রেনেসাঁস পূর্ব ইউরোপে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার
এই সময়ে প্রযুক্তির উন্নতি
মধ্যযুগের ইউরোপের সমাজ ও সংস্কৃতি ছিল সামন্ত আর্থ-সামাজিক কাঠামোর অচলায়তনে
আবদ্ধ। এখানে ব্যক্তির স্বাতন্ত্র্য কিম্বা ব্যক্তি প্রতিভার কোনো স্থান ছিল না। ধর্ম ভিত্তিক সমাজ
ও আইনের আওতায় যুক্তিবাদ ছিল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। সামন্ত অভিজাত নিয়ন্ত্রিত সমাজে বিদ্যা
চর্চা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। আর সামন্ত অভিজাত সমাজ ছিল ভোগ বিলাসে
মত্ত। ইতিহাসের যে কোনো পর্বে বিজ্ঞান চর্চার প্রধান পূর্বশর্ত ছিল জ্ঞানের জগতে অবাধ
বিচরণের স্বাধীনতা, যুক্তিবাদের প্রসার এবং জীবন ও জগতের প্রতি গভীর অনুসন্ধিৎসা মূলক
দৃষ্টিভঙ্গী। পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতায় বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল উদারনৈতিক পরিবেশ।
এই জন্য দেখা যায় যে প্রাচীন মিশরীয়রা এবং গ্রিকরা বিজ্ঞান চর্চায় অসাধারণ দক্ষতা প্রদর্শন
করেছিল। মধ্যযুগের আব্বাসীয় খিলাফতের আমলেও জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির মূলে ছিল ব্যক্তি
প্রতিভা বিকাশের সুযোগ এবং যুক্তিবাদের প্রসার। মধ্যযুগের ইউরোপের ইতিহাসে অনুক‚ল
পরিস্থিতির অভাবে বিজ্ঞান চর্চা ব্যহত হয়। চতুর্দশ এবং পঞ্চদশ শতকে এসে সামন্ত আর্থ-
সামাজিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়ার পটভ‚মিতে ইউরোপে যে নব জাগরণের সূত্রপাত হয় তখন
থেকে নতুন করে শুরু হয় বিজ্ঞান চর্চা। বলা যেতে পারে এই সময় থেকে শুরু হয় আধুনিক
বিজ্ঞান অনুশীলন, অধ্যয়ন এবং গবেষণা। এই পর্বে বিজ্ঞানীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। যে
ক’জন বিজ্ঞানী এই যুগের বিজ্ঞান চর্চার গোড়াপত্তন করেন, তাদের বিবরণ নিæে প্রদত্ত হলোঃ
(ক) বৈজ্ঞানিক কপারনিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩)
বৈজ্ঞানিক কপারনিকাস আবিষ্কার করেন যে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে কিম্বা পৃথিবী সূর্যকে
প্রতিনিয়ত প্রদক্ষিণ করে চলেছে। প্রাচীন গ্রিক যুগের বিজ্ঞানীদেরও এই ধারণা হয়েছিল।
কিন্তু মধ্যযুগের ইউরোপে এই মতই প্রচলিত ছিল যে পৃথিবী কেন্দ্র করে সূর্য ও অন্যান্য গ্রহ
নক্ষত্র আবর্তিত হচ্ছে। কপারনিকাস ইউরোপবাসীর এই ধারণা ভুল প্রমাণ করেন।
কপারনিকাসের এই আবিষ্কার আকাশ বিজ্ঞান গবেষণায় এক বৈপ্লবিক ধারার সূচনা করে।
(খ) গ্যালিলিও (১৫৬৪-১৬৪২)
ইতালীয় বৈজ্ঞানিক গ্যালিলিও দূরবীণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কার আধুনিক বিজ্ঞানের
ইতিহাসে একটি মাইল ফলক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। গ্যালিলিওর এই আবিষ্কার
কপারনিকাশের আবিষ্কারকে সঠিক বলে প্রমাণিত করে।
(গ) গুটেনবার্গ (১৪০০-১৪৬৮)
জার্মানির গুটেনবার্গ আধুনিক সিসার টাইপ আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কার মুদ্রণ শিল্পের
জগতে এক ব্যাপক পরিবর্তন আনয়ন করে। এর পূর্বে হাতে লিখে কপি করে গ্রন্থাদি প্রচার
করা হতো। গুটেনবার্গের আবিষ্কারের পর বই ছাপার কাজ শুরু হয়। গুটেনবার্গের টাইপ দিয়ে
১৪৫৪-৫৪ সালের দিকে প্রথম বাইবেল মুদ্রিত হয়। তখন থেকে সাধারণ মানুষের কাছে
বাইবেল সহজলভ্য হয়। ইতিপূর্বে বাইবেল ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
(ক) নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
১। কপারনিকাস ছিলেন একজন
(ক) বৈজ্ঞানিক (খ) শিল্পী
(গ) কবি (ঘ) সঙ্গীত বিশারদ
২। গ্যালিলিও আবিষ্কার করেন
(ক) দূরবীক্ষণ যন্ত্র (খ) রোবট
(গ) রকেট (ঘ) মিসাইল
৩। গুটেনবার্গ ছিলেন
(ক) রাশিয়ার আধিবাসী (খ) জার্মানীর আধিবাসী
(গ) স্পেনের অধিবাসী (ঘ) ফ্রান্সের অধিকবাসী
উত্তর : ১। ক, ২। ক, ৩। খ।
(খ) রচনামূলক প্রশ্ন
১। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতকের বিজ্ঞানীদের পরিচয় দিন।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত