অভিগমন কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
আভ্যন্তরীণ অভিগমন কাকে বলে?
আন্তর্জাতিক অভিগমন কাকে বলে?


অনেক ক্ষেত্রে মানুষ নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে স্বস্থান পরিবর্তন করে বহুদূরে গিয়ে নতুন আবাস স্থাপন করতে
পারে। এরূপ স্থায়ী বসবাসের উদ্দেশ্যে দূরান্তে বা অন্য দেশে গমন করাকে অভিগমন (গরমৎধঃরড়হ)
বলে (অভিগমন = অভিমুখে > গমন = অভিগমন)। লক্ষ্যণীয় অভিগমন প্রক্রিয়ায় দূরত্ব এবং স্থায়ীত্ব বা
বসবাস সময় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই উপাদানের উপর নির্ভর করে অভিগমনের কতিপয় প্রকার ভেদ
সম্ভব। যেমন, ঋতুভিত্তিক, অস্থায়ী, পর্যায়ক্রমিক, স্থায়ী, অথবা, বাধ্যকর স্বপ্রণোদিত, পরিকল্পিত, এবং
আভ্যন্তরীণ, বহিস্ত:, আন্ত: আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক, মহাদেশীয় ও আন্ত:মহাদেশীয়। তবে এ সমস্ত
প্রকারণ দুইটি প্রধান অভিগমনের মধ্যে শ্রেণীভুক্ত করা যায়:
(ক) আভ্যন্তরীণ, এবং (খ) আন্তর্জাতিক।
এই শ্রেণীকরণ অভিগমনের সংজ্ঞাগত ও তত্ত¡ীয় দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং ভৌগলিক পেক্ষাপটে
দেশীয় ও বহির্দেশীয় রাষ্ট্রীয় সীমানার সাথে সম্পর্কযুক্ত। এই প্রক্রিয়ায় দুইটি পর্যায় জড়িত : বহির্গমন
(ঊসরমৎধঃরড়হ) এবং আগমন (ওসসরমৎধঃরড়হ), অর্থাৎ যথাক্রমে বসবাসের উদ্দেশ্যে একটি দেশ থেকে
প্রস্থান এবং অন্যদেশ থেকে একটি দেশে আগমন বুঝিয়ে থাকে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, একটি জনগোষ্ঠীর বা দেশের সকলেই অভিগমন করে না।
অভিগমনকারীগণ কতিপয় বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয়ে থাকে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে অভিগমনধারার
মধ্যে বিভিন্নতা দেখা যায়। অভিগমনকারীগণ বিশেষভাবে বয়-নির্দিষ্ট হয়ে থাকে-অর্থাৎ নির্দিষ্ট
বয়সসীমার মধ্যে, বিশেষ করে যুবা বয়সে (১৫-৩০) জনগণ অভিগমন করে থাকে। এই বয়সকালে
জনগণ উদ্যোমী, কষ্টসহিষ্ণু, পেশাগত কারণে অনুসন্ধানপ্রবণ এবং বিভিন্ন পরিবেশে নিজেকে খাপ
খাওয়াতে বেশী সক্ষম হয়। এই বৈশিষ্ট্যের সাথে শিক্ষাগত অবস্থান একটি বিশেষ ইতিবাচক অনুঘটক
হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ এই বয়সকালে শিক্ষিত যুবকগণ পেশাগতস্থানে বা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার
লক্ষ্যে (যেমন উচ্চ শিক্ষা, ভাল অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি) অধিকতর অভিগমনপ্রবণ হয়ে
থাকে। উভয় ক্ষেত্রে মহিলাদের চাইতে পুরুষগণ বেশি মাত্রায় অভিগমনপ্রবণ হয়ে থাকে। এই প্রবণতা
বিশেষভাবে বিকাশশীল দেশসমূহে পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে আবার অবিবাহিতগণের মধ্যে অভিগমন
হার অধিক দেখা যায়। এক্ষেত্রেও অবিবাহিত পুরুষগণ মহিলাদের চাইতে অধিকহারে অভিগমন করে
থাকে। কিন্তু যুবা বয়:শ্রেণীতে মহিলাগণ বৈবাহিক কারণে স্বামীর সাথে অধিক মাত্রায় অভিগমন করে
