হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভূমিরূপসমূহ আলোচনা করুন।


হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপ
হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপ আলোচনা করতে হলে যে প্রশ্নটি আসে তা হলো কেন সঞ্চিত
হয়? হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়জাত পদার্থ কোথাও না কোথাও সঞ্চিত হবেই।
ক্ষয়জাত পদার্থ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বাহিত হয়ে (ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃধঃরড়হ) অবশেষে সঞ্চিত হয়ে বিভিন্ন
আকৃতির সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপের সৃষ্টি করে।
হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় তার সঙ্গে প্রস্তর খন্ড, বালুকা, কর্দম ইত্যাদি বহুদূরে বাহিত
হয়ে থাকে। এছাড়া হিমবাহ গলিত পানির স্রোতের সঙ্গে কর্দম, বালুকা, কাঁকর ইত্যাদিও
অনেক দূরে অগ্রসর হয়। অবশেষে এরা পর্বতের নিম্নাংশ ও সমতল ভ‚মিতে সঞ্চিত হয়।
হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপ (উবঢ়ড়ংরঃরড়হধষ ঋবধঃঁৎবং ড়ভ এষধপরবৎ) :
হিমবাহের সঞ্চয় ক্রিয়ার ফলে যে ভ‚মিরূপের সৃষ্টি হয় তাকে হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপ
বলা হয়। হিমবাহ দু’ভাগে সঞ্চয়কার্য করে থাকে। প্রথমটি হলো হিমবাহ নিজেই কাঁকর,
প্রস্তরখন্ড, বালু, কর্দম ইত্যাদি সঞ্চয় করে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে হিমবাহ গলিত পানি
ধারা ঐ সকল পদার্থ সঞ্চিত করে। তাই হিমবাহের সঞ্চয় দু’প্রকার। যেমন (১) হিমবাহের
সঞ্চয় (এষধপরধষ উবঢ়ড়ংরঃং), এবং (২) হিমবাহ গলিত পানি ধারার সঞ্চয় (ঋষাঁরড়-মষধপরধষ
উবঢ়ড়ংরঃং বা এষধপরড়-ভষাঁরধষ উবঢ়ড়ংরঃং)। হিমবাহের সঞ্চয়ের ফলে যে ভ‚মিরূপের উদ্ভব হয়
তাতে কোনো স্তর থাকে না। এ জাতীয় সঞ্চয়কে অস্তরীভ‚ত সঞ্চাত (টহংঃৎধঃরভরবফ উৎরভঃ)
এবং হিমবাহ গলিত পানি ধারার সঞ্চয় দ্বারা যে ভ‚মিরূপের উদ্ভব হয় তাতে স্তর থাকায় ঐ
ধরনের সঞ্চয়কে স্তরীভ‚ত সঞ্চাত (ঝঃৎধঃরভরবফ উৎরভঃ) বলে।
১) হিমবাহজাত সঞ্চয় (এষধপরধষ উবঢ়ড়ংরঃং) -: হিমবাহের ঘর্ষণে ও চাপে বড় বড় শিলা
খন্ডগুলো ভেঙ্গে চুরে স্থানান্তরিত হয়। এরূপ আনীত ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির ও বর্ণের
প্রস্তরখন্ড, নুড়ি, কাঁকর ইত্যাদি সঞ্চিত হয়ে স্তুপাকারে নানা প্রকার ভ‚মিরূপের সৃষ্টি হয়।
যেমন, গ্রাব রেখা, ড্রামলিন, অনিয়মিত শিলাপিন্ড (ঊৎৎধঃরপ ইষড়পশ) হিমবাহ সমভ‚মি
ইত্যাদি।
হিমবাহ অধ্যুষিত উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের অবক্ষেপ (উবঢ়ড়ংরঃরড়হ রহ এষধপরধঃবফ টঢ়ষধহফং)
১) গ্রাবরেখা (গড়ৎধরহব) -: উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের চিহ্নই অধিক
দেখতে পাওয়া যায় বটে, তবে এ অংশে কিছু কিছু অবক্ষেপনও হয়ে থাকে। বিভিন্ন
ধরনের গ্রাবরেখা স্তরে স্তরে এ অঞ্চলে অবক্ষেপন হয়ে থাকে। পার্বত্য অঞ্চল হতে
বিচ্ছিন্ন ও ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাখন্ড হিমবাহের পার্শ্বে ও সম্মুখে স্তুপাকারে সঞ্চিত হয়ে নিম্নদিকে
প্রবাহিত হতে থাকে। এ ধরনের শিলাস্তুপকে গ্রাবরেখা বলে (চিত্র-৫.১৩.১)।
হিমবাহ অগ্রসর হবার সময় তার সাথে আনীত প্রস্তরখন্ড, কাঁকর, বালুকা, কর্দম ইত্যাদি তার
পথের আশে পাশে, মধ্যভাগে বা শেষ প্রান্তে সঞ্চিত করে বলে তাদের অবক্ষেপনের স্থান
অনুসারে তাদেরকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। এগুলি হল :
পাঠ-৫.১৩
বিভিন্ন পদার্থ
হিমবাহ দ্বারা সঞ্চিত
হয়ে স্তুপাকারে নানা
প্রকার ভ‚মিরূপের
সৃষ্টি করে।
যেমন,- গ্রাবরেখা,
ড্রামলিন, অনিয়মিত
শিলাপিন্ড, হিমবাহ
সমভ‚মি ইত্যাদি।
হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপের শ্রেণীবিভাগ
হিমবাহজাত সঞ্চয় (অস্তরীভ‚ত সঞ্চয়) হিমবাহ গলিত পানি ধারার সঞ্চয় (স্তরীভ‚ত সঞ্চয়)
১) গ্রাবরেখা
২) ড্রামলিন
৩) অনিয়মিত শিলাপিন্ড
৪) হিমবাহ সমভ‚মি
১) হিমবিধৌত সমভ‚মি
২) এস্কার
৩) কেম
৪) ভ্যালিট্রেন
৫) ভার্ব
চিত্র ৫.১৩.১ : গ্রাবরেখার শীর্ষের বিভিন্ন আকৃতি
গ্রাবরেখা এখানে ১৫ প্রকারের তালিকাবদ্ধ করলেও এগুলির মধ্যে প্রধান গ্রাবরেখাগুলোকে ৪
ভাগে ভাগ করা হয়: ভূমিগ্রাব রেখা, পার্শ্ব গ্রাবরেখা, মধ্য গ্রাবরেখা, ও প্রান্ত গ্রাবরেখা।
বিভিন্ন প্রকারের গ্রাবরেখা :
র) ভ‚মি গ্রাবরেখা (এৎড়ঁহফ গড়ৎধরহব)
রর) বোল্ডার ক্লে বা টিল (ইড়ঁষফবৎ ঈষধু ড়ভ ঞরষষ)
ররর) পার্শ্ব গ্রাবরেখা (খধঃবৎধষ গড়ৎধরহব)
রা) মধ্য গ্রাবরেখা (গবফরপধষ গড়ৎধরহব)
া) প্রান্ত গ্রাবরেখা (ঞবৎসরহধষ ড়ৎ ঊহফ গড়ৎধরহব)
ার) আবদ্ধ গ্রাবরেখা (ঊহমষধপরধষ গড়ৎধরহব)
ারর) তলদেশ গ্রাবরেখা (ঝঁন-এষধপরধষ গড়ৎধরহব)
াররর) পুশ গ্রাবরেখা (চঁংয গড়ৎধরহব)
রী) ডাম্প বা স্তুপ গ্রাবরেখা (উঁসঢ় গড়ৎধরহব)
ী) সম্পৃক্ত গ্রাবরেখা (খড়ফমব গড়ৎধরহব)
ীর) আন্তঃলোব গ্রাবরেখা (ওহঃবৎষড়নধঃব গড়ৎধরহব)
ীরর) ওয়াশ বোর্ড গ্রাবরেখা (ডধংয ইড়ধৎফ গড়ৎধরহব)
ীররর) খাত কাটা গ্রাবরেখা (ঋষঁঃবফ গড়ৎধরহব)
ীরা) রোজেন গ্রাবরেখা (জড়মবহ গড়ৎধরহব)
ীা) পশ্চাদগামী গ্রাবরেখা (জবপবংংরড়হধষ গড়ৎধরহব)
র) ভ‚মি গ্রাবরেখা : যে ভ‚মির ওপর দিয়ে হিমবাহ চলতে থাকে সে ভ‚মিতে যে গ্রাবরেখা
গঠিত হয় তাদের ভ‚মি গ্রাবরেখা বলে। ভ‚মি গ্রাবরেখা বিভিন্ন ধরনের প্রস্তর খন্ডের
সঞ্চয়ের ফলে গঠিত হয়ে থাকে। এদের ওপরিভাগ অসমান হয়।
রর) বোল্ডার ক্লে বা টিল : কোল্ডার ক্লেও ভ‚মি গ্রাবরেখা রূপে সঞ্চিত হয়ে থাকে। স্তরবিহীন
বালু ও কর্দমের ওপর ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির প্রস্তর খন্ড সঞ্চিত হয়ে বোল্ডার ক্লে
গঠিত হয়। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের বহু স্থানে বোল্ডার ক্লে সঞ্চিত হতে দেখা
যায়। বিভিন্ন আকৃতির প্রস্তর খন্ড সঞ্চিত না হয়ে একই ধরনের প্রস্তর খন্ড সঞ্চিত হয়ে
ভ‚মি গ্রাবরেখা রূপে অবস্থান করলে তাকে টিল (ঞরষষ) বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য পশ্চিম
ভাগে প্রায় ২.৫ হাজার বর্গ কি.মি. স্থান ব্যাপী সুবিস্তৃত চাদরের ন্যায় টিল সঞ্চিত আছে।
ররর) পার্শ্ব গ্রাবরেখা : হিমবাহের উভয় পার্শ্বে সঞ্চিত করে পার্শ্ব গ্রাবরেখা গঠন করে। এদের
উচ্চতা কয়েকশত মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এরা অস্থায়ীভাবে
গঠিত হয় এবং হিমবাহ গললে অদৃশ্য হয়।
রা) মধ্য গ্রাবরেখা : দুদিক থেকে দুটি হিমবাহ এসে এক স্থানে মিলিত হলে উভয়ের
মধ্যস্থানে যে গ্রাবরেখা গঠিত হয় তাকে মধ্য গ্রাবরেখা বলে। এরা দীর্ঘ সরু শৈল শিরার
ন্যায় হিমবাহের গতি বরাবর অবস্থান করে। আবার হিমবাহিক উপত্যকার মধ্য ভাগে
কর্দম, কাঁকর, প্রস্তরখন্ড ইত্যাদি স্তুপাকারে সঞ্চিত হয়েও এ জাতীয় গ্রাবরেখা গঠিত হয়।
এক্ষেত্রে গ্রাবরেখা দুদিক দিয়ে হিমবাহ নিচের দিকে অগ্রসর হয়।
া) প্রান্ত গ্রাবরেখা : হিমবাহের দ্বারা নীত পদার্থ হৈমবাহিক উপত্যকার শেষভাগে স্তুপের
মতো সঞ্চিত হলে একে প্রান্ত গ্রাবরেখা বলে। হিমবাহ দ্রæত পশ্চাদপসরন করলে প্রান্ত
গ্রাবরেখা স্পষ্ট বোঝা যায় না।
ার) আবদ্ধ গ্রাবরেখা : ওপরে বর্ণিত গ্রাবরেখাগুলো ব্যতীত আরও দুই প্রকার গ্রাবরেখা
দেখতে পাওয়া যায়। হিমবাহের ফাটলের (ঈৎবাধংংবং) মধ্য দিয়ে প্রস্তর খন্ড অনেক
সময় হিমবাহের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। একে আবদ্ধ গ্রাবরেখা বলে।
ারর) তলদেশ গ্রাবরেখা : প্রস্তর খন্ড পর্বতগাত্র ও হিমবাহের ফাটলের মধ্য দিয়ে হিমবাহের
তলদেশে পৌঁছলে, তাকে তলদেশ গ্রাবরেখা বলা হয়।
অবক্ষেপনের পার্থক্য অনুযায়ী প্রান্ত গ্রাবরেখাকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা-
(ক) পুশ গ্রাবরেখা, (খ) ডাম্প বা স্তুপ গ্রাবরেখা ও (গ) অস্থায়ী গ্রাবরেখা
াররর) পুশ গ্রাবরেখা : হিমবাহ যদি প্রান্তের অগ্রগমন জনিত ঠেলা বা ধাক্কায় ভ‚মি গ্রাবরেখা শৈল
শিরার আকার ধারণ করে তাহলে তাকে পুশ গ্রাবরেখা বলে।
রী) ডাম্প বা স্তুপ গ্রাবরেখা : এরকম ক্ষেত্রে হিমবাহ শরীরের মধ্যে ও ওপরে যে গ্রাবরেখা
অবস্থান করে হিমবাহের গলনের ফলে প্রান্তদেশের পার্শ্বপৃষ্ঠে তা প্রকাশ হয়ে পড়ে
প্রান্তদেশের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে আসে ও স্তুপীকৃত হয়ে ডাম্প বা স্তুপ গ্রাবরেখার সৃষ্টি
করে।
ী) সম্পৃক্ত গ্রাবরেখা : হিমবাহের তলদেশের পানি সম্পৃক্ত গ্রাবরেখা বিভেদমূলক চাপের
ফলে প্রান্তদেশে পিষ্ট হয়ে অস্থায়ী গ্রাবরেখা তৈরী করে।
ীর) আন্তঃলোব গ্রাবরেখা : হিমবাহের প্রান্তদেশ অনেক সময় কতকগুলো উত্তল অংশ ও
উহাদের অন্তর্বতী দীর্ঘাকৃতি খাঁজ দ্বারা গঠিত হয়। এরূপ খাঁজে গ্রাবরেখা সঞ্চিত হয়ে
শৈল শিরার মতো আন্তঃলোব গ্রাবরেখার সৃষ্টি করে।
ীরর) ওয়াশ বোর্ড গ্রাবরেখা : কোনো কোনো অঞ্চলে যেমন উত্তর দক্ষিণ ডাকোটার পূর্বাংশে
গ্রাবরেখা গঠিত অনেকগুলো অঙ্গাঙ্গীভাবে অবস্থিত নিম্ন ও সংকীর্ণ শৈলশিরা দেখা যায়।
এদের কে ওয়াশ বোর্ড গ্রাবরেখা বলে। এরা উচ্চতায় সাধারণত ১০-৫০ ফুট এবং
দৈর্ঘ্যে কয়েক হাত থেকে কয়েক মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এদের মধ্যে কয়েকশ ফুট
ব্যবধান থাকে।
ীররর) খাত কাটা গ্রাবরেখা : যদি হিমবাহের তলদেশে সুবৃহৎ গন্ডশিলা প্রোথিত থাকে তাহলে
ঐ প্রোথিত গন্ড শিলার পশ্চাৎ ভাগে (নিম্ন প্রবাহের দিকে) বরফের চাপ কম থাকে ও ঐ
গন্ড শিলার পরবর্তী অংশে যেখানে দ্বিধাবিভক্ত বরফ মিলিত হতে যায় সেখানে পার্শ্ববর্তী
অংশে বরফের চাপ বেশি থাকে। এর ফলে টিলা নিষ্পেষিত হয়ে শিরার আকার ধারণ
করে। এ শিরার সম্মুখভাগে (ঊর্ধ্ব উপত্যকার দিকে) একটা খাতে সৃষ্টি করে। এরূপ
গ্রাবরেখাকে খাতকাটা গ্রাবরেখা বলে।
ীরা) রোজেন গ্রাবরেখা : রোজেন গ্রাবরেখা হিমবাহ প্রবাহের আড়াআড়ি দিকে শিরার আকারে
অবস্থান করে। এরা উচ্চতায় ১০ মি. থেকে ৩০ মি. এবং দৈর্ঘ্যে ১ কি. মি. বেশী হয়।
দুটি রোজেন গ্রাবরেখার মধ্যবর্তী দূরত্ব ১০০-৩০০ মি. থাকে। এই গ্রাবরেখা শিরার
আকৃতি অনেকটা চাঁদের কলার মতো যার শিং নিম্ন উপত্যকার দিকে প্রসারিত থাকে।
সুইডেনের রোজেন হ্রদে এরকম সুগঠিত রোজেন গ্রাবরেখা লক্ষ্য করা যায়, যা থেকে এই
ধরনের গ্রাবরেখার নামকরণ হয়েছে।
ীা) পশ্চাদগামী গ্রাবরেখা : দেখা গেছে হিমযুগে হিমবাহের পর্যায়ক্রমে অগ্রগমন ও পশ্চাৎ
অপসরণ ঘটেছে। এইরূপ অবস্থায় পশ্চাৎ অপসারণকালে যদি হিমবাহ মাঝে মধ্যে
কোনো এক সময়ে স্থিতাবস্থায় প্রাপ্ত হয় তাহলে একাধিক প্রান্ত গ্রাবরেখার সৃষ্টি হয়।
এদেরকে পশ্চাদগামী গ্রাবরেখা বলে। প্রকৃতপক্ষে এরূপ পূর্ব কথিত কোনো কোনো প্রান্ত
গ্রাবরেখা হিমবাহের পুনবাহের পুনরাগমনের ফলে হয়ে থাকে।
২) ড্রামলিন (উৎঁসষরহ) :
অনেক সময় হিমবাহের সাথে প্রবাহিত প্রস্তরখন্ড, কাঁকর, বালুকা, কর্দম ইত্যাদি সঞ্চিত
হয়ে সারিবদ্ধভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টিলা পাহাড়ের সৃষ্টি করে। এরা হিমবাহের গতির সঙ্গে
সমান্তরাল ভাবে থাকে এবং দেখতে অনেকটা উল্টানো নৌকা বা উল্টানো চামচের মতো
হয়। যে দিক থেকে হিমবাহ প্রবাহিত হয় তাদের সেদিক হয় তাদের সেদিক ভোঁতা এবং
অন্যদিক বেশ ঢালু। এ রকম ভ‚মিরূপকে ড্রামলিন বলা হয় (চিত্র-৫.১৩.২। কোনো
কোনো ড্রামলিন অর্ধ বা সোয়া মিটার উঁচু এবং বৃত্তাংশটি কয়েক মিটার লম্বা হয়। উত্তর
আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ইউরোপের উত্তরাংশে এরূপ ড্রামলিন দেখতে পাওয়া যায়।
৩) অনিয়মিত শিলাপিন্ড (ঊৎৎধঃরপ ইষড়পশ) :
হিমবাহের সাথে অনেক সময় অনেক বড় বড় শিলাপিন্ড সমতল ভ‚মিতে এসে পড়ে।
এরূপ বৃহৎ আকৃতির প্রস্তরখন্ডগুলো একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলব্যাপী যখন অবস্থান করে তখন
তাদের অনিয়মিত শিলাপিন্ড বলা হয়। এদের অধিকাংশই অত্যন্ত কঠিন শিলা দ্বারা
গঠিত।
৪) হিমবাহ সমভ‚মি (এষধপরধষ চষধরহ) :
অনেক সময় হিমবাহের গতিপথে বা এর শেষ প্রান্তে অবস্থিত হ্রদসমূহে এর দ্বারা বাহিত
কাঁকর, বালু, কাদা, প্রস্তরখন্ড ইত্যাদি দ্বারা ভরাট হয়ে সমভ‚মিতে পরিণত হয়। এরূপ
সমভ‚মিকে হিমবাহ সমভ‚মি বলা হয়। উত্তর আমেরিকার প্রেইরী অঞ্চলের আগাসিস
হ্রদটিও ভরাট হয়ে এ জাতীয় সমভ‚মিতে পরণিত হয়েছে।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন :
১. শূণ্যস্থান পূরণ করুন :
১.১. ক্ষয়জাত পদার্থ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ........... হয়ে অবশেষে সঞ্চিত হয়ে বিভিন্ন আকৃতির
সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপের সৃষ্টি করে।
১.২. উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের ......... চিহ্নই অধিক দেখতে পাওয়া যায়।
১.৩. যে ভ‚মির ওপর দিয়ে হিমবাহ চলতে থাকে সে ভূমিতে যে গ্রাবরেখা গঠিত হয় তাদের
.... গ্রাবরেখা বলে।
১.৪. হিমবাহের উভয় পার্শ্বে সঞ্চিত করে .........গ্রাবরেখা গঠন করে।
১.৫. দুদিক থেকে দুটি হিমবাহ এসে এক স্থানে মিলিত হলে উভয়ের মধ্যস্থানে যে গ্রাবরেখা
গঠিত হয় তাকে ..........গ্রাবরেখা বলে।
১.৬. হিমবাহের দ্বারা নীত পদার্থ হৈমবাহিক উপত্যকার শেষভাগে স্তুপের মতো সঞ্চিত হলে
একে .......গ্রাবরেখা বলে।
১.৭. ............. গ্রাবরেখা হিমবাহ প্রবাহের আড়াআড়ি দিকে শিরার আকারে অবস্থান করে।
সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন :
১) হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে যে সকল ভ‚মিরূপের সৃষ্টি হয় সেগুলো নাম লিখুন।
২) গ্রাবরেখা কি? কত ধরনের গ্রাবরেখার কথা এই অধ্যায় বলা হয়েছে সেগুলোর নাম
লিখুন।
৩) স্তরীভ‚ত সঞ্চাত ও অস্তরীভ‚ত সঞ্চাত বলতে কি বোঝায়?
৪) হিমবাহের সঞ্চয়জাত ৫টি ভ‚মিরূপ উল্লেখ করুন।
রচনামূলক প্রশ্ন :
১) হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভ‚মিরূপসমূহ আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]