পরিবেশ দূষণ ও রোগব্যাধি
পরিবেশ প্রাকৃতিক ও মানবিক উভয় পরিবেশের সমন্বয়ে গঠিত। অবশ্য পরিবেশ বলতে খুব সীমিত অর্থে
অনেক ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশকে বোঝায়। তবে সাধারণভাবে প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যে যে জৈবিক জীবন-প্রাণী ও
উদ্ভিদকে ঘিরে যে সামগ্রিক বাহ্যিক অবস্থা তাকে পরিবেশ বলে। ভৌগোলিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবেশ মূলত
প্রকৃতি ও প্রকৃতিতে মানুষের সমগ্র কর্মকান্ডের সমষ্টিগত রূপকে বোঝায়। প্রকৃতি ও মানুষের কার্যকারণ,
আচরণের ভিন্নতার কারণে পরিবেশের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়।
মানুষ তার ক্রিয়াকলাপের দ্বারা বিভিন্নভাবে পরিবেশকে দৃষিত করছে। মানুষের ক্রিয়াকলাপের দ্বারা পারিপার্শ্বিক
অবস্থার দূষণকে সাধারণভাবে পরিবেশ দূষণ বলা হয়। মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে পরিবেশ দূষণ করছে
যার ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া মানুষ এবং অন্যান্য জীবের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপর, পরিবেশের জন্যও
ক্ষতিকারক। পরিবেশ দূষণ পরিবেশের ব্যবহারিক ও জীবনযাপনের সুযোগসুবিধা সৃষ্টিকারী সমস্ত বস্তুর মধ্যে
বৈকল্য বা স্বাভাবিক কার্যকারিতায় অক্ষমতা আনে। বর্তমানে পরিবেশ দূষণ একটি মারাত্মক এবং অন্যতম
সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত।
শিল্প বিপ্লবের পরবর্তীতে বিভিন্ন শিল্পের বিকাশ ও উন্নতির ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সাথে সাথে
মানুষের চাহিদা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন শিল্পজাত দ্রব্যের উৎপাদন বৃদ্ধি
পেয়েছে। এই সমস্ত শিল্পজাত দ্রব্যের উৎপাদন নি:সৃত বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্য পানি, মাটি ও বায়ুকে বিভিন্ন
প্রক্রিয়ায় বিষাক্ত করছে। শিল্পবিপ্লবের পরবর্তীতে মানুষের জীবন মানের উন্নতির ফলে মানুষের মৃত্যুহার কমে
গিয়েছে এবং জন্মহার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জনসংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা
পূরণের লক্ষ্যে অধিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার মাটি ও পানিকে
ক্রমাগত বিষাক্ত করে তুলছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকারের পরিবহন মাধ্যম বহুগুণে বৃদ্ধি
পেয়েছে। এই সমস্ত পরিবহন থেকে উত্থিত বিভিন্ন প্রকার গ্যাস বায়ুমন্ডলকে দূষিত করছে। শিল্প-কারখানা,
ঘরবাড়ি ইত্যাদিতে জ্বালানির জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পদার্থ দহনের ফলে বিভিন্ন গ্যাস প্রতিনিয়ত বায়ুর সাথে
মিশ্রিত হয়ে বায়ু দূষণ করছে। এছাড়াও নাগরিক জীবনের দৈনন্দিন ব্যবহার অনুপযোগী বিভিন্ন কঠিন বর্জ্য
পদার্থ ও অন্যান্য আবর্জনা ও ময়লা শহরের পরিবেশ দূষণে ভূমিকা রাখছে।
কাজেই দেখা যাচ্ছে, যে সব দূষক দ্বারা পরিবেশ দূষিত হয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই সমস্ত দূষকের অগ্রগণ্য
ভূমিকা রয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন যত বেশি হচ্ছে, দূষণের মাত্রাও সেই পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফলে দূষণ প্রতিরোধ একটি জটিল ও ব্যয় সাধ্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। জনসংখ্যার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি দূষণের
এই মাত্রাকে ত্বরান্বিত করছে। বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা বেড়েছে তিনগুন।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন :
১. পরিবেশ দূষণ কাকে বলে?
২. পরিবেশ দূষণের ফলে কি হয়?
৩. শিল্পজাত দ্রব্যের উৎপাদন কিভাবে পরিবেশ দূষণ করছে?
৪. পরিবেশ দূষণ প্রধানত কি কি মাধ্যমে হয়ে থাকে?
পরিবেশ দূষণের প্রকার (ঞুঢ়বং ড়ভ চড়ষষঁঃরড়হ) :
বিভিন্ন প্রকারের পরিবেশ দূষণকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়-বায়ু দূষণ, পানি দূষণ ও মাটি বা
মৃত্তিকা দূষণ। এছাড়াও আরও বিভিন্ন প্রকারের দূষণ রয়েছে যা পরিবেশের প্রভূত ক্ষতি করে।
বায়ু দূষণ ও রোগব্যাধি (অরৎ চড়ষষঁঃরড়হ ধহফ উরংবধংবং) :
বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বায়ু দূষণ হয়। বিভিন্ন প্রকার পরিবহনে ব্যবহৃত জ্বালানি বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ।
এছাড়াও শিল্প কারখানা ও বাড়িঘরে ব্যবহৃত জ্বালানি থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস, শহরের ময়লা আবর্জনা
পোড়ানো থেকে উৎপন্ন গ্যাস বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
বিভিন্ন প্রকার মোটরযান, উড়োজাহাজ, মহাকাশে উৎক্ষিপ্ত রকেট বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। উন্নত
বিশ্বে পরিবার প্রতি মোটরযানের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এছাড়াও নগরায়নের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর
সমগ্র জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ বর্তমানে শহরবাসী। এই জনসংখ্যা ক্রমশ বর্ধমান। নগরীর জনসংখ্যা
বৃদ্ধির সাথে সাথে মোটরযানের সংখ্যাও বাড়ছে। ১৯৫০ সাল নাগাদ সমগ্র বিশ্বের মোটরযানের সংখ্যা ছিল প্রায়
৪০ মিলিয়ন বা ৪ কোটি, ১৯৯০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে আনুমানিক ৪০০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটিতে
দাঁড়িয়েছে। ফলে মোটরযান দ্বারা বায়ু দূষণ কি পরিমাণ বেড়েছে তা সহজেই অনুমেয়। যদিও মনে করা হয়
মোটরযান জনিত বায়ু দূষণ মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলোর একটি অন্যতম সমস্যা, কিন্তু আগামীতে উন্নত বিশ্বের
তুলনায় তৃতীয় বিশ্বে অধিক হারে নগরায়ন প্রক্রিয়া চলবে। ফলে মোটরযান থেকে নির্গত দূষকের পরিমাণও
বাড়বে এবং মোটরযান দ্বারা বায়ু দূষণ তৃতীয় বিশ্বেই সর্বাধিক হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এক হিসাব
অনুযায়ী বর্তমান শতকের ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) জনসংখ্যায় অধিকাংশ নগরপুঞ্জই উন্নয়নশীল বিশ্বে অবস্থিত।
যার ফলে আনুমানিক প্রায় ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি লোক এই সমস্ত নগরীয় পরিবেশে বায়ু দূষণের
প্রভাবাধীন থাকবে।
মোটরযান থেকে যে সমস্ত দূষক বায়ুতে মিশ্রিত হচ্ছে সেগুলো হলো কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন
অক্সাইডসমূহ, সালফার অক্সাইডসমূহ, হাইড্রোকার্বন এবং অন্যান্য ভাসমান বস্তুকণাসমূহ। এছাড়া গ্যাসোলিনের
মান উন্নয়নের জন্য সীসা সংযোজনের ফলে বায়ুতে সীসা দূষণও যুক্ত হয়। আবার উড়োজাহাজ, রকেট থেকে
নির্গত ধোঁয়ার সাথে হাইড্রোকার্বন, নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড মিশ্রিত থাকে।
উপরোক্ত দূষকসমূহ মানুষ, যাবতীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড,
শাসতন্ত্রের ক্ষতি সাধন করে এবং গাছপালা ধ্বংস করে, হাইড্রোকার্বন সূর্য রশ্মির সাথে মিলে নাইট্রোজেন-ডাইঅক্সাইড ধোঁয়া মিশ্রিত কুয়াশা বা ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে যা মানুষের চোখের জন্য ক্ষতিকারক। ধোঁয়াশায় চোখ
জ্বালা করা ছাড়াও ফুসফুসের ক্ষতি, মাথা ব্যাথা, বুক জ্বালা, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, গলা ব্যথা ইত্যাদি নানা
উপসর্গের সৃষ্টি করে। কার্বন মনোক্সাইড মানবদেহে রক্তের লোহিত কণিকায় অক্সিজেন বিশোষণ বিঘিœত করে
এবং øায়ুবিক ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার সৃষ্টি হয়। নাইট্রোজেন ও সালফার অক্সাইডসমূহ ফুসফুসের ক্ষমতা হ্রাস করে
এবং শাসনালীর বিভিন্ন প্রকার রোগের প্রকোপ ঘটায়। বায়ুতে সীসা দূষণ রক্ত সঞ্চালন, প্রজনন ও মূত্র গ্রন্থির
কার্যক্ষমতা হ্রাস করে এবং শিশুদের শিক্ষণ ক্ষমতাও হ্রাস পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে পরিবহন জ্বালানি নির্গত
কোন কোন বিষাক্ত গ্যাস ঘাতক ব্যাধি ক্যান্সার রোগের একটি কারণ। জ্বালানি পোড়ানো ধোঁয়া উদ্ভিদের
সালোক সংশে ষণ ক্ষমতা হ্রাস করে। হাইড্রোকার্বন গাছপালার বৃদ্ধি রোধ - করে।
শিল্প কারখানা, বাড়িঘর ইত্যাদিতে ব্যবহৃত জ্বালানি দহন থেকে সালফার-ডাই-অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড বায়ুতে মিশ্রিত হয়। সালফার ডাই-অক্সাইড মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর শ্বাসতন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব
ফেলে। এছাড়াও মাথা ব্যাথা, কাশি, চোখ জ্বালা ইত্যাদি নানাবিধ উপসর্গ দেখা দেয়। পারিবারিক জীবনে
ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, যেমন রেফ্রিজারেটর, পোকামাকড় নিধনের জন্য এ্যারোসল ইত্যাদি থেকে নাইট্রাস অক্সাইড
এবং সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয় যা বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
শহরের যত্রতত্র আবর্জনার স্তুপ নগর সভ্যতার একটি ক্ষতিকর অবদান। বিশ্বের বড় বড় শহরগুলো বিশেষ করে
তৃতীয় বিশ্বের শহরগুলোর দৈনন্দিন বর্জ্য ও আবর্জনা পরিষ্কার করা একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা
দিয়েছে। এই সমস্ত বর্জ্য ও আবর্জনা অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুড়িয়ে ফেলা হয়। বর্জ্য ও আবর্জনা পোড়ানো থেকে
উত্থিত ধুলো ও পারদ মানুষের ¯œায়ুতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করে। বায়ুমন্ডলে বিভিন্ন দূষক কণিকা মানুষের শ্বাসতন্ত্রে
জমা হয়ে হাঁপানি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহজনিত রোগের সৃষ্টি করে। দৈনন্দিন ব্যবহার্য পদার্থ থেকে নির্গত
ক্লোরিন গাছপালা ও ফলমূলের ক্ষতি করে।
শিল্পোন্নত দেশসমূহে অ¤ø বৃষ্টিপাত একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। কয়লা পোড়ানোর সময় আয়রন সালফাইডের
কিছু কণা পুড়ে গিয়ে সালফার-ডাই-অক্সাইড বায়ুমন্ডলে মিশে যায়। সালফার-ডাই-অক্সাইড এবং সাথে নাইট্রাস
অক্সাইড বায়ুমন্ডলে পানির সাথে মিশ্রিত হয়ে সালফিউরিক এসিডে পরিণত হয় এবং অ¤ø বৃষ্টিপাত ঘটায়।
অ¤øমিশ্রিত বৃষ্টিপাত মৃত্তিকা ও উদ্ভিদ বিকাশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এই বৃষ্টিপাতের ফলে জলাশয়সমূহের
অ¤øীকরণ ঘটে এবং মৃত্তিকার পুষ্টি উপাদান বিনষ্ট হয়। এর ফলে পাতা ঝলসে হলদে বর্ণের হয় এবং পরিশেষে
কুঁচকে গিয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই ঝরে যায়। মৃত্তিকায় অ¤øত্বের পরিমাণ বেড়ে গেলে গাছের মূলের ক্ষতি হয়
এবং গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। অ¤ø বৃষ্টিপাতের প্রতিক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি ও সুদূর প্রসারী হতে পারে। অ¤ø
বৃষ্টিপাতের প্রভাব কোন বিশেষ দেশ বা অ¤ø বৃষ্টিপাত সৃষ্টিকারী দেশের মধ্যে সব সময় সীমাবদ্ধ থাকে না।
দূরবর্তী দেশসমূহেও অ¤ø বৃষ্টিপাত হতে পারে। কারণ অ¤ø বৃষ্টিপাত সৃষ্টিকারী এসিড বায়ু প্রবাহের সাথে বহুদূর
পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে। ইউরোপের দেশসমূহের মধ্যে ব্রিটেন থেকে সুইজারল্যান্ড পর্যন্ত অ¤ø বৃষ্টিপাতের
বিস্তার ঘটতে পারে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশসমূহে অ¤ø বৃষ্টিপাতজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে।
গ্রীণ-হাউস প্রতিক্রিয়া বায়ু দূষণের একটি অন্যতম ক্ষতিকর প্রভাব। পৃথিবীতে লোক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে
খনিজ জ্বালানির ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। এর ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে।
এছাড়াও গাছ নিধন, গাছপালা ও জৈব পদার্থের পচনের ফলেও বিপুল পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড বায়ুমন্ডলে
সঞ্চিত হচ্ছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড বায়ু মন্ডলে ক্রমাগত জমা হচ্ছে এবং অবরুদ্ধ থাকছে। ফলে পৃথিবীর
তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৮৫০ সালে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ
ছিল ২৮০-২৯০ পিপিএম যা বর্তমানে প্রায় ৩৫০ পিপিএম এবং ২০৫০ সাল নাগাদ ৫০০-৭০০ পিপিএম হতে
পারে।
তবে গ্রীণ-হাউস প্রতিক্রিয়ার জন্য ক্লোরোফু¬রো কার্বনকেও দায়ী করা হয়। ক্লোরোফ্লুরো কার্বন এ্যারোসল,
বিভিন্ন প্রকারের শীতাতাপ ও হিমায়ক যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়। ক্লোরোফ্লুরো কার্বন পৃথিবীর তাপমাত্রাকে আটকে
রাখে, যার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বায়ুমন্ডলের যে ওজোন স্তর সূর্য
কিরণের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে পৃথিবীর জৈবিক জীবনকে রক্ষা করে, সেই ওজোন স্তর অপসৃত হওয়ার জন্য
ক্লোরোফ্লুরো কার্বনকে দায়ী করা হয়। এই ওজোন স্তর সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মিকে শুষে নিয়ে পৃথিবীকে অতি
বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। পৃথিবীতে অতি বেগুনি রশ্মি বেড়ে গেলে মানুষের চামড়ার ক্যান্সার হওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে। ওজোন গ্যাসের পরিমাণ হ্রাস পেলে বায়ুমন্ডলের উচ্চস্তরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে পৃথিবীর
আবহাওয়ার পরিবর্তন আনতে পারে।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. উন্নত বিশ্বের দেশগুলিতে বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ কি কি?
২. তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে বায়ু দূষণ বৃদ্ধির কেন আশংকা করা হচ্ছে?
৩. মোটরযান থেকে যে সমস্ত দূষক বায়ুতে মিশছে সেগুলো কি কি ?
৪. নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড কি ক্ষতি সাধন করে?
৫. বাতাসে কার্বন মনোক্সাইড বাড়লে কি ধরনের অসুখ হতে পারে?
৬. বায়ুতে সীসা দূষণের ফলে কি ধরনের রোগ হয়?
৭. সালফার-ডাই-অক্সাইড মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর উপর কি ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে?
৮. রেফ্রিজারেটর ও এ্যারোসল থেকে কি গ্যাস নির্গত হয়?
৯. বর্জ্য ও আবর্জনা পোড়ানো দূষক মানুষের কি ধরনের ক্ষতি করে?
১০. অ¤ø বৃষ্টিপাতের ক্ষতিকর প্রভাব কি?
১১. গ্রীণ-হাউস প্রতিক্রিয়া কি?
১২. গ্রীণ-হাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে কি হয়?
১৩. ওজোন স্তর কমে গেলে বায়ুমন্ডলে কি অবস্থার সৃষ্টি হবে?
উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলে আপনার বায়ু দূষণ সম্বন্ধে একটি পরিষ্কার ধারণা জন্মাবে। ধারণাটি আরও স্পষ্ট
হওয়ার জন্য নিচের সারাংশটি পড়–ন।
বায়ু দূষণ পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান একটি কারণ। বিভিন্ন পরিবহন যান, কলকারখানা, বাড়িঘর
ইত্যাদিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার জ্বালানি দহন থেকে নির্গত বিভিন্ন গ্যাসীয় দূষক পদার্থ বায়ুমন্ডলে দীর্ঘকাল
ধরে জমা হতে থাকে যার ফলে বায়ু বায়ু দূষক দ্বারা ভারি ও দুষিত হয়। বায়ু দূষণের ফলে শিল্পোন্নত
দেশগুলোতে অ¤ø বৃষ্টিপাত ঘটে। তা শুধু শিল্পোন্নত দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বায়ু প্রবাহের সাথে দূষক বায়ু
প্রবাহিত হয়ে বহু দূর দেশেও তা ঘটতে পারে। এছাড়াও বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও ক্লোরোফ্লোরো কার্বনের
পরিমাণ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রীণ হাউস প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব
মানুষ, অন্যান্য প্রাণীকুল, গাছপালা, ফসল ইত্যাদির উপর পড়ছে। বায়ু দূষকের প্রভাবে মানুষের øায়ুতন্ত্র,
শ্বাসতন্ত্র, দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন মারাত্মক ঘাতক ব্যাধি, যেমন ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগ
বিস্তার লাভ করছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বায়ু দূষণ গাছপালার বৃদ্ধি ব্যাহত করে;
গাছপালা, ফলমূল, শস্য ইত্যাদির উৎপাদনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
পানি দূষণ (ডধঃবৎ চড়ষষঁঃরড়হ) :
মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ও অন্যান্য কারণে প্রতিনিয়ত পানি দূষিত হচ্ছে। দূষক দ্বারা পানির স্বাভাবিক
প্রাকৃতিক চক্র ব্যাহত হয়ে পানির সহজাত বৈশিষ্ট্যসমূহ বিনষ্ট হয়ে পানি দূষণ হয়। এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে
মানুষ, পানিতে বিচরণকারী প্রাণী এবং উদ্ভিদ জগতের উপর।
পানি দূষণ অধিক লোকসংখ্যা অধ্যুষিত শহরগুলোর একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। এই সমস্ত শহরগুলোতে
বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত পানি ক্লোরিন দিয়ে বিশুদ্ধ করা হলেও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, পানির মধ্যে উচ্চ মাত্রায়
বর্তমান প্রাণিজ জৈবিক পদার্থ ক্লোরিনের পানি বিশ্বদ্ধকরণ প্রভাব থেকে ভাইরাসসমূহকে রক্ষা করে। ক্লোরিন
দ্বারা বিশুদ্ধ পানি কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। যুক্তরাষ্ট্রের হেপাটাইটিস
রোগের আশংকাজনক বিস্তার শৌচাগারের পানি ক্লোরিনের দ্বারা বিশুদ্ধ করে খাবার পানি হিসেবে ব্যবহারের
জন্য হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পানি ক্লোরিন দ্বারা বিশুদ্ধ করার প্রধান সমস্যা হলো কিছু ক্লোরিন মিশ্রণ
আছে যা ক্লোরিনায়ন প্রক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয় এবং পানির বিকার ঘটায়। এছাড়াও বড় বড় শহরগুলোতে
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে পানি সহজেই বিভিন্নভাবে দূষিত
হচ্ছে। নদী তীরবর্তী শহরের পয়:নিষ্কাশন সাধারণত নদীর মাধ্যমে হয়ে থাকে। ফলে নদীর পয়:নিষ্কাশন
ক্ষমতা হ্রাস পেয়ে পানি অতি মাত্রায় দূষিত হয়ে পড়ে।
পানি দূষণ প্রধানত তিনভাবে হয়ে থাকেক. নর্দমায় নিষ্কাশিত আবর্জনা দ্বারা;
খ. কৃষিজাত নিষ্কাশন দ্বারা;
গ. শিল্প বর্জ্য পদার্থ দ্বারা;
ঘ. ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক দ্বারা দূষণ।
ক. নর্দমায় নিষ্কাশিত আবর্জনা দ্বারা দূষণ (চড়ষষঁঃরড়হ নু ঃযব ডধংঃব রহ উৎধরহং):
নর্দমার আবর্জনায় প্রাণী ও উদ্ভিদ জাতীয় পদার্থ প্রচুর পরিমাণে থাকে যা জমা হয়ে ক্রমশ পচতে থাকে। এই
পচন প্রক্রিয়ায় প্রচুর অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। ফলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। এর ফলে জলজ প্রাণী ও
উদ্ভিদ বেঁচে থাকতে পারে না। এছাড়াও ব্যবস্থাকৃত আবর্জনায় রাসায়নিক পদার্থ নাইট্রেট ও ফসফেটসমূহ জমা
হয় যেগুলো এলগি নামক এককোষ বিশিষ্ট অতি ক্ষুদ্র উদ্ভিদ বিকাশে সাহায্য করে। এলগিসমূহ যেমন
তাড়াতাড়ি বাড়ে তেমনি তাড়াতাড়ি বিনষ্ট ঘটে। এদের পচন প্রক্রিয়ায় প্রচুর অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।
পানির পুষ্টি উপাদানসমূহ মূলত ফসফরাস এবং নাইট্রোজেন যাদের অধিকমাত্রার অবস্থান ব্যাপক আকারে এলগি
বা শৈবাল, গধপৎড়ঢ়যুঃবং জাতীয় উদ্ভিদের জন্ম দেয়। গধপৎড়ঢ়যুঃব (কলমি লতাসহ বিভিন্ন প্রকার
শাক) পানি থেকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান শুয়ে নেয় যা খাবার হিসেবে মানুষের পরিপাকতন্ত্রে জমা হয়ে
রোগের বিস্তার ঘটায়।
খ. কৃষিজাত নিষ্কাশন দ্বারা দূষণ (চড়ষষঁঃরড়হ ঞযৎড়ঁময ঃযব উৎরধহধমব ড়ভ অমৎরপঁষঃঁৎধষ ডধংব):
কৃষিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন কীটনাশক, নাইট্রেট এবং অন্যান্য রাসায়নিক সার বিভিন্ন মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন
জলাশয়ের পানিকেই শুধু দূষিত করে না, ভূগর্ভস্থ পানিকেও দূষিত করে। এই পানি বিশুদ্ধ করা প্রায় অসম্ভব।
এর ফলে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ আশংকাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেমন হেপাটাইটিস, আমাশয় ইত্যাদি।
পানিতে বিভিন্ন রাসায়নিক মিশ্রণ শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। আর একটি স্বাস্থ্যশূল হলো পানিতে নাইট্রেট
দূষণ। বর্তমান যুগে কৃষিতে নাইট্রেট অধিক মাত্রায় ব্যবহৃত হয় যা বিভিন্নভাবে পানির সাথে মিশে যায় এবং
শস্যের মধ্যেও অধিকমাত্রায় জমা হয়। নাইট্রেট যদিও খুব একটা ক্ষতিকারক নয়, তবে যদি কোন জীবাণু
পরিপাকতন্ত্রে থেকে যায় তবে জীবাণুগুলো নাইট্রেটকে বিষাক্ত নিট্রাইট (ঘরঃৎরঃবং) এ পরিণত করে। এছাড়াও
কোন খোলা পাত্রে রক্ষিত খাদ্যে নাইট্রেটস নিট্রাইটসে পরিণত হতে পারে যা গৃহপালিত পশু এবং শিশুদের জন্য
মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। শিশুদের রক্ত প্রবাহে নাইট্রেট শোষিত হলে অক্সিজেন বহনকারী লাল রক্ত কণিকায় বিক্রিয়া
করে। ফলে মেথোমোগেøাবিন (গবঃযড়সড়মষড়নরহ) সৃষ্টি হয়। যার ফলে হিমোগেøাবিনের অক্সিজেন পরিবহন
ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং মেথোমোগেøাবিনেমিয়া (গবঃযড়সড়মষড়নরহবসরধ) রোগের জন্ম হয়। এই রোগ
হলে শ্বাসকষ্ট হয় যা শ্বাসরোধে রূপান্তরিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ার
মধ্য উপত্যকা অঞ্চলে, যেমন উইসকনসিন, মিশৌরী, ইলিনয়ে শিশুদের মধ্যে এই রোগ বিস্তার লাভ করেছে।
এলগিন শহর এবং মিনেসোটায় পানিতে নাইট্রেট দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ নতুন পানির উৎস বের
করতে বাধ্য হয়েছে।
গ. শিল্প বর্জ্য পদার্থ দ্বারা দূষণ (চড়ষষঁঃরড়হ নু ওহফঁংঃৎরধষ ডধংঃব) :
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে শিল্প কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিকাংশ শিল্পের অবস্থান সাধারণত পানির
উৎসের নিকটে হয়ে থাকে। শিল্প কারখানা থেকে বিভিন্ন রাসায়নিক শিল্প বর্জ্য, যেমন লেদ, সালফিউরিক
এসিড, হাইড্রোফ্লুরিক এসিড, ফেনল, ইথার, বেনজিন, এমোনিয়া ইত্যাদি পানির সাথে মিশ্রিত হয়ে পানি দূষণ
করে। এগুলো দ্বারা শুধু নদী, হ্রদ, সমুদ্র তীরবর্তী পানি দূষিত হয় না, মাটি চুঁইয়ে ভূগর্ভস্থ পানিতে মিশে ভূগর্ভস্থ
পানিকেও দূষণ করে। শিল্পের রাসায়নিক বর্জ্য দ্বারা পানি দূষণের ফলে বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়
এবং পরিবেশে ভারসাম্যহীনতা আনে।
ঘ. আর্সেনিক দূষণ (অৎংবহরপ চড়ষষঁঃরড়হ) :
আর্সেনিক স্বাদ গন্ধহীন একটি রাসায়নিক মৌল যা সাধারণত আকরিক হিসেবে প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। একটি
যৌগিক পদার্থের তারতম্যভেদে মানবদেহে মৃদু থেকে প্রবল বিষক্রিয়া ঘটায়। ভূগর্ভস্থ পানি পাম্পের সাহায্যে
বেশিক্ষণ উত্তোলন করলে ভূগর্ভের বিভিন্ন স্তরে যে মেটালিক আর্সেনিক ‘আয়রন পাইরাটস’ থাকে তা বায়ু
সক্রিয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে বায়ু সক্রিয় অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসা বায়ু অক্সিজেনসমৃদ্ধ পানির
সাথে বিক্রিয়ায় ‘আর্সেনো পাইরাইট’ পকেট সৃষ্টি করে যা একটি দূষণগুচ্ছ (চড়ষষঁঃরড়হ চষঁসব) সৃষ্টি করতে
পারে। আর্সেনিকের যে কোন দ্রবণই বিষাক্ত। অন্যদিকে আর্সেনোপাইরাট খনিজ পদার্থটি থেকে পিটিসাইট
(চরঃঃরপরঃব) নামক লৌহযুক্ত যৌগটি পানিতে মিশে দ্রবীভূত হয়ে বিষাক্ত আর্সেনিক দ্রবণের সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত নলকূপের পানি উত্তোলনের কারণে আর্সেনিক দূষণ ভূগর্ভে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে।
আর্সেনিক প্রতিক্রিয়া মানবদেহে খুব ধীরে প্রকাশ পায়। প্রথমে কোন কিছুই ধরা পড়ে না। দীর্ঘদিন মাত্রাতিরিক্ত
আর্সেনিক দূষিত পানি খেলে চর্মরোগ, যকৃতের স্ফীতি, রক্তশূন্যতা, অগ্নিমান্দ্য বা ক্ষুধা হ্রাস, কানে কম শোনা,
চামড়ার ক্যান্সার, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। এছাড়াও যকৃতের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, ¯œায়ুবৈকল্য দেখা
দিতে পারে।
বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে আর্সেনিক দূষণ অঞ্চলগুলো অবস্থিত। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে
আর্সেনিক দূষণের কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন বদ্বীপ বা গঙ্গা অববাহিকার পলল ভূগঠন প্রক্রিয়ায়
‘আর্সেনোপাইরাইট’ শিলাস্তর লাখ লাখ বছর আগে জমা হয়েছিল। সেচের জন্য অত্যধিক ভূগর্ভস্থ পানি
ব্যবহারের দরুন এই শিলাস্তর ক্ষয় হয়ে পানিতে আর্সেনিক মিশেছে। গঙ্গাবাহিত লৌহ অক্সাইডযুক্ত পললে
রয়েছে অস্বাভাবিক মাত্রায় আর্সেনিক। বিশেষজ্ঞগণ খাবার ও সেচের জন্য অতিরিক্ত মাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি
উত্তোলনকেই পানিতে আর্সেনিক দূষণের জন্য দায়ী করছেন। আবার পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ
রাসায়নিক সারের ব্যবহারকেও আর্সেনিক দূষণের জন্য দায়ী করেছেন।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. দূষক পানির কি বৈশিষ্ট্য বিনষ্ট করে?
