জার্মানিতে গণতন্ত্রের পতন এবং স্বৈরতন্ত্রবাদী নাৎসি শক্তির উদ্ভব গোটা ইউরোপের ইতিহাসে এক
গুরুত্বপূর্ণঘটনা। জার্মানিতে ভাইমার সরকারের বিভিন্নদুর্বলতা ও সংকট নাৎসিবাদের উত্থানের পথ
প্রশস্থকরে। তদুপরি ১৯৩০ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব জার্মানিকে ব্যাপকভাবে গ্রাস
করেছিল। খাদ্যাভাব দেখা দেয়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় এবং বেকারত্ববাড়ে। দেশটির পুনরুজ্জীবনের কাজ
বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা চরমে ওঠে। নেতিবাচক রাজনীতির জন্যে এটা ছিল
মোক্ষম সুযোগ। হিটলার এবং তার নাৎসি দল এ সুযোগে দ্রæত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এভাবে
জার্মানির জাতীয় জীবনের সংকটময় পরিস্থিতিতে নাৎসি দলের উত্থান ঘটে।
জার্মানিতে হিটলারের উত্থান এবং নাৎসি দলের ক্ষমতা দখল
১৮৯৯ সালের এপ্রিল মাসে অস্ট্রিয়ার ব্রাউনাউ গ্রামে অ্যাড্লফ হিটলার জন্মগ্রহণ করেন। পিতা
অ্যালোয়েস ছিলেন শুল্ক বিভাগের কর্মী, মা ক্লারা সাধারণ কৃষক নারী। বাল্যকালে পিতাকে হারিয়ে
অনেক ভাই-বোনের সঙ্গে হিটলারেরও জীবন কেটেছে চরম দুঃখ দারিদ্র্যে। লাসবাক, লিনৎস ও
স্টেইয়ারে বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে তিনি ভিয়েনায় ছবি আঁকার স্কুলে ভর্তিহওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ
হন। এরপর তিনি জার্মান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধের শেষে তিনি
মিউনিকে এক ছাপাখানায় কিছুদিন কাজ করেন। ১৯১৯ সালের মাঝামাঝি তিনি জার্মান শ্রমিক দলে
(এবৎসধহ ডড়ৎশবৎং চধৎঃু) যোগ দেন। অল্প দিনের মধ্যে বাগ্মিতার জোরে তিনি এর নেতা হন। এই
সময় দলের কোনো কর্মসূচি ও পরিকল্পনা ছিল না। তবে তারা ভার্সাই সন্ধির বিরোধী ছিল। দু'বছরের
মধ্যে দলের সংগঠন সুদৃঢ় হয় ও সদস্য সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। দলের নাম পাল্টে রাখা হয় জাতীয়
সমাজতন্ত্রবাদী জার্মান শ্রমিক দল (ঘধঃরড়হধষ ঝড়পরধষরংঃ এবৎসধহ ডড়শবৎং চধৎঃু), সংক্ষেপে নাৎসি
দল।
জার্মানির বিক্ষুব্ধ মানুষ নাৎসি দলে ভিড় করেÑ যুদ্ধে ফেরত সৈনিক, রক্ষণশীল রাজতন্ত্রী, দুর্দশাগ্রস্ত
ব্যবসায়ী এবং হতাশ শ্রমিক। তদুপরি ক্যাথলিক-বিরোধী, ইহুদি বিরোধী, কমিউনিস্ট বিরোধীরাও
নাৎসি দলকেই তাদের লক্ষ্যপূরণের হাতিয়ার বলে মনে করে। ১৯২০ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে তিনি
দলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একটি শক্তিশালী জার্মান রাষ্ট্রগঠনের অঙ্গীকার তিনি করেন। ভার্সাই
সন্ধির বিরোধিতা ও জার্মান রক্তের বিশুদ্ধতার ওপর জোর দেওয়া হয়। সব শ্রেণীর মানুষের সমান কর্তব্য
ও অধিকারের উল্লেখ করা হয়। শিক্ষা ও আইন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, ভ‚মি সংস্কার, শিশু ও
মাতৃমঙ্গল, বার্ধক্য ভাতা, মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির ব্যবস্থাÑ সব কিছুই এই কর্মসূচির
অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হিটলার ড্রেক্সলারকে অপসারণ করে নাৎসি দলের নেতৃত্ব পুরোপুরি নিজের হাতে গ্রহণ করেন।
গোয়েরিং, হেস, রোজেনবুর্গ, বোয়েম, গোয়েবল্স প্রমুখ সহকর্মীদের সাহায্যে তিনি দলকে শক্তিশালী
করে তোলেন। দলের পতাকা ছিল রক্তবর্ণএবং মাঝখানে সাদা রং এর মধ্যে শোভা পেত কালো
স্বস্তিকা। লাল রং ধনতন্ত্র-বিরোধিতার প্রতীক, সাদা জাতীয়তাবাদ ও স্বস্তিকা আর্যরক্তের। প্রকাশিত হয়
দলীয় মুখপাত্র ‘পিপলস অবজার্ভার'। দলীয় স্বার্থরক্ষা ও নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তার জন্যে এক ঝটিকাবাহিনী
গঠন করা হয়। এর নাম ছিল স্টর্মট্রুপার, সংক্ষেপে এস.এ। রোয়েমের নেতৃত্বেএই বাহিনী অন্যান্য দল
বিশেষ করে কমিউনিস্টদের হাত থেকে দলের সভাগুলোকে রক্ষা করতো। অন্য দলের ওপর হামলা
করাও তাদের কর্তব্য ছিল। বাদামি রং-এর পোষাক পরতো বলে এদের ‘ব্রাউন শার্টও' বলা হয়।
সংস্কৃতির বিশুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে এরাও স্বস্তিকা চিহ্ন ব্যবহার করতো। এছাড়া ছিল বিশেষ
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিটলারের ব্যক্তিগত রক্ষী বাহিনী শুট্যস্স্টাফেল্ন, সংক্ষেপে এস.এস।
মাতৃভ‚মির জন্যে উৎসর্গীকৃত প্রাণ এই বাহিনীর সেনাগণ দল নেতার জন্যে মৃত্যুবরণ করতেও পিছপা
হতো না। অন্যান্য নাৎসি কর্মীগণ জাঁকজমকপূর্ণপোষাক পরতো। তাতে শোভা পেতো সম্মানসূচক
তারকারাজি। সুশৃ´খল ও দলবদ্ধভাবে তারা কুচকাওয়াজ করতো। বাস্তবে নাৎসি দল একটি সমান্তরাল
সেনাবাহিনী গড়ে তোলে।
দলীয় সঙ্গীত রচনা করেন হোর্স্টওয়েসেল নামে এক জার্মান যুবক। জার্মানির শক্তি ও সমৃদ্ধির কামনা
করে ও কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে দুটি সঙ্গীত রচিত হয়। নাৎসিদলের শ্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল “উদ্দীপ্ত
জার্মানি”। “ইহুদিগণ আমাদের দুর্ভাগ্য” “ক্যাথলিক নিপাত যাক” “ফুয়েরার (হিটলার) দীর্ঘজীবী হোন”
“আজ জার্মানি, আগামীকাল বিশ্ব” ইত্যাদি।
হিটলার ১৯২৩ সালে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেন। প্রখ্যাত জার্মান সেনাপতি
লুডেনডর্ফও এতে যোগ দেন। অভ্যুত্থান ব্যর্থহয়। হিটলার পাঁচ বছরের জন্যে কারাদন্ডে দন্ডিত হলেও
ন'মাস পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। কারাবাসের সময়েই তাঁর জীবনী মাইন কাম্ফ (গবরহ কধসঢ়ভ)
রচিত হয়। এই গ্রন্থটিতে হিটলার তথা নাৎসি দলের মহাদর্শপ্রকাশিত হয়। নাৎসিগণের কাছে গ্রন্থটি
ছিল বাইবেলের মতো তখনইনাৎসি দলকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়। ১৯২৪ সালে নির্বাচনে দলের
সদস্য সংখ্যা হ্রাস পায়। ১৯২৮ সালে অবশ্য এই সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৩২ সালের
মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির সঙ্গে নাৎসিদলের জনপ্রিয়তাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
১৯৩২ সালে নির্বাচনের পর রাইখস্ট্যাগের বৃহত্তম দল হিসেবে রাষ্ট্রপতি হিন্ডেনবুর্গনাৎসিদলকে সরকার
গঠনের আহŸান জানান। হিটলারের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে নাৎসি দলের কোয়ালিশন
সরকার গঠিত হয়। হিটলার হন প্রধানমন্ত্রী বা চ্যান্সেলর। এই সময় হঠাৎ রাইখস্ট্যাগ ভবনে আগুন
লাগলে হিটলার এর জন্য কমিউনিস্টদের দায়ী করেন। দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে রাজনৈতিক
অধিকারগুলো খর্ব করা হয়। কমিউনিস্ট দল নিষিদ্ধ হয়। অনিশ্চিত রাজনৈতিক অবস্থার সুযোগে
১৯৩৩ সালে হিটলার কোয়ালিশন সরকার ভেঙ্গে দিয়ে একনায়কতন্ত্রপ্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৪ সালে
হিন্ডেনবুর্গের মৃত্যু হলে তিনি প্রেসিডেন্ট ও চ্যান্সেলর উভয় পদ দখল করেন। এরপর তিনি নিজকে
ফুয়েরার বা নেতা ঘোষণা করেন।
হিটলার ও নাৎসি দলের উত্থানের কারণ
এক. প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বিজয়ী মিত্রশক্তির মতে, জার্মানি ছিল যুদ্ধাপরাধী। সুতরাং, বিভিন্নশর্তআলোচনার
জন্যে জার্মানিকে প্যারিসের শান্তিবৈঠকে কোনো সুযোগ না দিয়ে একতরফাভাবে জার্মানির উপর ভার্সাই
সন্ধির শর্তগুলো চাপানো হয়। এই সন্ধিতে জার্মান সরকারকে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু
দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী ও নাৎসিদল এই সন্ধির বিরুদ্ধে তীব্রপ্রতিবাদ জানায় এবং প্রচার চালায় যে,
তৎকালীন সরকার ভার্সাই সন্ধিকে স্বীকার করে জার্মানির প্রতি বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। দেশপ্রেমিক
জার্মান, মধ্যবিত্ত, শ্রমিক ও জনসাধারণের চোখে ভার্সাই সন্ধি ছিল জার্মানির প্রতি প্রতিহিংসামূলক
কাজ। নাৎসি দলই ভার্সাই সন্ধিকে উপেক্ষা করে জার্মানির হৃত মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম এই
ধারণা এ সময় জনমনে সৃষ্টি হয় এবং তাই তারা নাৎসি দলের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করে। অনেক
ঐতিহাসিক মনে করেন যে, ভার্সাই সন্ধির কঠোর শর্তাবলীই জার্মানিতে নাৎসি দলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি
করেছিল।
দুই. ১৯৩০-১৯৩৩ সালে জার্মানিতে কমিউনিস্টরা প্রচÐ প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। কিন্তুজার্মান
রক্ষণশীলরা কমিউনিস্টদের পছন্দ করতো না। জার্মান শিল্পপতি ও বুর্জোয়ারা জার্মানিতে কমিউনিস্ট
বিপ্লবের আশংকায় অস্থির থাকতেন। যেহেতু দুর্বল ও সহনশীল জার্মান প্রজাতন্ত্রী সরকার
কমিউনিস্টদের দমনে আগ্রহ দেখায়নি, তাই এ সকল ধনকুবের শিল্পপতিরা নাৎসি দলকে তাদের
পরিত্রাতা মনে করে। নাৎসি স্বেচ্ছাসেবক ও ঝটিকা বাহিনী গঠন, নাৎসি প্রচারযন্ত্রকে জোরদার করার
জন্যে জার্মান শিল্পপতিরা প্রচুর অর্থপ্রদান করেন।
জার্মান পুঁজিপতিদের অর্থেহিটলার এস.এস বা ঝটিকা বাহিনী গড়ে তোলেন। যুদ্ধ ফেরৎ বেকার সেনা
ও বেকার যুবকদের নিয়ে গড়ে তোলেন জঙ্গি যুব বাহিনী। এই বাহিনীর সাহায্যে হিটলার
কমিউনিস্টদের সঙ্গে অবিরাম সংঘর্ষ দ্বারা তাদেরকে কোনোঠাসা করে ফেলেন। বল প্রয়োগ করে
