প্রাণী-বাস্তব্যবিদ্যা কি? প্রাণীজগতের শেণীবিভাগ ও প্রকৃতি প্রাণীর জীবন চরিত্র

প্রাণীজ বন্টনে জলবায়ুও উদ্ভিদের ভ‚মিকা কি?
প্রাণীর ভৌগোলিক বলয়
প্রাণীর বণ্টন বিন্যাস ও কারণ


প্রাণিজ বাস্তব্যবিদ্যা
প্রাণিজ বাস্তব্য বিদ্যার প্রধান আলোচ্য বিষয় প্রাণীর বন্টনে পরিবেশের প্রভাব সম্পর্কে ধারণা লাভ
করা। ভ‚গোলবিদ্যার জ্ঞানের এই শাখায় পরিবেশের সাথে প্রাণীর সম্পর্কে অবগত হওয়ার চেষ্টা
করে থাকে।
প্রাণীর শ্রেণী বিভাগ ও প্রকৃতি
প্রাণীজগৎকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করা হয়- মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী। মেরুদন্ডী প্রাণীর স্পাইনাল
দন্ড ও মস্তিষ্ক আছে এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর কোন স্পাইনাল দন্ড নাই। জীব বিজ্ঞানীগণ প্রাণীকে
অবশ্য তিনটি উপভাগে ভাগ করেন। এগুলো: প্রোটোজোয়া, প্যারাজোয়া ও মেটাজোয়া।
প্রোটোজোয়া এক কোষী জীব, প্যারাজোয়া নি¤œশ্রেণীর জীব, তবে মেটাজোয়া বহুকোষি এবং
বিশেষায়িত শরীর কোষ ও বিশেষ অঙ্গ নিয়ে গঠিত।
মেরুদন্ডী প্রাণীকে ৬ ভাগে ভাগ করা হয়:
সাইক্লোসেটামাটা (প্রায় ১০টি প্রজাতি)
মৎস্য (প্রায় ২০,০০০ প্রজাতি)
উভচর (প্রায় ২,৮০০ প্রজাতি)
সরীসৃপ (প্রায় ৭,০০০ প্রজাতি)
পাখি (প্রায় ৮,৬০০ প্রজাতি)
স্তন্যপায়ী (প্রায় ৫,০০০ প্রজাতি)
প্রাণীজগতে মেরুদন্ডী প্রাণী তার গঠন কাঠামোর সুবিধার কারণে সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনকভাবে
প্রকৃতিতে টিকে আছে।
প্রাণীর বিভিন্ন শ্রেণী কি কি?
প্রাণীর জীবন চরিত্রের সাধারণ বৈশিষ্ট্যাবলী
প্রাণীর বৈশিষ্ট্য
প্রাণীর দুটো বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এর বুদ্ধিমত্তা ও বিচরণ ক্ষমতা আছে, যা উদ্ভিদের নাই। প্রাণীর এ
গুণাবলী থাকায় সে নিজেকে বিপদ থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে পারে যা উদ্ভিদ পারে না। প্রাণীর
আরো দুটো বৈশিষ্ট্য আছে যা উল্লেখযোগ্য। প্রাণীর ধরন অনেক বৈচিত্র্যময় এবং এর বন্টন অনেক
জটিল।
প্রোটোজোয়া, প্যারাজোয়া,
মেটাজোয়া।
মেরুদন্ডী, অমেরুদন্ডী প্রাণী।
বৃদ্ধিমত্তা ও বিচরণ ক্ষমতা।

প্রাণী খাপ খাওয়াতে পারে
উদ্ভিদের ন্যায় প্রাণী ও বিশেষ পরিবেশে বা জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্যের আলোকে নিজেকে খাপ
খাওয়ানোর চেষ্টা করে থাকে। যেমন, যে সমস্ত প্রাণী গর্তে থাকে সেগুলো সাধারণত: নিশাচর এবং
শীতকালে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। বহু প্রাণী উপকুলে বা পানির কাছাকাছি বসবাস করতে পছন্দ
করে। কারণ সহজেই সেখানে খাবার পাওয়া যায়। কিছুকিছুপাখি পানি থেকে খাবার যোগাড় করে
আর বাস করে ডাঙ্গায়। বাঁচার তাগিদে প্রয়োজনে পাখি শত শত মাইল উড়ে সুবিধাজনক পরিবেশে
আশ্রয় নেয়। বহু প্রাণী গাছের ডালে চড়ে বেড়াতে অভ্যস্থ। এই সমস্ত প্রাণীর শারীরিক গঠন এমন
যে এগুলো শুন্যেই এক গাছ থেকে অন্য গাছে অনায়াসে লাফিয়ে যেতে পারে। যেমন- হনুমান,
বানর। এই সমস্ত প্রাণী ফল-মূল ও পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে।
আকার ও বর্ণ
প্রাণীর আকার ও বর্ণ অত্যন্ত বৈচিত্রময় ও আকর্ষণীয় যা প্রাণীকে সহজেই প্রকৃতিতে নিজেকে রক্ষার
ক্ষেত্রে কাজে লাগায়। বহু প্রাণী কোন বিপদ টের পেলেই নিজেকে তাৎক্ষণিক ভাবে গুটিয়ে নিতে
পারে নতুবা অত্যন্ত শান্তভাবে মিশে থাকার চেষ্টা করে। প্রাণী তার গাত্র বর্ণকে লুকানোর কাজে
ব্যবহার করে থাকে। আবার কখনও প্রাণী শত্রট্টকে ভয় দেখায় এবং আক্রমণের ভান করে। কোন
কোন প্রাণী দ্রæত এর গাত্র বর্ণ পাল্টাতে সক্ষম হয়।
প্রাণীর বৈশিষ্ট্য কি কি?
