পরিবেশের অর্থ, প্রকৃতি ও তাৎপর্য আলোচনা করুন।
পরিবেশ বলতে কি বুঝায়?
জৈব ও অজৈব পরিবেশে পার্থক্য কি?

ভ‚গোলের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক সম্বন্ধে।
ভ‚গোল চর্চা দুটো মূল ধারায় বিভক্ত: প্রাকৃতিক ও মানবিক ভ‚গোল। যে সব ভ‚গোলবিদ প্রাকৃতিক
ভ‚গোল চর্চা করেন তাদের মূখ্য বিষয় প্রাকৃতিক বিষয়াদি। যেমনÑ শিলা, ভ‚মিরূপ, নদ-নদী,
জলবায়ু, মৃত্তিকা ইত্যাদি। আবার, মানবিক ভ‚গোলবিদগণ মানুষ ও তার কর্মকান্ড সংক্রান্ত বিষয়ে
কাজ করেন। প্রাকৃতিক কিংবা মানবিক ভ‚গোল এ উভয় শাখায়ই ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে; ফলে
উভয় ক্ষেত্রেই বহু উপবিভাগ গড়ে উঠেছে। নিচের ছবিতে (চিত্র-১.৩.১) আধুনিক ভুগোলের
উপবিভাগসমূহ ও এদের সমগোত্রীয় বিষয়সমূহ দেখানো হয়েছে। ছবিতে লক্ষ্যণীয় যে, ভ‚গোলের
প্রতিটি উপভাগ (যেমনÑ প্রাকৃতিক ভ‚গোল, অর্থনৈতিক ভ‚গোল, আচরণগত ভ‚গোল) এর
সমগোত্রীয় বিষয়ের সাথে নিবীড়ভাবে সংযুক্ত। যেমন, প্রাকৃতিক ভ‚গোল, ভ‚-তত্ত¡, আবহাওয়া বিদ্যা
এবং জীববিদ্যার সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত। আবার আচরণগত ভ‚গোল নৃতত্ত¡বিদ্যা এবং রাজনৈতিক
ভ‚গোল রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত।
চিত্র ১.৩.১ : আধুনিক ভ‚গোলের উপবিভাগসমূহ ও এদের সমগোত্রীয় বিষয়সমূহ।
ভ‚গোলের দুটি
ধারা-প্রাকৃতিক ও
মানবিক।

উচ্চতর পর্যায়ে ভ‚গোলের এ উপভাগ সত্তে¡ও এ বিষয়ের মূল বক্তব্য নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়ে
গেছে, বিশেষত স্কুল থেকে কলেজ পর্যায়ে। ভ‚গোলের এই পরিচয়গত অস্পষ্টতা দূরীকরণে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রে '৭০ এর দশকে ভ‚গোল বিষয়ক উপদেষ্টা প্যানেলকে নি¤œলিখিত বিষয়গুলোর উপর
রির্পোট করতে বলা হয়।
ক. ভ‚গোল এর প্রকৃতি কি? অন্যান্য সমাজ বিজ্ঞান,
প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিষয়ের সাথে এর সম্পর্ক কি?
খ. বিষয়টির সামাজিক মূল্য ও লক্ষ্য কি?
উপর্যুক্ত বিষয়ের উপর উপদেষ্টাগণ প্রথমেই ভ‚গোলের পরিধি কি তা চিহ্নিত করেন। ভ‚গোলের
পরিধি ব্যাখ্যায় তারা নি¤œলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করেন।
ক. ভ‚গোল পাঠের প্রয়োজনীয়তা কি?
ভ‚গোলের প্রধান আলোচ্য বিষয় স্থানিক বিন্যাস (অৎবধষ ধৎৎধহমবসবহঃ)। এর প্রধান কার্যক্ষেত্র ভ‚-
পৃষ্ঠের উপরিভাগ এবং লক্ষ প্রাকৃতিক-সাংস্কৃতিক বিষয়সমূহের বন্টনগত তারতম্যের বিন্যাস, এর
সাথে যুক্ত নিয়ামকসমূহ চিহ্নিত করে এগুলোর প্রভাব ব্যাখ্যা করা এবং তাদের আন্ত:সম্পর্ক তুলে
ধরা। ভৌগোলিক জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রপঞ্চের (চযবহড়সবহধ) আপাত: বিশৃ´খল
বিন্যাসের মধ্যে একটি শৃ´খল বিন্যাস প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করে। ভ‚গোল বিবিধের মধ্যে ঐক্য
(টহরঃু রহ উরাবৎংরঃু) খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
বিবিধের মধ্যে ঐক্য কি?
খ. ভ‚গোলবিদের ব্যবহৃত ব্যাখ্যদান পদ্ধতিতে অন্যদের সাথে তফাত কোথায়?
ভ‚গোলবিদগণ তথ্য আহরণ ও ব্যাখ্যাদানে তিন ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করেন। যথা: উৎপত্তিগত
বা ঐতিহাসিক, কর্মভিত্তিক এবং অবরোহী পদ্ধতি।
১. উৎপত্তিগত বা ঐতিহাসিক পদ্ধতিতে কোন বস্তু বা বিষয় সূত্রপাত এবং এর বিকাশ লাভের
ক্রমধারা জানার চেষ্টা করা হয়। যেমন, বাংলাদেশের হাওড় এলাকায় গমের পরিবর্তে কেন বোরো
ধানের চাষ করা হয় বা সিলেটের টিলাগুলোতে ইক্ষুচাষের পরিবর্তে কেন চা গাছ লাগানো হয়।
আবার, চট্টগ্রাম ও মঙ্গলায় কেন সমুদ্রবন্দর বা নারায়নগঞ্জে কেন নদী বন্দর ও পাট শিল্প কারখানা
গড়ে উঠেছে।
২. কর্মভিত্তিক পদ্ধতির মাধ্যমে কোন বিষয় কিভাবে কাজ করে, এর অংশ বিশেষসমূহ কি কি এবং
আলাদা আলাদা এবং সার্বিকভাবে এইগুলোর কাজ কি তা জানার চেষ্টা করে থাকে। যেমন,
কার্যভিত্তিক পদ্ধতির মাধ্যমে একটি শহরকে শিল্প এলাকা, বসতি এলাকা, প্রশাসনিক এলাকা ও
শিক্ষা-সাংস্কৃতিক এলাকায় ভাগ করা যায়। একটি নগরের কাজ তার পার্শ্ববর্তী বা পশ্চাৎদ ভ‚মির
গ্রামীণ অধিবাসীদের সেবা প্রদান করা। একটি নদীর কাজ তার তীরবর্তী এলাকায় গড়ে ওঠা
নগর/গ্রামীণ বসতির মালামাল পরিবহনে সহায়তাদান, প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করা এবং
বিনোদনের ক্ষেত্র হিসাবে ব্যবহার।
৩. অবরোহী পদ্ধতিতে পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন বিষয়ের বন্টনে একটি বিধিবদ্ধ নিয়ম/ধারা খুঁজে পেতে
সাহায্য করে। যেমন, ভ‚মিরূপের গাণিতিক বিশ্লেষণে দেখা যায় যে নিষ্কাশন ঘনত্ব: ভ‚মি গঠন,
ভ‚মির বন্ধুরতা, উচ্চতা, ভ‚-আচ্ছাদন ইত্যাদি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
স্থানিক বিণ্যাস,
প্রপঞ্চ, বিবিধের
মধ্যে ঐক্য।
তথ্য আহরণ ও
ব্যাখ্যাদান।

ভৌগোলিক তথ্য আহরণে কি কি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়?
গ. ভ‚গোলবিদগণ কি জানতে চান?
১. ভ‚গোলে স্থান - আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য জানার চেষ্টা করা হয় ঃ
১.১ কি, কোথায় তার বর্ণনা দেয় - একটি স্থানের অতীতসহ বর্তমানের বিশদ/সামগ্রিক বিষয়াদি
এর অন্তভর্‚ক্ত।
১.২ ঐ স্থানের বিশেষত্ব, উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যাবলী কি এবং ব্যাতিক্রমী বিষয়গুলো তুলে ধরে।
ভ‚গোলে ঐ স্থানের বিষয়ভিত্তিক বন্টন, সংযুক্ততা ও বিভিন্ন সহযোগী অংশবিশেষ এর আন্ত:সম্পর্ক
বিশ্লেষনের মাধ্যমে স্থানের বিশেষত্বর কারণ উদঘাটনে সচেষ্ট হয়।
১.৩ ঐ স্থানের সমবৈশিষ্ট্য সম্পন্ন এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে এইগুলোকে পৃথক পৃথক অঞ্চলে
ভাগ করার চেষ্টা করে। যেমন:
● ভ‚-রাজনৈতিক অঞ্চল ● নগর অঞ্চল
● জলবায়ুঅঞ্চল ● কৃষি অঞ্চল
● ভ‚-প্রাকৃতিক অঞ্চল ● উদ্ভিজ্জ অঞ্চল
২. ভ‚গোলে বিষয়ভিত্তিক জানার চেষ্টা করা হয় ঃ
২.১ এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কিংবা মানবিক বিষয় হতে পারে, যদিও উভয় ক্ষেত্রই পরস্পরে সম্পর্কিত।
২.১.১ প্রাকৃতিক ক্ষেত্রে ভ‚গোলবিদগণ ভ‚মিরূপ, জলবায়ু, পানি, উদ্ভিদ, প্রাণী, মৃত্তিকা, শিলা ও
খনিজ ইত্যাদি বিষয়সমূহ বিবেচনা করে থাকেন।
২.১.২ মানবিক ক্ষেত্রেও বিশেষায়ন হয়েছে। এক্ষেত্রে মানুষের বন্টন এবং তাঁর সামাজিক,
সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও তাদের সংগঠনসমূহের ব্যাখ্যাদান করে থাকে।
এর আওতাভ‚ক্ত অর্থনীতিক ভ‚গোল, রাজনৈতিক ভ‚গোল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভ‚গোল, বসতি
ভ‚গোল, নগর ভ‚গোল ইত্যাদি।
২.২ প্রাকৃতিক বা মানবিক বিষয়সমূহ জানার ক্ষেত্রে ঐ স্থানের যে সব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় তা
নি¤œরূপ:
ক) এদের অবস্থান খ) স্থানিক বন্টন গ) প্রবাহ/বহমানতা, চলাচল, ব্যাপন এবং আন্ত: সম্পর্ক।
৩. ভ‚গোলে সময়ভিত্তিক কোন স্থান বা বিষয়ের পরিবর্তন ধারা এবং এ পরিবর্তনের প্রক্রিয়াসমূহ
জানার চেষ্টা করে যা ঐতিহাসিক ভ‚গোল হিসাবে বিবেচিত হয়।
৪. ভ‚গোলে কোন বিষয়ের স্থানিক বন্টনের বৈশিষ্ট্যাবলী, ধরন, ঘনত্ব, আকার, বিন্যাস সম্পর্কে
জানার চেষ্টা করে।
৫. ভ‚গোলবিদগণ মানুষ-ভ‚মির সম্পর্ক জানতে সচেষ্ট হয় যা মানব বাস্তুবিদ্যা নামে পরিচিত।
৬. ভ‚গোলে ভ‚-পৃষ্ঠের নানান বিষয়াদি কিভাবে মানচিত্র বা গেøাবে তুলে ধরা যায় তার চেষ্টা করে
থাকে, যা মানচিত্রাংকন বিদ্যা নামে পরিচিত। ভ‚গোলবিদগন বিভিন্ন কৌশল উদ্ভাবনের মাধ্যমে
স্থানিক বিষয়সমূহের গেøাব কিংবা মানচিত্রে নিভর্‚ল অবস্থান, বন্টন, গমন পথ ইত্যাদি প্রদর্শনের
বিভিন্ন কৌশল উদ্ভাবন করেছেন।
ভূগোলে স্থান,
বিষয়ভিত্তিক,
সময় ভিত্তিক,
স্থানিবন্টনের
বৈশিষ্ট্যাবলী,
মানুষ-ভূমির
সম্পর্কে,
মানচিত্রাঙ্কন
বিদ্যা,
সংখ্যাতাত্তি¡ক
পদ্ধতির
মানব বাস্তুবিদ্যা

মানচিত্র কি কাজে লাগে?
৭. ভ‚গোলবিদগণ স্থান বা অঞ্চল গবেষণায় বিভিন্ন ধরনের সংখ্যাভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার ও উন্নয়ন
সাধন করেছে, তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের শ্রেনী বিভাজন, আকাশ চিত্র, ভ‚-উপগ্রহ চিত্র, মডেল ব্যবহার
কৌশল অবলম্বন করেছেন। অতিসম্প্রতি, জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জি,আই,এস) নামক
কম্পিউটার ভিত্তিক কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে উপাত্ত সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ, সমন¦য় সাধন ও
ব্যবস্থাপনা এবং স্থান-সময়ভিত্তিক পরিবর্তন ধারা মানচিত্রায়নে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছেন।
ঘ. ভ‚গোলবিদগণ পৃথিবী সম্পর্কে কি ধরনের জ্ঞান দ্বারা সমৃদ্ধ করে থাকেন?
১. তাঁরা যে ক্ষেত্রে জ্ঞান ও ধারণা যোগাতে সাহায্য করে;
ক্স ভ‚-পৃষ্ঠের আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যাবলী,
ক্স ভ‚-পৃষ্ঠের বিভিন্ন বিষয়ের স্থানিক দিক,
ক্স বন্টন বৈশিষ্ট্যাবলী।
২. ভ‚গোলবিদগণ মানচিত্র অংকন, সংখ্যাতাত্তি¡ক, শ্রেণী বিভাজন ও অন্যান্য কৌশল উদ্ভাবন
করেছেন যা উপরের প্রতিটি বিষয় বর্ণনা, বিশ্লেষণ এবং ব্যাখ্যদানে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে।
ঙ. ভ‚গোলবিদগণ বাস্তব পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাকৃতিক, মানবিক বিষয়াদির আন্ত: সম্পর্কিত
বিষয়ভিত্তিক তাত্তি¡ক মডেল দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন।
পাঠ সংক্ষেপ
ভ‚গোলের দুটি ধারা: প্রাকৃতিক ও মানবিক। ভ‚গোলের প্রধান আলোচ্য বিষয় ভ‚পৃষ্ঠের
উপরিভাগের স্থানিক বিন্যাস অনুসন্ধান এবং প্রাকৃতিক-সাংস্কৃতিক প্রপঞ্চ সমূহের আন্ত:সম্পর্ক
ব্যাখ্যা করা। বিবিধের মধ্যে ঐক্য অনুসন্ধান এবং অন্যতম লক্ষ্য। ভ‚গোলবিদগণ তথ্য
আহরনে ও ব্যাখ্যা দানে একাধিক পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকেন। যেমন: উৎপত্তিগত,
কর্মভিত্তিক ও অবরোহী পদ্ধতি।
জি, আই, এস
বি.এ/বি.এস.এস. প্রোগ্রাম এস.এস.এইচ.এল
ইউনিট - ১ পৃষ্ঠা # ২০
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ১.৩
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
১. সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (√) দিন (সময়- ৩ মিনিট)ঃ
১.১ ভ‚গোলে স্থানিক বিন্যাস এর প্রধান কার্যক্ষেত্র ভ‚-পৃষ্ঠেরক. উপরিভাগ খ. অভ্যন্তর ভাগ গ. মাঝামাঝি
১.২ ভ‚গোলবিদগণ তথ্য আহরণ ও ব্যাখ্যাদানেক. দুই খ. তিন গ. চার ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করেন
১.৩ সময় ভিত্তিক কোন স্থান বা বিষয়ের পরিবর্তন ধারা এবং এ পরিবর্তনের প্রক্রিয়াসমূহ
ভ‚গোলের যে শাখায় জানার চেষ্টা করা হয় তাকেক. ঐতিহাসিক খ. প্রাকৃতিক গ. সামাজিক ভ‚গোল বলে
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (সময় ৬ মিনিট) ঃ
১. স্থানিক বিন্যাস বলতে কি বুঝায়?
২. ভ‚গোলবিদগণ কি জানতে চান?
৩. ভ‚গোল বিষয় পৃথিবী সম্পর্কে কি ধরনের জ্ঞান দান করে থাকে?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. ভ‚গোলের পরিধি সবিস্তারে আলোচনা করুন?

পাঠ ১.৪ : পরিবেশ: অর্থ, প্রকৃতি ও উপাদানসমূহ
(ঞযব ঊহারৎড়হসবহঃ : গবধহরহম, ঘধঃঁৎব ধহফ ঈড়সঢ়ড়হবহঃং)
এই পাঠ শেষে যা জানা যাবে–
 পরিবেশ এবং পরিবেশের প্রকৃতি সম্পর্কে।
পরিবেশের সংজ্ঞা
ভ‚পৃষ্ঠস্থ দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য যাবতীয় জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন¦য়ে পরিবেশ গঠিত। অজৈব
পদার্থের আওতাভ‚ক্ত বিষয়সমূহের মধ্যে পানি, বায়ুমন্ডল ও শিলা-মৃত্তিকা অন্যতম। বায়ুমন্ডল
অদৃশ্য হলেও, শিলা-মৃত্তিকা ও পানি দৃশ্যমান। পানি, বায়ুমন্ডল ও শিলা-মৃত্তিকা সম্মিলিতভাবে
জৈব পরিবেশের ভিত্তি গড়ে তুলেছে। পরিবেশকে তার গঠন মৌলের আলোকে জৈব ও অজৈব এ
দুই পরিবেশে ভাগ করা যায়। অজৈব পরিবেশ মূলত: প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তোলে। পানি, শিলা
ও বায়ুমন্ডল প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান গঠনকারী উপাদান। অপরদিকে, এ সব প্রাকৃতিক পরিবেশ
গঠনকারী উপাদানই আবার সমস্ত প্রাণী ও উদ্ভিদের গঠন ভিত্তি গড়ে তোলে এবং শক্তি ও খনিজ
জোগানের মাধ্যমে পরিবেশ টিকিয়ে রেখেছে।
পরিবেশের প্রকৃতি
পরিবেশের প্রকৃতি বলতে এর গঠনকারী উপাদানসমূহের প্রকৃতিই বুঝানো হয়। প্রাকৃতিক ও জৈব
এই উভয় পরিবেশই আপাত: সহজ মনে হলেও তা অত্যন্ত জটিল এবং এদের গঠন উপাদানসমূহ
পরস্পরে নিবীড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। নি¤েœ এসব প্রাকৃতিক ও জৈব পরিবেশের বিভিন্ন গঠন
উপাদানসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
প্রাকৃতিক পরিবেশ
ভ‚মি: প্রাকৃতিক পরিবেশ এর অন্যতম গঠন মৌল ভ‚মি, যা শিলা ও খনিজের সমন¦য়ে গঠিত। ভ‚-
পৃষ্ঠের কঠিন বহিরাবরনই বিভিন্ন ধরনের শিলায় গঠিত। এ সব বিভিন্নধর্মী শিলা ভ‚-প্রাকৃতিক
প্রক্রিয়ার সাথে মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন অবয়বের ভ‚মিরূপ গঠন করে থাকে। এসব ভ‚মিরূপ
কোথাও যেমন কঠিন, কোথাও নরম শিলার, আবার অন্যত্র উভয়ের সংমিশ্রণে গঠিত হতে পারে।
আবার, ভ‚মিরূপের প্রকৃতি কোথাও সুউচ্চ পার্বত্যময় বা পাহাড়ি; আর কোথাও মৃদুঢালবিশিষ্ট।
ভ‚মিরূপের এ আকার, আকৃতি ও গঠন প্রকৃতি যে প্রাকৃতিক পরিবেশীয় কাঠামো সৃষ্টি করে তা সব
প্রাণী কিংবা উদ্ভিদের জন্য সমানভাবে উপযোগী নয়। তাই, ভ‚মিরূপ যেমন বৈচিত্রময়, তেমনি প্রাণী
ও উদ্ভিদের স্থানভেদে বন্টন বৈচিত্র লক্ষণীয়। যেমন, হিমালয়ের বিস্তৃত পার্বত্য এলাকায় যে সব
প্রাণী বাস করে তা বাংলাদেশের মত সমতল ভ‚মিতে দেখা যায় না। আবার, পার্বত্য এলাকার
গাছপালার ধরনও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সমতল ভ‚মির অনুরূপ নয়। একইভাবে উষর মরুভ‚মির প্রাণী
কিংবা উদ্ভিদজ প্রকৃতিও পাহাড়ী পরিবেশের চেয়ে ভিন্ন। তবে, এখানে উল্লেখ্য যে প্রানী কিংবা
উদ্ভিদের বন্টন বৈচিত্রের জন্য শুধুমাত্র ভ‚মিরূপ এককভাবে দায়ী নয়, আরো অনেক নিয়ামক এর
সাথে জড়িত।
পরিবেশের প্রকৃতি বলতে কি বুঝায়?
জৈব ও অজৈব পদার্থের
সমন্বয়ে পরিবেশ
গঠিত।
ভ‚মি-শিলা ও খনিজের
সমন্বয়ে গঠিত।

পানি: ভ‚পৃষ্ঠের তিনভাগই পানির আওতায়। সমুদ্রই পানির প্রধান উৎস। তাছাড়া, তুষার আচ্ছাদিত
মেরু দেশীয় ভ‚খন্ড ও উচ্চ পার্বত্য এলাকার বরফাচ্ছন্ন এলাকাসমূহ, নদ-নদী, হ্রদ, জলাভ‚মি
পানির অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উৎস। পানি, প্রাণী কিংবা উদ্ভিদ উভয়েরই টিকে থাকার অন্যতম
উপাদান। পানির উৎসকে কেন্দ্র করেই প্রাচীন মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে। উ¤œুক্ত ভ‚পৃষ্ঠের পানি
সূর্যালোক থেকে প্রাপ্ত শক্তির মাধ্যমে বাস্পায়িত হয়ে বিভিন্ন জীব ও জৈব স্তরের মাধ্যমে আবার তা
ভ‚পৃষ্ঠেই ফিরে আসে, যা পানি চক্র নামে পরিচিত। এ পানি চক্র শক্তি স্থানান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা
রাখে। মোট কথা, পানি জীবজগতকে সচল রাখে।
বায়ুমন্ডল: ভ‚অভ্যন্তর থেকে বের হওয়া গ্যাসীয় পদার্থ থেকেই বায়ুমন্ডলের সৃষ্টি। এর প্রধান গ্যাস
নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, আরগন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং সামান্য পরিমাণে অন্যান্য গ্যাস
আছে। বায়ুমন্ডল সম্পূর্ণ ভ‚-গোলক মুড়িয়ে রেখেছে এবং মাধ্যকর্ষন শক্তির কারনেই তা পৃথিবীর
সাথে লেপটে আছে। বায়ুমন্ডলের পুরুত্ব বিষুবীয় অঞ্চলে বেশী এবং মেরু অঞ্চলে সব চেয়ে কম।
ভ‚পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০ কি:মি: উচ্চতা পর্যন্ত বায়ুমন্ডলের গ্যাসীয় মিশ্রণ প্রায় সমান। বায়ুমন্ডলীয়
গ্যাস, অক্সিজেন সমস্ত জীব জগতের অস্তিত্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বায়ুমন্ডলীয় অবস্থা
নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামকসমূহের মধ্যে সূর্যালোক, উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ ও মেঘ গুরুত্বপূর্ণ। এ
সব নিয়ামকের পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়া থেকেই জলবায়ুর উদ্ভব। বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর ব্যাপক
তারতম্য আছে। জীবজগতের বন্টন গত বৈশিষ্ট্যে জলবায়ুগত বৈচিত্র্যের যোগসূত্র সুস্পষ্ট।
পৃথিবীর জৈব জলবায়ুজ (ইরড়পষরসধঃরপ) পরিবেশের ভিন্নতা অনুযায়ী বিষুবীয় অঞ্চল থেকে উত্তর ও
দক্ষিণের উভয় গোলার্ধে উচ্চ, মধ্য ও নি¤œ অক্ষাংশীয় অঞ্চলে ভাগ করা যায়। এসব জৈব জলবায়ুজ
পরিবেশের বৈচিত্রতা প্রাণী ও উদ্ভিদের বন্টনে অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে।
জীবজগতের অন্যতম প্রাণী, মানুষ। মানুষের সংখ্যা বিশ্বব্যাপী বর্তমানে প্রায় ৬ বিলিয়ন (ছয়শত
কোটি) যা পৃথিবীর ভ‚ভাগের প্রায় ৩০ শতাংশ জুড়ে আছে। বাকী ৭০ শতাংশ ভ‚ভাগে জনবসতি
খুবই পাতলা বা জনমানবশূন্য। হালকা বসতি এলাকায় মানুষজন মৎস্য আহরণ, শিকার,
সংগ্রহকরণ, পশুচারণ এবং সামান্য ফসল আবাদের সাথে যুক্ত। এ সব জনবসতি মূলত: তিনটি
প্রাকৃতিক পরিবেশে দেখা যায়: এশিয়া ও আফ্রিকার মরুময় এলাকায়, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা
ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ক্রান্তীয় অঞ্চলে এবং এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার শীত প্রধান এলাকায়।
গত কয়েক হাজার বছর ধরে এ সব জনগোষ্ঠি প্রকৃতির সাথে খাপ-খাইয়ে প্রায় প্রাকৃতিক জীবনযাপন করছে। তবে, বর্তমানে এদের জীবন যাত্রায় আধুনিকতার সংস্পর্শে ধীরে ধীরে পরিবর্তন
আসছে।
ঘনবসতির জনগোষ্ঠি মধ্য অক্ষাংশে ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে বসবাস করে। উত্তর গোলার্ধের ২০º
থেকে ৫০º অক্ষাংশের মধ্যে প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ বসবাস করে। ঘনবসতিপূর্ণ জনপদসমূহের
প্রায় অর্ধেক সংখ্যক লোকই সমুদ্র উপক‚লের ১০০ কি.মি. এর মধ্যে বসবাস করে। পৃথিবীর প্রধান
১০টি বৃহৎ নগরীর ৯টিই সমুদ্র উপক‚লে অবস্থিত।
বিভিন্ন কারণে মানুষ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না। ফলে, ভ‚-প্রাকৃতিক পরিবেশে এর
বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। যেমন, বাড়তি জনসংখ্যার প্রয়োজনে প্রতিদিন অধিক হারে ভ‚মি ও
সম্পদের যোগান দরকার হচ্ছে, যার বেশ কিছুই নবায়ন যোগ্য নয়। এতে, মৃত্তিকার উর্বরতা নষ্ট
হচ্ছে, বনভ‚মি উজাড় হচ্ছে। জ্বালানি ভান্ডার নিঃশেষ হচ্ছে, জলাধার সংকোচিত হচ্ছে এবং জীব
বৈচিত্র্য দ্রæত হ্রাস পাচ্ছে। ধারণা করা হয় বিশ্বের জনসংখ্যা ২০০ কোটিতে (১৯৩০ সন) পৌঁছাতে
৩ ভাগ পানি, একে
কেন্দ্র করে সভ্যতা
গড়ে উঠেছে।
গ্যাসীয় পদার্থ থেকে
বায়ুমন্ডলের সৃষ্টি।
পৃথিবীর ভ‚ভাগের প্রায়
৩০ শতাংশ জুড়ে
মানুষ বসবাস
করে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে
পরিবেশে বিরূপ
প্রতিক্রিয়া হচ্ছে।

১ লক্ষ বছর লাগলেও তা বেড়ে ৪০০ কোটিতে পৌঁছাতে লেগেছে মাত্র পরবর্তী ৪৬ বৎসর।
বর্তমানে, প্রতি বছর ৯০ মিলিয়ন লোক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনেকেরই অভিমত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত পৃথিবী বাসপোযোগী রাখা দু:সাধ্য হবে। প্রযুক্তিগত
উন্নয়ন, উন্নত যন্ত্র, নতুন রাসায়নিক পদার্থ এবং নতুন ভ‚মি ব্যবহারের অনেক কিছুই সবক্ষেত্রে
পরিবেশ উপযোগী না হওয়ায়, বাস্তু পদ্ধতিতে, পানি কিংবা বায়ুমন্ডলীয় পরিবেশের মারাতœক ক্ষতি
সাধিত হয়। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবী, পানি, ভ‚মি ও বায়ুমন্ডল এবং এর জৈব মন্ডল নিয়ে একটি
সুসমনি¦ত গ্রহ। ফলে, যে কোন স্থানের অজৈব বা জৈব মন্ডলীয় কোন পরিবর্তন বহুদূরের
পরিবেশকেও তা প্রভাবিত করে থাকে। বিশেষ করে, তা বায়ুমন্ডলের জন্য বিশেষভাবে প্রযোজ্য।
যেমন, কোন মহাদেশের একটি আগ্নেয়গিরির উদগীরিত লাভা বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী
ছড়িয়ে যেতে পারে এবং তা বহুদিন জলবায়ুকে প্রভাবিত করে। তাছাড়া, শিল্প উন্নত দেশ থেকে যে
বিপুল পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও ক্লোরো-ফ্লোরো কার্বন (ঈঋঈ) বায়ুমন্ডলে যাচ্ছে তা
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। এর প্রমাণ স্বরূপ, ঈঋঈ এর কারণে এন্টার্কটিকা মহাদেশের
স্ট্রেটোমন্ডলের ওজন স্তরের পুরুত্ব ঋতুভিত্তিক হ্রাস পাচ্ছে। অথচ, এই মহাদেশটিতে অন্য সব
মহাদেশের চাইতে বিশুদ্ধ পরিবেশ বিরাজ করে।
তাই পরিবেশ সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর এ সমনি¦ত প্রকৃতিকে গুরুত্বসহকারে
বিবেচনা করা আশু প্রয়োজন।
পাঠ সংক্ষেপ
গঠনমৌলের আলোকে জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন¦য়ে পরিবেশ গঠিত। অজৈব পরিবেশ
মূলত: প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তোলে। পানি, শিলা ও বায়ুমন্ডলের প্রধান গঠন উপাদান।
আবার, এ সব প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠনকারী উপাদানই সমস্ত প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের গঠন
ভিত্তি গড়ে তোলে এবং শক্তি ও খনিজ জোগানের মাধ্যমে জৈব পরিবেশ টিকিয়ে রেখেছে।
পৃথিবীর জৈব পরিবেশ যে সব বহুবিধ কারণে হুমকির সম্মুখিন, তম্মধ্যে বিপুল জনসংখ্যা
অন্যতম। অধিক জনসংখ্যার কারণে নবায়নযোগ্য নয় এমন সম্পদের উপর বিশ্বব্যাপী
ক্রমবর্ধমান চাপ বাড়ছে; ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ বিপন্ন।
জনসংখ্যার অনিয়ন্ত্রণ
পরিবেশে মারাতœক
বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি
করে।

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১. সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (√) দিন (সময়- ৩ মিনিট) ঃ
১.১ ভ‚পৃষ্ঠের কঠিন বহিরাবরন বিভিন্ন ধরনেরক. শিলায় খ. উদ্ভিজ্জের গ. প্রাণীর - সমন¦য়ে গঠিত
১.২ পানির প্রধান উৎসক. নদ-নদী খ. সমুদ্র গ. পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ
১.৩ বায়ুমন্ডলীয় গ্যাসের প্রধান উৎসক. পৃথিবীর প্রাণী জগত খ. প্রাণী ও উদ্ভিজ্জ গ. পৃথিবীর অভ্যন্তরে
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী (সময় ১২ মিনিট) ঃ
১. পরিবেশ বলতে কি বুঝায়?
২. জৈব ও অজৈব পরিবেশে পার্থক্য কি?
৩. হালকা জনবসতির বন্টন উল্লেখ করুন। এসব এলাকার লোকদের পেশা কি কি?
৪. ঘনবসতির বৈশিষ্ট্য কি?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. পরিবেশের অর্থ, প্রকৃতি ও তাৎপর্য আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]