বিপ্লবের প্রাক্কালে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স ছিল সবচেয়ে জনবহুল। কিন্তুফ্রান্সের আর্থ-
সামাজিক অবস্থা ছিল নানা দিক থেকে ত্রæটিপূর্ণ। এসব ত্রæটি-বিচ্যুতিকে ১৭৮৯ সালের বিপ্লবের
অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
তিনটি সম্প্রদায়
ইউরোপের অন্যান্য দেশের ন্যায় বিপ্লব-পূর্ববর্তী ফ্রান্সের সমাজ বিশেষ অধিকারপ্রাপ্ত (চৎরারষবমবফ)
এবং অধিকারহীন (টহঢ়ৎরারষবমবফ) এ দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। অধিকারপ্রাপ্ত গোষ্ঠীর মধ্যে
আন্তর্ভুক্ত ছিল যাজক (ঈষবৎমু) ও অভিজাত সম্প্রদায় (ঘড়নরষরঃু)। যাজকরা প্রথম (ঋরৎংঃ ঊংঃধঃব)
এবং অভিজাতরা দ্বিতীয় সম্প্রদায়ের (ঝবপড়হফ ঊংঃধঃব) অন্তর্ভুক্ত ছিল। অধিকারহীন গোষ্ঠী ছিল
যাজক ও অভিজাত ব্যতীত সমাজের অন্যান্য স্তরের অর্থাৎ তৃতীয় সম্প্রদায়ের (ঞযরৎফ ঊংঃধঃব)
মানুষ নিয়ে গঠিত। এদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল শহ‚রে উচ্চ মধ্যবিত্ত বা বুর্জোয়া এবং নিন্ম মধ্যবিত্ত
শ্রেণী, শহরের সাধারণ মানুষ বা ভাসমান জনতা (সাঁকুলাত), ধনী কৃষক, ক্ষেত মজুর ও বর্গাদার।
যাজক সম্প্রদায় ও তাদের সুযোগ-সুবিধা
১৭৮৯ সালে ফ্রান্সে যাজকদের সংখ্যা ছিল এক লক্ষ বিশ হাজার, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার সামান্য
অংশ। যাজক গোষ্ঠী দুটো অংশে বিভক্ত ছিল, যথা, উচ্চ যাজক ও নিæ যাজক। কার্ডিন্যাল,
আর্চবিশপ, বিশপ ও এবাট ছিল উচ্চ যাজকদের দলে। গ্রামের পাদরিরা ছিল নিæস্তরের যাজক।
যাজক সম্প্রদায় অনেক ধরনের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো। দেশের মোট ভ‚-সম্পত্তির
শতকরা ২০ ভাগের মালিকানা ছিল গির্জা বা যাজকদের হাতে, কিন্তু এ ভ‚-সম্পত্তির জন্য
সরকারকে কোনো কর বা তেই (ঞধরষষব) দিতে হতো না। অন্যান্য কর পরিশোধ থেকে তারা
আংশিক ও সম্পূর্ণ অব্যাহতি ভোগ করত। অপরপক্ষে গির্জা বা যাজক শ্রেণী কৃষকদের উৎপন্ন
ফসলের এক-দশমাংশ বা টাইদ (ঞরঃযব) বা ধর্মকর হিসেবে আদায় করতো। এছাড়া তারা
কৃষকদের কাছ থেকে মৃত্যু কর ও নামকরণ কর আদায় করার অধিকার পেয়েছিল। এ ভাবে যাজক
সম্প্রদায় একটি বিত্তশালী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিল। ফরাসি মন্ত্রী নেকারের মতে বিপ্লবের
প্রাক্কালে গির্জার বার্ষিক আয় ছিল ১৩ কোটি লিভর। অবশ্য গির্জার আয়ের সিংহভাগ উচ্চ
যাজকরাই ভোগ করতো। ফলে নিæস্তরের যাজকদের আর্থিক অবস্থা ছিল শোচনীয়। ১৭৮৯ সালে
এরা অনেকেই প্রথম দিকে বিপ্লবীদের সংগে যোগদান করে।
অভিজাতদের প্রকারভেদ
দ্বিতীয় সম্প্রদায়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল অভিজাতবর্গ। এরা ছিল সমাজের সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশ।
আঠারো শতকের শেষ দিকে অভিজাতরা কয়েকটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। অভিজাতদের
উচ্চতর গোষ্ঠী ছিল রাজার সভাসদ, সেনাপতি, বিচার বিভাগের উচ্চ পদের এবং ইনটেনডেন্ট
হিসেবে নিয়োগ লাভ করতো। অভিজাতদের আর একটি গোষ্ঠীকে গ্রাম্য অভিজাত বলা হতো।
এরা গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করতো। এদের সঙ্গে কৃষকদের সরাসরি শোষণের সম্পর্ক ছিল। এ
দু'টো গোষ্ঠীর অভিজাতরা অসিধারী অভিজাত (ঘড়নরষরঃু ড়ভ ঃযব ংড়িৎফ) নামে পরিচিত ছিল। এরা
ছিল বনেদী বা নীল রক্তবান অভিজাত। এছাড়া আর একটি অভিজাত গোষ্ঠী ছিল যাদের নীল রক্ত
ছিল না। এরা ছিল চাকুরীজীবী অভিজাত বা পোষাকী অভিজাত (ঘড়নরষরঃু ড়ভ ঃযব জড়নব)। এরা
প্রশাসক, আইনবিদ ও বিচারকের কাজ করতো।
অভিজাতদের সুযোগ-সুবিধা
যাজকদের ন্যায় অভিজাত সম্প্রদায়ও কতগুলো বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো। এরা বংশ
কৌলিণ্যের জোরে সরকারি উচ্চ পদগুলোতে একচেটিয়াভাবে নিয়োগের অধিকার পেয়েছিল।
সামন্ত প্রভুরা ফ্রান্সের কৃষি জমির শতকরা ২০ ভাগের মালিক ছিল, কিন্তুতারা ভূ-কর আদায়
করতো না। এ ছাড়া কাঁপিতাশিঁয় (ঈধঢ়রঃধঃরড়হ) এবং ভ্যাঁতিয়াঁমী নামক অন্য দুটি কর আদায়ও
তারা নানা অজুহাতে আংশিক বা সম্পূর্নভাবে এড়িয়ে যেতো। এরা রাজার সভাসদ হিসেবে ভাতা,
পুরষ্কার ও পেনশন পেতো। সমাজে এরা ছিল সবচেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন। তাছাড়া অভিজাত গোষ্ঠী
তাদের জমিদারীতে কতগুলো সামন্ত অধিকার ভোগ করত। এ সব অধিকার পরবর্তী পর্যায়ে
আলোচনা করা হয়েছে।
তৃতীয় সম্প্রদায়
যাজক ও অভিজাতরা ব্যতীত ফ্রান্সের আর সবাই ছিল তৃতীয় সম্প্রদায়ভুক্ত। আঠারো শতকের
শেষার্ধে ফ্রান্সের জনসংখ্যা ছিল আড়াই কোটি। এর শতকরা ৯৬ ভাগ ছিল তৃতীয় সম্প্রদায়ের
অর্থাৎ অধিকারবিহীন। এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল মধ্যবিত্ত বা বুর্জোয়া শ্রেণী, কৃষক ও
শহরের শ্রমিক। বুর্জোয়া শ্রেণীতে অন্তভর্‚ক্ত ছিল ব্যাংকের মালিক, দালাল, শিল্পোৎপাদক, বণিক,
ম্যানেজার. আইনজীবী, চিকিৎসক, শিক্ষক, শিল্পী, গ্রন্থকার এবং বার্তাজীবী।
বুর্জোয়া শ্রেণী
তৃতীয় সম্প্রদায়ের উচ্চস্তরের সদস্যদেরকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল মধ্যবিত্ত বা বুর্জোয়া শ্রেণী। এরা
অনেকেই যাজক ও অভিজাতদের তুলনায় অনেক বেশি বিত্তশালী এবং শিক্ষিত ছিল। এ ছাড়া
বুর্জোয়া শ্রেণী লক্ষ্য করে যে দেশের সম্পদ সৃষ্টিতে অভিজাত এবং যাজকদের তেমন কোন অবদান
নেই। অথচ তারা বংশানুক্রমে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ কতগুলো সুযোগ-সুবিধা, রাজনৈতিক
অধিকার ও সমাজিক মর্যাদা ভোগ করছে। অতএব দার্শনিকদের চিন্তা-চেতনায় অনুপ্রাণিত মধ্যবিত্ত