প্রাণীর বন্টনে জলবায়ুও উদ্ভিদের প্রভাব
পৃথিবীর জলভাগ ও স্থলভাগে অত্যন্ত বিস্তৃতভাবে প্রাণী ছড়িয়ে আছে। কিন্তুএতদসত্তে¡ একটি
নির্দিষ্ট প্রজাতির প্রাণী দুটি প্রধান শর্ত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যথা: ক) গম্যতা এবং খ) টিকে থাকার
মত উপযোগী পরিবেশ।
জলবায়ু
জলবায়ুর অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আর্দ্রতা, উষ্ণতা, আলো এবং বায়ুবিশেষ ভ‚মিকা রাখে। জলজ প্রাণী
ছাড়াও স্থলভাগের প্রাণীকুল ও পানির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। কিছুপ্রাণী অত্যন্ত আর্দ্র বা
ভেঁজা স্যাত-স্যাতে পরিবেশে বসবাস করে থাকে আবার অন্যরা শুষ্ক পরিবেশ পছন্দ করে। বহু
প্রাণী উভচর হিসাবে জীবন যাপন করে থাকে। যেমন: মহিষ, শামুক।
উষ্ণতা একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক যা প্রাণীকে প্রভাবিত করে। সাধারণত: প্রাণী শূন্য ডিগ্রী (০ºঈ)
থেকে সর্বোচ্চ ৫০º সে. পর্যন্ত সহ্য করতে পারে। তবে বহু প্রাণী আছে কম উষ্ণতায় তাদের
কার্যাবলী থামিয়ে দেয় বরং সে অবস্থায় নিষ্ক্রিয় থাকে।
উদ্ভিদের ন্যায় প্রাণী সুর্যালোকের উপর সরাসরি ততটা নির্ভরশীল নয়। যে সমস্ত প্রাণী গুহায়,
অন্ধকারে বা গভীর পানির তলদেশে বাস করে তারা সুর্যালোক ছাড়াই সম্পূর্ণ জীবন কাটিয়ে দিতে
পারে। তবে, বেশির ভাগ প্রাণীরই আলোর প্রয়োজন হয়। অধিক আলো কিছু প্রাণীর জন্য
ক্ষতিকর। যেমন- মরুভ‚মি ও অধিক উচ্চতায় প্রাণী সূর্যালোক থেকে রক্ষার জন্য গাঢ় বর্ণ ধারণ
করে থাকে। ভাইরাস, পরজীবি, ফাঙ্গাস স্পোর এবং বহু অনুবীক্ষণিক জীব সূর্যের অতিবেগুনী
রশ্মিতে মারা যায়।
প্রাণী বন্টনে জলবায়ুর ভ‚মিকা কি?
বিশেষ পরিবেশ ও
জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য।
বৈচিত্রময় ও আকর্ষণীয়।
গম্যতা ও পরিবেশ।
উষ্ণতা ০০
থেকে ৫০০
সে.
