ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধির মূল শর্ত গুলি আলোচনা করুন।
ইউরোপে তথা জার্মানির উপর ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধের ফলাফল বিশ্লেষণ করুন।


ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধির পটভ‚মি
ইউরোপের ইতিহাসে ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধি এক যুগান্তকারী ঘটনা। ইউরোপের প্রথম শান্তি
সম্মেলন ছিল এটি। ধর্মীয় যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধি এক নতুন যুগের
সূচনা করে এবং আধুনিক ইউরোপের ইতিহাসে এক নতুন গতিধারা ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সূচনা
করে।
১৬৪১ সালে তৃতীয় ফার্ডিনান্ড (১৬৩৭ সালে যিনি অস্ট্রিয়ার রাজা হিসাবে অধিষ্ঠিত হন) শান্তি
প্রক্রিয়া শুরু করেন। তবে ১৬৪৬ সালে কার্ডিনাল রিশল্যুর মৃত্যুর পর এবং ১৬৪৬ সালে ফ্রান্স
কর্তৃক ব্যাভারিয়া হস্তগত হবার পর প্রকৃত পক্ষে শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সুইডেনের রানী
ক্রিস্টিনাও তার প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন। ফ্রান্সের কার্ডিনাল
ম্যাডরয়িনও এমন ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। তবে বিভিন্ন জটিল ইস্যু থাকার কারণে এবং বিভিন্ন
কার্যপ্রণালীতে বিবাদ বিসংবাদ ও মতদ্বৈততার জন্য দীর্ঘ সময়ব্যাপী আলাপ আলোচনার
মাধ্যমে শান্তি প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এই আলোচনার সময় যেহেতু যুদ্ধ বিরতির নির্দেশ ছিলো
না। তাই ধ্বংস ও মৃত্যু তখনো চলতে থাকে। তবে অবশেষে সকল দেশের প্রতিনিধিরা ১৬৪৮
সালে ওয়েস্টফেলিয়াতে মিলিত হয়ে দুটি ভিন্ন শান্তিচুক্তি পাস করে, একটি মুনস্টারে
হ্যাপসবাস এবং ফ্রান্স এর মধ্যে এবং অপরটি ওসনা ব্রæকের এই দুই সন্ধিদ্বয়কে একত্রে
সন্নিবিষ্ট করে ওয়েস্টফেলিয়া শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় (২৪শে অক্টোবর ১৬৪৮)। এই চুক্তির
ফলে দীর্ঘ ত্রিশবছরব্যাপী ধর্মজনিত কারণের ফলে সৃষ্ট যুদ্ধের অবসান ঘটে।
ওয়েস্টফেলিয়া শান্তি চুক্তি ইউরোপের শান্তির স্বপক্ষে প্রথম এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ গৃহীত
রাষ্ট্রীয় উন্মদনা, দ্ব›দ্ব পদক্ষেপ। এটি ধর্মীয় বন্ধ করে। এটি পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক অবস্থা
পুনর্গঠন করে এবং আঞ্চলিক আগ্রাসনের লক্ষ্যে বংশগত রাজশক্তির প্রভাব, অথনৈতিক
প্রতিযোগিতাকে ত্বরান্বিত করে। ইউরোপের আঞ্চলিক সীমানাসমূহ পুন:র্গঠন করার লক্ষ্যে এই
চুক্তির পর সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এছাড়াও এটি ইউরোপকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে
আসতে সক্ষম হয়। এই সন্ধির ভ‚-খন্ডগত সীমানা নেপোলিয়নের যুগ পর্যন্ত বহাল থাকে।

২। ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির শর্তসমূহ
১। ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির মাধ্যমে সবচাইতে বড় পরিবর্তন হয় জার্মানিতে। পবিত্র রোমান
সাম্রাজ্যের যে একক ভৌগলিক অস্তিত্ব বা সত্ত¡া ছিলো তা ভেঙ্গে যায় এবং জার্মানির প্রতিটি
রাষ্ট্রকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এর ফলে জামার্ন রাষ্ট্রগুলি সার্বভৌম ক্ষমতার
অধিকার প্রাপ্ত হয়। পবিত্র রোমান সম্রাট শুধু নামমাত্রই টিকেছিলেন। হ্যাপসবার্গদের ক্ষমতা
নিজস্ব বংশগত বা রক্তসম্পর্কীয় জ্ঞাতিসূত্রে অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে এবং এর
নীতিসমূহ অস্ট্রিয়া কেন্দ্রিক হতে থাকে।
২। ফ্রান্স এবং সুইডেন পবিত্র রোমান অঞ্চলে নতুন ভ‚মিকা লাভ করায় জার্মানির ব্যবস্থাপক
সভায় ভোট দেবার অধিকার প্রাপ্ত হয়।
৩। ইউরোপের দুটি দেশ হল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। বিজয়ী
শক্তির দীর্ঘ বিতর্কের পর ইউরোপের বহু রাজ বংশ। এই যুদ্ধে তাদের দাবিকৃত ভ‚মি অর্জন
করতে সক্ষম হয়েছিল, এই যুদ্ধে অংশগ্রহণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে।
৪। এই চুক্তির শর্ত অনুসারে মারফত ফ্রান্সের অর্জন ছিলো সবচাইতে বেশি। ফ্রান্স মেৎজ, টুল
ও ভার্দুন নামক তিনটি ধর্মানিষ্ঠান লাভ করে। তা ছাড়া ব্রাইসাক, ময়েনভিক এবং পিনেরোলা
নামক তিনটি দুর্গ, ফিলিপবার্গ নামক স্থানে সেনানিবাস স্থাপনের অধিকার এবং অ্যালস্যাস
নামক স্থানের অধিকাংশ দখল পায় আলসেশিয়ার দশটি শহরের উপর ফ্রান্সের সার্বভৌমত্ব
স্বীকার করা হয়।
৫। সুইডেনকে পশ্চিম পোমারনিয়া এবং উত্তর সাগরের প্রতিবেশি অঞ্চল যেমন ব্রিমেন, ভার্দেন
ইত্যাদি স্থান দেয়া হয়।
৬। ব্রান্ডেনবার্গ কেমিন, ম্যাগডেবার্গ, বাবস্ট্যাডেট এবং পূর্ব পোমারনিয়া লাভ করে। পশ্চিম
পোমারনিয়া না পাওয়ার জন্য ব্রান্ডেবার্গকে ক্ষতি পূরণ দেয়া হয়।
৭। প্যালাটিনেটের সমস্যা সমাধানের ব্যাভারিয়া এবং প্যালাটিনেটকে দুইভাগে বিভক্ত করা
হয়। দুই অংশ ব্যাভারিয়ার ম্যাক্সিমিলান এবং ফ্রেডারিকের ক্ষমতাচ‚ত পুত্র চালর্স লুইসের কাছে
হস্তান্তর করা হয়। ব্যাভারিয়া এবং প্যালাটিনেট শাসকদ্বয়কে ইলেকটর উপাধি দেয়া হয়েছিল।
৮। বোহেমিয়ার সিংহাসনে পবিত্র রোমান সম্রাটের অধিকার স্বীকৃত হয়। অস্ট্রিয়ার উত্তরাংশ
ব্যাভারিয়ার কাছে বন্ধক ছিলো অস্ট্রিয়া তা ফিরে পায়। ডিউক তার নিজ রাজ্যের উপর
ইচ্ছাামত ধর্মব্যবস্থা প্রবর্তনের অধিকার লাভ করেন।
৯। স্যাক্সনি লুসেনিয়া এবং ম্যাগডেবার্গের একাংশ লাভ করলো।
এছাড়াও যে সকল অঞ্চল বা দেশ সম্রাটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করেছিলো তাদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা
ঘোষণা করা হয়। ধর্মের ক্ষেত্রে ক্যালভিনপন্থীগণ লুথারপন্থীদের সমপর্যায়ে স্থাপিত হয়।

লুথারপন্থীরা যেসকল সুযোগসুবিধা ভোগ করে আসছিল তো ক্যালভিনপন্থীরা ভোগ করবেন
বলে স্বীকৃত হয়।
১০। এই চুক্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে কোনো বিশপের অঞ্চল বা সিজারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত
করা যাবে না। ১৬২৪ খ্রি:-১ জানুয়ারি তারিখে প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিকদের যেসব স্থানের
অধিকার ছিলো সেই সব স্থান তারা ফিরে পাবে বলে স্থির হয়।
১১। পবিত্র রোমান সম্রাটের বিচারলয়ে সমান সংখ্যাক ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যাল্ট প্রতিনিধি
বসার অনুমতি দেয়া হয়।
১২। কোন অঞ্চলের রাজা তার তাদের নিজ দেশের প্রজাদের ধর্ম নির্ধারণ করতে পারবেন।
‘রাজার ধর্মই প্রজার ধর্ম’ এই নীতি অনুসরণ করা হলো। তবে বাস্তবিক অর্থে সমগ্র সাম্রাজ্যে
ধর্মীয় সহিঞ্চুতার নীতি প্রচারিত হতে থাকে।
ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধির ফলাফল
ওয়েস্টফেলিয়া শান্তিচুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ শান্তিচুক্তি। ইউরোপের ধর্মসংস্কার আন্দোলন প্রসুত
ইতিহাসে সবচাইতে বীভৎস ধর্মদ্ব›েদ্বর পরিসমাপ্তি ঘটায় ওয়েস্টফেলিয়ার সন্ধি। ইউরোপে
আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করে। এই সন্ধি এক দিকে ধ্বংসন্মুখ
পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের পতন স্বীকার করে নেয়, অপর দিকে ইউরোপে আধুনিক রাষ্ট্র
ব্যবস্থার গোড়া পত্তন করে। যদিও ধর্মীয় ইস্যুতে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তথাপিও প্রোটেস্টান্ট এবং
ক্যাথলিকদের মধ্যে দ্ব›দ্ব দ্রæত অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দ্ব›েদ্ব স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তী
সময়ে হ্যাপসবার্গ এবং বুরবোঁ রাজবংশের প্রধান দ্ব›েদ্ব বা আধিপত্য বিস্তারের যুদ্ধে রুপান্তরিত
হয়। এই শান্তিচুক্তি সকল চুক্তির বৈশিষ্ট্য বহন করায় পরবর্তীকালের আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে
ধারণ করতে সক্ষম হয়। এটি ইউরোপের জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন
করে।
১৫৫৫ সালের আর্গসবার্গের সন্ধি ‘রাজার ধর্মই প্রজার ধর্ম’ এই নীতি ওয়েস্টফেলিয়ার সন্ধি
মাধ্যমে ক্যালভিনবাদকে লুথারাবাদীদের সমপর্যায়ে পুনরায় গ্রহণ করে। এর ফলে রাষ্ট্রে ব্যক্তির
ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়।
তথাপিও স্বীকার করতে হবে যে, ক্যালভিনপন্থী এবং লুথারপন্থীগণকে সমপর্যায়ে স্থাপন এবং
প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে প্রভেদ দূর করে ধর্মকে প্রত্যেক রাজার নিজস্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়
হিসেবে বিবেচনা করে ওয়েস্টফেলিয়া সম্মেলনের সদস্যরা রাজনীতি থেকে ধর্মকে বিদায় দিতে
কিছুটা হলেও সক্ষম হন।
ওয়েস্টফেলিয়া যুদ্ধের দশবছর আগেই বোঝা যাচ্ছিল যে এটি ধর্মীয় প্রশ্নসমূহ থেকে সরে এসে
রাজনৈতিক এবং বংশগত দ্ব›েদ্বর ব্যাপারে ক্রমশ এগিয়ে আসতে থেকে। তৎকালীন শতাব্দীর
উষালগ্নে এটি পরিষ্কার হতে থাকে যে ইউরোপের সকল স্থানে ধর্মীয় উন্মত্ততা ক্রমশ কমে

আসছিলো। ওয়েস্টফেলিয়া শান্তিচুক্তি ধর্মীয় ইস্যুসমূহকে পেছনে পাঠাতে এবং রাজনীতিকে
সামনে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। এই সন্ধি -
১। ইউরোপের রাজ বংশের মর্যাদা বৃদ্ধি করে;
২। নিজ রাজ্য সীমা বিস্তৃত করে এবং
৩। কোন দেশই যাতে অধিকতর শক্তিশালী না হতে পারে তবে মৈত্রী, শান্তি ও সাম্য স্থাপন;
এই তিন ওহফবহঃ এর উপর ভিত্তি করে সন্ধি হয়।
এই সন্ধি ধর্ম ও নৈতিক প্রভাবের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা
করে। ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধি পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক সত্তাকে সম্প র্ণভাবে বিনষ্ট
করে, একদিকে তার কাঠামো যেমন ভেঙ্গে দিয়েছিলো অপরদিকে এটি ইউরোপে আধুনিক
রাষ্ট্রব্যবস্থার গোড়াপত্তন ঘটে। এ কারণে ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধকে ইউরোপের ইতিহাসে সর্বশেষ
ধর্ম সংক্রান্ত যুদ্ধ বলে অভিহিত করা হয়। এটি ইউরোপে সর্বপ্রথম একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার
পথকে এই চুক্তি উন্মুক্ত করেছিলো।
পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের ধ্বংসস্ত‚প হতে প্রায় তিনশত জার্মান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। প্রতিটি রাষ্ট্রের
স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি, নিজস্ব সেনাবাহিনী এবং নিজস্ব টাকশাল ছিলো। শুধু নামেই রোমান
সাম্রাজ্য টিকে ছিলো। পরবর্তী দুইশত বছর জার্মান রাজ্যগুলি দুর্বল রাজ্যগুলিকে গ্রাস করতে
থাকে। উত্তর জার্মানিতে প্রাশিয়া এবং দক্ষিণ জার্মানিতে ব্যাভারিয়া জার্মানির উপর প্রভাব
বিস্তার করতে থাকে। ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অস্ট্রিয়া হ্যাপসর্বার্গা
রাজবংশ। তাদের যে আশা ছিল যে পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের নামে মধ্য ইউরোপে তাদের
আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত, বাস্তবে তা হয়নি, অপরদিকে স্পেনের অর্থ সম্পদ নি:শেষ হয়ে এটি
একটি দুর্বল দেশে পরিণত হয়।
অস্ট্রিয়ার ক্ষমতাকে দুর্বল করে ফ্রান্স বুরর্বো রাজবংশের নেতৃত্বে ইউরোপের বৃহত্তর দেশ
হিসাবে পরিগণিত হয়। ফ্রান্স পূর্বদিকে এ্যালসেস গ্রহণ করে জার্মান রাজ্যের দিকে হাত
বাড়ানোর সুযোগ পায়। রাইন অঞ্চরে ফ্রান্সের প্রাধান্য অপ্রতিহত হয়ে উঠে।
বাল্টিক অঞ্চলেও ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। রাশিয়ার অন্যতম অংশ ব্রিটেন
ও ভাদের্ন লাভ করার ফলে সুইডেন জার্মানিতে নিজ প্রধান্য স্থাপনের সুযোগ লাভ করে ফলে
সমগ্র উত্তর ইউরোপে সুইডেন একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসাবে বিবেচিত হতে থাকে। এ ছাড়াও
এই সন্ধির পর দানিয়ুব অঞ্চল নিয়ে অস্ট্রিয়া ও রাশিয়ার দ্ব›দ্ব সৃষ্টি হয়। তুরস্কের দুর্বলতার
সুযোগে রাশিয়া তুরস্কের অধীন স্থানগুলি দখল করার লক্ষ্যে যুদ্ধ শুরু করে। তবে এই চুক্তি
স্পেন ও ফ্রান্সের মধ্যে যুদ্ধের অবসান না ঘটিয়ে আরো এগারো বছর যুদ্ধ চলতে থাকে।
সুতরাং দেখা যায় ওযেস্টফেলিয়া সন্ধির ফলে নতুন কয়েকটি দেশের উত্থান এবং তাদের রাজ্য
বিস্তারের আকাংক্ষা পরস্পর সহবস্থানের নীতির পরিবর্তে ইউরোপে প্রাধান্য বিস্তারের দ্ব›দ্ব
সূচিত হয়।
ওয়স্টেফেলিয়া শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পর ইউরোপে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠে এবং এই
সময় থেকেই আন্তর্জাতিক ক‚টনৈতিক উদ্ভব হয়েছিল। এই নীতির মূল আদর্শ ছিল ইউরোপের

শক্তিশালী বৃহৎ রাষ্ট্রসমূহ যেমন থাকবে তেমনি দুর্বল রাষ্ট্রসমূহও থাকবে। সকল দেশই একটি
সামাজিক পদমর্যাদার অধিকারী হবে। ওয়েস্টফেলিয়া স›িদ্বর পর ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে
পরস্পর ক‚টনৈতিক যোগাযোগ, রীতিনীতি ইত্যাদির প্রবর্তনের ফলে একটি নতুন ইউরোপীয়
ব্যবস্থার সৃষ্টি করে। সেই সময় থেকে বিদেশী রাষ্ট্রসমূহে স্থায়ী দূতাবাস গড়ে উঠে।
ওয়েস্টফেলিয়ার স›িদ্ব শুধু রাষ্ট্রসমূহের সার্বভৌম ক্ষমতাই প্রদান করেনি বরং এটি একটি
দেশের সঙ্গে আরো একটি দেশের সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কতগুলো আন্তর্জাতিক রীতিনীতি-আইন কানুন প্রণয়নের পথ উন্মুক্ত করে দেয়। এই সময় থেকেই মূলত আন্তর্জাতিক
সম্পর্ক নিয়ন্ত্রনের উদ্দেশ্যে তৎকালীন লেখকরা নানা গ্রন্থ প্রণয়ন আরম্ভ করেন। এদের মধ্যে
হুগো গ্রসিয়াসের নাম সবিশেষ উল্রেখযোগ্য। তিনি ছিলেন একজন ডাচ মানবতাবাদী কর্মী,
যিনি হল্যান্ডে ধর্মীয় সহিঞ্চুতার পক্ষে কাজ করেন।
হুগোগসিয়াসের সন্ধি বিষয়ক ‘উব ঔঁৎব ইবষষর ফব চরধপরং’ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে
অত্যন্ত সুনিপুণভাবে লেখা একটি গ্রন্থ। এটি মানুষকে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুত্ব বুঝাতে
সক্ষম হয়। আন্তার্জাতিক আইন কোন নিরপেক্ষ দেশকে নিশ্চয়তা দেবে এবং বিপুল প্রাণহানি
সম্পত্তি ধ্বংসবিশেষ থেকে রোধ করবে সে সম্পর্কে ধারনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ত্রিশ
বছরব্যাপী যুদ্ধে বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ বা যুদ্ধে যারা অংশ নেয়নি তাদের নিরাপত্তার জন্য জ্ঞানীগুনি
ব্যক্তিবর্গ নিয়মনীতি প্রণয়ন করার কথা বলেন। যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা তৎকালীন মানুষের মানবতা
বোধকে জাগ্রত করে, যুদ্ধে অসুস্থ এবং আহতদের শুশ্রæষা এবং লুণ্ঠনকারীদের উপর
নিষেধাজ্ঞার দাবি ক্রমশ বাড়তে থাকে। হুগো এই বইতে যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে সদয় ব্যবহারের
নির্দেশ দেন।
এরপর থেকে ধর্মীয় সহিঞ্চুতা একটি গ্রহণযোগ্য নীতি হিসাবে গড়ে উঠে। ধর্মীয় সহিঞ্চুতার
পক্ষে সমগ্র ইউরোপ কেঁদে উঠে। প্রতিটি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ ব্যক্তি বা জীব হত্যাকে ধর্ম
বিরুদ্ধ বলে ঘোষণা দেয়। প্রত্যেকে নিজের এবং অন্যের ধর্মকে আলাদা ধর্মীয় বিশ্বাস হিসাবে
সম্মান দিতে শুরু করে এবং এটি একটি প্রচলিত নিয়মে পরিণত হয়। মানবতাবাদ এবং
যুক্তিবাদ এই সময়েই বিস্তার লাভ করতে থাকে।
এ ভাবে নানা দিক দিয়ে বিচার করলে ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধি একটি যুগের অবসান ঘটিয়ে অপর
এক নুতন যুগের আগমন বার্তা জানিয়ে দেয়। পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের বিশাল মৃতদেহ থেকে
এক নতুন ইউরোপীয় সমাজ কাঠামো গড়ে উঠে। নুতন শক্তির উত্থান এবং তাদের পারস্পরিক
সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ইউরোপের এক নুতন রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠে।
ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধি চুক্তির পর ১৬৫৯ সালে ফ্রান্স ও স্পেন পিরেনিজে শান্তি চুক্তি সম্পাদন
করে। স্পেনের একচ্ছত্র আধিপত্যের শেষ পদচিহ্ন মুছে ফেলে। ওয়েস্টফেলিয়ার তৃতীয় চুক্তি
হিসাবে ওলিভ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় (১৬৬০)। ব্রানডেনবার্গ, সুইডেন এবং পোল্যান্ডের মধ্যে
বাল্টিক অঞ্চলে শান্তিচুক্তি বজায় রাখতে সক্ষম হয়। এভাবে ওয়েস্টফেলিয়া এবং পরবর্তীতে
পিরেনিজে এবং ওলিভ চুক্তি ইউরোপে শান্তির নুতন দিগন্তের সূচনা করে।

ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধের ফলাফল
ইউরোপের ইতিহাসে সবচাইতে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ হিসাবে ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধ স্মরণীয় হয়ে
থাকবে। এই যুদ্ধ মানব সভ্যতার ইতিহাসে সামাজিক, নৈতিক, অনৈতিক ক্ষেত্রে ধ্বংসাÍক
প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যে এই যুদ্ধের পর একটি ছায়ামূর্তি নিয়ে বেঁচে থাকে এবং ঐক্যবদ্ধ করার
বদলে ওয়েস্টফেলিয়া শান্তি চুক্তি জার্মানিকে তিনশত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বিভক্ত হয়ে পড়ে।
প্রত্যেক শাসক তাদের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি এবং আলাদা প্রতিরক্ষা ও শুল্ক নীতি গ্রহণ করে।
এই সব রাষ্ট্রের উপর সম্রাটের প্রভাব কমে যাওয়ায় সাম্রাজ্য দুর্বল, ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে থাকে। এর
ফলস্বরূপ ভবিষ্যতে উত্তর-জার্মানিতে ব্রানডেনবার্গ প্রাশিয়ার উত্থান ঘটে এবং অর্ষ্ট্রিয়ার
আধিপত্য ও শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেঞ্জ করে। জার্মানি উনিশ শতকে বিসমার্কের নেতৃত্বে একত্রীকরণ
ও শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ জার্মানির উত্থানের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
প্রত্যেক যুদ্ধের ফলেই কতক দু:খ দুর্দশার সৃষ্টি হয়। কিন্তু আধুনিক যুগের ইতিহাসে
ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধের দু:খ দুর্দশার কোনো তুলনা চলে না। জার্মানির খুব কম অঞ্চলই ছিলই
যেখানে এই যুদ্ধ স্পর্শ করে নাই। এই যুদ্ধে এটিই প্রমাণিত হয় যে, যুদ্ধের নিষ্ঠুরতাই
নির্মমতার কাছে মানুষের জীবন মূল্যহীন। সৈনিকদের অত্যাচার ধর্মযুদ্ধের উম্মত্ততা ও অবাধ
হত্যাকান্ডে জার্মানি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। গ্রামের গ্রাম মানুষ জনমানবহীন শ্মশানে পরিণত হয়।
জার্মানির বহু অংশের জনসংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসে। জার্মানির দুই তৃতীয়াংশ লোক নিহত
হয়, বহু গ্রাম জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। ১৬০২ সালে জনসংখ্যা যেখানে ছিলো একুশ
হাজার ১৬৪৮ সালে তা দশ হাজারে নেমে আসে। কৃষকের জমি বন্ধ্যা জমিতে পরিণত হয়।
সৈন্যবাহিনী প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিষ্ঠুরভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায়।
দৈহিক উৎপীড়নের সঙ্গে নৈতিকাতর সম্পুর্ণ পতন ঘটবার ফলে ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধে
অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি দেশই এক একটি পশু শক্তিতে পরিণত হয়। যুদ্ধের শেষপর্যায়ে
একমাত্র ফ্রান্স ভিন্ন অপরাপর সকল দেশেই গভীর হতাশা ও অবসন্নতা দেখা দিয়েছিলো।
অনেক লোকই যুদ্ধেরপর নি:শোষিত হয় এবং তারা খুন-খারাপী ও ডাকাতিতে অংশ নেয়।
দয়া-মায়া ও সহমর্মিতার বদলে মানুষ নির্মম পশুতে পরিণত হয়। মানুষের অভ্যাস, রীতি-নীতি
নৈতিকতার বিরোধী হতে থাকে। স্কুল-কলেজ- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় এবং দেশ
কুসংস্কারে ছেয়ে যায়।
অর্থনৈতিক দিক দিয়েও এই যুদ্ধের চরম দুর্দশা পরিলক্ষিত হয়। জার্মান শহরগুলি মধ্যে
যেগুলো ছিলো খুবই সমৃদ্ধশালী সেগুলো এই ধ্বংশযজ্ঞে সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে পড়ে। বিশেষ করে
উত্তর জার্মানির দেশগুলির অর্থনৈতিক ভিত্তি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ব্যাপক খাদ্যভাবে জার্মানির বহু
স্থানের লোক মৃত্যুমুখে পতিত হয়। খাদ্য ভাবে মানুষকে তৃণভোজী হতে বাধ্য করেছিলো।
অতিরিক্ত খাজনার চাপে তারা দাসে পরিণত হয়। এছাড়াও যুদ্ধের পর ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ

হয়ে যায় এবং নিয়ন্ত্রণ ফরাসি এবং ডাচদের হাতে চলে আসে। শিল্পক্ষেত্রে জার্মানির অধপতন
যুদ্ধের পর আরো বেড়ে যায়। জার্মানির ব্যস্ততম বাণিজ্যকেন্দ্র হ্যানসান শহর, লিপজিগে,
ম্যাগডেবার্গ, হামবুর্গ এবং অন্যান্য শহর ঘুমন্ত শহরে পরিণত হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে তুর্কিরা
ভেনিসের বাণিজ্য দখল করে এবং পরবর্তী কালে ইংল্যান্ড হল্যান্ড তাদের ভৌগোলিক
অবস্থানের কারণে বিশ্ববাণিজ্য ক্রমশ অধিকার করে নেয়। সুতরাং বাণিজ্য ক্ষেত্রে জার্মানির
পতন ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধে চ‚ড়ান্তরূপ ধারণ করে।
যুদ্ধে জার্মানির শিল্প, সাহিত্য অর্থনীতি, কৃষি এবং বাণিজ্যের মত ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে থাকে।
পঞ্চদশ এবং ষোড়শ শতাব্দীতে জার্মান সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান ইত্যাদি ইতালি এবং ফ্রান্সের
সমপর্যায়ভুক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু শতধাবিভক্ত জার্মানির সৃজনীশক্তি, সৃষ্টিশীলতা ক্রমশ হ্রাস
পেতে থাকে। জার্মান ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন ক্রমশ নি¤œমুখী হতে শুরু করে, তেমনী জার্মানির
বুদ্ধিজীবী জ্ঞানবিদগ্ধ জনও ক্রম হ্রাস পেতে শুরু করে। ফ্রান্স ওয়েস্টফেলিয়ার সন্ধির পর শিল্প
ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে দ্রæত উন্নতি করলেও জার্মানির এই অধ:পতন হতে পুনরুদ্ধার করতে সময়
লাগে।
পরিশেষে বলা যায় যে, এই যুদ্ধের ফলাফল ছিল নি:সন্দেহে ধ্বংসাত্মক। অনিশ্চিয়তা অস্থিরতা
জার্মানিকে ক্রমশ তন্দ্রাচ্ছন্ন এবং জড়াগ্রস্ত করে তোলে। তাদের জাতীয় নীতি, ঐতিহ্য, কৌশল
ভীতিজনিত অবস্থার মধ্যে পড়ে। সব হারিয়ে জার্মানি হতোদ্যম হয়ে পড়েছিল। তবে এর মধ্যে
জার্মানি আবার ক্রমশ চেতন হতে শুরু করে। তাদের দু:খ দুর্দশা অভাব গ্রস্ততা পরবর্তী কালে
জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি করে এবং জার্মানি ক্রমশ একটি শক্তিশালী দেশে পরিণত হয়। সুতরাং
প্রাগের ঘটনার মধ্য দিয়ে যে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল পরবর্তীকালে সেই ধ্বংসস্তুপকে সরিয়ে
দিয়ে আধুনিক জার্মানির উত্থানের পথ প্রশস্ত করে।
সারসংক্ষেপ
ত্রিশবছরব্যাপী অবিরামভাবে যুদ্ধ করার পর ঘটে ক্লান্ত বিপর্যস্ত ইউরোপ ১৬৪৮ সালে ওয়েস্টাফেলিয়া
চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে এই যুদ্ধের অবসান ঘটায়। এই চুক্তি ইউরোপে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উদ্ভব
ঘটায় এবং আন্তর্জাতিক রীতিনীতির গোড়াপত্তন ঘটায়। পূর্বে ইউরোপীয় রাজন্যবর্গ পবিত্র রোমান
সাম্রাজ্যের সঙ্গে মিলিত হবার আর্দশে বিশ্বাসী ছিল তবে এই যুদ্ধের ফলে সেই কাঠামো ভেঙ্গে যায়
এবং শক্তিশালী রাজতন্ত্রের উদ্ভব ঘটিযে দ্রæত ইউরোপে রাজরা তাদের প্রভাব প্রতিষ্ঠার জন্য এক নতুন
দ্ব›দ্ব শুরু করেন। জার্মানি তথা ইউরোপে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সংস্কৃতিক ক্ষেত্রে
ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধের প্রভাব ছিলো ভয়াবহ। সমগ্র জার্মানি ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে। রোমান
সাম্রাজ্যের ছায়ামূর্তিতে পুরাতন রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠে। তবে
ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির পর সর্বপ্রথম নতুন ইউরোপীয় ব্যবস্থার লক্ষ্যে স্থায়ী ক‚টনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে
উঠে। এই চুক্তির ফলস্বরূপ রাষ্ট্রসমুহের আন্তর্জাতিক প্রথা বা রীতি-এক দেশ থেকে অন্য দেশে দ্রæত
প্রেরণ করে যুদ্ধে নিরাপরাধ বা নিরপেক্ষ মানুষের নিরাপত্তার ব্যাপারে যথার্থ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য
ক্রমশ স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ে উঠে। বর্তমান বিশ্বের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসমূহের আদান-প্রদান
এবং কূটনীতির রীতি-নীতি এই চুক্তির উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠে।

পাঠত্তোর মূল্যায়ন
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পার্শ্বে টিক () চিহ্ন দিন।
১। কোন সম্রাট ত্রিশব্যাপী যুদ্ধের পর শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করেন?
