জনসংখ্যা
ভ‚গোল শাস্ত্রে জনসংখ্যা বিষয়ক পঠন-পাঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা জনসংখ্যার সাথে মানবিক
ভ‚গোলের বিভিন্ন বিষয়াদি ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কযুক্ত (পূর্ববর্তী ইউনিটসমূহ দ্রষ্টব্য)। জনসংখ্যা ভ‚গোল
একটি পৃথক শাখা হিসাবে বিংশ শতাব্দীর ৬০ দশকের পর হতে দ্রæত বিকাশ লাভ করে। এই বিকাশের
পেছনে আন্তর্জাতিক ভ‚গোল ইউনিয়ন জনসংখ্যা কমিশনের অবদান ও কৃতিত্ব রয়েছে। জনবহুল দেশ
হিসাবে বাংলাদেশেও বিষয়টি গুরুত্ব লাভ করেছে এবং উল্লেখযোগ্য শাখা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ভৌগোলিক অর্থে জনসংখ্যা বলতে নির্দিষ্ট ভ‚-খন্ডে বসবাসকারী এবং সার্বিকভাবে সম্পর্কযুক্ত কোন
জনগোষ্ঠী বা জনসমষ্টিকে বুঝানো হয়ে থাকে। বিভিন্নতা থাকা সত্তে¡ও নির্দিষ্ট অঞ্চল বা দেশের
জনসংখ্যা একক সত্ত¡ামূলক বিষয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আবার এই এককের মধ্যেও জনসংখ্যার
বিশেষ অবস্থান, বিন্যাস ও বন্টন, ঘনত্ব, পরিবর্তন প্রক্রিয়া,সংগঠন প্রভৃতি একাধিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
এসমস্ত বৈশিষ্ট্যের উল্লেখযোগ্য উপাদানসমূহের পর্যালোচনা এই ইউনিটের মূল উদ্দেশ্য।
পাঠ-৩.১ জনসংখ্যা বন্টন এবং ঘনত্ব
এই পাঠ শেষে আপনি-
◆ জনসংখ্যার বন্টন;
◆ জনসংখ্যা বন্টনে প্রভাব বিস্তারকারী নিয়ামক; এবং
◆ জনসংখ্যার ঘনত্ব সম্পর্ক ধারনা পাবেন।
পৃথিবীর জনসংখ্যার আকারগত পরিবর্তনের আঞ্চলিক বিভিন্নতা বিশেষ লক্ষ্যণীয়। জাতিসংঘের
তথ্যানুযায়ী বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৬.৯ বিলিয়ন এর মধ্যে উন্নত দেশে প্রায় ২.১ বিলিয়ন
এবং বিকাশশীল দেশে ৪.৮ বিলিয়ন জনসংখ্যা রয়েছে। উন্নত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হচ্ছে
রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র। এই দুইটি দেশে উন্নত বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ লোক বাস করে। ৫০ মিলিয়ন
বা অধিক জনসংখ্যাযুক্ত দেশগুলি হচ্ছে জাপান (১২০ মি.), ইটালী (৬০ মি.), যুক্তরাজ্য (৬০ মি.) এবং
ফ্রান্স (৫৮ মি.)। উন্নত অঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ লোক এই সাতটি দেশে বাস করে।
জনসংখ্যার বন্টন
বিকাশশীল দেশ গুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা জনবহুল দেশ হচ্ছে চীন এবং ভারত। ২০১০ সালে এদের
জনসংখ্যা যথাক্রমে বিলিয়ন ১.৪ এবং ১.২ বিলিয়ন ছিল। এই দুইটি দেশে বিকাশশীল বিশ্বের প্রায় ৫০
শতাংশ লোক বাস করে। একমাত্র চীনেই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও বেশি লোক বাস
করে। ১০০ মিলিয়ন বা তার বেশী জনসংখ্যাবহুল দেশগুলো হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া (২৩২.৫ মি.) ব্রাজিল
(১৯৫.৪ মি.), পাকিস্তান (১৮৪ মি.), বাংলাদেশ (১৬৪ মি.), নাইজেরিয়া (১৫৮.৩ মি.) এবং মেক্সিকো
(১০৭ মি.)। কিন্তু ভারতসহ এই ছয়টি দেশে বিকাশশীল অঞ্চলের প্রায় ৫০ শতাংশ লোক বাস করে।
সারণী ৩.১.১ থেকে বিশ্ব জনসংখ্যার আঞ্চলিক বিন্যাস সম্পর্কে একটা সরলীকৃত ধারণা পাওয়া যায়।
এশিয়া এবং ইউরোপে জনসংখ্যার আধিক্য দেখা যায়-বিশ্বের তিন-চতুর্থাংশের অধিক অধিবাসী এই
দুইটি মহাদেশে বাস করে। প্রায় ১০ শতাংশ লোক দক্ষিণ গোলার্ধে বাস করে। অক্ষাংশ অনুযায়ী
বিন্যাস ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, ১০ শতাংশের সামান্য বেশী জনসংখ্যা বিষুবীয় রেখার
২০º উ. অক্ষাংশের মধ্যে এবং প্রায় ৫০ শতাংশ ২০º উ., ৩৮º উ., ৩০ শতাংশ ৪০º উ. এবং ৬০º উ.
