আজকের পাঠে প্রতিবর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্বের পরিসংখ্যান ছায়াপাত পদ্ধতিতে উপস্থাপনের পদ্ধতি দেখাব।
উদাহরণঃ নিচের সারণিতে বাংলােেশর জেলা ওয়ারী ১৯৯১ সালের প্রতিবর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যা ঘনত্বের পরিসংখ্যান
দেওয়া হল। ছায়াপাত পদ্ধতিতে এটি দেখাতে হবে।
সারণি : বাংলাদেশের জনসংখ্যা ঘনত্ব ১৯৯১
জেলার নাম ঘনত্ব জেলার নাম ঘনত্ব জেলার নাম ঘনত্ব
বান্দরবান ৫২ খাগড়াছড়ি ১২৭ রাঙ্গামাটি ৬৬
চট্টগ্রাম ১০০২ কক্সবাজার ৫৬৯ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১১১২
কুমিল্লা ১৩০৭ চাঁদপুর ১১৯২ ফেনী ১১৮২
লক্ষীপুর ৯০১ নোয়াখালী ৬১৬ হবিগঞ্জ ৫৭৯
মৌলভীবাজার ৪৯২ সুনামগঞ্জ ৪৬৬ সিলেট ৬১৭
ঢাকা ৩৯৮৯ গাজীপুর ৯৩২ মানিকগঞ্জ ৮৫৩
মুন্সিগঞ্জ ১২৪৪ নারায়ণগঞ্জ ২৩১২ নরসিংদী ১৪৪৭
ফরিদপুর ৭২৬ রাজবাড়ী ৭৪৬ গোপালগঞ্জ ৭১২
মাদারীপুর ৯৩৪ শরিয়তপুর ৮০৭ জামালপুর ৯২২
শেরপুর ৮৩৫ নওগাঁ ৬২৫ নাটোর ৭৩২
নবাবগঞ্জ ৬৮৮ রাজশাহী ৭৮৪ ময়মনসিংহ ৯০৭
কিশোরগঞ্জ ৮৫৮ নেত্রকোনা ৬১৬ টাঙ্গাইল ৮৭৫
বরিশাল ৭৯১ ঝালকাঠী ৮৭৯ পিরোজপুর ৮১৩
ভোলা ৪৩৪ পটুয়াখালী ৩৯৮ বরগুনা ৪২৪
যশোর ৮২১ ঝিনাইদহ ৬৯৪ মাগুরা ৬৯০
নড়াইল ৬৬৩ বাগেরহাট ৩৬১ খুলনা ৪৫৮
মেহেরপুর ৬৮৭ বগুড়া ৯১৪ জয়পুরহাট ৭৯৩
দিনাজপুর ৬৫৭ ঠাকুরগাঁ ৫৫৯ পঞ্চগড় ৫০৭
পাবনা ৮১০ সিরাজগঞ্জ ৯০৬ রংপুর ৯৩৬
গাইবান্ধা ৮৯৪ কুড়িগ্রাম ৬৯৮ লালমনিরহাট ৭৬৭
নীলফামারী ৮২২ চুয়াডাঙ্গা ৬৯৭ কুষ্টিয়া ৯২৭
সাতক্ষীরা ৪১৪
কোন একটি অঞ্চলে বসবাসকারী জনসংখ্যাকে ঐ অঞ্চলের আয়তন দ্বারা ভাগ করলে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার
ঘনত্ব পাওয়া যায়। বাংলাদেশের কোন এলাকায় বনভূমি, কোথাও বিল-হাওড়-বাওড় প্রভৃতি স্থায়ী জলাভূমি, কোথাও উঁচু
পাহাড় এবং কোথাও উর্বর শস্যক্ষেত্র রয়েছে। ফলে দেশের সর্বত্র জনসংখ্যা ঘনত্ব একরূপ নয়। কিন্তু ছায়াপাত পদ্ধতি
অবলম্বনের সময় ক্ষুদ্র এলাকার তারতম গ্রাহ্য না করে প্রশাসনিক বিভাগ অনুযায়ী জনসংখ্যা ঘনত্ব দেখাবার জন্য ছায়াপাত
পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
১৯৯১ সালের জনসংখ্যা ঘনত্বের তথ্যগুলোকে সূচক (ওহফবী) অনুসারে বিভিন্ন ছায়াপাতের সাহায্যে মানচিত্রে দেখাতে
হবে। সূচক নির্বাচনের সময় কম ঘনত্ব বিশিষ্ট অঞ্চলে হালকা ছায়াপাত এবং ঘনত্ব বৃদ্ধির সংগে সংগে ক্রমা হয়ে গাঢ়
থেকে অধিকতর গাঢ় ছায়াপাত করতে হবে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে সমব্যবধানে ছায়াপাত নির্বাচনের সময় প্রতি বর্গ
কিলোমিটারে ২০০ চেয়ে কম ঘনত্ব বিশিষ্ট জেলার জন্য বিন্দু ছায়াপাত ২০০ থেকে ৫৯৯ ঘনত্ব বিশিষ্ট জেলাগুলোর জন্য
উলম্ব রেখা; ৬০০ থেকে ৭৯৯ ঘনত্ব বিশিষ্ট জেলাগুলোর জন্য ডান দিকে বাঁকা রেখা ৮০০; থেকে ৯৯৯ ঘনত্ব বিশিষ্ট
জেলাগুলোর জন্য বাম দিকে বাঁকা রেখা; ১০০০ থেকে ১৯৯৯ ঘনত্ব বিশিষ্ট জেলাগুলোর জন্য অনুভূমিক ও উলম্ব ঘন ঘন
সরু রেখা; ২০০০ থেকে বেশী
(প্রতি ছায়াপাত পৃথক নির্বাচনের ক্ষেত্রে বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্বের মধ্যে সে ব্যবধান নেয়া হয়েছে তার মধ্যে
তারমত্য রয়েঠে- ২০০০-৫৯৯, ব্যবধান = ৩৯৯, ৬০০-৭৯৯ ব্যবধান= ১৯৯, ৮০০-৯৯৯ ব্যবধান=১৯৯, ১০০০-১৯৯৯
ব্যবধান=৯৯৯)
ঊর্ধ্ব ঘনত্ব বিশিষ্ট জেলাগুলোর জন্য উলম্ব ও অনুভূমিক মোটা রেখা ছায়াপাত নির্বাচন ও অঙ্কন করা হল। অতঃপর এ
ছায়াপাত ব্যবহার করে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ঘনত্বের মানচিত্র (চিত্র-৩.৪.১) অঙ্কন করা হল।
বিন্দু মানচিত্র (উড়ঃ গধঢ়)
এই অংশটি পাঠ করে আপনি-
বিন্দু পদ্ধতি ব্যবহার করে মানচিত্রে উপাত্ত উপস্থাপনের পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা পাবেন ।
আজকের পাঠে আমরা বিন্দু পদ্ধতি ব্যবহার করে মানচিত্রে উপাত্ত উপস্থাপনের পদ্ধতি দেখব।
মানচিত্রে উপাত্তের বিপরীতে বিন্দু ব্যবহার করে উপাত্তগুলোর উপস্থাপনের পদ্ধতিকে বিন্দু পদ্ধতি বলে।
এক্ষেত্রে মানচিত্রে বিন্দু স্থাপন করে বন্টনমূলক উপাত্তগুলোকে প্রদর্শন করা হয়। জনসংখ্যার ঘনত্ব, কৃষিজ পণ্য, কৃষি
জমির পরিমাণ ইত্যাদির বন্টন দেখাতে এ পদ্ধতি বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে এই পদ্ধতিতে প্রকৃত সংখ্যা দেখানো হয়।
অর্থাৎ শতাংশ বা অনুপাত নয়। এতে প্রতিটি বিন্দু স্কেল অনুসারে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বস্তুকে নির্দেশ করে থাকে এবং
স্কেল অনুসারে বিন্দুর সংখ্যা গণনা করে বিভিন্ন বস্তুর বন্টন সঠিকভাবে মানচিত্রে বসান হয়। যেখানে প্রদর্শিত বস্তুগুলোর
পরিমাণ বেশি সেখানে বিন্দুগুলো বেশি ঘন (কাছাকাছি) এবং যেখানে কম সেখানে কম ঘন করে বসাতে হয়।
পদ্ধতিঃ
জনসংখ্যার বন্টন দেখাতে বিন্দু পদ্ধতি সর্বাপেক্ষা উপযোগী। প্রথমেই মানচিত্র তৈরীর ক্ষেত্রে স্কেলটিকে সঠিকভাবে
নির্বাচন করতে হবে। স্কেল নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের পরিমাণ ও মানচিত্রের আয়তন প্রধান বিবেচ্য বিষয়। স্কেলটা
এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যেন মানচিত্রে একই স্থানে অযথা বিন্দুর সংখ্যা বেশি না হয়। আবার যে সমস্ত স্থানে লোক
খুব কম বাস করে বা একেবারেই বাস করে না এরকম এলাকাগুলোও যেন বোঝা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
মানচিত্রে বিন্দু স্থাপনের ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যে, কোন অংশই যেন বাদ না পড়ে। চিত্রতবে খুব বন্ধুর বা অতি শুষ্ক মরু এলাকা, বনাঞ্চল বা জলাশয় যেখানে মানব বসতি থাকে না বললেই চলে ঐ সব
স্থানগুলোতে বিন্দু স্থাপন না করাই শ্রেয়। স্কেল অনুসারে গণনা করে বিন্দুগুলো বসাতে হয়। কিন্তু প্রতিটি বিন্দুর আকৃতি
একই ধরনের হতে হবে। নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে জনবসতি বেশি হয় বলে সেখানে সাধারণত বিন্দু বেশি দেওয়া হয়।
আবার বিন্দুর সমাবেশ শহর অঞ্চলে ঘন এবং গ্রামীণ অঞ্চলে কম ঘন হবে এবং বেশি নিচু এলাকায় কোন বিন্দু বসবে না।
আবার বিরল বসতিযুক্ত এলাকাগুলোতেও যেন বিন্দুবিহীন না থাকে। মানচিত্রে বিন্দু স্থাপনের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে,
কোন অংশই যেন বাদ না পড়ে।
বিন্দু পদ্ধতি ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা
সুবিধাঃ
১. কোন বস্তুর বন্টন দেখাতে বিন্দু পদ্ধতিতে সুবিধা অধিক। কারণ শস্যের উৎপাদন, চাষকৃত জমির বন্টন বা
জনসংখ্যামূলক বিভিন্ন পরিসংখ্যান এ পদ্ধতিতে মানচিত্রে খুব সহজেই দেখান যায় এবং প্রকৃত সংখ্যা নির্দেশ করে।
২. এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন এলাকায় জনসংখ্যা অথবা অন্যান্য উৎপাদন বা দ্রব্যের বন্টনের যে পার্থক্য তার একটি
তুলনামূলক চিত্র ফুটে ওঠে এবং বন্টনের পার্থক্যের কারণ সহজেই বোঝা যায়।
৩. এতে রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক অঞ্চলের সমন্বয় ঘটে।
অসুবিধাঃ
১. বিন্দু পদ্ধতির মানচিত্রে বিন্দুর সংখ্যা অত্যধিক হলে প্রকৃত পরিমাণ বা প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠে না।
২. অনেক ক্ষেত্রে বিন্দুগুলো পরস্পর লেগে যায় বলে বন্টন সঠিক হয় না।
আজকের পাঠে বিন্দু পদ্ধতি ব্যবহার করে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব উপস্থাপন করব।
স্মারণি : সাবেক জেলাওয়ারি বাংলাদেশের জনসংখ্যা-১৯৯১
ক্রমিক
নং
সাবেক জেলা জনসংখ্যা (হাজার হিসেবে) নির্ণেয় বিন্দু
(১ বিন্দু=১,০০,০০০ জন)
১. ঢাকা ১৩৮১৭ ১৩৮.১৭
২. কুমিল্লা ৮৬৫২ ৮৬.৫২
৩. চট্টগ্রাম ৭১৯৫ ৭১.৯৫
৪. জামালপুর ৩০৮৫ ৩০.৮৫
৫. পাবনা ৪৩০৫ ৪৩.০৫
৬. টাঙ্গাইল ৩০৪৪ ৩০.৪৪
৭. বগুড়া ৩৪৬০ ৩৪.৬০
৮. নোয়াখালী ৪৮৮৪ ৪৮.৮৪
৯. ফরিদপুর ৫৬১২ ৫৬.১২
১০. ময়মনসিংহ ৮০৩৫ ৮০.৩৫
১১. রংপুর ৮১৫৫ ৮১.৫৫
১২. কুষ্টিয়া ২৮৬৫ ২৮.৬৫
১৩. বরিশাল ৫৫৮২ ৫৫.৮২
১৪. যশোর ৫০০৬ ৫০.০৬
১৫. রাজশাহী ৬৭০৫ ৬৭.০৫
১৬. দিনাজপুর ৪০৪৪ ৪০.৪৪
১৭. পটুয়াখালি ২০৯১ ২০.৯১
১৮. সিলেট ৭০৫২ ৭০.৫২
১৯. খুলনা ৫২৬১ ৫২.৬১
২০. চট্টগ্রাম ৭৮৪ ৭.৮৪
২১. বান্দরবান ২৪৪ ২.৪৪
বিঃদ্রঃ প্রতি জেলার জনসংখ্যাকে ১,০০,০০০ দিয়ে ভাগ করে জেলাভিত্তিক বিন্দু বের করা হয়েছে।
পদ্ধতিঃ পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, জনসংখ্যার বন্টন দেখাতে বিন্দু পদ্ধতিই শ্রেয়। এক্ষেত্রে মানচিত্র তৈরি করার পূর্বে
স্কেলটিকে সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হয়। স্কেল নির্বাচন উপাত্তের পরিমাণ ও মানচিত্রের আয়তনের ওপর নির্ভর করে।
স্কেলটি এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যাতে একই স্থানে বিন্দুর সংখ্যা অযথা বেশি না হয়।
পূর্বের পাঠে বর্ণিত বিন্দু পদ্ধতি ব্যবহার করে মানচিত্রে জনসংখ্যার ঘনত্ব উপস্থাপন করুন।
সমরেখ পদ্ধতি
পরিমাণগত বা ঘনত্ব জ্ঞাপক একই মান বিশিষ্ট বিভিন্ন স্থানকে মানচিত্রের উপর যে রেখা দ্বারা যোগ করা হয় সেই রেখাকে
সমমান রেখা বা ওংড়ঢ়ষবঃয ষরহব বলে। এ রেখা সমমান বিশিষ্ট অঞ্চলের ওপর দিয়ে টানা হয়। প্রকৃতিক বিষয় আবহাওয়া,
জলবায়ু ইত্যাদি সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের উপাত্ত প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যেমন- সমতাপ বা
সমোষ্ণরেখা, সমচাপ রেখা, সমবর্ষণ রেখা এবং সমোষ্ণ রেখা।
সমোষ্ণ রেখা (ওংড়ঃযবৎহ ষরহব)ঃ ভূপৃষ্ঠের ওপর সমান তাপ বিশিষ্ট স্থানগুলোকে মানচিত্রের ওপর যে রেখা দ্বারা যুক্ত করা
হয় সে রেখাকে সমোষ্ণ রেখা বলে।
সমচাপ রেখা (ওংড়নধৎ ষরহব)ঃ ভূপৃষ্ঠের ওপর বায়ুর সমচাপ বিশিষ্ট স্থানগুলোর ওপর দিয়ে যে রেখা টানা হয় তাকে সমচাপ
রেখা (ওংড়নধৎ ষরহব) বলে।
সমবর্ষণ রেখা (ওংড়যুবঃ ষরহব)ঃ সম বৃষ্টিপাত যুক্ত স্থানগুলোর ওপর দিয়ে যে রেখা টানা হয় তাকে সমবর্ষণ রেখা বলে।
সমান উচ্চতা বিশিষ্ট স্থানগুলোকে মানচিত্রের ওপর যে রেখা দ্বারা যোগ করা হয় তাকে সমোচ্চ রেখা বলে।
এ সমস্ত রেখা কাল্পনিক।
পদ্ধতিঃ
সমমান রেখা মানচিত্র অঙ্কন সম্পূর্ণ নির্ভর করে অঙ্কনে হাতের অভিজ্ঞতার ওপর। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই রেখার অঙ্কন
যথাযথ হয়। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের গাণিতিক উপস্থাপন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় না। একই উপাত্তসম্পন্ন স্থানগুলোকে
একটি লাইনের মাধ্যমে যুক্ত করে সমমান রেখা অঙ্কন করা হয়। চিত্র ঃসমমান রেখার বৈশিষ্ট্য (ঈযধৎধপঃবৎরংঃরপং ড়ভ ওংড়ঢ়ষবঃয) ঃ
১. সমমান রেখা অঙ্কনের জন্য সঠিক তথ্য বা উপাত্ত প্রয়োজন।
২. নির্ভূল মানচিত্র স্কেলের উপর নির্ভর করে সমমান রেখা নির্ধারিত ব্যবধানে আঁকা হয়।
৩. এই সমমান রেখা আঁকার জন্য যথার্থ নির্ভূল তথ্য থাকা প্রয়োজন।
৪. শূন্যমান বিশিষ্ট সমতল বা “ডেটাম” রেখা থেকে এরূপ রেখাগুলো গণনা করা হয়।
৫. সমমান রেখাগুলো কাছাকাছি হলে বিভিন্নতা বেশি এবং দূরে দূরে হলে বিভিন্নতা কম হয়।
৬. অনুপাত বা শতকরা মানচিত্রেও সমমানরেখা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
৭. এরূপ মানচিত্রে প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক সীমারেখার ভূমিকা থাকে না।
সুবিধা-অসুবিধা
সুবিধাঃ
১. মানচিত্রে সমরেখ পদ্ধতি প্রদর্শন খুবই সহজ। এটি অঙ্কনে কোন জটিলতা দেখা দেয় না।
২. সমরেখা দ্বারা সমমানের স্থানগুলো সহজেই বোধগম্য হয়।
৩. সুন্দর ও নির্ভূলরূপে এতে মানের ব্যবধানের বৈশিষ্ট্য বুঝা যায়। যেমন- ঘন ঘন রেখা হলে বিভিন্নতা বেশি এবং দূরে
দূরে হলে বিভিন্নতা কম হয়।
৪. সাধারণত আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত তথ্যই এই পদ্ধতিতে বেশী দেখান হয়।
সমাধান-১
আজকের পাঠে আমরা বাংলাদেশের মানচিত্রে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের সমবর্ষণ রেখা অঙ্কন করব।
অঙ্কন পদ্ধতি ঃ বাংলাদেশের মানচিত্রের ওপর প্রত্যেক বৃষ্টিপাত পরিমাণ কেন্দ্রের নির্দিষ্ট অবস্থানে ঐ সব স্থানের গড়
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ লিখতে হবে। অতঃপর ১০ ইঞ্চি ব্যবধানে ৬০, ৭০, ৮০, ৯০, ১০০ ইঞ্চি প্রভৃতি সমবৃষ্টিপাত বিশিষ্ট
রেখাগুলো অঙ্কন করতে হবে। সমোন্নতি রেখা অঙ্কনের পদ্ধতির অনুরূপ নিয়ম অবলম্বন করে এ রেখাগুলো অঙ্কন করা
হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, ৬৭.৯ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত বিশিষ্ট সিরাজগঞ্জ এবং ৭৫.১ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত বিশিষ্ট কাপাসিয়ার
মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে ৭০ ইঞ্চি সমবর্ষণ রেখা অঙ্কন করতে হলে প্রথমে সিরাজগঞ্জ ও কাপাসিয়ার প্রকৃত অবস্থান স্থলদ্বয়কে
একটি হালকা পেন্সিলের সরল রেখা (যা পরে মুছে ফেলা হবে) যোগ করতে হবে। এরপর ঐ রেখাকে ৭.২ ইঞ্চি ভাগে
(৭৫.১ - ৬৭.৯ ইঞ্চি = ৭.২ ইঞ্চি) ভাগ করতে হবে; ফলে ৭০ ইঞ্চি রেখাটির স্থান কোথায় হওয়া উচিত তা সহজেই
বোঝা যাবে। এরূপে ১০ ইঞ্চি ব্যবধানে সব কয়টি সমবর্ষণ রেখা অঙ্কন করতে হবে। মানচিত্রে ১২০ ইঞ্চি সমবর্ষণ রেখার
উর্দ্ধে ব্যবধান ১০ ইঞ্চি রাখা হলে পরবর্তী রেখাগুলো প্রায় গায়ে গায়ে লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সিলেট ও
ময়মনসিংহ জেলার উত্তর অংশে ১১০ ইঞ্চি সমবর্ষণ রেখা ২০০ ইঞ্চি সমবর্ষণ রেখার মধ্যবর্তী অন্যান্য রেখাগুলোর
ব্যবধান ২০ ইঞ্চি ধরা হয়েছে।
এ মানচিত্রে সমমান বিশিষ্ট রেখাগুলো দেখে এক দিকে যেমন এ দেশের প্রচুর বৃষ্টিপাত বিশিষ্ট অঞ্চল সনাক্ত করা যাচ্ছে
অন্যদিকে তেমনই স্বল্প বৃষ্টিপাত বিশিষ্ট অঞ্চল চিহ্নিত করা যাচ্ছে। এখানে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যে, বাংলাদেশে সবচেয়ে
কম বৃষ্টিপাত রাজশাহী ও মেহেরপুর অঞ্চলে এবং সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত সিলেটের লালখান অঞ্চলে ও চট্টগ্রাম, পার্বত্য
চট্টগ্রামের দক্ষিণে অনুষ্ঠিত হয়। মানচিত্রকে কতিপয় স্পষ্ট অঞ্চলে বিভক্ত করে বলে ভূগোলের শিক্ষার্থীদের কাছে ঐ
রেখাগুলোর গুরুত্ব প্রচুর। শিক্ষার্থীরা এ অঞ্চলগুলোতে জনসংখ্যার বন্টন ও ঘনত্বের ওপর বৃষ্টিপাত, উষ্ণতা ও উচ্চতার
প্রভাব পর্যালোচনা করতে পারে, কারণ এই ধরনের মানচিত্রে মানুষ ও তার পরিবেশের মধ্যে সমন্বয় স্পষ্টভাবে বোঝা
যায়। সুতরাং ভূগোলের আঞ্চলিকতার ধারণার সাথে সমমান রেখাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে। এরূপ মানচিত্রে মাত্রিক বন্টন
বেশি গুরুত্বপূর্ণ, অঞ্চল গৌণ এবং মাত্রা বা পরিমাপ দ্বারা এরূপ অঞ্চল নির্ধারিত হয়। অনুরূপ পদ্ধতিতে সমচাপরেখা,
সমতাপরেখা মানচিত্র অঙ্কন করা যায়। অনেক সময় ঋতু ভিত্তিক সমতাপ রেখা, সমচাপ রেখা বা সমবর্ষণ রেখার মানচিত্র
অঙ্কনের প্রয়োজন হয়।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