ভূগোল ও পরিবেশ


একবিংশ শতাব্দীর ভূগোলের দৃষ্টিভঙ্গি কি হবে পূর্ব থেকেই অনুমান করা কঠিন কাজ। এই শতাব্দীর
শেষ ভাগের (১৯৭০) অনেক প্রখ্যাত ভ‚গোলবিদদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল ভবিষ্যৎ
ভ‚গোলের দৃষ্টিভঙ্গি কি হতে পারে। এইসব ভ‚গোলবিদগণ যা বলেছেন বাস্তব ভ‚গোল চর্চার সাথে
এর কোন সামঞ্জস্য নেই। ভূগোল শিক্ষার পাঠ্যক্রম ও এর চর্চার পদ্ধতিগত দিকসমূহের ওপর বেশ
বির্তক চলে আসছে বহু বছর থেকেই। এই ধরনের বির্তক ভ‚গোলের অভ্যন্তরীণ মতভেদকে ইঙ্গিত
করে এবং বৃহত্তর বিজ্ঞান সমাজে এর প্রতিষ্ঠায় পদ্ধতিগত পার্থক্যকেই সুস্পষ্ট করে। ভ‚গোলের
দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এ বির্তক শেষ পর্যন্ত এর বিষয়গত ও পারিপাশ্বির্কতায় কি পরিবর্তন আনবে তা
নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও যে বিষয়টি নিশ্চিত তা হলো পরবর্তী দশকের ভ‚গোল একক মডেল
(গড়হড়-চধৎধফরমস) বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হবে না। বহু ভ‚গোলবিদ মনে করেন, অতীতের ন্যায়
ভবিষ্যতেও ভ‚গোল চর্চায় বাহ্যিক পরিবেশীয় প্রভাব থাকবে; বিশেষত: অর্থনৈতিক, সামাজিক ও
রাজনৈতিক পটভ‚মি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। তবে এই সম্পর্কে বর্তমান চিন্তা ধারাটি কি তা
পরিস্কার হওয়া প্রয়োজন।
ভ‚গোল ও তার পরিবেশ-বর্তমান চিন্তাধারা কি?
ভ‚গোলের বর্তমান চিন্তাধারায়-এর পরিবেশীয় প্রভাব লক্ষ্যণীয়। ভ‚গোলবিদগণ চলমান অর্থনৈতিক,
সামাজিক ও রাজনৈতিক পটভ‚মির আঙ্গিকে তার চর্চাকৃত বিষয়সমূহকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে।
যেমন, আধুনিক নগর সভ্যতার আলোকে নগর বসতি জনিত আবাসন সমস্যা, নগরীয় পরিবেশগত
সমস্যাদি, শিল্পদূষণ, ব্যাপক বন উজার ও তৎজনিত পরিবেশগত সমস্যা, ব্যাপক ভ‚মি ব্যবহারের
পরিবর্তনের সমস্যা এবং গ্রীণ হাউজ গ্যাস জনিত বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও তার আর্থ-সামাজিক
প্রভাব ইত্যাদি বর্তমান ভ‚গোল চর্চার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। অর্থাৎ, ভ‚গোল চর্চা
অতীতের ন্যায় আবাস হিসাবে পৃথিবীর স্থানভিত্তিক মানবীয় কর্মকান্ডের আলোকপাত থেকে বিচ্যুত
না হয়ে এই ধারা অব্যাহত রেখেছে। তবে যে বিষয়টি সাম্প্রতিক ভ‚গোল চর্চায় বেশি লক্ষ্যণীয় তা
হলো, জ্ঞানের প্রায়োগিক দিকে বেশি মনোযোগী হওয়া। ভ‚গোল চর্চায় এই ধরনের প্রায়োগিক
প্রবণতা আবার অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখতে নারাজ। তাদের মতে, ভৌগোলিকগণ বৃহৎ বিজ্ঞানী
সম্প্রদায়ের অংশবিশেষ, যা একটি আরো বৃহত্তর সম্প্রদায়ের আওতাভুক্ত। এই বৃত্তের সম্প্রদায়
সমাজের প্রয়োজনে সর্বদাই যুগ-উপযোগী ভাব ধারায় এগিয়ে যায় এবং সেই সাথে উপসম্প্রদায়ভুক্ত অংশবিশেষ ভ‚গোলকেও একই সাথে এগিয়ে যেতে হয়। এক্ষেত্রে টেইলরের (১৯৮৫)
একটি মন্তব্য উল্লেখ করা যেতে পারে।
"এবড়মৎধঢ়যু রং ধ ংড়পরধষ রহংঃরঃঁঃরড়হ. খরশব ধষষ ংঁপয রহংঃরঃঁঃরড়হং রঃং াধষঁব ঃড় ংড়পরবঃু াধৎরবং ড়াবৎ ঃরসব ধহফ ঢ়ষধপব. ঞযব পৎবধঃরড়হ ড়ভ ধহু ংড়পরধষ রহংঃরঃঁঃরড়হ রং ধ ৎবংঁষঃ ড়ভ ধ মৎড়ঁঢ় ড়ভ ঢ়বড়ঢ়ষব যিড় রহফবহঃরভু ধ ঢ়ধৎঃরপঁষধৎ হববফ ধহফ ধৎব ধনষব ঃড় ভরহফ ঃযব ৎবংড়ঁৎপবং ঃড় সববঃ ঃযধঃ হববফ. অং হববফং পযধহমব ঃযব রহংঃরঃঁঃরড়হ যধং ঃড় ধফড়ঢ়ঃ ঃড় ংঁৎারাব."
একবিংশ শতাব্দীর ভ‚গোল
সম্পর্কে বর্তমান
ভ‚গোলবিদগণ যে বক্তব্য
দিয়েছেন বাস্তব ভ‚গোল চর্চার
সাথে তার কোন সাসজ্ঞস্য
নেই।
জ্ঞানের প্রায়োগিক দিকেই
বর্তমান ভ‚গোলের ঝোঁক
বেশি।

অর্থাৎ “ভ‚গোল একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় সময় ও স্থান ভেদে এরও
গুরুত্ব বদলায়। একটি বিশেষ প্রয়োজনের ভিত্তিতে কতিপয় সঙ্গবদ্ধ লোক যারা এই চাহিদা পূরণে
সমর্থ একীভ‚ত হয়ে এই সংগঠন/প্রতিষ্ঠান দাঁড় করায়। চাহিদার পরিবর্তনের সাথে প্রতিষ্ঠানকেও
তার অস্তিত্বের স্বার্থে মানিয়ে চলতে হয়। টেলরের এই ধারণার প্রতিফলন অতি সম্পৃতি বৃটেন ও
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ‚গোল চর্চায়ও দেখা যাচ্ছে। ভ‚গোল গবেষণা ও পাঠদানে কোন কোন বিষয়
গুরুত্ব পাওয়া উচিত এই ধরনের একটি গবেষণা থেকে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা মার্কিন
ভ‚গোল সংঘের নিউজ লেটার ১৯৯২ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, অধিকাংশের অভিমত
ভবিষ্যত ভ‚গোল চর্চায় মানচিত্রাংকন বিদ্যা, রিমোট সেনসিং এবং জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম
(জি.আই.এস) বিষয়সমূহের উপর অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই সব দৃষ্টিভঙ্গি মূলত:
ভ‚গোল বিষয়ে পাশ করা ডিগ্রীধারীগনের চাকুরীর বাজারে সম্ভাবনা সামনে রেখেই গড়ে উঠেছে।
মার্কিন দেশের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী ও জাতীয় গবেষণা পরিষদ যৌথভাবে একবিংশ শতাব্দীতে
ভ‚গোলের নতুন ভাবনা কি হওয়া উচিত তা অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়। এই উদ্যোগের ৫ সুনির্দিষ্ট
উদ্দেশ্য নির্ধারিত হয়১. ভ‚গোলের প্রধান গুরুত্বপূর্ন বিষয় ও তার সীমাবদ্ধতাসমূহ চিহ্নিত করা;
২. ভ‚গোল পাঠদান ও গবেষণায় অগ্রাধিকার প্রাপ্ত বিষয়সমূহ নির্ধারন;
৩. বিজ্ঞান হিসাবে ভ‚গোলের উন্নয়নকে জাতীয় প্রয়োজনের সাথে সমন¦য় সাধন;
৪. বিজ্ঞানী সম্প্রদায়ে ভ‚গোলের গুরুত্ব বাড়ানো;
৫. আর্ন্তজাতিক বিজ্ঞানী সম্প্রদায়ের সাথে ভ‚গোলের ভবিষ্যত গতি ধারা নিয়ে সংযোগ রক্ষা করা।
বিষয় হিসাবে ভ‚গোল তার নিজের অস্তিত্ত¡ টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনেই এগিয়ে যাবে, যেমন অতীতে
করেছে। সামাজিক চাহিদার আলোকেই নতুন গবেষণার ক্ষেত্র ও পাঠ্য বিষয় ভ‚গোলবিদগণ নির্বাচন
করবেন এই বিষযে নিশ্চিত করেই বলা যায়। ইতোমধ্যে ভ‚গোল যে বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে তারমধ্যে
মেডিকেল ভ‚গোল, আচরণগত ভ‚গোল, জেনডার ভ‚গোল, জীবভ‚মিরূপ, রিমোট সেনসিং,
জিআইএস, কৃর্ষি-জলবায়ুজ ভ‚গোল, দূর্যোগ ভ‚গোল অন্যতম। ভ‚গোলের এই সব নতুন শাখা
মূলত: মানুষের বর্তমান আর্থ সামাজিক প্রয়োজনের প্রেক্ষাপটকেই গুরুত্ব দিয়েছে। সবশেষে বলা
যায় আমরা বর্তমান ভ‚গোল চর্চা দ্বারাই ভবিষ্যত ভ‚গোলের ভিত্তি তৈরি করছি।
পাঠ সংক্ষেপ
এক বিংশ শতাব্দীর ভ‚গোলে পরিবেশীয় প্রভাব সুস্পষ্ট। জ্ঞানের প্রায়োগিক দিকেই বর্তমান
ভ‚গোলের আগ্রহ বেশী। শিক্ষার বিষয় হিসাবে ভ‚গোল তার নিজের অস্তিত্ত¡ টিকিয়ে রাখার
প্রয়োজনেই অতীতের ন্যায় এগিয়ে যাবে। মানুষের আর্থ-সামাজিক প্রয়োজনীয়তাকে
বিবেচনায় রেখেই ভ‚গোলে নতুন শাখার উদ্ভব ও বিস্তার ঘটেছে।
ভবিষ্যত ভ‚গোল চর্চায়
মানচিত্রাংকনবিদ্যা, রিমোট
সেনসিং এবং জি,আই,এস
বিষয়ের উপর অধিক গুরুত্ব
দেয়া উচিত।
অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা,
সামাজিক চাহিদা।

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
১. ‘হ্যাঁ' অথবা ‘না' উত্তর দিন (সময় ৩ মিনিট) ঃ
১.১ ভ‚গোলের বর্তমান চিন্তাধারায় এর পরিবেশীয় প্রভাব লক্ষণীয়।
১.২ জ্ঞানের প্রায়োগিক দিকেই বর্তমান ভ‚গোলের ঝোঁক বেশি।
১.৩ ভ‚গোল একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান নয়।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (সময় ৩ মিনিট) ঃ
১ ভ‚গোল ও পরিবেশ সম্পর্কে বর্তমান চিন্তা ধারাটি কি?
২ ভ‚গোল সম্পর্কে টেইলরের ধারণা কি?
৩ বৃটিশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জরিপকৃত অভিমত অনুযায়ী ভ‚গোলের কোন কোন বিষয় গুরুত্ব
পাবে বলে ধারণা করা হয়েছে?
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. একবিংশ শতাব্দীর ভ‚গোলের দৃষ্টিভঙ্গির সংক্ষিপ্ত আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]