এবং ০.৫ শতাংশেরও কম জনসংখ্যা ৬০º উ. অক্ষাংশের উত্তরে বসবাস করে। অর্থাৎ প্রায় তিনচতুর্থাংশ বিশ্ব জনসংখ্যা ২০º-৬০º উ. অক্ষাংশের মধ্যে বাস করে। পৃথিবীর প্রধান মরুভূমি এবং
পর্বতমালার অবস্থান সত্তে¡ও এই অঞ্চলে দুইটি প্রধান জনবহুল অঞ্চল রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া
(যেখানে বিশ্ব জনসংখ্যার অর্ধেক জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ এই ভ‚-ভাগে বসবাস করে) এবং
ইউরোপ (যেখানে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জনসংখ্যা ০.৫ শতাংশ ভ‚-ভাগে বসবাস করে)।
সারণী ৩.১.১: বিশ্ব জনসংখ্যার আঞ্চলিক বিন্যাস, ২০১০
মহাদেশ ও অঞ্চল জনসংখ্যা (বিলিয়ন) বৃদ্ধি %
এশিয়া ৪.১৬ ১.১
আফ্রিকা ১.০৩ ২.৩
ইউরোপ ০.৭৩ ০.১
ল্যাটিন আমেরিকা ও
ক্যারিবিয়ান
০.৫৮ ১.১
উত্তর আমেরিকা ০.৩৫ ১.০
ওশোনিয়া ০.০৫৮ ১.৩
মোট ৬.৮৯ ১.২
দ্বিতীয় জনবহুল অঞ্চলসমূহ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় দেখা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলাকাগুলি হলো: উত্তর
আমেরিকার পূর্বভাগ, ক্যালিফোর্নিয়া, উপক‚লীয় ব্রাজিল, নীল ব-দ্বীপ, পশ্চিম আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব
অস্ট্রেলিয়া। উল্লেখ্য যে, বিশ্বের প্রায় জনসংখ্যাহীন এলাকাগুলি ঘন জন অধ্যুষিত এলাকার চেয়ে
আয়তনে অনেক বড়।
জনসংখ্যার আকার এবং ঘনত্বের মধ্যে দেশ-পর্যায়ে মারাÍক অসামঞ্জস্য রয়েছে। এশিয়া মহাদেশে ১৫০
মিলিয়নের অধিক জনসংখ্যা সম্পন্ন ৬টি দেশ রয়েছে: চীন, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, জাপান এবং
ইন্দোনেশিয়া। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই অঞ্চলে বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার
আবাস। পক্ষান্তরে পশ্চিমে আফ্রিকার প্রায় ১০৩ মিলিয়ন জনসংখ্যা ১৫টি দেশে বসবাস করে। আবার
প্রায় সম সংখ্যক অতি ক্ষুদ্র স্বল্প জনসংখ্যার দেশ দেখা যায়।
বিশ্ব জনসংখ্যা বন্টনে এত বেশি ধরনের অসামঞ্জস্য রয়েছে যে, স্বল্প পরিসরে পর্যালোচনা সম্ভব নয়।
এই বন্টন অঞ্চল বিশেষের পরিবেশগত অবস্থান এবং মানুষের বাস্তব্য প্রভাবের কারণে বিক্ষিপ্ত থেকে
শুরু করে অসমান বন্টন হতে পারে। এমন কি অতি ঘন জনবহুল স্থানেও জনবিরল বা জনহীন অরণ্য
ভ‚মি ও বিস্তৃর্ণ তৃণভ‚মি থাকতে পারে। আবার জনবিরল অঞ্চলেও সহসা খনিজ বসত বা সামরিক
কেন্দ্রের কারণে জনবহুল লোকালয় দেখা যায়।
জনসংখ্যা বন্টনে প্রভাব বিস্তারকারী নিয়ামক
প্রাকৃতিক উপাদান বা পরিবেশ পুরোপুরিভাবে জনসংখ্যা বন্টনকে প্রভাবিত করে এমন দেখা যাবে না।
তবে কোন কোন এলাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশ জনসংখ্যা বন্টন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে
পারে। অপর দিকে জনসংখ্যা বন্টনে বিবিধ সামাজিক, জনমিতিক, আর্থনীতিক, রাজনৈতিক এবং
ঐতিহাসিক নিয়ামক কার্যকর প্রভাব বিস্তার করে। এ সমস্তের আলোকেই কোন অঞ্চলের বা দেশের
জনসংখ্যা বন্টন ব্যাখ্যা করা উচিত। প্রকৃত পক্ষে জনসংখ্যা বন্টন একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এর
ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সময় ও পরিসর ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। নিন্মে জনসংখ্যা বন্টনের কতিপয় মূল উপাদান
আলোচনা করা হলো।
মহাদেশীয় নিরাপত্তা : সাধারণভাবে জনসংখ্যা মহাদেশসমূহের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিন্যাসিত হয়ে থাকে
এবং উপক‚লভাগ থেকে যত অভ্যন্তরে যাওয়া যাবে জনসংখ্যার বিন্যাসও তত বেশি বিক্ষিপ্ত ও বিরল
হয়ে থাকে। তিন-চতুর্থাংশ জনসংখ্যা সমুদ্র উপক‚ল থেকে ৯৬০ কি.মি. এবং দুই-তৃতীয়াংশ ৪৮০ কি.মি
এর মধ্যে বিন্যাসিত। অর্থাৎ সাধারণভাবে বলা যায়, উপক‚লভাগ জনসংখ্যাকে আকৃষ্ট করে এবং
জনসংখ্যার মধ্যে মহাদেশীয় অবস্থান পরিহার করার প্রবণতা আছে। এক্ষেত্রে জলবায়ু এবং বাণিজ্যিক
নিয়ামক প্রধান কার্যকর প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অবস্থান, আকৃতি এবং আয়তন জনসংখ্যা বন্টনের উপর, বিশেষ করে,
শীতল অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। মহাদেশের অভ্যন্তরে উত্তরাঞ্চলের উচ্চ দ্রাঘিমায় উলম্ব বিস্তৃতি
এবং সীমিত মহাসাগরীয় যোগাযোগ জনসংখ্যা বিন্যাসের বিস্তৃতি যথেষ্ট সীমিত করেছে। দক্ষিণাঞ্চলের
সঙ্কীর্ণ বিস্তৃতি উচ্চ দ্রাঘিমাংশে অনুরূপ প্রভাব বিস্তার করেছে। অপরদিকে নিরক্ষীয় দক্ষিণ আমেরিকা
এবং আফ্রিকায় সরাসরি ক্রান্তীয় অরণ্যভ‚মি ও মরুভ‚মির অবস্থানের জন্য জনসংখ্যা বন্টন সীমিত
হয়েছে। অনেক সময় মনে করা হয় যে, পরিবেশগত সংরক্ষণতা বা সীমিত অবস্থান বিশেষ করে মধ্য ও
নি¤œ দ্রাঘিমার দেশসমূহে, যেমন - বৃটেন, জাপান, শ্রীলঙ্কা, মাল্টা, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তাইওয়ান,
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ইত্যাদির জনসংখ্যা সংগঠিত বিন্যাসের রূপদান করেছে। এ সমস্তের স্থান বিশেষের
আকার, অবস্থান, ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক পটভ‚মিকা এবং অর্থনীতিক সম্ভবনা গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই
প্রায় ৫,৩৭৬ ব. কি. মি. আয়তন বিশিষ্ট কর্সিকার তুলনায় মাত্র ১৯২ কি.মি. আয়তন বিশিষ্ট মাল্টায়
অধিক জনসংখ্যা বাস করে (চিত্র ৩.১.১)।
উপক‚লভাগে জনসংখ্যা বন্টনের যথেষ্ট বৈষম্য দেখা যায়। বন্দর ও পোতাশ্রয়ে ব্যবসা, বাণিজ্য ও
আর্থনীতিক কারণে ঘন বিন্যাসিত জনসংখ্যা দেখা যায়। বিশেষ করে বিশ্বের অধিকাংশ জনবহুল নগর
বিকাশ করেছে উপক‚লীয় অঞ্চলে।
জনসংখ্যার উলম্ব বিন্যাস : প্রামাণিত যে, জনসংখ্যা এবং এর ঘনত্ব উচ্চতর সাথে নি¤œগামী হয়।
বিষয়টি উচ্চতা জনিত পরিবেশে মানবীয় কর্মকান্ড ও জীবিকা কষ্টসাধ্য বলেই ঘটে থাকে।
সাধারণভাবে প্রায় ৫৬ শতাংশ বিশ্ব জনসংখ্যা সমুদ্রতল থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে এবং মাত্র ২৮
