দীর সঞ্চয়জাত ভূমিরূপের
পলল পাখা কাকে বলে?
প্রাকৃতিক বাঁধ কাকে বলে?
নদী বাঁক বলতে কি বুঝায়?
বিনুনী নদী কি করে সৃষ্টি হয়?
ব-দ্বীপ কাকে বলে?


নদীর সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপ
সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞ্চলে নদীর নিম্নগতি। এ সময় নদী উপত্যকা সর্বাপেক্ষা অধিক প্রশস্ত হয়
এবং গভীরতা একেবারে কমে যায়। ফলে নদীবাহিত শিলাচ‚র্ণ নদীস্রোতের দ্বারা বহিত হয়ে
নদীগর্ভে ও নদীর উভয় পার্শ্বে সঞ্চিত হয়। নদীর এ অংশে পলি সঞ্চয়নই প্রধান বৈশিষ্ট্য। তবে
নদীতীর প্রায়ই ক্ষয় হয়ে যায় এবং অত্যন্ত বিস্তৃত প্লাবন ভ‚মি গড়ে ওঠে। নদী এ বিস্তৃত প্লাবন
ভূমি, নদী বাঁক, নদী ধাপ, নদীতীর জলাভ‚মি, বিনুনী নদী, ব-দ্বীপ অন্যতম।
পরবর্তী অংশে নদীর সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপ সমূহের বিবরণ দেয়া হলো :
নদীর সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপ সমূহ :
পলল পাখা (অষষাঁরধষ ঋধহ) : পর্বত বা পাহাড়ী অংশ থেকে নদী সমতল ভ‚মিতে নেমে আসার
ফলে ঢাল দ্রæত কমে যায়। এ অবস্থায় নদীর পক্ষে নদীর পানিতে বাহিত বিভিন্ন ধরনের
পদার্থের বোঝা বহন করা সম্ভব হয় না। ফলে তা পাদদেশের নদী খাতেই সঞ্চয় করে। এক
পর্যায়ে নদী তার এ বোঝা এড়িয়ে নতুন পথে নিম্ন অঞ্চলে অগ্রসর হয়। এভাবে নদী পাহাড়ের
পাদদেশের এক পাশ থেকে অন্য পাশে স্থান পরিবর্তন করে এবং অবশেষে তা পাখার ন্যায়
ঢালু ভ‚মিরূপ গড়ে তোলে। এ ধরণের ভ‚মিরূপ ব-দ্বীপের মতো দেখতে হলেও এর উৎপত্তি ও
গঠন কাঠামোগত দিক থেকে আলাদা। ব-দ্বীপের ক্ষেত্রে নদীপ্রবাহ সমুদ্রতল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত
এবং পলি মোটা মোটা, বড় বড় শিলা টুকরো এবং বাছাইকৃত বালি ও নুড়ি পাথরই এর প্রধান
বেশিষ্ট্য।
যে সকল অঞ্চলে মাটি অধিক পরিমাণ পানি শোষণ করতে পারে, সে সকল অঞ্চলের সঞ্চয়
প্রশস্ত না হয়ে কোণাকৃতি হয়। একে পলল কোণ ((অষষাঁরধষ ঈড়হব) বলে (চিত্র-৫.৯.১)।
কিন্তু পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্তিকা কঠিন হলে নদী সঞ্চয় বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে হাত পাখার
ন্যায় ভ‚-খন্ডের সৃষ্টি করে। এরূপ পলল ভ‚মিকে পলল পাখা (অষষাঁরধষ ঋধহ) বলা হয়
পাদদেশীয় পলল সমভ‚মি (চরফসড়হঃ অষষাঁরধষ চষধরহ) : অনেক সময় পাহাড়িয়া নদী দ্বারা
পলি সঞ্চিত হয়ে পাহাড়ের পাদদেশে নতুন সমভ‚মি গড়ে ওঠে। এরূপ সমভ‚মিকে পাহাড়ের
পাদদেশীয় পলল সমভ‚মি বলা হয়। বাংলাদেশের রংপুর ও দিনাজপুর জেলার উত্তরভাগে
অধিকাংশ স্থানই পাদদেশীয় পলল সমভ‚মি নামে পরিচিত। তিস্তা, আত্রাই, যমুনেশ্বরী প্রভৃতি
নদী দ্বারা এ অঞ্চল বিধৌত। এসব নদী হিমালয় পর্বত হতে উৎপন্ন হয়েছে। ফলে নদীগুলো
সহজেই পাহাড় হতে পলল বহন করে এ অঞ্চলে সঞ্চয় করে পাদদেশীয় পললভ‚মি গঠন
করেছে। পাহাড়ের পাদদেশে দুই বা ততোধিক পলল পাখা বা কোণ মিলিত হয়েও পাদদেশীয়
পলল সমভ‚মি গঠন করতে পারে।
প্লাবন সমভ‚মি (ঋষড়ড়ফ চষধরহ) : অধিকাংশ নদী তার নিম্ন প্রবাহে সুক্শ কর্দম, পলি প্রভৃতি
সঞ্চিত করে থাকে। বন্যার সময় বা প্লাবনে নদী দু’কূল ভাসিয়ে পানিতে ডুবে যায় এবং তাতে
নতুন পলি সঞ্চিত হয়। এরূপ নদীর নিম্নাংশে বা মোহনায় পলি সঞ্চিত হয়ে এক প্লাবন
সমভ‚মির (ঋষড়ড়ফ চষধরহ)
সৃষ্টি করে। গঙ্গা, পদ্মা নীল,
ইয়াংসিকিয়াং প্রভৃতি নদীর
মোহনায় এরূপ প্লাবন
সমভ‚মি রয়েছে। প্লাবন
সমভ‚মিতে স্বাভাবিক বাঁধ,
পশ্চাৎ জলাভ‚মি, নদীর বাঁক,
অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, কর্দম
ছিপি, বালুচর প্রভৃতি
ভ‚মিরূপ দেখা যায় (চিত্র৫.৯.৩)।
প্রাকৃতিক বাঁধ (ঘধঃঁৎধষ
খবাবব) : প্লাবন ভ‚মিতে
নদীর তীরবর্তী এলাকায়
প্রাকৃতিক/স্বাভাবিক বাঁধ লক্ষ্য করা যায় (চিত্র-৫.৯.৩)। নদীর নিকটবর্তী এলাকায় এর উচ্চতা
সবচেয়ে বেশী হয় এবং পিছনের দিকে এটি ক্রমশ ঢালু হয়ে নেমে যায়। এটা দুই কিলোমিটার
বা তারও বেশী চওড়া হতে পারে। প্লাবনের সময় নদীর পরিবহন ক্ষমতার বৃদ্ধি এ স্বাভাবিক
বাঁধের উৎপত্তির প্রধান কারণ। প্লাবনের সময় নদীর দুকূল ছাপিয়ে পানি যখন পার্শ্ব দিকে
প্রবাহিত হয় তখন উর্ধ্ব ঢালের দিকে পানি প্রবাহ থাকে বলে পানি মধ্যস্থিত পলি নদীর
তীরবর্তী এলাকায় সবচেয়ে বেশী ও যতদূর যাওয়া যায় ততোই কম সঞ্চিত হয়। বারংবার
প্লাবনের ফলে এরূপ সঞ্চয় বৃদ্ধি পেয়ে বাঁধের আকার ধারণ করে ও প্লাবন ভ‚মিতে এক বিশেষ
ভ‚মিরূপের সৃষ্টি করে।
নদী গতিপথ পরিবর্তনের ফলে পূর্ববর্তী নদী প্রাকৃতিক বাঁধ প্লাবন সমভ‚মির ওপর দাঁড়িয়ে
থাকতে পারে। ক্ষয়ের ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এরা বিচ্ছিন্ন ভাবে অবস্থান করে। প্রায়শঃ
প্লাবনের সময় নদী স্বাভাবিকভাবে কতগুলো অগভীর খাত বরাবর প্রবাহিত হয়। এগুলোকে
প্লাবন ভ‚মি কর্তিত পথ (ঋষড়ড়ফ চষধরহ ঝপড়ঁৎ ঝড়ঁঃব) বলে। এরা পুরোনো নদীখাতকে বা
