বন নিধনকরণ বলতে কি বুঝায়? বন নিধনকরণের কারণ ও পরিবেশের উপর বনশ ন্যতার প্রতিক্রিয়া বর্ণনা


বন নিধনকরণ
বননিধনকরণ পরিবেশ অধ:পাতের একটি অন্যতম প্রধান কারণ। তবে পৃথিবী ব্যাপী বনশূন্যতার হার নির্ধারণ
বা মূল্যায়ন করার ব্যাপারে দুটি প্রধান সমস্যা রয়েছে। প্রথমত: বিভিন্ন দেশের সরকার পুরনো উপাত্ত সরবরাহ
করে থাকে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সত্যিকার চিত্র দেওয়া হয় না, দ্বিতীয়ত: বন নিধনের স্থানীয় স্বল্পকালীন প্রভাব
নির্ণয় করা গেলেও বনশূন্যতার সুদূর প্রসারী পৃথিবীব্যাপী প্রভাব নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। ৮০ এর
দশকে ঋঅঙ এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ১১.৩ মিলিয়ন হেক্টর ক্রান্তীয় অরণ্য ভূমি প্রতি বছর বনশূন্য হয়েছে
যার আয়তন অষ্ট্রিয়া এবং বেলজিয়ামের প্রায় সমান। এছাড়াও প্রতি বছর বাণিজ্যিক কারণে কাঠের গুড়ির জন্য
অতিরিক্ত ৪.৪ মিলিয়ন হেক্টর অরণ্যভূমি নিধন করা হয়। এর ফলে এক তৃতীয়াংশ বা তারও অধিক পরিমাণ
অবশিষ্ট গাছের ক্ষতি হয়। এই সমস্তের মধ্যে পতিত জমি এবং কৃষিভূমিতে অবস্থিত ব্যাপকভাবে বৃক্ষের
অধ:পাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই এই ব্যাপক বৃক্ষশূন্যতার প্রভাব পরিবেশের উপর পড়ে এবং
পরিবেশের অধ:পাত ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. বন শূন্যতার হার নির্ধারণ করার দুটি প্রধান সমস্যা কি কি?
২. বন নিধনকরণ কি ভাবে পরিবেশের অধ:পাত ঘটায়?
বন নিধনকরণের কারণ (ঈধঁংবং ড়ভ ফবভড়ৎবংঃধঃরড়হ)
বনশূন্যতার অন্যতম প্রধান কারণ বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধি। এছাড়াও বাণিজ্যিক ও অন্যান্য বিভিন্ন প্রয়োজনে
কাঠের গুড়ির জন্য গাছ কাটা হয়। পশুচারণের জন্যও বনশূন্যতা হয়ে থাকে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি আমাজান অঞ্চল ছাড়া অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশের বনশূন্যতার অন্যতম প্রধান কারণ।
অতিরিক্ত খাদ্যের চাহিদা মেটাতে বনভূমি কৃষিভূমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। ১৯৭১ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে
কৃষিভূমি ৫৯ মিলিয়ন হেক্টর বেড়েছে। অন্যদিকে বনভূমি ১২৫ মিলিয়ন হেক্টর কমে গিয়েছে। বনভূমি কৃষি
ভূমিতে রূপান্তরের পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এই একই সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির
সাথে সাথে বাড়িঘর, শিল্প প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, ইত্যাদিতে মাথাপিছু ০.০৫ হিসেবে সর্বমোট ৫০ মিলিয়ন
হেক্টরের বেশি বনভূমি অকৃষি ভূমিতে পরিণত হয়েছে। নগর স¤প্রসারণ প্রক্রিয়ায় ১০০ মিলিয়ন হেক্টরের উপর
কৃষিভূমি নগরাঞ্চলে রূপান্তরিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য ও অন্যান্য চাহিদা
পূরণে বিশ্বের ৮০ ভাগ বনভূমিই কৃষি ও অকৃষি কাজে রূপান্তরিত হওয়ায় বনশূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা
করা হয়। আমাজন ছাড়া অধিকাংশ বনশূন্যতার একমাত্র কারণই হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
