আগ্নেয় শিলা কাকে বলে? আগ্নেয় শিলার বুনট সম্পর্কে বিস্তারিত লিখুন।
আগ্নেয় শিলার শ্রেণীবিভাগ উদাহরণসহ দিন।


 আগ্নেয়শিলা কাকে বলে;
 আগ্নেয়শিলার বুনট;
 আগ্নেয়শিলার শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে।
আগ্নেয়শিলা কাকে বলে
ভ‚-অভ্যন্তরে উত্তপ্ত ম্যাগমা শীতল ও কেলাসিত হয়ে আগ্নেয়শিলা গঠিত হয়। পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার
শুরুতেই এর বহির্ভাগ অত্যন্ত উত্তপ্ত ও গলিত অবস্থায় ছিল বলে ধারণা করা হয়। এ সমস্ত পদার্থ
ধীরে ধীরে শীতল ও কেলাসিত হয়ে পৃথিবীর আদি ভ‚-ত্বক সৃষ্টি করে।
আগ্নেয়শিলার প্রধান উপাদান ম্যাগমা গুরুমন্ডলের উপরিভাগ থেকে ওপরে উঠে আসে। ভ‚-
অভ্যন্তরের গভীর তলদেশ থেকে (প্রায় ২০০ কি.মি.) ভ‚-পৃষ্টের দিকে যাত্রা পথে ম্যাগমা কখনও
ভ‚-ত্বকের অভ্যন্তরেই জমাট বদ্ধ হয়। আবার কখনও বা ম্যাগমা ভ‚-ত্বকের গভীরে ফাঁটল বরাবর
সজোরে ভ‚-পৃষ্ঠে উঠে আসে।
আগ্নেয়শিলার সংজ্ঞা দিন।
আগ্নেয়শিলার বুনট
শিলার বুনট বলতে এর গঠনকারী খনিজ উপাদানের আকার, আকৃতি বুঝায়। শিলার বুনট
গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শিলার উৎপত্তির সময় কি ধরনের পরিবেশ এবং প্রক্রিয়া কাজ করছে তা বুনটের
বৈশিষ্ট্যে প্রতিফলিত হয়। যেমন, ম্যাগমা খুব দ্রæত শীতল ও কেলাসিত হয়ে মিহি বুনটের শিলা
গঠন করে। যেমন- রাইয়োলাইট।
ম্যাগমা ধীরে ধীরে শীতল হলে মোটা বুনটের শিলা গঠন করে। যেমন- গ্রানাইট।
আগ্নেয় শিলায় প্রধানত: ৫ ধরনের বুনট দেখা যায়। যথা১. কাঁচের মত দানাহীন, যেমন গøাস;
২. এফেনিটিক (অঢ়যধহরঃরপ) অতি সুক্ষ দানা খালি চোখে দেখা যায় না। যেমন-ব্যাসল্ট,
অ্যান্ডেসাইট।
৩. ফেনারেটিক (চযধহবৎরঃরপ) ক্ষুদ্র দানা কিন্তুখালি চোখে দেখা যায়, যেমন- গ্রানাইট।
৪. পরফাইটিক (চড়ৎঢ়যুঃরপ) দুই ধরনের দানা বিশিষ্ট (বড় ও ছোট), যেমন - পরফাইটিক
রায়োলাইট।
৫. পাইরোক্লাস্টিক (চুৎড়পষধংঃরপ) বৃহৎ আকৃতির দানা বিশিষ্ট আগ্নেয় শিলা। যেমন, টাফ (ঞঁভভ)
ও ছাই-ধুম্র।
পাঁচ ধরনের বুনটের পাঁচটি উদাহরণ দিন।
ম্যাগমা, শীতল ও
কেলাসিত,
জমাটবদ্ধ।
মিহি, বুনট, মোটা
বুনন।
কাঁচের মত,
এফেনিটিক,
ফেনারিটিক,
পরফাইটিক,

আগ্নেয় শিলার শ্রেণীবিভাগ
আগ্নেয়শিলাকে নি¤œলিখিত দুই ভাবে শ্রেণী বিন্যাস করা যায়। যথা ঃ
১. গঠনকারী খনিজ উপাদানের উপর ভিত্তি করে আগ্নেয়শিলাকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথাক. ফেলসিক: অধিক পরিমাণ ফেলড্সপার, সিলিকা মিশ্রিত থাকে বলে এই নামে পরিচিত। এরা
হালকা বর্ণের হয়ে থাকে। যেমন- গ্রানাইট, রাইয়োলাইট।
খ. মেফিক: এতে ম্যাগনেশিয়াম ও লোহার আধিক্য থাকে। এরা ব্যাসল্ট জাতীয়। ধুসর থেকে
কালো বর্ণের হয়। যেমন, ব্যাসল্ট, গ্যাব্রো।
গ. ফেলসিক ও মেফিকের মাঝামাঝি: এরা এ্যান্ডেসাইট জাতীয়। প্রধান খনিজ হল হর্নবেøন্ড,
সোডিয়াম, ফেলস্পার, বর্ণ গাঢ়। যেমন - ডাইয়োরাইট, অ্যান্ডেসাইট।
ঘ. উচ্চমাত্রায় মেফিক: অধিক মাত্রায় লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। প্রধান খনিজ হল অলিভিন,
পাইরক্সিন। গাঢ় সবুজ থেকে কালো বর্নের। যেমন, পেরিডোটাইট, কমাডোটাইট।
খনিজ উপাদান ভিত্তিক আগ্নেয় শিলাগুলির গুনাগুন ও উদাহরণ দিন।
২. উৎপত্তিগতভেদে আগ্নেয়শিলা নি¤œলিখিত শ্রেণীতে বিভক্ত। যথা- ক) বহিঃজ খ) অন্তঃজ
ক. বহিঃজ আগ্নেয়শিলা: পৃথিবীর ভিতরের গলিত পদার্থ জ্বালামুখ বা ফাঁটল দিয়ে বাইরে নির্গত
হয়ে ক্রমে ঠান্ডা হয়ে যে শিলা হয় তাহাই বহিজ: আগ্নেয়শিলা। যেমন, ব্যাসল্ট, পিউমিক।
এই শিলা আবার দুই প্রকার। যথা -
১. বিষ্ফোরক: অগ্ন্যুৎপাতের সময় কিছুপদার্থ প্রচন্ড বেগে বাইরে উৎক্ষিপ্ত হয়ে পতিত হয়
এবং পরে জমাট বেঁধে শিলা হয় বলে বিষ্ফোরক আগ্নেয়শিলা বলে।
২. শান্ত: অগ্ন্যুৎপাতের সময় অপেক্ষাকৃত ভারী গলিত পদার্থ ধীরে ধীরে ভ‚-পৃষ্টে পতিত হয়ে
শিলায় পরিনত হয় বলে শান্ত আগ্নেয়শিলা বলে।
খ. অন্তঃজ আগ্নেয়শিলা: কোন কোন সময় তরল ম্যাগমা ভ‚-পৃষ্টে পৌঁছুতে না পেরে পৃথিবীর
অভ্যন্তরেই জমাট বেধেঁঅন্ত:জ শিলা গঠন করে। এই শিলা আবার দুই প্রকার। যথা -
১. পাতালিক: ভ‚-পৃষ্টের বহু নীচে অবস্থিত এই শিলা সম্পূর্ণ কেলাসিত। যেমন- গ্যাব্রো।
২. উপ-পাতালিক: ভ‚-গর্ভস্থ ম্যাগমা উপরে আসার সময় ভ‚-পৃষ্টের কাছাকাছি এসে জমাট
বেঁধে এই শিলা গঠন করে। যেমন-ডলোরাইট।
পাঠ সংক্ষেপ
পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ আঁঠালো পদার্থ দ্বারা গঠিত। এদের ম্যাগমা বলে। ভ‚আভ্যন্তরীণ নানা প্রকৃয়ার
ফলে এই ম্যাগমা ভ‚-ত্বকের নানা দূর্বল পথে বাইরে বেরিয়ে আসে। ভ‚-অভ্যন্তরের এই উত্তপ্ত ম্যাগমা
শীতল ও কেলাসিত হয়ে আগ্নেয়শিলা গঠন করে। আগ্নেয় শিলার গঠনকারী খনিজ উপাদানের
আকার, আকৃতি ও বিন্যাসের উপর নির্ভর করে পাঁচ ধরনের বুনট দেখা যায়। যেমন কাঁচের মত
দানাহীন, ফেনারেটিক, পারফাইটিক ও পাইরোক্লাস্টিক। এছাড়াও আগ্নেয়শিলাকে দুইভাবে
শ্রেনীবিভাগ করা যায়। গঠনকারী খনিজ উপাদানের ওপর ভিত্তি করে এবং উৎপত্তিগত ভাবে। এই
সমস্ত বিষয় নিয়েই এই পাঠে আলোচনা করা হয়েছে।
গঠনকারী খনিজ
উপাদান এবং
উৎপাদিত গঠনভেদে।
গলিত পদার্থ।
প্রচন্ড বেগে।
অপেক্ষাকৃত ভাবী গলিত
পদার্থ।
তরল ম্যাগমা।
কেলাসিত, জমাট বেঁধে।

পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.৫
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১. শূন্যস্থানগুলো পূরণ করুন (সময়- ৫ মিনিট) ঃ
১.১ ভ‚-অভ্যন্তরে উত্তপ্ত ম্যাগমা শীতল ও ... ... ... ... হয়ে আগ্নেয় শিলা গঠিত হয়।
১.২ প্রচন্ড বেগে যে বহি:জ আগ্নেয় শিলা পতিত হয় তাকে ... ... ... ... ... বলে।
১.৩ মেফিক শিলার উদাহরণ হল ... ... ... ...।
১.৪ উচ্চ মাত্রার মেফিক আগ্নেয় শিলার উদাহরণ হল ... ... ... ...।
১.৫ উৎপত্তিগতভাবে আগ্নেয়শিলা দুই ভাগে বিভক্ত বহি:জ ও ... ... ... ...।
২. সত্য হলে ‘স' মিথ্যা হলে ‘মি' লিখুন (সময়- ৫ মিনিট) ঃ
২.১ আগ্নেয় শিলায় বুনট চার ধরনের হয়।
২.২ গঠনকারী খনিজ উপাদানের উপর ভিত্তি করে আগ্নেয়শিলাকে চারভাগে ভাগ করা যায়।
২.৩ উৎপত্তি ও গঠনভেদে আগ্নেয়শিলাকে বহি:জ, অন্ত:জ এবং মাধ্যমিক এই তিন ভাগে ভাগ
করা যায়।
২.৪ বহি:জ আগ্নেয়শিলা দুই প্রকার বিষ্ফোরক এবং শান্ত।
২.৫ অন্ত:জ আগ্নেয়শিলা দুই প্রকার পাতালিক ও উপপাতালিক।
সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন (সময়- ৩ী২ = ৬ মিনিট) ঃ
১. আগ্নেয়শিলা কাকে বলে।
২. আগ্নেয়শিলার বুনট গুলি কি কি?
৩. আগ্নেয়শিলার শ্রেণীবিভাগ করুন।
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. আগ্নেয় শিলা কাকে বলে? আগ্নেয় শিলার বুনট সম্পর্কে বিস্তারিত লিখুন।
২.

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]