থাকে। বিষয়টি উন্নত ও বিকাশশীল উভয় অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য। কিছু কিছু পেশাগত শ্রেণীর মধ্যে
অভিগমনপ্রবণতা অধিক লক্ষ্য করা যায়। দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের তুলনায় পেশাজীবীগণ অধিকহারে
অভিগমনপ্রবণ। বেকারগণও অধিকমাত্রায় অভিগমন করে থাকে।
আভ্যন্তরীণ অভিগমন
আভ্যন্তরীণ অভিগমনের মধ্যে ঋতু ভিত্তিক অভিগমন, সাময়িক অভিগমন, গ্রাম-নগর ও নগর-গ্রাম
অভিগমন এবং আন্ত:আঞ্চলিক অভিগমন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আভ্যন্তরীণ অভিগমন প্রক্রিয়াগতভাবে
অবশ্যই একটি দেশের রাজনৈতিক সীমানার ভিতরে ঘটে থাকে।
ঋতু ভিত্তিক অভিগমন: অনেকদেশে স্থায়ী বসতসম্পন্ন জনগোষ্ঠী এবং ভ্রাম্যমান বা যাযাবর বৃত্তিক
জনগোষ্ঠীর অভিগমন প্রকৃতির মধ্যে পার্থক্যকরণ করা হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে আদিম উপজাতীয়
জনগোষ্ঠী প্রাথমিক পর্যায়ের আর্থনীতিক কর্মকান্ডের আওতায় ঋতু ভিত্তিক পরিব্রাজনশীল জীবন যাত্রায়
অভ্যস্ত হয়ে থাকে। এরা প্রধানত: খাদ্য অনুসন্ধান বা উৎপাদন, কৃষি নির্ভর অথবা অর্থনীতিক
উপার্জনশীল অবলম্বন হিসেবে চারণ বৃত্তিক পেশা নির্ভর হয়ে থাকে। আফ্রিকা, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া এবং
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহে প্রাথমোক্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ঋতু ভিত্তিক স্থান পরিবর্তনকারী জনগোষ্ঠী দেখা
যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্রগ্রামের জেলাসমূহে ঝুম চাষে অভ্যস্ত আদি জনগোষ্ঠী এই শ্রেণীর।
অপরদিকে, পশ্চিম এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার দেশসমূহে সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং আলাস্কার
ইনুইটস্দের মধ্যে পশু চারণ বৃত্তিসম্পন্ন ঋতু ভিত্তিক স্থান পবির্তনশীল জনগোষ্ঠী দেখা যায়। তবে উভয়
শ্রেণীই কোন অঞ্চলের নির্দিষ্ট পরিসীমার মধ্যে তাদের গতায়ত সীমাবদ্ধ রাখে এবং একটি পর্যায়ে উৎস
স্থলে ফিরে আসে। নির্দিষ্ট বৎসরে এই গতিশীলতার আবর্তণ লক্ষ্য করা যায়। লক্ষ্যণীয় যে, প্রকৃত অর্থে
এই ধরনের স্থানান্তরকে অভিগমনের পর্যায়ে ফেলা যায় না। অপরদিকে, বিভিন্ন দেশে আধুনিকায়ন এবং
অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে এই সমস্ত জনগোষ্ঠীর জীবন ধারা ও পরিব্রাজনশীলতার
পরিবর্তন যথেষ্ট মাত্রায় ঘটেছে।
সাময়িক অভিগমন
অনেক অভিগমনকারী নিজ স্থায়ী আবাস থেকে নির্দিষ্ট কয়েক বৎসর অন্যত্র অবস্থান করে থাকে। এরা
প্রধানত: অস্থায়ী অভিগমনকারী এবং অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্য এ ধরনের অভিগমন করে থাকে। অর্থ
উপার্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সময়কালটিতে এরা মূল আবাসস্থলে নিয়মিত অর্থ প্রেরণ করে স্বদেশে
নিজেকে এবং নিজ পরিবারকে বিত্তশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে থাকে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান,
শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ও বেশ কিছু উত্তর আফ্রিকার দেশ থেকে পশ্চিম এশিয়ার
পেট্রোলিয়াম তেল সমৃদ্ধ দেশসমূহে এরূপ অভিগমন সাম্প্রতিক দশকে এশীয় অঞ্চলটির মোট
জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের অধিক ছিল। বর্তমানে এই হারের নি¤œগতি লক্ষ্য করা যায়। অতীতে এ
ধরনের অভিগমন পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার খনিজ সমৃদ্ধ এলাকায়
ঘটেছিল। এ ছাড়া বেশ কিছু বাণিজ্যিক কৃষি এবং উপনিবিষ্ট কৃষি অঞ্চলে, যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের তুলা ও
খাদ্যশষ্য এলাকা, পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বেশ কিছু দ্বীপ এলাকায় কলা, ইক্ষু,
আনারস খামারে এবং পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ, ভারত, মধ্য-পূর্ব আফ্রিকার চা ও কফি খামারে এরূপ
অভিগমন ঘটেছে। বর্তমানে এই ধারা পরিবর্তিত হয়ে প্রযুক্তি নির্ভর উৎপাদনের সাথে এই ধরনের
অভিগমন সম্পৃক্ত হয়েছে। বর্তমানে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে বিকাশশীল দেশসমূহ থেকে পশ্চিম এশীয়
দেশসমূহসহ কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ায় এরূপ অভিযান ঘটেছে। লক্ষ্যণীয়, এ ধরনের
অভিগমনকারীদের মধ্যে অনেকসময় লক্ষ্যস্থল দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
এরূপ ক্ষেত্রে এরা স্থায়ী অভিগমনকারী হিসেবে গণ্য হয়।
গ্রাম-শহর এবং শহর-নগর অভিগমন: গ্রাম এলাকা থেকে শহরাঞ্চলে অভিগমন সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ
এবং জনগোষ্ঠীর সর্বত্র প্রচলিত একটি ধারা। বিশেষ করে শিল্প উন্নয়নমূখী দেশসমূহে এই ধারা
বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। অর্থাৎ এই অভিগমন প্রক্রিয়া অর্থনৈতিক বিকাশ, মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি এবং শিল্প
ভিত্তিক নগর ও সার্বিক নগরায়নের সাথে সম্পর্কীয়। পাশ্চাত্য দেশসমূহের অধিকাংশ আভ্যন্তরীণ
অভিগমন এ সমস্ত কারণে ঘটেছে। তবে অতিরিক্ত নগরায়ন-প্রবণ দেশসমূহে, যেমন, বৃটেন এবং
জাপানে, আন্ত:নগর অভিগমনও লক্ষ্য করা যায়।
গ্রাম-শহর অভিগমনের ক্ষেত্রে উৎসস্থলে জনাধিক্য, কৃষিতে আধুনিকায়ন কিন্তু সনাতন ভ‚মি স্বত্বের
অপরিবর্তন ধারা এরূপ অভিগমনে উদ্রেককারী পরিস্থিতি সৃষ্টি করে থাকে। অপরদিকে, নগরাঞ্চলে
কাজকর্ম বা চাকুরীর সুযোগ, জীবন-যাত্রা মান উন্নয়নের সম্ভাবনা এবং নগরীর সুবিধাদি (যেমন, শিক্ষা,
বিনোদন, চিকিৎসা সেবা ইত্যাদি) লক্ষ্যস্থল নির্ধারক উপাদান হিসেবে কাজ করে। এর সাথে পরিবহন
ব্যবস্থার বিকাশ এবং কৃষি অর্থনীতির স্থবিরতা অনেক বিকাশশীল দেশে (যেমন, আফ্রিকা ও ল্যাটিন
আমেরিকার দেশসমূহে) গ্রাম-নগর অভিগমনকে উৎসাহিত করেছে। এর ফলে গ্রামীণ ও শহুরে
সাংস্কৃতির সংযোগ বৃদ্ধি পেলেও কিছু কিছু দেশে, যেমন, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও বাংলাদেশ
সামগ্রিক নগরায়নের উপর এ ধরনের অভিগমনের তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যায় না। বরং এ সমস্ত
দেশের নগরে অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অপরিকল্পিত কর্মকান্ডের বিকাশ নগরায়ন ধারার উপর নেতিবাচক প্রভাব
বিস্তার করেছে। বিশেষ করে বিকাশশীল দেশের নগরাঞ্চলে এই ধরনের অভিগমন এক ধরনের
পেশাগত মিশ্রণ সৃষ্টি করেছে।
তবে প্রায় সকলদেশে গ্রাম-নগর অভিগমন সব সময়ে সরাসরি ঘটে না। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে
অভিগমনকারীগণ নিকটবর্তী শহরে প্রথমে গমন করে এবং পর্যাযক্রমে বড় শহরে গমন করে। একে
পর্যায় ক্রমিক অভিগমন (ঝঃবঢ় গরমৎধঃরড়হ) বলে। অভিগমনের একটি শুভদিক হলো নগর থেকে গ্রামে
সম্পদের প্রসার কেননা নগরে উপার্জিত অর্থের একাংশ অভিগমনকারীরা গ্রামে বসবাসরত পরিবারের
নিকট নিয়মিত প্রেরণ করে থাকে।
এই অর্থ-সম্পদ বৃদ্ধিতে, বিশেষ করে ভ‚মি ক্রয়ে বিনিয়োগ হয়। সাম্প্রতিক দশকে বিকাশশীল দেশ
থেকে উন্নত দেশে বা পশ্চিম এশীয় তৈল সমৃদ্ধ দেশে অভিগমনকারীদের প্রেরিত অর্থ প্রধানত: ভূমি
ক্রয়ে বিনিয়োগ হয়েছে।
নগর থেকে গ্রামে অভিগমন উন্নতদেশে অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিক ধারা বলা যেতে পারে। নগরে অতি
জনাধিক্য বিবিধ ধরনের দূষণ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা, আবাসন সমস্যা পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি ও ব্যাপ্তী
এই ধরনের অভিগমনকে উৎসাহিত করেছে। বিশেষ করে শিল্পোন্নত দেশসমূহের অধিবাসীদের শহর
থেকে শহরের বাইরে ভাল পরিবহণ ব্যবস্থাযুক্ত শহরতলী বা শহর উপকণ্ঠ এলাকায় বসবাসের প্রবণতা
লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে নগরাঞ্চলে কর্মজীবন শেষে গ্রামে প্রত্যাবর্তন করছে নগরীয় জটিল ও øায়ুবিক
চাপযুক্ত পরিবেশ থেকে মুক্তি পাবার উদ্দেশ্য। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও বৃটেনের বৃহৎ নগর থেকে শহরতলী
ও গ্রামে এ ধরনের অভিগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, লন্ডন শহরের জনসংখ্যা বর্তমানে নি¤œমুখী।
এরূপ ক্ষেত্রে শিল্প ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান, প্রতিযোগিতা, অর্থনৈতিক মন্দা ইত্যাদি এই ধরনের অভিগমনের
পেছনে ক্রিয়াশীল বলে মনে করা হয়।
আন্ত: আঞ্চলিক অভিগমন : একটি দেশের বা অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের অভিগমন ঘটে।
অনেক দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের সাথে আন্ত: আঞ্চলিক অভিগমণ সম্পর্কযুক্ত। এ প্রসঙ্গে দুইটি
অভিগমনধারা বিশেষ উল্লেখ্য: ঔপনিবেশিক অভিগমন এবং জনগোষ্ঠীর সাধারণ ভ্রাম্যমানতা। প্রথমটি,
স্বত:স্ফ‚র্ত ও পরিকল্পিত এবং ঔপনিবেশিককালে উপনিবিষ্ট কৃষি, নতুন ভ‚মি ও জনপদ পত্তন এবং
অর্থনৈতিক উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জড়িত ছিল। ১৮ ও ১৯ শতকে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া,
প্রশান্ত মহাসগরীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে অভিগমন শ্রেণীগুলি আন্ত:আঞ্চলিক
ধরনের। এই অভিগমন নির্দিষ্ট ঔপনিবেশিক এলাকায় ঘটেছে। যদিও দূরত্বের মাত্রা অধিক ছিল।
অপরদিকে, ভ্রাম্যমানতা কেন্দ্রিক অভিগমন প্রধানত: পাশ্চাত্যদেশসমূহে বিভিন্ন প্রবৃদ্ধি কেন্দ্র বিকাশের
সাথে শ্রমিক অভিগমনে যুক্ত ছিল। কোন কোন দেশে যেমন, ভ‚তপূর্ব সোভিয়েত রাশিয়ার এবং অতীতে
যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি শ্রমিকদের আন্ত:আঞ্চলিক ভ্রাম্যমানতার সাথে আন্ত:আঞ্চলিক অভিযান সম্পর্কীয় ছিল।
বর্তমানে, বহুদেশে কৃষি ও শিল্প-ভিত্তিক শ্রমিকদের আন্ত:আঞ্চলিক অভিগমনের ধারা লক্ষণীয়। চীন
এবং দক্ষিণ এশিয়ায় কৃষি শ্রমিকদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফসল বপন বা কর্তনের জন্য অভিগমন,
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্য আমেরিকার দেশসমূহে তৈরী পোশাক শিল্পকেন্দ্র, ইলেকট্রনিকস্
শিল্প এবং বিশেষায়িত শিল্প অঞ্চলে শ্রমিক অভিগমনসমূহ আন্ত:আঞ্চলিক পর্যায়ে ফেলা যায়।
আন্তর্জাতিক অভিগমন
বোগ-এর দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী অভিগমনের মূল কারণের প্রায় সবই আন্তর্জাতিক অভিগমনের ক্ষেত্রে
প্রযোজ্য। এদিক থেকে আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অভিগমনের কারণের মধ্যে তেমন কোন তারতম্য
নেই। কিন্তু এদের মধ্যে প্রধান প্রক্রিয়াগত পার্থক্য এই যে, আন্তর্জাতিক অভিগমন দুই বা ততোধিক
দেশের রাজনৈতিক সীমানার বাইরে ঘটে থাকে- অর্থাৎ অভিগমনকারীকে নিজ দেশ ত্যাগ করে লক্ষ্যস্থল
হিসেবে অপর একটি দেশে অন্তত: নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গমন করতে হবে। আন্তর্জাতিক অভিগমনের
মুখ্য কারণ প্রধানত: অর্থনৈতিক। তবে সাম্প্রতিককালে রাজনৈতিক, ভ‚-রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক, এমন
কি আদর্শিক কারণও আন্তর্জাতিক অভিগমনের ক্ষেত্রে গুরুত্বলাভ করছে।
১৯ শতকের ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রধানত: অর্থনৈতিক কারণে, বিশেষ
করে, কৃষি দ্রব্য উৎপাদনের সাথে জড়িত ছিল। এর পর পরই বিভিন্ন খনিজ পদার্থ (বিশেষ করে, কয়লা
লৌহ ও স্বর্ণ) আহরণের জন্য বহু ইউরোপীয় অধিবাসী আমেরিকায় অভিগমন করে। এমন কি এই সময়
বিশেষ করে পশ্চিম আফ্রিকা থেকে শ্রমিক হিসেবে নিগ্রো জনগোষ্ঠীকে বলপূর্বক যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া
হয়। এই প্রক্রিয়াকে ‘বাধ্যকর অভিগমন' বলা হয়। অপরদিকে, বৃটেন থেকে সাধারণ অভিগমনকারীদের
সাথে সাথে অপরাধীদের ব্যাপকহারে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য
ইউরোপীয় দেশ থেকে আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপকহারে আন্তর্জাতিক অভিগমন ঘটতে থাকে।
এই প্রক্রিয়ায় আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ইউরোপীয়দের সীমিত অভিগমন ঘটে।
বর্তমানে এই প্রক্রিয়ার অবসান ঘটেছে কিন্তু এর জনমিতিক প্রতিক্রিয়া এই সমস্ত মহাদেশের
দেশসমূহের এখন যথেষ্ট প্রকাশমান।
বর্তমান শতকে আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রধানত: জনমিতিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তিক। মহাদেশীয় পর্যায়ে
আঞ্চলিক জনসংখ্যার চাপ, অর্থনৈতিক মন্দা এবং অঞ্চল বিশেষে বিভিন্ন দেশে শিল্পের বিকাশ বিশেষ
করে বিকাশশীল দেশসমূহের জনগোষ্ঠীকে আন্তর্জাতিক অভিগমনে উৎসাহিত করেছে। এই ধারা দ্বিতীয়
মহাযুদ্ধের পর আরও সক্রিয় হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মাত্র ৪১০৫ বর্গ মাইল আয়তন সম্পন্ন লেবাননের
প্রায় ২০০০,০০০ জনসংখ্যার ১,৫০০,০০০ জন দেশের বাইরে অভিগমন করেছে। এরা প্রধানত:
ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকার হিসেবে যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রা লেবাননে প্রেরণ করে দেশটিকে সমৃদ্ধিশালী
করেছে। পরবর্তীতে একই ধরনের অভিগমন, কিন্তু সীমিত পর্যায়ে, দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব
এশিয়া, এবং মধ্য আমেরিকার দেশসমূহ থেকে পশ্চিম এশিয়ার তৈল সমৃদ্ধ দেশসমূহে ঘটেছে।
সাম্প্রতিককালে প্রায়শ: বিভিন্ন দেশের অভিগমন সম্পর্কীয় নীতি প্রধানত: আন্তর্জাতিক অভিগমনকে
প্রভাবিত করেছে। এ ধরনের নীতি একটি দেশের সামগ্রিক জনমিতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে গৃহীত হয়েছে।
প্রায় সকল পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ এবং জাপান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহির্গমনকে উৎসাহিত করেছে।
অপরদিকে ভ‚তপূর্ব কম্যুনিষ্ট দেশেসমূহ বহির্গমনকে নিরুৎসাহিত করলেও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা
ভেঙ্গে পড়ার পর এই সমস্ত দেশ বিশেষ করে রাশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপীয় দেশসমূহ বহির্গমনকে এখন
উৎসাহিত করেছে। গত এক শতাব্দীর বেশী সময় থেকে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস
করার জন্য আন্তর্জাতিক অভিগমনকে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দশক থেকে এই
ধারার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে একটি দেশে বহিরাগতদের আগমন নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা
পালন করে। এই নীতি আবার কোন কোন ক্ষেত্রে অঞ্চল বা বর্ণ কেন্দ্রীক হয়ে থাকে। যেমন, অস্ট্রেলিয়া
বা ক্যানাডা যেমন ইউরোপীয় বংশদ্ভুত অধিবাসীদের গ্রহণ করে থাকে সে হারে এশীয়দের গ্রহণ করে
না। একইভাবে, ভ‚তপূর্ব সমাজতান্ত্রিক দেশ থেকে অভিগমনকারীদের যুক্তরাষ্ট্র যে হারে গ্রহণ করে থাকে
সে হারে এশীয়, চীন বা আফ্রিকা বংশদ্ভূত জনগোষ্ঠীকে গ্রহণ করে না। এতদসত্তে¡ও বতর্মানে যুক্তরাষ্ট্র
সীমিত সংখ্যায় কোটা ও লটারী প্রথায় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বহিরাগতদের গ্রহণ করেছে।
