আধুনিক ভ‚গোলের ধারণা সম্পর্কে।
ভ‚গোল পৃথিবীর উপরিভাগের স্থান সম্পর্কে ধারণা দেয়। তবে ভ‚গোলবিদদের ছাড়াও এই বিষয়ে
ভ‚তাত্তি¡ক বিজ্ঞানী, আবহাওয়াবিদ, জীববিদ্যা, সমুদ্রবিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানের আরোও বেশ কিছু
শাখায়ও ভ‚-পৃষ্ঠের উপরিভাগ এবং তলদেশের বিষয়াদি সম্পর্কে ধারণা দেয়। তবে, শুধুমাত্র ভ‚গোল
বিষয়ই ভ‚-পৃষ্ঠের উপরিভাগের বিভিন্ন বিষয়াদির একটি সমনি¦ত স্থানভিত্তিক ধারণা দেয়।
অতীতে সংঘঠিত ঘটনাবলী এবং বর্তমানের ঘটনাসমূহ পৃথিবীর কোন না কোন স্থানের সাথে
জড়িত। এই সব ঘটনা সম্পর্কে জানতে গিয়ে মানুষ যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে জানতে
আগ্রহী হয়। মানুষের স্থান সম্পর্কে জানার এই আগ্রহ থেকেই ভ‚গোলের ভিত্তি তৈরি হয়।
ভ‚গোল কাকে বলে?
গ্রীক পন্ডিত ইরেটোসথেনীস (ঊৎধঃড়ংঃযবহবং) প্রথম ভ‚গোল শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। গ্রীক শব্দ
‘জিও' (এবড়-) অর্থ ভ‚মন্ডল বা পৃথিবী এবং ‘গ্রাফি' (মৎধঢ়যু) অর্থ বর্ণনা, সার্বিক অর্থে মানুষের
আবাস এই পৃথিবীর বর্ণনা। ভ‚গোল বিষয়ের এই মূল ধারণার আজ অবধি তেমন বড় ধরনের কোন
পরিবর্তন হয় নাই। তবে এই প্রসঙ্গে ভ‚গোল এর দুটি আধুনিক সংজ্ঞা বিবেচনা করা যেতে পারে।
হার্টশোনের মতে- ÔGeography is concerned to provide accurate, orderly and rational
descriptions and interpretations of the variable character of the earth's surface'Ñ
পৃষ্ঠের বৈচিত্রময় বৈশিষ্ট্যাবলীর সঠিক, শ্রেণীবদ্ধ এবং যুক্তিসঙ্গত বর্ণনা এবং বিশ্লেষণই ভ‚গোলের
আলোচ্য বিষয়'।
আরেকজন বিখ্যাত বৃটিশ আধুনিক ভ‚গোলবিদ পিটার হেগেট (১৯৮১) এর মতে- ‘এবড়মৎধঢ়যু রং
ঃযব ংঃঁফু ড়ভ ঃযব বধৎঃয'ং ংঁৎভধপব ধং ঃযব ংঢ়ধপব রিঃযরহ যিরপয ঃযব যঁসধহ ঢ়ড়ঢ়ঁষধঃরড়হ
ষরাবং'। অর্থাৎ যে শাস্ত্র ভ‚-পৃষ্ঠকে মানবগোষ্ঠির বসবাসের স্থান হিসাবে অধ্যয়ন করে তাহাই
ভ‚গোল। লক্ষ্যণীয় যে ভ‚গোলের এ দুটি আধুনিক সংজ্ঞার মূল বক্তব্য গ্রীকদের দেওয়া সংজ্ঞার
অনুরূপ।
তবে, ভ‚গোল বিষয়ের মূল দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যাখ্যা দানের পদ্ধতিগত দিক কাল ও সমাজের পটভ‚মির
আলোকে পরিবর্তিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সপ্তদশ শতক থেকে বর্তমান কালের নির্বাচিত কিছুসংজ্ঞা
নীচে দেওয়া হলো।
Geography is that part of mixed mathematics, which explains the state of the earth
and of its parts, depending on quantity, viz. its figure, place, magnitude and motion,
with the celestial appearence. (- Varenius, 1622)
ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগ, স্থান।
ইরেটোসথেনীস, হার্টশোন,
পিটার হেগেট, হুমবোল্ট।
কাল ও সমাজের পটভূমির
আলোকে পরিবর্তিত হয়েছে।
Geography is the study of the earth. It explains the varieties found in the various parts
of the earth. - Kant, I. (late 18th century)
Geography is the science related to nature... in it are studied and described all things
found on earth. - Humboldt, A. Von (early 19th century)
Geography is the department of science that deals with the globe in all its features,
phnomena, and relations as an independent unit, and shows the connection of this
unified whole with man and with mans creator. - Ritter, C. (early 19th century)
Geography`s goal is nothing less than an understanding of the vast, interacting
system comprising all humanity and its natural environment on the surface of the
earth. - Ackerman, E.A (1963)
Geography seeks to explain how the subsystems of the physical environment are
organized on the earths surface and how man distributed himself over the earth in
relation to physical features and the other man. -Ad hoc committee on Academy of
Science, Washington D.C (1965)
Geography is concerned with the existing material system forming the geographyical
sphere of the earth as an environment for the actual or potential development of
human society, together with the material aspects of social development expressed in
its regional complexes within the geographical environment. - Anlechin, V.A (1973)
Geography is the study of relationship between man and his environment through
space and time. - Anonymous (unknown)(1990)
উপরের এই সব সংজ্ঞা পর্যালোচনা থেকে লক্ষণীয় যে, উনিশ শতকের হুমবোল্ট পর্যন্ত ভ‚গোলের
আলোচ্য বিষয়ে পৃথিবীর প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে; মানুষ ও
সামাজিক সংগঠনসমূহ তেমন গুরুত্ব পায় নাই। তবে হুমবোল্ট-এর সমসাময়িককালের ভ‚গোলবিদ
কার্ল রিটার, মানুষকে ভ‚গোলের আলোচ্য বিষয় হিসাবে সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। ভুগোলে
প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানুষের সুনিবিড় সম্পর্ক পরবর্তী প্রায় সব ভ‚গোলবিদই তুলে ধরেছেন।
বিংশ শতাব্দীতে মানুষ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার
করে আসছে। মানুষের কর্মকান্ডে প্রাকৃতিক পরিবেশ আর নিয়ন্ত্রকের ভ‚মিকায় না থাকলেও এর
প্রভাবকে বহনযোগ্য মাত্রায় রাখার জন্য সম্ভাবনাময় বিকল্প উদ্ভাবনের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে
যাতে পরিবেশগত ভারসাম্যতা বজায় রাখা সম্ভব হয়। তাই, আধুনিক ভ‚গোলবিদগণ সময় ও
স্থানের আলোকে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে মানুষের কর্মকান্ডের সম্পকর্দকেই ভ‚গোলের মূখ্য
বিষয় হিসাবে দেখতে চান (ঊষধযর, ২০০০)।
ভ‚গোল জ্ঞানের শুরু
ভ‚গোল জ্ঞানের শুরুর ইতিহাস শত শত বছরের পুরানো। ধারণা করা হয় মানব সভ্যতার আদিকাল
থেকেই মানুষ যখন বুঝতে পেরেছে বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় খাদ্য সম্পদ বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো,
সেই থেকেই মানুষের নিকট স্থানের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। গ্রীক যুগের পন্ডিতগণ পৃথিবী সম্পর্কিত
তথ্যাবলী সংগ্রহ করেন। তাঁরা জ্ঞান চর্চার সুবিধার জন্য এ সব তথ্যাবলীকে দুটো প্রধান অংশে ভাগ
করেন : ভ‚গোল (পৃথিবীর ভ‚-ভাগ সম্পর্কিত জ্ঞান চর্চা) ও মহাজাগতিক বিদ্যা (আকাশ,
তারকারাজি ও মহাজগত বিষয়ক জ্ঞান চর্চা)। ইরেটোসেথেনিস (পধ. ২৭৩ - পধ. ১৯২ ই.ঈ)-এর
ভূগোল-প্রাকৃতিক পরিবেশ ও
মানুষের সুনিবিড় সম্পর্ক।
সময় ও স্থান।
গ্রীক যুগ, ভূগোল ও
মহাজাগতিক
মতে ভ‚গোল ছিল পৃথিবীর সঠিক বর্ণনা। তাঁর জীবদ্দশায় শিলা, মৃত্তিকা ও উদ্ভিদ সম্পর্কে বিপুল
তথ্য সংগৃহীত হয়।
গ্রীক দার্শনিকগণ পৃথিবীর স্থান বর্ণনার বাহিরেও স্থান সমূহের তারতম্য এবং এর কারণ অনুসন্ধান
করেন। যেমন, পৃথিবীর জলবায়ুসম্পর্কে জানার জন্য তাঁরা এর অঞ্চলভিত্তিক শ্রেণী বিভাগ করেন
যা অনেকটা আধুনিক অক্ষাংশভিত্তিক জলবায়ুঅঞ্চলের অনুরূপ। তবে, গ্রীকদের তৈরিকৃত মানচিত্র
ভ‚গোল জ্ঞান চর্চায় সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে।
ভ‚গোল বিষয়ক জ্ঞানচর্চা মধ্য যুগে হ্রাস পায়, বিশেষত: ইউরোপে। বিশ্ব পরিভ্রমণ যুগে (১৫০০-
১৯০০) নতুন নতুন দেশ আবিস্কারের ফলে ভৌগোলিক জ্ঞানের কদর বেড়ে যায়। এই সময়কার
বিজ্ঞানীরা ভৌগোলিক তথ্যাবলীকে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কাঠামোর আওতায় দাঁড় করানোর চেষ্টা
করেন। এই কাজে, বিজ্ঞানী বার্হনহার্ডাস ভেরিনিয়াস (১৬২২-১৬৫০) সবচেয়ে অগ্রণী ভ‚মিকা
রাখেন।
তিনি ভৌগোলিক তথ্যাবলীকে দুটি অংশে ভাগ করেন। একটি, প্রাকৃতিক যার আওতায়
বায়ুমন্ডলীয়, পানি এবং অশ্মমন্ডলীয় বিষয়ক তথ্যাবলী অন্তভর্‚ক্ত। অপরটি, পৃথিবীর সামাজিক ও
সাংস্কৃতিক বিন্যাস/ধরন সম্পর্কিত তথ্যাবলী বিবেচনা করা হয়। তবে, ভ‚গোল বিষয় চর্চার এই
পর্যায়ে ভেরিনিয়াস স্পষ্টতই মানুষের সাথে বাহ্যিক পৃথিবীর আন্ত:সম্পর্কের ওপর বিশেষ
গুরুত্বারোপ করেন।
ভেরিনিয়াস ভ‚গোল বিষয়কে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক কাঠামো দিয়ে থাকলেও এইক্ষেত্রে ইমানুয়েল
কান্ট (১৭২৪-১৮০৪) ভ‚গোলকে বিজ্ঞানে স্থান করে নিতে বিশেষভাবে অবদান রেখেছেন। কান্টের
মতে, জ্ঞানকে তিনভাবে সংগঠিত করা যায়। এক) জ্ঞান চর্চার প্রাপ্তফলকে বিষয় গতি তারতম্যের
ভিত্তিতে শ্রেণী বিভাজনের মাধ্যমে। এর ফলস্বরূপ যেমন, রসায়ন, ভ‚তত্ত¡, প্রাণীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা
ইত্যাদি যা নিয়মাবদ্ধ ক্ষেত্র (ঝুংঃবসধঃরপ ভরবষফং) নামে পরিচিত। দুই) ঐতিহাসিক পদ্ধতি
অবলম্বনে অর্থাৎ সময়ের আলোকে সম্পর্ক বিবেচনা করা। তিন) কিভাবে স্থানসমূহ পরস্পরে
সম্পর্কিত তা জানার মাধ্যমে। মূলত: এই বিষয়টিই ভ‚গোল চর্চার ক্ষেত্র।
ভ‚গোলের প্রাচীন ধারণাসমূহ উল্লেখ করুন।
আধুনিক ভ‚গোলের ধারণা
কান্টের দেওয়া দার্শনিক কাঠামোর মাধ্যমে ভ‚গোল অন্যান্য বিষয়ের সাথে নিজের একটি দৃঢ়
অবস্থান করে নিতে পেরেছে। পরবর্তীতে ভ‚গোল চর্চার প্রধান লক্ষ্য দাঁড়ায় বিভিন্ন বিষয়সমূহের
স্থানিক বর্ণনা, বিশ্লেষণ ও ধরনের ব্যাখ্যা প্রদান করা এবং তাদের তুলনা ও তারতম্য তুলে ধরা।
ভ‚গোল চর্চায় তিনটি প্রধান প্রধান বিষয় গুরুত্ব পায়:
ক্স পৃথিবী পৃষ্ঠের বিষয়সমূহ (ঋবধঃঁৎবং) কোথায় (ডযবৎব) অবস্থিত?
ক্স এই সব বিষয়সমূহ কেন সেখানে অবস্থিত? এবং
ক্স এই সব বিষয়সমূহের এই অবস্থানের ফলাফল কি?
অক্ষাংশ ভিত্তিক জলবায়ু
অঞ্চল।
ঊার্হনহার্ডস ভেরিয়িাস
ভূগোলকে (১) প্রাকৃতিক (২)
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এই
দুইভাগে ভাগ করুন।
ইমানুয়েল কান্ট-জ্ঞানকে
তিনভাবে সংগঠিত করা যায়।
আধুনিক ভূগোল পৃথিবী পৃষ্ঠের
বিষয় কোথায়, কোন ও এর
ফলাফল।
প্রথম প্রশ্নটি ভ‚গোলের মূল উপপাদ্য বিষয় হলেও ‘কোথায়' এর মাধ্যমে মূলত: কোন বস্তুর
অবস্থানগত ব্যাখ্যাই নির্দেশ করে। কোন বস্তু শুধুমাত্র কোথায় অবস্থিত জানলে ভ‚গোল চর্চা খুবই
সংকীর্ণ হতো। তাই, কোন বস্তু যেখানে আছে কেন সেখানে অবস্থিত, কিভাবে সেস্থানে এর
উদ্ভব/বিকাশ ঘটে, ভ‚গোল এই সব বিষয়ের বন্টনগত তারতম্য ও বিন্যাসের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দানে
চেষ্টা করে থাকে।
ভ‚গোল চর্চা থেকে লব্ধ জ্ঞানকে ৬টি প্রধান ধারণায় ভাগ করা যেতে পারে। এগুলো হলো:
ক. বিশ্বময়তা (এষড়নধষরংস) ঘ. আন্ত:সংযোগময়তা (ওহঃবৎ ৎবষধঃবফহবংং)
খ. বৈচিত্রতা/বিধিময়তা (উরাবৎংরঃু-ঠধৎরধনরষরঃু) ঙ. পরিবর্তন (ঈযধহমব)
গ. স্থানিক অবস্থান (ঝঢ়ধঃরধষ খড়পধঃরড়হ) চ. সংস্কৃতি (ঈঁষঃঁৎব)
ক. বিশ্বময়তা: পৃথিবীকে একটি ভ‚গোলক হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এর সাথে সৌরজগতের