২. পানি দূষণ কোন অঞ্চলে প্রধানত হয়ে থাকে?
৩. দূষিত পানি কি উপায়ে বিশুদ্ধ করা হয়?
৪. ক্লোরিন দ্বারা বিশুদ্ধ পানি অনেক ক্ষেত্রে পানের অনুপযুক্ত কেন?
৫. যুক্তরাষ্ট্রে হেপাটাইটিস রোগের বিস্তার কি কারণে হয়েছে?
৬. বড় বড় শহরগুলোর নদীর পানি কি ভাবে দূষিত হচ্ছে?
৭. পানি দূষণ কি কি ভাবে হয়ে থাকে?
৮. নর্দমার আবর্জনার পচন প্রক্রিয়ায় কি অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয়?
৯. অক্সিজেনের অভাব জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর উপর কি প্রতিক্রিয়া ফেলে?
১০. পানিতে জন্মানো শাক কি ভাবে রোগের বিস্তার ঘটায়?
১১. কৃষিজাত নিষ্কাশন দূষক কি কি ?
১২. নাইট্রেট দ্বারা কি কি রোগ হয়ে থাকে?
১৩. বিভিন্ন রাসায়নিক শিল্প বর্জ্যগুলি কি কি?
১৪. শিল্প বর্জ্য দ্বারা পানি দূষণের প্রতিক্রিয়া কি ?
১৫. আর্সেনিক দূষিত পানি পান করলে মানুষের কি কি রোগ হতে পারে?
মৃত্তিকা দুষণ (ঝড়রষ চড়ষষঁঃরড়হ) :
মাটির উপযুক্ত পরিচর্যা না করার কারণে মাটি দুষণ মারাত্মক সমস্যা হিসেবে বিশ্বব্যাপাী গণ্য হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী
জনসংখ্যা বৃদ্ধি মৃত্তিকা দূষণকে ত্বরান্বিত করেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খাদ্য উৎপাদন ও অন্যান্য কর্মকান্ড
বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের অধিকাংশ কর্মকান্ড প্রধানত ভূমিনির্ভর। ফলে ভূমির বিভিন্ন ব্যবহার বহুগুণে
বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে ভূমির উপর অত্যধিক চাপ পড়েছে যা কোন কোন ক্ষেত্রে ভূমির বহন ক্ষমতা মাত্রা
অতিক্রম করেছে।
মাটির উৎপাদনশীলতা হ্রাস এবং ক্ষয়ীভবন (ঝড়রষ ঊৎড়ংরড়হ) মৃত্তিকা দূষণের ফলে হয়ে থাকে। মাটির
ক্ষয়ীভবন বা ক্ষয়ের ফলে মাটি আলগা হয়ে যায়। গাছপালা, ঘাস, তৃণাদি ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করলে
মাটির ক্ষয় প্রক্রিয়া দ্রæততর হয়। মাটি আলগা এবং অনাবৃত থাকলে বাতাস মাটিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে
উড়িয়ে নিয়ে যায়। ফলে মাটির গুণাগুণের পরিবর্তন ঘটে। এছাড়াও বৃষ্টি ও বন্যা মাটি এক স্থান থেকে
অন্যস্থানে অপসারিত করে। মাটির ক্ষয় সাধন এবং অপসারণ এই দুই প্রক্রিয়ায় মাটি ক্রমাগত অনুর্বর হয়ে পড়ে
এবং সামগ্রিক পরিবেশের পরিবর্তন ঘটায়। গাছপালা লাগিয়ে মাটির অপসারণ দূর করা সম্ভব।
অধিক উৎপাদনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার মাটির উর্বরতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস করে
মাটির উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। মাটিতে জৈব পদার্থের অভাব হলে মাটি উর্বরতা হারায়। মাটিতে পচা
গাছ-গাছড়া এবং জন্তু-জানোয়ারের গলিত পদার্থ সংমিশ্রণে ‘হিউমাস’ বা পচা সার গঠিত হয়। ব্যাকটেরিয়া
হিউমাস ক্ষয় করে এবং নাইট্রেট, ফসফেট এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানে বিভক্ত করে। গাছের জন্য এসব পুষ্টি
উপাদান বাড়ন্ত ফসলকে খাদ্য যোগায়। তবে অতিরিক্ত এবং উন্নতমানের ফসল উৎপাদনের জন্য অধিক
পরিমাণে রাসায়নিক সারের ব্যবহার হিউমাস বিভক্তিকরণ ক্ষমতা হ্রাস করে এবং পুষ্টি উপাদানের কার্যকারিতা
অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
শস্যক্ষেত্রে পোকামাকড় ও আগাছা ধ্বংসকারী কীট ও আগাছা নাশকের ব্যবহার বর্তমানে অধিকমাত্রায় হয়ে
থাকে। এই সমস্ত কীটনাশক পোকামাকড় যেমন ধ্বংস করে তেমনি মানুষের বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতি সাধন করে।
কীটনাশক ক্লোরিনেটেড হাউড্রোকার্বনের (ঈযষড়ৎরহধঃবফ ঐুফৎড়পধৎনড়হং) উপাদানগুলোর মধ্যে উউঞ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে থেকে কৃষিজমিতে পোকামাকড় নিধনের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এক সময় উউঞ উচ্চমাত্রায় সরাসরি শস্য ক্ষেতে ব্যবহার করা হতো। উউঞ শুধু পোকামাকড়ই ধ্বংস করে
না, মানুষের উপরও এর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। একটি পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মানুষের চর্বিতে উউঞ
মাত্রার সাথে মৃত্যুর একটি সম্পর্ক রয়েছে। এই পরীক্ষায় দেখা গেছে, যে সমস্ত রোগী ঘিলু তরল হয়ে মস্তিষ্কে
রক্ষক্ষরণ, উচ্চ রক্তচাপ, লিভার সিরোসিস এবং বিভিন্ন ক্যান্সারে মারা গিয়েছে, তাদের চর্বিতে উউঞ এবং
উউঞ থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন উপাদান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ছিল। এছাড়াও মানুষের শরীরে উউঞ-র আরও
বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। উউঞ ছাড়াও শস্যক্ষেত্রে ব্যবহৃত অন্যান্য কীট ও আগাছানাশক
বিভিন্ন মাত্রায় মানুষের ক্ষতি করে। এই সমস্ত কীট ও আগাছা নাশক শস্যের জন্য ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও
আগাছা ধ্বংসের সাথে সাথে শস্য ও মাটির জন্য উপকারী পোকামাকড় ও আগাছাও ধ্বংস করে ফেলে যার
ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া বাস্তব্যরীতির উপর পড়ে। এছাড়া অপরিকল্পিত ভূমি ব্যবহার মাটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বা
গুণাবলী ধ্বংস করে ফেলে এবং সমগ্র এলাকার বাস্তব্যরীতির পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন:
১. মৃত্তিকা দূষণের কারণগুলো কি কি?
২. মাটি ক্ষয় ও অপসারণের ফলে মাটির কি অবস্থা ঘটে?
৩. মাটি অপসারণ কি ভাবে দূর করা সম্ভব ?
৪. দীর্ঘদিন ধরে জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার জমির কি ক্ষতি করে?
৫. ‘হিউমাস’ কি ? হিউমাস বিভক্তিকরণ কেন ফসলের জন্য উপকারী ?
৬. শস্যক্ষেত্রে অধিক কীট নাশকের ব্যবহারের প্রতিক্রিয়া কি?
৭. উউঞ মানুষের কি ক্ষতি সাধন করে ?
পাঠসংক্ষেপ :
বিভিন্ন প্রকারের পরিবেশ দূষণকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়-বায়ু দূষণ, পানি দূষণ ও মাটি বা
মৃত্তিকা দুষণ। এছাড়াও আরও বিভিন্ন প্রকারের দূষণ রয়েছে যা পরিবেশের প্রভূত ক্ষতি করে।
বায়ু দূষণ পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান একটি কারণ। বিভিন্ন পরিবহন যান, কলকারখানা, বাড়িঘর
ইত্যাদিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার জ্বালানী দহন থেকে নির্গত বিভিন্ন গ্যাসীয় দূষক পদার্থ বায়ুমন্ডলে দীর্ঘকাল
ধরে জমা হতে থাকে যার ফলে বায়ু দূষক দ্বারা ভারি ও দূষিত হয়। অর্থনৈতিক উন্নতি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে
সাথে পৃথিবীব্যাপী পানি দূষণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এমনও ধারনা করা হচ্ছে যে এক সময় বিশুদ্ধ পানি পাওয়া
অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য ব্যাপারে পরিণত হবে। পানি প্রধানত চার প্রকারে দূষণ হয়, নর্দমায় নিষ্কাশিত আবর্জনা দ্বারা,
কৃষিজাত নিষ্কাশন দ্বারা, শিল্প বর্জ্য পদার্থ দ্বারা এবং আর্সেনিক পদার্থ দ্বারা (আর্সেনিক দূষণ)।
নর্দমায় নিষ্কাশিত আবর্জনায় প্রাণী ও উদ্ভিদ জাতীয় পদার্থের পচনে অধিক মাত্রায় অক্সিজেনের ব্যবহারে পানিতে
অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয় যা জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের বাঁচার জন্য দরকার। আবার ব্যবস্থাকৃত আবর্জনায়
নাইট্রেট ও ফসফেট এলগির জন্ম দেয় যাদের পচন প্রক্রিয়ায় প্রচুর অক্সিজেন নি:শেষ হয়। এছাড়াও ফসফরাস
ও নাইট্রোজেন ম্যাকক্রোফাইটস এর জন্ম দেয়। এরা পানি থেকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান শুয়ে নেয় যা
খাবার হিসেবে মানুষের পরিপাকতন্ত্রে জমা হয়ে রোগের বিস্তার ঘটায়।
কৃষিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন কীটনাশক, রাসায়নিক সার, নাইট্রেট ইত্যাদি ভূপৃষ্ঠের এবং ভূ-অভ্যন্তরের পানির সাথে
মিশ্রিত হয়ে পানি দূষণ করে। নাইট্রেট নিট্রাইটসে পরিণত হলে গৃহপালিত পশু ও শিশুদের স্বাস্থ্যের প্রতি
মারাত্মক হুমকিরূপে দেখা দেয়। শিল্প বর্জ্য থেকে রাসায়নিক পদার্থ জলাশয়ের পানির সাথে মিশে এবং মাটি
চুঁইয়ে ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করে যা মানুষের শরীরে নানাভাবে বৈকল্য আনে এবং পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা
আনে। আর্সেনিক দূষণ বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে একটি মারাত্মক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে, বিশেষ
করে বাংলাদেশে। আর্সেনিক দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগব্যাধির সৃষ্টি হচ্ছে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড ও খাদ্য উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মাটির
উপর বিভিন্নভাবে চাপ পড়েছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে মাটির বহন ক্ষমতা মাত্রা অতিক্রম করেছে যা সামগ্রিক
বাস্তব্যরীতির পরিবর্তন আনছে। মৃত্তিকা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দূষণ হয়। অধিক উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক সার
কীট ও আগাছা নাশকের জন্য দীর্ঘকালব্যাপী ব্যবহার মৃত্তিকার ক্ষতি সাধন করে। ফলে মাটির উৎপাদন ক্ষমতা
ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়, মাটির ক্ষয়ীভবন শুরু হয় এবং বিভিন্নভাবে মাটি অপসারিত হয়। ফলে মাটি অনুর্বর হয়ে
পড়ে। মাটিতে জৈব পদার্থের অভাব হলেও মাটি উর্বরতা হারায়। জৈব পদার্থ হিউমাস সৃষ্টি করে এবং মৃত্তিকার
পুষ্টি রক্ষা করে। রাসায়নিক সার হিউমাসের কর্মক্ষমতা হ্রাস করে। কীট ও আগাছানাশক শস্যের জন্য ক্ষতিকর
পোকামাকড় ও আগাছা ধ্বংস করা ছাড়াও শস্য ও মাটির জন্য উপকারী পোকামাকড় ও গুল্মলতা নষ্ট করে, যার
ফলে বাস্তব্যরীতির সামগ্রিক পরিবর্তন ঘটে এবং মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রোগব্যধির জন্ম দেয়। এছাড়াও
অপরিকল্পিত ভূমি ব্যবহারের ফলেও মৃত্তিকার গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয়ে যায়। ইত্যাদি বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকা
দূষণ হয়ে থাকে।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:
১. সঠিক উত্তরের পাশে টিক ()চিহ্ন দিন ( সময় ৪ মিনিট) :
১.১ পরিবেশ কিসের সমন্বয়ে গঠিত ?
ক. প্রাকৃতিক পরিবেশ খ. মানবিক পরিবেশ গ. প্রাকৃতিক ও মানবিক পরিবেশ
১.২ বিশ্বে বায়ু দুষণের পরিমাণ কি কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে?
ক. মোটরযানের সংখ্যা বৃদ্ধি খ. জনসংখ্যা বৃদ্ধি গ. নগরায়ন
১.৩ জ্বালানি পোড়ানো ধোঁয়া উদ্ভিদের কি ক্ষতি করে?
ক. বৃদ্ধি রোধ করে খ. সালোক সংশ্লেষণ ক্ষমতা হ্রাস করে গ. ধ্বংস করে
১.৪ গ্রীণ হাউস প্রতিক্রিয়ার জন্য কোন গ্যাসকে দায়ী করা হয়?
ক. কার্বন-ডাই-অক্সাইড খ. সালফার-ডাই-অক্সাইড গ. নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড।
২. শূন্যস্থান পূরণ করুন (সময় ১৬ মিনিট):
২.১ মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ও অন্যান্য কারণে প্রতিনিয়ত ....................দুষিত হচ্ছে ।
২.২ ................দ্বারা বিশুদ্ধ পানি কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
২.৩ পানিতে বিভিন্ন রাসায়নিক মিশ্রণ শরীরে ..................সৃষ্টি করে।
২.৪ অতিরিক্ত নলক‚পের পানি উত্তোলনের কারণে ..................দূষণ ভ‚গর্ভে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে।
২.৫ মাটির উপযুক্ত ....................না করার কারণে মাটি দূষণ মারাত্মক সমস্যা হিসেবে বিশ্বব্যাপী দেখা
দিয়েছে।
২.৬ মাটির ...................সাধন ও ......................এই দুই প্রক্রিয়ায় মাটি ক্রমাগত অনুর্বর হয়ে পড়ে।
সংক্ষিপ্ত উত্তর (সময় ২০ মিনিট):
১. পরিবশে দূষণ কাকে বলে ?
২. চোখের জন্য কি ক্ষতিকারক?
৩. কার্বণ মনোক্সাইড কি ক্ষতি করে?
৪. বর্জ্য ও আবর্জনা পোড়ানো থেকে কি উত্থিত হয় এবং মানুষের কি ক্ষতি করে?
৫. বায়ু মন্ডলের ওজোন স্তর অপসারিত হওয়ার জন্য কোন গ্যাসকে দায়ী করা হয়?
৬. পানি দূষণ প্রধানত কত প্রকারে হয়ে থাকে এবং কি কি?
রচনামূলক প্রশ্ন:
১. বায়ু দূষণ কি কি প্রকারে হয়ে থাকে ? বায়ুদূষণজনিত রোগ সম্বন্ধে আলোচনা করুন।
২. পানি দূষণের প্রধান নিয়ামকসমূহ কি কি ? দূষণযুক্ত পানি গ্রহণে কি ধরনের রোগ হয় ?
৩. মৃত্তিকা দূষণের প্রকৃতি আলোচনা করুন ।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