ভ‚পৃষ্ঠস্থ কোন স্থান বা অঞ্চলের নিয়ম সিদ্ধভাবে সঠিক বর্ণনা কে ভ‚-সংস্থান (ঞড়ঢ়ড়মৎধঢ়যু) বলে। অর্থাৎ কোন
স্থানের ভ‚মিরূপের বিভিন্ন বিষয়াদি, যেমন- জলবায়ু, নদ-নদী, অন্যান্য মানবীয় কর্মকান্ড ইত্যাদির বিস্তারিত
বিবরণ এর অন্তভর্‚ক্ত। অপর পক্ষে, ভ‚পৃষ্ঠের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যাবলীর বর্ণনামূলক বিবরণকে ভ‚-প্রকৃতি
(চযুংরড়মৎধঢ়যু) বলে। মূলতঃ ভ‚-প্রকৃতি ও ভ‚-সংস্থান সমার্থকবোধক। উত্তর আমেরিকায় ভ‚-সংস্থান কথাটি
ব্যাপক ভাবে প্রচলিত থাকলেও ভ‚-প্রকৃতি শব্দটি বিশ্বের সকল স্থানে ব্যবহার হয়। তাই বর্তমান পাঠে ভ‚-প্রকৃতি
ও ভূ- সংস্থান সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপভ‚মি এবং বঙ্গ অববাহিকা নামে বহুল পরিচিত ভ‚তাত্তি¡ক গঠনগত এককের
প্রধান অংশ সীমায় এর অবস্থান। এটি পশ্চিমে রাজমহল পাহাড় (পশ্চিম বাংলা) ও উত্তরে শিলং মালভ‚মি
(মেঘালয়) এবং পূর্বাংশে লুসাই ও আরাকান পাহাড়সমূহ দ্বারা পরিবেষ্টিত। বঙ্গ অববাহিকার উদ্ভব টারশিয়ারী
যুগে যার সঙ্গে হিমালয় পর্বত গঠন প্রক্রিয়ার ঘনিষ্ঠ সংস্পৃক্ততা বিদ্যমান রয়েছে। একই সময়ে সৃষ্ট অপর এক
ভ‚-আলোড়নের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম, ত্রিপুরা, আসাম ও নাগাপাহাড় গঠিত হয়েছে এবং চট্টগ্রাম ব্যতীত অবশিষ্ট
বাংলাদেশ প্রাচীন ও সাম্প্রতিক কালের নদীবাহিত পলল অবক্ষেপনের মাধ্যমে আজকের অবস্থানে উন্নীত
হয়েছে।
বাংলাদেশের অবয়ব/আয়তনগত দিক ক্ষুদ্র হলেও যথেষ্ট ভ‚সংস্থানিক বৈচিত্র্য রয়েছে। তাই দেখা যায়, বিভিন্ন
ভ‚বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, জরীপ ও শ্রেণীবিভাজন প্রক্রিয়ার অনন্য প্রয়াস। তাদের মধ্যে স্প্রেট (১৯৫৪), জনসন
(১৯৫৭), ম্যাকিন্টার (১৯৫৯), এম আই চৌধুরী ও মনিরুজ্জামান মিঞা (১৯৮১), নাফিস আহমেদ (১৯৫৫),
হারুন অর রশিদ (১৯৭৭) প্রমুখ। এখানে উল্লেখ্য যে নাফিস আহমেদ, হারুন অর রশিদ ও মনিরুজ্জামান মিঞা
(১৯৮১) তাঁদের পুর্ববর্তী গবেষকগণের প্রদত্ত শ্রেণীবিভাজনের উপর ভিত্তি করে সূ²তর শ্রেণীবিভাজন উত্থাপন
করেন। নিæে এগুলো উল্লেখ করা হলো।
১. ১৯৫৫ সালে নাফিস আহমেদ বাংলাদেশকে ভ‚প্রাকৃতিক ভাবে দুটো ভাগে বিভক্ত করেন,
যেমন- ক) বিস্তৃত প্লাবন সমভ‚মি এবং খ) পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্বের সীমান্তবর্তী পাহাড় সমূহ।
২. এম আই চৌধুরী ও মনিরুজ্জামান মিঞা (১৯৮১) বাংলাদেশের ভ‚-প্রকৃতিকে নিæোক্ত তিনটি ভাগে বিভক্ত
করেন, যেমন- ক) টারশিয়ারী যুগের পাহাড়সমূহ, খ) প্লেস্টোসিন যুগের উচ্চ ভ‚মি (চত্ত¡র) এবং গ)
সাম্প্রতিক কালের সমতল ভ‚মি।
৩. সাধারভাবে ভ‚মির অবস্থা ও গঠনকাল অনুযায়ী বাংলাদেশের ভ‚রূপকে ৪টি ভাগে ভাগ করা যায়, যথাঃ ক)
টারশিয়ারী যুগের পাহাড়ী এলাকা, খ) প্লেস্টোসিন যুগের সোপান এলাকা গ) সাম্প্রতিক কালের প্লাবন
সমভ‚মি এলাকা এবং ঘ) উপক‚লীয় বদ্বীপ এলাকা।
৪. হারুন অর রশিদ (১৯৫৪, ১৯৭৭) বাংলাদেশের ভ‚-প্রকৃতিকে প্রধান ২৪ টি প্রধান ভাগ এবং তার সঙ্গে ৫৪
টি এককে বিভক্ত করেন।
৫. টঘউচ ও ঋঅঙ সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের ভ‚প্রকৃতিকে সর্বমোট ১৯ টি বিভাগে বিভক্ত করেন।
এই পাঠে হারুন অর রশিদ (১৯৫৪, ১৯৭৭) কর্তৃক প্রদত্ত বাংলাদেশের ভ‚-প্রকৃতির প্রধান ২৪ টি ভাগ
(ম্যাপ ১.২.১) সম্পর্কে পরবর্তী অনুচ্ছেদে বিবরণ দেয়া হলো।
মানচিত্র ঃ ১.২.১ ঃ বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক শ্রেণীবিভাগ
উৎস ঃ হারুন-অর-রশিদ, ১৯৯১ (ভূ-প্রকৃতির রোমান হরফ এই মানচিত্রে ১, ২, ৩, ...... হিসেবে দেয়া হলো)
বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলের বিবরণ (চযুংরড়মৎধঢ়যরপ ংঁন-ৎবমরড়হং রহ ইধহমষধফবংয)
হারুন-অর-রশিদ ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যাবলী (ঢ়যুংরধষ ভবধঃঁৎবং) ও পানি-নিষ্কাশন বিন্যাস ব্যবস্থার
(উৎধরহধমব ঢ়ধঃঃবৎহ) ভিত্তিতে বাংলাদেশকে মোট ২৪ টি অঞ্চলে বিভক্ত করেছেন (ম্যাপ ১.১)। নিম্নে
অঞ্চলগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হলো। যেমন ঃ
বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম এসএসএইচএল
বাংলাদেশ ভ‚গোল ও সংখ্যাতাত্তি¡ক ভ‚গোল পৃষ্ঠা - ১০
(১) হিমালয় পাদদেশীয় সমভূমি (ঐরসধষধুধহ চরবফসড়হঃ চষধরহং)
হিমালয় পর্বতের পাদদেশীয় অঞ্চলে দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় অধিকাংশ স্থানব্যাপী এই ভূমিরূপ দেখা যায।
বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বত থেকে উদ্ভূত তিস্তা, আত্রাই, করতোয়া, মহানন্দা,নাগর, টাঙ্গন
