মানব-পরিবেশ দৃষ্টিভঙ্গি
হামবোল্ডের একত্ব বা সামগ্রিকতাবাদ কি?
প্রাকৃতিক ভ‚গোলে ডারইউনের ধারণার গুরুত্ব আলোচনা করুন।
বৈজ্ঞানিক নিমিত্তবাদ বলতে আপনি কি বুঝেন?


ভুগোল শব্দটির মধ্যেই এই বিষয়টির প্রতিপাদ্য বিষয় প্রতিফলিত। সুতরাং ভূগোল পাঠের মধ্যে
পৃথিবীর পরিবেশ সম্পর্কিত আলোচনা প্রথমত: প্রাসঙ্গিক এবং দ্বিতীয়ত: গুরুত্বপূর্ণ। ভ‚গোল
বিষয়টির উৎপত্তি, বৈশিষ্ট্য এবং তার প্রতিফলন কোন আকষ্মিক ঘটনা নয়। একটি নির্দিষ্ট বিষয়
হিসাবে ভ‚গোলের ঐতিহ্য আড়াই হাজার বছরেরও অধিক। প্রাকৃতিক বিশ্বকে ঘিরে মানুষের
সর্বপ্রাচীন যে সব আগ্রহ সম্পর্কে নিদর্শন পাওয়া যায় তার মধ্যে প্রধানত: পর্যবেক্ষন ও দুরকল্পনা
উল্লেখ করা যেতে পারে এবং এ দুই বিষয়ই ছিল ভৌগোলিক প্রকৃতি সম্পর্কিত। প্রাথমিকভাবে
পৃথিবী ও তার বিভিন্ন অংশের সকল প্রকার বিবরণই ছিল ভ‚গোলের বিষয়বস্তু। ক্রমান¦য়ে মূল শিকড়
থেকে বিভিন্ন ভাবধারা ও জ্ঞানের দৃষ্টিতে ভ‚গোলের বিভিন্ন বিষয়বস্তু নির্মিত হয়। ক্লাসিক্যাল এবং
রেঁনেসার ভ্রমন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত পরিবেশ বিদ্যা হিসাবেও ভ‚গোল বিশিষ্ট ভ‚মিকা রেখেছে।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভ‚গোল বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বিষয় হিসাবে আতœপ্রকাশ করে। ১৮২০ সালে
বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ভ‚গোল বিষয়ের প্রফেসর পদ সৃষ্টি করা হয়। সমকালীন আধুনিক
ভ‚গোলের বিকাশের প্রাথমিক পর্যায় থেকেই মুখ্য বিষয় বা কেন্দ্রবিন্দুহিসাবে “মানব পরিবেশ
সম্পর্ক” আতœপ্রকাশ করে। সুতরাং যেহেতুভ‚গোল পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রাকৃতিক এবং মানবিক বিষয়াবলীর
সম্পর্ক বা আÍ-সম্পর্ক সূচিত করে। তাই স্বাভাবিকভাবেই মানব পরিবেশ সম্পর্কিত বিষয়ের প্রশ্নটিও
ভ‚গোলের আওতায় এসে যায়। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ভ‚গোল শাস্ত্রের সার্বিক
বিকাশে ভ‚গোলবিদগন প্রতিটি পদক্ষেপে ক্রমাগত চেষ্টা করেছেন একটি সংজ্ঞা প্রদানের জন্য কিন্তু
যাঁরা প্রচলিত প্রথা অনুসারে ভ‚গোলের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তাঁরা অনেককেই সন্তুষ্ট করতে
পারেননি। তবে কতকগুলো সর্বজনীন চিহ্নিত উপাদান সম্পর্কে ভ‚গোলবিদগন একমত। এরূপ
একটি বিস্তারিত ক্ষেত্রে ঐক্যমতের প্রেক্ষিতে ভ‚গোলের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটেছে। এই
দৃষ্টিভঙ্গিগুলি হলক. মানব পরিবেশ দৃষ্টিভঙ্গি বা ঞযব গধহ-ঊহারৎড়হসবহঃ ঞযবসব;
খ. আঞ্চলিক যৌগ বিশ্লেষণ দৃষ্টিভঙ্গি বা ঞযব অৎবধষ-উরভভবৎবহঃরধঃরড়হ ঞযবসব;
গ. পারিসরিক বিশ্লেষণ দৃষ্টিভঙ্গি বা ঞযব ঝঢ়ধঃরধষ উরংঃৎরনঁঃরড়হ ঞযবসব;
ঘ. ভ‚-বিজ্ঞান দৃষ্টিভঙ্গি বা ঞযব খধহফংপধঢ়ব ঞযবসব;
ঙ. আচরনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি বা ঞযব ইবযধারড়ৎধষ ঞযবসব;
চ. প্রত্যক্ষবাদ বা রূপবাদ দৃষ্টিভঙ্গি বা ওফবধষরংঃরপ ঞযবসব;
ছ. কল্যানমুখী ও বৈপ্লবিক দৃষ্টিভঙ্গি বা চৎড়মৎবংংরাব ধহফ জবাড়ষঁঃরড়হধৎু ঞযবসব.
