ভাঁজ কি?
সাধারণ বক্রতা কি?
ফাঁটল কি?
চ্যুতি কি?


ভ‚-অভ্যন্তরীণ তাপ বিচ্ছুরিত হয়ে ভ‚-অভ্যন্তরে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়। এর ফলে ভ‚-
অভ্যন্তরে যে প্রবল শক্তির উদ্ভব হয় তার ফলে ভ‚-ত্বকে আলোড়ন ঘটে। এই আলোড়ন দুই
প্রকার যথা মহীভবক আলোড়ন ও গিরিজনি আলোড়ন। মহীভবক আলোড়ন ভ‚-পৃষ্ঠে লম্বভাবে
কাজ করে। ফলে ভ‚মির উপরে বা নীচে উঠানামা করে। গিরিজনি আলোড়ন ভ‚-পৃষ্ঠে
আনুমানিকভাবে কাজ করে। ফলে গিরিজনির আলোড়ন ভ‚-পৃষ্ঠে উঁচু ভাঁজের সৃষ্টি করে।
ভ‚-আলোড়ন সৃষ্ট ভ‚মিরূপ :
ভ‚-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট ভ‚-ত্বকের শিলাসমূহ পরিবর্তন হয়ে যে ভ‚মিরূপ সৃষ্টি হয়, সেগুলোকে
চার ভাগে ভাগ করা যায় :
র) ভাঁজ, রর) সাধারণ বক্রতা, ররর) ফাঁটল, এবং রা) চ্যুতি।
এই ভাগগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানবার আগে দুটি সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকা প্রয়োজন :
নতি বা ডিপ (উরঢ়) : একটি অনুভ‚মিক স্তর কত ডিগ্রী কোণ সৃষ্টি করেছেন তা বুঝায়।
(চিত্র ৩.২.১)।
আয়াম বা স্ট্রাইক (ঝঃৎরশব) : শব্দটি দিয়ে কোন স্থানে একটি উর্ধ্বে উত্থিত ভ‚খন্ড একটি
অনুভ‚মিক সমতলকে ছেদ করেছে তা বুঝায়। আয়ামকে কোনো স্তরের অনুভ‚মিক লাইন
বরাবর বিস্তারও বলা যেতে পারে। আয়াম নতির দিকের সাথে সমকোণে অবস্থান করে।
আয়াম ও নতি কিলোমিটারের সাহায্যে মাপা হয়।
র) ভাঁজ (ঋড়ষফ) :
পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ তাপ
বিকিরণ করে শীতল হয়ে সংকুচিত
হয়। ফলে কিসমিসের মত কুঞ্চিত
হয়ে ভাঁজের সৃষ্টি করে। এই
ভাঁজের দৈর্ঘ্য ও বিস্তার এক ইঞ্চি
হতে কয়েক মাইল পর্যন্ত হয়।
(চিত্র ৩.২.২) ভাঁজ সাধারণত
গিরিজনি আলোড়নের ফলে হয়ে
থাকে। ভাঁজ কয়েক প্রকারের হতে
পারে যেমন : সরল ভাঁজ, সুষম
ভাঁজ, বিষম ভাঁজ, হেলান ভাঁজ,
শায়িত ভাঁজ ইত্যাদি।
পাঠ-৩.২
চিত্র : ৩.২.১ ঃ শিলা স্তরের আয়াম ও নতি
বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম এসএসএইচএল
ক) সরল ভাঁজ (ঝরসঢ়ষব ঋড়ষফ) : একটি
অগ্রবর্তী কোন ও অবনমিত ভ‚-ভাগ বিশিষ্ট
শিলা স্তরকে সরল ভাঁজ বলে। এতে ভ‚-ত্বকের
বহিরাবরণ এক রকম দেখায়।
খ) সুষম ভাঁজ (ঝুসসবঃৎরপধষ ঋড়ষফ) :
কোন ভাঁজের দুই পার্শ্বস্থ বাহু যদি সমান
কোণে দুই দিকে হেলে থাকে তখন তাকে
সুষম ভাঁজ বলে।
গ) বিষম বা প্রতিসম ভাঁজ (অংুসসবঃৎরপধষ
ঋড়ষফ) : কোন ভাঁজের এক পার্শ্বের বাহু যদি
অপর পার্শ্বস্থ বাহু সাথে অসমান কোণে দুদিকে
হেলে থাকে তখন তাকে বিষম বা প্রতিসম
ভাঁজ বলে।
ঘ) হেলান ভাঁজ (ওহপষরহবফ ঋড়ষফ) : কোন
ভাঁজের চাপ অধিক হলে ভাঁজগুলো পরস্পর
গায়ে লেগে যায় এবং যে পাশে চাপের পরিমাণ
কম সে দিকে ভাঁজগুলো বেঁকে যায়। একে
হেলান ভাঁজ বলে। এ ভাঁজ একটি অপরটির
মাঝে ঢুকে গেলে তাকে শায়িত ভাঁজ বলে।
রর) সাধারণ বক্রতা (ঝরসঢ়ষব ঋড়ষফ) : গিরিজনি আলোড়নের ফলে অনেক সময় পৃথিবীর এক
বিরাট অংশ বক্রভাবে ঊর্ধ্বদিকে ও নিম্নদিকে অবস্থান করে। এ উত্থিত ও অবনত বক্রতার
দৈর্ঘ্য ও বিস্তার কয়েক মাইল হতে কয়েক
শত মাইল পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ বক্রতার
ঊর্ধ্বে উত্থিত অংশকে ঊর্ধ্ব ভঙ্গ
(অহঃরপষরহব) এবং নিম্নে অবনত অংশকে