ইত্যাদি নদী বাহিত পলল সঞ্চিত হয়ে পলল কোন ও পলল পাখা তৈরী করেছে। এই পলল কোন ও পলল
পাখা জুড়ে গড়ে উঠেছে এদেশের প্রাচীনতম পলল সমভূমি অঞ্চল। এই অঞ্চলটি পশ্চিমে মহানন্দা থেকে
পূর্বদিকে দিনাজপুরের করতোয়া নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। উত্তরে তেতুলিয়া (৯৭ মি. উচ্চ) থেকে দক্ষিনে দিনাজপুর
(৩৪ মি. উচ্চ) পর্যন্ত এ অঞ্চলের ঢালের নতিমাত্রা প্রায় প্রতি কি. মি. ০.৯১ মিটার (জধংযরফ,১৯৯১)।
ফলশ্রæতিতে, এই অঞ্চলের নদীগুলো উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়। এই অঞ্চলটির অধিকাংশ স্থান
তরঙ্গায়িত (ঁহফঁষধঃরহম) ঢাল বিশিষ্ট, যার সুস্পষ্ট রূপ দেখা যায় এ অঞ্চলের দক্ষিণ পশ্চিমাংশের কুলীক নদীর
দুই তীর এলাকা বরাবর।
(২) তিস্তা প্লাবন সমভূমি (ঞরংঃধ ঋষড়ড়ফ চষধরহ) ঃ
দিনাজপুর জেলার করতোয়া নদীর উচু বেলে মাটির প্রাকৃতিক বাঁধ ( হধঃঁৎধষ ষবাবব) থেকে ব্র²পুত্র নদ পর্যন্ত
এই বিশাল প্রাকৃতিক অঞ্চলটি বিস্তৃত। এর একটি অংশ দক্ষিনে পুরাতন তিস্তা নদীর তীর বরাবর বর্ধিত হয়ে
বগুড়ার শেরপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। মাঝারী উচ্চতার শৈল শিরা (ৎরফমবং) জাতীয় ভূমিরূপ ও অগভীর নদী উপত্যকা
(ংযধষষড়ি নধংরহ) বিশিষ্ট এই অঞ্চলের অধিকাংশ স্থান স্বল্প গভীরতায় প্লাবিত হয়ে থাকে। তবে ঘাঘট নদীর
গতিপথে অবনমন (ফবঢ়ৎবংংরড়হ) রয়েছে যেখানে মাঝারী মাত্রার বন্যা হয়। তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদী এই
প্লাবন সমভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বালুচর (ংধহফু নধৎং) ও দিয়ারা (ফরধৎধ) সমৃদ্ধ এই নদীগুলোর
সক্রিয় প্লাবনভূমি প্রায় ৬ কি. মি. চওড়া।
(৩) বরেন্দ্রভূমি (ইধৎরহফ ঞৎধপঃ) ঃ বঙ্গ অববাহিকায় (নবহমধষ নধংরহ) অবস্থিত প্লায়োষ্টোসিন চত্বরসমূহের
মধ্যে বরেন্দ্রভূমি উল্লেখযোগ্য। এই চত্বরের সমোন্নতি রেখা (পড়হঃড়ঁৎ ষরহবং) গুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা
যায় - এর দু’টি স্তর রয়েছে। প্রথমটি ৩৯.৭ মিটার উচ্চতায় এবং দ্বিতীয়টি ১৯.৮ থেকে ২২.৯ মিটার উচ্চতায়।
বরেন্দ্র চত্বরটির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো ঃ অপেক্ষাকৃত অধিক উচ্চতা, লালচে ও হলদেটে কর্দম মৃত্তিকা, শাখাপ্রশাখা যুক্ত নদী নিষ্কাশন ব্যবস্থা (ফবহফৎরঃব ংঃৎবধস ঢ়ধঃঃবৎহ), এবং উদ্ভিজ্জের স্বল্পতা। বরেন্দ্র চত্বরটি পাঁচটি
উপ-অঞ্চলে বিভক্ত।
যেমন ঃ
ক. উত্তর-পূর্বাঞ্চল (ঘড়ৎঃয-বধংঃবৎহ ঙঁঃষরবৎ) ঃ
এই অঞ্চলের মাটি বরেন্দ্রভূমির অন্য অঞ্চলের মাটি অপেক্ষা গাঢ়তর লালচে খয়েরী বর্ণের। এই
অঞ্চলের ‘আশুলা বিল’ অঞ্চল এলাকা ব্যতীত বাকী অংশ বেশ উঁচু। এই অংশটির সীমানায় কোনো
কোনো অংশ বেশ খাড়া, যা স্তূপ চ্যুতির (নষড়পশ ভধঁষঃরহম) প্রমান দেয়।
খ. পূর্ব বরেন্দ্রভূমি (ঊধংঃবৎহ ইধৎরহফ) ঃ
বরেন্দ্রভূমির পূর্বাংশ তারাস, সিঙ্গারা, নদীগ্রাম, রানীনগর, আদমদীঘি, কাহালু, শেরপুর, বগুড়া, শিবগঞ্জ,
গোবিন্দগঞ্জ, সৈয়দপুর ও হাকিমপুর অঞ্চলের প্রায় ১৯৩০ কি. মি. জুড়ে বিস্তৃত। অল্প কিছু তরঙ্গায়িত
(ঁহফঁধষধঃরহম) ভূমিরূপ ব্যতীত সমতল এই ভূমির উত্তর-পূবাংশের কিছু অংশ করতোয়া চ্যুতি
(কধৎধঃড়ধ ঋধঁষঃ) দ্বারা অবশিষ্ট্যাঞ্চল থেকে বিভক্ত। এই অঞ্চলে ১৮১২ সালে এক বিরাট ভূমিকম্পের
ফলশ্রæতিতে এই অঞ্চলের ফাটলগুলো তৈরী হয়েছিল বলে ধারনা করা হয় (ইঁপযধহধহ - ঐধসরষঃড়হ,
১৮৩৩)।
গ. পূর্ব বরেন্দ্রভূমির মধ্যভাগ (ঊধংঃ - ঈবহঃৎধষ ইধৎরহফ)
বরেন্দ্রভূমির এই অংশটির ৫০৭ বর্গ কি. মি. এলাকা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত। চিরির বন্দর
উপজেলা থেকে মহাদেবপুর উপজেলা পর্যন্ত প্রায় ৯৭ কি. মি. দীর্ঘ এই ভূ-ভাগের পশ্চিমাংশ আত্রাই
নদী উপত্যকা দ্বারা পরিবেষ্টিত। দক্ষিণে এই ভূ-ভাগটি অকষ্মাৎ নীচু হয়ে ভর অববাহিকায় (ইযধৎ
নধংরহ) মিলিত হয়েছে। উত্তরে পার্বতিপুর ও চিরির বন্দরের মধ্যবর্তী এলাকাটি ৩৯ মি উঁচু। অল্প কিছু
তরঙ্গায়িত (ঁহফঁধষধঃরহম) ভূমিরূপ, শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট্য খাদ যুক্ত নদী নিষ্কাশন ব্যবস্থা
(বহঃৎবহপযবফ ফবহফৎরঃব ংঃৎবধস ঢ়ধঃঃবৎহ) বিশিষ্ট্য এই অঞ্চলের মধ্যভাগ বরাবর উত্তর-পশ্চিম ও
দক্ষিণ-পূর্ব মূখী ৩২ কি.মি. দীর্ঘ একটি চ্যুতি (ঋধঁষঃ) রয়েছে।
ঘ. পশ্চিম বরেন্দ্রভূমির মধ্যভাগ (ডবংঃ- ঈবহঃৎধষ ইধৎরহফ) ঃ
বরেন্দ্রভূমির এই অংশটি ১৭৭০ বর্গ কি. মি. এলাকা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত। প্রায় ১৪৫ কি.
মি. দীর্ঘ এই ভূ-ভাগ গড়ে ১৬ কি. মি. থেকে ৩৭ কি. মি. প্রশ্বস্ত। উত্তরে এই অঞ্চলটি দিনাজপুরের
দক্ষিণে হিমালয় পাদদেশীয় পলল সমভূমি পর্যন্ত ক্রমশঃ উঁচু হয়ে উঠেছে। দক্ষিণে গঙ্গা নদীর সু-উচ্চ
খাড়া পাড় এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অঞ্চলের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত প্রায় সমতল হলেও বাকী
অংশ তরঙ্গায়িত ভূমিরূপ বিশিষ্ট্য। অসংখ্য খাঁড়ি (এঁষষরবং) দ্বারা সমগ্র অঞ্চলটি বিভক্ত হয়ে আছে।
পুরোনো পলিসঞ্চিত এই চত্বরভূমি কোনো কোনো অংশে সামান্য ঢিবির ন্যায় (উড়সব-ংযধঢ়বফ) উঁচু
হয়ে গড়ে।
ঙ. পশ্চিম বরেন্দ্রভূমি (ডবংঃবৎহ ইধৎরহফ) ঃ
বাংলাদেশের গোমস্তাপুর ও পোরশা উপজেলায় চারটি ছোট ছোট অংশের সমন্বয়ে (প্রায় ৮১ বর্গ কি.
মি.) গঠিত এই অঞ্চল পূণর্ভবা ও টাঙ্গন নদীর তীর ঘেষে অবস্থিত।
(৪) ছোট যমুনা প্লাবনভূমি (খরঃঃষব ঔধসঁহধ ঋষড়ড়ফ চষধরহ)
ছোট যমুনা নদী অববাহিকা দিনাজপুরে সংকীর্ণ হলেও দক্ষিণে এর প্রশ্বস্ততা ৮ থেকে ১৬ কি. মি.। বাংলাদেশের
অভ্যন্তরে এই প্লাবনভূমির আয়তন ৫৩১ বর্গ কি. মি.। এই অঞ্চলের ৩ থেকে ৫ মিটার গভীরতা পর্যন্ত ধুসর
বেলে মাটির স্তর পরিলক্ষিত হয়।
(৫) মধ্য আত্রাই প্লাবনভূমি (গরফফষব অঃৎধর ঋষড়ড়ফ চষধরহ) ঃ
চিরির বন্দর উপজেলা, থেকে মহাদেবপুর পর্যন্ত ৮১ কি. মি. দীর্ঘ এই নদী উপত্যকাটির দু’পাশেই বরেন্দ্রভূমির
উপস্থিতি দেখা যায়। অগভীর উপত্যকায় আকষ্মিক বন্যা হলেও কিছু কিছু অংশে উঁচু ভূমিরূপ গুলো বন্যা মুক্ত
উচ্চতায় রয়েছে। প্লাবনভূমিটির আকষ্মিক বন্যা বাহিত বেলে মৃত্তিকা দ্বারা আচ্ছাদিত। আত্রাই নদী কোনো
কোনো অংশে সর্পিলকার ও সুগভীর বাঁক বিশিষ্ট।
(৬) নি¤œ পূর্ণভবা প্লাবন সমভূমি (খড়বিৎ চঁহধৎনযড়নধ ঋষড়ড়ফ চষধরহ) ঃ
এই প্লাবন সমভূমি কেন্দ্রীয় বরেন্দ্র অঞ্চল ও পশ্চিম বরেন্দ্র অঞ্চল কে পৃথক করেছে। এই অঞ্চলটি ভারতের
দিনাজপুর জেলার ২৬ কি. মি. দক্ষিণ থেকে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর রোহনপুর)
উপজেলায় মহানন্দা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো সমভূমিটি ৮১ কি. মি. লম্বা ও ৩ থেকে ৮ কি.মি. চওড়া একটি
নদী উপত্যাকা (ঠধষষবু) অঞ্চল (ৎবমরড়হ)। এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা ত্রæটিপূর্ণ হওয়ায় জমির উর্বরতা
কম।
(৭) নি¤œ আত্রাই (ভর) উপত্যকা (খড়বিৎ অঃৎধর (ইযধৎ) ইধংরহ) ঃ
বরেন্দ্রভূমি ও গাঙ্গের সমভূমির মাঝামাঝি অঞ্চলে অবস্থিত এই অববাহিকাটি মূলতঃ একটি নীচু অঞ্চল
(উবঢ়ৎবংংরড়হ), যা চলন বিল নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটিতে বরেন্দ্র এলাকা থেকে আগত পানি সঞ্চিত হয়।
প্রায় জুন-থেকে অক্টোবর পযৃন্ত বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৩১২০ বর্গ কি. মি. আয়তনের এই চলন বিল প্রায় ০.৬১ মি.