পরবর্তী ৫টি পাঠে উপরোক্ত দৃষ্টিভঙ্গিসমূহের কয়েকটির উপর আলোকপাত করা হবে।


১. ভূগোলে মানুষ ও পরিবেশ
মানুষ-পরিবেশ সম্পর্ক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক ধারণার একটি সূদীর্ঘ ইতিহাস আছে।
ভৌগোলিক চেতনা সৃষ্টির কয়েক শতকের ব্যবধানেও এই দৃষ্টিভঙ্গি টিকে আছে। আমাদের
ইতিহাসের একটি বিরাট সময় ধরে ভ‚গোলবিদরা জলবায়ু, ভ‚মিরূপ, বন্ধুরতা, মৃত্তিকা, উদ্ভিদ, পানি
নিস্কাষন ইত্যাদি প্রাকৃতিক অবয়বের সাথে মানুষের সম্পর্ক আলোচনা করেছেন। সম্পর্কের এই
মাত্রা তথা মানুষও পরিবেশের মধ্যস্থিত মিথষ্ক্রিয়ার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে ভুগোলবিদরা অগণিত
পদ্ধতিগত এবং দার্শনিক যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। যেমন১.১ হুমবোল্ট ও রিটারের ধারণা
আলেকজান্ডার ফনহুমবোল্ট এবং কার্ল রিটার হলেন অষ্টাদশ শতাব্দীর দুই জার্মান মনীষী। এই
দুইজনকে আধুনিক ভ‚গোলের প্রতিষ্ঠাতা বলা যেতে পারে। হুমবোল্টের বিভিন্ন রচনার মধ্যে ১৮৪৫
থেকে ১৮৬২ সালের মধ্যে পাঁচ খন্ডে প্রকাশিত প্রাকৃতিক পৃথিবীর বর্ননা সম্বলিত “ঞযব ঈড়ংসড়ং”
সর্বশ্রেষ্ঠ। এসব কাজে তিনি প্রাকৃতিক বিশ্বের “একত্ব” বা “সামগ্রিকত্ব” প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন।
তাঁর মতে প্রাকৃতিক বিশ্বকে কতগুলি মৌলিক নীতির সৃষ্ট ফল বলে ব্যাখ্যা করা যায়। তাঁর রচনার
সমগ্রভাগে প্রাকৃতিক ঘটনাবলী এবং মানবজাতির পারস্পরিক নির্ভরশীলতার উপর জোর দেয়া
হয়েছে এবং তিনি প্রাকৃতিক বিশ্বকে ব্যাখ্যার জন্য সার্বজনীন তত্ত¡ প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পেয়েছেন।
'ঞযব ঈড়ংসড়ং'-এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয়সমূহ কি?
১.২. ডারউইনের ধারণা
১৮৫৯ সালে প্রকাশিত চার্লস ডারউইনের ঞযব ঙৎরমরহ ড়ভ ঝঢ়বপরবং (উধৎরিহ, ১৮৫৯) উনবিংশ
শতাব্দীতে সমগ্র বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার ক্ষেত্রে এক ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। ভৌগোলিক
চিন্তাধারার বিকাশে ডারইউনের লেখার চারটি মূলভাব গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রতিয়মান হয়:
ক. সময়ের সাথে পরিবর্তন সংক্রান্ত ধারণা: এই ধারণায় ভ‚মিরূপ বা উদ্ভিদ এবং প্রাণীর
ক্রমবিকাশসহ প্রাকৃতিক বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনার বিবর্তনের উপর জোর দেয়া হয়।
অগণিত পদ্ধতিগত এবং
দার্শনিক যুক্তি উপস্থাপন।
একত্ব বা সামগ্রিকত্ব।
১৮৫৯ সালে প্রকাশিত চার্লস
ডারউইনের "ঞযব ঙৎরমরহ
ড়ভ ঝঢ়বপরবং."

খ. সংগঠন সম্পর্কিত ধারণা: বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদ এবং এদের পরিবেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক-এর
উপস্থিতির উপর ডারউইনবাদীদের গুরুত্ব আরোপের ফলে পরর্তীকালে মানব ভ‚গোলে এ ধারণা
গড়ে ওঠে যে, মানুষ নিজেই তার প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে অভিযোজনের সূত্রপাত ঘটিয়েছে।
গ. প্রতিযোগিতা, সংগ্রাম ও নির্বাচন সম্পর্কিত ধারণা: এই ধারণায় প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং যে
প্রক্রিয়ায় কিছুপ্রাণী ও উদ্ভিদ প্রাকৃতিক বিশ্বের উপর আধিপত্য করে তার কথা আলোচনা করা হয়।
মানব ভ‚গোলের পরিবেশিক নিমিত্তবাদে এ ধরনের চিন্তাধারা ফুঠে উঠেছে।
ঘ. প্রাকৃতিক বিশ্বে বিভিন্নতার দৈবক্রমিক বৈশিষ্ট্য: সম্পর্কিত ধারণা সমূহ যা সাম্প্রতিককালের
আগে ভ‚গোলের মূল চিন্তাধারায় প্রতিফলিত হয়নি।
ডারউইনবাদের গুরুত্বপূর্ন চারটি মূলভাব কি কি?
ডারউইনবাদের সাথে ভ‚গোলবিদগনের পরিচিতির সামগ্রিক ফলাফল হিসাবে ভ‚গোলে মানুষ ও
পরিবেশের সরাসরি সম্পর্ক বিষয়ক ব্যাখ্যার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। মানুষ ও তার সব
ধরনের কর্মকান্ডকে ক্রমবর্ধমানভাবে মূলত: প্রাকৃতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল হিসাবে দেখা হতে
থাকে। মানব পরিবেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিবেশকেই নিরপেক্ষ চলক হিসাবে ধরে নেয়া হয়েছিল
এবং সে জন্যে পরিবেশের যে কোন পরিবর্তন মানবিক ঘটনাবলীকে প্রভাবিত করে বলে মনে করা
হয়েছে।
ডারউইনবাদ এবং ভ‚গোলবিদগণের ধারণার মধ্যে সম্পর্ক কি?
১.৩. পারিবেশিক নিমিত্তবাদের উত্থান
পরিবেশের মধ্যে মানুষকে প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা পরিবর্তীত একটি নিষ্ক্রিয় প্রাণী হিসাবে দেখা হয়েছে
এবং সেই সম্পর্ক নিয়ন্ত্রনকারী বৈজ্ঞানিক নিয়ম চিহ্নিত ও তৈরী করাই ছিল ভ‚গোলবিদদের কাজ।
এই দৃষ্টিভঙ্গি নিমিত্তবাদ বা পারিপার্শ্বিকতাবাদ হিসেবে পরিচিত। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে
শুরু করে বিংশ শতাব্দীর বিশ দশকের শেষভাগ পর্যন্ত এই প্রাকৃতিক নিমিত্তবাদের ভৌগোলিক
চিন্তাধারাগুলো বিকাশ লাভ করেছিল। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান চিন্তাধারাগুলো হলক. ফেডারিক রাটজেল (১৮৪৪-১৯০৪): রাটজেল তাঁর “অহঃযৎড়ঢ়ড়মবড়মৎধঢ়যরপ” এবং “অহ
ওহঃৎড়ফঁপঃরড়হ ঃড় ঃযব অঢ়ঢ়ষরপধরড়হ ড়ভ এবড়মৎধঢ়যু ঃড় ঐরংঃড়ৎু” বই দুটিতে বলেন যে, উদ্ভিদ ও
জীবজন্তুগুলির অনুরূপ নিয়মেই মানবগোষ্ঠীও প্রতিকুল পরিবেশে টিকে থাকবার জন্য সংগ্রাম
করেছে। এই টিকে থাকার সংগ্রামে বর্তমান প্রাকৃতিক অবস্থা অনুসারে অভিযোজন প্রক্রিয়াও
বিভিন্নতর হয়ে থাকে।
রাটজেল তত্ত¡ কি?