কলকারখানার শ্রমিক ধর্মঘট ভেঙ্গে দেন। এর ফলে জার্মান বুর্জোয়ারা নাৎসি দলের অনুগত হয়ে পড়ে।
অর্থের সাহায্যে এবং বল প্রয়োগ করে নাৎসিরা ১৯৩৩ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে
সরকার গঠন করে।
তিন. ১৯২৯ সালের মহামন্দা ও জার্মানির মুদ্রাস্ফীতিজনিত বিপর্যয়কে হিটলার রাজনৈতিক কাজে
ব্যবহার করেন এবং বিপর্যয় কাটাতে জার্মান বেকার, মধ্যবিত্ত, শ্রমিক সকলকে বুঝান যে, নাৎসিরা
ক্ষমতায় এলে এ সকল সমস্যার সমাধান তারা করবে। নাৎসিরা জার্মান কৃষকদের সকল প্রকার সাহায্য
দানের প্রতিশ্রæতি দেয়। ছোট দোকানদার ও ব্যবসায়ী শ্রেণীকেও সাহায্য দানের প্রতিশ্রæতি দেন। ফলে
সকল শ্রেণীর জনগণ হিটলারের দ্বারা আশ্বস্তহয়ে নাৎসি দলের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন।
চার. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানিকে একতরফাভাবে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ঘোষণা করে তার শাস্তিস্বরূপ
যুদ্ধজনিত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করতে বলা হয়। জার্মানির নাৎসিদলের নীতিগত আপত্তি ছিল যে, নৈতিক
কারণে জার্মানি ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নয়। যুদ্ধের জন্যে শুধুজার্মানি দায়ী ছিল না, মিত্রশক্তিও দায়ী
ছিল। তারা আরও বলে যে, বেকার সমস্যা, খাদ্য সংকট, মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি দূরাবস্থার কারণে জার্মানি
কোনো মতেই ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না। নাৎসি দলের এই ঘোষণাকে জার্মানি বুদ্ধিজীবী, জনসাধারণ
ও জাতীয়তাবাদী দল সমর্থন করে এবং হিটলারকে একমাত্র মুক্তিদাতা মনে করে।
পাঁচ. হিটলারের নাৎসি প্রচার যন্ত্রগুলো জার্মান জাতীয়তাবাদকে তীব্রতর করার জন্যে জাতীয়তাবাদী
ভাবধারার ব্যাপক প্রচার চালায়। জার্মানরা আর্যজাতির বংশধর এবং শ্রেষ্ঠ জাতি। এই তত্ত¡সর্বদা তারা
প্রচার করে। এর সাথে তীব্রইহুদি বিদ্বেষ প্রচারিত হয়। জার্মান শিশুদের ইহুদি বিদ্বেষী শিক্ষা দেওয়া
হয়। জার্মান যুবশক্তি এই সমস্তপ্রচারে আত্মহারা হয়ে হিটলারকে শ্রেষ্ঠ মানব মনে করে। এ সুযোগকে
কাজে লাগিয়ে হিটলার তার নাৎসিবাদের পথকে আরও প্রশস্তকরেন।
ছয়. নাৎসি বিপ্লবের পাশ্চাতে নাৎসি নেতা হিটলারের অবদান ছিল সর্বাধিক। ভেঙ্গে পড়া
জার্মানজাতিকে তিনি তার নেতৃত্ব ও ভাষণের সম্মোহনী শক্তিতে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দেন। তিনি
জার্মান জাতির পূর্বগৌরবের কথা সকল সময় বলে জাতির মনোবল বাড়াতে সক্ষম হন। ফলে জার্মান
যুবশক্তি হিটলারকে মুক্তিদাতা হিসেবে ভাবতে শুরু করে। হিটলার তার সহকর্মীদের বাছাই করার সময়
তাদের বংশ কৌলিণ্য দেখেননি। তিনি তাদের গুণ ও তাঁর প্রতি আনুগত্য দেখেন। তার এই সম্মোহনী
শক্তির দ্বারা তিনি নাৎসিদলকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন।
হিটলারের অভ্যন্তরীণ সংস্কার