থেকে ৩.৭ মিটার গভীর পানি দ্বারা পূর্ণ হয়ে যায়। শুষ্ক মৌসুমেও এই এলাকা আর্দ্র থাকে।
(৮) নি¤œ মহানন্দা প্লাবনভূমি (খড়বিৎ গধযধহধহফধ ঋষড়ড়ফ চষধরহ) ঃ
দিনাজপুর জেলার হিমালয় পাদদেশীয় প্লাবন সমভূমির অব্যবহিত পর থেকে নি¤œ মহানন্দা প্লাবনভূমি দক্ষিনে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাঙ্গেয় প্লাবনভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত। মহানন্দা নদীর পশ্চিমে ৮ - ১১ কি. মি. এবং পূর্বে ১.৬০ - ৫
কি. মি. প্রশ্বস্ত। বরেন্দ্রভূমি ও গাঙ্গেয় উপত্যকার মধ্যবর্তী এই উপত্যকাটির আয়তন ৪০২ বর্গ কি. মি. নদীটি
সর্পিল ও অগভীর নদী বাঁক বিশিষ্ট।
(৯) গঙ্গা নদীর প্লাবন সমভূমি (এধহমবং জরাবৎ ঋষড়ড়ফ চষধরহ) ঃ
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গঙ্গা অথবা পদ্মা নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০০ কি. মি.। অসংখ্য শাখা নদী ও উপনদীর
সমন্বয়ে বাংলাদেশে এই নদীর অববাহিকার মোট আয়তন ৩১০০ কি. মি.। বাংলাদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের
শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত থেকে শুরু করে দক্ষিণে রাজেশ্বরপুরে মেঘনা নদী পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে গঙ্গা
বা পদ্মার প্লাবনসমভূমি বিস্তৃত। এই প্লাবন সমভূমির প্রধান ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো উত্তরাংশে নদীর
তীরের উচু প্রাকৃতিক বাঁধ প্রাকৃতিক এবং দক্ষিনাংশে অগভীর জলাভূমি, অশ্বক্ষুরাকৃতি হৃদ ও চর সমূহ। গঙ্গা
নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে এই ধরনের হ্রদ বা বিলের সৃষ্টি হয়েছে।
(১০) ব্র²পুত্র-যমুনা প্লাবনভূমি (ইৎধযসধঢ়ঁঃৎধ - ঔধসঁহধ ঋষড়ড়ফ ঢ়ষধরহ) ঃ
ব্র²পুত্র -যমুনা নদীর দ্বারা সৃষ্ট এই প্লাবনভূমি তিনটি উপ-অঞ্চল নিয়ে গঠিত। অঞ্চলগুলো হলো-(র)বাঙ্গালীকরতোয়া নদী বিধৌত প্লাবনভূমি, (রর) দিয়ারা ও চর ভূমি ও (ররর) যমুনা-ধলেশ্বরী প্লাবনভূমি। ১৭৮৭ সালে
পুরাতন ব্র²পুত্র নদী গতি পরিবর্তন করে বর্তমান গতিপথে প্রবাহিত হতে আরম্ভ করে এবং জেনাই ও কোনাই
নদীর সমন্বয়ে বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা বেশী চরোৎপাদী সুপ্রশ্বস্ত যমুনা নদী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
পুরাতন ব্র²পুত্রের গতি পরিবর্তন করবার কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন ভূ-বিজ্ঞানী ও ভৌগলিকগণ বিভিন্ন মতামত
দেন। তন্মধ্যে মর্গান ও ম্যাকিনটার (১৯৫৯) প্রদত্ত মতামত সর্বপেক্ষা গ্রহণযোগ্য। তাঁদের মতে, বরেন্দ্রভূমি
চত্বর এলাকা (৩ নং ভূ-প্রাকৃতিক এলাকা দ্রষ্টব্য) ও মধুপুরের গড় এলাকার (১৩ নং ভূ-প্রাকৃতিক এলাকা দ্রষ্টব্য)
মধ্যবর্তী স্থানটি অবনমিত হয়ে স্রংস/স্রস্ত উপত্যকা (জরভঃ াধষষবু) সৃষ্টি করে (হক, ১৯৮৮)। এই অবনমিত গ্রস্ত
উপত্যকা দিয়ে বর্তমান ব্র²পুত্র-যমুনা নদী প্রবাহিত হচ্ছে। ব্র²পুত্র-যমুনা প্লাবনভূমি অঞ্চলটির তিনটি উপঅঞ্চল সম্পর্কে পরবর্তী অনুচ্ছেদে আলোচনা করা হলো।
(র) বাঙ্গালী-করতোয়া নদী বিধৌত প্লাবনভূমি: পুরো প্লাবনভূমি জুড়ে ভারি পলি ও কর্দমেয় উপস্থিতি লক্ষ্য
করা যায়। চওড়া উচ্চভূমি/উত্থিতভূমি (নৎড়ধফ ৎরফমবং) ও উপত্যকা সমূহ, মধ্য জুন থেকে মধ্য
অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ০.৯১ মিটার গভীরতায় প্লাবিত হয়ে থাকে। এ অঞ্চলের উত্থিতভূমি গুলো
পলিসমৃদ্ধ হলেও অববাহিকা অঞ্চল কর্দমময়।
(রর) দিয়ারা ও চর ভূমি: ব্র²পুত্র-যমুনা নদীর তীর ঘেঁষে রয়েছে অসংখ্য দিয়ারা ও চর। সর্ববৃহৎ দিয়ারা
গুলো রাহুমারী উপজিলায় মেঘালয় মালভূমির পশ্চিম পার্শ্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। এ অঞ্চলে প্রচূর সক্রিয় চর
রয়েছে। মৃত্তিকা ও ভূ-সংস্থানিক বৈচিত্রপূর্ণ এ সমস্ত দিয়ারা ও চর সমূহের সর্বনি¤œ ও সর্বোচ্চ উচ্চতার
ব্যবধান ৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
(ররর) যমুনা-ধলেশ্বরী প্লাবনভূমি: ব্র²পুত্র-যমুনা প্লাবনভূমির বাম পার্শ্বস্থ অঞ্চলটি যমুনা-ধলেশ্বরী প্লাবনভূমি
নামে অভিহিত। এই অঞ্চলটির দক্ষিণনাংশ এক সময় গাঙ্গেয় প্লাবন সমভূমির অন্তর্ভূক্ত ছিল। বর্ষা
মৌসুমে এই উপভাগের অধিকাংশ অঞ্চল ০.৯১ মিটার গভীরতায় প্লাবিত হয়ে থাকে।
(১১) পুরাতন ব্র²পুত্র প্লাবনভূমি (ঙষফ ইৎধযসধঢ়ঁঃৎধ ঋষড়ড়ফ চষধরহ) ঃ
পুরাতন ব্র²পুত্র নদীটি গতি হারালে পলল সঞ্চিত হয়ে মাত্র ২ কি. মি. চওড়া একটি প্রণালী (ঈযধহহবষ) এ
পরিনত হয়। এই প্রণালীটির দু’ধারে ক্রমশঃ ঢালু হয়ে আসা প্রাকৃতিক বাঁধ (ঘধঃঁৎধষ ষবাবব) রয়েছে। এই