খ. এলেন চার্চিল সেম্পল (১৮৬৩-১৯৩২): সেম্পল রাটজেলের ছাত্রী ছিলেন এবং তিনি
রাটজেলের ধারণাকে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরিচিত করান। তাঁর ধারণা মতেপরিবেশই নিরপেক্ষ চলক।
বিংশ শতাব্দির শেষভাগ
পর্যন্ত।

“মানুষ ভ‚-পৃষ্ঠের একটি সৃষ্টি। এর অর্থ শুধুএই নয় যে, সে পৃথিবীর একটি সন্তান, ধূলিকণার
ধূলিকণা, বরং পৃথিবী তাকে জ¤œদান করেছে। তাকে খাদ্য সরবরাহ করেছে, তাকে কর্মভার অর্পন
করেছে, তার চিন্তাধারা পরিচালিত করেছে, তাকে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন করেছে, যা তার
দেহকে শক্তিশালী করেছে এবং বুদ্ধিমত্তাকে তীক্ষè করেছে, তার সামনে নৌচালনা বা জলসেচের
সমস্যাগুলি উপস্থাপন করেছে এবং একই সঙ্গে সে সকল সমস্যা সমাধানের পথেও সংকেত দান
করেছে” (ঝবসঢ়ষব,১৯১১)
ঝবসঢ়ষব-এর ধারণাটি কি?
গ. উইলিয়াম মরিস ডেভিস (১৮৫০-১৯৩৪) : ডেভিসের মতানুসারে, “যে কোন বক্তব্যই
ভৌগোলিক গুনসম্পন্ন হয় যদি তা আমাদের বাসস্থান হিসাবে পৃথিবীর কোন অজৈবিক উপাদান
(নিয়ন্ত্রনকারী হিসাবে) এবং জৈবিক অধিবাসীদের অস্তিত্ত¡ অথবা বিকাশ অথবা আচরণ অথবা
বাটনের মধ্যে (প্রতিক্রিয়া অথবা সাড়া হিসাবে) যুক্তিপূর্ন সম্বন্ধ স্থাপন করে।” এই বক্তব্য থেকে
স্পষ্ট যে, মানুষের জ্ঞানগত দক্ষতা সমূহের প্রতি কোনরূপ গুরুত্বরোপ না করে এরূপ ধারণা করা
হয় যে, প্রাকৃতিক পরিবেশ যে ধরনের উদ্দীপনা উপস্থাপন করে তদনুরূপ মানুষের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত
হয় অথবা মানুষ সেভাবে সাড়া দিতে বাধ্য হয়। ডেভিসের অবদানে ডারউইনীয় চিন্তাধারার
প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়।
ডেভিসের ধারণা কি?
