নদী কি? নদীর আকৃতি প্রবাহ ও বিভিন্ন গতির বর্ণনা করুন।


নদী
একটি সুনির্দিষ্ট খাতে নিম্নঢালাভিমুখী প্রাকৃতিক পানি প্রবাহকে নদী বলে। নদীর উৎস থেকে
মোহনা পর্যন্ত কোথাও উপনদী মূল নদীতে এসে মিলে, আবার কোথাও মূল নদী বিভক্ত হয়ে
শাখা নদীর সৃষ্টি করে। মূল নদী, এ ধরনের উপনদী ও শাখা নদীসহ একত্রে নদী অববাহিকা
গড়ে তোলে। এ প্রসঙ্গে ‘নদ’ ও ‘নদী-র পার্থক্যকরণ প্রয়োজন। বাংলা ভাষায় এই
পার্থক্যকরণ প্রয়োজন। ইংরেজি (জরাবৎ) বলতে উভয়কে বুঝিয়ে থাকে। কিন্তু বাংলায় ‘নদ’
পুংলিঙ্গ হিসেবে ব্যবহার হয় অর্থাৎ যে সমস্ত নদীর শাখা নদী নেই সেগুলিকে বুঝিয়ে থাকে
(তবে উপনদী থাকতে পারে)। অপরদিকে ‘নদী’ স্ত্রী লিঙ্গ হিসেবে ব্যবহার হয় এবং শাখা নদী
সম্পন্ন হয়ে থাকে। ব্র²পুত্র ও সিন্দু নদ এবং গঙ্গা, মিসিসিপি ইত্যাদি নদী বলে পরিচিত।
প্রতিটি নদী অববাহিকার একটি নিজস্ব ভৌগোলিক এলাকা আছে যা পানি অববাহিকা বা পর্যঙ্ক
(ডধঃবৎ ইধংরহ) নামে পরিচিত। প্রতিটি নদী অববাহিকা পার্শ্ববর্তী অববাহিকা থেকে পানি
বিভাজিকা (ডধঃবৎ উরারফব) দ্বারা পৃথক থাকে। অর্থাৎ প্রতিটি নদী অববাহিকা শুধুমাত্র তার
নিজস্ব ভৌগলিক সীমানার পানি নিষ্কাষণ করে।
নদীর উৎপত্তির জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও ঢালু জায়গা। পাহাড়িয়া অঞ্চলে প্রচুর
বৃষ্টির পানি ও বরফগলা পানি পাওয়া যায় বলে পৃথিবীর অধিকাংশ নদীই পার্বত্য অঞ্চল হতে
উৎপত্তি লাভ করেছে। হিমালয় পর্বতে বৃষ্টি, বরফ গলা পানি ও প্রস্রবনের পানি মিলিত হয়ে
গঙ্গা বা পদ্মা নদীর সৃষ্টি হয়েছে।
নদী খাতের আকৃতি (ঈযধহহবষ ঋড়ৎস) : প্রতিটি নদী একটি খাতে প্রবাহিত হয় এবং এ
প্রবাহ বিভিন্ন ধরনের নিয়ামক দ্বারা প্রভাবিত হয়। নদী খাতের একটি আড়চিত্র (ঈৎড়ংং
চৎড়ভরষব)
(চিত্র-৫.৬.১) আঁকলে যে বিভিন্ন অংশ পাওয়া যায় সেগুলো নিম্নরূপ :
১। প্রস্থ : নদী খাতের দুই
তীরের মধ্যবর্তী দূরত্ব। এটি
মিটারে প্রকাশ করা হয়।
২। গভীরতা : এটি নদী খাতের
তলদেশ থেকে খাড়াভাবে
পানির উপর পর্যন্ত দূরত্ব, যা
মিটারে প্রকাশ করা হয়।
৩। ঢাল : অনুভ‚মিক ও
নদীতলের কৌণিক
অবস্থান।
৪। পেবগ : নদী খাতে যে
গতিতে পানি প্রবাহিত হয়
তাকে বেগ বলে। নদীর
বেগ উপরিভাগে সবচেয়ে
বেশী এবং দুই তীর ও তল
পাঠ-৫.৬
একটি সুনির্দিষ্ট
খাতে নি¤œচাপ
অভিমুখী প্রাকৃতিক
পানি প্রবাহকে নদী
বলে।
বরাবর ঘর্ষণের কারণে কম হয়।
চিত্র : ৫.৬.২ : আদর্শ নদীর বিভিন্ন গতিপ্রবহা
৫। পানি ধারণকৃত অংশের সীমানা (ডবঃঃবফ চবৎরসবঃবৎ) : নদীখাত এবং পানির সংযোগ
রেখার দৈর্ঘ্য।
নদী প্রবাহ (ঈযধহহবষ ঋষড়)ি : প্রকৃতিক নদী প্রবাহ পানি দুই ভাবে বয়ে যায়। যেমন, (ক)
পত্রবৎ প্রবাহ (খধসরহবৎ ঋষড়)ি - যেখানে পানি অনুভ‚মিক ভাবে তলদেশ বরাবর প্রবাহিত
হয়, এবং (খ) ঘূর্ণী প্রবাহ (ঞঁৎনঁষবহঃ ঋষড়)ি -যেখানে পানি ঘূর্ণায়মান অবস্থায় নিম্ন ঢালে
অগ্রসর হয়। পত্রবৎ প্রবাহ প্রাকৃতিক নদীতে খুব বেশী দেখা যায় না, তবে ভ‚গর্ভস্থ পানি
প্রবাহের এটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নদীর পানি প্রবাহ অনেকগুলো নিয়ামক দ্বারা প্রভাবিহত হয়।
তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণগুলো নিম্নরূপ :
১। পানির পরিমাণ (ঠড়ষঁসব ড়ভ ডধঃবৎ)
২। বেগ (ঠবষড়পরঃু),
৩। নদী খাতের আকার ও আকৃতি (ঈযধহহবষ ঋড়ৎস ধহফ ঝযধঢ়ব)
৪। ঢাল (ঝষড়ঢ়ব),
৫। নদী খাতের ভিত্তি তল (ইধংব খবাবষ), সর্বনিম্নতল যার নিচে নদী ক্ষয় করে না, এবং
৬। পলির পরিমাণ ও ধরণ (ঠড়ষঁসব ধহফ ঞুঢ়বং ড়ভ ঝবফরসবহঃং)
নদী বিভিন্ন অবস্থা বা গতি (উরভভবৎবহঃ ঝঃধমবং ড়ৎ ঈড়ঁৎংবং ড়ভ জরাবৎ)
উৎস হতে মোহনায় পতিত হওয়া পর্যন্ত নদীর গতি পথকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়।
যেমন-(১) পার্বত্য অবস্থা বা ঊর্ধ্বগতি, (২) সমভ‚মি অবস্থা বা মধ্যগতি এবং (৩) ব-দ্বীপ
অবস্থা বা নিম্নগতি।
১। পার্বত্য অবস্থা বা উর্ধ্বগতি বা যৌবন অবস্থা (গড়ঁহঃধরহ ড়ৎ টঢ়ঢ়বৎ ঈড়ঁৎংব ধঃ
ণড়ঁহম ঝঃধমব) : পার্বত্য অবস্থা নদীর প্রাথমিক অবস্থা। পর্বতের ওপরে উৎপত্তি স্থল হতে
সমভ‚মিতে পৌছানো পর্যন্ত অংশকে নদীর পার্বত্য অবস্থা বা উর্ধ্বগতি বলা হয়। গঙ্গা নদী
গঙ্গোত্রী হতে হরিদ্বার পর্যন্ত ৩২০ কি.মি (২০০ মাইল) অংশ এর পার্বত্য বা উর্ধ্ব প্রবাহ।
পার্বত্য অবস্থায় ক্ষয় সাধনই নদীর প্রধান কাজ।
পার্বত্য অঞ্চলে ভ‚মিভাগ খুব ঢালু ও উঁচু-নিচু হয়। সেজন্য নদী উচ্চ স্থান হতে খাড়া পর্বত
গাত্র বেয়ে প্রচন্ড গতিতে নেমে আসে। এ সময় নদীর গতিবেগ ঘন্টায় ২৪ কি.মি থেকে ৩২
কি.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। পার্বত্য অবস্থায় নদীর পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয়ই বেশী হয়ে থাকে।
ফলে গিরিখাত ক্যানিয়ন, খরস্রোত, জলপ্রপাত প্রভৃতির সৃষ্টি হয়।
পার্বত্য প্রবাহে নদী স্থল ভাগকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়িত অংশ পরিবহন করে। পার্বত্য অবস্থায়
নদীর প্রধান কাজ ক্ষয়সাধন ও বহন হলেও অনেক সময় নদীর ঢাল হঠাৎ কমে নদীর গতি হ্রাস
পেলে অথবা হঠাৎ অধিক পরিমাণ প্রস্তরখন্ড আসলে নদী তা সম্পূর্ণরূপে বহন করতে না পেরে
কিছু কিছু সঞ্চয় করে। এভাবে নদীবাহিত বিভিন্ন পদার্থগুলো অল্প ঢালু অঞ্চলে সঞ্চিত হয়।
নদী হঠাৎ উচ্চ ভ‚মি হতে নিম্ন ভ‚মিতে পতিত হলে সেখানে পলি জমা হয়ে পলল পাখা বা
পলল কোণ গঠিত হয়। কখনও কখনও পাহাড়ের পাদদেশে প্রস্তরখন্ড নুড়ি, বালুকা প্রভৃতি
জমা হয়ে একটি বিস্তীর্ণ সমভ‚মির সৃষ্টি করে। ভারতের শিবালিক পর্বতের পাদদেশে এরূপ
সমভ‚মি গঠিত হতে দেখা যায়।
২। সমভ‚মি অবস্থা বা মধ্যগতি (চষধরহ ড়ৎ গরফফষব ঝঃধমব) : পার্বত্য অঞ্চল অতিক্রম করে
নদী যখন সমভ‚মির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন তার প্রবাহকে সমভ‚মি অবস্থা বা মধ্যগতি
বলে। মধ্যগতিতে নদীর বিস্তার বেশী হয়। নদী অববাহিকা প্রশস্থ হয় ও উপত্যকাগুলোর
গভীরতা কমে আসে। এই অংশে নদীর পানির পরিমাণ বেশী হয় বহু উপনদী এ অংশে এসে
মূল নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। নদী উপত্যকার গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতাও কমে
যায়। ফলে বর্ষাকালে নদী স্ফীত হয়ে তার দু’দিকের নিম্ন ভ‚মিসমূহকে বন্যায় প্লাবিত করে।
নদী বাহিত পলি দ্বারা ঐ নিম্ন ভ‚মিসমূহ ধীরে ধীরে উঁচু হয় এবং সমভ‚মির আকার ধারণ করে।
একে প্লাবন ভ‚মি বলে। এ প্রবাহে নদী ক্রমশ ধীরগতি সম্পন্ন হয় এবং বাঁধা এড়িয়ে
আঁকাবাঁকা পথে চলতে থাকে। এই পর্যায়ে বিলুনী নদীর (ইৎড়রফবফ) আধিক্য দেখা যেতে পারে
এবং এক্ষেত্রে নদীর পার্শ্বক্ষয় বা নদীভাঙ্গন এবং অবক্ষেপন কাজ বৃদ্ধি পায়। সমভ‚মি অবস্থায়
নদীর ক্ষয় ও পরিবহন কার্য ততো প্রবল হয় না। এ অবস্থায় নদীর সঞ্চয় কার্য শুরু হয়। গঙ্গা
নদীর হরিদ্বার হতে রাজমহল পর্যন্ত অংশ এর মধ্য প্রবাহ।
৩। ব-দ্বীপ অবস্থা বা নিম্নগতি (উবষঃধরপ ড়ৎ খড়বিৎ ঝঃধমব) :
নদীর শেষ অংশ বা নদীর নিম্নগতিকে ব-দ্বীব অবস্থা বলা হয়। এ সময় নদীর স্রোতের বেগ
খুবই কম হয়। নদীর নিম্নক্ষয় বন্ধ হয়ে যায় এবং স্বল্প পরিমাণে পার্শ্বক্ষয় হতে পারে। ফলে
নদীর উপত্যকা খুব চওড়া ও অগভীর হয়। নদীর এ অংশে স্রোতের বেগ কমে যাওয়ায়
নদীবাহিত বালুকা, কর্দম ও পলি মোহনায় সঞ্চিত হয়ে নদীর গতি পথে বাঁধার সৃষ্টি করে।
নদীর গতি বাঁধা পেয়ে তা একাধিক দিক দিয়ে চলে যায়। কালক্রমে নদীমুখ এ পলি সঞ্চিত
করে ভ‚ভাগ উচ্চ হয়ে ব-এর আকার ধারণ করে ক্রিকোণাকৃতি দ্বীপের সৃষ্টি করে। এটি ব-দ্বীপ
নামে পরিচিত। ব-দ্বীপ গঠন ব্যতীত এ অংশে নদীর খাত পরিবর্তন, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, প্লাবন
সমভ‚মি প্রভৃতি বিভিন্ন ভ‚মিরূপ দেখতে পাওয়া যায়। গঙ্গা নদীর নিম্নগতি রাজমহল হতে
মোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত।
পাঠসংক্ষেপ :
একটি সুনির্দিষ্ট খাতে নিম্নঢাল অভিমুখী প্রাকৃতিক পানি প্রবাহকে নদী বলে। মূল নদী,
উপনদী ও শাখা নদী একত্রে নদী অববাহিকা গড়ে তোলে। প্রতিটি নদী অববাহিকার
একটি নিজস্ব ভৌগোলিক এলাকা আছে যা পানি পর্যঙ্ক নামে পরিচিত। নদীর উৎপত্তির
জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও ঢালু জায়গা।
নদী প্রবাহ দুই প্রকার। যেমন, পত্রবৎ প্রবাহ ও ঘূর্ণি প্রবাহ। প্রবাহ প্রাকৃতিক নদীতে খুব
বেশী দেখা যায় না। নদীর প্রবাহ নিম্নোক্ত নিয়ামক দ্বারা প্রবাহিত হয়। যথা-পানির
পরিমাণ, বেগ, নদী খাতের আকার ও আকৃতি, ঢাল, নদী খাতের ভিত্তি তল, পলির
নদী তার
অববাহিকার বিভিন্ন
অংশ ক্ষয়সাধন,
বহন ও অবক্ষেপন
এই তিনটি কাজ
করে থঅকে। নদীর
শক্তি নির্ভর করে (১)
পানির পরিমাণ ও
(২) পানির
গতিবেগের ওপর।
পরিমাণ ও ধরন। নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত গতিপথকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা
হয়। যেমন, যৌবন বা পার্বত্য গতি অবস্থা, সমভ‚মি বা মধ্যগতি এবং বদ্বীপ অবস্থা বা
নিম্নগতি।
পঠোত্তর মূল্যায়ন : ৫.৬
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন :
১. শূণ্যস্থান পূরণ করুন :
১.১. একটি সুনির্দিষ্ট ................. নিম্নঢালাভিমুখী প্রাকৃতিক পানি প্রবাহকে নদী বলে।
১.২. প্রতিটি নদী অববাহিকার একটি নিজস্ব ........ এলাকা আছে।
১.৩. নদীর উৎপত্তির জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও ...... জায়গা।
১.৪. নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত গতি পথকে ........ভাগে বিভক্ত করা হয়।
১.৫. ............. অবস্থায় নদীর ক্ষয় ও পরিবহন কার্য ততো প্রবল হয় না।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১। নদী কাকে বলে?
২। পানি পর্যঙ্ক (ডধঃবৎ ইধংরহ) কি?
৩। পানি বিভাজন বলতে কি বোঝায়?
৪। নদীর উৎপত্তির জন কি কি প্রয়োজন?
৫। একটি নদীখাতের আড় চিত্রে (ঈৎড়ংং চৎড়ভরষব) বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করুন ও নাম
লিখুন।
৬ নদীর পত্রবৎ প্রবাহ (খধসরহবৎ ঋষড়)ি ও ঘুর্ণিপ্রবাহ (ঞঁৎনঁষবহঃ ঋষড়)ি বলতে কি
বোঝায়।
৭। নদীর পানি প্রবাহ কি কি নিয়ামক দ্বারা প্রভাবিত?
৮। নদীর গতিপথকে কয়টি ভাগে বিভক্ত করা হয় ও কি কি?
৯। বিভিন্ন গতিতে নদীর বৈশিষ্ট্য আলোচনা করুন।
রচনামূলক প্রশ্ন :
১। নদী কি? নদীর আকৃতি প্রবাহ ও বিভিন্ন গতির বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]