প্রতিসংস্কার আন্দোলন কীভাবে চার্চের ক্ষমতা কমিয়ে রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শক্তিশালী রাজবংশের উত্থান কীভাবে সেই সবদেশে উন্নতি


ষোড়শ শতাব্দীতে এক নতুন ধরনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ইউরোপে ক্রমশ প্রভাব বিস্তার করতে
থাকে। সেটি হলো শক্তিশালী বা নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী রাজতন্ত্রের উদ্ভব। এটি এমন এক
সমাজ ব্যবস্থা যা প্রাচীন এবং মধ্যযুগে দেখা যায়নি এবং সপ্তদশ শতাব্দীতে ইউরোপে আধুনিক
জাতীয় রাষ্ট্রের সূচনা করে।
শক্তিশালী রাজতন্ত্র বলতে কী বুঝায় ?
রাজতন্ত্র হচ্ছে এমন এক ধরনের সমাজ ব্যবস্থা যেখানে রাষ্ট্রের সর্বোাচ্চ ক্ষমতা রাজার হাতে
বর্তায়। শক্তিশালী রাজতন্ত্র হলো সেই ব্যবস্থা যেখানে রাজার নিরঙ্কুশ বা শর্তহীন ক্ষমতা
প্রয়োগ করা হয়। তিনি কোনো ব্যক্তি সংগঠন বা গ্রæপ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতেন না বা তার কোনো
কর্মকান্ডের জন্য কারো কাছে তিনি দায়বদ্ধ থাকতেন না। তিনি সম্পূর্ণরূপে তার নিজের
ইচ্ছানুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। রাজা তার পছন্দমত পরিষদ, সভাসদ নিয়োগ
করতেন আবার ইচ্ছেমত সেগুলো ভেঙ্গেও দিতেন।
শক্তিশালী রাজতন্ত্রের ধারণাটি সপ্তদশ শতাব্দীতে সৃষ্টি হলেও প্রাচীন মিশরের ফারাও, জুলিয়াস
সিজার থেকে আধুনিক যুগের সূচনা পর্যন্ত অসংখ্য রাজার আচরণে এর প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া
যায়। তবে সপ্তদশ শতাব্দীতে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের তাত্তি¡ক ব্যাখ্যা গড়ে উঠেছিল। ইংল্যান্ডের
অষ্টম হেনরি এবং ক্রমওয়েল শক্তিশালী রাজতন্ত্রের বলিষ্ঠ উদাহরণ। তবে সকল রাজা
শক্তিশালী হলেও স্বেচ্ছাচারী ছিলেন না। চর্তুদশ লুই থেকে ফরাসি বিপ্লবের শুরু পর্যন্ত সবটুকু
ছিল শক্তিশালী রাজতন্ত্রের কাল।
স্বৈরাচারী বা শক্তিশালী রাজতন্ত্রের আমলে রাজার ক্ষমতা জনগণের সকল স্তরে প্রভাবিত
হয়েছিল। রাজা ছিলেন রাষ্ট্রের সর্বোাচ্চ নির্বাহী, ন্যায়দন্ডের রক্ষক বা প্রকৃত ক্ষমতার উৎস।

রাজা যেমনি রাজনৈতিক জীবনের সবকিছু নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা রাখতেন, তেমনি অর্থনৈতিক
কর্মকান্ড, নতুন শিল্প কারখানা, বাজার সৃষ্টি, কৃষিক্ষেত্রে কৃষকের অধিকার, কতর্ব্য, ভালো বীজ,
সার সংগ্রহ ইত্যাদিও রাজা কর্তৃক নির্ধারিত হতো। আবার কোনো দেশের আইন শৃঙ্খলা,
নিরাপত্তা, মূল্যবোধের রক্ষক হিসেবে আর্বিভ‚ত হতেন কোনো কোনো রাজা। আবার কোনো
দেশের আচার-ব্যবহার, সংস্কৃতি, প্রথা, ঐতিহ্য এবং শিল্প সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক এবং সর্বোচ্চ
বিচারক হতেন রাজা। তিনি হতেন একটি দেশের জাতীয় গৌরব, ঐতিহ্যের ধারক বাহকও।
একটি শিক্ষিত, বুদ্ধিদীপ্ত, আমলাগোষ্ঠী এবং শক্তিশালী সেনা বাহিনী রাজার ক্ষমতা দুর্বল
করতে প্রধান ভ‚মিকা পালন করে। রাজতন্ত্রের উচ্ছেদে ওইসব শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন
করে থাকে।
মধ্যযুগে সামন্ত অর্থনীতি ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় রাজা ছিলেন দুর্বল। অভিজাত বা সম্ভ্রান্ত
ব্যক্তিবর্গ ক্রমশ শক্তিশালী হতে শুরু করে। মধ্যযুগ শেষ হবার পর শক্তিশালী রাজতন্ত্র ও
ভেঙ্গে যায়।
২। ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতায় বিশ্বাসী হওয়া সম্পর্কিত মতবাদ
শক্তিশালী রাজারা তাদের ক্ষমতা ঈশ্বর প্রদত্ত বলে মনে করতেন। রাজা কেবলমাত্র ঈশ্বরের
কাছেই দায়বদ্ধ থাকবে, অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে নয়। ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম
জেমস শক্তিশালী রাজতন্ত্রের সপক্ষে তার ‘দ্যা ল অব ফ্রি মোনার্কস’ (ঞযব খধি ড়ভ ঋৎবব
গড়হধৎপযং) গ্রন্থে যে বৈশিষ্ট্য সমূহের কথা বলেন তা হলো :
ক) রাজা প্রত্যক্ষভাবে ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্ষমতা লাভ করেন;
খ) জনগণের কাছে রাজার কোনো বৈধ বা আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই;
গ) আইন স্বয়ং রাজা কর্তৃক সৃষ্ট। এই কারণে বিধিসম্মতভাবে কর্তৃত্ব বা প্রভুত্ব করার অধিকার
রাজার আছে। আইন বা অনুশাসন কখনই রাজার উর্ধ্বে নয়;
ঘ) রাজা তার প্রজাদের উপর নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী অর্থাৎ জনগণের ইহলৌকিক বা
পারলৌকিক সকল জীবনের ক্ষেত্রেই রাজার অধিকার স্বীকৃত;
ঙ) প্রজারা রাজার সর্বময় ক্ষমতা বা সকল আদেশ নির্দেশ মেনে নিতে বাধ্য থাকবে। এমনকি
রাজা যদি কোনো ভুলও করেন তবুও তার বিরুদ্ধে কোনো রকম বিদ্রোহ সংগঠিত করতে
পারবে না। কারণ রাজা এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের ‘প্রতিমূর্তি’ বা প্রাণসঞ্চারকারী দেবতা।
৩। শক্তিশালী রাজতন্ত্রের পক্ষে ইউরোপের লেখক এবং বুদ্ধিজীবী মহলের সমর্থন
স্বৈরাচারী এবং শক্তিশালী রাজারা কীভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারসহ প্রজাদের পরিচালিত
করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন জার্মানির ব্যাডেন প্রদেশের রাজা মারগ্রেইভ
কার্ল ফ্রেডারিখ। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বাধ্য করবো তারা পছন্দ করুক বা না করুক
মুক্ত প্রাচুর্য্যপূর্ণ এবং সুন্দর নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার ক্ষেত্রে’ সপ্তদশ শতাব্দীর ধর্মযুদ্ধ
ইউরোপকে বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত করেছিল। জনগণ সেই সময়ের শক্তিশালী রাজতন্ত্রে অধিষ্ঠিত
কোনো কোনো ইউরোপীয় দেশের স্থায়িত্ব এবং প্রাচুর্য্য দেখে মুগ্ধ হয়। এই সময় শক্তিশালী
রাজতন্ত্রের পক্ষে বিভিন্ন তাত্তি¡ক ব্যাখ্যা বাস্তব প্রয়োগের ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে।
ডিনবন্দিনের মত দার্শনিক ছাড়াও জ্যাকুইস বসওয়েট তার গ্রন্থে রাজতন্ত্রের সপক্ষে বলেন -

‘শক্তিশালী রাজতন্ত্র স্বেচ্ছাচারী রাজার মত নয় তিনি মনে করেন ঈশ্বরের মধ্যে সমস্তগুণ
বিদ্যমান, তার সমস্ত গুণই রাজা বা সরকার প্রধানের মধ্যেও বিদ্যমান বা বর্তমান থাকে। রাজা
একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া অন্য কারো কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন না। তিনি হবেন দেশের সম্মানের
প্রতীক।’ এভাবে বসওয়েট শক্তিশালী রাজতন্ত্রের পক্ষে যুক্তি দেখান।
ইংরেজ দার্শনিক টমাস হবস তার বিখ্যাত লেডিয়ানথ এ শক্তিশালী রাজতন্ত্রের সপক্ষে সুনির্দিষ্ট
ব্যাখ্যা দেন। সপ্তদশ শতকে ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধ (১৬৪২ - ১৬৪৯) এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে
বিশৃঙ্খলা, অনৈক্য স্টুয়ার্ট রাজা চালর্সের প্রাণদন্ড ইত্যাদি ঘটনায় শক্তিশালী ক্ষমতার অধিকারী
রাজতন্ত্রই ইংল্যান্ডের রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতির একমাত্র সমাধান বলে তিনি মনে করেন।
হবসের মতানুযায়ী প্রাচীনকালে সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে রাজা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী
হিসেবে আর্বিভ‚ত হয়েছিলেন। মানুষ সকল অধিকার এমনকি বিদ্রোহ করার অধিকারও রাজার
হাতে সমর্পন করেছিল। রাজার ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করার অধিকার তাদের ছিল না।
মানুষ বিশ্বাস করে যে রাজা বা সম্রাটের বিরুদ্ধে যে কোনো বিদ্রোহ আবার আরজকতার শাসন
ফিরিয়ে আনবে।
হবসের এই সমাজিক চুক্তি মতবাদের ধারণা শক্তিশালী রাজতন্ত্রের প্রধান ভিত্তিমূল হিসেবে
কাজ করে, পরবর্তীকালে অলিভার ক্রমওয়েল এবং ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় চালর্স তা মেনে
নিয়েছিলেন।
৪। ক্রুসেডের প্রভাব
ইউরোপে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানের পিছনে ক্রুসেড অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত
হয়ে থাকে। ক্রুসেডের সময়ই খ্রিস্টান এবং মুসলমানরা বাইজানটাইন সভ্যতার সংস্পর্শে
আসে। ক্রুসেডের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি মধ্যবিত্ত স¤প্রদায়কে প্রভাবিত করেছিল।
এছাড়া ক্রুসেড সামন্তরাজা এবং যাজক স¤প্রদায়ের মনোযোগ অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে
সরিয়ে বৈদেশিক নীতির দিকে ধাবিত করে। রাজারা সামন্তবাদ এবং চার্চ এর প্রভাব থেকে
মুক্ত হতে শুরু করে। এ ছাড়াও মধ্যযুগে অত্যন্ত প্রভাবশালী সামস্ত প্রভুরা ক্রসেডের ফলে
ক্ষমতা হারাতে শুরু করে। এদের মধ্যে অনেকেই ক্রুসেডের সময় মৃত্যুবরণ করে, কেউ দূর
শহর বা প্রাচ্যে চলে যান এবং অনেকেই প্রাচ্যে চলে যান, অনেকে বাধ্য হয়ে রাজার আনুগত্য
মেনে নেয়। এভাবে ষোড়শ শতাব্দীর শেষার্ধে সামন্তবাদের পতন ত্বরান্বিত হলে অভিজাত
শ্রেণীও শক্তিশালী রাজতন্ত্রকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করে। চার্চ মধ্যযুগে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের
বিরুদ্ধে ছিল। তবে তারা রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধবাদিতা কমিয়ে শুধু এর প্রতি সহিষ্ণুই হয়ে উঠে
নাই বরং এর অন্যতম সমর্থনকারী হিসেবে আবির্ভূত হতে থাকে। ইউরোপের দেশে দেশে
গৃহযুদ্ধ, যুদ্ধ বিগ্রহ, নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সামন্তবাদের নিশ্চিহ্নকরণের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত
করে। এভাবে রাজতন্ত্র সামন্তবাদের বিরোধিতার সঙ্গে সঙ্গে প্রভাশালী চার্চের বিরুদ্ধেও
অবস্থান নেয়, সামন্তপ্রভুদের মতো পোপ, বিশপ, সন্ন্যাসীরাও কোণঠাঁসা হয়ে পড়ে। তবে এর
সঙ্গে রাজনৈতিক দ্ব›দ্ব, অভ্যন্তরীণ কলহ শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করে।
৫। শক্তিশালী রাজতন্ত্র উত্থানের রাজনৈতিক কারণ

আধুনিক যুগের সূচনার প্রারম্ভে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানের পিছনে রাজনৈতিক কারণও
গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। সামন্তযুগে দুর্বল রাজতন্ত্রের কারণে মানুষ নানা রকম বিশৃঙ্খলা এবং
অন্যায় অরাজকতার ফল ভোগ করে। এ সময় সামন্ত প্রভুরা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী এবং সব
বিষয়ে স্বেচ্ছাচারী রাজাকে চালিত করতো। দেশের অধিকাংশ মানুষ সেই সময় একটি
শক্তিশালী এবং স্থায়ী রাজতন্ত্র আশা করেছিল যা তাদেরকে শান্তিও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে।
মার্কেন্টাইলবাদ যেমন অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব আনয়ন করে তেমনি শক্তিশালী রাজতন্ত্র সামাজিক
ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা আনয়ন করবে বলে বিশ্বাস করা হয়।
মধ্যযুগে রাজকীয় সেনাবাহিনী মূলত গঠিত হয়েছিল সামন্ত শ্রেণী বা সামন্ত ভ‚স্বামী প্রভুদের
অধীনে। এরা বর্শা, তলোয়ার, তীর, ধনুক দিয়ে যুদ্ধ করতো। তবে গানপাউডার, যুদ্ধাস্ত্র,
বন্দুকের ব্যবহার রাজাকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে সহজেই বিজয়ী করতে সাহায্য করে। রাজারা
সামন্তপ্রভুদের বিদ্রোহ দমানো, কোনো জনগোষ্ঠীর উত্থান, বিদেশী শক্তির সঙ্গে যুদ্ধে আধুনিক
যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করতো। সুতরাং শক্তিশালী রাজতন্ত্রের প্রভাব তখন থেকে শুরু হতে থাকে।
ইউরোপের সকল দেশে অভিজাত শ্রেণীর ক্ষমতা কমতে থাকে। সরকার কেন্দ্রীভ‚ত হয়ে উঠে
এবং রাজার অধীনে চার্চ চলে আসে। এভাবে শক্তিশালী রাজার নেতৃত্বে সামন্তবাদকে উচ্ছেদ
করে চার্চকে রাষ্ট্রের অধীনে নিয়ে এসে নতুন রাজনৈতিক পথের সূচনা করে। এ ছাড়াও
ইউরোপের দেশে দেশে যুদ্ধ, ফ্রান্সের ধর্মযুদ্ধ, জার্মানির ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধ, ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধ
সব কিছুই দুরূহ পরিবেশ সৃষ্টি করে। নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার উদ্ভবের ফলে বিকল্প হিসেবে
দেশের ভিতরে এবং বাইরে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।
অনেকে রাজার ক্ষমতাকে রাষ্ট্রের প্রধান বা পবিত্র সত্তা হিসেবে মান্য করতো। যুদ্ধ ও শান্তির
প্রতীক হিসেবে দেখার চেষ্টা করতো। এরা আধুনিক জাতীয়তাবাদী চেতনার উদ্ভবকে স্বাগত
জানায়।
৬। রেনেসাঁস এবং রোমান আইনের পুনরুজ্জীবনের প্রভাব
রেনেসাঁস শক্তিশালী রাজতন্ত্রকে সমর্থন করেছিল। রেনেসাঁস প্রাচীন গ্রিসের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা
পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হলেও রেনেসাঁস যুগের লেখকরা শক্তিশালী রাজতন্ত্রকে পূর্ণ সমর্থন দেয়।
রেনেসাঁস যুগের রোমান আইনের পুনরুজ্জীবন শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানের ক্ষেত্রে একটি
অন্যতম বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়। প্রাচীন রোমান আইন বিশেষত বাইজানটাইন আইন
অনুযায়ী রাজা শুধু আইন প্রণয়নের ক্ষমতাই রাখেন না বরং সে আইন পরির্বতন- এমনকি ভঙ্গ
করতেও পারেন না। রাজার ইচ্ছাই আইন এই নীতি অনুসরণে তিনি কোনো ভুল করতে
পারেন না। এটি মধ্যযুগের সামন্তবাদী চিন্তাচেতনার বিরুদ্ধে ছিল না। আধুনিক যুগের প্রারম্ভে
বিশেষত রেনেসাঁসের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে রোমান আইনের ব্যাপক পঠনপাঠন শক্তিশালী রাজার
উত্থানকে সমর্থন এবং জনপ্রিয় করতে থাকে।
৭। ম্যাকিয়াভেলির দর্শন
নিকালো ম্যাকিয়াভেলি (১৪৬৯-১৫২৭ খ্রি:) ইতালির অধিবাসী ছিলেন। তিনি ছিলেন বিখ্যাত
‘প্রিন্স’ গ্রন্থের লেখক। এই গ্রন্থে তিনি শক্তিশালী রাজতন্ত্রের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন।
ম্যাকিয়াভেলি তার গ্রন্থে সূক্ষ বিশ্লেষণের মাধ্যমে কীভাবে শক্তিশালী রাজতন্ত্র এবং স্বৈরাচারী

রাজা দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যান তা উপস্থাপন করেন। ইতালি ছিল শতবিভক্ত
একটি দেশ। যেহেতু সেখানে এমন কোনো শক্তিশালি রাজা ছিলেন না যিনি ইতালির বিভক্ত
অংশগুলিকে একত্রিত করে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারেন। এর ফলে
ইতালিবাসীকে অসীম দু:খকষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। ম্যাকিয়াভেলি রাজার ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা এবং
রক্ষার জন্য রাজার যে কোনো ধরনের চতুরতা, ধূর্ততা, নিষ্ঠুরতা, অর্থনৈতিক ক‚টপন্থা
অবলম্বনকে সমর্থন করেন।
চার্চ ম্যাকিয়াভেলির বইকে সমর্থন করেনি। বরং, এটিকে কঠোরভাবে সমালোচনা করে। তবে
তা সত্তে¡ও বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ইউরোপের প্রায় সকল রাজাই ‘প্রিন্স’ গ্রন্থের
এক কপি সযত্বে তাদের কাছে রাখতেন। এটি ছিল তাদের কাছে অনেকটা বাইবেলের মতো।
চার্চ এবং পোপের সমালোচনার পরও ‘প্রিন্স’ জনগণের শতাব্দীর উচ্চাকাংক্ষী রাজারা এর
আদর্শকে ধারণ করতে থাকে।
৮। স্বদেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের দ্রæত বিস্তার
জাতীয়াবাদ এবং স্বদেশ প্রেমের চেতনা শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানের ক্ষেত্রে একটি বড়
ভ‚মিকা পালন করে। দেশপ্রেমিক জনতা শক্তিশালী রাজাকে তাদের দেশের ঐক্য এবং সমৃদ্ধির
জীবন্ত প্রতীক হিসেবে মনে করতো। রাজা দেশের স্বাধীনতা এবং শক্তির প্রতীক হিসেবে
বিবেচিত হতে থাকেন। এই সময় রাজা এবং সম্রাট কথাটি সমার্থক হয়ে উঠতে থাকে। রাষ্ট্রের
সকল বিষয- যেমন আইন, ন্যায়, অন্যায়, খাজনা আদায়, ব্যবসা-বাণিজ্য, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ,
যুদ্ধ ঘাষণা, শান্তি ইত্যাদি সকল কিছু রাজার নিয়ন্ত্রনে থাকবে বলে বিবেচিত হতে থাকে।
রাজতন্ত্রের মাধ্যমে জাতীয় সাহিত্য রচিত হয়। ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথ ব্যাপক
উন্নতি, স্থায়ী সুশাসন, শক্তিশালী বৈদেশিক নীতি দ্বারা ইংল্যান্ডকে মর্যাদার উচ্চাসনে
বসিয়েছিলেন।
৯। বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন এবং ভৌগোলিক আবিষ্কারের প্রভাব
রেনেসাঁস-পরবর্তী ভৌগোলিক আবিষ্কার এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের উদ্ভাবন শক্তিশালী
রাজতন্ত্র গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। গান পাউডারের আবিষ্কার এবং তার সঙ্গে
যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার রাজার ক্ষমতাকে সংহত করে। এই গান পাউডার তথা যুদ্ধাস্ত্রের মাধ্যমে
রাজারা সামন্তপ্রভুদের দুর্গেই শুধু আঘাত হানতে সক্ষম হননি তার সঙ্গে সামন্ত প্রভুদেরও
তাদের পদানত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
১০। অর্থনৈতিক প্রভাব
নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তথা শক্তিশালী রাজতন্ত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা গ্রহণ করে।