১.৪. বৈজ্ঞানিক নিমিত্তবাদ
১.৪.১. এলসওয়ার্থ হানটিংটন (১৮৭৬-১৯৪৭): এলসওয়ার্থ তাঁর “ঞযব ঢ়ঁষংব ড়ভ অংরধ” (১৯০৭)
নামক বইটিতে কিভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন মানব ইতিহাসের ধারণায় প্রভাব বিস্তার করে সে
সম্পর্কে তথ্যসূত্রের উদ্ধব করেন। এ সম্পর্কে তার মতামত হল“একদিকে উদ্দীপক জলবায়ুবিশিষ্ট অঞ্চলসমূহ এবং অন্যদিকে মহান সভ্যতার মধ্যে যে মিল খুঁজে
পাওয়া যায় তা থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে এরূপ জলবায়ুপ্রদত্ত স্বাস্থ্য এবং শক্তি সার্বিক
উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। ভাল পানি, সুষম খাবার এবং যথাযথ আশ্রয়স্থলসহ নির্মল বায়ুপ্রভৃতি
যেমন স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন, ঠিক তেমনি প্রতিভাসম্পন্ন মানুষের প্রভাব, ভাল সরকার, উত্তম ধর্ম
এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি বিষয়বস্তু জাতীয় উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে- যেমনটি দেখা
যায় পাশ্চাত্য দেশগুলিতে (ঐঁহঃরহমঃড়হ, ১৯১৫)
ঐঁহঃরহমঃড়হ-এর জলবায়ুও মানুষ সম্পর্কিত মতবাদ কি?
১.৪.২. গ্রিফিথ টেলর (১৮৮০-১৯৬৩): টেলরের ভাষায় মানুষ কোন দেশের বা অঞ্চলের উন্নয়ন
ধারাকে দ্রæতগতি, ধীরগতি অথবা নিশ্চল করতে সক্ষম। কিন্তু যদি সে বুদ্ধিমান হয় তাহলে
প্রাকৃতিক পরিবেশ যা ইঙ্গিত করে সেই ধারা থেকে তার সরে যাওয়া উচিত নয়। সে একটি বৃহৎ
নগরীর পরিবহন নিয়ন্ত্রকের মতো উন্নয়নের ধারার পরিবর্তন করে না তবে উন্নয়নের প্রসার বা
মাত্রার পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়। সম্ভবত: “থামা এবং অগ্রসর নিমিত্তবাদ” (ংঃড়ঢ়-ধহফ-মড়
ফবঃবৎসরহরংস) বাক্যাংশটি গ্রিফিথ টেলরের ভৌগোলিক দর্শন সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করে।
(ঞধুষড়ৎ, ১৯৪০, ৪৭৮-৪৭৯)
টেলরের উন্নয়ন ধারার ধারণাটি কি?
ফেডারিক রাটজেল, এলেন
চার্চিল সেমপল, উইলিয়াম
মরিস ডেভিস।
উদ্দীপক জলবায়ু বিশিষ্ট
অঞ্চলসমূহ এবং মহান
সভ্যতা।
দ্রæতগতি ধীরগতি বা নিশ্চল।

১.৫. হারলান বারোজ: মানব বাস্তব্য বিদ্যা হিসাবে ভ‚গোল উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে হারলান
এইচ বারোজ শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভাষণে প্রস্তাব করেন যে, প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং
মানুষের বন্টন ও কার্যকলাপের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক নির্ধারণের উদ্দেশ্যে ভ‚গোলকে মানব-বাস্তব্য
বিদ্যা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা উচিত। পরিবেশগত নিমিত্তবাদের যুগ থেকে যে অস্বীকৃতিমূলক
সমালোচনা বিরাজ করছিল সে সম্বন্ধে তিনি জ্ঞাত ছিলেন এবং তারই আলোকে যুক্তি প্রদর্শন করেন
যে, মানুষের উপর পরিবেশের প্রভাব অপেক্ষা পরিবেশের সাথে মানুষের সহাবস্থান এই দৃষ্টিকোন
থেকে ভ‚গোলবিদদের সমীক্ষা করা উচিত।
মানব বাস্তব্য বিদ্যা হিসাবে ভ‚গোল, বারোজের এই ধারণা গ্রহণের মাধ্যমে ভ‚গোলের একটি শাখা
হিসাবে ভ‚গোলের গুরুত্ব বহুলাংশে হ্রাস পায় এবং তারই ফলে ভ‚গোল মানব সমাজ ও তার
প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্কসমূহ পর্যালোচনায় সামাজিক বিজ্ঞানে পরিণত হয়।
বারোজ কিভাবে বিষয় হিসাবে ভ‚গোলকে প্রতিষ্ঠিত করেন?