কোনো গণঅভ‚্যত্থানের মাধ্যমে হিটলার ক্ষমতায় আসেননি। তার জনপ্রিয়তা থাকলেও রাইখস্ট্যাগে
(জার্মান আইন সভা) তার দল প্রথম দিকে ছিল সংখ্য্রালঘু। সমসাময়িক জার্মান নেতৃবৃন্দের দুর্বলতা,
পারস্পরিক অবিশ্বাস দেশটিতে যে রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি করেছিল, হিটলার সেই অনুক‚ল
পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছিলেন।
সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে হিটলার জার্মান আইন সভার অনুমোদন ছাড়াই আইন প্রণয়ন ও শাসন
কার্যপরিচালনা করতে থাকেন। প্রাদেশিক পরিষদ বা ডায়েট বিলোপ করে তিনি এককেন্দ্রিক শাসন
কাঠামো গড়ে তোলেন। জার্মানির শক্তিবৃদ্ধির জন্যে তিনি চেয়েছিলেন সর্বক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণহতে।
অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের উদ্দেশ্যে তিনি শিল্প, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, কৃষি কার্য, কর্মসংস্থান প্রভৃতির
ওপর গুরুত্বদেন। শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যে একদিকে যেমন ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার হরণ করা
হয়, অন্যদিকে শ্রমিকের কাজের সময় হ্রাস করে বেকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। শ্রমিক
কল্যাণে সারাদেশে শ্রমিক সংঘ গড়ে ওঠে। বহু অস্ত্রকারখানা স্থাপিত হওয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি
হয়। কৃত্রিম উপায়ে পেট্রোল, পশম, রাবার প্রভৃতি উৎপাদনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কাঁচামালের বন্টন
নিয়ন্ত্রিত হয়। কয়লা, লোহা, ইস্পাত প্রভৃতি ভারি শিল্পের ওপর জোর দেওয়া হয়।
হিটলারের সম্প্রসারণ নীতি ঃ সমরসজ্জা
হিটলারের মূল লক্ষ্য ছিল ভার্সাই-এর অভিশাপ থেকে মুক্ত করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জার্মানির শ্রেষ্ঠত্ব
প্রতিষ্ঠা করা। তীব্রপ্রতিশোধস্পৃহা তাঁর প্রতিটি ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে। ১৯২৫ সালে পরবর্তী
বছর লোকার্নো চুক্তিসমূহ স্বাক্ষর করায় জার্মানিকে জাতিপুঞ্জের (খবধমঁব ড়ভ ঘধঃরড়হং) সদস্য করা
হয়েছিল। ১৯৩৩ সালে জার্মানি এর সদস্যপদ ত্যাগ করে। নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে পারস্পরিক সামরিক
শক্তির পরিমাণ নিয়ে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। আত্মরক্ষার স্বার্থেউভয়েই উভয়ের
চেয়ে অধিক পরিমাণ সামরিক শক্তি অর্জন করতে চায়। কোনো সমাধান না হওয়ায় জার্মানি সম্মেলন
ত্যাগ করে ও নিজের প্রয়োজন মতো শক্তি সঞ্চয়ে মনোনিবেশ করে। ভার্সাই সন্ধির শর্তগুলো ভঙ্গ করে
হিটলার ফ্রান্সের কাছ রথকে আলসাস-লোরেন ও সার অঞ্চল ও পোল্যান্ডকে দেওয়া ডানজিগ ও পোলিশ
করিডোর ফেরত চান। পোল্যান্ডের উর্বর কৃষিভ‚মি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেন অঞ্চলের ওপর
তাঁর নজর ছিল। বৃহত্তম জার্মানি গড়ার আশায় অস্ট্রিয়ার জার্মান ভাষাভাষী অঞ্চল ও চেকো¯েøাভাকিয়ার
সুদেতানল্যান্ড-ও তিনি দাবি করেন। তাঁর মতে, জার্মান ঐক্য আন্দোলনে অস্ট্রিয়াকে অন্তর্ভুক্ত না করে
বিসমার্কভুল করেছিলেন। জার্মান হিসেবে হিটলারের কর্তব্য সেই ‘ঐতিহাসিক ভ্রান্তিকে' সংশোধন
করা।
১৯৩৪ সালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে হিটলার পোল্যান্ডের সঙ্গে দশ বছরের অনাক্রমণ চুক্তি করেন।
এই চুক্তির ফলে জার্মানির জঙ্গি মনোভাবের আশঙ্কা থেকে ইউরোপের রাষ্ট্রবর্গমুক্ত হয়। তাঁর উদ্দেশ্য
ছিল পোল্যান্ডকে বিচ্ছিন্নকরে ফ্রান্সকে দুর্বল রাখা। কিন্তুকিছুদিনের মধ্যেই ভার্সাইয়ের শর্তভঙ্গ করে
হিটলার জার্মানির সঙ্গে অস্ট্রিয়াকে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেন। এই সংযুক্তিকরণের প্রচেষ্টা ইতিহাসে
আন¯øুজ (অহংপযষঁংং) নামে পরিচিত। অস্ট্রিয় চ্যান্সেলর ডল্ফাস (উড়ষষভঁংং) নাৎসি ঘাতকের হাতে
নিহত হন। জার্মান সেনা অস্ট্রিয়ায় প্রবেশ করে। প্রতিশ্রæতি ভঙ্গের অভিযোগে মুসোলিনি অস্ট্রিয়াকে
রক্ষার জন্যে সেনা প্রেরণ করে। পরিস্থিতির গুরুত্ববিবেচনা করে হিটলার পিছিয়ে আসেন। ইউরোপের
সব রাষ্ট্রঅপচেষ্টাকে ধিক্কার জানায়। ভার্সাইয়ের শর্তঅনুসারে ১৫ বছর পর সার অঞ্চলে গণভোট
হওয়ার কথা। ১৯৩৫ সালে এ উপলক্ষে প্রস্তুতি শুরু হয়। নাৎসিগণ সেখানে জোর প্রচারকার্যশুরু
করলে অন্যান্য রাষ্ট্রবর্গ আতঙ্কিত হয়। ইংল্যান্ডের প্রস্তাবমত কয়েকটি নিরপেক্ষ ইউরোপীয় রাষ্ট্রের
সামরিক তত্ত¡াবধানে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। সার-এর অধিবাসীগণ জার্মানির সঙ্গে সংযুক্তির পক্ষে মত
প্রকাশ করলে দীর্ঘদিন পরে তারা মিলিত হন। ১৯৩৬ সালে মার্চেহিটলার সৈন্যমুক্ত রাইনল্যান্ড
অধিকার করেন। এইভাবে ভার্সাই সন্ধির আঞ্চলিক পুনর্গঠন সংক্রান্তবিধানগুলো হিটলার একের পর
এক অস্বীকার করতে থাকেন।
এর পরই হিটলার ভার্সাই সন্ধির সামরিক শর্তাদিও ভঙ্গ করা শুরু করেন। ভার্সাই-এ স্থির হয়েছিল
জার্মানি এক লক্ষ স্থলসেনা এবং ছোট নৌবহর রাখতে পারবে। জার্মানির বিমান বাহিনী রাখা নিষিদ্ধ
করা হয়। নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে আসার পর জার্মানি ৩৫ ডিভিশন সেনা গড়ে তোলার
পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বাধ্যতামূলক সৈনিকবৃত্তি প্রবর্তিত হয়। অস্ত্রসজ্জায় জার্মানি অন্যান্য রাষ্ট্রকে
ছাড়িয়ে যায়। রণতরী, ট্যাংক, বিমান, কামান প্রভৃতির উৎপাদন ছাড়াও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, সাঁজোয়া গাড়ি,
মোটর সাইকেল বাহিনী, বিস্ফোরক বোমা প্রভৃতির সাহায্যে সামরিক বাহিনীর আধুনিকীকরণ সম্পন্ন
হয়। নাৎসি সরকারের অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা ড. সাকেট জার্মান অর্থনীতিকে অস্ত্রসজ্জার প্রয়োজনে
পরিচালিত করেছিলেন। জার্মানি প্রস্তুত হচ্ছিল সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্যে।
হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানির বৈদেশিক সম্পর্কনির্ধারিত হয়েছিল কয়েকটি নাৎসি তত্ত¡ ও কিছুবাস্তব
প্রয়োজনের সমন¦য়ে। নাৎসিগণ বিশ্বাস করতো জার্মানগণই প্রকৃত শাসক জাতি। কারণ আর্যজাতি
পৃথিবীতে সর্বোত্তম এবং নর্ডিকগণ আর্যদের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি। খাঁটি ও বিশুদ্ধ রক্তের জার্মানরাই হচ্ছে
নর্ডিক। সুতরাং, জার্মান জাতির কর্তব্য তাদের অধীনে ইউরোপে একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলা। শুধু
তাই নয়, বলা হলো, প্রাচ্যের নি¤œজাতিগুলোকে জয় করে জার্মানদের দাসত্বের কাজে লাগানো হবে।
দক্ষিণ আমেরিকাসহ সমগ্রবিশ্বেএই আধিপত্য প্রসারিত করা প্রয়োজন। একদিন আসবে যখন তৃতীয়
রাইখের অধীনে এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে উঠবে যা ইংরেজ সাম্রাজ্যের স্থলাভিষিক্ত হবে। জার্মান
দার্শনিক স্পেঙ্গলার এই তত্ত¡ প্রচার করেন। ইতিহাসে এটি হেরেনভোক তত্ত¡(ঐবৎৎবহাড়ষশ ঞযবড়ৎু)
নামে পরিচিত।
ক্রমবর্ধমান জার্মান জনসংখ্যার স্থান সংকুলানের জন্যে হিটলার ঘোষণা করেন যে, জার্মানির আরো ভ‚-
খÐ প্রয়োজন। এই উদ্দেশ্যে তিনি চেকো¯েøাভাকিয়া ও অস্ট্রিয়া দখলের পরিকল্পনা করেন। পোল্যান্ড
নিরপেক্ষ থাকবে এটা ধরে নিয়েই তিনি এরপর ফ্রান্স আক্রমণের কথা চিন্তা করেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি
পূর্ব ইউরোপ ও সোভিয়েত রাশিয়া অধিকারেরও পরিকল্পনা করেন। এই তত্ত¡ লেবেনশ্রাম
(খবনবহংৎধঁস) বা বাসভ‚মি তত্ত¡নামে পরিচিত।
হিটলার জার্মানভাষী সব মানুষকে বৃহত্তর জার্মানির শাসনাধীনে আনতে চান। এজন্যে শুধুঅস্ট্রিয়া ও
চেকো¯েøাভাকিয়ার সুদেতানল্যান্ড নয়, পূর্বতন হ্যাপসবুর্গ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত সব অঞ্চল ও প্রথম
বিশ্বযুদ্ধের পূর্বের জার্মান সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেন।
জার্মানির ভৌগোলিক অবস্থান তার পররাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করে। মধ্য ইউরোপে তার অবস্থানের ফলে
পূর্বও পশ্চিম দিক থেকে আক্রান্তহওয়ার সম্ভাবনা জার্মানিকে আশঙ্কার মধ্যে রাখতো। সেজন্যে জার্মান
জাতীয়তাবাদ জঙ্গি হতে বাধ্য। পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামরিক প্রয়োজন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল।
সর্বোপরি ভার্সাই ব্যবস্থাকে বাতিল করে জার্মান কর্তৃত্বের অধীন এক ইউরোপ গড়ে তোলার স্বপ্নে
নাৎসিগণ বিভোর ছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ফুয়েরারের গগণচুম্বী উচ্চাকাক্সক্ষা এবং প্রতিশোধ
স্পৃহা।
রোম বার্লিন অক্ষ চুক্তি -১৯৩৬
জার্মানি সকল প্রকারÑবিশেষ করে লীগের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে আবিসিনীয় যুদ্ধে ইতালিকে সমর্থন
জানায়। ফলশ্রæতিতে এর কিছুদিন পরে ফ্যাসিস্ট ইতালির সঙ্গে নাৎসি জার্মানি কমিউনিস্ট বিরোধী
চুক্তি সম্পাদন করে। ক্রমে ঐ চুক্তি রোম-বার্লিন অক্ষ চুক্তিতে পরিণত হয়। রোম-বার্লিন অক্ষ চুক্তির
গুরুত্ব এই ছিল যে, এ চুক্তির দ্বারা জার্মান ইতালি জোট ফ্রান্সকে বেষ্টন করে ফেলে। একই বছর
নভেম্বরে হিটলার কমিউনিস্টদের বিরোধিতা করার জন্যে একটি চুক্তি (অহঃর-ঈড়সরহঃবৎহ ঞৎবধঃু)
করেন। এভাবে জার্মানি, ইতালি ও জাপান এই তিন রাষ্ট্রের এক জোট গঠিত হয়। ইতিহাসে এটা অক্ষ
শক্তি নামে পরিচিত।
এরপর হিটলার চেকো¯েøাভাকিয়ার দিকে নজর দেন। চেকোশ্লোভাকিয়ার সুদেতানল্যান্ড জেলাতে ৩.৫
মিলিয়ন জার্মান অধিবাসীরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। হিটলারের নির্দেশে সুদেতেন জেলায় নাৎসি তৎপরতা
বাড়ে। হিটলার সুদেতেন অঞ্চল আক্রমণ করার হুমকি দিলে ফ্রান্স ও রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির যুদ্ধের
সম্ভাবনা দেখা দেয়। কারণ ফ্রান্সে রুশ আত্মরক্ষা চুক্তি অনুসারে ফ্রান্স ও রাশিয়া চেকোশ্লোভাকিয়াকে
জার্মান আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্যে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ ছিল। নানা বাধা সত্তে¡ও জার্মান সীমান্তেবিশৃঙ্খলা
সৃষ্টি অজুহাতে হিটলার চেকোশ্লোভাকিয়া দখল করে নেন।
এরপর হিটলার একের পর এক নীতি গ্রহণ করে রাশিয়ার মিত্রতা থেকে পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলোকে বিচ্ছিন্ন
করে ফেলেন এবং ১৯৩৯ সারের ১ সেপ্টেম্বর মাসে পোল্যান্ড আক্রমণের নির্দেশ প্রদান করলে ইঙ্গ-
ফরাসি শক্তি জার্মানির বিরুদ্ধে ১৯৩৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর যুদ্ধ ঘোষণা করে। এইভাবে বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ
হয়।
পাঠোত্তর মূল্যায়ণ
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন।
১। ১৮৯৯ সালে হিটলার জন্মগ্রহণ করেনÑ
(ক) জার্মানির বার্লিনে (খ) সুদেতানল্যান্ডে
(গ) অস্ট্রিয়ার ব্রাউনাউ গ্রামে (ঘ) জার্মানির বন শহরে।
২। হিটলার কাকে অপসারণ করে নাৎসি দলের নেতৃত্বনেনÑ
(ক) গোয়েবলস (খ) হেস
(গ) রোজেনবুর্গ (ঘ) ডেক্সলার।
৩। হিটলারের আত্মজীবনীর নামÑ
(ক) মেইন কার্ম্ফ (খ) মেইন বুক
(গ) হলি বুক (ঘ) হাই কাম্ফ।
৪। জার্মানি জাতীয় আইন পরিষেরদ নামÑ
(ক) ডায়েট (খ) রাইখস্ট্যাগ
(গ) কমন সভা (ঘ) কংগ্রেস।
৫। নাৎসি দলীয় জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেনÑ
(ক) হিন্ডে বুর্গ (খ) হোর্স্টওয়েসেল
(গ) হিটলার (ঘ) রোমেল।
উত্তর ১। (ক), ২। (ঘ), ৩। (ক), ৪। (খ), ৫। (খ)
রচনামূলক প্রশ্ন
১। জার্মানিতে হিটলারের উত্থান ও নাৎসি দলের ক্ষমতা দখলের বিষয়টি বর্ণনা করুন।
২। জার্মানিতে নাৎসি দলের উত্থানের পটভ‚মি নির্দেশ করুন।
৩। জার্মানিতে হিটলারের অভ্যন্তরীন সংস্কার সম্পর্কেবর্ণনা করুন।
৪। হিটলারের সমরসজ্জা এবং ভ‚খÐ দখলের বিষয়টি বর্ণনা করুন।
সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি
১। অষধহ চধষসবৎ ঞযব চবহমঁরহ উরপঃরড়হধৎু ড়ভ ঞবিহঃরবঃয ঈবহঃঁৎু ঐরংঃড়ৎু.
২। ঔ.ঐ. ঐধুবং ঈড়হঃবসঢ়ড়ৎধৎু ঊঁৎড়ঢ়ব ঝরহপব ১৮৭০.
৩। ই, এইচ কার ; দুই মহাযুদ্ধের অন্তবর্তীকালীন আন্তর্জাতিক সম্পর্কেইতিহাস (বাংলা একাডেমি)।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত