ধর্ম সংস্কার ও প্রতিসংস্কার আন্দোলন
জার্মানির জনগণ ও রাজারা লুথারকে কেন সমর্থন করল



ধর্ম সংস্কার ও প্রতিসংস্কার আন্দোলন
ষোড়শ শতাব্দীতে একদিকে ভৌগোলিক আবিষ্কার যখন ইউরোপের দিগন্তকে প্রসারিত করছিল
ঠিক তখনি ইউরোপ ধর্মীয় বিসংবাদ ও কলহে পড়ে বিভক্ত হচ্ছিল। এই সময় পর্যন্ত যদিও
বিভিন্ন জাতির মধ্যে কিছুটা স্বাতন্ত্র্য দেখা যাচ্ছিল, তথাপি পোপের নেতৃত্বে একটি স্বতন্ত্র্য
খ্রিস্টান জগতের অস্তিত্ব ইউরোপব্যাপী ছিল। একজন ভ্রমণকারী ইউরোপের যেখানে যেতো
সে সর্বত্রই একই প্রার্থনা সঙ্গীত, এক পোপ কর্তৃক নিযুক্ত যাজকের আর্শীবাদ, একই খ্রিস্টান
ধর্মদীক্ষা দান, উৎসব, একই অনুসারে বিয়ে এবং একই রকম ধর্মীয় উৎসবের মুখোমুখি
হতো। কিন্তু একদিকে ইউরোপ যখন পৃথিবীর কর্তৃত্ব গ্রহণ করছিল অপরদিকে তার ধর্মীয়
সংহতি হারাচ্ছিল। ইউরোপের জাতিগত ঐক্য ভাঙ্গার পেছনে যেটি কাজ করেছিলো তা হচ্ছে
রিফমেশন বা ধর্ম সংস্কার আন্দোলন।
পোপ নিয়ন্ত্রিত মধ্যযুগীয় চার্চকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য রিফরমেশন আন্দোলনের সূত্রপাত
হয়। প্রচলিত ধর্মীয় রীতিকে বাইবেলের মূলনীতি অনুযায়ী সংস্কার করার জন্য এই
আন্দোলনকে রিফরমেশন বা ধর্ম সংস্কার আন্দোলন বলা হয়। মূলত এটি একটি ধর্মীয়
আন্দোলন হলেও এর সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ জড়িত হয়ে আন্দোলনটি আরও
বেগবান হয়। ফলে ধর্মসংস্কার আন্দোলন ইউরোপে রেনেসাঁসের ধারাবাহিকতায় ব্যাপক
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত
হয়।
ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় আরও একটি ধর্মসংস্কার আন্দোলন শুরু হয় ইউরোপে।
এটিকে প্রতিসংস্কার আন্দোলন বলা হয়। ধর্মসংস্কারবাদীদের আক্রমণের মুখে রোমান চার্চ
কতিপয় সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করে। যাজকদেরকে ত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী করে
রোমান চার্চকে সাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা প্রতিসংস্কার আন্দোলনের উদ্দেশ্য
ছিল। মোটকথা সংস্কার আন্দোলনকে প্রতিহত করে রোমান চার্চের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছিল
প্রতিসংস্কার আন্দোলনের লক্ষ্য। পর্তুগিজ এবং স্পেনীয় নাবিকরা যখন সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে
নতুন বাণিজ্যিক পথ খুঁজছিলেন, তখন এক ধর্মযাজক মার্টিন লুথার ত্মার মুক্তির পথ
খুঁজছিলেন। তাঁর আবিষ্কারের চেষ্টা ছিল দূর দেশের উষ্ণ আবহাওয়ায় নয় বরং সন্ন্যাসীর এক
আশ্রমে। এর ফলাফল কিন্তু ভৌগোলিক আবিষ্কারের ফলাফলের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল

না। জার্মান এই সন্ন্যাসী রোমকে আক্রমণ করার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপে এমন ঘটনা প্রবাহ
শুরু হলো যার ফলে ক্যাথলিক ধর্ম থেকে উত্তর ইউরোপের বিরাট এলাকা পৃথক হয়ে গেলো,
লক্ষ লক্ষ মানুষের ধর্মীয় জীবন এর প্রভাবে পরিবর্তিত হতে থাকলো।
রোমের বিরুদ্ধে লুথারেরবি দ্রোহের কারণ
ধর্মের নামে অধর্ম ও কুসংস্কার
লুথার-পূর্ববর্তী সময়ে ইউরোপীয়দের ধর্মজীবন ছিল করুণ। যারা ধর্ম বুঝতেন তাদের জন্য
অবস্থাটা ছিল বিব্রতকর। রোগশোকে বিপর্যস্ত এবং অনিশ্চয়তার সমুদ্রে ডুবে অসহায় মানুষ
অলৌকিকতা এবং কুসংস্কারকে খড়কুটার মতো ধরে পৃথিবীতে চলার এবং পরকালের মুক্তির
পথ খুঁজতো। অনেক কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তি বিশ্বাস করতো যে সকাল বেলা খ্রিস্টের উপাসনাউৎসব অবলোকন করলে সারা দিন সে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে। অনেকে ধর্ম উৎসবের
খাবার না খেয়ে জমা রেখে দিতো এই উদ্দেশ্যে যে এর ফলে করলে দুষ্টশক্তির হাত থেকে
রক্ষা পাওয়া যাবে অথবা রোগশোক থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। অনেকে পবিত্র খাবার গুড়ো
করে ফসলের জমিতে ছড়িয়ে দিতো, তাদের বিশ্বাস ছিলো এতে করে ফসল ভালো হবে।
খ্রিস্টান সন্ন্যাসীদের অলৌকিক ক্ষমতাকে যাদু বা মায়ার সমপর্যায়ে ধরা হতো। প্রত্যেক
সন্ন্যাসীর আলাদা আলাদা বিশেষত্ব আছে বলে মনে করা হতো। যেমন সেন্ট ক্লারে চক্ষুর,
সেন্ট এ্যাপোলিনে দাঁতের, সেন্টে জল বসন্তের এবং সেন্ট অ্যাথাতে স্তনের অসুখের নিরাময়ের
জন্য প্রার্থনা করা হতো। যিশুখ্রিস্ট এবং সন্ন্যাসীদের দেহের বা তাদের ব্যবহৃত জিনিষপত্রের
রোগ নিরাময়ে নিদর্শনে যাদু শক্তির ক্ষমতা আছে বলে মনে করা হতো এবং এগুলোর রমরমা
বাজার চালু ছিল।
নিস্কৃতিপত্র (ওহফঁষমবহপব) বিক্রয়
লুথারের মতো লোকদের অসন্তোষের কারণ ছিল খ্রিস্টধর্মের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস,
কিন্তু তার চেয়ে বেশি অসহনীয় ছিল অর্থের বিনিময়ে গির্জার অনুমতি এবং আত্মিক মুক্তির
প্রতিশ্রæতি লাভ করা। কোনো ব্যক্তি নিষিদ্ধ চাচাতো বা মামাতো বোন বিয়ে করতে চাইলে
টাকার বিনিময়ে গির্জার সম্মতি লাভ করতে পারতো। খ্রিস্ট ধর্মে তালাক নিষিদ্ধ থাকলেও
টাকার বিনিময়ে বিয়ে বাতিলের অনুমতি ক্রয় করা যেত। সবচাইতে আপত্তিজনক অনাচার
ছিল ত্মার মুক্তির জন্য ইনডালজেন্স নামক একপ্রকার ছাড়পত্রের কেনাবেচা। ক্যাথলিক
ধর্মতত্তে¡ ইনডালজেন্স হচ্ছে পোপকর্তৃক ইস্যুকৃত এক ধরনের মুক্তিপত্র যার দ্বারা পাপির সম্পূর্ণ
অথবা আংশিক পাপ পৃথিবীতে অথবা পরকালে মিটে যায়-এমন আশ্বাসের ছাড়পত্র, অর্থাৎ
পাপ মোচনের নিষ্কৃতিপত্র। একাদশ শতাব্দীতে পোপ জনগণকে ক্রুসেডে অংশগ্রহণের জন্য
উদ্বুদ্ধ করার জন্য এই প্রথা চালু করেছিলেন। আগে যেখানে অসাধারণ কর্ম করলে পোপ
ইনডালজেন্স ইস্যু করতেন সেখানে আস্তে আস্তে অর্থের বিনিময়ে এটা বিক্রি শুরু হয়। ১৪৭৬
খ্রিস্টাব্দে পোপ চতুর্থ সিক্সটাস (ংরীঃঁং ওঠ) ঘোষণা করেন যে, ইনডালজেন্সের সুবিধা এখন
জীবিত এবং মৃত উভয়ে লাভ করতে পারবে। এর অর্থ দাঁড়ালো ইনডালজেন্স কেবল জীবিত
ব্যক্তিকেই তার পাপ থেকে মুক্তি দেবে না, উপরন্তু তার ত্মীয় স্বজনকেও পরকালের কঠিন
যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে। ইনডালজেন্সের অপব্যবহার রোমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে
লুথারকে উদ্বুদ্ধ করে।

মার্টিন লুথার (১৪৮৩ - ১৫৪৬ খ্রি.)
মার্টিন লুথার ছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রেরণার উৎস। তিনি জার্মানির সাক্সনি অঞ্চলের
এইসলেবেন (ঊরংষবনবহ) শহরে ১৪৮৩ খ্রি. জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি কিন্তু প্রথম জীবনে তাঁর
বাবার হতাশার পাত্র ছিলেন। কৃষক থেকে সফল ব্যবসায়ী বাবা খনি ইজারা দিয়ে প্রচুর বিত্তের
মালিক হয়েছিলেন। বাবা চেয়েছিলেন তাঁর ছেলে বাবার ব্যবসাটা আরো এগিয়ে নিয়ে যাক।
তিনি লুথারকে ইরফার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্র অধ্যয়নের জন্য পাঠান। ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে
সেখানে থাকাকালে পিতার সমস্ত উচ্চাশাকে পুত্র মার্টিন জলাঞ্জলি দিয়ে সাধু বনে যাবে।
সম্ভবত পিতার চাপিয়ে দেয়া জীবন ছকের বিরুদ্ধে অবচেতনভাবে একটা বিদ্রোহ তার মনে
দানা বেঁধে উঠেছিলো, এবং এর বহিঃপ্রকাশ তখন ঘটেছিল। লুথার তার মনে হওয়া সত্যের
মুখোমুখি হলেন নাটকীয়ভাবে। নানা প্রচলিত উপায়ে তিনি ত্মার নির্বাণ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে
যাচ্ছিলেন। উপবাস, প্রার্থনা এবং পাপ স্বীকার করছিলেন এতো ঘন ঘন যে পাপ শ্রবণকারী
পুরোহিত একবার ঠাট্টা করে বলেছিলেন, ‘তোমার অপরাধ তুচ্ছ, যদি সত্যিই বড় ধরনের
পাপস্বীকার করতে চাও তাহলে তোমার উচিত হবে বাইর হয়ে ব্যভিচার করা’। তারপরও
লুথার আধ্যাত্মিক শান্তি পেলেন না, কারণ তার ভয় হচ্ছিলো ভালো কাজ সত্তে¡ও তিনি কখনই
ক্রোধান্বিত ঈশ্বরের কৃপা লাভ করতে পারবেন না। ১৫১৩ সালে তাঁর কাছে এক নতুন চিন্তার
উদ্রেক হলো, আর এটা পরির্তন করে দিলো তাঁর জীবনের গতিকে।
কয়েক বছর যাবত তিনি এই ভেবে অস্থিরতা বোধ করছিলেন যে ঈশ্বর মানুষের প্রতি অন্যায়
করছেন। কেননা তাঁর আদেশ-নিষেধ আসলে মানুষের পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। অথচ
এগুলো পালন না করলে মানুষকে ঈশ্বর প্রদত্ত শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। উইটেনবার্গ
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সময় বাইবেল পড়তে গিয়ে এই সমস্যার সমাধান তিনি খুঁজে পান।
তাঁর কাছে মনে হলো ঈশ্বরের কঠোর শাসন বা শাস্তির ভয় দ্বারা মানুষের ত্মার মুক্তি মিলবে
না। ঈশ্বরের দয়াতেই মানুষের মোক্ষ লাভ করা সম্ভব। লুথার নিজেই লিখলেন “অবশেষে
ঈশ্বরের অপার করুণায় আমি বুঝতে শুরু করলাম তাঁর ন্যায়বিচার, আর তা হলো ঈশ্বর
আমাদের প্রতি তাঁর দয়া এবং আমাদের বিশ্ব্াসের কারণে ন্যায়বিচার করেন....... আমার কাছে
মনে হলো আমি পূর্ণজন্ম লাভ করেছি এবং খোলা দরজা দিয়ে স্বর্গে প্রবেশ করেছি’’।
এই নতুন চেতনা লাভ করার পর পরই লুথার রোমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের চিন্তা করেন নি।
তিনি তত্তে¡র বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতা দিয়ে চলছিলেন। ১৫১৭ সালে এমন এক ঘটনা ঘটল যে
তিনি প্রচলিত ধর্মের ওপর আস্থা হারিয়ে এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন। এই
সময় পোপ দশম লিও এবং জার্মানির মেইনজের আর্চবিশপ আলবার্ট যৌথভাবে অর্থ তোলার
উদ্দেশ্যে ইনডালজেন্স বিক্রি শুরু করেন। টেটজেল নামক এক যাজক এই অনুমতি উত্তর
জার্মানিতে বিক্রি শুরু করেন। টেটজেল ইচ্ছাকৃতভাবে এমন একটা ধারণা দিচ্ছিলেন যে
ইনডালজেন্স ক্রয় করলে পাপের জন্য অনুশোচনা ছাড়াই কোনো ব্যক্তি নিজে বা তার মৃত ত্মীয়
স্বর্গে যেতে পারবে। টেটজেলের এই ধরনের প্রচারণা লুথারের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হলো না।
কেননা তখনো পর্যন্ত তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষের মুক্তির পথ কাজ নয়, বিশ্বাস। ১৫১৭
খ্রিস্টাব্দে ৩১ অক্টোবর উইটেনবার্গের গির্জার দরজায় তিনি অনুমতি পত্র বিক্রির বিরুদ্ধে

প্রতিবাদ জানিয়ে ৯৫ দফা সম্বলিত একটি প্রতিবাদপত্র পেরেক দিয়ে সেটে দিলেন। এই
কাজের মাধ্যমে তিনি সূচনা করলেন প্রতিবাদী খ্রিস্ট ধর্ম বা প্রোটেস্টানিজমের।
লুথার কিন্তু তাঁর প্রতিবাদপত্রে টেটজেলের সমালোচনা করেন নি, তিনি প্রতিবাদ পত্রটি
ল্যাটিনের পরিবর্তে জার্মান ভাষায় লিখেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন উইটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে
একটি ধর্মের তত্ত¡গত আলোচনা হোক। কিন্তু কিছু ব্যক্তি লুথারের বক্তব্য অনুবাদ করে বাইরে
প্রকাশ করে দেয়। একজন অখ্যাত সাধু থেকে লুথার শীঘ্রই একজন আলোচিত ব্যক্তি হিসেবে
সর্বত্র পরিচিত হতে থাকেন। টেটজেল এবং তার সমর্থকদের প্ররোচনায় লুথারকে তার বক্তব্য
প্রত্যাহার অথবা ত্মপক্ষ সমর্থন করতে ডেকে পাঠানো হয়। পিছু হঠার পরিবর্তে লুথার আরো
সাহসী হয়ে উঠেন। ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে লিপজিগের এক সমাবেশে তিনি ঘোষণা করেন যে, পোপ
এবং যাজকরা কেউই ভুলের উর্ধ্বে নন। যাজকরা নয়, ধর্মগ্রন্থই মানুষকে সঠিক পথের নির্দেশনা
দেবে। পোপ দশম লিও মার্টিন লুথারকে ধর্মদ্রোহী ঘোষণা দিলেন। এঅবস্থায় রোম থেকে
বিচ্ছিন্ন হওয়া ছাড়া লুথারের আর কোনো গত্যন্তর ছিল না।
লুথারের ধর্মতত্ত¡
লুথার অগাস্টনীয় ধর্মমতের অনুসারী ছিলেন। চারশ শতাব্দীতে সেন্ট অগাস্টিন মত প্রকাশ
করেন যে ঈশ্বরই মানুষের মুক্তির একমাত্র সিদ্ধান্তকারী, কাকে তিনি পরকালে মুক্তি দেবেন,
কাকে দেবেন না সেটা ঈশ্বর আগে থেকে স্থির করে রেখেছেন। মানুষের কাজের ওপর তার
পারলৌকিক মুক্তি নির্ভর করে না। এই মতবাদ মানুষের স্বাধীনতা ও দায়িত্বকে হরণ করে
বলে মধ্যযুগে থমাস একুইনাস ও সেন্ট পিটার লোম্বার্ড পাল্টা ধ্যান-ধারণা প্রচার করেন।
তাদের মতে ঈশ্বরের ক্ষমা সবাইকে বেষ্টন করতে চায়, কিন্তু মানুষ তা প্রত্যাখান করার ক্ষমতা
রাখে। মানুষের জন্য ঈশ্বরের ক্ষমা পাওয়ার রাস্তা সহজ করে দিতে পারে কেবল মাত্র
পুরোহিত।
লুথার সেন্ট অগাস্টিনের মত সমর্থন করে বললেন যে মানুষ অসংখ্য ভালো কাজ এবং ধর্মের
আচার-অনুষ্ঠানের দ্বারা রক্ষা পেতে পারে না। তাঁর মতে, যাদের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে তারা
ভাল কাজ করবেই, তাই বিশ্বাসের স্থান সর্বাগ্রে। লুথারের বক্তব্য নতুন কিছু নয়। পূর্বেই
উল্লেখ করা হয়েছে সেন্ট অগাস্টিনের নিয়তিবাদী (ঢ়ৎবফবংঃরহধৎরংস) ধারণাকে তিনি
নতুনভাবে উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে তাঁর বক্তব্য ছিল নতুন
এবং সমসাময়িক ধর্মীয় কাঠামো ভেঙ্গে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। লুথারের দ্বিতীয় বক্তব্য ছিল চার্চের
আচার অনুষ্ঠান বা ঐতিহ্যের চেয়ে বাইবেলের আক্ষরিক অর্থকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তাঁর
তৃতীয় বক্তব্য হচ্ছে সকল বিশ্বাসী ব্যক্তিই ঈশ্বরের প্রতিনিধি (যাজক)। আগে যেখানে মনে
করা হতো যাজকরাই শুধু ঈশ্বরের দূত, লুথার বললেন, প্রত্যেকেই তার ব্যক্তিগত মুক্তির জন্য
দায়িত্বপ্রাপ্ত।
লুথারের এসব বক্তব্যের ফলে বাস্তব ধর্মে অনেক পরিবর্তন এলো। যেহেতু লুথার লৌকিকতা
বা আচার পালনের আতিশয্যকে অনুমোদন করেন নি। তাই প্রচলিত উপবাস, তীর্থযাত্রা,
স্মারক চিহ্নের প্রতি শ্রদ্ধা ইত্যাদি লুথার প্রবর্তিত ধর্মে বাতিল হলো। শিশু জন্ম গ্রহণ করার পর
তার পাপমুক্তির অনুষ্ঠান বা ব্যাপটিজম এবং রুটি ও মদ প্রার্থনার পর অলৌকিকভাবে যিশুর
মাংস ও রক্তে পরিণত হয় অর্থাৎ ইউখারিস্ট নামে পরিচিত এই দুটি আচারে এমন কোনো

অলৌকিকত্ব নেই যা ঈশ্বর থেকে দয়া আনতে পারে। লুথার ল্যাটিনের পরিবর্তে জার্মান
ভাষাকে গির্জার অনুষ্ঠানের ভাষা হিসেবে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। লুথার আরো প্রস্তাব
করলেন যাজকদের যেহেতু অলৌকিক ক্ষমতা নেই তাই তারা আধ্যাতিœক উপদেষ্টা মাত্র,
ঈশ্বরের দূত নন। পোপ বা অন্য কারো হাতে স্বর্গের চাবি নেই। মঠতন্ত্র বা সন্যাসবাদেরও
কোনো প্রয়োজন নেই। যেহেতু সাধারণ মানুষ আর যাজকদের মধ্যে কোনো মৌলিক প্রভেদ
নেই। তাই লুথারের মতে গির্জার আধ্যাত্মিক উপদেষ্টারা ইচ্ছে করলে বিয়ে করতে পারেন।
তিনি নিজে ১৫২৫ খ্রিস্টাব্দে একজন স্ত্রী গ্রহণ করলেন।
জার্মানিতে লুথারের আন্দোলনের জনপ্রিয়তার কারণ
ছাপাখানা আবিষ্কারের বদৌলতে লুথারের শিক্ষা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়ে জার্মানিতে এক
আলোড়ন সৃষ্টি করল। জার্মানিতে লুথারের আন্দোলন সাড়া জাগানোর কয়েকটি কারণ ছিল।
জার্মানিতে অনেকে মধ্যযুগ হতে গির্জার কেন্দ্রীয়করণ অর্থাৎ স্থানীয় ধর্মীয় কার্যাবলীতে বিদেশী
পোপের হস্তক্ষেপ সমালোচনা করে আসছিলো। ধর্মীয় করের নামে জার্মানির টাকা পয়সা
ইতালিতে পাচার হওয়াও অনেকে পছন্দ করছিলো না। তাছাড়া জার্মানির জনগণ দেখছিলো
ধর্মের সঙ্গে পোপের সম্পর্ক সঙ্গতিপূর্ণ নয়। পার্থিব ভোগবিলাস ও ইন্দ্রিয় পরায়ণতায় অনেক
পোপই নিমজ্জিত ছিল। পোপ ষষ্ঠ আলেকজান্ডার কার্ডিনালদেরকে ঘুষ দিয়ে পোপের পদে
অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। পঞ্চদশ শতাব্দীতে তিনি এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে বিপুল অর্থ
সংগ্রহ করেন। পরে তাঁর পুত্র সিজারের সামরিক অভিযানে ঐ অর্থ লাগিয়েছিলেন। তাঁর
পরবর্তী পোপ দ্বিতীয় জুলিয়াস সামরিক শক্তি দিয়ে তার রাজ্যের সীমানা বাড়িয়েছিলেন।
জার্মানদের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছিলো। কারণ তাদের অর্থে পোপরা রাজনীতি ও দেশের
সীমানা বাড়িয়ে নিচ্ছিল, আর বিলাসবহুল দরবার বানিয়েছিলেন। ইতালির পোপসংক্রান্ত
রাজনীতিতে জার্মানির কোনো প্রভাব ছিলনা, কার্ডিনালদের যেসভা পোপ নির্বাচন করত
সেখানে ফরাসি ও স্পেনীয়দের প্রতিনিধিত্ব থাকলেও জার্মানদের প্রতিনিধিত্ব ছিল খুব কম।
খ্রিস্টান হিউম্যানিস্টদের প্রচারণা এবং জার্মানিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যুদয় লুথারের
আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করেছিলো। হিউম্যানিস্টরা পুরো গির্জা ব্যবস্থাকে সংস্কার
করতে আহŸান জানাচ্ছিলেন। পঞ্চদশ শতাব্দীতে অনেকে ভবিষ্যতদ্বাণী করছিলেন যে,
একদিন জার্মানিতে এমন এক বিজয়ী সম্রাটের আর্বিভাব হবে যিনি পোপের দফতর রোম
থেকে রাইনল্যান্ডে নিয়ে আসবেন। ডেসিডেরিয়াস ইরাসমাস নামক একজন হিউম্যানিস্ট
জার্মানিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। ১৫১১ সালে প্রকাশিত তার বহুল প্রচলিত
প্রেইজ অব ফলি (চৎধরংব ড়ভ ঋড়ষষু) বা ‘ক্রটি বিচ্যুতির প্রশংসা নামক গ্রন্থে রোমের প্রতি
কোনো সহানুভ‚তি না দেখিয়ে তিনি সমসাময়িক ধর্মের কুসংস্কার ও কলুষতা পাঠকের সামনে
তুলে ধরেন। তাঁর আরেক গ্রন্থ “জুলিয়াস একসক্লুডেড’’ (ঔঁষরঁং ঊীপষঁফবফ) গ্রন্থে
দেখিয়েছেন, সেন্ট পিটার পোপ দ্বিতীয় জুলিয়াসকে স্বর্গ থেকে এনে বন্দি করে রেখেছেন,
কেননা তিনি সীমা লংঘন করেছেন। জার্মানিতে এক সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো খুব কম,
কিন্তু ১৪৫০ থেকে ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। যে কোনো
বিপ্লবের কেন্দ্রীয় দফতরের প্রয়োজন আর মধ্যযুগের ক্রান্তিকালে ধর্মীয় বিদ্রোহগুলোর কেন্দ্রীয়
দফতরের অভাব পূরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শিক্ষিত ও তরুণরা সহজেই তাদের
আদর্শগত অবস্থান সুদৃঢ়ভাবে ব্যাখ্যা করে বিভিন্ন সময়ে মুহূর্তের ডাকে বিপ্লবী ইশতেহার বের

করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই দান করেছিলো মধ্যযুগের বিদ্রোহগুলোর নেতৃত্ব। উইটেনবার্গের
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৫০২ সালে। কিন্তু শীঘ্রই এটি লুথারের ধর্মমতের সমর্থনের
কেন্দ্রস্থল হিসেবে রূপ লাভ করে।
লুথারের সঙ্গে ক্যাথলিক শক্তির মোকাবিলা
১৫২১ খ্রিস্টাব্দে পোপ দশম লিওর ইচ্ছানুসারে তদানিন্তন হোলি রোমান সম্রাট পঞ্চম চার্লস
ওয়ার্মস নামক স্থানে আলোচনার জন্য লুথারকে আহŸান জানান। লুথার উপস্থিত হয়ে তাঁর
অবস্থানের ওপর নিশ্চল রইলেন। এটা নিশ্চিত মনে হলো শুধু রোমান গির্জাই নয়, রাষ্ট্র ক্ষমতা
দিয়ে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে। এই সময় স্যাক্সনির ইলেক্টর ফ্রেডারিখ, লুথারের শুভানুধ্যায়ী
হিসেবে এগিয়ে আসেন। তিনি লুথারকে অপহরণ করে ওয়ার্টবার্গের দুর্গে লুকিয়ে রাখেন।
সেখানে তিনি এক বছর ছিলেন।
ওয়ার্মসের সভায় লুথারকে একজন বহিষ্কৃত ব্যক্তি বলে ঘোষণা করা হয়, কিন্তু সভার
সিদ্ধান্তসমূহ লুথারের অবর্তমানে কার্যকরী হয়নি। পঞ্চম চার্লসকে জার্মানি ত্যাগ করতে হয়।
কারণ তিনি ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। ১৫২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি যখন ওয়ার্টবার্গ থেকে
উইটেনবার্গে ফিরে আসন তখন দেখেন তাঁর সাথীরা স্বেচ্ছায় সেখানকার গির্জার প্রশাসন
ব্যবস্থা এবং আচার-অনুষ্ঠানে তিনি যেমন পরিবর্তন চেয়েছিলেন সেরকম পরিবর্তন এনে
ফেলেছেন। শীঘ্রই তিনি জার্মান রাজন্যবর্গের সমর্থন লাভ করলেন। এই সব রাজা তাঁর
অনুসারী হয়ে লুথারান মতবাদে দীক্ষিত হন। ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ জার্মানির বিশাল এলাকা
নতুন ধর্মমত গ্রহণ করে।
রাজাদের সমর্থনের কারণ
সাধারণ মানুষ যেমন রোমে অর্থকড়ি পাঠানোকে ভাল চোখে দেখত না, তেমনি রাজারাও
এটাকে বিরক্তির সঙ্গে সহ্য করছিলো। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে জার্মান রাজন্যবর্গ ডায়েট অব
অক্সবার্গের সভায় মিলিত হয়ে ধর্মের নামে যেসব অর্থকড়ি রোমে পাঠিয়ে জার্মানিকে অর্থশূন্য
করা হয়েছে তা ফেরত দেওয়া দাবি জানান। যদিও এ দাবির প্রতি কেউ কর্ণপাত করল না,
তথাপি অনেক রাজা বুঝতে পারল লুথারবাদকে গ্রহণ করে অপছন্দনীয় বিদেশীদেরকে টাকা
পাঠাতে হবে না। এই সময় ইউরোপের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি ছিল রাষ্ট্রকে সর্বক্ষেত্রে
সর্বেসর্বা করা, তা ধর্মীয় বা ধর্মনিরপেক্ষ যে কোনো বিষয় হউক। রাষ্ট্র প্রধানরা তাদের
সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের অংশ হিসেবে গির্জার বিভিন্ন পদে তাদের পছন্দ অনুযায়ী লোক
মনোনয়ন এবং গির্জার বিচারালয়ের স্বাধীন ক্ষমতা খর্ব করতে চাইলেন। লুথারের উৎসাহ
রাজন্যবর্গকে অনুপ্রাণিত করল। তিনি বুঝেছিলেন রাজাদের শক্তি ছাড়া তিনি নতুন ধর্মমত
দাঁড় করাতে পারবেন না। চার্চের সম্পত্তির প্রতি হাত বাড়ানোর আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি
রাজাদেরকে উৎসাহিত করলেন।
কৃষক বিদ্রোহ

লুথার যখন তাঁর মতবাদকে রাজাদের সহযোগিতায় মোটমুটি প্রতিষ্ঠা করেন তখন জার্মানিতে
কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। জার্মানিতে কৃষকরা ছিল নানাভাবে নিগৃহীত ও করভারে জর্জরিত।
যখন লুথার জার্মান রাজাদেরকে গির্জার সম্পত্তি দখল করতে এবং অনৈতিকতার বিরুদ্ধে
জাগরণের আহŸান জানান কৃষকরাও তখন তাদের নিজস্ব পথে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
কিন্তু লুথার কৃষক বিদ্রোহ সমর্থন করেন নি, তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাপারে রক্ষণশীল
মনোভাবের পরিচয় দেন। তিনি বললেন শাসকদেরকে অবশ্যই মানতে হবে, শাসক যদি
খারাপও হয় তবুও তার অবাধ্য হওয়া যাবে না, অত্যাচারকে মোকাবেলা নয় সহ্য করতে
হবে। রাজারা এবং লুথারের অনুসারীরা একত্রিত হয়ে কৃষক বিদ্রোহ দমন করে। এই
বিদ্রোহের পর জার্মানিতে নি¤œশ্রেণীর আর কোনো বিদ্রোহ হয় নি।
অগসবার্গের স্বীকারোক্তি
ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ শেষে চার্লস অগস্বার্গ নগরে লুথারপন্থী ও ক্যাথলিকদের এক সভা আহŸান
করেন। লুথারপন্থীরা অগসবার্গের স্বীকারোক্তি নামে একটি দলিল উত্থাপন করেন। সভা
এটাকে অগ্রাহ্য করে। কিন্তু ঐ দলিল লুথারান ধর্মতত্তে¡র মূল বিষয় হিসেবে পরিগণিত হয়।
চার্লস লুথারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। লুথার সমর্থক জার্মান
রাজারা একত্রিত হয়ে এর মোকাবেলার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৫৪৩ থেকে ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত
জার্মানিতে ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্টান্টদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ১৫৪৬ খ্রিস্টাব্দে
লুথার পরলোক গমন করেন। এর পর দুই দলের মধ্যে ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে একটি শান্তি চুক্তি
স্বাক্ষরিত হয়। এটাকে অগ্সবার্গের সন্ধি বলা হয়। এর শর্ত অনুযায়ী প্রত্যেক জার্মান রাজা
তাঁর জনগণের ধর্ম নির্ধারণ করবে। প্রটেস্টান্টরা ১৫৫২ খ্রিস্টাব্দের পূর্ব পর্যন্ত গির্জার যে
সম্পত্তি দখল করেছিলো তা রাখার অনুমতি পায়। লুথারান ব্যতীত অন্য কোনো প্রোটেস্টান্ট
মতকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।
সারসংক্ষেপ
মার্টিন লুথার প্রচলিত ধর্মের মধ্যে অনাচার এবং কুসংস্কার দেখে প্রতিবাদমুখর হয়েছিলেন।
কিন্তু তিনি ক্যাথলিক ধর্মকে সংস্কার করতে চান নি। লুথারের অনেক সমসাময়িক হিউম্যানিস্ট বা
মানবতাবাদীও ধর্ম সংস্কার চেয়েছেন, কিন্তু কেউ রোমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন নি। মধ্যযুগীয়
খ্রিস্টান তত্ত¡কে ভেঙ্গে দিতে চেয়েছেন লুথার, খ্রিস্টান ধর্মকে শুদ্ধ করতে চাননি। লুথার জার্মানিতে
সাফল্য লাভ করেন, কারণ জনগণ এবং রাজারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে তাঁকে সমর্থন
দিয়েছিলেন।

পাঠোত্তর মূল্যায়ন
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
১। ইনডালজেন্স মানুষ ক্রয় করতো
(ক) পরকালের মুক্তির জন্য (খ) পোপের চোখে ভালো হওয়ার জন্য
(গ) টেটজেলকে সন্তুষ্ট করার জন্য (ঘ) গির্জাও হাসপাতাল নির্মাণে অর্থ সাহায্য করার জন্য
২। মার্টিন লুথারের মতে ধর্মের মূল হচ্ছে
(ক) চার্চে রীতিমতো হাজিরা দেওয়া (খ) সাধু সন্যাসীদের প্রতি ভালবাসা পোষণ
(গ) ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস (ঘ) ভালো কাজ করা।
৩। লুথারের মতে
(ক) যাজকরা ঈশ্বরের প্রতিনিধি (খ) ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী
(গ) ঈশ্বরের দূত (ঘ) আধ্যাত্মিক উপদেষ্টা
৪। জার্মান রাজারা লুথারকে সমর্থন দিলেন। কেননা -
(ক) তাঁরা লুথারকে ভালবাসতেন (খ) তারা লুথারের মতবাদকে সঠিক মনে করতেন
(গ) তাদের সার্বভৌমত্ব গির্জার উপর প্রতিষ্ঠা (ঘ) তাদের ভয় ছিল গির্জার সম্পত্তি তারা হারাবেন
রচনামূলক প্রশ্ন
১। লুথার গির্জার কুসংস্কার থেকেও বেশি ক্যাথলিক ধর্মমতের বিরুদ্ধে ছিলেন- বিশ্লেষণ করুন।
২। জার্মানির জনগণ ও রাজারা লুথারকে কেন সমর্থন করলেন।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর
১। (ক), ২। (গ), ৩। (ঘ), ৪। (গ)।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। লুথার ইনডালজেনসের বিরোধিতা কেন করেছিলেন ?
২। লুথার জার্মানির কৃষক বিদ্রোহকে কেন সমর্থন করেন নি?

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]