পর্যন্ত। কম উষ্ণতায় নিস্ক্রিয়।
সূর্যের অতি বেগুণী রশ্মি।

উদ্ভিজ্জ
উদ্ভিদ প্রাণীকে দুইভাবে প্রভাবিত করে থাকে। ক) সুনির্দিষ্ট আবাস স্থলের পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং
খ) আহার যোগায়।
বহু প্রাণী একটি সুনির্দিষ্ট পরিবেশে খাপ খাওয়াতে পারে। যেমন, বনভ‚মির প্রাণী, তৃণভ‚মির প্রাণী;
আবার কিছুপ্রাণী যেগুলো সব পরিবেশেই নিজেকে মানিয়ে নেয়। যে সব প্রাণী তৃণভ‚মিতে অভ্যস্থ
তারা গহীন বনভ‚মিতে টিকবে না। প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য যে খাবার যোগাড় করে থাকে তা
সরাসরি বা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদই যোগান দেয়। কিছুপ্রাণী তৃণভোজী যেমন: ঘোড়া, এন্টেলোপ,
গরু, ছাগল, মহিষ, কিছুমাংসাসী। যেমন: বাঘ, সিংহ।
প্রাণী বন্টনে উদ্ভিদের ভ‚মিকা কি?
প্রাণীজ ভৌগোলিক বলয়
উদ্ভিজ্জের ন্যায় প্রাণীর নির্দিষ্ট আবাস স্থলের সীমানা সহজ নয়। কারণ প্রাণীর যেখানে জ¤œ
সেখানেই সারা জীবন না কাটিয়ে অনত্র অভিগমন করতে পারে। আবার বহু প্রাণী গ্রীষ্মকালে
যেখানে বাস করে শীতকালে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। ফলে এ সমস্ত প্রাণীর আবাস ভ‚মির
সঠিক সীমানা নির্ধারণ করা অসুবিধাজনক।
এতদসত্বেও পৃথিবী ব্যাপী প্রাণী জগতের একটি সরল বন্টন চিত্র তুলে ধরা যায় (চিত্র ৩.৩৩.১), যা
মূলত: প্রাণীর বিবর্তন কেন্দ্রসমূহ দেখাতে সহায়ক হবে। তাছাড়া প্রাণীর বন্টনে যে সমস্ত প্রাকৃতিক
বাঁধা আছে তারও প্রতিফলন দেখা যাবে। চিত্রে লক্ষ্যনীয় যে, বেশ কিছুপ্রাণীজ ভৌগোলিক বলয়
উচ্চ পর্বত (হিমালয়), বিস্তৃত মরু প্রান্তর (সাহারা, আরব), গভীর সমুদ্রখাত (ইন্দোনেশিয়া) এবং
সংকীর্ণ ভ‚সংযোগ (কেন্দ্রিয় আমেরিকা) এর সীমানার সাথে মিশে আছে।
প্রাণীজ ভৌগোলিক বলয় কেমন?
পি.এল. স্কেলেটার নামক একজন জীববিজ্ঞানী ১৮৫৭ সালে প্রথম পৃথিবীকে প্রাণীজ ভৌগোলিক
বলয়ে ভাগ করার উদ্যোগ নেন। এই বিভাজনের প্রধান ভিত্তি ছিল বিভিন্ন অঞ্চলের পক্ষী
বৈচিত্র্যতা। তিনি পৃথিবীকে ৬টি পক্ষীজগতে ভাগ করেন। পরবর্তীতে ১৮৭৬ সালে এ.আর.
ওয়ালেস বিষয়টি আরো এগিয়ে নিয়ে যান এবং স্কেলেটার-এর মানচিত্র কিছুটা সংস্কার সাধন
করেন। এখনও স্কেলেটার ও ওয়ালেস-এর তৈরিকৃত মানচিত্র অনসুরণ করা হয় (চিত্র ৩.৩৩.১)।
ছয়টি প্রাণীজ ভৌগোলিক বলয় নি¤œরূপ:
ক. প্যালআর্কটিক, যা ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও এশিয়ার (দ. ও দ. পূর্ব বাদে) অংশ জুড়ে
বিস্তৃত;
খ. নিয়ারআর্কটিক, যা প্রায় পুরো উ. আমেরিকা, গ্রীনল্যান্ড এবং আইসল্যান্ড জুড়ে আছে;
গ. নিউট্রপিক্যাল, যা প্রায় পুরো দ. আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকা নিয়ে গঠিত;
ঘ. ইথিওপিয়ান, যা আফ্রিকা, দ. সাহারা ও মাদাগাসকার দ্বীপ অন্তভর্‚ক্ত;
আবাসস্থাল ও আহার।
নিউট্রপিক্যাল বলয়।
পি.এল স্কেলেটার-১৮৫৭।

ঙ. অরিয়েন্টাল, যা দ. এশিয়া, দ. পূর্ব এশিয়া এবং কিছুইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জ জুড়ে বিস্তৃত;
এবং
চ. অষ্ট্রেলিয়ান, যা অষ্ট্রেলিয়া, তাসমেনিয়া, নিউজিল্যান্ড, নিউগিনি ও ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয়
দ্বীপ সমূহ নিয়ে গঠিত।
উপরোল্লেখিত ছটি বলয়ের মধ্যে ইথিওপিয়ান বলয়ে প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এবং
বহু প্রজাতি শুধুমাত্র এ বলয়েই সীমাবদ্ধ। কিছুকিছুপ্রজাতির অনুরূপ বা নিকট আত্মীয় অন্য
বলয়েও দেখা যায়। যেমন: সিংহ ও হাতী এই বলয়ের ন্যায় ওরিয়েন্টাল বলয়েও দেখা যায়।
মাদাগাসকার দ্বীপের প্রাণীকুলের সাথে পূর্ব আফ্রিকায় চরে বেড়ান প্রাণীর কোন মিল নেই।
আফ্রিকার এত কাছে অবস্থিত হয়েও মাদাগাসকার দ্বীপের প্রাণীর সাথে কেন সাযুজ্য নেই তা স্পষ্ট
নয়।
প্রাণীজ ভৌগোলিক বলয়ের ভিত্তি কি?
চিত্র ৩.৩৩.১ : প্রাণীজগতে সরল বন্টন চিত্র।
অস্ট্রেলীয় বলয়ের প্রাণীকুলের সমাবেশে দীর্ঘ দিনের বিচ্ছিন্নতা ও পৃথক বিবর্তনের একটি চিত্র
প্রতিফলিত হয়। এ বলয়ে মারসুপিয়ালস (যেমন: ক্যাঙ্গারু ও ওমবাট) ও তাসমেনিও বাঘের
আবাসস্থল। কোন কোন জীব ভ‚গোলবিদ নিউজিল্যান্ডকে অষ্ট্রেলীয় বলয়ের সাথে একত্রীভুত করার
পক্ষপাতি; অন্যরা মাদাগাসকারের ন্যায় পৃথক ভাবেই দেখতে আগ্রহী। এর অবশ্য বেশ কিছুকারণ
আছে। যেমন, নিউজিল্যান্ডের প্রাণীজগতে কোন স্তন্যপায়ী নেই, অত্যন্ত স্বল্প সংখ্যক স্থলজ
মেরুদন্ডী আছে যা কোন ভাবেই অষ্ট্রেলিয়ার সাথে শুধুমাত্র পাখি ছাড়া তুলনা করা যায় না।
নিউজিল্যান্ড বহু ধরনের প্রাণীর আবাসস্থল, যার অনেকগুলোই উড়তে পারে না।
নিউট্রপিক্যাল বলয়েও যথেষ্ট বৈচিত্র্যময় প্রাণীর প্রজাতি আছে, যেমন: শুকরের ন্যায় দেখতে টাপির
(ঞধঢ়রৎ), জাগুয়ার ও বোয়া কনসট্রিকটর। উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ের ক্ষেত্রেই জীব ভ‚গোলবিদগণ
অভিসরণ বিবর্তন মতবাদ এক্ষেত্রে বিবেচনা করে থাকেন। এ মতবাদে বিশ্বাস করা হয় যে দুটো
সম্পুর্ণ বিচ্ছিন্ন বলয়ে প্রাণী বা উদ্ভিদ বৈচিত্র্যময় উৎস থেকে জ¤œ নিলেও একই ধরনের আবাসস্থলে
তাদের খাপ খাওয়ানোর কৌশলও একই রকম।
৬টি বলয়। ইথিওপিয়ান
বলয়ে প্রজাতি সবচেয়ে
বেশি।
অস্ট্রেলিয় বলয় দীর্ঘদিনের
বিচ্ছিন্নতা ও পৃথক বিবর্তন।
নিউট্রপিক্যাল বলয়-অভিসরন
বিবর্তন মতবাদ।

আর্কটিক নিকটবর্তী ও মেরু-আর্কটিক বলয় সমূহে প্রজাতির বৈচিত্রতা তুলনামূলকভাবে অনেক
কম। তাই কিছুকিছুজীব ভ‚গোলবিদ উভয়কে একটি বলয় হিসাব বিবেচনা করতে আগ্রহী। এ
বলয়ের প্রাণীকুলের প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়ানোর কৌশল উল্লেখ করার মত। যেমন উভয়
বলযের মেরু ভাল্লুক, সাইবেরীয় বাঘ ও বৃহৎ পান্ডা (পেলআর্কটিক) এবং বাইসন ও পর্বত সিংহ
অত্যন্ত প্রতিক‚ল আবহাওয়ায় নিজেদের টিকিয়ে রাখতে সমর্থ হয়েছে। চিত্র ৩.৩৩.১-এর মাধ্যমে
পৃথিবীর প্রাণীজ ভৌগোলিক বলয় সমূহের বন্টন অত্যন্ত সরলীকৃতভাবে দেখানো হয়েছে। এসব
বলয়ের বহু উপভাগ সম্ভব যার মাধ্যমে প্রাণী সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার সুযোগ হবে।
উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা যায়, অষ্ট্রেলিয়ান বলয়কে। অষ্ট্রেলিয়ার প্রাণীকুলের সাথে নিউগিনির
প্রাণীর অনেক মিল থাকলেও বৈসাদৃশ্যও অনেক আছে যার জন্য এ বলয়কে দুটো পৃথক বলয়ে ভাগ
করা সম্ভব।
প্রাণীর বন্টন বিন্যাস ও কারণ
উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্থানিক বন্টন নি¤œলিখিত কারণে অসীম নয়:
ক. বিভিন্ন প্রজাতির বিস্তরণ ক্ষমতা বিভিন্ন রকম;
খ. প্রজাতির বিস্তরণ সব দিকে সমান ভাবে হয় না;
গ. প্রজাতির গঠন বৈশিষ্ট্যের কারণে ও অন্যত্র গমন সীমাবদ্ধ হয়ে যায়;
ঘ. প্রাকৃতিক অবস্থা ও বিস্তরণে একটি বাঁধা হিসাবে কাজ করে; এবং
ঙ. জৈব পরিবেশের কারণে সীমাবদ্ধ বিস্তরণ হতে পারে।
যে কোন প্রাণীর বন্টনই মূলত: নির্ধারিত হয় যে প্রজাতির বিস্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় মাধ্যম ও
পদ্ধতির অধিকারী কিনা এবং প্রাকৃতিক ও জৈব বাধা দূর করে অগ্রসর হওয়ার জন্য কতখানি সমর্থ
তার উপর।
জীববিজ্ঞানীগণ প্রাণীর বর্তমান বন্টন বিন্যাসের ক্ষেত্রে নি¤œলিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন:
ক. শক্তিশালী প্রজাতি সমূহ পর্যায়ক্রমিক ভাবে পৃথিবীর বৃহৎ ও সবচেয়ে সুবিধাজনক অংশে
অবস্থান গড়ে তুলেছে; তা হলো পুরাতন পৃথিবীর স্থলভাগের ক্রান্তীয় অংশে;
খ. মেরুদন্ডী প্রাণীক‚লের বিস্তরণের প্রধান ধারা বৃহৎ অঞ্চল থেকে ক্ষুদ্র অঞ্চলে এবং খুবই
সুবিধাজনক থেকে অসুবিধাজনক এলাকার দিকে অগ্রসর হয়েছে।
গ. প্রাণীর বিস্তরণ তিনটি প্রধান দিক ভিত্তিক ধারায় সংঘটিত হয়:
১. দক্ষিণ আমেরিকার উপমেরু অভিমুখী;
২. ক্রান্তীয় এশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া অভিমুখী; এবং
৩. পুরাতন পৃথিবীর ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে ইউরেশিয়ার মাধ্যমে উত্তর আমেরিকায় এবং
সেখান থেকে দক্ষিণ আমেরিকা।
ঘ. প্রাণীর বিস্তরণে বাঁধাদানকারী নিয়ামকসমূহ: যেমন- প্রাকৃতিক বাঁধা এবং ভৌগোলিক
বিচ্ছিন্নতা, পুরাতন প্রজাতি সমূহকে টিকে থাকতে সাহায্য করেছে, যেমন অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ
আমেরিকায় ঘটেছে।
খাপ খাওয়ানোর কৌশল
উল্লেখ করার মত।
বিস্তরণ ক্ষমতা সমান নয়,
গঠন প্রকৃতিক অবস্থা জৈব
পরিবেশ।
ক্রান্তীয় অংশ, বৃহৎ অঞ্চল
থেকে ক্ষুদ্র অঞ্চলে, ৩টি প্রধান
দিক, প্রাণীর বিস্তরণে
বাঁধাদানকারী নতুন শক্তিশালী
প্রজাতি।

ঙ. নতুন শক্তিশালী প্রজাতির আগমন ও বিস্তারের সাথে সাথে পুরাতন প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটতে
থাকে। এ ধরনের প্রতিস্থাপন সাধারণ প্রজাতির প্রাথমিক বিস্তরণ কেন্দ্র থেকে বহির্গামী হয়; ফলে
সব সময় প্রজাতির বন্টন বিন্যাসে একটি বহির্গামী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়।
প্রাণীর বন্টন বিন্যাসের কারণ কি?
পাঠ সংক্ষেপ
প্রাণীর বন্টনে পরিবেশের প্রভাব সম্পর্কে ধারণা লাভ করা প্রাণীজ বাস্তব্য বিদ্যার প্রধান
আলোচ্য বিষয়। প্রাণীজগৎকে মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী এ দুই শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। প্রাণীর
দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- এর বুদ্ধিমত্তা ও বিচরণ ক্ষমতা যা উদ্ভিদের নাই। গম্যতা ও
টিকে থাকার মত উপযোগী পরিবেশ এ দুটি শর্ত দ্বারা প্রাণীর অস্তিত্ত¡ ও বিকাশ নির্ভরশীল।
জীব ভ‚গোলবিদগণ পৃথিবীর প্রাণীজ আবাসভ‚মিকে ছয়টি ভৌগোলিক বলয়ে ভাগ করেন; যথা
প্যাল আর্কটিক, নিয়ারআর্কটিক, নিউট্রপিক্যাল, ইথিওপিয়ান, অরিয়েন্টাল ও অষ্ট্রেলিয়ান।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.৩৩
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১. সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন (সময় ৫ মিনিট) ঃ
১.১ প্যারাজোয়াক. নি¤œ শ্রেণীর বহুকোষী জীব খ. নি¤œ শ্রেণীর জীব
গ. নি¤œ শ্রেণীর অকোষী জীব ঘ. বহুকোষী ও বিশেষ অঙ্গ নিয়ে গঠিত জীব
১.২ উদ্ভিদ প্রাণীকুলকে সাহায্য করেক. বাসস্থান ও আহার দিয়ে খ. আহার দিয়ে
গ. জলবায়ুদিয়ে ঘ. আহার ও কর্মসংস্থান দিয়ে
১.৩ ১৮৫৭ সালে পৃথিবীকে পক্ষী বলয় বৈচিত্র্যের প্রথম ভাগ করেনক. এ. আর ওয়ালেস খ. পি. এল ও
গ. পি. এল স্কেলেটার ঘ. লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চি
১.৪ স্কেলেটার ও ওয়ালেস এর মানচিত্রানুযায়ী প্রাণীজ ভৌগোলিক বলয়ক. ৫টি খ. ৪টি
গ. ৭টি ঘ. ৬টি

১.৫ নিউজিল্যান্ডের প্রাণীজগতে কোনোক. প্রাণী নেই খ. সরীসৃপ নেই
গ. স্তন্যপায়ী নেই ঘ. উভচর নেই
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (সময় ২ী৮ = ১৬ মিনিট) ঃ
১. প্রাণীজ বাস্তব্যবিদ্যা কি?
২. প্রাণীর বিভিন্ন শ্রেণী কি কি?
৩. প্রাণীর বৈশিষ্ট্য কি কি?
৪. প্রাণী বন্টনে জলবায়ুর ভ‚মিকা কি?
৫. প্রাণী বন্টনে উদ্ভিদের ভ‚মিকা কি?
৬. প্রাণিজ ভৌগোলিক বলয় কেমন?
৭. প্রাণিজ ভৌগোলিক বলয়ের ভিত্তি কি?
৮. প্রাণীর বন্টন বিন্যাসের কারণ কি?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. প্রাণী-বাস্তব্যবিদ্যা কি? প্রাণীজগতের শেণীবিভাগ ও প্রকৃতি বর্ণনা করুন। প্রাণীর জীবন চরিত্র
সম্পর্কে আলোচনা করুন।
২. প্রাণীজ বন্টনে জলবায়ুও উদ্ভিদের ভ‚মিকা কি?
৩. প্রাণীর ভৌগোলিক বলয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করুন।
৪. প্রাণীর বণ্টন বিন্যাস ও কারণ বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]