মধ্যযুগের শেষার্ধে বহুসংখ্যক শহর এবং নগর গড়ে উঠে। কারখানার মালিক এবং ব্যবসায়ীরা
তাদের জীবনের নিরাপত্তা আশা করেছিল। তারা জানত তাদের জীবনের শান্তি, শৃঙ্খলা এবং
নিরাপত্তা বিধান শুধু দায়িত্বশীল সরকারের মাধ্যমেই সম্ভব। শুল্কনীতি, শিল্পকারখানা
নিয়ন্ত্রণনীতি, বাণিজ্য যুদ্ধ, খাজনা আদায়, দেশের প্রচলিত মুদ্রা সংস্করণ এবং আধুনিক
অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরির সকল নীতি কেবলমাত্র কোনো শক্তিশালী কেন্দ্রীভ‚ত সরকারের
মাধ্যমেই প্রয়োগ সম্ভব বলে মনে করা হয়। এই সময় সরকার উৎপাদন এবং রপ্তানি ক্ষেত্রে

নতুন নীতি গ্রহণ করে। যেমন ইংরেজ সরকার ১৬৬০ সালে নৌ-বাণিজ্য আইন প্রণয়ন করে।
নতুন কর বা খাজনার জন্য মধ্যবিত্ত বা কৃষক স¤প্রদায়কে আরো অধিকতর উৎপাদনের জন্য
উৎসাহী করতে শুরু করে।
এ ছাড়াও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দ্রæত প্রসার এবং উন্নতি ষোড়শ শতাব্দীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পালা
বদল শুরু হয়। এরা সমান্ত প্রভুদের ক্ষমতাকে ভেঙ্গে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানকে
বিপুলভাবে সমর্থন করে মূলত রাজাকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলে মনে করে। রাজা রাষ্ট্রের
সর্বোাচ্চ নির্বাহী ছিলেন। ভৌগোলিক আবিষ্কারের পর বিশ্বব্যাপী বিভিন্নদেশ থেকে লুটতরাজ
করে প্রচুর অর্থসম্পদ নিয়ে আসে, দেশের সমুদয় অর্থ ব্যয়িত হয় রাজতন্ত্রকে শক্তিশালী করার
জন্য। মধ্যযুগে সেনাবাহিনী সাধারণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করলেও বন্দুকের ব্যবহার
রাজাকে স্থায়ী সেনাবাহিনী রাখতে সাহায্য করে। বিদেশী শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করতে মধ্যবিত্ত
শ্রেণী রাজার বড় সমর্থনকারী হিসেবে আবিভর্‚ত হয়। রাজারা এর পর আর নামে মাত্র সম্রাট
ছিলেন না, বরং তারা জাতীয় রাজনীতি তথা সমাজ জীবনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেন, প্রকৃত
শাসন ক্ষমতার অধিকারী হতে শুরু করেন।
১১। ধর্মসংস্কার আন্দোলন
ধর্মসংস্কার আন্দোলন রোমান ক্যাথলিক চার্চের মধ্যে বিভক্তি আনয়ন করে এবং এই বিভক্তি
শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। সমগ্র ইউরোপীয় দেশসমূহ নিজস্ব চার্চ
প্রতিষ্ঠা করে যা অখন্ড পবিত্র রোমান চার্চের ধারণাকে বাতিল করে দেয়। এমনকি যেসব দেশ
রোমান ক্যাথলিক ধর্মে বিশ্বাসী ছিল সেখানে ক্যাথলিক চার্চ ছিল দুর্বল। যেখানে প্রোটেস্টান্ট
মতবাদ গড়ে উঠে সেখানেই রাজতন্ত্র শক্তিশালী হয়। চার্চের অফিসার বা বিশপ শক্তিশালী
রাজা বা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হতো, চাকুরীর পদোন্নতি ও বেতন সরকারি নিয়মে প্রদান
করা হতো। বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশে প্রোটেস্টান্ট রাজা চার্চের সম্পত্তি এবং মঠের জমি
বাজেয়াপ্ত করে তাদের ক্ষমতা শক্তিশালী করে গড়ে তোলেন। নতুন বিকশিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী
নিলামের মাধ্যমে চার্চের জমি কিনে নেয়। এই উত্থিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে যারা শান্তি,
আইন-শৃঙ্খলা চেয়েছিল, তারা রাজাদের সবর্তোভাবে সাহায্য করতে এগিয়ে নিয়ে আসে এবং
পোপের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ করে।
১২। ইউরোপে শক্তিশালী রাজবংশের উদ্ভব
ইউরোপের বুকে কিছু কিছু শক্তিশালী রাজবংশের উত্থান ঘটে, যেমন - স্টুয়াটর্, টিউডর, বুরবোঁ,
হ্যাপসবার্গ ইত্যাদি। এই সব রাজবংশ দেশে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে নিয়মশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা,
অর্থনৈতিক ও জাগতিক উন্নতির ক্ষেত্রে জাতীয় সম্মান ও গৌরবকে সমুন্নত করতে চেষ্টা করে।
মধ্যযুগে ইংল্যান্ড গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত এবং দুর্বল হয়ে উঠে। রানী এলিজাবেথের অসামান্য
দূরদৃষ্টির কারণে ইংল্যান্ড হয়ে উঠে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র। ফ্রান্সও বুরবোঁ আমলে বেশিরভাগ
মানুষ এটি অনুধাবন করে যে শক্তিশালী রাজতন্ত্রই ঈশ্বর কর্তৃক সৃষ্ট একমাত্র সঠিক রাষ্ট্রীয়
ব্যবস্থা। ফ্রান্সে শক্তিশালী রাজতন্ত্র গড়ে তোলেন চতুদর্শ লুই। চতুদর্শ লুই ঐশ্বরিক ক্ষমতার
প্রতিভ‚ ছিলেন । ফরাসি সৈন্য বাহিনী, ক‚টনীতি, শিল্প-সংস্কৃতি, দর্শন ছিল ইউরোপের মধ্যে
সর্বশ্রেষ্ঠ। ফ্লোরেন্স যেমন ছিল ইতালির কেন্দ্রবিন্দু তেমনি প্যারিসও সপ্তদশ শতাব্দিতে সংস্কৃতি,
রাজনীতি এবং ক‚টনীতির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠে। ফ্রান্স ছাড়াও অস্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ,

জার্মানির হোহেনজোলার্ন এবং রাশিয়ার রোমানভ বংশ নিজ নিজ দেশের সম্মান, মর্যাদা এবং
শক্তির প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সুতরাং শক্তিশালী রাজতন্ত্র যে সর্বোত্তম ব্যবস্থা এটিই
ইউরোপ দ্রæত গ্রহণ করতে শুরু করে।

সারসংক্ষেপ
মধ্যযুগের শেষ পর্যায়ে সামন্তবাদের পতন আরো একটি নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার উত্থানকে নির্দেশ করে।
ক্রুসেড-পরবর্তী সামন্ত প্রভুদের পতন, চার্চের প্রভাব হ্রাস নব্য-উত্থিত মধ্যশ্রেণীর নয়া অর্থনৈতিক
ব্যবস্থার প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। এরাই তাদের নিজস্ব সুযোগ-সুবিধা টিকিয়ে রাখার
জন্য শক্তিশালী রাজতন্ত্রের সবচাইতে বড় সমর্থনকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়, একে টিকিয়ে রাখতে
সর্বশক্তি নিয়োগ করে। এভাবে মধ্যযুগের গৃহযুদ্ধ, সংঘাত, বিশৃঙ্খলার নিরিখে জনগণের দাবি অনুযায়ী
ইউরোপের দেশে দেশে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উদ্ভব হতে থাকে। পরবর্তীকালে শক্তিশালী রাজাদের
উত্থানে এটিই প্রমাণিত হয় যে সামন্ততন্ত্রে বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নয় বরং শক্তিশালী রাজতন্ত্রই রাষ্ট্রের
গৌরব এবং শান্তি শৃঙ্খলা আনয়নে সম্ভব। এভাবে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উদ্ভবের ফলে ইউরোপের
বিভিন্ন দেশে জাতীয় চেতনার উদ্ভব ঘটতে থাকে। শক্তিশালী রাজা জাতীয় চেতনা, জাতীয় গৌরব
এবং সম্মানের সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে যায়।

পাঠত্তোর মূল্যায়ন
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পার্শ্বে টিক () চিহ্ন দিন।
১। রাজতন্ত্রে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কার উপর বর্তায়?
ক) প্রজার হাতে খ) সামন্তদের হাতে
গ) রাজার হাতে ঘ) সেনা বাহিনীর হাতে
২। ইংল্যান্ডের কোন রাজা তার গ্রন্থে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলির কথা উল্লেখ করেন?
ক) প্রথম স্টুয়ার্ড খ) দ্বিতীয় জর্জ
গ) ক্রমওয়েল ঘ) প্রথম জেমস
৩। থমাস হবসের বিখ্যাত গ্রন্থের নাম কি?
ক) লেডিয়ানথ খ) দ্যা গ্যাদারিং স্ট্রম
গ) সোশাল কন্ট্রাক্ট ঘ) ইউটোপিয়া
৪। ক্রুসেড কাদের পতনকে ত্বরান্বিত করে?
ক) সামন্ত প্রভুদের খ) শক্তিশালী রাজাদের
গ) কৃষক শ্রেণীর ঘ) যাজক স¤প্রদায়ের
৫। কোন আইনের পুনরুজ্জীবনের ফলে শক্তিশালী রাজাদের উত্থানের পথ সহজ হয়েছিল?
ক) রাইজেনটাইন আইন খ) রোমান আইন
গ) মিশরীয় আইন ঘ) পারস্য আইন
৬। ‘দ্যা প্রিন্স’ গ্রন্থের লেখক কে?
ক) ভলতেয়ার খ) রুশো
গ) ম্যাকিয়াভেলি ঘ) ডিনবদিন
৭। ইংরেজ সরকার কত সালে নৌবাণিজ্য আইন প্রণয়ন করে?
ক) ১৬৬০ সালে খ) ১৬৬২ সালে
গ) ১৬৬৪ সালে ঘ) ১৬৬৮ সালে
৮। কোনো রাজবংশের সময় ইংল্যান্ড সকল ক্ষেত্রে উন্নতির স্বর্ণ শিখরে আহরণ করে?
ক) স্টুয়ার্ট খ) বুরবোঁ
গ) হোহেনজোর্লান ঘ) রোমানোভ
উত্তরমালা : ১। গ, ২। ঘ, ৩। ক, ৪। ক, ৫। খ, ৬। গ, ৭। ক, ৮। ক।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। প্রথম জেমসের বর্ণিত শক্তিশালী রাজতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করুন।
২। রোমান আইনের পুনরুজ্জীবন কীভাবে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উত্থানের পথকে সাহায্য
করেছিল সেই সম্পর্কে লিখুন।
৩। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শক্তিশালী রাজবংশের উত্থান কীভাবে সেই সবদেশে উন্নতি,
রচনামূলক প্রশ্ন
১। শক্তিশালী রাজতন্ত্রের সপক্ষে ইউরোপের লেখক বুদ্ধিজীবী মহল যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেই
সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখুন।
২। মধ্যযুগের শেষার্ধে নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উদ্ভবে কীভাবে সাহায্য
করেছিল তা সংক্ষেপে আলোচনা করুন।
৪। প্রতিসংস্কার আন্দোলন কীভাবে চার্চের ক্ষমতা কমিয়ে রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তা
সংক্ষেপে বিশ্লেষণ করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]