ক) প্রথম ফার্দিনান্দ খ) প্রথম রুডলফ
গ) দ্বিতীয় ফিলিপ ঘ) তৃতীয় ফার্দিনান্দ
২। ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধির ফলে জার্মানিতে কি পরিবর্তন আসে?
ক) ঐক্যবদ্ধ জার্মানি গঠিত হয়
খ) জার্মানিকে উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই অংশে বিভক্ত করা
গ) জার্মানির প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়
ঘ) জার্মানিকে কতগুলি ক্ষুদ্র প্রদেশে বিভক্ত করে রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে নিয়ে আসা হয়
৩। ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তিতে সবচাইতে বেশি অর্জন ছিল কার ?
ক) ইংল্যান্ডের খ) রাশিয়ার
গ) ফ্রান্সের ঘ) অস্ট্রিয়ার
৪। কার সিংহাসনের উপর পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের অধিকার স্বীকৃত হয়?
ক) বোহেমিয়া খ) ব্যাভারিয়া
গ) স্যাক্সনি ঘ) প্যালাটিনেট
৫। ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধির পর ক্যালভিনপন্থীদের কোন মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা হয়?
ক) ক্যালভিনপন্থীদের লুথারপন্থীদের সমপর্যায়ে অধিষ্ঠিত করা হয়
খ) ক্যালভিনপন্থীদের লুথারপন্থীদের অধ:স্তন করা হয়
গ) ক্যালভিনপন্থীদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়
ঘ) ক্যালভিনপন্থীদের লুথারপন্থীদের চেয়ে অধিক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়
৬। ওয়েস্টফেলিয়ার সন্ধি কোন ধর্মীয় নীতিকে অনুসরণ করে?
ক) ‘প্রজার ধর্মই রাজার ধর্ম’ খ) ‘রোমের ধর্মই সকল ইউরোপের ধর্ম
গ) সহিঞ্চুতাই প্রজার ধর্ম ঘ) ‘রাজার ধর্মই প্রজার ধর্ম’
৭। আন্তর্জাতিক আইন-কানুনের সর্ব প্রথম গ্রন্থ লেখেন কে?
ক) হুগো গ্রসিয়াস খ) এ্যারাসমাস
গ) পিরেনীজ ঘ) ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তি
৮। স্পেন এবং ফ্রান্সের মধ্যে কোন চুক্তি সম্পন্ন হয়?
ক) বার্লিন খ) অলিভ
গ) পিরেনিজ ঘ) ওয়েস্টফেলিযার চুক্তি

উত্তর : ১। (ঘ), ২। (গ), ৩। (গ), ৪। (খ), ৫। (ক), ৬। (ঘ), ৭। (ক), ৮। (গ)।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ওয়েস্টফেলিয়ার চুক্তির পটভ‚মি ব্যাখ্যা করুন।
২। গুগো গ্রসিয়াস কে ছিলেন ? যুদ্ধের নৃশংসতারোধে তিনি তার গ্রন্থে কি বক্তব্য লিখেন।
৩। ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধের ফলে জার্মানি অর্থনৈতিকভাবে কিভাবে ধ্বংস প্রাপ্ত হয়?
রচনামূলক প্রশ্ন
১। ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধির মূল শর্ত গুলি আলোচনা করুন।
২। ইউরোপের ইতিহাসে ওয়েস্টফেলিয়া সন্ধির প্রভাব বর্ণনা করুন। কিভাবে ইউরোপে এটি
আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার সৃষ্টি করে?
৩। ইউরোপে তথা জার্মানির উপর ত্রিশবছরব্যাপী যুদ্ধের ফলাফল বিশ্লেষণ করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]