পানিচক্র
পৃথিবীর পানিচক্র হচ্ছে আমাদের গ্রহে পানি ও আর্দ্রতার বিরামহীন পরিভ্রমণ।
সমুদ্র থেকে বায়ুমন্ডল ও স্থলভাগ হয়ে আবার সমুদ্রে পানির সাধারন পরিভ্রমনকেই পানি চক্র বলে।
পানি চক্রকে এভাবে সঙ্গায়িত করা যায় যে, সমুদ্র থেকে বায়ুমন্ডল ও স্থলভাগ ভ‚-অভ্যন্তর হয়ে
আবার সমুদ্রে পানির সাধারণ পরিভ্রমন যা কয়েকটি বিশেষ প্রক্রিয়া যথা- বাস্পায়ন, বাস্পীয়
প্রস্বেদন, বারিপাতের চুয়ানো (রহভরষঃৎধঃরড়হ), প্রবাহ (ৎঁহড়ভভ) অনুস্রাব (ঢ়বৎপড়ষধঃরড়হ) ইত্যাদি
প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুসম্পন্ন হয়। চিত্রের মাধ্যমে পানি চক্র উপস্থাপন করা যায়।
চিত্র ৩.২৮.১ : পানিচক্র
চিত্রের চক্রটিতে একটি বিষয় স্পষ্ট যে এর কোন শুরুও নেই শেষও নেই। কেননা সমুদ্র থেকে যদি
বাস্পায়ন শুরু হয় তবে স্থলভাগকেও বাস্পী ভবনের কিছুকৃতিত্ব দিতে হয়। তবুও, যেহেতুসমুদ্র
ভ‚-পৃষ্টের চারভাগের তিন ভাগই দখল করে আছে তাই ধরা হয় যে পানি চক্রের শুরুটা সমুদ্র
তলেই।
সমুদ্র থেকে বায়ুমন্ডল ও
স্থলভাগ হয়ে আবার সমুদ্রে
পানির সাধারণ পরিভ্রমণকেই
পানিচক্র বলে।
চিত্রের মাধ্যমে পানি চক্রের ধারণাটি ব্যাখ্যা দিন?
পানি চক্রের শক্তি হচ্ছে বিকিরণ রশ্মি (জধফরধঃরড়হ) অভিকর্ষ, আণবিক আকর্ষণ এবং কৈশিক
আকর্ষণ (ঈধঢ়রষষধৎু) যা প্রক্রিয়াকে ক্রিয়াশীল রাখে। পৃথিবীতে পানির সকল প্রকার অবস্থাগত
পরিবর্তনই পানি চক্রের আওতাধীন। মনে করা হয় যে পৃথিবীতে পানির মোট পরিমাণ সমসাময়িক ভাবে অপরিবর্তনীয়। অবিচ্ছিন্নতা মতবাদ (ঈড়হঃরহঁরঃু ঢ়ৎরহপরঢ়ষব) অনুযায়ী বলা যায়
ধরাব্যাপী সর্বমোট বাস্পীভ‚ত জলরাশি বৃষ্টি বা অন্যভাবে বারিপাতের (চৎবপরঢ়রঃধঃরড়হ) সমষ্টির
সমান যা সুত্রে প্রকাশ করা যায়।
চ = ঊ + ও + জ
বারিপাত = (বাস্পীভবন + প্রস্বেদন) + চুয়ানো + পৃষ্ঠপ্রবাহ
(চৎবপরঢ়রঃধঃরড়হ = (ঊাধঢ়ড়ৎধঃরড়হ + ঃৎধহংঢ়রৎধঃরড়হ) + ওহভরষঃৎধঃরড়হ + জঁহড়ভভ)
পানিচক্রের চলন
বাস্পীভবন সমুদ্রের উপরিভাগ এবং অন্যান্য উš§ুক্ত জলরাশির উপরিতলে হয়ে থাকে, এটি পানিকে
বাস্পীয় অবস্থায় বায়ুতে তুলে দেয়। নির্দিষ্ট পরিবেশে (ঈড়হফরঃরড়হ) এ বাস্প ঘনীভ‚ত হয়ে মেঘে
রূপান্তরিত হয়; যা অবশেষে তার আর্দ্রতাকে বৃষ্টি, শৈল, তুষার কিংবা শিশির হিসাবে বারিপাত