শতাংশ ভ‚-ভাগে বাস করে। এই অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বিশ্ব গড় ঘনত্বের দ্বিগুন। ৫০০ মিটারের
নিচে ৫৭ শতাংশ ভ‚-ভাগে বিশ্ব জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ লোক বাস করে।
এশিয়া মহাদেশের বিশাল জনসংখ্যার উচ্চতা ভেদে বিন্যাস বিশ্ব জনসংখ্যার বন্টনকে উল্লেখযোগ্যভাবে
প্রভাবিত করেছে। উচ্চতা হিসাবে বিশ্বে জনসংখ্যা বিন্যাস ৩২০ মি. গড় উচ্চতায় হলেও বিভিন্ন
মহাদেশে গড় উচ্চতা বিভিন্ন ধরনের ; যেমন:
আফ্রিকা ৫৯০ মিটার উ: আমেরিকা ৪৩০ মিটার
এশিয়া ৩১৯ মিটার দ: আমেরিকা ৬৪৪ মিটার
অস্ট্রেলিয়া ৯৫ মিটার ইউরোপ ১৬৮ মিটার।
অর্থনৈতিক কারণ এবং ভ‚-বন্ধুরতার মাত্রা ছাড়াও শারীরিক ও স্বাস্থ্যগত কারণে অতি উচ্চতায় জনসংখ্যা
বসবাস করে না। নির্দিষ্ট কতিপয় স্থানে অতি উচ্চতায় বসবাসের জন্য জনসংখ্যাকে পরিবেশের সাথে
যথেষ্ট মাত্রায় খাপ খাওয়াতে হয় - যেমন হিমালয় ও এ্যান্ডিজ অঞ্চলে স্থায়ী জনবসত ৫০০ মিটারের
মধ্যে দেখা যায়। তবে ৭০০০ মিটার উচ্চতায় জনবসত গড়ে ওঠে না।
উচ্চতার সাথে দ্রাঘিমার একটি সম্পর্ক রয়েছে যা এরূপ ভ‚-সংস্থানযুক্ত স্থানে জনসংখ্যা বন্টনে ভ‚মিকা
রাখে। নি¤œ দ্রাঘিমায় জনসংখ্যার বসবাসের জন্য উচ্চতা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে কেননা উচ্চতা ভেদে
জলবায়ুগত উপাদান, বিশেষ করে তাপমাত্রা, সহনশীল হয়ে থাকে। ইথিওপিয়া, নেপাল ও ভারতের
হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চল এবং ল্যাটিন আমেরিকায় নি¤œ আন্ডিজে এ কারণে ব্যাপক স্বাস্থ্যকর
জনবসত গড়ে উঠেছে। এই সমস্ত এলাকায় বেশ কিছ শহরের বিকাশ উচ্চতাজনিত কারণে ঘটেছে।
জনসংখ্যা ও ভ‚-সংস্থান : খাড়া ঢাল, ভ‚মির বন্ধুরতা ও বৃক্ষহীনতা চাষাবাদ বা বসত স্থাপনের জন্য
মানুষকে আকৃষ্ট করে না। কিছু কিছু প্রাকৃতিক অসুবিধা প্রযুক্তি প্রয়োগের ফলে অতিক্রম করা গেলেও
সাধারণভাবে এ ধরনের ভ‚-প্রকৃতি জনবসত বিকাশ এবং জনসংখ্যা বিন্যাসের জন্য সুবিধাজনক নয়।
তবে যেখানে জন আধিক্য রয়েছে এবং ভূমি-স্বল্পতা (যেমন, হংকং ও জাপান) এবং নিরাপত্তার বিষয়
(পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল) জড়িত সেখানে জনসংখ্যার বিস্তার অপরিহার্য দেখা গেছে। আবার
অর্থনৈতিক কারণে যাযাবররা বন্ধুর ভূ-প্রকৃতিতে তাদের চারণভিত্তিক কর্মকান্ড অভ্যস্ত হওয়ায় জনবসত
গড়ে তুলেছে। উত্তর আফ্রিকায় মরুদেশ থেকে তিউনিস এবং পূর্ব তুরস্ক, উত্তর ইরান ও উত্তর ইরাকে
জনসংখ্যার বন্টনে এ সমস্তের প্রভাব বিদ্যমান।
অপরদিকে উত্তর ও মধ্য দ্রাঘিমার ঊষর পার্বত্য অঞ্চলে অতি জনবিরল অবস্থা বিরাজ করছে। এ সমস্ত
অঞ্চলের দক্ষিণের সমভ‚মিতে আবার জনসংখ্যা বন্টনে বৈপরীত্য দেখা যায়- সমভ‚মিতে জনসংখ্যা বন্টন
ও ঘনত্বের ক্রম বর্ধমান গতি লক্ষণীয়। পার্বত্য উপত্যকা এবং গিরিপথ সন্নিহিত এলাকায় গুচ্ছবদ্ধ
জনসংখ্যার বসত দেখা যায়। স্কটল্যান্ডের পাহাড়ী অঞ্চল, নিউজিল্যান্ড এবং তাসমেনিয়ায় এরূপ
জনবিন্যাস দেখা যায়। উন্নত বিকাশশীল বিশ্বের অনেক পাহাড়ীয়া অঞ্চলে জনসংখ্যা বন্টনে নি¤œগতি
লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
প্রধানত: পাহাড়-ভিত্তিক সম্পদের প্রাপ্যতা, বিশেষ করে বননিধন অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার অভাব,
নিরাপত্তা এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত কারণে সনতান পেশার উপর চাপ এই ধরনের জনসংখ্যা বন্টন
পরিবর্তনের প্রধান কারণ। বিশেষ করে, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের পাহাড়ে যেখানে কৃষি ভূমির স্বল্পতা
রয়েছে সেখানে এই পরিবর্তন দ্রæত। অপরদিকে, পাদদেশীয় পাহাড়ী অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে ঘন
জনসংখ্যাযুক্ত এলাকা বলে পরিচিত। মধ্য স্কটল্যান্ড, উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ড, পূর্ব ও পশ্চিম পাদদেশীয়
যুক্তরাষ্ট্র এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। কিন্তু সমভূমি সব সময় জনসংখ্যা বিস্তারের জন্য আকর্ষণীয় স্থান।
বিশাল আর্দ্র নিরক্ষীয় এবং নদী বিধৌত অঞ্চল সব সময় জন অধ্যুষিত দেখা গেছে। গঙ্গা-যমুনা-মেঘনা
নদীর পরিবাহ অঞ্চলের প্লাবনভ‚মি পৃথিবীর অন্যতম জন অধ্যুষিত অঞ্চল। তবে অনেক সমভ‚মি
প্রাকৃতিক কারণে এখনও জনবিরল, যেমন আমাজন ও কঙ্গো প্লাবন ভ‚মি, সাহারা এবং সাইবেরিয়ার
সমভূমি ইত্যাদি।
উপরোক্ত পরিস্থিতির কারণে দেখা যাচ্ছে যে, জনসংখ্যার সাধারণ বন্টনের সাথে বিশ্ব ভ‚-সংস্থান
মানচিত্রের একটা ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে।
জনসংখ্যা ও জলবায়ু : জনসংখ্যার বন্টনের উপর জলবায়ুর প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে কেবল শারীরিক ও
স্বাস্থ্যগত কারণেই নয়, বরং পরোক্ষভাবে জলবায়ুর সাথে মৃত্তিকা, উদ্ভিজ এবং কৃষি ব্যবস্থাও সরাসরি
জড়িত যা জনবসত ও জনসংখ্যা বিকাশকে প্রভাবিত করে। সাধারণভাবে জনসংখ্যার দীর্ঘস্থায়ী আবাস
নির্দিষ্ট তাপমাত্রা সীমার মধ্যে সংগঠিত হয়ে থাকে। এজন্য অনেক ভ‚গোলবিদ এমনও মনে করেন যে,
মানুষের অভিগমন, সংস্কৃতি ও সভ্যতার মূলভিত্তি জলবায়ুর সাথে সংশ্লিষ্ট। তবে এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রাকৃতিক
নিমিত্তবাদের অন্তর্ভুক্ত এবং এর বিরোধী মতবাদও রয়েছে। কেননা, প্রযুক্তি বিকাশের সাথে সাথে
জলবায়ুগত অনেক উপদানের বাধ্যবাধকতা বিশেষ করে, তাপমাত্রার পরিবর্তন করা গেছে যার ফলে
শীতল বা উষ্ণ অঞ্চলে জনবসত বিকাশ সম্ভব হয়েছে।
তবুও সামগ্রিকভাবে অতি শীতল অঞ্চল জনসংখ্যা বন্টন ও বিন্যাসের উপযোগী নয়। ঠিক তেমনি অতি
উষ্ণ ও ঊষর জলবায়ু অঞ্চল এখনও প্রধানত: জনবিরল। বিশ্বের প্রায় মেরু অঞ্চল এত শীতল যে
চাষাবাদ সম্ভব নয় যার ফলে স্থায়ী জনসংখ্যার বসত গড়ে ওঠে নাই। উষ্ণ মরু অঞ্চল প্রধানত:
জনবিরল হলেও অনিয়মিত বৃষ্টিপাত অঞ্চলে বা মরুদ্যান এলাকায় ঘন জনসংখ্যার পুঞ্জিভ‚ত অবস্থান
লক্ষ্যণীয়। আবার মরুপ্রায় অঞ্চলে পানি সেচের ফলে কৃষিকাজের বিকাশের সাথে সাথে জনসংখ্যার
বিস্তৃতি ঘটেছে। উত্তর-পশ্চিম ভারত, সিন্ধু ও নীল অববাহিকার জনসংখ্যা বিন্যাস এর উদাহরণ।
এছাড়াও অতি চরমভাবাপন্ন জলবায়ু অঞ্চলে খনিজ এলাকা বা বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে সংঘবদ্ধ
গুচ্ছাকার জনবসত দেখা যায়।
জনসংখ্যা ও মৃত্তিকা : প্রধানত পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের মতই জনসংখ্যা বন্টনের উপর মৃত্তিকার
প্রভাব অনস্বীকার্য। দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া এবং নীল ব-দ্বীপ অঞ্চলের উর্বর মৃত্তিকাযুক্ত অঞ্চল ঘন
সন্নিবেশিত কৃষিভিত্তিক জনসংখ্যা বন্টন দেখা যায়। জনসংখ্যা বিন্যাসধারা স্তেপ অঞ্চলের শার্নোজেম
মৃত্তিকা এবং আগ্নেয়গিরি বলয়ে অগ্ন্যুৎপাতিক ভস্ম মৃত্তিকা অঞ্চলে দেখা যায়। অপরদিকে, নাতিশীতোষ্ণ
অঞ্চলের পডজল মৃত্তিকার নিবিড় রাসায়নিক প্রক্রিয়ার পর কৃষিকাজ সম্ভব। এ সব অঞ্চলে কৃষিকাজের
বাধ্যবাধকতা জনিত কারণে জনসংখ্যার বসত নিবিড় নয়। কানাডায় কর্দম মৃত্তিকা এবং পডজল মৃত্তিকা
অঞ্চলের সীমারেখা জনসংখ্যা বিন্যাসকেও চিহ্নিত করেছে।
কেবল মৃত্তিকার ধরণই নয়, মৃত্তিকা গঠনও জনসংখ্যার বিন্যাসের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
যেখানে উপরি মৃত্তিকার ক্ষয় সাধন বেশী যেখানে ভ‚মি উর্বরতা সংরক্ষণ কষ্টসাধ্য এবং কৃষিকাজ
সীমিত। এরূপ অঞ্চলে সাধারণত বিরল জনসংখ্যা বিন্যাস দেখা যায়। নিউজিল্যান্ডের ভ‚মি ক্ষয় এবং
জনসংখ্যা বন্টনের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক লক্ষ্যণীয়।
জীব-জগতীয় প্রভাব: জনসংখ্যা বন্টনের সাথে গাছ-পালা এবং বিভিন্ন প্রানীর বিন্যাসধারার একটি
যোগসূত্র রয়েছে। সেলভা, ক্যাম্পস, সাভানা, তুন্দ্রা, এবং তৈগা সমতল তৃণভ‚মি বিচিত্র মানব
কর্মকান্ডের যেমন আধার তেমনি বৈচিত্র্যপূর্ণ জনসংখ্যা বিন্যাসও সৃষ্টি করেছে। অরণ্যভ‚মি, তৃণভূমি,
কন্টকযুক্ত ঝোপ-ঝাড় ইত্যাদি প্রধানত: জনসংখ্যা বিস্তারের সহায়ক নয়। অপরদিকে, প্রেইরীভূমি আদি
আমেরিকান এবং পরবর্তিতে গম চাষীদের জন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। একইভাবে আর্দ্র
নিরক্ষীয় অঞ্চল, আমাজান ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার স্বয়ংভোগী কৃষি, উপনিবিষ্ট কৃষি, কৃষিভিত্তিক
জনসংখ্যার স্থিতি ঘটিয়েছে। এসব অঞ্চল এ ছাড়াও আদিবাসীদের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ জনসংখ্যা বন্টন দেখা
যায়।
উপরোক্ত বিষয়াদি ছাড়া বিশ্ব জনসংখ্যা বন্টনে স্থানিক ও আঞ্চলিক রোগ-শোকের আক্রমণ ও প্রভাব,
কৃষি ছাড়া অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য ও ঐতিহাসিকভাবে বিকশিত মানুষের আর্থনীতিক কর্মকান্ড
ও ইহার পরিবর্তন এবং ঐতিহাসিক জনমিতিক (যেমন, অভিগমনের ক্ষেত্রে) এবং সামাজিকরাজনৈতিক (যেমন, যুদ্ধ-বিগ্রহ) বিশেষ আঞ্চলিক জনসংখ্যার বন্টনকে সব সময়ে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত
করেছে।
জনসংখ্যার ঘনত্ব:
জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে নির্দিষ্ট স্থান বা দেশে মানুষের সংঘবদ্ধ অবস্থানের নিবিড়তা বুঝায়। এই
ঘনত্বের দ্বারা ভ‚মির উপর জনসংখ্যার চাপের মাত্রা প্রকাশ পেয়ে থাকে। কোন এলাকা বা দেশের
আয়তন বা ক্ষেত্রফল দ্বারা মোট জনসংখ্যাকে ভাগ করে জনসংখ্যার ঘনত্ব নির্ণয় করা হয়। এই ঘনত্ব
একর, বর্গ কি.মি. বা বর্গ মাইলে প্রতিফলিত হয়।
ছকে বর্ণিত পৃথিবীর অঞ্চলভিত্তিক জনসংখ্যা ঘনত্ব পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে,এই ঘনত্বের মধ্যে
ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। এই তারতম্য প্রধানত: ইতিপূর্বে বর্ণিত জনসংখ্যা বন্টনের উপাদানসমূহের
সাথে ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কযুক্ত এবং এর সাথে অঞ্চল বা দেশের আয়তন ও জনসংখ্যা আকার সম্পর্কযুক্ত।
সারণী ৩.১.২: অঞ্চল ভিত্তিক বিশ্ব জনসংখ্যার ঘনত্ব, ২০১০
অঞ্চল ভিত্তিক বিশ্ব জনসংখ্যা ঘনত্ব, ২০১০
(জনসংখ্যা প্রতি বর্গ মাইল)
দেশের নাম ঘনত্ব দেশের নাম ঘনত্ব
সুইজারল্যান্ড ৬৮ চীন ১৪২
ফ্রান্স ৭৩ ভারত ৩৮৩
মাল্টা ১৬ বাংলাদেশ ১২২৯
যুক্তরাজ্য ২৫৪ সৌদি আরব ১১
যুক্তরাষ্ট্র ৩৩ ইসরাইল ২০৪
কানাডা ৭ আজারবাইজান ১০৫
ব্রাজিল ৭০ জাপান ৩৫০
আর্জেন্টিনা ১০৯ থাইল্যান্ড ১৩২
উরুগুয়ে ১৯ অস্ট্রেলিয়া ১০১
কলম্বিয়া ৪০ নিউজিল্যান্ড ১৬
উৎস : ডড়ৎষফ উবাবষড়ঢ়সবহঃ জবঢ়ড়ৎঃ ২০১০, চধমব-৯৬
আয়তনে ছোট অথচ জনবহুল, এরূপ দেশের ঘনত্ব স্বভাবতই বেশী হয়। পক্ষান্তরে আয়তনে বড় কিন্তু
জনবিরল দেশের ঘনত্ব কম হয়ে থাকে। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে - জনবহুলতা কোন স্থানের
জনসংখ্যার যে সমাবেশ বা পুঞ্ছীভবনতা ঘটে তা প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, জনমিতিক, সামাজিক ও
রাজনৈতিক উপাদানের উপর নির্ভর করে। সমতল উর্বর মৃত্তিকা, নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু, স্থল ও নৌপথে
যাতায়াতের সুবিধা, শিল্প-গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, রাজধানী ও নগর-বন্দরের অবস্থান প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য।
বিশেষ করে উত্তর গোলার্ধের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বেশ কিছু দ্বীপ রাষ্ট্র ও দেশে, যেমন, হংকং
(৬৩৯৬ জন/ব. কি. মি.), সিঙ্গাপুর (৭১৪৮ জন/ বর্গ কি.মি.), মাল্টা (১৩১৮ জন/বর্গ কি. মি.),
বাংলাদেশ, (১২২৭ জন/বর্গ কি.মি.), বারবাডোস (৫৯৫ জন/বর্গ কি.মি., মালদ্বীপ (১০৩৭ জন/বর্গ
কি. মি.), মরিশাশ, (৫৫০ জন/বর্গ . কি, মি.), নেদারল্যান্ডে (৪০১ জন/বর্গ. কি. মি.) জনসংখ্যার উচ্চ
ঘনত্ব লক্ষ্য করা যায়। অপরদিকে, ঊষার মরুভুমি, বন্ধুর পার্বত্য এলাকা এবং তৃহিন মেরু অঞ্চলে
বৃহদায়নিক রাষ্ট্রসমূহে যেমন, মঙ্গোঁলিয়া (১.৭ জন/বর্গ. কি. মি.), লিবিয়া (৩.৬ জন/ব. কি, মি),
মৌরতানিয়া (৩.২ জন/বর্গ. কি. মি,), কানাডা (৩ জন/ বর্গ কি. মি,), অস্ট্রেলিয়া (১.০১ জন/বর্গ. কি.
মি.), সৌদি আরব (১২ জন/বর্গ. কি. মি.), বলিভিয়া (৯ জন/বর্গ কি, মি.), নাইজার (১২ জন/বর্গ. কি.
মি.) জনসংখ্যার ঘনত্ব অতি নি¤œ দেখা যায়।
পাঠসংক্ষেপ:
সামগ্রীকভাবে বিশ্বে জনসংখ্যা বন্টনের সাথে জনসংখ্যা ঘনত্বের প্যাটার্নের একটি সাধারণ সাদৃশ্য দেখা
যায় (চিত্র ৩.১.১)। ইতিপূর্বে প্রদর্শিত মানিচিত্রেও জনসংখ্যা ঘনত্বের প্যাটার্ণ লক্ষ্য করা যাবে। তবে
বিশ্ব পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভ‚-পরিবেশগত পার্থক্য এত বেশী এবং এদের মধ্যে জনসংখ্যা
বিবর্তনের ইতিহাস ও ধারায় এমন পার্থক্য রয়েছে যে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে জনসংখ্যার ঘনত্ব তথ্য
তুলনায় যেতে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। অপরদিকে, আর্থনীতিক ও সামাজিক কারণে
জনসংখ্যার ঘনত্ব তথ্যকে সম্পদের উপর জনসংখ্যা চাপের সূচক বলেও মনে করা উচিত নয়। এজন্য
জনসংখ্যা ঘনত্ব তথ্য ব্যবহার উপযোগী হলেও যেমন, কৃষি জনসংখ্যা ঘনত্ব, পৌষ্টিক ঘনত্ব, জন-ভ‚মি
অনুপাত, জনসংখ্যার অর্থনৈতিক ঘনত্ব, গৃহ বা খানা ভিত্তিক জনঘনত্ব, জনসংখ্যা বন্টনের কেন্দ্রীয়
প্রবণতা, জনসংখ্যার পরিমিত, বিচ্যুতি, জনসংখ্যার সম্ভাব্যতা মান, জনসংখ্যা পুঞ্ছীভবন, পরিমাপ
ইত্যাদি পর্যালোচনা করা উচিত। আলোচ্য পাঠক্রম বহির্ভূত বলে এই বিষয়গুলি এখানে আলোচিত হল
না।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:
১. শূন্যস্থান পূরণ করুন:
১.১. বিকাশশীল দেশে সর্বাপেক্ষা জনবহুল দেশ হচ্ছে চীন এবং -----।
১.২. বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় মাত্র ---- শতাংশ লোক দক্ষিণ গোলার্ধে বাস করে।
১.৩. প্রায় ----- বিশ্ব জনসংখ্যা ২০º-৬০º উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে।
২. সত্য হলে ‘স' মিথ্যা হলে ‘মি' লিখুন:
২.১. জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৬ বিলিয়ন।
২.২. জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী উন্নত দেশে প্রায় ৩ বিলিয়ন এবং বিকাশশীল দেশে ৪ বিলিয়ন
জনসংখ্যা রয়েছে।
২.৩. জনসংখ্যা বন্টনের সাথে গাছ-পালা এবং বিভিন্ন প্রাণীর বিন্যাসধারার একটি যোগসূত্র রয়েছে।
২.৪. আয়তনে ছোট অথচ জনবহুল, এরূপ দেশের ঘনত্ব স্বভাবতই কম হয়।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১. জনসংখ্যা কাকে বলে?
২. জনসংখ্যা বন্টনে প্রভাব বিস্তারকারী নিয়ামক সমূহ কি কি?
৩. জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে কি বুঝায়?
রচনামূলক প্রশ্ন:
১. জনসংখ্যা কাকে বলে? জনসংখ্যা বিন্যাসের পার্থক্যসূচক উপাদানগুলি ব্যাখ্যা করুন।
২. জনসংখ্যার উলম্ব বিন্যাস পর্যালোচনা করুন।
৩. এই পাঠে অন্তর্ভুক্ত দুইটি তথ্য সারি অবলম্বনে জনসংখ্যা বিন্যাস ও ঘনত্বের বিভিন্নতা আলোচনা
করুন।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