প্রাকৃতিক বাঁধ ক্রমশঃ ঢালু হয়ে গেছে। উত্থিতভূমি (যরময ৎরফমবং), প্লাবন ভূমি, সক্রিয় ব-দ্বীপ এলাকা, গভীর
ও অগভীর নদী অববাহিকা, ছোট ছোট নদী বা প্রণালী, তরঙ্গায়িত ভূমি, ইত্যাদি এই অঞ্চলের প্রধান ভূ-
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য।
(১২) সুসং পাহাড় ও পাদদেশীয় পলিজ সমভূমি (ঝঁংধহম ঐরষষং ধহফ চরবফসড়হঃ) ঃ
(র) সুসং পাহাড়: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জামালপুর থেকে সুনামগঞ্জ জেলা পর্যন্ত প্রায় ১৬১ কি.মি দীর্ঘ
অঞ্চল জুড়ে সুসং পাহাড়ী (টিলা) ভূমিরূপ রয়েছে। মেঘালয় মালভূমির পাদদেশস্থ টিলা সমূহ এই
অঞ্চলের অর্ন্তভূক্ত। বেলে পাথর, চূনাপাথর, সাদা কর্দম (ডযরঃব পষধু), শেল, এই অঞ্চলের প্রধান
গাঠনিক শিলা। এ অঞ্চলের টিলাগুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা ৯২ মিটার ও উপত্যকার উচ্চতা ৩১ মিটারের
উর্ধ্বে। অসংখ্য গভীর খাদ বিশিষ্ট্য (বহঃৎবহপযবফ) পাহাড়ী নদী বাহিত বালু ও পলি সঞ্চিত হয়ে গড়ে
উঠেছে নীচু জলাবদ্ধ ভূ-ভাগ। এই অঞ্চলের পূর্ব দিকে ভারতের মেঘালয়া মালভূমির পাদদেশে রয়েছে
৬১০ কি. মি. উচ্চতা বিশিষ্ট বেশ কতগুলো বৃহদাকার ফাটল (মরমধহঃরপ ভধঁষঃ)।এই ফাটল গুলোর
পাদদেশে রয়েছে নীচু হাওর অববাহিকা।
(রর) পাদদেশীয় পলিজ সমভূমি: সুসং পাহাড়ী অঞ্চলের পাদদেশীয় ভূমি (নালিতাবাড়ি, হালুয়াঘাট,
কমলাকান্দা ও দূর্গাপুর উপজেলার কিয়দাংশ) সুষম ঢাল (মবহঃষব ংষড়ঢ়ব) বিশিষ্ট। দক্ষিণে সারি সারি
নদী পর্যঙ্ক গুলো বর্ষা মৌসুমে স্বল্পমাত্রায় প্লাবিত হয়। তবে আকষ্মিক বন্যা গোটা অঞ্চলকে মাঝে মাঝে
প্লাবিত করে।
(১৩) মধুপুর গড় অঞ্চল (গধফযঁঢ়ঁৎ ঞৎধপঃ) ঃ
বরেন্দ্রভূমির ন্যায় এই অঞ্চলটি বঙ্গ অববাহিকা (ইবহমধষ ইধংরহ) -এর অভ্যন্তরে আরেকটি প্লাইস্টোসিক
কালের সোপান। প্রায় ২,৫৫৮ বর্গ কি. মি. (জধংযরফ, ১৯৯১) বিশিষ্ট এই গড় অঞ্চলের বিস্তৃতি দক্ষিণে ঢাকার
উত্তরাংশ থেকে উত্তরে জামালপুর ও ময়মনসিংহ জেলা পর্যন্ত। মধুপুর গড়ের ভিত্তি মধুপুর কর্দমের উপরে হলেও
উপরিভাগে রয়েছে পুরাতন গঙ্গা ও ব্র²পুত্র নদী বিধৌত পলল মৃত্তিকা। মধুপুর গড় মূলতঃ ভূ-গাঠনিক
আন্দোলনের (ঞবপঃড়হরপ গড়াবসবহঃ) ফলে সৃষ্টি উঙ্খিত চ্যুতিস্তূপ (ঋধঁষঃ ইষড়পশ) জাতীয় ভূমিরূপ। পুরো
এলাকা জুড়ে গভীর খাদ বিশিষ্ট সর্পিলকার (গবধহফবৎরহম) ও বৃক্ষসদৃশ (উবহফৎরঃরপ) নদী প্রবাহিত হয়ে
থাকে। এর পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্বাংশ অপেক্ষাকৃত উঁচু। মধুপুর অঞ্চলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, মালভূমি সদৃশ ঢাল
বিশিষ্ট উঁচু ভূমি (ঈযধষধ) যেগুলোর উচ্চতা ৯ থেকে ১৮ মিটার, কালো রং এর পলল সমৃদ্ধ অববাহিকা
(ইধরফ/বাইদ) বিচুর্নীভূত (বিধঃযবৎবফ) সমতল ভূমি, ছোট বড় আকারের বিক্ষিপ্ত চ্যুতি স্তূপ (নষড়পশং), মৃদু
তরঙ্গায়িত (ঁহফঁধষধঃরহম) ঢাল ইত্যাদি ভূমিরূপ। কেন্দ্রীয় অঞ্চলের পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে ৬ থেকে ১৫ মিটার
উচ্চতা বিশিষ্ট্য চ্যুতি (ঋধঁষঃ)।
(১৪) সিলেট হাওর অববাহিকা (ঝুষযবঃ ঐধড়ৎ ইধংরহ) ঃ
সুরমা-কুশিয়ারা প্লাবনভূমি, বৃহত্তর সিলেট জেলা এবং কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার পূর্বাংশ জুড়ে সিলেট
বেসিন বা হাওর অববাহিকা অবস্থিত। প্রায় ৪৫০৫ বর্গ কি. মি. আয়তন বিশিষ্ট এই অববাহিকাটি সুরমাকুশিয়ারা নদীর প্লাবনভূমির পশ্চিমাংশ। সমগ্র অঞ্চলটি মধুপুর গড় উত্থিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে। সিলেট
অববাহিকায় সুরমা-কুশিয়ারা নদী বাহিত প্রচূর পলি সঞ্চিত হলেও অববাহিকাটির অবনমন প্রক্রিয়া অব্যাহত
থাকায় হাওর বা বিল গুলো ভরাট হতে পারে না। গত কয়েক শত বছরে সিলেট অববাহিকা ৯ থেকে ১২ মিটার
পর্যন্ত অবনমিত হয়েছে (মর্গান ও ম্যাকিনটার, ১৯৫৯)। সিলেট অববাহিকার প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো হলো,
দক্ষিনাংশের বিল (ইরষং) বা হাওর (ঐধড়ৎ) সমূহ, নদী বিচ্ছেদ (পঁঃ ড়ভভ), বারি আর্বত গহŸর (ঝপড়ঁৎং),
প্রাকৃতিক বাঁধ (ঘধঃঁৎধষ ষবাবব), ইত্যাদি। হালকা ধূসর (খরমযঃ এৎবধঃ) ও পঙ্ক-পলিযুক্ত কর্দম (ঝরষঃু ঈষধু)
এই অঞ্চলের প্রধান মৃত্তিকা।
(১৫) সিলেট উচ্চভূমি (ঝুষযবঃ ঐরময চষধরহং) ঃ
সিলেটের হাওর অববাহিকার নীচু উপত্যকা সমূহের মাঝে সিলেট উচ্চভূমি অবস্থিত। এই অঞ্চলের উচ্চতা ৯
মিটার। ক্ষুদ্র নদী প্রবাহগুলো (ঝঃৎবধসং) বেশ গভীর খাদ যুক্ত। এই উচ্চভূমিতে কয়েকটি হাওর ও বিল
রয়েছে, তবে এগুলো সিলেট হাওর অববাহিকার হাওর ও বিলগুলো অপেক্ষা অধিকতর উঁচুতে অবস্থিত। শীত