শ্রেণীর দৃষ্টিতে দেশের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা ছিল বৈষম্যপূর্ণ। তারা এ বৈষম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার
পরিবর্তে এমন সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী হয় যেখানে তাদের মর্যাদা ও অধিকার স্বীকৃতি
পাবে। অর্থাৎ রাজনৈতিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা, বংশগত না হয়ে প্রকৃত যোগ্যতার ওপর
নির্ভরশীল হউকÑ এ ছিল তাদের দাবি। এছাড়া তারা চেয়েছিল এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যাতে
সরকারের নিয়ন্ত্রন থাকবে না। প্রচলিত সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে
বুর্জোয়া শ্রেণীর অসন্তোষ ১৭৮৯ সালের বিপ্লবের অন্যতম প্রধান কারণ।
কৃষক সমাজ
কৃষকদের মধ্যে নানা ভাগ ছিল। এদের এক অংশ ছিল স্বাধীন কৃষক। এরা নিজ মালিকানাধীন
জমি চাষ করতো। কিন্তুএদের বেশির ভাগের পরিবার-প্রতি জমির পরিমান কম ছিল। কৃষকদের
মধ্যে একটি অংশ ছিল প্রজা যারা অন্যের জমি খাজনা বা ভ‚-কর দিয়ে চাষ করতো। এছাড়া ছিল
ক্ষেত মজুর, বর্গাদার ও ভ‚মিদাস। বিপ্লবের প্রাক্কালে ফ্রান্সে ভ‚মিদাসের সংখ্যা ছিল আনুমানিক দশ
লাখ। এদেরকে সপ্তাহের কয়েকদিন বিনা পারিশ্রমিকে সামন্ত প্রভুদের জন্যে কাজ করতে অর্থাৎ
বেগার খাটতে হতো।
কৃষকদের অসন্তোষ
বিপ্লবের প্রক্কালে ফরাসি কৃষকদের অবস্থা সামগ্রিকভাবে ভালো ছিল না। কিন্তুইউরোপের অনেক
দেশের কৃষকদের এবং বিগত শতকে ফ্রান্সের কৃষকদের অবস্থার চেয়ে তাদের অবস্থা অনেক ভালো
ছিল। একথা বিশেষভাবে সত্য ছিল শুধুমাত্র যে সব কৃষক নিজের মালিকানাধীন জমি চাষ করতো
তাদের ক্ষেত্রে। কিন্তুঅভিজাত ও যাজকদের বিরুদ্ধে এদের ছিল তীব্র অসন্তোষ। এ অসন্তোষের
প্রধান কারণ ছিল এই যে সামন্ত প্রভুকে ভ‚-কর দিতে না হলেও এসব কৃষককে অভিজাত গোষ্ঠী
অনেক উপায়ে শোষণ করতো। যেমন যখন কোন কৃষক উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা পেতো
তখন সে সামন্ত প্রভুকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ফি হিসাবে দিতে বাধ্য থাকতো, জমি বিক্রি করলে
জমির মূল্যের একটি অংশ সামন্ত প্রভুকে দেয়ার নিয়ম প্রচলিত ছিল। এছাড়া কৃষকদেরকে সামন্ত
প্রভুর চুল্লিতে পাউরুটি আর মদ তৈরির কারখানায় মদ তৈরি করতে এবং এজন্যে পণ্যের মাধ্যমে
মূল্য পরিশোধ করতে বাধ্য করা হতো। মধ্যযুগে অভিজাতরা প্রশাসনিক বিচার ও অন্যান্য ক্ষেত্রে
অনেক দায়িত্ব পালন করতো, এর পরিবর্তে তারা কতকগুলো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো। কিন্তু
পরিবর্তিত অবস্থায় এ সব দায়িত্ব গ্রহণ করে ছিল সরকার। কিন্তু সামন্ত প্রভুদের সুযোগ-সুবিধা
অব্যাহত থাকে। তাই কৃষকদের দৃষ্টিতে এসব সুযোগ-সুবিধার কোন যৌক্তিকতা ছিল না। তাদের
মতে এগুলো ছিল নিতান্তই শোষণের অধিকার।
