অঞ্চল কাকে বলে? অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যসূচক ধারণা ও ভিত্তিগুলি কি?
বিশ্বকে আপনি কিভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্রেনীবিভাজন করবেন?


ভ‚গোল ও পরিবেশ: অঞ্চল
ভ‚গোল পাঠে অঞ্চলভিত্তিক সমীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভ‚গোলবিদগণ পৃথিবীকে সম্যকরূপে
বোঝার উদ্দেশ্যে খন্ড খন্ড অঞ্চলে বিভক্ত করেন। বিরাট এক এলাকাকে সমীক্ষা করতে গিয়ে যে
অসুবিধায় পড়তে হয় তা দূর করার জন্য কোন বৃহৎ এলাকাকে নির্ধারিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ক্ষুদ্র অঞ্চলে
বিভক্ত করে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। যে কোন বিষয়বস্তু ভালভাবে বোঝার জন্য শ্রেণীকরণের
প্রয়োজন। অঞ্চলও তেমনি পৃথিবী, দেশ বা কোন স্থানের শ্রেণীবিভাগ। ভৌগোলিক চিন্তাধারায় অঞ্চল
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে গণ্য হয় - যার জন্য অষ্টাদশ শতক থেকে এ পর্যন্ত অঞ্চলভিত্তিক বহু
গবেষনা হয়েছে এবং বহু মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে।
অঞ্চলের সংজ্ঞা
সাধারণভাবে অঞ্চল পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন প্রাকৃতিক অথবা মানবিক বৈশিষ্ট্যসমূহের স্বতন্ত্র এবং
অভ্যন্তরীনভাবে সঙ্গতিপূর্ণ সমরূপ কোন এলাকা বা অংশ যেখানে একটি অর্থবোধক ঐক্য প্রকাশ পায়
এবং যা চর্তুপার্শ্বস্থ এলাকা থেকে স্বতন্ত্র। হুইটিলসি (ডযরঃঃষবংবু, ১৯৫৪) ‘অঞ্চলকে ভ‚-পৃষ্ঠের
পার্থক্যকৃত একটি অংশ বা স্থান' বলেছেন যা পূর্বের সংজ্ঞাটির প্রায় সমার্থক। হুইটিলসির এই সংজ্ঞাটি
অঞ্চলের কালজয়ী একটি সংজ্ঞা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং অঞ্চলের সংজ্ঞা হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি
লাভ করে।
অঞ্চলের ধারণা ও ভিত্তি
ভ‚গোল শাস্ত্রে অঞ্চল একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ। পৃথিবী পৃষ্ঠের একটি স্থান প্রাকৃতিকভাবে ও মানবিক
কর্মকান্ড দ্বারা একটি স্থান অন্য স্থান থেকে ভিন্ন এবং একটি অঞ্চল আর একটি অঞ্চল থেকে স্বতন্ত্র।
এই স্থানিক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের বিশ্লেষণ ভ‚গোলকে অন্যান্য শাস্ত্র থেকে স্বতন্ত্র দান করেছে। পৃথিবী পৃষ্ঠের
একটি স্বতন্ত্র পরিমন্ডল হিসাবে অঞ্চলের ধারণা, যাকে ‘আঞ্চলিক পৃথকীকরণ' (অৎবধষ
উরভভবৎবহঃরধঃরড়হ) বলা হয়, সুদীর্ঘকাল যাবৎ ভ‚গোলের কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে।
হার্টশোর্নের মতে ‘আঞ্চলিক পৃথকীকরণ' ভ‚-পৃষ্ঠের বহু বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের সঠিক, সুবিন্যস্ত ও যুক্তিপূর্ণ
বর্ণনা ও ব্যাখ্যা প্রদান করে। গ্রীক পন্ডিতেরা ঠিক এই ধরনের সমীক্ষাকেই কোরোলজি (ঈযড়ৎড়ষড়মু)
বা “ক্ষেত্রবহুত্ব বিজ্ঞান” নাম দিয়েছিলেন। যাই হোক, আঞ্চলিক পৃথকীকরণকে অঞ্চল রূপদানকারী
একটি প্রক্রিয়া বলা হয়ে থাকে যার সাহায্যে ভ‚গোলবিদগণ ভ‚-পৃষ্ঠের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে পার্থক্য
বিশ্লেষণ ও বর্ণনা প্রদান করেন এবং আঞ্চলিকভাবে পৃথিবীকে প্রাকৃতিক অথবা আর্থ-সামাজিক,
সাংস্কৃতিক ইত্যাদি বিভিন্ন মানবিক বৈশিষ্ট্য ভিত্তিক অথবা প্রাকৃতিক ও মানবিক বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্বলিত
একটি অখন্ড ও স্বতন্ত্র অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করার প্রয়াস পান। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে আঞ্চলিক বিশ্লেষণে
অঞ্চল কোন ভৌগোলিক অবস্থার ‘একীভ‚ততা' বা ‘সংঘবদ্ধতা'-এর উপর বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ করে
থাকেন - যেমন, মৃত্তিকা, জলবায়ু, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য ইত্যাদির স্থান বিশেষে সংঘবদ্ধ বিন্যাস।
এখানে একটি কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ভ‚-পৃষ্ঠের শুধুমাত্র বৃহৎ অংশ বিভাজনের দ্বারাই অঞ্চল
তৈরী হয় না। সমবৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে অধিকতর ক্ষুদ্র পরিসরেও অঞ্চল হতে পারে। তবে এই ক্ষুদ্র
পরিসরে স্বকীয় স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অঞ্চল গঠনে মৌলিক ভ‚মিকা রাখে।
অঞ্চল ধারণার বিকাশ : অঞ্চল ধারণার বিকাশের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। আঞ্চলিক পঠন এবং আঞ্চলিক
ধারণার বিকাশ এখনও ক্রিয়াশীল এবং ভ‚গোলবিদের চিন্তাধারায় অঞ্চল একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অঞ্চলের ধারণা পদ্ধতিগতভাবে উপস্থাপিত হয় অষ্ঠাদশ শতকে যখন ভ‚গোলবিদরা উপলব্ধি করেন যে
ভ‚-পৃষ্ঠের রাজনৈতিক এককগুলি বর্ণনার জন্য পর্যাপ্ত নয়। তখন তারা অধিকতর প্রাকৃতিক অঞ্চল খুঁজতে
সচেষ্ট হন। ভ‚গোলে অঞ্চল ধারনার সূত্রপাত ঘটে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলিতে। ভিদাল দি লা
বøাশ (ঠরফধষ ফব ষধ ইষধহপযব, ১৯২৬)-কে অঞ্চলের ধারণার পথিকৃত বলা হয়ে থাকে। তিনি লক্ষ্য করেন
যে দক্ষিণ ফ্রান্সের ‘পে' (চধুং) নামক ছোট ছোট প্রদেশগুলির প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য
রেখে গড়ে উঠেছে অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ড ও জীবনযাত্রা প্রাণালী। তিনি আঞ্চলিক ও
স্থানীয় বিভিন্নতা প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তাঁর এই পর্যবেক্ষন ‘পে ধারণা'
(চধুং ঈড়হপবঢ়ঃ) নামে পরিচিত। বৃটেনে হারবার্টসন (ঐবৎনবৎঃংড়হ, ১৯০৫) পৃথিবীকে ভৌগোলিক
অঞ্চল বা প্রাকৃতিক অঞ্চলে (ঘধঃধৎঁষ জবমরড়হ) ভাগ করেন। হারবার্টসন তাঁর এই শ্রেণী বিভাজনে
প্রাকৃতিক উপাদান বিশেষ করে, জলবায়ুর উপর বিশেষভাবে জোর দেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উনিশ শতকের প্রথম থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীতে অঞ্চলের ধারণা স্থান
পায়। প্রথম দিকে রাজনৈতিক সীমানা অনুযায়ী দেশগুলির ভৌগোলিক বর্ণনা দেওয়া হতো। এখানে
আঞ্চলিক সমীক্ষা করা হতো প্রাকৃতিক পরিবেশের এক একটি উপাদান নিয়ে ; যেমন, ভ‚-প্রাকৃতিক
শ্রেণীবিভাগের ভিত্তিতে ভ‚মিরূপ অঞ্চলের (এবড়মৎড়ঢ়যরপ জবমরড়হ) গবেষনা করেন পাওয়েল(চড়বিষষ,
১৮৯৫) এবং জলবায়ুর আঞ্চলিক শ্রেণীবিভাগ করেন ভøাদিমির কোপেন (ডষধফরসরৎ কড়ঢ়ঢ়বহ, ১৯৩৬)।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আঞ্চলিক ভ‚গোল রীতিমতো প্রতিষ্ঠা লাভ করে (দত্ত, ১৯৯৫
দ্রষ্টব্য)। অঞ্চল ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে হতে ‘অনু' অঞ্চলে (গরপৎড়-ৎবমরড়হং) পরিণত হয়।
এক্ষেত্রে ভ‚গোলবিদগণ আঞ্চলিক অখন্ডতার চেয়ে স্থানিক বৈশিষ্ট্যের উপরে গুরুত্ব দিতে থাকেন। ফলে
ছোট ছোট এলাকার সমীক্ষা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বিষয় হিসেবে অঞ্চলের ধারণা বহু মত ও মতামতের সৃষ্টি করেছে। যেমন, স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক
অঞ্চলের ধারণা পরবর্তীতে ভ‚গোলবিদদের মধ্যে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। অঞ্চল বিষয়ক বহু
চিন্তাধারার প্রবক্তাগণ অঞ্চল খুঁজে বের করা এবং তার বর্ণনা ভ‚গোলের প্রধান উদ্দেশ্য বলে ধারণা দেন।
তাঁদের মতে অঞ্চলের প্রকৃত অস্তিত্ব রয়েছে - যা স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক অঞ্চল (ঘধঃঁৎধষ জবমরড়হ)
হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। দ্বিতীয় চিন্তাধারার ভ‚গোলবিদদের মতে অঞ্চল হলো উদ্দেশ্য সাধনের উপায়
বা মাধ্যম (গবধহং ঃড় ধহ বহফ)। তাঁদের মতে অঞ্চল হলো পৃথিবীকে সুশৃ´খলভাবে জানার একটি
পদ্ধতি, প্রকৃতপক্ষে অঞ্চল বলে কিছু নেই। এ দৃ'টি মতবাদই অংশত সঠিক বলে ধরে নেয়া যায়।
কারণ, ভ‚গোলের মৌলিক বিষয়বস্তু হলো পৃথিবীর বিভিন্ন রূপ-বৈশিষ্ট্য, বৈচিত্র ও বৈপরীত্য খুঁজে বের
করা ও জানা এবং এই খুঁজে বের করা ও জানার জন্য অঞ্চল হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বা
হাতিয়ার।
জন গøাসন (এষধংংড়হ, ১৯৭৮) অঞ্চল সম্বন্ধে ভ‚গোলবিদদের ধারনাকে দু'টি প্রধান ধারায় বিভক্ত
করেছেন:
আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি (ঝঁনলবপঃরাব ঠরব)ি; এবং
নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি (ঙনলবপঃরাব ঠরব)ি।
আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি : আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গিতে অঞ্চলকে কোন উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য অর্জনের প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি
হিসেবে গন্য করা হয়। যেমন কোন ধারণা বা মডেল যা পৃথিবী সম্বন্ধে পর্যবেক্ষণে সাহায্য করে। এই
দৃষ্টিভঙ্গিতে অঞ্চলকে শ্রেণীকরণের একটি প্রক্রিয়া, পারিসরিক বিষয়বস্তু পার্থক্যকরণের একটি কৌশল
হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই মতবাদে ‘স্বাভাবিক' অঞ্চল বলে কিছু নেই। মানুষের বসবাসের সমস্ত
ভ‚-পৃষ্ঠই স্বাভাবিক অঞ্চল। অঞ্চলের আত্মনিষ্ঠ অভিমত বর্তমানে সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত।
হার্টশোর্নের মতে অঞ্চলকে স্বয়ংসস্পূর্ণ বাস্তব একটি একক বিষয় হিসেবে বিবেচনার প্রচেষ্টা ‘ইতিহাসে
পর্যবসিত হয়েছে।' অঞ্চলকে এখন বর্ণনার মাধ্যম হিসেবে দেখা হয় যা বিশেষ বৈশিষ্ট্য অনুসারে
বিশেষ উদ্দেশ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয় যার ফলে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্বলিত বহু প্রকারের অঞ্চল সংজ্ঞায়িত
করা যায়। অতিরিক্ত বর্ণনা পরিহার করে অঞ্চল বিশেষ প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক/ প্রায়োগিক কর্মকান্ড
সম্পাদন করে। কাজেই আঞ্চলিক ধারনা ব্যতিরেকে যদি কোন অঞ্চলের বর্ণনা দেয়া হয় তবে তা এত
সাধারাণভাবে হবে যে তা হয় অর্থবহ হবে না অথবা উদ্দেশ্যহীন হবে। যেমন, অঞ্চল হিসেবে যদি
যুক্তরাজ্যের বর্ণনা দেওয়া হয় তবে তা সাধারণ বা উদ্দেশ্যহীনভাবে বলা যাবে - ‘যুক্তরাজ্য শীত প্রধান
শিল্পোন্নত একটি দেশ যার রাজধানী লন্ডন'। অথবা কোন স্থানীয় ভ‚-পৃষ্ঠের প্রত্যেকটি পৃথক বৈশিষ্ট্যের
তালিকা প্রস্তুতকরণ এত জটিল হবে যে তা মোটেই বোধগম্য হবে না। হার্টশোর্ন বলেন খন্ড খন্ড অঞ্চলে
বিভক্ত পৃথিবী জোড়া দিলে মোজাইকের মত একটি চিত্র পাওয়া যাবে - যা সত্যের কাছাকাছি হতে
পারে, তবে খাঁটি সত্য হবে না। তবে এটা ঠিক যে, পৃথিবীকে বুঝার জন্য ভ‚গোলবিদদের কাছে অঞ্চল
হলো একটি পদ্ধতি বা পরীক্ষামূলক কোন মডেল, যেখানে প্রকৃত অবস্থা দেখা যায় না বা প্রত্যক্ষভাবে
বোঝা যায় না। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের ভৌগোলিক তারতম্য হঠাৎ করে ঘটে না বা হঠাৎ শেষ হয়ে যায়
না। একটি বৈশিষ্ট্য কোন স্থানে ধীরে ধীরে হ্রাস পায় আবার অন্য বৈশিষ্ট্য ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
একমাত্র দুই প্রান্তেই দুইটি বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ে। কাজেই অঞ্চলের সীমানা প্রাকৃতিক হতে পারে না।
ভ‚গোলবিদগণই তাঁদের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ভিত্তিক অঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ করেন -
উদ্দেশ্য বা প্রয়োজন অনুসারেই সীমানা নির্ধারিত হয়। কাজেই অঞ্চল এই উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহৃত
একটি মডেল মাত্র। হার্টশোর্নের মতে পৃথিবীতে যতজন ভ‚গোলবিদ আছেন, অঞ্চলের সংখ্যা ততগুলিই
হতে পারে। কাজেই অঞ্চল নির্ধারণ আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির উপর বস্তুত: নির্ভরশীল।
নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি : এই দৃষ্টিভঙ্গি আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির সম্পূর্ণ বিপরীত। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে অঞ্চলের
প্রকৃত অস্তিত্ব বা সত্ত¡া (জবধষ ঊহঃরঃু) স্বীকার করা হয়েছে। প্রত্যেকটি অঞ্চল তার প্রতিবেশী অঞ্চল
থেকে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে পৃথক। ডিকিনসন (উরপশরহংড়হ, ১৯৪৭)-এর মতে প্রতিটি অঞ্চলই
অদ্বিতীয় এবং এই ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য সেখানকার মাটি, বায়ুমন্ডল, উদ্ভিদ ও মানবিক বৈশিষ্ট্যের সমম্বয়ে
বাস্তব সত্য। এই শর্তানুসারে ভ‚-পৃষ্ঠ বর্ণনার উদ্দেশ্য অঞ্চলে ভাগ করা বা অঞ্চলিকরণ করা নয় বরং
প্রকৃত বিরাজমান অঞ্চলগুলি নির্দেশ ও বর্ণনা করাই ভ‚গোলবিদদের কাজ। কারণ ভ‚-পৃষ্ঠে অঞ্চলের
অস্তিত্ব স্পষ্টভাবে চেনা যায় এবং মানচিত্রের সাহায্যে দেখানো যায়। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বহু
ভ‚গোলবিদদের এই ধারণা ছিল। এই সময়কালীন বেশ কিছু ভ‚গোলবিদ (যেমন, ভিদাল দ্য ল্য বøাশ,
হারবার্টসন প্রমুখ) বিভিন্ন প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে যথাক্রমে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের অঞ্চলিকরণ
করেন। তবে বর্তমানে অধিকাংশ ভ‚গোলবিদ পুনরায় আত্মনিষ্ঠ অভিমতে প্রর্ত্যাবর্তন করেছেন, তবে
এঁদের মধ্যে বেশ কিছু ব্যতিক্রমও রয়ে গেছে।
পরবর্তী পাঠসমূহে উভয় অভিমতের সমম্বয় ঘটানোর চেষ্টা করে বিশ্বের প্রধান প্রধান প্রাকৃতিক ও
মানবিক উপাদান ভিত্তিক কয়েকটি নির্বাচিত অঞ্চল পর্যালোচনা করা হয়েছে।
পাঠসংক্ষেপ:
সাধারণভাবে অঞ্চল পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন প্রাকৃতিক অথবা মানবিক বৈশিষ্ট্যসমূহের স্বতন্ত্র এবং
অভ্যন্তরীণভাবে সঙ্গতিপূর্ণ সমরূপ কোন এলাকা বা অংশ যেখানে একটি অর্থবোধক ঐক্য প্রকাশ পায়
এবং যা চতুর্পার্শ্বস্থ এলাকা থেকে স্বতন্ত্র।
জন গøাসন (এষধংংড়হ, ১৯৭৮) অঞ্চল সম্বন্ধে ভ‚গোলবিদদের ধারনাকে দু'টি প্রধান ধারায় বিভক্ত
করেছেন: আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি; এবং নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে এই পাঠে আলোচনা
করা হয়েছে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-২.১
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:
১. শূন্যস্থান পুরণ করুন :
১.১. হুইটিলসি ------ ভ‚-পৃষ্ঠের পার্থক্যকৃত একটি অংশ বা স্থান' বলেছেন।
১.২. হার্টশোর্নের মতে ‘----- পৃথকীকরণ' ভ‚-পৃষ্ঠের বহু বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের সঠিক, সুবিন্যস্ত ও যুক্তিপূর্ণ
বর্ণনা ও ব্যাখ্যা প্রদান করে।
১.৩. সমবৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে অধিকতর ----- পরিসরেও অঞ্চল হতে পারে।
১.৪. ----- কে অঞ্চলের ধারণার পথিকৃত বলা হয়ে থাকে।
১.৫. বৃটেনে হারবার্টসন পৃথিবীকে ভৌগোলিক অঞ্চল বা ----- অঞ্চলে ভাগ করেন।
২. সত্য হলে ‘স' মিথ্যা হলে ‘মি' লিখুন:
২.১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিংশ শতকের প্রথম থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীতে অঞ্চলের ধারণা
স্থান পায়।
২.২. জলবায়ুর আঞ্চলিক শ্রেণীবিভাগ করেন ভøাদিমির কোপেন।
২.৩. জন গøাসন অঞ্চল সম্বন্ধে ভ‚গোলবিদদের ধারনাকে তিনটি প্রধান ধারায় বিভক্ত করেন।
২.৪. আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গিতে অঞ্চলকে কোন উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য অর্জনের প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি হিসেবে গন্য
করা হয়।
২.৫. নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি আত্মনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির সম্পূর্ণ বিপরীত।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১. অঞ্চলের সংজ্ঞা লিখুন।
২. অঞ্চলের ভিত্তি কি কি?
৩. আত্মনিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি কি?
৪. নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি কি?
রচনামূলক প্রশ্ন:
১. অঞ্চল কাকে বলে? অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যসূচক ধারণা ও ভিত্তিগুলি কি?
২. অঞ্চল সংজ্ঞায়নে প্রধান দৃষ্টিভঙ্গিসমূহ পর্যালোচনা করুন।
৩. বিশ্বকে আপনি কিভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্রেনীবিভাজন করবেন? উদাহরণসহ বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]