ক্রান্তীয় অঞ্চলে বাণিজ্য ভিত্তিক কাঠের গুড়ি কাটা হয়ে থাকে। এটি মুনাফা অর্জনকারী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যার
মাধ্যমে অতি আয়াসে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। কাজেই ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রা
অর্জনের একটি অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো গাছের গুড়ি রপ্তানি। এই সমস্ত দেশসমূহে বনভূমি পুন:বিকাশের
কথা চিন্তা না করে কাঠের গুড়ির জন্য গাছ নির্বিচারে কাটা হয়ে থাকে। ফলে বনশূন্যতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পশুচারণ ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর একটি অন্যতম প্রধান উপজীবিকা। ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সালের
মধ্যবর্তী সময়ে দুই-পঞ্চমাংশ বনশূন্যতার অন্যতম প্রধান কারণই হলো বনভূমিতে পশুচারণ।বৃষ্টি-প্রধান ক্রান্তীয়
অঞ্চলের অনুর্বর জঙ্গল পরিষ্কার করে চারণভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হয় যা ক্রমান্বয়ে আরও অনুর্বর ভূমিতে
পরিণত হতে থাকে। ফলে একই সংখ্যক পশু পালনের জন্য প্রতি বছর অতিরিক্ত বনভূমি পরিষ্কার করে
পশুচারণ ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় বনভূমি ক্রমান্বয়ে চারণভূমিতে রূপান্তরিত হতে থাকে।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. বনশূন্যতার প্রধান কারণ কি কি ?
২. বনভূমি কেন কৃষিভূমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে?
৩. বনভূমি অকৃষিভূমিতে কি কি প্রকারে রূপান্তরিত হচ্ছে?
৪. ক্রান্তিয় অঞ্চলে কিভাবে বনশূন্যতা হচ্ছে?
৫. পশুচারণ ল্যাটিন আমেরিকায় কি ভাবে বনশূন্যতা ঘটাচ্ছে?
পরিবেশের উপর বনশূন্যতার প্রতিক্রিয়া
(জবধপঃরড়হ ড়ভ উবভড়ৎবংঃধঃধরড়হ ড়হ ঊহারৎড়হসবহঃ)
পরিবেশের উপর বনশুন্যতার নি¤œরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়:
(ক) ভূমিক্ষয় ও ভূমির উপরিভাগের মাটি অপসারণ (ঊৎড়ংরড়হ ড়ভ খধহফ ধহফ জবসড়াধষ ড়ভ ঞড়ঢ় ঝড়রষ) :
ভূমিক্ষয় বনশূন্যতার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। বনশূন্যতার কারণে ভূমি ক্ষয় হয়ে নালার জলে পরিণত হয়। বৃক্ষ
মাটিকে ধরে রাখে। ভূমি বনশূন্য হলে বৃষ্টির পানিতে ভূ-উপরিভাগের মাটি দ্রæত অপসারিত হয়। বনভূমি না
থাকলে ভূগর্ভে পানি প্রবেশের মাত্রাও হ্রাস পায়। ফলে ভূ-উপরিভাগে পানি প্রবাহের গতি বৃদ্ধি পায় এবং পানি
প্রবাহের সাথে অধিক হারে পলি স্থানান্তরিত হয়ে নদীর তলদেশে জমা হতে থাকে এবং নদী তলদেশ উঁচু হয়ে
বর্ষা মৌসুমে বা অতি বৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও বনভূমি না থাকার কারণে ভূগর্ভে পানি প্রবেশের মাত্রা
হ্রাস পেলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নিচে নামতে থাকে এবং ভূপৃষ্ঠের মাটি শুষ্ক হতে শুরু করে। ফলে
মরুপ্রবণতা এবং ভূমি ক্ষয় সক্রিয় হয়। যদি পাহাড়ের গাত্র বনশূন্য হয় তাতে ঘন ঘন ভূমিধস হতে থাকে।
ভূমিক্ষয়ের সাথে ভূপৃষ্ঠের মাটির জৈব এবং অন্যান্য পুষ্টিকর পদার্থ অপসারিত হয় যা আর সহজে পূরণ হয় না।
ফলে ফসলের উৎপাদন খুব দ্রæত হ্রাস পেতে থাকে। শুষ্ক অঞ্চলে অতি মাত্রায় পশুচারণ বিক্ষিপ্তভাবে জন্মানো
লতাগুল্ম ও তৃণজাতীয় উদ্ভিদের ক্ষতি সাধন করে যা ভূমি ক্ষয়ে ভূমিকা রাখে।
(খ) উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর ক্ষতিসাধন (খড়ংং ড়ভ চষধহঃং ধহফ অহরসধষং) :
ক্রান্তীয় মন্ডলের বনভূমিসমূহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর সমৃদ্ধ ভান্ডার। কিন্তু বনশূন্যতার ফলে উদ্ভিদ
ও জীবজন্তুর অনেক প্রজাতি ইতোমধ্যে লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। ওষুধ প্রস্তুতে ক্রান্তীয় মন্ডলের বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ
ব্যাপক হারে ব্যবহারের ফলে এই সমস্ত উদ্ভিদের অধিকাংশ লুপ্ত হওয়ার পথে বা ইতোমধ্যেই লুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
এছাড়াও উচ্চ ফলনশীল খাদ্য উৎপাদনের জন্য দেশজ অনেক প্রকারের ক্রান্তীয় শস্য সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে
গিয়েছে।
বনশূন্যতার সুদূর প্রসারী ভূমন্ডলীয় প্রভাব এখনও পরিষ্কারভাবে উপলব্ধি করা না গেলেও কিছু কিছু প্রভাব
ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেমন বনশূন্যতার ফলে মাটির আর্দ্রতা কমে গিয়েছে, বৃষ্টিপাত কমে গিয়ে নদীতে
পানি প্রবাহ কমে গিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বনশূন্য এলাকা থেকে অধিকমাত্রায় সৌর তাপ বায়ুমন্ডলে
ফিরে গিয়ে ভূমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমনও ধারণা করা হচ্ছে যে
ব্যাপক আকারে বনশূন্যতার কারণে ভূমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে যা পৃথিবীব্যাপী
জলবায়ুর পরিবর্তন আনবে। ফলশ্রæতিতে পৃথিবীব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে যাকে গ্রীণ হাউস প্রতিক্রিয়া বলা
হয়। এর প্রভাবে এন্টারটিকা মহাদেশ এবং গ্রীনল্যান্ডের বরফের আচ্ছাদন গলে গিয়ে সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে
গিয়ে পৃথিবীর নিচু এলাকাসমূহ সমুদ্রে নিমজ্জিত হতে পারে। তবে এই বিষয়টি এখনও পর্যন্ত গবেষণা সাপেক্ষ।
এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ভূমন্ডলের বৃষ্টিপাতের প্যাটার্নেও যদি পরিবর্তন হয় তবে কৃষি সমৃদ্ধ এবং কৃষিভিত্তিক
আর্থনীতিক অঞ্চলে এর সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়বে।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. পরিবেশের উপর বনশূন্যতার প্রতিক্রিয়া কি কি?
২. বনশূন্যতার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া কি?
৩. ভূগর্ভস্থ পানি কেন হ্রাস পায়?
৪. ভূগর্ভস্থ পানি হ্রাস পেলে কি প্রতিক্রিয়া হয়?
৫. পাহাড়ের গাত্র বনশূন্য হলে কি প্রতিক্রিয়া হয়?
৬. ভূমি ক্ষয়ের ফলে কি প্রতিক্রিয়া হয়?
৭. শুষ্ক অঞ্চলে অতি মাত্রায় পশুচারণের ফলে কি ঘটে?
৮. ক্রান্তীয় অঞ্চলে বহু উদ্ভিদ কি কি কারণে লুপ্ত প্রায়?
৯. বনশূন্যতার সুদূর প্রসারী প্রভাব কি কি?
১০. গ্রীণ হাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে কোন গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে?
১১. গ্রীণ হাউসের প্রভাব পৃথিবীর উপর কি প্রভাব ফেলবে?
অতি চাষ, মৎস্য শিকার ও পশুচারণ (ঙাবৎ ঈঁষঃরাধঃরড়হ, ঋরংযরহম ধহফ এৎধুরহম)
অতি চাষ (ঙাবৎ ঈঁষঃরাধঃরড়হ) : অতি চাষ অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত উন্নয়নশীল দেশসমূহের বৈশিষ্ট্য।
তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশসমূহে কৃষি প্রধান উপজীবিকা। এই সমস্ত দেশে অতিরিক্ত জনসংখ্যার
খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য অধিকাংশ চাষযোগ্য কৃষিভূমি নিবিড় চাষের আওতাধীন এবং বিরতিহীনভাবে
শস্য উৎপাদনে নিয়োজিত। ১৯৭০ এর দশকে সবুজ বিপ্লব (এৎববহ জবাড়ষঁঃরড়হ) শুরু হলে চাষযোগ্য
উন্নত কৃষিভূমির অধিকাংশই চাষভুক্ত হয়। সবুজ বিপ্লবের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিভিন্নভাবে অতিরিক্ত শস্য উৎপাদন
বৃদ্ধি করা। এর ফলে উচ্চ ফলনশীল ধানের উদ্ভব ঘটে এবং প্রধান খাদ্য উৎপাদনে একই জমি বিরতিহীনভাবে
ব্যবহার হতে থাকে। ফলে কৃষিজমিতে বিভিন্নভাবে এর প্রতিক্রিয়া পড়ে।
একই জমি একই ফসল উৎপাদনে ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে কালক্রমে জমির উর্বরতা হ্রাস পেতে থাকে। উচ্চ
ফলনশীল শস্য উৎপাদনে বিভিন্ন রাসায়নিক সার ও পানির প্রয়োজন। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে অধিকাংশ
ক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত পানির প্রয়োজন মেটানো হয়। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানি স্তর ক্রমাগত
নিচে নামতে থাকে। ফলে মাটি তার আর্দ্রতা ক্রমান্বয়ে হারাতে থাকে। একই জমি একই ফসল উৎপাদনে
ক্রমাগত ব্যবহার, অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগ ও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে জমির উর্বরতা এবং ফসল
উৎপাদন ক্ষমতা উভয়ই ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়। জনসংখ্যার অতি উচ্চ বৃদ্ধির কারণে খাদ্য ঘাটতি একটি স্থায়ী
বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়। যার ফলে প্রান্তিক ভূমিতে চাষ শুরু হয়। এই সমস্ত প্রান্তিক ভূমি সাধারণত অনুর্বর
পার্বত্য বা স্বল্প বৃষ্টিপাতসম্পন্ন ঊষর অঞ্চল হয়। শস্য উৎপাদনে এই সমস্ত অঞ্চল ব্যবহার করা হলে ভূমিক্ষয়,
ভূমিধস এবং মরুয়ায়ন প্রক্রিয়ায় মাটির উৎপাদন ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়ে যায় এবং সামগ্রিক পরিবেশের
অধ:পাত ঘটে।
কৃষি-নির্ভর অত্যধিক জনসংখ্যা কৃষিভূমির অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে বিভক্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। চাষের
জমি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র খন্ডে বিভক্ত হয়ে এক পর্যায়ে চাষযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। এই সমস্ত ক্ষেত্রেও কৃষক শস্য
উৎপাদনের জন্য প্রান্তিক ভূমিতে সরে যায় যা ক্রমান্বয়ে উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে অচাষযোগ্য ভূমিতে পরিণত
হয়।
অতএব দেখা যাচ্ছে, অতি চাষ জমির উর্বরতা নষ্ট করে, উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস করে এবং পরিশেষে কৃষককে
প্রান্তিক ভূমির দিকে ঠেলে দেয় যা আবার অল্প কিছুদিনের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে ভূমিধস
হয়, মরুয়ায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং পরিশেষে কৃষি জমি উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে অচাষযোগ্য জমিতে পরিণত
হয়।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. কৃষি জমিতে সবুজ বিপ্লবের প্রতিক্রিয়া কি?
২. অতি চাষ কোন দেশসমূহে হয়ে থাকে?
৩. কি কি কারণে জমির উর্বরতা এবং ফসল উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পায়?
৪. প্রান্তিক ভূমি ফসল উৎপাদনে ব্যবহারের প্রতিক্রিয়া কি?
৫. চাষের জমি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে বিভক্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়া কি?
অতি মৎস্য শিকার (ঙাবৎ ঋরংযরহম)
মৎস্য শিকার পৃথিবীর অনেক দেশের একটি অন্যতম প্রধান উপজীবিকা। আবার কোন কোন দেশের মৎস্য
শিকারই প্রধান উপজীবিকা। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে শিল্পজাত রাসায়নিক পদার্থ নদী এবং অন্যান্য স্বাদু পানির
জলাশয়ে মিশ্রিত হওয়ার কারণে স্বাদু পানির মাছ লুপ্তপ্রায়। ফলে উন্নত বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বর্তমানে সমুদ্রের
মাছ শিকার করে মাছের চাহিদা মেটায়। সমুদ্র তীরবর্তী অধিকাংশ দেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনসংখ্যা
সামুদ্রিক মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। বিভিন্ন প্রকারের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সামুদ্রিক
মাছ শিকার করা হয়। ফলে পূর্বের তুলনায় অধিক পরিমাণে মৎস্য ধরা পড়ে। কিন্তু সেই তুলনায় মাছ পরিপূরণ
হয় না। কোন কোন মাছ খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনপ্রিয়তার জন্য কালক্রমে লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
জাপানি এবং কয়েকটি জাতির কাছে তিমি মাছের মাংস বিভিন্ন প্রয়োজনে বলবর্ধক হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
অতিরিক্ত তিমি মাছ আহরণের ফলে তিমি মাছ বিলুপ্তর পথে। বর্তমানে তিমি মাছ ধরার উপর বিশ্বব্যাপী
নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
উন্ননয়শীল বিশ্বে স্বাদু পানির মাছ জনপ্রিয়। তবে অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে কৃষি ও অকৃষি কর্মকান্ড
স¤প্রসারণের ফলে নদী, পুকুরসহ অন্যান্য জলাশয় দ্রæত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও কৃষি জমিতে অত্যধিক
রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে বৃষ্টির পানির সাথে রাসায়নিক পদার্থ কৃষি ভূমি, নদী, পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ে
পড়ে। ফলে স্বাদু পানির বহু প্রজাতির মাছ ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে সমুদ্রের মাছ শিকার করে
মাছের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা হয়। তবে মাছ আহরণ পদ্ধতি ততটা উন্নত না হওয়ায় বিভিন্ন প্রকারের
মাছ নির্বিচারে ধরা পড়ে, বিশেষ করে মাছের পোনা। ফলে মাছের বংশ বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং মাছের সংখ্যা
ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। এছাড়াও যে সমস্ত মাছ ধরা পড়ে তার উল্লেখযোগ্য অংশ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা
হয় না, বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হয়। সমুদ্র থেকে নির্বিচারে মাছ উত্তোলন সমুদ্র বাস্তব্যের ভারসাম্য নষ্ট
করছে।
এছাড়াও বিভিন্ন উন্নত দেশসমূহের রাসায়নিক বিষাক্ত বর্জ্য উন্নয়নশীল বা দরিদ্র দেশসমূহের সমুদ্রসীমায়
নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগর উন্নত দেশসমূহের রাসায়নিক বিষাক্ত বর্জ্য নিক্ষেপের একটি
অন্যতম প্রধান স্থান। উন্নত দেশসমূহের বিভিন্ন হ্রদ এবং নদীর পানি রাসায়নিক বর্জ্যরে দ্বারা ভারী হয়ে গিয়েছে
যা মাছ টিকে থাকার জন্য অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। এই সমস্ত বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় মাছের বংশ বৃদ্ধি এবং বিচরণের
পরিবেশ ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. স্বাদু পানির মাছ কিভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ?
২. উন্নত বিশ্বের দেশসমূহ কি ভাবে মাছের চাহিদা মেটায়?
৩. যে পরিমাণ মাছ ধরা হয় সেই পরিমাণ মাছ কেন পূরণ হয় না?
৪. তিমি মাছ ধরার উপর কেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে?
৫. সমুদ্রের মাছের বংশ বৃদ্ধি কি প্রকারে ব্যাহত হচ্ছে?
অতি চারণ (ঙাবৎ এৎধুরহম) :
পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভূমি বিভিন্ন প্রকার ও মাত্রার মরুভূমি যা কৃষিভূমি হিসেবে ব্যবহারের প্রায়
অনুপযোগী। পৃথিবীর প্রধান মরুভূমিগুলো যেমন আটাকামা, সাহারার প্রান্তিক অঞ্চলসমূহ মূলত পরিবর্তনশীল
এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই অঞ্চলগুলোতে যে সমস্ত বছরে ভাল বৃষ্টিপাত হয় সেই বছরগুলোতে যাযাবর
শ্রেণীর পশুপালকদের পশুচারণের কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু বৃষ্টিহীন বছরগুলোতে এই সমস্ত অঞ্চল
পশুচারণের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। কারণ পানির অভাবে তৃণভূমি ঊষর ভূমিতে পরিণত হয়। আফ্রিকার সাহেল
অঞ্চল এই রকম একটি প্রান্তিক ভূমি। ১৯৭০ পরবর্তীতে ক্রমাগত অনাবৃষ্টির কারণে মৌরীতানিয়া, সেনেগাল,
মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার ইত্যাদি অঞ্চলের দেশসমূহের অধিবাসীরা দুর্ভিক্ষে পতিত হয়। সাহেলীয়
প্রান্তিক ভূমি ছাড়িয়ে জলাবায়ুর দিক থেকে কিছুটা উন্নত প্রায়-শুষ্ক অঞ্চল রয়েছে। এই ধরনের পরিবেশ উপরে
উল্লেখিত দেশসমূহের কিছু অংশে এবং সুদান, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, তানজানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার
কিছু অংশে, বিশেষ করে বোতসোয়ানায় দেখা যায়। মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ইসরাইল থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত
দেশগুলো, ভারতের থর মরুভূমি এবং দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনার কিছু অংশ এবং উত্তর চিলিও একই
ধরনের প্রায়-শুষ্ক অঞ্চল। এই সমস্ত অঞ্চলে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত লোকসংখ্যা বাস করে, যাদের উপজীবিকা
মূলত পশুপালন ও পশুচারণ। অতি পশুচারণের জন্য ভূমিক্ষয় হয় এবং ভূমি আলগা হয়ে ভূ-উপরিভাগের
বালুকণা বায়ুতাড়িত হয়ে স্থানান্তরিত হয় এবং পরিশেষে মরুয়ায়ন প্রক্রিয়ার স¤প্রসারণ ঘটে। প্রকৃতপক্ষে এই
সমস্ত অঞ্চলে লোকসংখ্যা ও পশুচারণ আর্দ্র বছরগুলোর জন্য কোন সমস্যা নয়। কিন্তু শুষ্ক সময়ের জন্য তা
ভূমির ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হয়ে যায় এবং ভূমির উপর চাপ পড়ে। কারণ, এই সমস্ত অঞ্চলের অধিবাসীরা
তৃণভূমির সন্ধানে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে অভিগমন করে এবং এই প্রক্রিয়ায় মরুয়ায়ন প্রক্রিয়ার স¤প্রসারণ
ঘটে। এক আনুমানিক হিসাবে দেখা গিয়েছে যে, সামগ্রিকভাবে বিশ্বে বর্তমান সময়ে ব্রাজিলের চেয়েও বৃহত্তর
অঞ্চল মরুয়ায়নের আওতাভুক্ত।
মানুষ এবং পশুর চারণভূমির সন্ধানে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে অভিগমন নিয়ন্ত্রণ, নিয়ন্ত্রিত পশুচারণ, জনসংখ্যা
ও পশুসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে মরুয়ায়ন প্রক্রিয়া রোধ করা সম্ভব। আলজেরিয়া বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন বনায়ন,
পরিকল্পিত সেচ এবং নতুন ধরনের শস্য পদ্ধতির মাধ্যমে মরুয়ায়ন রোধে সাফল্য অর্জন করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার অধিক জনসংখ্যার দেশসমূহে মানুষের বাসস্থান এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে পতিত এবং
গোচরণভূমির অধিকাংশ ব্যবহৃত হওয়ায় পশুচারণ ক্ষেত্রের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ফসল কাটার পর
শস্যক্ষেত্র পশুচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শস্যক্ষেত্রে ফসলকাটার পর ফসলের গোড়ার যে অংশটি
রয়ে যায় তা পশু বিচরণ করে খেয়ে থাকে। পূর্বে চাষের সময় এগুলো মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলা হতো। এতে
করে জমির জৈবিক সারের প্রয়োজন কিছুটা হলেও মিটতো। বর্তমানে এগুলো পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের
ফলে মাটি তার পুষ্টি অনেকখানি হারাচ্ছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পশুচারণের মাধ্যমে ভূমি ও পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতি
হচ্ছে এবং পরিবেশের অধ:পাত ঘটছে।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. প্রান্তিক ভূমি কি ভাবে ঊষর ভূমিতে পরিণত হয়?
২. অতি পশুচারণের প্রতিক্রিয়া কি?
৩. মরুয়ায়ন প্রক্রিয়ার কিভাবে স¤প্রসারণ ঘটে?
৪. আলজেরিয়া কি ভাবে মরুয়ায়ন রোধে সাফল্য অর্জন করেছে?
৫. দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে কেন পশুচারণ ক্ষেত্রের সংকট দেখা দিয়েছে?
৬. শস্য কাটার পর শস্যক্ষেত্রে পশুচারণ কি ভাবে মাটির পুষ্টি নষ্ট করছে?
নিচের সারাংশটি পড়ে আপনার ধারণাটি আরও পরিষ্কার করে নিন।
পাঠসংক্ষেপ :
পরিবেশ মূলত প্রকৃতি এবং প্রকৃতিতে মানুষের সমগ্র কর্মকান্ডের সমষ্টিগত রূপ। মানুষ বিভিন্নভাবে প্রাকৃতিক
পরিবেশ থেকে জীবিকা এবং জীবন ধারনের উপাদান সংগ্রহ করে। এই উপাদান সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় বিভিন্নভাবে
পরিবেশের ক্ষতি করে এবং পরিবেশের অধ:পাত ঘটায়। প্রাকৃতিক পরিবেশের অধ:পাতের অন্যতম প্রধান
কারণ পৃথিবীব্যাপী জনসংখ্যার আশংকাজনক বৃদ্ধি। অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রয়োজন মিটানোর জন্য প্রকৃতি থেকে
অধিক পরিমাণে জীবিকা এবং জীবন ধারনের উপাদান সংগ্রহ করা হচ্ছে। যার ফলশ্রæতিতে প্রকৃতির ভারসাম্য
নষ্ট হচ্ছে এবং সামগ্রিক পরিবেশ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে, পরিবেশের উপর যার সুদূর প্রসারী প্রভাব লক্ষ্য
করা যাচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। শিল্পবিপ্লবের পরবর্তীতে প্রযুক্তিগত
উন্নয়ন জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে এবং বিভিন্নভাবে পরিবেশে প্রভাব ফেলে।
পরিবেশের অধ:পাতে বননিধন, অতিচাষ, অতি মৎস্য চাষ এবং অতিচারণের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
বননিধনের কারণে পৃথিবীব্যাপী বনশূন্যতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশকে সঠিক পর্যায়ে রাখার জন্য
বনভূমির একান্ত প্রয়োজন। বনভূমি নিধনের পিছনে বিভিন্ন কারণ ক্রিয়াশীল। পৃথিবীব্যাপী অতিরিক্ত জনসংখ্যার
খাদ্যের প্রয়োজনে বনভূমি কেটে চাষের জমিতে পরিণত করা হচ্ছে। এছাড়াও ব্যবসাভিত্তিক বিভিন্ন প্রয়োজনে
কাঠ রপ্তানি করেও বনভূমি ধবংস করা হচ্ছে। অতিচাষের কারণে জমি তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি হারাচ্ছে।
রাসায়নিক সার ব্যবহার করে এবং সেচের মাধ্যমে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হলেও ক্রমাগত একই
জমি বারংবার একই ফসল উৎপাদনে ব্যবহারের ফলে চাষের জমি ক্রমান্বয়ে উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে প্রান্তিক
ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। এছাড়া অতি মাত্রায় সেচ নির্ভর চাষ পদ্ধতির কারণে ভূগর্ভস্থ পানি স্তর নিচে নেমে গিয়ে
মরুয়ায়নের প্রসার ঘটাচ্ছে। রাসায়নিক সারের অধিক ব্যবহার জমির উৎপাদন ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস করছে।
অতি মৎস্য চাষের কারণে বিভিন্ন প্রজাতির অনেক জনপ্রিয় মাছ বিলুপ্তির পথে। অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে
বাণিজ্য ভিত্তিক অধিক পরিমাণে মৎস্য আহরণের ফলে মৎস্য জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে। মৎস্য আহরণের
সময় মাছের পোনা অধিক পরিমাণে ধবংস হচ্ছে। ফলে মাছের স্বাভাবিক জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও
মৎস্য আহরণের সময় অন্যান্য বিভিন্ন প্রজাতির অপ্রয়োজনীয় মাছ ধরা পড়ে ধবংস হচ্ছে। অতিচারণ পৃথিবীর
বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলের অন্যতম প্রধান সমস্যা। এই সমস্ত অঞ্চলের অধিবাসীদের পশুপালন একটি অন্যতম
প্রধান উপজীবিকা। অতি পশুচারণের ফলে চারণক্ষেত্রগুলোর ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করে অনুর্বর ঊষর ভূমিতে
পরিণত হয়। এই সমস্ত অঞ্চলের অধিবাসীরা তাদের পশুর পাল নিয়ে এক তৃণভূমি নি:শেষ করে অন্য তৃণভূমি
এবং ক্রমান্বয়ে বনভূমিতে প্রবেশ করে। ফলে একই প্রক্রিয়ায় পশুচারণভূমি চারণক্ষেত্র হিসেবে অযোগ্য হয়ে
ক্রমান্বয়ে শুষ্ক ভূমিতে পরিণত হয়। এইভাবে মরুয়ায়ন প্রক্রিয়ার প্রসার ঘটে। ফলে পরিবেশের অধ:পাত ঘটে।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:
১. সত্য হলে ‘স’ আর মির্থ্যা হলে ‘মি’ লিখুন (সময় ৩ মিনিট):
১.১ ১৯৭০ এর দশকে সবুজ বিপ্লব (এৎববহ জবাড়ষঁঃরড়হ) শুরু হলে চাষযোগ্য উন্নত কৃষিভূমির
অধিকাংশই চাষভুক্ত হয়।
১.২ শিল্পোন্নত দেশগুলোতে শিল্পজাত রাসায়নিক পদার্থ নদী এবং অন্যান্য স্বাদু পানির জলাশয়ে মিশ্রিত
হওয়ার কারণে লোনা পানির মাছ লুপ্তপ্রায়।
১.৩ পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভূমি বিভিন্ন প্রকার ও মাত্রার মরুভূমি যা কৃষিভূমি হিসেবে ব্যবহারের
উপযোগী।
১.৪ অতি পশুচারণের জন্য ভূমিক্ষয় হয় এবং ভূমি আলগা হয়ে ভূ-উপরিভাগের বালুকণা বায়ুতাড়িত হয়ে
স্থানান্তরিত হয়।
২. শূন্যস্থান পুরণ করুন
২.১ বননিধনকরণ পরিবেশ ----------একটি অন্যতম প্রধান কারণ।
২.২ ৮০ এর দশকে ঋঅঙ-এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় --------- মিলিয়ন হেক্টর ক্রান্তীয় অরণ্য ভূমি প্রতি
বছর বনশূন্য হয়েছে।
২.৩ জনশূন্যতার অন্যতম প্রধান কারণ বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা --------।
২.৪ ১৯৭১ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে কৃষিভূমি -------- মিলিয়ণ হেক্টর বেড়েছে।
২.৫ ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে দুই-পঞ্চমাংশ বনশূন্যতার প্রধান কারণই হলো বনভূমিতে --
--------।
২.৬ ---------- মন্ডলের বনভূমিসমূহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর সমৃদ্ধ ভান্ডার।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী
১. বন নিধনের প্রধান কারণগুলো বিশে ষণ করুন এবং প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে লিখুন। -
২. পরিবেশের উপর বনশূন্যতার প্রতিক্রিয়াগুলো ব্যক্ত করুন।
৩. অতি চাষের কারণ এবং অতি চাষের প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে লিখুন।
৪. সবুজ বিপ্লব কখন থেকে শুরু হয় এবং সবুজ বিপ্লবের ফলে পরিবেশের কিভাবে অধ:পাত ঘটে?
৫. পরিবেশের উপর অতি মৎস্য চাষ এবং অতি পশুচারণের প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে লিখুন।
রচনামূলক প্রশ্ন:
১. বন নিধনকরণ বলতে কি বুঝায়? বন নিধনকরণের কারণ ও পরিবেশের উপর বনশ ন্যতার প্রতিক্রিয়া বর্ণনা
করুন।
২. বন নিধনকরণ বলতে কি বুঝায়? অতি চাষ, মৎস্য শিকার, পশু চারণ কিভাবে বন নিধনের সাথে জড়িত।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]