ঘটিয়ে থাকে। বারিপাত এমন হয় যে, সমুদ্র পৃষ্ঠে যেমন হতে পারে, তেমনি সমুদ্রের আর্দ্রবায়ু
তাড়িত হয়ে ভ‚-পৃষ্ঠের উপর প্রবাহিত ঘনীভ‚ত মেঘ হয়ে স্থল ভাগেও হয়। স্থলভাগে বারিপাতের
একাংশ তাৎক্ষণিক ভাবে বাস্পীভ‚ত হয়; একাংশ স্থলভাগ সিক্ত করে সিঞ্চন বা প্রবাহের মাধ্যমে
নালা নদী পথে সমুদ্রে পতিত হয়; বাকী পানি চুইয়ে ভ‚-অভ্যন্তরে/ভ‚-নিæে গমন করে। অনুস্রাবনের
মাধ্যমে ভৌত পানি প্রবাহে এটি সমুদ্রে গিয়ে মেশে। সিক্তস্থলভাগ থেকে কিছুপানি বাস্পীভ‚ত হয়,
গাছের প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় পাতার উপর থেকেই বাস্পীভবন প্রক্রিয়ায় বায়ুমন্ডলে ফিরে যায়।
পানি চক্র পরিচলন শক্তির ব্যাখ্যা দিন?
পানি চক্র : সঞ্চয় ও পুষ্টি/জৈব বিন্যাস (জবংবৎাব ধহফ হঁঃৎরবহঃং)
ভ‚-পৃষ্ঠের সন্নিকটে পানি চক্র সূর্যালোকের শক্তিতে পরিচালিত হয়; পরিভ্রমনের এ ধারা আবার
উদ্ভিদের পুষ্টি পরিক্রমার মূল চালিকা শক্তি। অনেক ঘটনা চক্রেই পানি তার পথে চলমান থাকে।
যেমন বৃষ্টিপাতের পানি বাস্পীভবন, ঘনীবভনের মধ্য দিয়ে আসে। বারিপাতের পরিমাণ বা ধরন
নিয়ন্ত্রনে নি¤œলিখিত বিষয়গুলো ভ‚মিকা রাখে:
১. অববাহিকার জলতত্ত¡ীয় এবং ভ‚-বৈচিত্র্যের ধরন;
২. সময়ের সাথে অববাহিকায় জলবিদ্যা সম্পর্কিত জলপ্রপাত, তার একাংশ কিংবা বৃহৎ জলধারা
এর ভ‚মিকার উপর।
বৃষ্টিপাতের অবস্থানের উপর নির্ভর করে সেটি নদীতে কিংবা ভ‚-পৃষ্টে অথবা অভিগ্রাহী রূপে সঞ্চিত
হবে। অভিগ্রাহী (ওহঃবৎপবঢ়ঃরড়হ ড়ভ ইধংরহ) আধার তৈরী হয় মূলত: বনভ‚মির বিন্যাস ও আকৃতির
উপর নির্ভর করে। ঘনশস্য সমৃদ্ধ, উš§ুক্ত গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিবিঢ় বনভ‚মি, মোটামুটি প্রথম এক
মিলিমিটার জলকে এবং তার পরবর্তি মোট বারিপাতের প্রায় ২০ শতাংশকে অভিগ্রহণ করে থাকে।
এ অংশের (নীট অভিগ্রাহী) ১৫ থেকে ১৯ শতাংশ বাস্পীভ‚ত হয়ে যায়, ১ থেকে ৫ শতাংশ
জলধারা কিংবা ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে মাটিতে পৌঁছে।
বিকিরণ রশ্মি অভিকর্ষ
আণবিক আকর্ষণ এবং
কৈশিক আকর্ষণ।
বাষ্পীভবন, আর্দ্র বায়ু,
ঘনীভ‚ত মেঘ।
অভিগ্রাহী।
সারণি ৩.২৮.১ : গ্রীষ্ম মন্ডলীয় এবং বৃষ্টিবহুল অঞ্চলের কাঠ জাতীয় গাছের পানি গ্রাহীতার তুলনা।
গড় পানি গ্রহন % জলধারা এবং ফোটায় ফোটায় নিঃসরণ % সার্বিক পানি গ্রহন %
ক্রান্তীয় বৃষ্টিবহুল বনভ‚মি (ব্রাজিল) ৬৭ ২৭ ৪০
স্বেত পাইন ৩০ ৪ ২৬
অ্যাসপিন / বার্চ ১৫ ৫ ১০
ভ‚-পৃষ্ঠের সঞ্চয় মূলত: জলীয় বাস্পাকারে ঝরা পাতা (খরঃঃবৎ) স্তরে, অবশেষ হিসাবে নীচুভ‚মিতে
এবং গতিময় অবস্থায় নদী নালায় থাকে। উচ্চ অক্ষাংশীয় বনভ‚মিতে ঝরা পাতা এর মধ্যে মোট
বারিপাতের শতকরা ৫ ভাগ, সাধারন নতির (ঝষড়ঢ়ব) ভ‚-ভাগের অতি আণুবীক্ষণিক নি¤œাঞ্চলে
(সরপৎড়ফবঢ়ৎবংংরড়হ) ৭ থেকে ১৩ মিলিমিটার পানি নি¤œভ‚মি আধার হিসাবে জমা থাকতে পারে।
মাটিতে শোষনের পর বাকী পানি প্রবাহিত হয়। মাটির পানি শোষন/চুঁইয়ে (ওহভরষঃৎধঃরড়হ) নির্ভর
করে উদ্ভিদের প্রকৃতি ও ঝরা পাতা (পত্রাবশেষ) এর মাত্রার উপর।
মাটিতে পানি কণামধ্য ফিল্ম (ঋরষস্র) এ জমা থাকে; এর কিছুখাড়াভাবে নি¤œ শিলায় ভিত্তি প্রবাহ
(নধংবভষড়)ি হিসাবে এবং আন্তগামী প্রবাহ (ঞযৎড়ঁময ভষড়)ি সম্পৃক্ত অথবা অসম্পৃক্ত অবস্থায়
প্রবাহিত হয়। সাধারনত প্রবেশ্য মাটির স্তর যখন নি¤œস্থ অপ্রবেশ্য শিলার উপর থাকে তখন খাড়া
প্রবাহের চেয়ে আন্তগামী প্রবাহ অনেক বেশী মাত্রায় হয়ে থাকে। পৃথিবীর জলচক্র এবং পানি সঞ্চয়
অবস্থাকে নি¤œ ছকে বিশ্লেষণ করা যায় (চিত্র ৩.২৮.২)।
চিত্র ৩.২৮.২ : পৃথিবীর পানি চক্র ও সঞ্চয়ন অবস্থা।
পানি সঞ্চয় ও জৈববিন্যাস কি?
উচ্চ অক্ষাংশ, ফিল্ম, অপ্রবেশ্য
শিলা, প্রবেশ্য শিলা অন্তগামী
প্রবাহ।
পাঠ সংক্ষেপ
পানিচক্র পদ্ধতিতে সমুদ্র থেকে বায়ু, স্থলভাগ ভ‚-অভ্যন্তর হয়ে পুনরায় সমুদ্রে ফিরে আসে।
পানি চক্রের চালিকা শক্তির মধ্যে বিকিরণ রশ্মি, অভিকর্ষ, আণবিক আকর্ষণ এবং কৈশিক
আকর্ষণ অন্যতম।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.২৮
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
সঠিক উত্তরটির পাশে টিক (√) চিহ্ন দাও (সময় ২ মিনিট) ঃ
১.১ পানি চক্র হচ্ছে -
ক) পানির বিরামহীন প্রবাহ খ) আর্দ্রতার বিরামহীন প্রবাহ
গ) পানি ও বাতাসের বিরামহীন প্রবাহ ঘ) পানি ও আর্দ্রতার বিরামহীন প্রবাহ
১.২ ভ‚-পৃষ্ঠের সন্নিকটে পানিচক্র পরিচালিত হয়ক) সূর্যালোকের শক্তি দ্বারা খ) বাস্পীভবন ও প্রস্বেদন দ্বারা
গ) আণবিক শক্তি দ্বারা ঘ) বৈদ্যুতিক শক্তি দ্বারা
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (সময় ২ * ৩ = ৬ মনিট) ঃ
১. পানিচক্র কি?
২. কি শক্তি দ্বারা পানিচক্র পরিচালিত হয়?
৩. পানি সঞ্চয় ও জৈববিন্যাস কি?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. পানিচক্র বলতে কি বুঝায়? পানিচক্রের শক্তি ও নিয়ামক কি কি? এ পদ্ধতিটি বিশ্লেষণ
করুন।
২. পৃথিবীর মোট পানি সঞ্চয়ন স্থান এবংচক্রে তার অবস্থান বর্ণনা করুন।
পাঠ ৩.২৯ : পৃথিবীতে পানি বন্টন (ডড়ৎষফ ধিঃবৎ ফরংঃৎরনঁঃরড়হ)
পানিবন্টন, সরবরাহ এবং নবায়ন (উরংঃৎরনঁঃরড়হ ড়ভ ধিঃবৎ ংঁঢ়ঢ়ষু ধহফ ৎবহবধিষ)
পানি যে অবস্থায়ই থাকুক যেমন, বরফ, তুষার, বৃষ্টি, নদী অথবা সমুদ্রে তরল, পৃথিবীতে এর মোট
পরিমাণ স্থির বা ধ্রæব।
পৃথিবীতে পানি বন্টন (ডড়ৎষফ ধিঃবৎ ফরংঃৎরনঁঃরড়হ)
পৃথিবীতে মোট পানি আছে ১.৫ বিলিয়ন ঘন কিলোমিটার অথবা ৩৯৬ বিলিয়ন গ্যালন। এর মধ্যে
মাত্র ০.০০৩ শতাংশ স্বাদুপানি, নদী-নালা, হ্রদ বা ভ‚-নি¤œস্থ আধারে আছে যা মানুষ বিশুদ্ধ পানি
হিসাবে ব্যবহার করতে পারে। বাকী ৯৯.৯৯৭ ভাগ পানি সরাসরি ব্যবহারের অনুপযোগী। পানির
বন্টন নি¤œ সারণিতে দেখানো হয়েছে।
সারণি ৩.২৯.১ : পৃথিবীতে পানি বন্টন ও শতকরা হার
স্থান আয়তন ১০১২
ঘনমিটার
শতকরা হার
স্থল ভাগে
স্বাদু হ্রদ
লবণাক্ত হ্রদ বা স্থলবেষ্টিত সাগর
নদী (গড় আয়তন)
মৃত্তিকাস্থ আর্দ্রতা
১২৫ ০.০০৯
১০৪ ০.০০৮
১২৫ ০.০০০৪
৬৭ ০.০০৫
ভ‚-নি¤œস্থ পানি
৪০০০ মিটারে উপরিস্থ ৮৩৫০ ০.৬১
বরফচ্ছাদন ও তুষার ২৯২০০ ২.১৪
স্থল ভাগের মোট পানি (পূর্ণসংখ্যা) ৩৭৮০০ ২.৮
বায়ু মন্ডলে (জলীয় বাস্প) ১৩ ০.০০১
সমুদ্রে ১৩২০০০০ ৯৭.৩
সর্বমোট (পূর্ণসংখ্যা) ১৩৬০০০০ ১০০
পৃথিবীতে পানি বন্টন অবস্থা কি রূপ?
