মানব বসতের সংজ্ঞা দিন এবং এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা করুন।


বসতির সংজ্ঞা এবং দৃষ্টিভঙ্গি
ভ‚গোলবিদ স্মিথ (১৯৬০) তাঁর ‘ভৌগোলিক অভিধান'- এ বসতি বলতে স্থায়ীভাবে বাস করার জন্য
তৈরী মানুষের আবাসস্থল বুঝিয়েছেন। তাঁর মতে একক আবাস স্থল থেকে গ্রাম, এমন কি মহানগরীয়
আওতায় পড়বে। ষ্টোন (১৯৬৫)-এর মতে কোন স্থানে এক বা একাধিক মানুষের বসবাস করাকে
বসতি বলে। ফরাসী ভ‚গোলবিদ ব্রæনে (১৯৪৭)-এর মতে মানুষের দুটি মৌলিক চাহিদা অর্থাৎ বসতগৃহ
ও রাজপথের ভ‚-পৃষ্ঠে বহি:প্রকাশ হল বসতি। ডিকেন্স ও পিট (১৯৬৩) বলেন, ক্ষুদ্র গ্রাম, শহর ও
নগরে মানুষ ও আবাস স্থলের সমষ্টি হল বসতি। বুকানন বসতিকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলেন,
‘বসতি অর্থে এক বা একাধিক নির্মান এবং আবাসিক জমি,পথ-ঘাট, পার্ক বা বাগান হিসেবে ব্যবহৃত
খোলা জায়গাসহ এসকল নির্মানের সঙ্গে সংশিষ্ট সকল প্রকার কাঠামোকে বুঝায়। বহুবিধ গঠন, আকার,
আকার
বসতির বিবিধ স্তর
ড়ুঔলঠৎ
লঠৎ
সু াুৎ
প্ততঔধ াুৎ
ঠ/ে স্রৎ
ঠ´ঔড়
শঔুঔ
ঋঞঞ ওঔসঔীন্সঁ/ টঔলঔ
এবং ক্রিয়াকলাপসমূহ এর অন্তর্গত। এটি গ্রামাঞ্চলের এক নি:সঙ্গ আবাস অথবা লক্ষ লক্ষ জনসংখ্যা
অধ্যুষিত একটি নগরকেও বুঝতে পারে। একটি স্বতন্ত্র নির্মান কত বৃহৎ অথবা কত জটিল তা যাই হোক
না কেন এর উদ্ভব হয়েছে শীত-বৃষ্টি ও হিংস্র প্রাণীর হাত হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আদিম মানুষের
নড়বড়ে আচ্ছাদন থেকে। অর্থনীতিবিদ, সমাজতত্ত¡বিদ, স্থপতি, এবং ভূগোলবিদ স্ব স্ব শাস্ত্রের পরিস্থিতি
বসতিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। কিন্তু ভ‚গোলবিদ বসতিকে ‘স্থানিক সংগঠন' হিসাবে বিশ্লেষণ করেছেন।
এ সম্পর্কে বর্ধিত আলোচনা ইউনিট ৬-এ করা হয়েছে বিধায় এখানে পুনরাবৃত্তি করা হলো না।
বসতি সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গিসমূহ : ভৌগোলিক দৃষ্টিকোন থেকে বসতির চর্চাকে সনাতনী, সাংখ্যিক এবং
আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভক্ত করা যেতে পারে। বসতির অবস্থানজনিত কারণ হিসাবে সনাতনী দৃষ্টিভঙ্গি
প্রায়শই প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্কমূলক হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বসতির শ্রেণীবিভাজন করা হয়
বসতিস্থানের বৈশিষ্ট্যাবলী অনুসারে। যেমন, গঞ্জ-শহর, বন্দর-শহর, কুমার-পাড়া, জেলে-গ্রাম ইত্যাদি।
সাংখ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি বসতিসমূহের ব্যবধান এবং আভ্যন্তরীণ সংগঠন থেকে লব্ধ ধারণা ও নীতিমালাকে
বাস্তবের সরলীকরণ ‘মডেল' হিসাবে রূপদান করে। খৃষ্টলার, বারজেস, হয়েট, হ্যারিস-উলম্যান এর
তত্ত¡সমূহ উল্লেখযোগ্য (ইউনিট-৬ দ্রষ্টব্য)।
আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিপন্ন করে যে, মানুষের কার্যাবলী কেবল শর্তহীনভাবে যুক্তির সীমানায় গন্ডিবদ্ধ
করে ব্যাখ্যা করা যায় না, কারণ মানবকর্ম সম্পর্ক প্রভ‚তভাবে প্রভাবিত হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের
‘ফিল্টার' দিয়ে পরিসৃতকৃত মাপকাঠির সাহায্যে পরিবেশকে প্রত্যয়ন করার ক্ষমতার দ্বারা। এ জন্য
প্রয়োজন একাধিক সম্পর্কিত দৃষ্টিকোনের মিথস্ক্রিয়ার গভীর বিশ্লেষণ।
বসতি বিশ্লেষণে দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য থাকলেও লক্ষ্যণীয় যে বিশ্ব পর্যায়ে বিশেষ করে জলবায়ুগত
বিভিন্নতার জন্য বিভিন্ন ধরণের বসতি নির্মিত হয়েছে। এখন এই দৃষ্টিকোন বিশ্ব বসতির বিন্যাস
আলোচনা করা হবে।
জলবায়ুভেদে বিশ্ব জনবসতির বিন্যাস
জলবায়ু প্রধানত মানুষের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলে। এ কারণে
জলবায়ুভেদে মানব বসতির পার্থক্য ভ‚গোলবিদদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জীবনধারণ এবং আশ্রয়ের জন্য মানুষ এমন কিছু অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছে যেখানে প্রতিনিয়তই
তাকে প্রকৃতির সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হচ্ছে। আবার প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত সহজলভ্য উপকরণও সে গৃহ
নির্মাণের কাজে ব্যবহার করেছে। এই পারস্পরিক সম্পর্কের ফলে স্বায়িত্ব ও বৈচিত্র্য অনুসারে নির্দিষ্ট
জলবায়ুতে পৃথিবীর মানব বসতিসমূহকে চার ভাগে ভাগ করা যায়।
নিরক্ষীয় অঞ্চলের বসতি: নিরক্ষীয় অঞ্চলের জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ নিরক্ষীয় উদ্ভিজ্জপূর্ণ এলাকায়
বসবাস করে। দৈনন্দিন জীবন যাত্রার জন্য এরা নিরক্ষীয় অরণ্যের বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভরশীল।
অরণ্যে ডাল-পালা, কাঠ দিয়ে দেয়াল এবং তাল জাতীয় পাতা বা লম্বা ঘাস ও অনেক সময় ধানগাছের
কান্ডাংশ দিয়ে বাড়ীর ছাদ বা চালা বানায়। বন্য জন্তু বা সরীসৃপ থেকে আত্মরক্ষার জন্য কোন কোন
অঞ্চলে (যেমন পাহাড়ী অরণ্যভ‚মিতে) মাটি থেকে কিছুটা উপরে মাচার উপর বাড়ী তৈরী হয়। এসমস্ত
বাড়ী নির্মাণে কাঠ ও বাঁশের ব্যবহার ব্যাপক। মালয়েশিয়ার সেমাং, বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাসমূহে,
মায়ানমারের আরাকান ও কারেন এলাকায়, শ্রীলঙ্কার ভেদ্দা সম্প্রদায় এবং আমাজন অববাহিকায় মাচার
উপর বাড়ী ঘর তৈরীর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু বিস্তীর্ন নিরক্ষীয় সমভ‚মি অঞ্চলে ভ‚মির উপর
সামান্য উচু মাটির পাটাতনের ঘর বাড়ী থেকে শুরু করে পাকা বহুতল গৃহ তৈরী হয়। দক্ষিণ এশিয়ায়
এরূপ বসতি বহুল প্রচলিত।
লক্ষণীয় যে নিরক্ষীয় অঞ্চলের অধিকাংশ বসতি পানির উৎসের নিকটে নির্মিত হয়েছে। এই উৎস নদী
বা পাহাড়ী ঝর্ণা এবং কোন কোন স্থানে প্রাকৃতিক জলাশয়ে বা খননকৃত পুকুর এই ভ‚মিকা পালন
করেছে। অধিকাংশ ঘর-বাড়ীর দেয়াল বাঁশ বা ঘাসের দ্বারা নির্মিত এবং এক বা একাধিক কুঠুরী/ কামরা
থাকতে পারে। তবে আফ্রিকার অধিকাংশ আদিবাসীরা গাছের ডাল দিয়ে ছোট ছোট গোলাকার কুঁড়েঘর
তৈরী করে গোত্র হিসাবে গুচ্ছাকার বসতি নির্মাণ করে থাকে। সাম্প্রতিককালে প্রযুক্তি বিকাশের সাথে
সাথে সমগ্র নিরক্ষীয় অঞ্চলে ঘর বাড়ী নির্মাণে টিনের ছাউনি ও কোন কোন স্থানে দেয়াল নির্মানের
প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এই ধরণের প্রবণতা দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় প্রবল। এর কারণ প্রধানত
বসতির নির্মান উপাদানের স্থায়ীত্ব ছাড়াও প্রাকৃতিক উপাদানের অভাব উল্লেখযোগ্য। আর প্রাকৃতিক
উপাদানের অভাবের প্রধান কারণ হলো বর্তমান শতাব্দীতে জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধি এবং খাদ্য শস্য
উৎপাদনের জন্য ক্রম বর্ধমান হারে অরণ্যভ‚মি ধ্বংস। বসতি বিকাশের জন্যও একইভাবে বনভ‚মি উজাড়
হচ্ছে।
নিরক্ষীয় অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশী হওয়ার কারণে বসতি বিন্যাস ও ঘন সন্নিবেশিত এবং কখনও
সংঘবদ্ধ ও গুচ্ছকার।
উষ্ণ মরু অঞ্চলের বসতি: এই অঞ্চলের অধিবাসীরা প্রধানত চারণ বৃত্তিক যাযাবর। পশুপালন মৌসুমী
চারণ এলাকা বা তৃণভ‚মি প্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় নির্দিষ্ট গন্ডিতে প্রতিবছর এদের আবাসস্থল
স্থানান্তরিত হয়। এজন্য এরা প্রধানত তাঁবুতে বসবাস করে। তাঁবুগুলি চামড়া দিয়ে তৈরী। মধ্য এশিয়া,
উত্তর ইরান, উত্তর ইরাক, পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর আফ্রিকার বসতিগুলি এই ধরণের। তবে আফ্রিকার
কালাহারি মরুভ‚মিতে বুশম্যান ও অন্যান্য আদিবাসীরা কাঁটাগাছের সাহায্যে তৈরী অস্থায়ী কুঁড়ে ঘরে
বসবাস করে। অপরদিকে, পশ্চিম এশিয়ার মরু প্রায় অঞ্চলের তাঁবু-বসতির মধ্যে গৃহসজ্জা ও
অভিজাত্যের পরিচয় মেলে। এই অঞ্চল প্রাচীন সভ্যতার কেন্দ্র হওয়ার এর প্রধান কারণ। এঁদের
তাঁবুগুলি চামড়া অথবা ক্যানভাসের তৈরী। দেয়াল ও মেঝেতে উৎকৃষ্ট কার্পেটের ব্যবহার লক্ষ্যণীয়। এই
তাঁবু বসতিগুলি সমসাময়িক আরাম-আয়েশের উপকরণে সজ্জিত। অপেক্ষাকৃত নি¤œবিত্ত মরুবাসীদের
মধ্যে বেদুইন সম্প্রদায় এখনও চারণবৃত্তিক যাযাবর শ্রেণীর। এদের তাঁবু বসতিগুলি আরাম-আয়েশের
উপকরণ সজ্জিত। অপেক্ষাকৃত নি¤œবিত্তবান এখনও চারণ বৃত্তিক। এঁদের তাঁবু অবয়ব ও মরুসজ্জা
তাদের অর্থনীতিক অবস্থান নির্দেশ করে।
মরু অঞ্চলের স্থায়ী বসত এলাকা, যেমন, ইরান, ইরাক, ইয়ামেন, আরব আমিরাত এবং দক্ষিণ সৌদি
আরবে মাটির তৈরি ঘর বাড়ীর প্রচলন আদিকাল থেকে রয়েছে। ঘর-বাড়ী গুলি শীতল রাখার জন্য অতি
উচ্চ জানালা, কুলুঙ্গী এবং বাতাস টাওয়ার নির্মাণের প্রচলন রয়েছে। সাম্প্রতিককালে একাধিক পশ্চিম
এশিয়া দেশসমূহে যাযাবরদের স্থায়ী বসত স্থাপনের সরকারী উদ্যোগ লক্ষণীয়। এই সমস্ত বসতগুলি
পাকা, প্রধানত একতলা। ইট-সিমেন্ট ছাড়া কাঠের ব্যবহার উল্লেখ করার মত। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক
সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রতিটি স্থায়ী বসতে মসজিদের অবস্থান এই সমস্ত আবাসস্থলের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
তবে কোন কোন অঞ্চলে, যেমন ইরান, ইয়ামেন, বাহরাইন এবং দক্ষিণ আমেরিকার মরু অঞ্চলে নলখাগড়া ও মাটির তৈরী সমতল ছাদযুক্ত বাড়ী লক্ষণীয়। এ সমস্ত বসতের অধিবাসীগণ যাযাবর নয় স্থায়ী
আবাসে কৃষি এবং বানিজ্যে এদের অভ্যস্ততা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
জনসংখ্যার ঘনত্ব কম হওয়ার জন্য এই জলবায়ু অঞ্চলের বসতির ধরণ বিক্ষিপ্ত এবং সাধারণত
যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত।
নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বসতি : উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের উত্তরাংশে অরণ্য পরিবেশে মানব বসতি
গড়ে উঠেছে। বাসগৃহ প্রধানত: কাঠের গুড়ি বা তকতা নির্মিত দেয়াল এবং কাঠের পাটাতনসহ মসৃণ
পাথর বা টালির ছাদযুক্ত। অর্থনীতিক কারণ এবং সহজলভ্যতা বলেই এই ধরণের উপকরণ ব্যবহার
হয়। তবে এই অঞ্চলের দক্ষিণাংশে বিশেষ করে ভ‚মধ্যসাগরীয় অঞ্চলে কাঠের বদলে পাথর বা পোড়া
ইট নির্মাণকাজে অধিক ব্যবহার হয়। ইটালী, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, ফ্রান্স, স্পেন, গ্রীস, তিউনিস,
আলজেরিয়ার পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় সবত্রই এইসব উপকরণ নির্মিত বসত দেথা যায়।
নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বসতির বিন্যাস প্রধানত অর্থনীতিক নিয়ামক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। প্রধানত সড়কপথ
বা বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রৈখিক বা গুচ্ছাকার ধরণের মানব বসতি গড়ে ওঠার প্রবণতা লক্ষণীয়।
মেরু অঞ্চলের বসতি : মেরু অঞ্চলের ইনুইট্দের ঋতুভেদে বিভিন্ন ধরণের বসতবাড়ী নির্মাণ কৌশল
দেখা যায়। খাদ্য সংগ্রহের জন্য সমুদ্র উপক‚লবাসী ইনুইট্সরা বাতাস প্রতিরোধী খাড়ি বা ভ‚গু এলাকায়
বসত গড়ে থাকে। এ ধরণের স্থানে গ্রীষ্মকালে তারা ঘাসের চাপড়া, মস, কাঠের গুড়ি বা তকতার
দেয়াল এবং চামড়া আচ্ছাদিত বসতবাড়ী তৈরী করে। বসতবাড়ীগুলি উল্টানো ত্রিভ‚জ বা গম্বুজাকার হয়ে
থাকে। প্রতিটিতে প্রধানত একটি প্রবেশ পথ থাকে।
অপেক্ষাকৃত বিস্তীর্ণ সমতল এলাকায় বরফের চাপড়া দিয়ে নির্মিত গম্বুজাকার একমুখি ঘর তৈরী করে।
এ গুলিকে ‘ইগলু' বলে। তবে বর্তমানে ইগলু নির্মণের প্রচলন কমে আসছে। ইনুইট্সরা আমেরিকান
সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসে কাঠ নির্মিত গুচ্ছকার বসতি গড়ে তুলছে। আলাস্কা অঞ্চলে এ ধরণের
লোকালয়ের প্রাধাণ্য রয়েছে। বসতির বিন্যাস প্রধানত বিক্ষিপ্ত এবং যোগাযোগ মাধ্যমের উপর
নির্ভরশীল।
পাঠসংক্ষেপ:
উপরে বিশ্বের প্রধান জলবায়ু অঞ্চলে বসতি ধারার সরলীকৃত ধারণা প্রদান করা হয়েছে। এতে
পরিবেশগত বাধ্য-বাধকতা বসত বিন্যাসে যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছে তা বলা যায়। তবে
উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এই চারটি অঞ্চলের নগর এলাকার পরিকল্পিত বসত এলাকায় সম্পূর্ণ আধুনিক
ও প্রযুক্তি নির্ভর আবাস গড়ে ওঠেছে। এই সব এলাকায় জলবায়ু বা পরিবেশগত বাধ্য-বাধকতার
চাইতে অর্থনীতিক প্রয়োজনীয়তা ও প্রশাসনিক গুরুত্ব প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করেছে।
ইউরোপীয় উপনিবেশকারীরা এদের ‘এস্কিমো' নামে অভিহিত করতো। এস্কিমো অর্থ ‘মানুষসম'-
শব্দটি তুচ্ছার্থে ব্যবহার হত। বর্তমানে ‘ইনুইটস' অর্থাৎ ‘মানুষ' শব্দটি প্রচলিত।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন: ১.৪
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:
১. শূন্যস্থান পূরণ করুন:
১.১. ভ‚গোলবিদ স্মিথ (১৯৬০) তাঁর ---- এ বসতি বলতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য তৈরী
আবাসস্থল বুঝিয়েছেন।
১.২. ষ্টোন (১৯৬৫)-এর মতে কোন ---- এক বা একাধিক মানুষের বসবাস করাকে বসতি বলে।
১.৩. ভ‚গোলবিদ বসতিকে ---- হিসাবে বিশ্লেষন করেছেন।
১.৪. ভৌগোলিক দৃষ্টিকোন থেকে বসতির চর্চাকে সনাতনী, সাংখ্যিক এবং ----।
১.৫. ----- বসতিসমূহের ব্যবধান এবং আভ্যন্তরীণ সংগঠন থেকে লব্ধ ধারণা ও নীতিমালাকে বাস্তবের
সরলীকরণ ‘মডেল' হিসাবে রূপদান করে।
১.৬. ---- প্রতিপন্ন করে যে, মানুষের কার্যাবলী কেবল শর্তহীনভাবে যুক্তির সীমানায় গন্ডিবদ্ধ করে
ব্যাখ্যা করা যায় না।
২. সত্য হলে ‘স' মিথ্যা হলে ‘মি' লিখুন:
২.১. জলবায়ু প্রধানত মানুষের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলে।
২.২. জীবনধারণ এবং আশ্রয়ের জন্য মানুষ এমন কিছু অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছে যেখানে
প্রতিনিয়তই তাকে প্রকৃতির সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হচ্ছে।
২.৩. নিরক্ষীয় অঞ্চলের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ নিরক্ষীয় উদ্ভিজ্জপূর্ণ এলাকায় বসবাস করে।
২.৪. লক্ষণীয় যে নিরক্ষীয় অঞ্চলের অধিকাংশ বসতি পানির উৎসের নিকটে নির্মিত হয়েছে।
২.৫. উষ্ণ মরু অঞ্চলের বসতি অঞ্চলের অধিবাসীরা প্রধানত চারণ বৃত্তিক যাযাবর।
২.৬. অপেক্ষাকৃত উচ্চবিত্ত মরুবাসীদের মধ্যে বেদুইন সম্প্রদায় এখনও চারণবৃত্তিক যাযাবর শ্রেণীর।
২.৭. উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দক্ষিণে অরণ্য পরিবেশে মানব বসতি গড়ে উঠেছে।
২.৮. মেরু অঞ্চলের বসতবাড়ীগুলি উল্টানো ত্রিভ‚জ বা গম্বুজাকার হয়ে থাকে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১. বসতির সংজ্ঞা দিন।
২. মানব বসতির সাধারন মানানুক্রমতা লিখুন।
৩. বসতির দৃষ্টিভঙ্গি সমূহ কি কি?
৪. কিসের ভিত্তিতে মানব বসতি সমূহকে ভাগ করা হয়েছে?
৫. মানব বসতি সমূহ কি কি?
রচনামূলক প্রশ্ন:
১. মানব বসতের সংজ্ঞা দিন এবং এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]