কেন্দ্রীয় স্থান তত্তে¡র উপাস্থাপক কে?
খ্রিষ্টলার-এর উপস্থাপিত জনপদ প্যাটার্নের মূল ভিত্তি কি?
খ্রিষ্টলার কোন কেন্দ্রগুলোকে তাঁর তত্তে¡ নিয়েছেন?


নগর জনপদ প্যাটার্ন (টৎনধহ ঝবঃঃষবসবহঃ চধঃঃবৎহ) :
কোন দেশ বা অঞ্চলে ছোট বড় বিভিন্ন আকারের নগর জনপদ থাকে। এই সমস্ত বিভিন্ন শ্রেণীর নগর জনপদের
অবস্থান, আকার, ব্যবধান, কার্যক্রম ইত্যাদির মধ্যে নিয়মিত বিন্যাস বা পর্যায়ক্রমিক ধারা লক্ষ্য করা যায় যা
একটি প্যাটার্নের আওতায় ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
নগর জনপদগুলোকে জনসংখ্যা অনুযায়ী যদি বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায় তবে দেখা যাবে ক্ষুদ্রতম
নগরগুলো সংখ্যায় অধিক থাকে এবং কাছাকাছি অবস্থান করে। এর পরের শ্রেণীর নগরের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত
কম হয় এবং নগরের মধ্যবর্তী ব্যবধান বাড়ে। পরবর্তী বৃহত্তম শ্রেণীর নগরের সংখ্যা জনসংখ্যার আকার
অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে এবং ব্যবধানও বাড়তে থাকে এবং অবশেষে সাধারণত শীর্ষস্থানীয় একটি
নগর পাওয়া যায়।
একইভাবে বিভিন্ন নগরকেন্দ্রিক বাণিজ্যিক কর্মকান্ডের মধ্যেও একটি বিন্যাস ধারা লক্ষ্য করা যায়। ক্ষুদ্রতম
সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বল্প ব্যবধানবিশিষ্ট নগরগুলোর কেন্দ্র হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য ও সেবা প্রদান করে। পরবর্তী
অধিক দূরত্বের এবং সংখ্যায় কম নগর শ্রেণীর কেন্দ্রে পূর্ববর্তী সকল পণ্য ও সেবা, উপরন্তু অতিরিক্ত পণ্য ও
সেবা পাওয়া যায়। এমনিভাবে পরবর্তী উচ্চ শ্রেণীর নগরগুলো আরও অধিক দূরত্বে অবস্থান করে এবং সংখ্যায়
আরও কমে যায়। এই সমস্ত উচ্চ শ্রেণীর নগর কেন্দ্র পূর্ববতী সকল নগর শ্রেণীর পণ্য ও সেবা প্রদান করা
ছাড়াও বিশেষ ধরনের পণ্য ও সেবা প্রদান করে যা পূর্ববর্তী ক্ষুদ্র নগর শ্রেণীগুলোতে পাওয়া যায় না।
নগর জনপদের বিন্যাসে আর একটি লক্ষণীয় ব্যাপার হলো সমপর্যায়ের নগরগুলোর নিয়মিত ব্যবধানে অবস্থান।
ক্ষুদ্রতম নগরকেন্দ্রগুলো সংখ্যায় অধিক এবং কাছাকাছি নিয়মিত ব্যবধানে অবস্থিত হওয়ায় তাদের সীমিত
কর্মকান্ড¯œারা স্থানীয় জনসংখ্যাকে সেবা প্রদান করে। পরবর্তী নগরশ্রেণিগুলো অপেক্ষাকৃত দূরত্বে নিয়মিত
ব্যবধানে অবস্থান করে এবং তাদের সেবার পরিসরও বৃদ্ধি পায়। এমনিভাবে পর্যায়ক্রমিকভাবে নগরের আকার
বৃদ্ধির সাথে সাথে নগরের মধ্যে ব্যবধানও নিয়মিতভাবে বাড়তে থাকে এবং নগরের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমতে
থাকে পক্ষান্তরে সেবার পরিসরও ক্রমান্বয়ে বাড়ে। আবার বৃহত্তর শ্রেণীর নগর কেন্দ্রগুলোর এমন কৌশলগত
অবস্থান হয় যে তারা পূর্ববর্তী নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্ষুদ্র নগরের উপর প্রভাব রাখতে পারে।
কাজেই নগর জনপদের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ছোট থেকে বড় বিভিন্ন শ্রেণির নগরের সংখ্যা,
আকার, ব্যবধান, বাণিজিক কর্মকান্ড, সেবার প্রকার নিয়মিতভাবে একটি অনুক্রম ধারা অনুসরণ করে বিন্যস্ত
থাকে।
নগর জনপদ প্যাটার্ন বিশ্লেষণ : তত্ত¡ ও পদ্ধতিসমূহ (অহধষুংরং ড়ভ টৎনধহ ঝবঃঃষবসবহঃ চধঃঃবৎহ:
ঞযবড়ৎরবং ধহফ গবঃযড়ফং)
কেন্দ্রীয় স্থান তত্ত¡ (ঈবহঃৎধষ চষধপব ঞযবড়ৎু) : কেন্দ্রীয় স্থান তত্ত¡ নগর জনপদের বিন্যাস বা প্যাটার্ন
বিশ্লেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত¡। এই তত্তে¡ কোন দেশ বা অঞ্চলের নগর ব্যবস্থার পরস্পর নির্ভরশীল
ক্রমপর্যায়ের নগরের সংখ্যা, অবস্থান, আকার, ব্যবধান ও কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হয়।
জার্মান অর্থনীতিক ভূগোলবিদ ওয়ালটার খ্রিষ্টলার ১৯৩৩ সালে কেন্দ্রীয় স্থান তত্ত¡টি উপস্থাপন করেন। তিনি
একটি বিশেষ কল্পিত পরিবেশের ধারণা দেন যেখানে তাঁর তত্ত¡টি কার্যকর হবে এবং তিনি ধরে নেন যে তাঁর
ধারণাকৃত স্থানটিতে উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনে এবং ভোক্তারা সর্বোচ্চ সুবিধা আদায়ে সচেষ্ট থাকবে যা
তাঁর উপস্থাপিত জনপদ প্যাটার্নটির মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
খ্রিষ্টলার-এর অনুমিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যসমূহ
১। অনুমিতি অঞ্চলটি অসীমাবদ্ধ একটি উর্বর সমতল ভূমি যেখানে সম্পদ কমবেশি সমভাবে বিন্যস্ত।
২। অঞ্চলটিতে জনসংখ্যা সমভাবে বিন্যস্ত এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও সর্বত্র সমান।
৩। পরিবহন জাল কেন্দ্র থেকে ব্যাসার্ধের আকারে সমানভাবে বিস্তৃত থাকবে যার জন্য সব শ্রেণীর কেন্দ্রীয় স্থান
সমানভাবে গম্য হবে এবং পরিবহন খরচ সমান্তরাল রেখায় দূরত্বের সাথে সমানুপাতিক হারে বাড়বে।
৪। অঞ্চলটিতে পণ্য ও সেবার সর্বোচ্চ চাহিদা পূরণের ক্ষমতা থাকতে হবে।
৫। যারা পণ্য বিক্রয় ও সেবা দান করবে তাদের আয় সর্বোচ্চ হতে হবে।
৬। ভোক্তারা ন্যূনতম দূরত্ব থেকে দ্রব্য ক্রয় ও সেবা নিতে আসবে যার ফলে পরিবহন খরচ কম হবে। ফলে
সর্বাধিক ব্যয় বা খরচ করতে সক্ষম হবে।
৭। কেন্দ্রীয় স্থানের সংখ্যা যথাসম্ভব কম হবে।
৮। উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকবে না।
উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে কোন অঞ্চলে একই স্তরের নগর জনপদ সুষমভাবে বন্টিত হবে এবং বিভিন্ন স্তরের
জনপদ একটি নিয়ম বা ধারা অনুসরণ করে অনুক্রমে বিন্যস্ত থাকবে।
খ্রিষ্টলার-এর কেন্দ্রীয় স্থান একটি উৎপাদনশীল এলাকার মধ্যে অবস্থিত যা তার চারিদিকের উৎপাদনশীল ভূমির
উপর নির্ভরশীল। কেন্দ্রীয় স্থান তার নিজস্ব কেন্দ্র এবং চারপাশের বৃহত্তর উৎপাদনশীল এলাকায় পণ্য সরবরাহ
করবে এবং সেবা দিবে। ফলে কেন্দ্র এবং তার চারপাশের এলাকা পরস্পর নির্ভরশীল থাকবে। খ্রিষ্টলার-এর
অনুমিত অঞ্চলটিতে ছোট বড় বিভিন্ন আকারের কেন্দ্র থাকবে। ছোট কেন্দ্রের কার্যক্রম থেকে বড় কেন্দ্রের
কার্যক্রম জটিল হবে। কারণ বড় কেন্দ্রে ছোট কেন্দ্রের সব ধরনের কার্যক্রম থাকবে এবং অতিরিক্ত কেন্দ্রীয়
কার্যক্রম থাকবে। কাজেই কেন্দ্রীয় স্থানের সেবা ও পণ্যের মান এবং প্রকার প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় স্থানের মান
(জধহশ) এর উপর নির্ভর করবে। খ্রিষ্টলার নগর জনপদের শুধুমাত্র খুচরা পণ্য সরবরাহ ও সেবা প্রদান করে
এমন কেন্দ্রগুলোকেই নিয়েছেন। তিনি খুচরা পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রমের বিন্যাস এবং ভোক্তার
পণ্য ও সেবা ক্রয়ের জন্য কেন্দ্রে গমনাগমন চিহ্নিত করার দুটি বিশেষ নির্ধারক উপস্থাপন করেন। এই নির্ধারক
দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিধি নির্ধারণ করবে।
ক. পণ্য সরবরাহের পরিসর (জধহমব)
খ. পণ্যের প্রারম্ভিক চাহিদা বা সর্বনিæ চাহিদা মাত্রা (ঞযৎবংযড়ষফ)
পণ্য সরবরাহের পরিসর বলতে সর্বোচ্চ দূরত্বকে বোঝানো হয়েছে যেখান থেকে কোন ভোক্তা কোন দ্রব্য ক্রয়ের
জন্য কেন্দ্রে গমন করবে এবং পণ্যের প্রারম্ভিক চাহিদা বলতে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আর্থিকভাবে লাভজনক
পর্যায়ে টিকে থাকার জন্য ব্যবসার সর্বনি¤œ মাত্রা বা চাহিদা বোঝানো হয়েছে।
বিভিন্ন প্রকার খুচরা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহের পরিসর এবং পণ্যের প্রারম্ভিক চাহিদার মধ্যে পার্থক্য
রয়েছে। পণ্য সরবরাহের পরিসর এবং পণ্যের প্রারম্ভিক চাহিদার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
অথবা একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়। খ্রিষ্টলার বলেছেন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীর
চেষ্টা থাকবে যথাসম্ভব ক্রেতার কাছে থাকার যাতে ক্রেতার ন্যূনতম পরিবহন ব্যয় হয় এবং ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে
সর্বোচ্চ ব্যয় করতে পারে যাতে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ মুনাফা লাভে সমর্থ হয়।
যদি কোন অঞ্চলে লোকসংখ্যা সমানভাবে বিন্যস্ত থাকে, লোকের যদি সমান ক্রয় ক্ষমতা থাকে এবং পরিবহন
ব্যয় দূরত্বের সাথে যদি সমানুপাতিক হারে বৃদ্ধি পায় তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রে অবস্থান করলে অঞ্চলের যে
কোন স্থান থেকে কেন্দ্র সমানভাবে গম্য বা গমনযোগ্য হবে।
আবার কেন্দ্রীয় পূরক (ঈড়সঢ়ষবসবহঃধৎু) অঞ্চল বা বাণিজ্য অঞ্চল এমন হওয়া উচিত যাতে পূরক অঞ্চল
কেন্দ্র থেকে সমান দূরত্বে থাকে। পূরক অঞ্চল শুধুমাত্র গোলাকৃতি হলেই পূরক অঞ্চলের সব জায়গা কেন্দ্র থেকে
সমান দূরত্বে থাকবে। কেন্দ্রীয় অঞ্চল থেকে পরিপূরক অঞ্চলের প্রান্ত সীমানা বরাবর ব্যাসার্ধের আকারে রাস্তা
বিন্যস্ত থাকলে কেন্দ্রীয় স্থান পূরক অঞ্চলের সর্বত্র সমান সেবা দিতে সক্ষম হবে এবং ক্রেতারাও চতুপার্শ্বস্থ
থেকে কেন্দ্রে দ্রব্যাদি ক্রয় এবং সেবা নেওয়ার জন্য আসতে পারবে। তবে পূরক অঞ্চল বৃত্তাকার হলে কিছু
সমস্যা দেখা দিবে। কারণ কয়েকটি বৃত্তাকার পূরক অঞ্চল যদি পরস্পর সংলগ্ন হয়ে অবস্থান করে তবে
প্রত্যেকটি বৃত্তের মধ্যস্থিত অংশ সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ বৃত্তের মধ্যস্থিত অঞ্চল সেবা এলাকার বাইরে
থাকবে। আবার বৃত্ত মধ্যস্থিত সেবা বঞ্চিত অঞ্চল দূর করতে চাইলে বৃত্তগুলো একটার উপর আর একটা চলে
আসবে। ফলে এই সমস্ত অঞ্চলে একাধিক কেন্দ্র থেকে সেবা প্রদান বা বাণিজ্যের জন্য প্রতিযোগিতা হবে এবং
ভোক্তাদের জন্যও কোন নির্দিষ্ট সেবা কেন্দ্র থাকবে না। এই অবস্থায় ষড়ভুজই একমাত্র আকার যা বৃত্তের স্থলে
ব্যবহার করা যায়। যার ফলে কেন্দ্রীয় স্থানের পরিপূরক বা বাণিজ্য অঞ্চলের প্রান্তসীমা কেন্দ্র থেকে সমান দূরত্বে
থাকবে এবং একই দূরত্বের যে কোন অঞ্চল সমানভাবে সেবা পাবে। (চিত্র-৪.৫.১)
বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম এসএসএইচএল
মানবিক ভ‚গোল ও পরিবেশ পৃষ্ঠা-২২০
কেন্দ্রীয় স্থানের অনুক্রম (ঐরবৎধৎপযু ড়ভ ঈবহঃৎধষ চষধপব)
খ্রিস্টলার-এর নগর জনপদের পারিসরিক বা স্থানিক প্যাটার্ন বিশ্লেষণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্থানের বিন্যাসে
উপনীত হওয়া যায় যা থেকে কেন্দ্রীয় স্থানের অনুক্রম নির্ধারণ করা সম্ভব।
খ্রীস্টলার পণ্য সরবরাহের পরিসর এবং পণ্যের প্রারম্ভিক চাহিদার ভিত্তিতে ৭টি স্তরের কেন্দ্রীয় স্থান শনাক্ত
করেন এবং একই পর্যায়ের পণ্য সরবরাহের পরিসর এবং পণ্যের প্রারম্ভিক চাহিদাভুক্ত কেন্দ্রীয় স্থানগুলিকে
শ্রেণীবদ্ধ করেন। অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত বড় জনপদে কেন্দ্রীয় কার্যক্রম সংখ্যায় অধিক হয় এবং একই
প্রকার কার্যক্রমের একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকে যা ক্ষুদ্র আকারের কেন্দ্রীয় স্থানে থাকে না। কেন্দ্রীয় স্থানের
ক্রমধাপের সর্বনিæ স্তরে থাকে ক্ষুদ্রতম জনসংখ্যাবিশিষ্ট জনপদের কেন্দ্রীয় স্থান যাদের ঘনত্ব সর্বাধিক হয় এবং
প্রতিষ্ঠানসমূহ সর্বনিæ পর্যায়ের থাকে যাদের পণ্যের পাল্লা এবং প্রারম্ভিক চাহিদাও সর্বনিæ পর্যায়ের হয়। পরবর্তী
স্তরে কেন্দ্রীয় স্থানের ঘনত্ব অপেক্ষাকৃত কম হয় এবং প্রতিষ্ঠানসমূহের পণ্য ও সেবার পাল্লা এবং প্রারম্ভিক
চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। খ্রীস্টলার এমনিভাবে কেন্দ্রীয় স্থানের ক্রমোন্নতি দেখান যা ধাপ আকারে হয়ে থাকে (চিত্র৪.৫.২)।
উচ্চস্তরের প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় স্থান তাদের নিæবর্তী কেন্দ্রীয় স্থানের সব কার্যক্রম ধারণ করে। ফলে একটি স্তরের
প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় স্থানে নির্দিষ্ট সংখ্যক নিæবর্তী কেন্দ্রীয় স্থানের বাণিজ্য বা পূরক অঞ্চল থাকে যাদেরকে কেন্দ্রীয়
স্থানটি সেবাদান করে। এর ফলে নগর জনপদের পারিসরিক বা স্থানিক বিন্যাসে নগর কেন্দ্রের একটি অনুক্রম
ধারা প্রতীয়মান হয়। যে নগর জনপদ যত উচ্চ পর্যায়ের হবে, সংখ্যা তত কমতে থাকবে এবং নগর কেন্দ্রের
মধ্যে ব্যবধানও বৃদ্ধি পাবে। যদি কোন নগরের জনসংখ্যা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবং ব্যবসার
সমানুপাতিক হয় তবে নগর জনসংখ্যার আকার বিন্যাস একটি ক্রমধাপ অনুক্রমের সৃষ্টি করবে। নগর জনপদ
কেন্দ্রের এই অনুক্রমকে তিনি ক¯œারা ব্যাখ্যা করেন। এখানে ক এর মান ১ ধরা হয়েছে যা তার সেবা এলাকার
আওতাভুক্ত একটি বিশেষ স্তরের জনপদের সংখ্যা নির্দেশ করে। খ্রীষ্টলার সাতটি ক্রমধাপ স্তরের উল্লেখ করেন।
খ্রিষ্টলার প্রথমে নগর জনপদের পারিসরিক বা স্থানিক বিন্যাস বিশ্লেষণে ‘৩’ মাত্রার নগর জনপদের পর্যায়ক্রমিক
অনুক্রম জাল উপস্থাপন করেন যা ক=৩ বিন্যাস নামে পরিচিত। এই অনুক্রমে সর্বোচ্চ স্তরে একটি কেন্দ্রীয়
স্থান থাকে এবং এই কেন্দ্রীয় স্থানের অধিনস্থ কেন্দ্রের সংখ্যা (দ্বিতীয় স্তরের পর) ৩ অনুপাতে ১, ২, ৬, ১৮,
৫৪, ১৬২ এরূপ পর্যায়ক্রমিক ধারা অনুসারে বৃদ্ধি পায়। এর অর্থ ৩ নীতি অনুসারে নিæ স্তরের ৩টি কেন্দ্রীয় স্থান
এবং তাদের বাণিজ্যিক অঞ্চলসমূহ পূর্ববর্তী ১টি কেন্দ্রীয় স্থানের অন্তর্ভুক্ত এবং উচ্চ স্তরটির বাণিজ্য অঞ্চলের
পরিসীমা ছয়টি সংলগ্ন নি¤œবর্তী স্তরের প্রত্যেকটির এক-তৃতীয়াংশ এবং কেন্দ্রটির নিজস্ব বাজার অঞ্চলের
সমন্বয়ে গঠিত। কেন্দ্রীয় স্থানের এই ধরনের বিন্যাসের ফলে ভোক্তার কেন্দ্রে গমনাগমনের সামগ্রিক দূরত্ব কমে
যায় যার জন্য এই ক=৩ ব্যবস্থাকে বাজার নীতি বা সরবরাহ নীতিও বলে। এই পদ্ধতিতে যদিও মোট দূরত্ব
কমে আসে কিন্তু পরিবহন জাল ততটা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে না। কারণ দুইটি বৃহত্তর কেন্দ্রের মধ্যে
গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন যোগাযোগ কোন মধ্যবর্তী কেন্দ্রের উপর দিয়ে যায় না (চিত্র-৪.৫.৩)। পরবর্তীতে খ্রীস্টলার
তত্ত¡টিতে দুই ধরনের পরিবর্তন বা বিকল্প সংযোজন করেন যা ক=৪ পরিবহন নীতি এবং ক=৭ প্রশাসনিক বা
রাজনীতিক-সামাজিক নীতি নামে পরিচিত (চিত্র-৪.৫.৪, ৪.৫.৫)। ক=৪ পরিবহন নীতিতে খ্রীস্টলার কেন্দ্রীয়
স্থানের অনুক্রম এমনভাবে উপস্থাপন করেন যা সর্বাপেক্ষা কার্যকর পরিবহন জাল সৃষ্টি করবে। যার ফলে উচ্চ
পর্যায়ের কেন্দ্রীয় স্থান সমূহের সাথে যোগাযোগকারী পথে সর্বাপেক্ষা অধিক সংখ্যক কেন্দ্রীয় স্থান অবস্থিত হবে।
এই নীতিতে অনুক্রম ৪ বিন্যাসে যাবে এবং উচ্চ পর্যায়ের কেন্দ্রীয় স্থানের অধীনে কেন্দ্রটির নিজস্ব বাজার অঞ্চল
এবং নি¤œবর্তী স্তরের প্রত্যেকটির অর্ধেক বাজার বা বাণিজ্যিক অঞ্চল থাকবে। ক=৭ প্রশাসন নীতিতে কার্যকর
প্রশাসনের লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের কেন্দ্রীয় স্থানের অধীনে সংলগ্ন নি¤েœর ছয়টি কেন্দ্রীয় স্থানের সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক
পরিসীমা অঞ্চল থাকবে যা বিভক্ত করা যাবে না।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন :
১. কেন্দ্রীয় স্থান তত্তে¡র উপাস্থাপক কে?
২. খ্রিষ্টলার-এর উপস্থাপিত জনপদ প্যাটার্নের মূল ভিত্তি কি?
৩. খ্রিষ্টলার কোন কেন্দ্রগুলোকে তাঁর তত্তে¡ নিয়েছেন?
৪. খ্রিষ্টলার প্রতিষ্ঠানসমূহের বিন্যাস এবং পরিধি নির্ধারণের জন্য কোন দুটি নিয়ামকের কথা বলেছেন ?
৫. কেন্দ্রীয় স্থানের পূরক অঞ্চলের আকৃতি কেমন?
৬. খ্রিষ্টালার কিভাবে কেন্দ্রীয় স্থানের ক্রমোন্নতি দেখান?
৭. ক এর মান কত এবং ক¯œারা কি নির্দেশ করা হয়?
৮. ক=৩, ক=৪ এবং ক=৭ কাকে বলে?

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]