পূর্ববর্তী পাঠ হতে আমরা জেনেছি যে, সমগ্র পৃথিবী বা এর অংশ বিশেষের আকার, আয়তন ও পরিবেশের বিভিন্ন তথ্য যে
সমতলে (সাধারণত কাগজে) প্রকাশ করা হয় তাকে মানচিত্র বলে। পৃথিবী বা এর কোন অংশের মানচিত্র অবিকল আকারে
আঁকতে হলে বিশাল আকারের কাগজ প্রয়োজন হবে যা যোগাড় করা ও ব্যবহার করা এক প্রকার অসম্ভব। ফলে মানচিত্র
অংকনের সময় বাস্তব পৃথিবী বা এর অংশ বিশেষকে একটি নির্দিষ্ট হার বা অনুপাতে ছোট করে আঁকা হয়। অর্থাৎ ভূমিতে
দু’টি স্থানের মধ্যেকার প্রকৃত দূরত্বের চেয়ে মানচিত্রে প্রদর্শিত ঐ দু’টি স্থানের দূরত্ব একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে কম।
মানচিত্রভেদে ভূমির দূরত্ব ও মানচিত্রের দূরত্বের এই অনুপাত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।
স্কেলের সংজ্ঞা
সাধারণ আভিধানিক অর্থে স্কেল বা মাপনি মানে হচ্ছে- মানদন্ড, অর্থাৎ যা দ্বারা পরিমাপ করা হয়। কিন্তু ভূগোলে স্কেলের
মাধ্যমে মানচিত্রের দূরত্ব এবং ভূমির প্রকৃত দূরত্বের মধ্যবর্তী অনুপাতকে বোঝায়। স্কেল মানচিত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য
অংশ। স্কেল ছাড়া অংকিত ভূপৃষ্ঠের কোন অংশকে নকশা বলা হয়। মানচিত্রের দু’টি স্থানের দূরত্ব এবং ভূমিতে তাদের
মধ্যেকার প্রকৃত দূরত্বের সম্পর্ক বা অনুপাতকে স্কেল বলে। অন্যভাবে বলা যায় মানচিত্রে ভূ-পৃষ্ঠের বিষয়াদিসমূহ যে
অনুপাতে কমানো হয় তাকে মানচিত্রের স্কেল বলে। উদাহরণ দেয়া যাক, কোন মানচিত্রে যদি দু’টি থানার দূরত্ব ২″ (দুই
ইঞ্চি) এবং ভূমিতে ঐ দু’টি থানার মধ্যে প্রকৃত দূরত্ব ২০ মাইল হয় তাহলে ঐ মানচিত্রের স্কেল হচ্ছে-
২″ তে ২০ মাইল
বা, ১″ তে ১০ মাইল .............................. (১)
বা,
৬৩৩৬০০
১
১০ ৬৩৩৬০
১
=
দ্ধ
[এক মাইলে ৬৩৩৬০ ইঞ্চি]
বা, ১ : ৬৩৩৬০০ হবে। ............................ (২)
এখানে সম্পর্ক (১) অনুযায়ী ১″ তে ১০ মাইল এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে, মানচিত্রে দু’টি স্থান যদি এক ইঞ্চি দূরত্বে
অবস্থান করে তবে ভূমিতে তাদের মধ্যে প্রকৃত দূরত্ব বা ব্যবধান হবে ১০ মাইল। অনুরূপ ভাবে সম্পর্ক (২) এর মাধ্যমে
বোঝা যায় যে, মানচিত্রে দূরত্ব ১″ হলে ভূমিতে দূরত্ব হবে ৬৩৩৬০০″ বা মানচিত্রে দূরত্ব ১ সে.মি হলে ভূমিতে দূরত্ব হবে
৬৩৩৬০০ সে.মি।
উপরোক্ত স্কেল বা অনুপাত ছাড়াও মানচিত্রে বিভিন্ন ধরনের চিত্র এবং রেখাচিত্রের মাধ্যমে তথ্যের পরিমান প্রকাশ করা
হয়। বিভিন্ন প্রকারের উপাত্ত ও উচ্চতা এই পর্যায়ে পড়ে। এধরনের উপাত্ত প্রদর্শনের ক্ষেত্রেও স্কেল/অনুপাত নেয়া হয়।
এদের যথাক্রমে মাত্রা স্কেল এবং উচ্চতামাপক স্কেল (ঠবৎঃরপধষ ঝপধষব) বলে।
স্কেলের প্রয়োজনীয়তা
ভূগোল পঠন-পাঠনে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্কেলের প্রয়োজন হয়। মানচিত্রের সাথে যে স্কেল দেয়া থাকে তার সাহায্যে
আমরা ঐ মানচিত্রের দু’টি স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ণয় করতে পারি। নকশা বা মানচিত্র তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিতে অবস্থিত
ভৌগোলিক উপাদানসমূহকে সঠিক অনুপাতে প্রকাশ করতে হয়। যে কারণে কাগজের উপর বৃহৎ এলাকা বা সমগ্র পৃথিবীর
মানচিত্র অংকনের জন্য স্কেলের দরকার হয়। অনেক সময় বিদ্যমান মানচিত্রকে একটি নির্দিষ্ট পরিমানে বা অনুপাতে ছোট
অথবা বড় করে অংকন করতে হয়। এক্ষেত্রে মানচিত্রকে ছোট বা বড় আকারে পুনরায় অংকন করার জন্য স্কেলের সাহায্য
নেয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের ভৌগোলিক জরিপ কাজে স্কেলের ব্যবহার অপরিহার্য। তাছাড়া মানচিত্রের আয়তন বা ক্ষেত্রফল
পরিমাপের জন্যও স্কেলের প্রয়োজন হয়।
মানচিত্রে স্কেল প্রদর্শনের পদ্ধতি
স্কেলকে মানচিত্রে বা নকশায় তিনটি উপায়ে প্রদর্শন বা নির্দেশ করা যায়। এগুলো হচ্ছে১। বর্ণনার মাধ্যমে (ইু ঝঃধঃবসবহঃ)ঃ কোন কোন মানচিত্রে বা নকশায়
স্কেলকে একই দৈর্ঘ্য পরিমাপ পদ্ধতির ক্ষুদ্র ও বৃহৎ এককের সমন্নয়ে বর্ণনার
মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এক্ষেত্রে ভূমির দূরত্বকে বৃহৎ একক (মাইল,
কিলোমিটার) এবং মানচিত্রের দূরত্বকে ক্ষুদ্র একক (ইঞ্চি, সেন্টিমিটার)
হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন- ‘১″ তে ৩০ মাইল’, ‘১ সেন্টিমিটারে ১৫
কিলোমিটার’ বা ‘১০ মাইলকে ১″ তে’, ‘৫ কিলোমিটারকে ১ সেন্টিমিটারে’।
চিত্র ২.১.১ এ বর্ণনার মাধ্যমে মানচিত্রে স্কেলের প্রকাশ পদ্ধতি দেখানো
হয়েছে।
সুবিধাঃ এটি স্কেল প্রকাশের সর্বাপেক্ষা সহজ পদ্ধতি, কারণ এর সাহায্যে
সরাসরি দূরত্ব বর্ণনা করা হয় ফলে দ্রæত দূরত্ব পরিমাপ করা যায়।
অসুবিধাঃ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের দূরত্ব পরিমাপক পদ্ধতি প্রচলিত থাকায়
দেশভেদে বর্ণনার ব্যতিক্রম করতে হয়; তা নাহলে সাধারণ মানুষের জন্য এই ধরনের স্কেল অনুধাবন কষ্টকর হয়ে ওঠে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রুশ দূরত্ব পরিমাপক এককে ১ ম্যাগেনিয়ামে ৫০০ ভার্টস বর্ণিত মানচিত্রের প্রকৃত দূরত্ব
ইংরেজ বা বাংলাদেশীদের জন্য বোধগম্য নয়। তাছাড়া মূল মানচিত্রকে ছোট বা বড় করলে এই ধরণের বর্ণনা করা স্কেল
নতুন মানচিত্রের জন্য অকেজো হয়ে যায়।
২। রেখাচিত্র অংকনের মাধ্যমে (ইু খরহব উৎধরিহম) ঃ রেখাচিত্র
অংকনের মাধ্যমে বর্ণনাকৃত স্কেলকে মানচিত্রে বা নকশায় প্রকাশ করা
যায়। এই পদ্ধতিতে “১ সেন্টিমিটারে ১০ কি.মি” বা “১″ তে ২০
মাইল”- এ ধরনের বর্ণনাকে রেখা টেনে স্কেল অংকনের মাধ্যমে
দেখানো হয়। “১ সেন্টিমিটারে ১০ কি.মি” বর্ণনায় মানচিত্রের দুটি
স্থানের দূরত্ব যদি ১ সে.মি হয় তা হলে ভূমিতে প্রকৃত দূরত্ব ১০
কি.মি। সুতরাং ৩ সে.মি লম্বা একটি রেখা টেনে ৩০ কি.মি দূরত্ব
দেখান যায়। তারপর এ রেখাকে সমান তিন ভাগ করলে প্রত্যেক
ভাগের মান হবে ১০ কি.মি করে। অপেক্ষাকৃত স্বল্প দূরত্ব বুঝাবার
জন্য বাম দিকের প্রথম ঘরটিকে আবার দুই ভাগে ভাগ করলে প্রতি
ছোট ভাগ ৫ কি.মি করে বোঝাবে। চিত্র ২.১.২ এ রেখাচিত্রের
মাধ্যমে মানচিত্রে স্কেলের প্রকাশ পদ্ধতি দেখানো হয়েছে।
সুবিধাঃ মানচিত্রে দু’টি স্থানের দূরত্ব এই স্কেলের মাধ্যমে সহজে
বুঝতে পারা যায়। রেখাচিত্র অংকিত স্কেলের মানচিত্রকে ফটোগ্রাফ বা আলোকচিত্রের মাধ্যমে ছোট বা বড় করলে
রেখাচিত্রটিও সেই অনুযায়ী ছোট বা বড় হয়। ফলে সঠিকভাবে মাপ নির্দেশ করা যায়।
অসুবিধাঃ এই ধরনের স্কেল প্রকাশ পদ্ধতিতেও নির্দিষ্ট এককের ব্যবহার করা হয়। বিধায়, ভিন্ন এককে অভ্যস্তদের জন্য
এটি ব্যবহার অনুপযোগী।
চিত্র ২.১.১: বর্ণনার মাধ্যমে স্কেল প্রকাশ
চিত্র ২.১.২: রেখাচিত্রের মাধ্যমে স্কেল প্রকাশ
৩। প্রতিভূ অনুপাতের মাধ্যমে
প্রতিভূ অনুপাত হচ্ছে একটি সংখ্যাসূচক ভগ্নাংশ যার
প্রথম অংশ বা লব কে দ্বিতীয় অংশ হর
এর প্রতিভূ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। লবের মান
সব সময় ধ্রবক সংখ্যা ‘১’ হয় এবং হরের মান হয়
একটি পরিবর্তনশীল বৃহৎ সংখ্যা। লব মানচিত্রের
দূরত্ব এবং হর ভূমির দূরত্বকে প্রকাশ করে। এক কথায় বলা যায়,
‘ভূপৃষ্ঠের দুইটি স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্ব এবং মানচিত্রে ঐ দুইটি
স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্বকে ১ সংখ্যার লব বিশিষ্ট যে ভগ্নাংশের
মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে প্রতিভূ অনুপাত বলে’। চিত্র ২.১.৩
এ প্রতিভূ অনুপাতের মাধ্যমে মানচিত্রে স্কেলের প্রকাশ পদ্ধতি
দেখানো হয়েছে।
লব এবং হর এর উভয় সংখ্যার মধ্যে আনুপাতিক চিহ্ন ‘ঃ’
ব্যবহার করে একে অনুপাতের মাধ্যমে দেখানো হয়। প্রতিভূ অনুপাতকে সংক্ষেপে ‘প্র.অ’ বা ইংরেজীতে জ.ঋ
লিখা হয়। সুতরাংপ্র.অ বা জ.ঋ =
মানচিত্রের দূরত্ব (লব এর ‘১’ সংখ্যাটি মানচিত্রের দূরত্ব বুঝায়)
ভূপৃষ্ঠের দূরত্ব (হর এর সংখ্যাগুলো ভূমির প্রকৃত দূরত্ব বুঝায়)
ধরা যাক, দু’টি স্থানের দূরত্ব মানচিত্রে ২ ইঞ্চি এবং ভূমিতে ১০ মাইল। এক্ষেত্রে -
প্র.অ বা জ.ঋ =
২ ইঞ্চি (মানচিত্রের দূরত্ব)
১০ মাইল (ভূপৃষ্ঠের দূরত্ব)
=
২ ইঞ্চি
১০দ্ধ১৭৬০দ্ধ৩দ্ধ১২ ইঞ্চি
=
১ ইঞ্চি
৩,১৬,৮০০ ইঞ্চি
=
১ (এখানে পরিমাপের একক অনুপস্থিত)
৩,১৬,৮০০
সুতরাং, প্র.অ বা জ.ঋ = ১ ঃ ৩,১৬,৮০০।
উপরের উদাহরণে ১ একক ৩,১৬,৮০০ এর প্রতিভূ। এ ধরনের প্রতিভূ অনুপাতে মাইল, গজ, ফুট, ইঞ্চি, কিলোমিটার,
সেন্টিমিটার বা ম্যাগেনিয়াম প্রভৃতি কোন নির্দিষ্ট একক থাকে না। লব অংশের একক হর অংশের সমজাতীয় রাশির প্রতিভূ
হওয়ায় লবটি ১ ইঞ্চি হলে হর রাশিটি ৩,১৬,৮০০ ইঞ্চি, লবটি ১ সে.মি হলে হর রাশিটি ৩,১৬,৮০০ সে.মি হবে।
এককের সার্বজনীনতার কারণে বর্তমানে অধিকাংশ মানচিত্রে প্রতিভূ অনুপাত ব্যবহৃত হয়।
সুবিধা ঃ প্রতিভূ অনুপাতকে পৃথিবীর যে কোন দেশে প্রচলিত এককে রূপান্তর করে ব্যবহার করা যায়। তা ছাড়া মানচিত্রের
গাণিতিক বিশ্লেষণে প্রতিভূ অনুপাত সবচেয়ে উপযোগী পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত।
অসুবিধাঃ মানচিত্রকে ফটোগ্রাফ বা আলোকচিত্রের মাধ্যমে ছোট বা বড় করলে প্রতিভূ অনুপাত সঠিক স্কেল প্রদান করে
না। এই কারণে অনেক সময় মানচিত্রে প্রতিভূ অনুপাতের সাথে রেখাচিত্র অংকিত স্কেল সন্নিবেশিত থাকে।
মানচিত্রে স্কেল প্রকাশের জন্য উপরে বর্ণিত তিনটি পদ্ধতি একে অন্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। যদি কোন একটি মাধ্যমে
প্রকাশিত মানচিত্রের স্কেল জানা যায় তাহলে অপর দু’টি পদ্ধতিতেও তা প্রকাশ করা সম্ভব। মানচিত্রে স্কেল প্রকাশের
সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে রেখাচিত্র অংকিত স্কেল। তবে মানচিত্রকে অধিক ব্যবহার উপযোগী করতে প্রতিভূ অনুপাতের
প্রয়োজন হয়। এ কারণে বর্ণনা পদ্ধতি হতে প্রতিভূ অনুপাত এবং প্রতিভূ অনুপাত হতে বর্ণনা পদ্ধতির স্কেল পরিবর্তনের
নিয়ম জানা দরকার।
চিত্র ২.১.৩: প্রতিভূ অনুপাতের মাধ্যমে স্কেল প্রকাশ
বর্ণনা পদ্ধতি হতে প্রতিভূ অনুপাত পদ্ধতিতে স্কেলের রূপান্তর ঃ
বর্ণনার মাধ্যমে প্রকাশিত স্কেল হতে প্রতিভূ অনুপাত (প্র.অ বা জ.ঋ.) বের করার জন্য একটি সূত্র ব্যবহার করা হয়। এটি
হচ্ছেপ্রতিভূ অনুপাত (জ.ঋ) =
মানচিত্রে দূরত্ব
ভূমির দূরত্ব
এখন কতকগুলো বর্ণনামূলক স্কেল হতে উপরের সূত্রের মাধ্যমে জ.ঋ. (প্র.অ) নির্ণয় করা হলঃ
উদাহরণ-১। মানচিত্রের স্কেল ৪″ তে ১ মাইল। একে প্রতিভূ অনুপাতে (জ.ঋ) প্রকাশ করুন।
উত্তরঃ এ অংকে মানচিত্রে দূরত্ব ৪″ এবং ভ‚মির দূরত্ব ১ মাইল বা ৬৩৩৬০″। (৬৩৩৬০″ তে ১ মাইল)
প্রতিভূ অনুপাত পদ্ধতি হতে বর্ণনা পদ্ধতিতে স্কেলের রূপান্তর ঃ
প্রতিভূ অনুপাত থেকে বর্ণনায় রূপান্তরের জন্য লব কে সংশ্লিষ্ট পরিমাপ পদ্ধতির ক্ষুদ্র একক ধরতে হবে (যেমন ইঞ্চি বা
সে.মি)। তারপর হর রাশিটিকে ঐ একই পরিমাপ পদ্ধতিতে সম্ভাব্য বৃহৎ এককে (যেমন গজ, মাইল বা মিটার,
কিলোমিটার) প্রকাশ করতে হবে।
উদাহরণ-৪। একটি মানচিত্রের প্রতিভূ অনুপাত (জ.ঋ) ১ ঃ ৫,০৬,৮৮০। এটিকে বর্ণনার মাধ্যমে প্রকাশ করুন।
উত্তর: বৃটিশ পরিমাপ পদ্ধতিতে উপরের প্রতিভূ অনুপাতের লব কে ১ ইঞ্চি ধরলে হর এর মান ৫,০৬,৮৮০ ইঞ্চি।
অর্থাৎ, মানচিত্রে দূরত্ব ১″ হলে ভূমিতে দূরত্ব ৫,০৬,৮৮০″;
অথবা, মানচিত্রে দূরত্ব ১″ হলে ভূমিতে দূরত্ব
৬৩ ৩৬০
৫ ০৬ ৮৮০
,
, ,
মাইল ; (৬৩৩৬০″ তে ১ মাইল)
= ৮ মাইল।
∴ নির্ণেয় বর্ণনামূলক স্কেল হচ্ছে ‘১″ তে ৮ মাইল’।
উদাহরণ-৫। একটি মানচিত্রের প্রতিভূ অনুপাত (জ.ঋ) ১ ঃ ৫০,০০০। এটিকে বর্ণনার মাধ্যমে প্রকাশ কর।
উত্তর: মেট্রিক পরিমাপ পদ্ধতিতে উপরের প্রতিভূ অনুপাতের লব কে ১ সে.মি ধরলে হর এর মান ৫০,০০০ সে.মি।
অর্থাৎ, মানচিত্রে দূরত্ব ১ সে.মি হলে ভূমিতে দূরত্ব ৫০,০০০ সে.মি;
অথবা, মানচিত্রে দূরত্ব ১ সে.মি হলে ভূমিতে দূরত্ব
২
১
১ ০০ ০০০
৫০ ০০০
=
, ,
,
কিলোমিটার ; (১,০০,০০০ সে.মি তে ১ কি.মি)
অথবা, মানচিত্রে দূরত্ব ২ সে.মি হলে ভূমিতে দূরত্ব ১ কিলোমিটার ;
∴ নির্ণেয় বর্ণনামূলক স্কেল হচ্ছে ‘২ সেন্টিমিটারে ১ কিলোমিটার’।
পাঠ সংক্ষেপ
মানচিত্রের দু’টি স্থানের দূরত্ব এবং ভূমিতে তাদের মধ্যেকার প্রকৃত দূরত্বের সম্পর্ক বা অনুপাতকে স্কেল বলে। মানচিত্রের
সাথে যে স্কেল দেয়া থাকে তার সাহায্যে ঐ মানচিত্রের দু’টি স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ণয় করা যায়। স্কেলকে মানচিত্রে বা
নকশায় তিনটি উপায়ে প্রদর্শন বা নির্দেশ করা যায়। এগুলো হচ্ছে- বর্ণনার মাধ্যমে, রেখাচিত্র অংকনের মাধ্যমে এবং
প্রতিভূ অনুপাতের মাধ্যমে। ভূপৃষ্ঠের দুইটি স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্ব এবং মানচিত্রে ঐ দুইটি স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্বকে ১
সংখ্যার লব বিশিষ্ট যে ভগ্নাংশের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে প্রতিভূ অনুপাত বলে। প্রতিটি পদ্ধতির কিছু সুবিধা
অসুবিধা রয়েছে। যে কারণে, মানচিত্রের স্কেলকে একইসাথে সহজবোধ্য ও সার্বজনীন করতে প্রতিভূ অনুপাতের সাথে
রেখাচিত্র অংকিত স্কেল সন্নিবেশিত করা হয়।
১. শূন্যস্থান পূরণ করুন ঃ
১.১. স্কেল মানচিত্রের একটি .............. অংশ।
১.২. মানচিত্রের আয়তন বা ক্ষেত্রফল পরিমাপের জন্যও ........... প্রয়োজন হয়।
১.৩. প্রতিভূ অনুপাত হচ্ছে একটি ................ ভগ্নাংশ ।
১.৪. অনেক সময় মানচিত্রে প্রতিভূ অনুপাতের সাথে ................. সন্নিবেশিত থাকে।
১.৫. .......... মাইল, গজ, ফুট, ইঞ্চি, কিলোমিটার, সেন্টিমিটার বা ম্যাগনিয়াম প্রভৃতি কোন নির্দিষ্ট একক থাকে না।
২. সত্য হলে ‘স’ মিথ্যা হলে ‘মি’ লিখুন ঃ
২.১. মানচিত্র অঙ্কনের সময় বাস্তব পৃথিবী বা এর অংশ বিশেষকে প্রকৃত আকারে ও আকৃতিতে আঁকা হয়।
২.২. ভৌগোলিক জরিপ কাজে স্কেলের ব্যবহার অপরিহার্য।
২.৩. ১ঃ ৬৩৩৬০ দ্বারা বুঝায়, মানচিত্রে দূরত্ব ১″ হলে ভূমিতে দূরত্ব হবে ৬৩৩৬০০ সে.মি।
২.৪. প্রতিভূ অনুপাতে লবের মান সব সময় ধ্রবক (ঈড়হংঃধহঃ) সংখ্যা ‘১’ হয়।
২.৫. প্রতিভূ অনুপাতকে পৃথিবীর যে কোন দেশে প্রচলিত এককে রূপান্তর করে ব্যবহার করা যায়।
৩. সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) দিন ঃ
৩.১. মানচিত্রে ভূ-পৃষ্ঠের বিষয়াদিসমূহ যে অনুপাতে কমানো হয় তাকে বলা হয়-
(ক) প্রতিভূ অনুপাত (খ) মানচিত্রের স্কেল
(গ) বর্ণনামূলক স্কেল (ঘ) সরল স্কেল
৩.২. রাশিয়ায় ব্যবহৃত দূরত্ব পরিমাপক একক কোনটি ?
(ক) ম্যাগেনিয়াম (খ) ভার্টস
(গ) ‘ক’ ও ‘খ’ উভয়েই সঠিক (ঘ) ‘ক’ ও ‘খ’ উভয়েই ভুল
৩.৩. কোন পদ্ধতিতে প্রকাশিত স্কেলের মানচিত্রকে ফটোগ্রাফ বা আলোকচিত্রের মাধ্যমে ছোট বা বড় করলেও
সঠিকভাবে মাপ নির্দেশ করা যায় ?
(ক) বর্ণনার মাধ্যমে প্রকাশিত স্কেল (খ) রেখাচিত্র অংকিত স্কেল
(গ) প্রতিভূ অনুপাত (ঘ) কোনটিই সঠিক নয়।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. স্কেলের প্রয়োজনীয়তা কি ?
২. দু’টি স্থানের ভূমির প্রকৃত দূরত্ব ৩ মাইল এবং মানচিত্রের দূরত্ব ২ ইঞ্চি হলে প্রতিভূ অনুপাত কত?
৩. দু’টি স্থানের মানচিত্র দূরত্ব ৪ সে.মি এবং ভূমির প্রকৃত দূরত্ব ১ কিলোমিটার হলে প্রতিভূ অনুপাত কত?
৪. প্রতিভূ অনুপাত ১ ঃ ৮,০০,০০০ হলে বর্ণনামূলক স্কেল নির্ণয় করুন।
৫. প্রতিভূ অনুপাত ১ ঃ ৭২ হলে বর্ণনামূলক স্কেল নির্ণয় করুন।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. স্কেল কাকে বলে ? মানচিত্রে স্কেল প্রকাশের পদ্ধতিসমূহ আলোচনা করুন।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