বিশেষ সম্পর্ক আছে। তাছাড়া, ভ‚গোলককে বিভিন্ন অক্ষ ও দ্রাঘিমা রেখা দ্বারা ভাগ করা হয়, যা
পৃথিবীর স্থানগত পরিমাপ, আবহাওয়া ও জলবায়ুগত তারতম্য জানতে সহায়ক হয়। মোট কথা,
পৃথিবী, সূর্য সম্পর্কিত জ্ঞান, গ্রীড, স্কেল, এই সবই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
খ. বৈচিত্রতা: পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু অসমানভাবে বন্টিত, ফলে পৃথিবী বৈচিত্রময় অর্থাৎ স্থান
সমূহে পার্থক্য দেখা যায়। এই বিবিধময়তা প্রকাশে ভ‚গোলে তিনটি ধারণা ব্যবহার করা হয়। যথা:
বিন্যাস, স্থানিক তারতম্য ও আঞ্চলিকরণ।
গ. স্থানিক অবস্থান: স্থানিক অবস্থানকে ও তিনটি উপ-ধারণায় প্রকাশ করা হয়। যথা: অবস্থানগত
(চড়ংরঃরড়হ)Ñ(যা পৃথিবী পৃষ্ঠে কোন বস্তুর সুনির্দিষ্ট অক্ষ ও দ্রাঘিমা রেখাভিত্তিক অবস্থান নির্দেশ
করে), স্থানগত (যা সে স্থানের প্রকৃতি বুঝায়) ও পরিস্থিতিগত (যা পার্শ¦বর্তী বস্তুর আলোকে এর
অবস্থানগত গুরুত্ব ইঙ্গিত করে)।
ঘ. আন্ত:সংযোগময়তা: ভ‚-বৈচিত্রময়তা সত্তে¡ও ভ‚গোলবিদগণ মনে করেন, পৃথিবীর স্থানসমূহের
সাথে এবং বিষয়সমূহ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। ভ‚গোলের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্থান ও
বিষয়সমূহের এ পারস্পারিক সম্পর্ককে বিভিন্ন নামে ভ‚গোলে অভিহিত করা হয়। যেমন- আন্ত:
নির্ভরশীলতা, আন্ত: সংযোগ, স্থানিক মিথষ্ক্রিয়া এবং স্থানিক সহ-সংশ্রব।
ঙ. পরিবর্তন: ভ‚-পৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্যাবলী সদা পরিবর্তনশীল। মানুষ, প্রকৃতি ভ‚-পৃষ্ঠের এ পরিবর্তনে
গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। যেমন, মানুষ বনভ‚মি উজাড় করে, ফলে ভ‚মিক্ষয় বেড়ে যায়
এবং নদীতে বাড়তি পলি জমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে। নদীর পথ পরিবর্তন কিংবা নদীর
নাব্যতা কমে যাওয়ায় নৌপরিবহন ব্যবস্থা ও কৃষিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আবার প্রকৃতি অতি অল্প
সময়ের মধ্যেই ভ‚মিকম্প বা আগ্নেয় তৎপরতার মাধ্যমে কোন স্থানের ভ‚-পৃষ্ঠে ব্যাপক পরিবর্তন
আনতে পারে। ভ‚-পৃষ্ঠের এ পরিবর্তন সাধনে যে সব প্রক্রিয়াসমূহ কার্যরত আছে সেগুলোকে তিন
ভাগে দেখানো হয়। যথা:
ক্স প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াসমূহ (চযুংরপধষ চৎড়পবংংবং)
ক্স জৈব প্রক্রিয়াসমূহ (ইরড়ঃরপ চৎড়পবংংবং)
ক্স সামাজিক প্রক্রিয়াসমূহ (ঝড়পরধষ চৎড়পবংংবং)
চ. সাংস্কৃতিক অঞ্চলসমূহ : আধুনিক ভ‚গোলের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো মানুষ বিভিন্ন
পরিবেশে কিভাবে নিজেকে মানিয়ে নেয় এবং প্রাকৃতিক প্রতিক‚ল অবস্থাকে কতখানি জয় করে