মৌসুমের প্রারম্ভে এই হাওর ও বিলগুলো শুষ্ক হয়ে পড়ে।
(১৬) সিলেট পাহাড়সমূহ (ঝুষযবঃ ঐরষষং) ঃ
সিলেট জেলার উত্তর সীমান্ত বরাবর মেঘালয়া মালভূমির (গবমযধষধুধ চষধঃবধঁ) পাদদেশে উত্তর-পূর্ব থেকে
দক্ষিণ-পশ্চিমে বিস্তৃত কতিপয় ছোট আকারের পাহাড় (ঋড়ড়ঃ ঐরষষং) পরিলক্ষিত হয়। এই পাহাড়গুলোর দক্ষিণ
পূর্বাংশে রয়েছে ছাতক টিলা বা ছোট পাহাড়সমূহ যা মূলতঃ উত্তরের সিলেট পাহাড়ের বর্ধিতাংশ। সিলেট
জেলায় প্রায় ১৮৬.৪৮ বর্গ কি. মি. এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই ছোট পাহাড়গুলোর উচ্চতা ৬১ মিটার থেকে ৯১
মিটার (চৌধুরী, ১৯৯৫)। এই সকল পাহাড়ের উপরিভাগ, গভীর খাদ যুক্ত ¯্রােতধারার (বহঃৎবহপযবফ
ংঃৎবধসং) দ্বারা ক্ষত বিক্ষত। পাহাড়গুলোর গাঠনিক উপাদান টারশিয়ারী যুগের বেলে পাথর, চূনাপাথর, কর্দম
পাথর ইত্যাদি হলেও এর উপরিভাগ প্লায়োস্টোসিন কালের পলল দ্বারা আবৃত। পাহাড়গুলোয় সিলেট পাহাড় ও
ছাতকের টিলা সমূহ ব্যতীত সিলেট জেলার দক্ষিনাংশে ছয়টি পাহাড় শ্রেনী (ঐরষষ জধহমবং)
(জধংযরফ,১৯৯১))। সিলেট জেলার পূর্ব সীমানায় প্রায় ৪০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাহাড় শ্রেনী চট্টগ্রাম
পাহাড় শ্রেনীর বর্ধিতাংশ। এই পাহাড়শ্রেনীর উচ্চতা গড়ে ১৮৩ মিটার হলেও সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ২০৮ মিটার
(কুলেরাল টিলা) (জধংযরফ,১৯৯১)
(১৭) মেঘনা প্লাবনভূমি (গবমযহধ ঋষড়ড়ফ চষধরহ) ঃ
মেঘনা প্লাবনভূমি সুরমা-সুশিয়ারা নদীর সঙ্গমস্থল (সববঃরহম ঢ়ড়রহঃ) থেকে দক্ষিনে চাঁদপুর জেলার পূর্বাংশে
মেঘনা নদীর মোহনা পর্যন্ত অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। এই সমগ্র অঞ্চলটি জুড়ে রয়েছে মেঘনার শাখানদী
(ফরংঃৎরনঁঃধৎু) তিতাস নদী বিধৌত প্লাবনভূমি, লক্ষ্যা-বংশাই দোয়াব (উড়ধন) অঞ্চলের অংশ বিশেষ এবং
মধ্য মেঘনা প্লাবনভূমি। অসংখ্য বাঁকের চর (চড়রহঃ ইধৎ), নীচু উর্বর সমতল প্লাবন ভূমি (খড়ি ভবৎঃরষব
ভষড়ড়ফঢ়ষধরহ), লম্বাটে আকৃতির চর (বষড়হমধঃবফ পযধৎ), দিয়ারা (উরধৎধ), ইত্যাদি। মেঘনা প্লাবনভূমির
প্রধান ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যাবলী। মেঘনা নদী ও এর উপনদী বাহিত বিপুল পরিমান বৃহদাকার দানা মুক্ত পলি
নদীর প্রাকৃতিক বাঁধের (হধঃঁৎধষ ষবাবব) পশ্চাৎ দিকে (ইধপশ ঝষড়ঢ়ব) সঞ্চিত হয় এবং অপেক্ষাকৃত মিহি
দানাদার পঙ্কপলি (ঝরষঃ) ক্রমশঃ নদীর পাড় থেকে দূরবর্তী অঞ্চলে সঞ্চিত হয়। মেঘনা নদীর ক্ষয়কার্যের
(বৎড়ংরড়হধষ ধংঃরারঃু) তীব্রতা অধিক নয়। মেঘনা নদীর নি¤œ গতিতে (ষড়বিৎ পড়ঁৎংব) চরসমূহ আকষ্মিক
ভাবে পরিবর্তন প্রবন (ঝঁফফবহ পযধহমব) হলেও উর্ধ্বগতিতে চরসমূহ বেশ স্থিতিশীল।
(১৮) ত্রিপুরা সমতল (ঞরঢ়ঢ়বৎধ ঝঁৎভধপব) ঃ
ত্রিপুরা পর্বতের পাদদেশে বাংলাদেশে কুমিল্লা জেলার অধিকাংশ, নোয়াখালী ও সিলেট জেলার কতকাংশ জুড়ে
এই সমতল ভূমি অবস্থিত। আয়তক্ষেত্রাকার নদী ব্যবস্থা (জবপঃধহমঁষধৎ ঢ়ধঃঃবৎহ ফৎধরহধমব ঢ়ধঃঃবৎহ) বিশিষ্ট
এই অঞ্চলের মৃত্তিকা অন্যান্য প্লাবনভূমির মৃত্তিকা অপেক্ষা অধকতর জারিত (ঙীরফরংবফ)। তিনটি উপবিভাগ
বিশিষ্ট এই ভূ-ভাগ বেশ বৈচিত্রপূর্ণ।
(র) পূর্ব পাদদেশীয় ভূ-ভাগ ও লালমাই পাহাড় শ্রেনী (ঊধংঃবৎহ চরবফসড়হঃ ঝঃৎরঢ় ্ খধষসধর
জধহমব) ঃ ত্রিপুরা পর্বত পাদদেশীয় এই অঞ্চল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ২ থেকে ১৫ কি. মি. পর্যন্ত
চওড়া, প্লাইয়োষ্টোসিন পলল নির্মিত পর্বত বিধৌত বালুকাময় কর্দম আচ্ছাদিত এই ভূ-ভাগটি
প্লাইয়োষ্টোসিন চত্বরের অন্তর্ভূক্ত। কুমিল্লা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত ১৫ কি. মি. দীর্ঘ ও প্রায় ১.৫
কি.মি. চওড়া লালমাই পাহাড়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা ৪৬ মিটার। এটি গঠনগত দিক থেকে একটি গ্রস্থ
মালভূমি (ঐড়ৎংঃ)।
(রর) নীচু প্লাবনভূমি (খড়ি ভষড়ড়ফঢ়ষধরহ) ঃ দক্ষিণ নবীনগর থেকে মাইজদী পর্যন্ত বিস্তৃত এই দীর্ঘ নীচু
প্লাবনভূমি প্রায় সমতল ও চওড়া উত্থিত ভূমি (ৎরফমবং) ও অববাহিকা (নধংরহং) বিশিষ্ট এই ভূ-ভাগ
বর্ষা মৌসুমে মেঘনা-গুমতি-ডাকাতিয়া নদীর পানি দ্বারা প্লাবিত হয়।
(ররর) বিচ্ছিন্ন উঁচু প্লাবনভূমি (ঐরময ঋষড়ড়ফঢ়ষধরহ) ঃ স্বল্প গভীরতায় প্লাবিত হয়ে ডাকাতিয়া, ছোট ফেনী ও
গুমতী নদীর তীর অঞ্চল বিচ্ছিন্ন ভাবে সংকীর্ণ উত্থিত ভূমি ও অববাহিকা বিশিষ্ট হলেও বাকী অঞ্চলে
প্রশ্বস্ত উত্থিত ভূমি ও অববাহিকা পরিলক্ষিত হয়। লালমাই পাহাড় শ্রেনী ও ত্রিপুরা পাহাড় -এর
মধ্যবর্তী কুমিল্লা উপত্যকাটি (ঈড়সরষষধ ইধংরহ) -একটি গ্রস্থ উপত্যকা মনে করা হয়।
(১৯) মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ অঞ্চল (গড়ৎরনঁহফ উবষঃধ) ঃ
বৃহত্তর কুষ্টিয়ার কিয়দংশ ও খুলনা জেলার উত্তরাংশ জুড়ে বিস্তৃত অংশটি গঙ্গা নদী ও এর শাখা নদী বিধৌত বদ্বীপ ভূমি। এই অঞ্চলের নদীগুলো বালু সঞ্চিত হয়ে মৃতপ্রায় হয়ে গেছে। গঙ্গা নদীতে ভারী বন্যা (যরময ভষড়ড়ফ)
সংঘটিত হলে কেবলমাত্র কিছু পরিমান পানি নদী গুলো দ্বারা প্রবাহিত হয়। এই অঞ্চলের নদীগুলো সর্পিলাকার
(সবধহফবৎরহম), বহু সংখ্যক অশ্বক্ষুরাকৃতি হৃদ (ঙীনড়ি খধশব), নীচু দোয়াব অঞ্চল (ওহঃবৎভষাঁব
ফবঢ়ৎবংংরড়হ) এবং উচ্চ প্লাবনভূমি (ঐরময ঋষড়ড়ফঢ়ষধরহ) এই অঞ্চলের প্রধান ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য। সমস্ত
অঞ্চলটি বালুময় মৃত্তিকা দ্বারা আচ্ছাদিত এবং উত্তর পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা বাকী এলাকা থেকে
অপেক্ষাকৃত উচ্চ।
(২০) কেন্দ্রীয় ব-দ্বীপ অববাহিকা/পর্যঙ্ক (ঈবহঃৎধষ উবষঃধ ইধংরহ) ঃ
গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলের মধ্যভাগে ফরিদপুর-বরিশাল এলাকায় অবস্থিত বিস্তৃত অগভীর এক সারির অববাহিকা
বা নীচু জলাভূমি (নধংরহ ড়ৎ ফবঢ়ৎবংংরড়হ) রয়েছে। এই গুলো স্থানীয়ভাবে ‘ঝিল’ নামে পরিচিত (চৌধুরী,
১৯৮৮)। তবে ১৯৩১ বর্গ কি. মি. আয়তনের এই অববাহিকা বা নীচু জলাভূমি ‘ফরিদপুর বিল এলাকা’
(ঋধৎরফঢ়ঁৎ ইরষষ অৎবধ) হিসেবেও সুপরিচিত ((জধংযরফ,১৯৯১))। এই অববাহিকা বা নীচু জলাভূমি সমূহ ভূ-
গাঠনিক প্রক্রিয়ার (ঃবপঃড়হরপ ঢ়ৎড়পবংংবং) ফলে সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারনা করা হয় (মর্গান ও ম্যাকিনটার,
১৯৫৯)।
(২১) অপরিনত ব-দ্বীপ অঞ্চল (ওসসধঃঁৎব উবষঃধ) ঃ
মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ অঞ্চলের দক্ষিনে প্রায় সমুদ্র সমতলের সমান উচ্চ চওড়া ভূ-ভাগকে অপরিনত ব-দ্বীপ অঞ্চল
হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। খুলনা ও পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত সুন্দরবন বনাঞ্চল ও কৃষিভূমিসহ প্রায় ৪৮২৭
কি. মি. এলাকা জুড়ে অপরিনত ব-দ্বীপ অঞ্চল বিস্তৃত ((জধংযরফ,১৯৯১))। ¯্রােতজ সমভূমি (ঞরফধষ চষধরহ) বা
উপকূলীয় লবনাক্ত সমভূমি (ঈড়ধংঃধষ ঝধষরহব চষধরহ) নামে অভিহিত এই অঞ্চলের ভূমির বেশ কিছু সংখ্যক
নদীমালা দ্বারা অবক্ষেপিত পলি সঞ্চিত হয়ে তৈরী হয়েছে (চৌধুরী, ১৯৮৮)। পর্যাপ্ত পলি সঞ্চয়নের অভাব
(ধনংবহপব ড়ভ ধফবয়ঁধঃব ফবঢ়ড়ংরঃরড়হ) ও ভূমির অবনমনের (ংঁনংরফবহপব) ফলে এই অপরিনত ব-দ্বীপ
(ওসসধঃঁৎব ফবষঃধ) অঞ্চল গঠিত হয়েছে বলে ধারনা করা হয় (রশীদ, ১৯৮৮)। নীচু পাড় বিশিষ্ট অগভীর
নদীমালা, বালিয়াড়ির সারি (ঝধহফ ফঁহব ৎরফমবং) কর্দম সমতল (সঁফ ভষধঃ), খাঁড়ি ও বিস্তীর্ণ মগ্নচড়া
(বীঃবহংরাব ংযড়ধষং) ইত্যাদি এই অঞ্চলের প্রধান ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যাবলী।
(২২) পরিনত ব-দ্বীপ অঞ্চল (গধঃঁৎব উবষঃধ) ঃ
মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ ও ¯্রােতজ ব-দ্বীপ ভূমির মধ্যভাগে পরিণত ব-দ্বীপ ভূমি অবস্থিত। কপোতাক্ষ ভদ্রা-ভৈরব
ইত্যাদি নদী বাহিত পলি দ্বারা গঠিত এই অঞ্চলে পুরাতন গঙ্গা প্লাবনভূমির (ড়ষফ এধহমবং ভষড়ড়ফ ঢ়ষধরহ)। কিছু
এলাকা পদ্মা-মধুমতি প্লাবনভূমি, অলবনাক্ত স্ত্রোতজ প্লাবনভূমি (সড়হ-ংধষরহব ঃরফধষ ভষড়ড়ফ ঢ়ষধরহ) ও লবনাক্তা
¯্রােতজ প্লাবনভূমির (ংধষরহব ঃরফধষ ভষড়ড়ফ ঢ়ষধরহ) সমন্বয়ে এই অঞ্চল গঠিত। আড়িয়াল বিল, উত্তর-পশ্চিমের
অগভীর ভাবে প্লাবিত ভূমি, দক্ষিন-পশ্চিমাংশের গভীরভাবে প্লাবিত অববাহিকা, নদী তীরের প্রাকৃতিক বাঁধ
(হধঃঁৎধষ ষবাববং), ও বড় নদীর মধ্যবর্তী স্থানে আড়াআড়ি ¯্রােতধারা (পৎড়ংং-পযধহহবষ) ইত্যাদি এই
অঞ্চলের প্রধান ভূ-পাকৃতিক বৈশিষ্ট্য।
(২৩) সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চল (অপঃরাব উবষঃধ) ঃ
পদ্মা নদীর উভয় পার্শ্বে অবস্থিত চর ও দিয়ারা সমূহ, নি¤œ মেঘনায় মেহেন্দীগঞ্জ দ্বীপ বা চর এবং মেঘনা
মোহনাস্থ তিনটি খাঁড়ি, যেমন : হরিনঘাটা, আগুনমুখা ও মেঘনায় সৃষ্ট বালুচর (ংধহফ নধৎং) এবং অগনিত চর
নিয়ে এই অঞ্চল গঠিত। এ অঞ্চলের চরগুলোকে এখনও সৃষ্টি ও ভাঙ্গন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আরও
দক্ষিনে রয়েছে ভোলা, রামগতি, হাতিয়া ও স›দ্বীপ-এর ন্যয় বৃহদাকার দ্বীপসমূহ। তেঁতুলিয়া নদী, শাহবাজপুর
নদী, হাতিয়া প্রনালী (ঈযধহহবষ) ইত্যাদি এ অঞ্চলের প্রধান ¯্রােতধারা। বৃহদাকার মগ্নচড়া (ংযড়ধষং) ও