নতুন নদীখাত সৃষ্টির সূচনাকে তরান্বিত করে।
পশ্চাৎ জলাভ‚মি (ইধপশ ঝধিসঢ়) : নদী প্রাকৃতিক বাঁধের পশ্চাতে প্লাবন পর্যাঙ্কে পশ্চাৎ
জলাভ‚মির সঞ্চয় সৃষ্টি হয়। পলি ও কাদা দিয়ে এ সুবিস্তৃত সঞ্চয় গঠিত হয়। পশ্চাৎ জলাভ‚মি
সঞ্চয় এলাকায় বন্ধুরতা খুবই কম। সধারণত দুই মিটারেরও কম থাকে। এ এলাকায় প্রাচীন
নদী উপত্যকার অংশ বিশেষ অবশিষ্ট থাকতে পারে। কিন্তু পরবর্তীকালে পৌনঃপুনিক প্লাবনের
ফলে এই চিহ্ন বিলুপ্ত হয়।
প্রাকৃতিক বাঁধের পশ্চাৎ দিকে নদীর পলি সঞ্চয় ক্রমশ কম হওয়ায় তা নিম্নভ‚মিরূপে অবস্থান
করে। বর্ষার পরে বন্যার পানি সরে গেলে এ নিম্নভ‚মিতে জল আবদ্ধ অবস্থায় থেকে যায়।
চিত্র ৫.৯.৩ : প্লাবন সমভূমিতে প্রাকৃতিক বাঁধ, কর্দম ছিপি ও পশ্চাৎ
জলাভূমি দেখানো হয়েছে
প্রাকৃতিক বাঁধের পশ্চাতে অবস্থিত এরূপ জলাবদ্ধ ভ‚মিকে পশ্চাৎ জলাভ‚মি (ইধপশ ঝধিসঢ়)
বলা হয় (চিত্র-৫.৯.৩)। বাংলাদেশের অধিকাংশ নদীর স্বাভাবিক বাঁধের পশ্চাতে জলাভ‚মিও
রয়েছে। অনেক সময় এগুলি বিল হিসেবে অবস্থান করে।
পশ্চাৎ ঢাল (ইধপশ ঝষড়ঢ়ব) : স্বাভাবিক বাঁধের পশ্চাতে অপেক্ষাকৃত নিচু ঢালু ভ‚মিকে পশ্চাৎ
ঢাল বলা হয়। এ পশ্চাৎ ঢাল জলাভ‚মি পর্যন্ত বিস্তৃত থাকতে পারে। বাংলাদেশের অধিকাংশ
নদীর পশ্চাতে এরূপ পশ্চাৎ ঢাল রয়েছে।
জলাভ‚মি (গধৎংযবং ড়ৎ ইববষ) :
নদী গতি পরিবর্তন করলে প্লাবন ভ‚মির মধ্যস্থ পরিত্যক্ত গতিপথ ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে উঠে।
কিন্তু যে সব স্থান ভরাট হয় না সেখানে পানি জমে জলাভ‚মির সৃষ্টি করে। আবার প্লাবন ভ‚মির
অভ্যন্তরের নিচু অঞ্চলে পানি জমেও জলাভ‚মির সৃষ্টি হয়। এরূপ জলাভ‚মিকে বিল (ইববষ) বলা
হয়। রাজশাহীর চলন বিল, গোপালগঞ্জ জেলার বিল ও সিলেটের বিল এ জাতীয় জলাভ‚মির
প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
নদী বাঁক (গবধহফবৎ) : নদী বাঁক
একটি গুরুত্বপূর্ণ নদীজ বৈশিষ্ট্য যা
প্রায়ই চোখে পড়ে। নদী বাঁকের ক্ষয়
ক্রিয়ার কারণে নদী খাতের অবস্থানে
ক্রমাগত পরিবর্তন হয়, কিন্তু খাতের
আয়তন অপরিবর্তনীয় থাকে। নদীর
গতিপথে উঁচু-নিচু স্থান বা কঠিন শিলা
থাকলে নদীর গতি বেঁকে যায়। একে
সর্পিল নদী (গবধহফবৎরহম জরাবৎ)
বলে। যদিও নদী আঁকাবাঁকা হওয়ার
বহুবিধ কারণ আছে। বাঁকের মুখে
নদীর তীরের যে স্থানটি স্রোতের ঠিক
সম্মুখে থাকে, স্রোতের আঘাত সেখানে খুব বেশী ক্ষয় হয়। ফলে ঐ স্থানে নদী প্রতি বছর
ভাঙ্গতে থাকে এবং তার বিপরীত দিকে স্রোতের বেগ হ্রাস পাওয়ায় সেখানে পলি মাটি ও
বালুকা সঞ্চিত হয়ে চর পড়তে থাকে। বাঁক পার হয়ে পানি স্রোতের গতি আড়াআড়িভাবে
নদীপথ অতিক্রম করে। ফলে অপর তীরেও বাঁক সৃষ্টি হয়। এরূপ বাঁক সৃষ্টি করতে করতে
নদী সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। বাঁক সৃষ্টির ফলে নদীর দৈর্ঘ্যও বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশের প্লাবন
সমভ‚মিতে এরূপ ভ‚-প্রকৃতি দেখা যায়। নদী আঁকাবাঁকা হয়ে উত্তল ও অবতল পাড়ের সৃষ্টি
করে। উত্তল পাড়ে সঞ্চয় এবং অবতল পাড়ে ক্ষয়সাধন করে। উত্তল পাড়ের পলি সঞ্চয় করে
যে সংলগ্ন চরের সৃষ্টি করে তাকে সুঁচালু চর বা বালুচরা প্রান্তর (চড়রহঃ ইধৎ) বলে (চিত্র৫.৯.৪)।
অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ (ঙী
ইড়ি খধশব) :
সমভ‚মিতে প্রবাহিত
কোনো কোনো নদীতে
অসংখ্য বাঁক দেখা যায়।
কোনো কোনো সময় এ
বাঁক এত বেশী বৃদ্ধি পায়
যে, দুটি বাঁক নিজেদের
খূব কাছাকাছি এসে
পড়ে। এক পর্যায়ে উভয়
চিত্র ৫.৯.৪ : নদী বাঁকে প্রবাহের বৈশিষ্ট্য
চিত্র ৫.৯.৫ : নদী বাঁক (মিয়েনডার) গঠনের বিভিন্ন পর্যায় ঃ ১-২ তরঙ্গায়ীত
নদী বাঁক, ৩ অশ্বক্ষরাকৃতি নদী বাঁক, ৪ অক্স-বো বা ব্রেসলেট ধরনের নদী বাঁক
অংশ মিলে যায় এবং নদী সোজা ভাবে বইতে থাকে। আর ক্ষয়প্রাপ্ত বাঁকা অংশটি নদীখাত
হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে হ্রদের আকার ধারণ করে। এরূপ হ্রদগুলো দেখতে অনেকটা অশ্বের ক্ষুরের
ন্যায় বলে এদের অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলা হয় (চিত্র-৫.৯.৫)। বাংলাদেশের পদ্মা, যমুনা, ব্র²পুত্র
প্রভৃতি নদীর শাখাসমূহ বহু অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ দেখা যায়। সব হ্রদে পলি মাটি সঞ্চিত হলে
সেগুলো ভরাট হয়ে সমভ‚মিতে পরিণত হয়। এরূপ সমভ‚মিকে কর্দম ছিপি (ঈষধু চষঁম)
বলে। এরূপ ভ‚মিরূপ বাংলাদেশের প্লাবন সমভ‚মি অঞ্চলে ব্যাপকভাবে দৃষ্ট হয়।
বালুচর ও বিনুনী নদী (ঝধহফ ইধৎ ধহফ ইধৎরফবফ জরাবৎ) : কোনো নদীর পরিবহন ক্ষমতার
চেয়ে অতিরিক্ত পলি উৎস অঞ্চল থেকে নদীতে সরবরাহ হলে তা নদী খাতেই জমা হয়। নদীর
ভেতর বালি, নুড়ি, কাঁকর, কর্দম ইত্যাদি সঞ্চিত হয়ে যে নতুন ভ‚মির সৃষ্টি হয়, তাকে বালু চর
বলে। এই বালুচর প্রধানত দুটি কারণে সৃষ্টি হয়। প্রথমত, নদীর পানিতে যখন অতিরিক্ত বালু,
কর্দম, নুড়ি ইত্যাদি মিশ্রিত থাকে তখন স্রোতের বেগ কমে যায় এবং বাহিত পদার্থসমূহ দ্রæত
সঞ্চিত হয়ে বালু চরের (ঝধহফ ইধৎ) সৃষ্টি হয়। নদীখাতে অতিরিক্ত পলি সঞ্চয়নের কারণ
বহুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এরূপ বহু শাখা বিশিষ্ট পানির ধারা অনেকটা চুলের বিনুনীর মতো
দেখতে। একে বিনুনী নদী বা চর উৎপাদী নদীও বলা হয়। যে সকল নদীতে প্রবাহ মাত্রা
ঋতুভিত্তিক পরিবর্তন ব্যাপক হয় সেখানে এ ধরনের নদী বিন্যাস দেখা যায়। বাংলাদেশের
যমুনা নদীতে এ ধরনের বিনুনী বিন্যাস দেখা যায়। এজন্য যমুনা নদীকে চর উৎপাদী বলা
হয়।
ব-দ্বীপ (উবষঃধ) : নদীর নিম্ন গতিতে স্রোতের বেগ খুব কমে যায় এবং নদীর পানির সঙ্গে
মিশ্রিত শিলাচ‚র্ণ, বালি, কাদা প্রভৃতি তলানিরূপে সঞ্চিত হতে থাকে। নদীর মোহনায় সমুদ্রের
লবন মিশ্রিত পানি এ তলানি পড়তে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। নদী যদি কোনো কম স্রোত
বিশিষ্ট বা স্রোতহীন সমুদ্রে পড়ে, তাহলে ঐ সমস্ত তলানি নদীর মুখে জমতে জমতে নদী মুখ
প্রায় বন্ধ হয়ে এবং কালক্রমে ঐ চরাভ‚মি সমূদ্র পানির ওপর উঁচু হয়ে ওঠে। তখন নদী
বিভিন্ন শাখায় ঐ চরাভ‚মিকে বেষ্টন করে সমুদ্রে পতিত হয়। নদী মোহনাস্থিত ত্রিকোনাকার এ
নতুন ভ‚মিকে ব-দ্বীপ বলে।
যখন নদী কোনো সাগরে হ্রদে বা অন্য কোনো জলাশয়ে শেষ পর্যায়ে এসে মিলিত হয়, তখন
নদী পরিবাহিত পলি ঐ অংশে মাত্রাহীন ‘.............-এর (ল্যাটিন .......... ডেল্টা) আকারে
সঞ্চিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই এর আকার আকৃতি বিশেষভাবে নির্ভর করে নদীবাহিত পললের
পরিমাণ, গঠন ও যেখানে পলি নিক্ষিপ্ত হচ্ছে সেই স্থানের প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর।
মিহি পলি ও কর্দম মোহনা থেকে কিছুটা দূরে অনুভ‚মিক ভাবে সঞ্চিত হয়ে নিম্নতল (ইড়ঃঃড়সঝবঃ ইবফং) সৃষ্টি করে। নিম্নতল সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই অগ্রবর্তী তল (ঋড়ৎব-ঝবঃ ইবফং) গঠিত
হয়। অগ্রবর্তী তল মোটা পলি দ্বারা গঠিত। এ সমস্ত পলি অপেক্ষাকৃত বড় হওয়ায় নদী সমুদ্র
বা হ্রদে প্রবেশ করার পরপরই জমা হয়ে ঢালু স্তর তৈরী করে। এ অগ্রবর্তী তল সাধারণত
বন্যাকালীন পলি আস্তরণে ঢেকে যায়। একে উর্ধ্বতল (ঞড়ঢ়-ঝবঃ ইবফং) বলে। ব-দ্বীপ যতোই
সমুদ্রের দিকে বাড়তে থাকে নদীর ঢালও ক্রমাগত হ্রাস পায়। এ অবস্থায় নদী দ্রæত গতি ধারা
বদল করে এর ভিত্তি তলের সংক্ষিপ্ত পথ বেছে নেয়।
নদীর প্রধান ধারা অনেকগুলো শাখায় (উরংঃৎরনঁঃধৎরবং) বিভক্ত। এ সমস্ত শাখা নদীর মাধ্যমে
প্রবাহ সমুদ্রে পৌঁছে। শাখা নদীসমূহ দ্রæত স্থান বদল করে ধীরে ধীরে একটি আদর্শ ব-দ্বীপের
সৃষ্টি করে। সমুদ্রের তরঙ্গের প্রকৃতি ও শক্তি, জোয়ার ভাটার বৈশিষ্ট্য এবং তটরেখার
অবস্থানগত পার্থক্যের কারণে ব-দ্বীপের আকৃতিতেও বেশ বৈচিত্র দেখা যায়।
পাঠসংক্ষেপ :
নদী সমুদ্রের নিকট এসে উপনীত হলে নদীর ঢাল ও গভীরতা একেবারে কমে যায়।
নদীর উপত্যকা সর্বাপেক্ষা অধিক প্রশস্ত হয়। নদীবাহিত শিলাচ‚র্ণ নদী স্রোতের দ্বারা
বাহিত হয়ে নদী গর্ভে ও নদীর উভয় পার্শ্বে সঞ্চিত হয়। নদীর এ অংশে পলি সঞ্চয়নই
প্রধান বৈশিষ্ট্য। নদী তার বিস্তৃত প্লাবন ভ‚মিতে গতিপথ পরিবর্তন করে থাকে। এই
অংশের প্রধান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভ‚মিরূপের মধ্যে মৃদু ঢাল বিশিষ্ট প্লাবন সমভ‚মি, নদী বাঁক,
প্রাকৃতিক বাঁধ, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, কর্দম ছিপি, নদী ধাপ, নদীতীর জলাভ‚মি, বিনুনী নদী
ও ব-দ্বীপ অন্যতম।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন : ৫.৯
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:
১. শূন্যস্থান পূরণ করুন :
১.১. নদী বার্থক্য অবস্থায় উপনীত হলে নদীর .......... খুব কমে যায়।
১.২. বার্ধক্য অবস্থায় নদীর ............ অপেক্ষা ........ কার্যই অনেক বেশী হয়।
১.৩. আঁকাবাঁকা নদীর ...........পাড়ে সঞ্চয় এবং ............পাড়ে ক্ষয়সাধন করে থাকে।
১.৪. নদীর বাঁক বৃদ্ধি পেয়ে এক সময় নদীর বাঁক অংশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, একে ...হ্রদ
বলে।
১.৫. অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদে পলি জমা হয়ে ভরাট হয়ে গেলে একে ....... বলে।
১.৬. নদী সমুদ্রে এসে পতিত হলে নদীর মোহনায় যে মাত্রাহীন ‘ব’ এর মত পলি সঞ্চিত
স্থানকে ................... বলে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১. নদীর সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপের ৫টি উদাহরণ দিন।
২. পলল পাখা কাকে বলে?
৩. প্রাকৃতিক বাঁধ কাকে বলে?
৪. নদী বাঁক বলতে কি বুঝায়?
৫. বিনুনী নদী কি করে সৃষ্টি হয়?
৬. ব-দ্বীপ কাকে বলে?
৭. ব-দ্বীপ কি করে গঠিত হয়?
রচনামূলক প্রশ্ন :
১। নদীর সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপের বিস্তারিত বিবরণ দিন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]