আন্তর্জাতিক অভিগমন ধারায় এ ধরনের বৈশিষ্ট্য অনেক সময়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে,
রাজনৈতিক নীতি বা দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। তবে প্রায় দেশের ক্ষেত্রে আর্ন্তজাতিক
অভিগমনের সুযোগ ও সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়েছে।
এতদ্সত্বেও, বেশ কিছু উন্নত দেশ (যেমন কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া)
যুদ্ধ-বিগ্রহ, বর্ণগত সংঘাত এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে স্থানচ্যুত জনগোষ্ঠীকে সীমিত হারে স্থায়ীভাবে
আশ্রয় প্রদান করেছে। সাম্প্রতিককালে বিশেষ করে যুদ্ধের কারণে বহু উদ্ধাস্তু জনগোষ্ঠী নিকটতম
প্রতিবেশী দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে অভিগমন করেছে। এর মধ্যে ইউরোপের বসনিয়াহার্জেগোভিনা, কসোভো, রুয়ান্ডা-বুরুন্ডি, প্যালেস্টাইন এবং আফগান উদ্ধাস্তুদের উদাহরণ
উল্লেখযোগ্য। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর ইউরোপ থেকে ১৯৪০-৫০ সালের মধ্যে এ ধরনের বেশ কিছু
উদ্ধাস্তু জনগোষ্ঠী আন্তর্জাতিক অভিগমন পর্যায়ে গণ্য হয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় লাভ করেছে।
সারণী ৩.৫.১: প্রধান আন্তর্জাতিক অভিগমন ধারা:
১৮২৫-১৯২০:
যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র ১১ মিলিয়ন ভারত থেকে পাকিস্তান ৬ মিলিয়ন
যুক্তরাজ্য থেকে কানাডা ৩ মিলিয়ন পাকিস্তান থেকে ভারত ৫ মিলিয়ন
যুক্তরাজ্য থেকে অস্ট্রেলিয়া ২ মিলিয়ন ইসরায়েল থেকে জর্ডান
যুক্তরাজ্য থেকে দ:আফ্রিকা ১ মিলিয়ন অন্যান্য আরব রাষ্ট্র ৭ মিলিয়ন
১৯১০-১৯২০:
ইটালী থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৬ মিলিয়ন আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তান ৩ মিলিয়ন
অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয়া থেকে
যুক্তরাষ্ট্র
৩ মিলিয়ন রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র ১ মিলিয়ন
যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৩ মিলিয়ন ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্র ১ মিলিয়ন
ফ্রান্স থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২ মিলিয়ন ভিয়েতনাম থেকে দ:পূ: এশিয়া ০.৫ মিলিয়ন
১৯৪৩ -১৯৮০:
জার্মানী ও পোল্যান্ড থেকে ইসরায়েল ১০ মিলিয়ন কম্বোডিয়া থেকে দ:পূ: এশিয়া ০.৫ মিলিয়ন
১৯৮০-৯৯:
আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তান,
উজবেকিস্তান, আজারবাইজান ও ইরান ১ মিলিয়ন
বসনিয়া- হার্জেগভিনা থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশে ০.৩ মিলিয়ন
কসভো থেকে আলবেনিয়া ও অন্যত্র ০২ মিলিয়ন
ছকে বর্নিত প্রায় সমস্ত জনসংখ্যাকে উদ্বাস্তু শ্রেণীভুক্ত হলেও পরিশেষে এরা সকলেই সংশ্লিষ্ট দেশসমূহে
স্থায়ী বসবাসের অধিকার লাভ করাতে আন্তর্জাতিক অভিগমন পর্যায়ভুক্ত হয়েছে।
পাঠসংক্ষেপ:
অনেক ক্ষেত্রে মানুষ নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে স্বস্থান পরিবর্তন করে বহুদূরে গিয়ে নতুন আবাস স্থাপন করতে
পারে। এরূপ স্থায়ী বসবাসের উদ্দেশ্যে দূরান্তে বা অন্য দেশে গমন করাকে অভিগমন (গরমৎধঃরড়হ)
বলে।
আভ্যন্তরীণ অভিগমনের মধ্যে ঋতু ভিত্তিক অভিগমন, সাময়িক অভিগমন, গ্রাম-নগর ও নগর-গ্রাম
অভিগমন এবং আন্ত:আঞ্চলিক অভিগমন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আভ্যন্তরীণ অভিগমন প্রক্রিয়াগতভাবে
অবশ্যই একটি দেশের রাজনৈতিক সীমানার ভিতরে ঘটে থাকে।
বোগ-এর দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী অভিগমনের মূল কারণের প্রায় সবই আন্তর্জাতিক অভিগমনের ক্ষেত্রে
প্রযোজ্য। এদিক থেকে আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অভিগমনের কারণের মধ্যে তেমন কোন তারতম্য
নেই। কিন্তু এদের মধ্যে প্রধান প্রক্রিয়াগত পার্থক্য এই যে, আন্তর্জাতিক অভিগমন দুই বা ততোধিক
দেশের রাজনৈতিক সীমানার বাইরে ঘটে থাকে- অর্থাৎ অভিগমনকারীকে নিজ দেশ ত্যাগ করে লক্ষ্যস্থল
হিসেবে অপর একটি দেশে অন্তত: নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গমন করতে হবে। আন্তর্জাতিক অভিগমনের
মুখ্য কারণ প্রধানত: অর্থনৈতিক। তবে সাম্প্রতিককালে রাজনৈতিক, ভ‚-রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক, এমন
কি আদর্শিক কারণও আন্তর্জাতিক অভিগমনের ক্ষেত্রে গুরুত্বলাভ করছে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন: ৩.৫
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:
১ সত্য হলে ‘স' মিথ্যা হলে ‘মি' লিখুন:
১.১. আভ্যন্তরীণ অভিগমন প্রক্রিয়াগতভাবে অবশ্যই একটি দেশের রাজনৈতিক সীমানার ভিতরে ঘটে
থাকে।
১.২. বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাসমূহে ঝুম চাষে অভ্যস্ত আদি জনগোষ্ঠী আন্ত:আঞ্চলিক
শ্রেণীর অভিগমনের অন্তর্গত।
১.৩. প্রায় সকলদেশে গ্রাম-নগর অভিগমন সব সময়ে সরাসরি ঘটে থাকে।
১.৪. নগর থেকে গ্রামে অভিগমন উন্নতদেশে অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিক ধারা বলা যেতে পারে।
১.৫. ভ্রাম্যমানতা কেন্দ্রিক অভিগমন প্রধানত: পাশ্চাত্যদেশসমূহে বিভিন্ন প্রবৃদ্ধি কেন্দ্র বিকাশের সাথে
শ্রমিক অভিগমণে যুক্ত ছিল।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১. অভিগমন কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
২. আভ্যন্তরীণ অভিগমন কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার আভ্যন্তরীণ অভিগমন উল্লেখ করুন।
৩. আন্তর্জাতিক অভিগমন কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার আন্তর্জাতিক অভিগমন কি কি?
রচনামূলক প্রশ্ন:
১. অভিগমন প্রধানত কত প্রকার এবং কি কি? আন্তর্জাতিক অভিগমনের কারণসমূহ আলোচনা
করুন।
২. অভিগমনকে প্রধানভাগে ভাগ কর এবং আভ্যন্তরীণ অভিগমনের কারণসমূহ আলোচনা করুন।
৩. বোগ-প্রণীত অভিগমনের কারণসমূহ নির্দেশ করুন। একজন ভ‚গোলবিদ এই কারণসমূহ কেন
গ্রহণযোগ্য মনে করেন?

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]