মেঘনা ও বড় ফেনী নদী বাহিত পলি সঞ্চিত হয়ে মেঘনা মোহনাস্থ সমতলভূমির আয়তন ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
(২৪) চট্টগ্রাম উপ-অঞ্চল (ঈযরঃঃধমড়হম ংঁন-ৎবমরড়হ) ঃ
চট্টগ্রাম উপ-অঞ্চলটি ফেনী নদীর দক্ষিনে অবস্থিত নানা ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য মন্ডিত এক বৃহৎ ভৌগোলিক উপঅঞ্চল। তরঙ্গায়িত পর্বতমালা, উপত্যকা, ঝরণা, খাল, দ্বীপ ও সন বনাঞ্চল নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম উপ-অঞ্চলকে
একটি ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে। ফেনী নদীর তীর থেকে মাতামুহুরী ব-দ্বীপ পর্যন্ত এক থেকে পনের ফুট চওড়া
ও ১২১ কি. মি. দীর্ঘ সমুদ্রতীর, সীতাকুন্ড, জলদি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী লম্বাকৃতির উপত্যকা, চকোরিয়া
সুন্দরবন, মাতামুহরী নদীর বদ্বীপ, মহেশখালী দ্বীপ ও প্রনালী, সোনাদিয়া দ্বীপের কর্দম ভূমি (সঁফভষধঃ),
কুতুবদিয়া ইত্যাদি চট্টগ্রাম উপ-অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যাবলীর অন্যতম।
পাহাড়ী এলাকার মধ্যে পশ্চিমের সীতাকুন্ড পাহাড় (৩৫২ মি. সর্বোচ্চ শৃঙ্গ), চিম্বুক পাহাড়, টেকনাফ পাহাড়
এবং পূর্বের রাম পাহাড় (৪৩৬ মি.), বরকল পাহাড় (৫৭২ মি), পাহাড় মধ্যবর্তী উপত্যকা এবং ঝরনাসমূ
চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান পার্বত্য ভূমিরূপ।
এছাড়া কর্ণফুলী নদী, কাসালং নদী, কাপ্তাই লেক (৬৪৪ বর্গ কি. মি.) বাঁকথালী নদী ও উপত্যকা, নাফ নদী ও
টেকনাফ সমভূমি, দক্ষিনের বেলাভূমি, ভৃগু (পষরভভ), চূনাপাথর ও প্রবাল নির্মিত ক্ষুদ্র দ্বীপ (রংষবঃ) সেন্ট মার্টিন
এবং জিনজিরা প্রবাল প্রাচীর (পড়ৎধষ ৎববভ) টেকনাফ উপদ্বীপের (ঢ়বহরহংঁষধ) প্রায় সাত কি. মি. দক্ষিনপশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ১.২
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
সঠিক উত্তরের পাশে √ চিহ্ন এবং অঠিক উত্তরের পাশে দ্ধ চিহ্ন দিনঃ
১.১. সাধারণভাবে ভ‚মির অবস্থা ও গঠনকাল অনুযায়ী বাংলাদেশের ভ‚রূপকে ৪টি ভাগে ভাগ করা যায়।
১.২. মূলতঃ ভ‚-প্রকৃতি ও ভ‚-সংস্থান সমার্থক বোধক।
১.৩. বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপভ‚মি এবং বঙ্গ অববাহিকা নামে বহুল পরিচিত।
১.৪. চট্টগ্রাম অঞ্চল ব্যতীত অবশিষ্ট্য বাংলাদেশ প্রাচীন ও সাম্প্রতিক কালের বহু সংখ্যক নদীবাহিত পলল
অবক্ষেপনের ফলে গড়ে উঠেছে।
১.৫. নি¤œ আত্রাই অববাহিকা অঞ্চলই চলন বিল নামে পরিচিত।
১.৬. হিমালয়ের পাদদেশীয় পলল সমভ‚মি প্রাচীনতম পলল সমভূমি অঞ্চল।
১.৭. ঢাকা জেলার দক্ষিণ অংশে গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্তী প্লাবন সমভ‚মি নিয়ে আড়িয়াল বিল গঠিত
হয়েছে।
১.৮. বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ছোট একটি দ্বীপ, স্টেন্টমার্টিন।
১.৯. সেন্টমার্টিন মূলতঃ একটি প্রবাল দ্বীপ।
১.১০.গাজীপুর, টাঙ্গাইল এবং ময়মনসিংহের অংশ বিশেষ নিয়ে মধুপুর ট্রাক্ট।
২. শূন্যস্থান পুরণ করুন ঃ
২.১. তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদী ......... প্লাবন সমভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
২.২. হারুন অর রশিদ ...., .... বাংলাদেশের ভ‚-প্রকৃতিকে প্রধান .... প্রধান ভাগ, সঙ্গে .... এককে
বিভক্ত করেন।
২.৩. পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ের পার্শ¦দিয়ে সাঙ্গু , ...... ইত্যাদি নদী প্রবাহিত হয়ে মঙ্গোপসাগরে পতিত
হয়েছে।
২.৪. দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দেখা যায় প্লেস্টোসিন যুগের .... ভ‚মি যা সামান্য ....
অপেক্ষাকৃত .... সমভ‚মি।
২.৫. খুলনা ও পটুয়াখালী জেলায় রয়েছে ........ নামক বনভূমি, যা মূলতঃ ....... বনভূমির অর্ন্তভূক্ত।
সংক্ষিপ্ত উত্তর দিনঃ
১. হিমালয় পাদদেশীয় সমভূমি সম্পর্কে আলোচনা করুন।
২. প্লেস্টোসিন যুগের চত্বরসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করুন।
৩. ব্রহ্মপুত্র-যমুনা প্লাবনভূমি সম্পর্কে আলোচনা করুন।
৪. গঙ্গা নদী প্লাবন সমভ‚মিসমূহের বৈশিষ্ট্যাবলী আলোচনা করুন।
৫. ত্রিপুরা সমতলভূমি সম্পর্কে বিস্তারিত লিখুন।
রচনামূলক প্রশ্নঃ
১. বাংলাদেশের ভ‚-সংস্থানগত শ্রেণীবিভাগ ও বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করুন।
২. হারুন-অর-রশিদ প্রদত্ত বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী পরিণত, অপরিণত ও
মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ অঞ্চলের বর্ণনা দিন।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