পৃথিবীতে পানির ৯৭.১ ভাগ লবনাক্ত হ্রদ ও সমুদ্রে আছে যা চাষাবাদ বা পানের অযোগ্য, বাকী
২.৯ ভাগ পানি যদিও স্বাদুতবুও ব্যবহার উপযোগী নয়। এ পানি তুষারে, হিমশৈলে, জলীয়
বাস্পে, মাটিতে অথবা ভ‚-পৃষ্ঠের অতি গভীরে অবস্থান করে। এ পানির মাত্র ০.৩২ শতাংশ স্বাদু
পানি নদী-নালা, হ্রদ এবং ভ‚-পৃষ্ঠের তুলনামূলক কম গভীরে আছে। স্বাদুপানি লবণাক্ত পানির
চেয়ে পরিমাণে দ্রবীভ‚ত পদার্থ সম্বলিত হয়, তার মানে এ নয় যে, স্বাদু পানি মাত্রই গ্রহণ
১.৫ বিলিয়ন ঘন কি.মি. বা
৩৯৬ বিলিয়ন গ্যালন।
স্বাদু পানি মাত্রই গ্রহণ
উপযোগী নয়।
উপযোগী। যোগাযোগের অপ্রতুলতা এবং দূষিত হওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই পানি ব্যবহারের
অনুপযুক্ত হয়।
ছোট একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
মনে করি পৃথিবীতে মোট পানি আছে ১০ গ্যালন।
লবনাক্ত পানি বাদ দিলে স্বাদুপানি থাকবে ৪.৫০ কাপ।
এর মধ্যে হিমশৈল্য, তুষার আচ্ছাদন, মৃত্তিকাস্থ এবং জলীয় বাস্পস্থ জল হচ্ছে ৩.৫০ কাপ
অবশিষ্ট ১ কাপ থেকে দূষিত, দুস্প্রাপ্য অবস্থান, ব্যয়বহুল প্রাপ্যতা বাদ দিলে ব্যবহারযোগ্য স্বাদু
পানি থাকবে মাত্র ১ মিলিলিটার বা ১০ ফোঁটা।
এর পরিমাণও কিন্তুকম নয়, এ ক্ষুদ্রাংশই হচ্ছে ৪৫০০০ ঘন কিলোমিটার। এ যদি হয় বাস্তব
অবস্থা, তাহলে পৃথিবীতে পানির ব্যবহার সক্রিয় থাকছে কিভাবে? কথা হচ্ছে পানি চক্রের মাধ্যমে
স্বাদুপানি বিরামহীন ভাবে পরিক্রমিত ও নবায়িত হচ্ছে। নবায়নের বা পরিচক্রের সময় ও ধারাও
ভিন্নতর স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন। নি¤œ সারণিতে এ পর্যায়টি প্রদর্শিত হলো।
সারণি ৩.২৯.২ : পৃথিবীতে পানি সম্পদ, অবস্থান ও গড় নবায়িত সময়।
অবস্থান বিশ্বের পানির প্রবাহের
শতকরা হার
নবায়িত হতে গড় সময়
মহাসমুদ্র ৯৭,১৩৪ ৩১০০ বছর (৩৭০০০ বছর গভীর সমুদ্রে)
বায়ু মন্ডল ০.০০১ ৯ থেকে ১২ দিন
ভ‚-পৃষ্ঠের উপর
০.০১৫
০.০০৭
০.০০৯
০.০০০১
১৬০০০ বছর
১৬০০০ বছর
১০-১০০ বছর (গভীরতার উপর নির্ভর করে)
১০-১০০ বছর (গভীরতার উপর ভিত্তি করে)
১২-২০ দিন
ভ‚-পৃষ্ঠের ভিতর
#NAME?
- ভৌমজল (১ কি.মি. গভীরতা পর্যন্ত)
-১ কি.মি. থেকে ২ কি.মি. গভীরে
মোট
০.০০৩
০.৩০৩
০.৩০৩
১০০
২৮০ দিন
৩০০ বছর
৪,৬০০ বছর
এটা লক্ষণীয় যে মাত্র ০.০০০৯ শতাংশ পানি জৈবমন্ডল হয়ে নবায়িত হয়। পৃথিবীর পানি সম্পদের
নবায়নে সময় লাগে ১০ থেকে ৩৭০০০ বছর। শুধুমাত্র বায়ুমন্ডলের পানি নদী ও মৃত্তিকাস্থ পানি
নবায়িত হতে কম সময় নেয়। জীবিত অবস্থায় জৈব দেহেও জল নবায়িত হয়। গাছে, তার বৃদ্ধির
পুরো সময়টাতে অন্তত হাজার বার এবং মনুষ্য দেহের যে ৬৫ ভাগ জল তা প্রতিবছর অন্তত
কয়েকবার নবায়ন হয়।
স্বাদু পানির দুটি মূল উৎস হচ্ছে অতি অল্প সময়ে নবায়নক্ষম (১২-২০ দিন) নদী আর ধীর
নবায়নযোগ্য (৩০০ বছর) ভৌম জল (১ কি.মি. গভীরতা পর্যন্ত)। স্থল ভাগ থেকে যে পরিমাণ জল
বাস্পীভ‚ত হয় স্থলভাগে পতিত বারি তার থেকে মাত্র শতকরা দশ ভাগ বেশী। এ অতিরিক্ত জলই
নদ নদীর প্রবাহ সচল রাখে যার পরিমাণ বছরে প্রায় ৩৮০০০ ঘন কিলোমিটার অর্থাৎ প্রতিদিন
১০৪ ঘন কেিলামিটার। আসলে এ প্রবাহের বেশীর ভাগই মানুষের ব্যবহার আওতার বাইরে হয়।
পরিক্রমিত ও নবায়িত।
৮০ থেকে ৩৭০০০০ বছর।
ভৌম জল বারিপাতের ফলেই অনুস্রাব বা চুইয়ে জমা জলরাশি। ভৌম জল এভাবে ভ‚-গর্ভে
বালুকাময় শিলার কণামধ্য ফাঁকা স্থানে জমা হয়ে থাকে।
ভৌম জল স্তর (ডধঃবৎ ঞধনষব) হ্রদ, জলাভ‚মি বা বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে ভ‚-পৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি অথবা
পৃষ্ঠেই হয়ে থাকে। শুষ্ক অঞ্চলে ভৌমজল স্তর অনেক নীচুতে থাকে অথবা আদৌ থাকে না। এ
জলস্তরের নীচের পানি ধীর গতিতে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়, প্রবাহ মাত্রা নির্ভর করে উচ্চতা,
জলস্তরের সাথে সমুদ্র তলের অবস্থান, শিলার প্রবেশ্যতা (চবৎসবধনরষরঃু) ইত্যাদির উপর। স্বাদু
জলের প্রাপ্তির জন্য নলকুপ খনন করা হয়। যদি কুপটি আবদ্ধ ভৌমজলাধারে (ঈড়হভরহবফ
ধয়ঁরভবৎ) হয় তবে ভ‚-ত্বকের চাপে আপনা আপনিই জল নির্গত হবে। এ ধরনের কুপকে
আর্টেসিয়ান ক‚প (অৎঃবংরধহ ডবষষ) বলে। পৃথিবীতে সরবরাহকৃত স্বাদুজলের ৯৫ শতাংশ আসে
ভৌম জল থেকে।
নদী-নালা হ্রদ বা ভৌমজল প্রকৃত পক্ষে বারিপাতের মাধ্যমেই তাদের শূন্যতা পূরণ করে। গড়
বৃষ্টিপাতের মাত্রা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন। বৃষ্টির পানি দ্রবীভ‚ত ক্ষয়কার্য ও দ্রবীভ‚ত শিলা বা
মৃত্তিকা কণার মাধ্যমে দূষিত হয়, রাসায়নিক সংমিশ্রনেও স্বাদুপানি দুষিত হতে পারে।
স্বাদুপানির বন্টন নি¤œলিখিত বিষয় গুলির উপর নির্ভর করে:
১. জলবায়ুর ভিন্নতার ফলে বাস্পীভবনের ভিন্নতা হয়;
২. বাৎসরিক প্রবাহ বিভিন্ন মহাদেশে বিভিন্ন রকম হয়।
মোট বৃষ্টিপাতের গড় ৩৩ থেকে ৪২ শতাংশ পানি নদীজ বা ভৌমজলের মাধ্যমে সমুদ্রে পড়ে।
বাস্পীভবন বহুল অঞ্চলে এ মাত্রা আরো কম হতে পারে।
পানি নবায়ন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
পানি চক্রের বহুমুখীতা ও জৈব বিন্যাসে ভ‚মিকা
(উরাবৎংরড়হ ড়ভ ঃযব ঐুফৎড়ষড়মরপধষ ঈুপষব ধহফ ৎড়ষব রহ ঘঁঃৎরবহঃ ফরংঃৎরনঁঃরড়হ)
পানি চক্রে অংশগ্রহনকারী সার্বিক প্রক্রিয়ায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বিভিন্ন রূপে পানির চলনের
মোটামুটি হিসাব নি¤œ সারণিতে প্রদর্শিত হলো:
সারণি ৩.২৯.৩ : পানি চলন প্রক্রিয়া ও তার পরিমাণ
পানি চলন প্রক্রিয়া ঘন কিলোমিটার (কস৩
)
বিশ্ব ব্যাপী বার্ষিক বারিপাত ৫২৫২০০
সমুদ্রে বারিপাত ৪১১৬০০
স্থলভাগে বারিপাত ১১৩৬০০
পৃষ্ঠ প্রবাহ বা উষ্ণতলে ভৌম পানি ৪১০০০
বন্যা ছাড়া স্থায়ী প্রবাহ ১৪০০০
লোকালয়ে কিছু পতিত পানি ৫০০০
মানুষের ব্যবহার উপযোগী ৯০০০
প্রকৃত ভিন্নমূখী পরিবর্তন ৩৫০০
মানুষের মাধ্যমে পরিবর্তন ৫০০০
আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহৃত
স্বাদু পানির ৯৫% আসে
ভৌমজল থেকে শিলার
প্রবেশ্য অটোসয়ান কুপ।
স্থান ও রূপ-এর ভিন্নতায়।
ভ‚-গঠন বৈচিত্র্যে তিনটি মূল শক্তি কাজ করে থাকে। এদের বিন্যাস হচ্ছে।
১. সৌরশক্তি (ঝড়ষধৎ ঊহবৎমু);
২. পর্বত বা ঢালে জলশক্তি (ঐুফৎড়ঢ়ড়বিৎ);
৩. পুষ্টি চক্রের শক্তি বা জৈবিক ক্রিয়াজাত শক্তি (ঘঁঃৎরবহঃ ঊহবৎমু)।
এ শক্তি গুলির মূল হচ্ছে সৌরশক্তি। জলশক্তি জৈবশক্তির বিন্যাসকে সূচারু রূপে নিয়ন্ত্রণ করে।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যে পৃথিবীর জৈব বিন্যাস স্বাদুপানির প্রবাহ এবং স্থলভাগও সমুদ্রের
সংযোগ অঞ্চলে নিবিঢ় হয়ে থাকে। মরুতে যেমন খুব কম বৃক্ষ জ¤œায়, তেমনি শৈল শিখরেও
জীবের সহজাত প্রকৃতি পরিলক্ষিত হয় না । মোট কথা শক্তি সমুহ একে অপরের উপর নির্ভর ও
সমতা বিধান করে চলে।
জৈব বিন্যাসে পানিচক্রের ভ‚মিকা কি?
পাঠ সংক্ষেপ
পৃথিবীতে মোট পানির পরিমাণ ৩৯৬ বিলিয়ন গ্যালন বা ১.৫ বিলিয়ন ঘন কি. মি.। এ বিপুল
পরিমাণ পানির মাত্র ০.৩২ শতাংশ পানি নদী-নালা, হ্রদ এবং ভ‚-পৃষ্টের কম গভীরতায় আছে
এবং ৯৭.১ ভাগ পানি লবনাক্ত হ্রদ ও সমুদ্রে যা চাষাবাদ ও পানের অযোগ্য।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.২৯
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১। সঠিক উত্তরটির পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন (সময় ২ মিনিট) ঃ
১.১ স্বাদুপানি মোট পানির -
ক) ৯৭% খ) ২.৯%
গ) ০.৬২% ঘ) ০.২৬%
১.২ভ‚-গঠন বৈচিত্র্যে কার্যকরী মূলশক্তি নয়ক) সৌর শক্তি খ) পারমানবিক শক্তি
গ) জৈবিক ক্রিয়াজাত শক্তি ঘ) পর্বত ঢালে জলশক্তি
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (সময় ২ * ৩ = ৬ মনিট) ঃ
১. পৃথিবীতে পানি বন্টন অবস্থা কিরূপ?
২. পানি নবায়ন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
৩. জৈব বিন্যাসে পানিচক্রের ভ‚মিকা কি?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. পানি বন্টন, সরবরাহ ও নবায়ন সম্পর্কে আলোচনা করুন।
২. জৈব বিন্যাস ও ঘনত্বে পানিচক্রের যোগসূত্র/প্রভাব কি?
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