পাঠ সংক্ষেপ
ভ‚গোল শাস্ত্রে মানুষ এবং পৃথিবীর মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মানবক‚ল ও তার পরিবেশকে ভ‚গোলের বিভিন্ন মতবাদের সাথে সম্পর্কিত বলে
বিভিন্ন ভ‚গোলবিদগণ মনে করেন। ডারউইন, হুমবোল্ট রিটারসহ প্রায় সকল ভ‚গোলবিদগণ
ভ‚গোল ও পরিবেশের সম্পর্কে স্ব স্ব মতবাদ প্রদান করেছেন। এই সব মতবাদগুলি কোনটি
পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত, আবার কোনটি সম্পূর্ণ আলাদা। এ ক্ষেত্রে ভ‚গোলবিদদের ব্যক্তি
স্বাতন্ত্র রয়েছে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ২.১
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১. ‘হ্যাঁ' বা ‘না' উত্তর দিন। (সময় ৪ মিনিট) ঃ
১.১. আলেকজান্ডার ফন্ হুমবোল্ট ও কার্ল রিটার হলেন অষ্টাদশ শতাব্দীর দুই জার্মান মনীষী।
১.২. ‘ঞযব ঙৎরমরহ ড়ভ ঝঢ়বপরবং' বইটি লিখেন ফ্রেডারিক রাটজেল।
১.৩. সেম্পল রাটজেলের ছাত্রী ছিলেন।
১.৪. ‘ঞযব ঢ়ঁষংব ড়ভ অংরধ' (১৯০৭) বইটির লেখক এলসওয়ার্থ হানটিংটন।
২. সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন (সময়- ৭ মিনিট) ঃ
২.১ আধুনিক ভ‚গোলের প্রতিষ্ঠাতা কে?
ক) জন ম্যাক্সওয়েল খ) রিটার
গ) মার্কনী ঘ) ডারউইন
প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং
মানুষের বন্টন ও কার্যকলাপ।

২.২ হুমবোল্ট প্রকাশ করেনক) জীনতত্ত¡ খ) পরিবেশবাদ
গ) সামগ্রিকতাবাদ ঘ) ইহুদীবাদ
২.৩ হুমবোল্টের বইটির নামক) ঞযব ঊধৎঃয খ) গধহ ধহফ ঊহারৎড়হসবহঃ
গ) ঞযব ঈড়ংসড়ং ঘ) ঞযব ঙৎরমরহ ড়ভ ঝঢ়বপরবং
২.৪ “মানুষই প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য দায়ী”- একথা বলেন
ক) রিটার খ) হুমবোল্ড
গ) চার্লস ডারউইন ঘ) বারোজ
২.৫ “প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিবর্তন মানবিক ঘটনাবলী কে প্রভাবিত করে”-এ কথা বলেন
ক) রাটজেল খ) ডারউইন
গ) চার্লস বেভেজ ঘ) মরিস ডেভিস
২.৬ চার্চিল সেম্পলের শিক্ষক ছিলেনক) ডারইউন খ) রাটজেল
গ) ডেভিস ঘ) হানটিংটন
২.৭ বৈজ্ঞানিক নিমিত্তবাদ বিবৃত করে কোন বইটি
ক) জড়ধফ ঃড় অংরধ খ) ঞযব মষরসং ড়ভ ঃযব ড়িৎষফ
গ) ঞযব ঢ়ঁষংব ড়ভ অংরধ ঘ) ওহঃৎড়ফঁপঃরড়হ ঃড় এবড়মৎধঢ়যু
সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন (সময়: ৩ী৫=১৫ মিনিট) ঃ
১. মানব-পরিবেশ দৃষ্টিভঙ্গি বলতে আপনি কি বুঝেন?
২. হামবোল্ডের একত্ব বা সামগ্রিকতাবাদ কি?
৩. প্রাকৃতিক ভ‚গোলে ডারইউনের ধারণার গুরুত্ব আলোচনা করুন।
৪. পারিবেশিক নিমিত্তবাদের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিকের ধারণা সংক্ষেপে বিবৃত করুন।
৫. বৈজ্ঞানিক নিমিত্তবাদ বলতে আপনি কি বুঝেন?

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]