় বীজ বোর্ড দেশী-৮ ও তোষা-৬ নামের পাটের দুটি নতুন জাত অবমুক্ত করেন। দেশে সর্বাধিক পাট উৎপন্ন হয় রংপুরে। দেশে পাটের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হলো নারায়ণগঞ্জে।
পাট ও সুতার মিশ্রণে এক ধরনের কাপড় হলো জুটন। এতে পাট ও সুতার অনুপাত ৭০:৩০। জুটনের আবিষ্কারক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুল্লাহ (১৯৮৯ সালে।)। একটি কাঁচা পাটের গাইটের ওজন সাড়ে চার মণ।
ধান একটি একবীজপত্রী উদ্ভিদ। ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য। বাংলাদেশে আবাদি জমির ৮০ ভাগেই ধানের চাষ করা হয়। বর্তমানে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ। দেশে ধান উৎপাদনের পরিমাণ বার্ষিক ২ কোটি ৫০ লক্ষ টন একর প্রতি ধান উৎপাদনের পরিমাণ ৬৮৭ কেজি। সমগ্র দেশে কম-বেশি ধান উৎপন্ন হয়, তবে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপন্ন হয় ময়মনসিংহ জেলায়। বাংলাদেশে ধানের শ্রেনীভেদ হলো ৪টি- আমন, আউশ, বোরো ও ইরি। ধান উৎপাদনে চীন বিশ্বে প্রথম, রপ্তানিতে থাইল্যান্ড বিশ্বে প্রথম।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়। সারা দেশে কৃষি গবেষণার সমন্বয়, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন সহজতর করার জন্য কৃষি গবেষণা পদ্ধতির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করার জন্যই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের সৃষ্টি। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ফসল, পশুসম্পদ, মৎস্য ও বনবিদ্যার ওপর গবেষণারত ১০টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সবগুলিতেই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের ভূমিকা সম্প্রসারিত রয়েছে এবং এগুলির সমন্বয়ে বাংলাদেশের জাতীয় কৃষি গবেষণা ব্যবস্থা (National Agricultural Research System/NARS) গঠিত হয়েছে। NARS-এ দেড় হাজারের মতো বিজ্ঞানী কর্মরত আছেন।
নাই
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