ভূগোল চর্চা লব্দ জ্ঞান ৬টি
প্রধান ধারনায় বিভক্ত।
প্রাকৃতিক
জৈব
সামাজিক
নিজের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পারে তা জানা। মানুষের সংস্কৃতির মান/পর্যায় দ্বারাই নির্ধারিত
হয় সে কতখানি প্রকৃতিকে কাজে লাগাতে পারবে। সাংস্কৃতিক অঞ্চল বিষয় ভৌগোলিক জ্ঞান চর্চা
মানুষ ও প্রাকৃতিক সম্পদের সম্পর্ক ছাড়াও এর আহরণ ও সহনশীলতা এবং মানবতা সম্পর্কে
ধারণা পেতে সাহায্য করে।
পাঠ সংক্ষেপ
ভ‚গোল বিষয়ের প্রধান লক্ষ্য মানুষের আবাসভ‚মি হিসাবে পৃথিবীকে জানা। গ্রীক যুগ থেকে
ভ‚গোল ধারণার গোঁড়াপত্তন হয়। সে সময় ভ‚গোল পৃথিবীর ভ‚ভাগ ও মহাজাগতিক বিদ্যাচর্চায়
সীমাবদ্ধ ছিল। গ্রীকদের তৈরিকৃত মানচিত্র ভ‚গোল চর্চায় বিশেষ অবদান রেখেছে। ইউরোপীয়
বিশ্ব পরিভ্রমণ যুগে ভ‚গোল বিষয়ের কদর বাড়তে থাকে। এ সময়ের বিজ্ঞানী ইমানুয়েল কান্ট
ভ‚গোলকে বিজ্ঞানে স্থান করে নিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন। আধুনিক যুগের ভ‚গোল চর্চায়
বিভিন্ন বিষয়ের স্থানিক বর্ণনা, বিশ্লেষণ ও অবস্থানগত ধরনের ব্যাখ্যা প্রদান করা এবং
পরস্পরের তুলনা ও তারতম্য অনুসন্ধান করার দিকেই সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ১.১
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১। সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন (সময়- ৩ মিনিট) ঃ
১.১ গ্রীক পন্ডিতের সংগৃহীত তথ্যাবলীকে প্রধান কয়টি ভাগে ভাগ করেন?
ক. ২টি খ. ৩টি গ. ৪টি
১.২ ভ‚গোল শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেনক. ইরেটোসথেনীস খ. ইমানুয়েল কান্ট গ. স্ট্রাবো
১.৩ কান্টের মতে জ্ঞানকে সংগঠিত করা যায়ক. ২ ভাবে খ. ৩ ভাবে গ. ৪ ভাবে
২। শূণ্যস্থান পূরণ করুন (সময়- ৩ মিনিট) ঃ
২.১. ইরেটোসথেনীস শিলা, মৃত্তিকা ও ... ... ... ... সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন।
২.২. ভেরেনিয়াস ভৌগোলিক তথ্যাবলীকে দুটি পৃথক ভাগে ভাগ করেন। একটি প্রাকৃতিক ভ‚গোল;
অপরটি ... ... ... ...।
২.৩. ভ‚পৃষ্ঠের পরিবর্তন সাধনে যে সব প্রক্রিয়াসমূহ কার্যরত আছে সেগুলো হলো... ... ... ...,
জৈব ও সামাজিক।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী (সময় ৩ * ২ = ৬ মিনিট)
১. ভ‚গোলের প্রকৃতি কি?
২. ভ‚গোল দর্শনে ইমানুয়েল কান্টের অবদান কি?
৩. ভ‚গোল চর্চায় কোন কোন বিষয় গুরুত্ব পায়?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. ভ‚গোল সম্পর্কে ধারণা দিন এবং ভ‚গোল জ্ঞানের শুরু কিভাবে হয়েছিল বর্ণনা করুন।
২. আধুনিক ভ‚গোল সম্পর্কে ধারণা দিন।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