অধঃভঙ্গ (ঝুহপষরহব) বলে।
রা) ফাঁটল (ঋৎধপঃঁৎব) : ভ‚-আলোড়নের
ফলে ভ‚-পৃষ্ঠে বহু ফাঁটলের সৃষ্টি হতে
পারে। এ ফাঁটল খাড়া বা হেলানভাবে
হতে পারে। এ ফাঁটল বরাবর চ্যুতি গঠিত হয়। বিপরীত দিকে গমণকারী দুটি প্লেট সীমানায়
ভ‚-ত্বকে ফাঁটল সৃষ্টি হয়। এ ফাঁটল বরাবর ভু-অভ্যন্তর থেকে ম্যাগমা উপরে উঠে আসে এবং
ভ‚-ত্বকের স¤প্রসারণ ঘটে।
র) চ্যুতি (ঋধঁষঃ) : ভূ-আলোড়নে সৃষ্ট ফাটল বরাবর
ফাটলের একদিকের অংশ স্থানচ্যুত হয়ে ভ‚গর্ভে বসে যায়।
এক চ্যুতি বলে। চ্যুতির ফলে নিম্নলিখিত বিভিন্ন ধরনের
ভ‚মির সৃষ্টি হয়।
চিত্র ঃ ৩.২.২ ঃ ভাঁজ
চিত্র ঃ ৩.২.৪ ঃ সুষম ও বিষম ভাঁজ
ধাপ চ্যুতি : কখনও অনেকগুলি
স্বাভাবিক চ্যুতি একত্রে অবস্থান করে
সিঁড়ির ন্যায় যে ধাপের সৃষ্টি করে তাকে
পরিখা চ্যুতি বলে।
রর) স্রস্থ উপাত্যকা : পরিখা চ্যুতি অধিক
বড় হলে তাকে স্রস্থ উপত্যকা বলে।
আবার দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ নীচে
বসে গিয়েও স্রস্থ উপত্যকা সৃষ্টি হয়।
ররর) ভ্রষ্ট উপত্যকা : কোন শিলান্তরের উভয় পার্শ্ব উপরে উঠলে মেঝের অবনত অংশ ভ্রষ্ট
উপত্যকা বলে।
রা) স্তুপ পর্বত : কখনও চ্যুতির মধ্যবর্তী
শিলা ঊর্ধ্বচাপে পর্বতের মত উচ্চ হয়ে
স্তুপ পর্বতের সৃষ্টি হয়।
পাঠ সংক্ষেপ :
ভ‚-অভ্যন্তরে প্রবল তাপ ও চাপের জন্য ভ‚-আলোড়ন ঘটে থাকে। গভীর সমুদ্র খাত বা
সমুদ্র হতে শুরু করে সুউচ্চ পর্বত এ ভ‚-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট ভ‚-ত্বকের শিলাসমূহের
পরিবর্তনকে চার ভাগে ভাগ করা যায় : ভাঁজ সাধারণ বক্রতা, সাধারণ বক্রতা, ফাটল
এবং চ্যুতি। তবে উক্ত ভ‚মিরূপ সমূহ ভ‚-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভ‚মিরূপ।
বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম এসএসএইচএল
চিত্র ঃ ৩.২.৮ ঃ বিভিন্ন রকমের চ্যুতি।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন :
১. শূন্যস্থান পুরণ করুন
২. ভ‚-আলোড়ন দুই প্রকার ........... ও ...........।
১.২. ভ‚-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট ভ‚ত্বকের শিলাসমূহের পরিবর্তনকে ........... ভাগ ভাগ করা
যায়।
১.৩. আয়াম নতির দিকে সাথে ........... অবস্থান করে।
১.৪. ভাঁজ এর একটি ভাগ ...........।
১.৫. ভ‚-আলোড়নের সৃষ্ট ফাঁটলের একদিকে অংশ ........... হয়ে ভ‚গর্ভে বসে গিয়ে চ্যুতি সৃষ্টি
হয়।
২. সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে ‘মি’ লিখুন ঃ
২.১. ভ‚-অভ্যন্তরীণ তাপ বিচ্ছুরিত হয়ে ভ‚-আভ্যন্তরে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়।
২.২. আয়ামকে কোন স্তরের অনুভ‚মিক লাইন বরাবর বিস্তারও বলা যেতে পারে।
২.৩. পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে প্রসারিত হয়।
২.৪. বক্রতার ঊর্ধ্বে উত্থিত অংশকে ঊর্ধ্ব ভঙ্গ (অহঃরপষরহব) এবং নিম্নে অবনত অংশকে
অধঃভঙ্গ (ঝুহপষরহব) বলে।
২.৫. ফাঁটল বরাবর চ্যুতি গঠিত হয়।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১. ভাঁজ কি?
২. সাধারণ বক্রতা কি?
৩. ফাঁটল কি?
৪. চ্যুতি কি?
রচনামূলক প্রশ্ন :
১. ভূ-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন প্রকার ভ‚মিরূপ বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]