শহরের শ্রমজীবী মানুষ
তৃতীয় সম্প্রদায়ের অপর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল শহরের শ্রমিক। শ্রমজীবী বলতে কেবল
শহরের কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকদেরকেই বুঝাত না। শ্রমজীবী বলতে বুঝাত কারখানার শ্রমিক,
রুটি প্রস্তুতকারক, কসাই, মদ প্রস্তুতকারক, মুদী, রাজমিস্ত্রী, দোকানদার, সরাইখানার মালিক,
ধোপা, নাপিত, স্বর্ণকার, পুস্তক বিক্রেতা প্রভৃতি অনেককে। এরা সাঁকুলাৎ নামে পরিচিত ছিল।
আঠার শতকের শেষার্ধে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছিল, কিন্তুমজুরীর হার তেমন বৃদ্ধি পায় নি; ফলে
শ্রমজীবী মানুষের জীবন দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে উঠে। ১৭৮৮ সালে ফসল হানি ঘটলে খাদ্য দ্রব্যের দাম
আরও বেড়ে যায়। গ্রামের নিরন্ন মানুষ শহরে চলে আসে। ফলে সাঁকুলাতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।
সাঁকুলাতদের অভাব-অভিযোগ বিপ্লবের একটি বড় কারণ।
অর্থনৈতিক অবস্থা
বিপ্লব-পূর্ববর্তী যুগে ফ্রান্স ছিল একটি কৃষি প্রধান দেশ। আধুনিক শিল্প প্রতিষ্ঠান তখনও গড়ে
ওঠেনি। ফলে দেশের জনসংখ্যার বৃহত্তর অংশের জীবিকা ছিল কৃষিকাজ। অর্থনৈতিক অবস্থার
অপর একটি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল বৈষম্যপূর্ণ কর ব্যবস্থা এবং কর আদায়ে দুর্নীতি। এর ওপর ছিল
যুদ্ধের খরচ, সরকারি অপব্যয় এবং রাজ পরিবারের অমিতব্যয়িতা। এসবের ফলে বিপ্লব পূর্ববর্তী
কালে রাজকোষ প্রায় শূন্য হয়ে যায়। এছাড়া বণিকদের প্রভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাÐের অনেক
ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত ছিল। এ ব্যবস্থা ছিল উঠতি বুর্জোয়াদের স্বার্থের পরিপন্থী।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করসমূহ
এসময়ে ফ্রান্সে তিন ধরনের প্রত্যক্ষ কর আদায় করা হতো। এগুলো ছিল তেই (ভ‚-সম্পত্তির ওপর
ধার্য কর), কাপিতাশিয়ঁ(উৎপাদন ভিত্তিক আয়কর) এবং ভ্যাঁতিয়াঁস (স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির
ওপর কর)। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে সামন্ত প্রভুএবং যাজক সম্প্রদায় এসব কর পরিশোধ
থেকে পূর্ণ বা আংশিক অব্যাহতি ভোগ করতো। অর্থাৎ বলা চলে যে, একমাত্র কৃষকদেরকেই এসব
কর পরিশোধ করতে হতো। এ প্রসঙ্গে আরও স্মরণ করা যেতে পারে যে, কৃষকদের কাছ থেকে ধর্ম
যাজক ও সামন্ত প্রভুরা বিভিন্ন কর আদায় করতো। প্রত্যক্ষ করের পাশাপাশি সরকার অনেক প্রকার
পরোক্ষ করও আদায় করতো। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল গাবেল (এধনবষষব) বা
লবণকর এবং এদ (অরফব) বা ভোগ্যবস্তুর ওপর ধার্য কর। এসব কর আদায়ের ভার সরকার এক
ধরনের কর আদায়কারীর ওপর ন্যস্ত করেছিল। এর ফলে একদিকে যেমন করদাতাদের ওপর
অত্যাচার বেড়ে যায়, অপরপক্ষে সরকারের বিপুল রাজস্ব কমে যায়। অর্থাৎ রাজা দু'দিক থেকেই
ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এভাবে বিচার করলে বলা যায় যে, আঠার শতকের শেষার্ধে অর্থাৎ পূর্বতন শাসন আমলে ফ্রান্সের
আর্থ-সামাজিক অবস্থা নানা দিক থেকে ত্রæটিপূর্ণ ছিল। এসব ত্রæটি-বিচ্যুতি বিভিন্ন স্তরের মানুষের
মনে গভীর অসন্তোষ সৃষ্টি করে এবং এক পর্যায়ে বিপ্লবের মাধ্যমে এ অসন্তোষের বহি:প্রকাশ ঘটে।
সারসংক্ষেপ
বিপ্লবের প্রাক্কালে অন্যান্য দেশের ন্যায় ফ্রান্সের জনগোষ্ঠী তিনটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল।
যাজকরা ছিল প্রথম সম্প্রদায়, অভিজাতগণ দ্বিতীয় সম্প্রদায় এবংবাকি অংশ ছিল তৃতীয়
সম্প্রদায়ভুক্ত। প্রথম দুটো সম্প্রদায়ভুক্ত জনগোষ্ঠী ছিল বিশেষ অধিকার প্রাপ্ত, অর্থাৎ তারা
দেশের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করত। তৃতীয় সম্প্রদায়ে অন্তর্ভুক্ত জনগোষ্ঠী এসব বিশেষ
সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল বলে তারা অধিকারহীন দেশের সমাজ-ব্যবস্থা ছিল
বৈষম্যপূর্ণ। এ বৈষম্য বিশেষত শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের মন দারুণ অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল।
অপরদিকে কৃষকদের মধ্যেও অভিজাতদের সুযোগ-সুবিধার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছিল। এ ক্ষোভ এবং
তজ্জনিত কারণে সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনের ইচ্ছা ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম প্রধান কারণ।
ক. নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশ্বে টিক () চিহ্ন দিন।
১। বিপ্লবের অবিজাত সম্প্রদায় ফ্রান্সের কি পরিমাণ জমির মালিক ছিল?
(ক) শতকরা ১০ ভাগ (খ) শতকরা ১৫ ভাগ
(গ) শতকরা ২০ ভাগ (ঘ) শতকরা ২২ ভাগ
২। নেকারের মতে বিপ্লবের প্রাক্কালে গির্জার বার্ষিক আয় কত ছিল?
(ক) ১৩ কোটি লিভর (খ) ১৪ কোটি লিভর
(গ) ১৫ কোটি লিভর (ঘ) ১৭ কোটি লিভর
৩। বিপ্লবের প্রাক্কালে ভ‚মিদাসদের সংখ্যা কত ছিল?
(ক) ৭ লাখ (খ) ৪ ৮ লাখ
(ঘ) ৯ লাখ (ঘ) ১০ লাখ
৪। বিপ্লব-পূর্ববর্তী যুগে ফ্রান্সে কত ধরনের প্রত্যক্ষ কর আদায় করা হতো?
(ক) ৫ ধরনের (খ) ৪ ধরনের
(গ) ৩ ধরনের (ঘ) ২ ধরনের
খ. রচনামূলক প্রশ্ন
১। বিপ্লব-পরবর্তী যুগে যাজক ও অভিজাতরা যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো তা আলোচনা
করুন।
২। বুর্জোয়া শ্রেণীর ক্ষোভের কারণ কি ছিল?
৩। কৃষক সম্প্রদায়ের অসন্তোষের কারণগুলির বিবরণ দিন।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর
১। গ, ২। ক, ৩। খ, ৪। গ
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত