পানি ও জীবন
পৃথিবীর ভ‚-পদ্ধতি (এবড়-ংুংঃবস) স্থল, পানি ও বায়ুএ তিন ভাগ নিয়ে গঠিত। সূর্যালোকের
শক্তি ব্যবহার করে পানি এবং বায়ুপ্রবাহ হিসাবে ভ‚-পদ্ধতির গঠন ও পরিবর্তন করে থাকে।
ভ‚তাত্তি¡ক সময় (এবড়ষড়মরপধষ ঞরসব) থেকে ক্রমাগত বিরামহীন এ পদ্ধতি পরিবর্তন ও বৈচিত্র সচল
রেখেছে।
চিত্র ৩.২৬.১ : পৃথিবীর প্রধান বৈচিত্র্য গঠনে পানির ভ‚মিকা।
ভ‚-বৈচিত্র্য জৈব বিন্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করে। জীবের উৎপত্তি ও বিকাশ নির্ভর করে পানির প্রাপ্যতা ও
গুণাগুণের উপর। জীবের জীবন-ধারণ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সম্পদ বিন্যাসে পানির ভ‚মিকা
অনস্বীকার্য। মানুষের সাথে পানির রয়েছে নিবিঢ় সম্পর্ক। জনসংখ্যার ঘনত্ব, অভিগমণ, অভিবাসন
সবই পানির সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। পানির সাথে এই সম্পর্ক ৩.২৬.২ চিত্রে ব্যাখ্যা করা হলো।
ভ‚-তাত্তি¡ক সময়।
জীবের অস্তিত্ব ও বিকাশ
নির্ভর করে পানির প্রাপ্যতা ও
গুণাগুনের উপর।
চিত্র ৩.২৬.২ : জনসংখ্যা ও পানির সম্পর্ক (ডধঃবৎ-ঢ়ড়ঢ়ঁষধঃরড়হ খরহশং)
ভ‚-বৈচিত্র্য গঠন ও জীবনের সাথে পানির সম্পর্ক কি?
পানি বন্টন (ডধঃবৎ উরংঃৎরনঁঃরড়হ)
ভ‚-পদ্ধতি গঠন উপাদান হিসাবে পানি অনন্য। ভ‚-পৃষ্ঠে পানিই সর্বাপেক্ষা বেশি জায়গা দখল করে
আছে। উপগ্রহ চিত্রে পৃথিবীকে নীল রংয়ের জল পরিবেষ্টিত একটি গ্রহ বলে প্রতীয়মান হয়। পানি
স্থলভাগে, সমুদ্রে এবং গ্যাসীয় রূপে আছে। জীবন্ত কোষে, রাসায়নিক বন্ধনে, বিবিধ দ্রবীভ‚ত
লবণকণা বা রাসায়নিক দ্রব্যে অথবা খনিজ (সরহবৎধষ) মিশ্রিত হয়ে স্বাদু(ঋৎবংয) লবণাক্ত বা
মিশ্রিত (ইৎধপশরংয) পানি হিসেবে আছে।
ভ‚-পৃষ্ঠে পানির পরিমাণ শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ। এই পানি বন্টন নি¤œরূপ:
সারণি ৩.২৬.১ : পানি বন্টন
স্থান পরিমাণ অবস্থা
ভ‚-পৃষ্ঠে পানি ১.৩৫ ী ১০৯
ঘন কিলোমিটার সমুদ্রে তরল
ভ‚-ত্বকে পানি ০.৭৭ ী ১০৯
ঘন কিলোমিটার জল বন্ধন (ইরহফরহম ধিঃবৎ)
হিম শিখরে ০.২৮ ী ১০৯
ঘন কিলোমিটার তুষার ও হিম শৈল
পৃথিবীকে বেষ্টন করে বারিমন্ডল ও বায়ুমন্ডলে জলরাশির বিন্যাস উপর দিকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার
এবং ভ‚-ত্বকে ১ কিলোমিটার বিস্তার করে আছে। পানির বিন্যাসের বিভিন্ন ভৌত অবস্থা ও গুণাগুণ
হচ্ছে ঃ
১. সমুদ্র জল (ঝবধ ধিঃবৎ) ৪. মাটির আর্দ্রতা (ঝড়রষ সড়রংঃঁৎব)
২. তুষার (এষধপরবৎ) ৫. ভৌমজল (এৎড়ঁহফ ধিঃবৎ)
৩. স্বাদুপানি (ঋৎবংয ধিঃবৎ) ৬. বাস্পীয় জল (ডধঃবৎ াধঢ়ড়ঁৎ)
পৃথিবীর পানি বন্টন কিরূপ?
পানি ও জীবন (ডধঃবৎ ধহফ খরভব)
ভ‚-বৈচিত্র্য সৃষ্টি ও জীবের অস্তিত্ত¡ রক্ষায় পানির গুরুত্ব অপরিসীম। বাস্তব্যবিদ্যা (ঊপড়ষড়মু) মূলত:
ভ‚মি, পানি ও বায়ু মন্ডলের সংযোগ স্থলেই পরিলক্ষিত হয়। পৃথিবীতে প্রথম জীবনের সূচনা
পানিতেই হয়। স্থল ভাগের অনেক জীবই তাদের আবাস স্থল থেকে অনেক দূরের ভিন্ন ভিন্ন
পানি-স্থলভাগে, সমুদ্রে ও
গ্যাসীয় রূপে আছে।
বাস্তববিদ্যা।
পরিবেশে জ¤œ লাভ করেছিল। জীবন ধারণের জন্য পানি অতীব গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্য হিসাবে বিবেচিত
হয়।
উদাহরণ স্বরূপ দেখানো যায়:
ক্স মানুষের শরীরে পানির পরিমাণ শতকরা ৬৫ ভাগ;
ক্স প্রতিদিন প্রতিস্থাপিত হয় শতকরা ৫ ভাগ।
খাদ্য ছাড়া মানুষ কয়েক সপ্তাহ বাঁচতে পারে, কিন্তুপানি ছাড়া বাঁচবে মাত্র দিন দশেক।
প্রথম সভ্যতা গড়ে ওঠে নীল, টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর অববাহিকায়। জনবসতি ও ঘনত্ব নির্ভর
করে স্বাদুপানির প্রাপ্যতার উপর। সাম্রাজ্য বিস্তারেও প্রাচীনকালে নদী জলের উপর নির্ভর করতে
হতো। পানির সাথে জীবনের সম্পর্ক ভ‚-তাত্তি¡ক সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে; নি¤œ ছকে সময় ও
জীবের ধরন দেখানো হলোসারণি ৩.২৬.২ : সময়ের সাথে পানি ও জীবনের সম্পর্ক পরিবর্তন
ভ‚-তাত্তি¡ক সময় বছর পূর্ব জীবের ধরন
প্লিত্তসিন ৫ বিলিয়ন দ্বিপদ প্রাণী ও প্রাথমিক মানুষের বিন্যাস
অলিগোসিন ৩৭ বিলিয়ন স্থলভাগে ভারবাহী জীব ও স্তন্যপায়ী
পারমিয়ান-ট্রায়াসিক ২৩০ বিলিয়ন সরীসৃপ
কার্বনিফেরাস ২৭০ বিলিয়ন স্থলজ বনভ‚মি, উভচর
ডেভোনিয়ান ২৯০ বিলিয়ন মেরুদন্ডী, জলে মাছ
সিলুরিয়ান ৩০০ বিলিয়ন ডাঙ্গায় সপুস্পক উদ্ভিদ
অরডোভিসিয়ান ৩২০ বিলিয়ন সমুদ্রে বহুকোষী অমেরুদন্ডী প্রাণী
ক্যাম্ব্রিয়ান ৩৭০ বিলিয়ন সমুদ্রে এককোষী অনুজীব
প্রিক্যাম্ব্রিয়ান ৪০০ বিলিয়ন সমুদ্রবক্ষে অকোষী জীব
অতীতে অনেক জীব বরফাচ্ছাদনের ফলস্বরূপ (এষধপরধঃরড়হ) সমুদ্রের লবণাক্ততা ও স্থলভাগের
মরুময়তার ফলে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
পানির সাথে জীবনের সম্পর্ক কি?
পানির ব্যবহার (টংব ড়ভ ধিঃবৎ)
জীবন ধারঈের জন্যই শুধুনয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও পানির ভ‚মিকা অতুলনীয়। পানি ব্যবহারের
সাধারণ হার ৩.২৬.৩ সারণিতে প্রদর্শিত হলো।
নীল, টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে।
সারণি ৩.২৬.৩ : পানির প্রধান ব্যবহার
ব্যবহার বিকল্প গৃহীত পানির শতকরা হার
পানীয় জল নাই ১ - ১৫
গৃহস্থালীর অন্যান্য কাজে নাই ১ - ১৫
জনসাধারণ, নগর নাই ১ - ১৫
পশু সম্পদ নাই ১ - ১৫
সেচ কার্য নাই ১০ - ৮০
নৌ-পরিবহন (ঘধারমধঃরড়হ) স্থলযান ০ - ১০
জলশক্তি (ঐুফৎড়ঢ়ড়বিৎ) অন্যশক্তি ০
খনি (খনন কার্য - গরহরহম) নাই ১ - ৫
শিল্পে : শীতল ক্রিয়ায় বায়ু ০ - ৩
প্রক্রিয়াজাতকরণ যান্ত্রিক ০ - ১০
আবর্জনা নিষ্কাশন বায়ু/যান্ত্রিক ০
বিনোদন নাই ০
খাদ্য ঘাটতিপুরণ ভ‚মি ব্যবহার/ব্যবস্থাপনা ০
পানির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভ‚মিকা হচ্ছে-
ক্স সমানুপাতিক (জবপরঢ়ৎড়পধষ)
ক্স সুনির্দিষ্ট স্থানভিত্তিক
ক্স আন্তর্জাতিক বা জাতীয় সীমানা অগ্রাহ্যকারী (ঞৎধহংহধঃরড়হধষ নড়ঁহফধৎরবং)
ক্স সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় (ঈযধহমবং ড়াবৎ ঃরসব)
পানির ব্যবহার ৩.২৬.৩ নং চিত্রে দেখানো হলো।
কয়েকটি বিশেষ ব্যবহার সংক্ষিপ্তাকারে আলোচনা করা হলো:
কৃষি
কৃষিক্ষেত্রে পানির সর্বাধিক পরিমাণ ব্যবহার হয়। একটি উদ্ভিদ তার উৎপন্ন শস্যের প্রায় ২০০০
গুণ বেশি পানি শোষণ করে। পরিকল্পিত সেচ প্রথম চালুহয় ৪০০০ বছর পূর্বে মেসোপটেমিয়ায়
(ইরাক)। নীল নদ অববাহিকায় সেচ প্রচলন হয় ৩৪০০ বছর পূর্বে। চীনে ২২০০ বছর পূর্বে। চীনে
প্রায় অর্ধ মিলিয়ন একর জমি সেচের সাহায্যে তখন উর্বর করা হয়।
ভারত ও পাকিস্তানের ইন্দাজ অববাহিকায় ৯ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা আছে।
আমেরিকার ইম্পোরিয়াল অববাহিকায় ২ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। বাংলাদেশে সেচ
প্রকল্পের মধ্যে গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্প, চাঁদপুর প্রকল্প এবং বরেন্দ্র প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।
শিল্প
শিল্পে পানির ব্যবহার সরাসরি কিংবা শুধুমাত্র শীতল কারক হিসাবে হয়ে থাকে। সরাসরি পানি
ব্যবহৃত হয়- ডাইং শিল্প, পাম্প, অটোমোবাইলে, এ্যালুমিনিয়াম, মৎস্য শিল্প ও চামড়া শিল্প।
শিল্পে পানির ব্যবহার চাহিদা যুগের সাথে পরিবর্তিত ও বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে।
বাণিজ্য
যোগাযোগের জন্য পানির উপর বিশাল বাণিজ্য নির্ভরতা রয়েছে। পরিবহনে ব্যবহৃত পানির
পরিমাণ ব্যবহারের ফলে কমে না, তবে কম হলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। পানির পরিমাণ
অপরিবর্তিত থাকলে নৌ যোগাযোগ রক্ষিত হয়। বাণিজ্য ও নদী তীরবর্তী জনবসতির গতিও পানি
প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে।
জলশক্তি
পৃথিবীর মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১৮ শতাংশ হতো জলবিদ্যুৎ থেকে। পারমাণবিক শক্তি থেকে
বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে এ পরিমাণ কমে দাড়িয়েছে শতকরা ৯ ভাগে। পানির স্থিতিশক্তি থেকে ঢাল
বা নিচুস্থানে প্রবাহ হলে গতি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়।
পানি সম্পদ উন্নয়ন (ডধঃবৎ ৎবংড়ঁৎপব সধহধমবসবহঃ)
সমুদ্র, নদী, হ্রদ ও জলধারাগুলো একত্রে এমন একটা পটভ‚মি তৈরি করেছে যার ফলে জীবনের
উৎপত্তি, বিকাশ ও সংমিশ্রন সম্ভব হয়েছে। পানি জৈব সমতা বিধান করে সবার জীবন ধারণের সুষ্ঠু
পরিবেশ তৈরি করেছে। পানির মান জীবন ধারণের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, দুষিত পানি জীবন
সংহারী। প্রযুক্তি ব্যবহার ও সুষ্ঠুনিয়ন্ত্রনের উপর নির্ভর করছে মানুষের ভবিষ্যৎ।
পানি ও ঝুঁকি
ক্স দূষিত পানি (রাসায়নিক ও ভৌত)
ক্স বন্যা (অতিবৃষ্টি, হিমশৈল গলন)
ক্স সমুদ্র স্ফীতি।
পানির মাধ্যমে ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা পেতে অনেক পূর্বেই সচেতনতা গড়ে উঠেছে। নীল নদের
তীরে বাঁধ নির্মিত হয়েছে প্রায় ৩০০০ বছর পূর্বে। পানির চলন (ঐুফৎড়ফুহধসরপ) নিয়ন্ত্রণ করে
কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, জলশক্তি
পানিসম্পদ উন্নয়ন।
মেসোপটেমিয়ায় (ইরাক),
নীলনদ আববাহিকা, চীনে।
সরাসরি কিংবা শীতলকারক
হিসেবে।
যোগাযোগ
১৮ শতাংশ জলবিদ্যুৎ থেকে।
জীবনের উৎপত্তি, বিকাশ ও
সংমিশ্রণ।
প্রকৌশলীগণ এর ব্যবহার ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ করেন। খাল খনন, নালা তৈরি এবং প্রয়োজনীয়
কাঠামো তৈরি করে পানিকে সেচ ও অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্ষুধা নিবৃতির জন্য
সেচ সুবিধা বর্ধিত করা জরুরী। বর্তমান চাষযোগ্য জমির মাত্র ১৩ শতাংশ সেচ সুবিধা পায়।
মরুকরণ (উবংবৎঃরভরপধঃরড়হ) রোধে ও সেচ প্রচলন প্রয়োজন।
পানযোগ্য পানির সার্বিক সরবরাহ অপ্রতুল। বর্তমান পৃথিবীর প্রায় ৫০ শতাংশ নদীবাহী পানি
মানুষের ব্যবহারে ব্যয় হয়, ২০২৫ সালে এ হার দাঁড়াবে ৭০ শতাংশে। প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ
সুনিয়ন্ত্রিত পানি প্রবাহের আওতা বহির্ভুত। আগামী ৩০ বছরে ৫.৫ বিলিয়ন লোক পানি সম্পদের
অপ্রতুলতার মাঝে বাস করবে।
বিগত দুই শতকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিমাণ ১ বিলিয়ন থেকে (১৮০০ সাল) থেকে ৬ বিলিয়ন
(২০০০ সালে) দাঁড়াবে। ১৯৬৪ সালের হিসাব অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশে ১.১ বিলিয়ন লোক গ্রামে
বাস করে যাদের মধ্যে ৮০০ মিলিয়ন লোক পানযোগ্য জলের সরবরাহ পায় না। নগর সুবিধার ৪০
শতাংশ (১৪০ মিলিয়ন) পানি সরবরাহের আওতা বহিভর্‚ত। ৯০ মিলিয়ন লোক গণ সরবরাহ
(চঁনষরপ ড়ঁঃষবঃ) থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে। নগরেও প্রতি নয় জনে ১ জন পাইপের মাধ্যমে
সরবরাহ পায়। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে নারী ও শিশুরা তাদের ৫০ শতাংশ সময় ব্যয় করে পানি
সংগ্রহে। উন্নয়নশীল বিশ্বে ১.১ বিলিয়নের মধ্যে ১ বিলিয়ন মানুষ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে পানি
সংগ্রহ করে; ফলে সহজেই রোগাক্রান্ত হয়। প্রতি বছর৫০ মিলিয়ন লোক বিভিন্ন জলবাহী রোগে
আক্রান্ত হয়; আক্রান্ত শিশুর ৫০ শতাংশ যার পরিমাণ ১০ মিলিয়ন মৃত্যুবরণ করে থাকে (ডধঃবৎ
ভড়ৎ চবধপব, ১৯৬৭)। কেবল মাত্র ডায়রিয়া জাতীয় রোগে মৃত্যুবরণ করে ৩ মিলিয়ন (ডধঃবৎ ধহফ
ঢ়ড়ঢ়ঁষধঃরড়হ ফুহধসরপং, ১৯৯৬)।
পরিবেশ দূষণের ফলস্বরূপ গ্রীণহাউস প্রভাবের ফলে ভ‚-তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সমুদ্র স্ফীত
হচ্ছে। নি¤œাঞ্চলের ভ‚-ভাগ, যেখানে ২৫ শতাংশ লোক বাস করে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। পানি
সম্পদ অভিশাপ হয়ে পরিবেশ বিপর্যয় ত্বরানি¦ত করবে। এসব থেকে উদ্ধার পেতে পরিবেশে পানির
ব্যবহার সুষ্ঠুও রক্ষণ অতি জরুরী। কয়েকটি বিষয়ের উপর এজন্য গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন।
১. জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখা অতীব প্রয়োজন;
২. সম্মিলিত প্রচেষ্টা জল ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ;
৩. পানি সহজলভ্যতা (অপপবংং ঃড় ধিঃবৎ) মানুষের অধিকার;
৪. পানি সম্পদ ইস্যু একটি যৌথ শৃ´খলা বিশিষ্ট উপস্থাপন;
৫. পরিবেশ সচেতনতা মানুষের প্রয়োজনেই জরুরী;
৬. অ-কাঠামোগত সমাধান পানি সম্পদ উন্নয়নে বেশি কার্যকরী;
৭. পানি ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান পানি সম্পদ নিয়ে মত পার্থক্য দূর করতে পারে;
৮. নগর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পানির উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং
৯. গণশিক্ষা অতীব জরুরী।
পানি সম্পদ উন্নয়নের গুরুত্ব কি?
পরিবেশ ও জলতত্ত¡
পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে নারী ও
শিশুরা ৫০ শতাংশ সময় ব্যয়
করে পানি সংগ্রহ করে।
বাস্তব্য সমতা ও পরিবেশের
স্বাভাবিক মান।
পানির মান, প্রাপ্তি সাপেক্ষে বাস্তব্য সমতা (ঊপড়ষড়মরপধষ ইধষধহপব) এবং পরিবেশের স্বাভাবিক
মানের সাথে সম্পর্কযুক্ত। বর্ধনশীল জনসংখ্যা, শিল্পকারখানা, নগরায়ন, প্রযুক্তি প্রভৃতি দিনে দিনে
পানির উৎসকে দূষিত করে তুলছে। পৃথিবীতে জীবন ধারণ অসম্ভব হবে যদি পানি দূষণ অব্যহত
থাকে। এ সমস্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। ১৯৭৫ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ৪ বিলিয়ন। প্রতিদিন
বাড়ছে ২ মিলিয়ন। ২০০০ সালে জনসংখ্যা হবে ৬ বিলিয়ন এবং এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০
সালে দাঁড়াবে ১০-১৬ বিলিয়নে। ফলে অবস্থা বিপর্যয়কর হয়ে পড়বে।
পরিশুদ্ধ করে পানি পুন: ব্যবহার করা যায়। কিন্তু বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য সরবরাহ, সেচ ও
দৈনন্দিন অন্যান্য কাজের জন্য পানির চাহিদা বাড়বেই। বর্ধিতাকারে খাদ্য উৎপাদন ও কীটনাশক
ব্যবহারে পানি দূষণও বাড়বে। পানির এ দূষণ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা
বৃদ্ধি। এক্ষেত্রে যে সব পদক্ষেপ প্রয়োজন তা নি¤œরূপ:
১. উন্নয়ন পরিকল্পনা (উবাবষড়ঢ়সবহঃ চষধহহরহম)
২. সুনির্দিষ্ট পানি ব্যবস্থাপনা নীতি (চড়ষরপরবং)
৩. সম্মিলিত অংশগ্রহণ (ঈড়সনরহব চধৎঃরপরঢ়ধঃরড়হ)
৪. মতভেদ দূরীকরণ (ঈড়হভষরপঃ ৎবংড়ষঁঃরড়হ)
৫. শিক্ষা ও যোগাযোগ (ঊফঁপধঃরড়হ ্ ঈড়সসঁহরপধঃরড়হ)
৬. লাগসই প্রযুক্তি (অঢ়ঢ়ৎড়ঢ়ৎরধঃব ঞবপযহড়ষড়মু) এবং
৭. ভবিষ্যৎ গবেষণা (ঋঁঃঁৎব জবংবধৎপয)।
এসব বিষয় অগ্রগতির জন্য স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমনি¦ত কার্যক্রমের উদ্যোগ
প্রয়োজন। সংগঠনের পরিধি অনুযায়ী এসব কার্যক্রমে নি¤œরূপ প্রতিষ্ঠান বা প্রতিনিধি অংশগ্রহণ
করতে পারবেন।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে
ক্স পানি, পরিবেশ এবং পৃথিবীর জনসংখ্যা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান;
ক্স নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ;
ক্স নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (জরাবৎ নধংরহ ধঁঃযড়ৎরঃরবং);
ক্স আন্তর্জাতিক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান (ঘএঙ)।
জাতীয় পর্যায়ে
ক্স মন্ত্রণালয় ও সরকার: অর্থ, পরিকল্পনা, কৃষি, পরিবেশ এবং সামাজিক দপ্তর সমূহের অংশ
(ঝবপঃড়ৎং) গ্রহণ;
ক্স স্থানীয় সরকার (খড়পধষ এড়াবৎহসবহঃ);
ক্স বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা (ঘএঙ)।
স্থানীয় পর্যায়ে
ক্স পরিবেশ ও উন্নয়নে নিয়োজিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ;
ক্স স্থানীয় জনগণ (ঈড়সসঁহরঃু ৎবংরফবহঃং);
ক্স জাতীয় পানি কমিশন নামক সংগঠন ও সংগঠক
স্থানীয়, জাতীয় ও
আন্তর্জাতিক।
বি.এ/বি.এস.এস. প্রোগ্রাম এস.এস.এইচ.এল
ইউনিট - ৩ পৃষ্ঠা # ১৯৮
ক্স স্থানীয় পেশাজীবি ও কলকারখানার মালিকগণ।
বিশুদ্ধ প্রাপ্তির নিশ্চয়তার জন্য কি প্রয়োজন?
পাঠসংক্ষেপ
ভ‚-পদ্ধতি স্থল, পানি ও বায়ুনিয়ে গঠিত। ভ‚-পদ্ধতির এ গঠন উপাদান সমূহ পরস্পর
নির্ভরশীল। জীবের উৎপত্তি, অস্তিত্ত¡ ও বিকাশে পানি অপরিহার্য। পানি তরল, কঠিন বরফ বা
বাস্পাকারে গ্যাসীয় রূপে আছে। ভূ-পৃষ্ঠে পানির পরিমাণ প্রায় শতকরা ৭০ ভাগ। মানব
সভ্যতার দৈনন্দিন প্রয়োজনে পানি বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব ব্যবহারে পানির কোন
বিকল্প নাই। বিশুদ্ধ পানির জন্য চাই সুনির্দিষ্ট স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমনি¦ত
কার্যক্রম।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.২৬
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১. সঠিক উত্তরটির পাশে টিক (√) চিহ্ন দাওÑ (সময় ৫ মিনিট) ঃ
১.১ ভ‚-পৃষ্ঠে তরল অবস্থায় সমুদ্রে পানির মোট পরিমাণক) নির্ধারণ করা হয়নি খ) ১.৩৫ * ১০৯ ঘ: কি.মি.
গ) ২.৩৫ * ১০৯ ঘ: কি.মি. ঘ) ০.৭৭ * ১০৯ ঘ: কি.মি.
১.২ মানুষের শরীরের পানি প্রতিদিন প্রতিস্থাপিত হয় শতকরাক) ৬৫ ভাগ খ) ৭ ভাগ
গ) ৫ ভাগ ঘ) ৩৫ ভাগ
১.৩ প্রথম সভ্যতা যেখানে গড়ে ওঠেনিক) নীল নদের অববাহিকায় খ) টাইগ্রীস নদীর অববাহিকায়
গ) মধুমতির নদীর অববাহিকায় ঘ) ইউফ্রেটিস নদীর অববাহিকায়
১.৪ আর্থসামাজিক উন্নয়নে পানির ভ‚মিকাক) বিপরীতানুপাতিক খ) সমানুপাতিক
গ) আন্তর্জাতিক সীমানা অনুযায়ী ঘ) সময় অগ্রাহ্যকারী
১.৫ প্রথম সেচ ব্যবস্থা চালুহয়ক) ইরাকে ২২০০ বছর পূর্বে খ) নীলনদ অববাহিকায় ৩৪০০ বছর পূর্বে
গ) চীনে ৪০০০ বছর পূর্বে ঘ) মেসোপটেমিয়ায় ৪০০০ বছর পূর্বে
১. ভ‚বৈচিত্র্য গঠন ও জীবনের সাথে পানির সম্পর্ক কি?
২. পৃথিবীতে পানির বন্টন কিরূপ?
৩. পানির সাথে জীবনের সম্পর্ক কি?
৪. পানির ব্যবহার কি?
৫. পানি সম্পদ উন্নয়নের গুরুত্ব কি?
৬. বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তির জন্য কি প্রয়োজন?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. পানির সাথে জীবনের সম্পর্ক কি? পানির বন্টন সম্পর্কে লিখুন।
২. পানির বিবিধ ব্যবহার কি কি? পানি ও ঝুঁকি সম্পর্কেলিখুন।
৩. পরিবেশের সাথে সম্পর্ক ও জলতত্ত¡ বিশ্লেষণ করুন।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