ইউরোপীয়দের আগমন

ইংরেজদের আগমনঃ

১৬০০ সালে ২১৭ জন অংশীদার নিয়ে ইংরেজদের ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠিত হয়। এই কোম্পানি রানী এলিজাবেথের নিকট হতে ভারতে বাণিজ্য করার অধিকার লাভ করে। ১৬০৮ সালে ক্যাপ্টেন হকিন্স বাণিজ্যকুঠি স্থাপনের প্রার্থনা নিয়ে ইংল্যান্ডের রাজা জেমসের পত্র সহকারে মুঘল সম্রাট জাহায়্গীরের দরবারে আগমন করেন।

১৬১২ সালে তারা প্রথমে সুরাটে কুঠি নির্মাণ করে এবং ১৬১৬ সালে তারা মসলিপট্টমে বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করে। সম্রাট শাহজাহান ১৬৩৩ সালে ইংরেজদের বঙ্গদেশে কুঠি নির্মাণের অনুমতি দেয়। ইংরেজরা “পিপিলাই” নামক গ্রামে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে।

১৬৫০ সালে ইংরেজ বাণিজ্যপোত হুগলী বন্দরে প্রবেশ করে। ১৬৫৮ সালে কাসিম বাজার কুঠি নির্মিত হয়। ১৬৬১ সালে ইংরেজরা বাংলার সুবাদারের অনুমতি নিয়ে হুগলীতে কুঠি নির্মাণ করে।

১৬৯০ সালে জব চার্নক ভাগীরথি নদীর তীরে কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম ক্রয় করে। ইংরেজরা এখানে একটি দুর্গ নির্মাণ করে এবং ১৬৯৮ সালে তাদের রাজা উইলিয়ামের নামানুসারে এর নাম রাখে ‘ফোর্ট উইলিয়াম’ দুর্গ। এই ফোর্ট উইলিয়ামকে কেন্দ্র করে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত হয়। ১৭১৭ সালে সম্রাট ফররুখ শিয়ার মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে মুঘল স্রামাজ্যে বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার অনুমতি দেয়। এটি ব্রিটিশদের শক্তিসঞ্চয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

ওলন্দাজদের আগমনঃ

ইউরোপের নেদারল্যান্ড দেশের লোকেরা ওলন্দাজ বা ডাচ নামে পরিচিত। ১৬০২ সালে তারা’ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে। তারা মাদ্রাজের ও পশ্চিমবঙ্গে কুঠি নির্মাণ করে। দেশীয় কোন রাজন্যবর্গ বা সামন্তনেতার উল্লেখযোগ্য অনুগ্রহ লাভে ব্যর্থ  হয় ওলন্দাজগণ। ফলে বণিজ্যের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিপক্ষ বণিকগোষ্ঠী হতে পিছিয়ে পড়ে। ইংরেজগণ তাদের অধীকৃত স্থানগুলো দখল করে নিলে তারা এই উপমহাদেশ হতে সরে পড়ে।

দিনেমারগণের আগমনঃ

ইউরোপের ডেনমার্ক দেশের অধিবাসীদের দিনেমার বলা হয়। দিনেমারগণ ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে ‘দিনেমার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী গঠন করে। ১৬৭৬ সালে তারা কলকাতার শ্রীরামপুরে তাদের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপন করে। এ শ্রীরামপুর মিশন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। অন্যান্য ইউরোপীয়দের সাথে বাণিজ্যে সুবিধা না করতে পারায় তারা ১৮৪৫ সালে ইংরেজদের নিকট কুঠি বিক্রয় করে উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যায়।

ফরাসিদের আগমনঃ

১৬৬৪ সালে ফরাসি বণিকগণ ‘ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে উপমহাদেশে বাণিজ্য করতে আসে। ১৬৭৩ সালে মাদ্রাজের পন্ডিচেরীতে তারা ঘাটি স্থাপন করে। বাংলায় তারা চন্দননগরে কুঠি স্থাপন করে। তারা বাণিজ্যে ইংরেজদের সাথে প্রবল প্রতিদ্বন্দিতা গড়ে তোলে এবং উপমহাদেশে সাম্রাজ্য বিস্তারের স্বপ্ন দেখে। উপমহাদেশীয় অনেক রাজন্যবর্গের সমর্থন ও সহায়তা লাভ করা সত্ত্বেও ফরাসিগণ ইংরেজদের মোকাবেলায় দূরদর্শিতা দেখাতে ব্যর্থ হয়। ইংরেজরা ক্রমান্বয়ে উপমহাদেশের রাজনৈতিক আধিপত্য কুক্ষিগত করে ফরাসি বানিজ্য ও সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। ১৭৫৬ সালে চতুর্থ কর্ণাটকের যুদ্ধে ফরাসিদের পরাজিত করে ইংরেজরা একক প্রভাব বিস্তার করে। ১৭৬০ সালে ‘বন্দীবাসের যুদ্ধে’ ইংরেজ সেনাপতি আয়ারকুটের কাছে ফরাসি গভর্নর কাউন্ট লালী পরাজিত হলে ফরাসীদের ভারতবর্ষে সাম্রাজ্য বিস্তারের স্বপ্ন ভেস্তে যায়। এর ফলে ভারতবর্ষে ফরাসিরা সাম্রাজ্য স্হাপনের চিন্তা পরিত্যাগ করে উপমহাদেশ ত্যাগ করে।

 

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]