এশিয়া ও আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের পতনের প্রেক্ষাপট ও কারণ আলোচনা করুন।


 এশিয়া ও আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের পতনের কারণসমূহ জানতে পারবেন;
 এশিয়া ও আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের পতন সম্পর্কেজানতে পারবেন।
১৯৪৫ সালে যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি হয় তখন পৃথিবীতে পরাধীন মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৫
কোটি। অন্যদিকে ১৯৯১ সালে পরাধীন মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫ লক্ষ। পৃথিবীতে দ্রæতহারে
পরাধীন দেশগুলো যে স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল তার কারণ পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহ তাদের
উপনিবেশগুলোকে স্বাধীনতা প্রদান করে বা প্রদান করতে বাধ্য হয়। যে প্রক্রিয়ায় এশিয়া, আফ্রিকা ও
ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো স্বাধীনতা অর্জন করে তাকে অনুপনিবেশীকরণ বলে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের
পর এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, আজও তা সম্পূর্ণ হয়নি। পৃথিবীর কিছুকিছুক্ষুদ্রভ‚-খÐে আজও
ঔপনিবেশিক শাসন চালুআছে। যেমন, প্রশান্তমহাসাগরের কিছুক্ষুদ্রদ্বীপ এখনও পরাধীন রয়েছে।
এশিয়া ও আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের পতন হয়েছিল প্রধানত তিনটি কারণে।
(ক) জাতীয়তাবাদের উত্থান ও বিকাশ;
(খ) সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দুর্বলতা;
(গ) জাতিসংঘের ভ‚মিকা।
(ক) জাতীয়তাবাদের উত্থান ও বিকাশ
পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির স্পর্শেউপনিবেশে জাগরণ সৃষ্টি হয়। ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো শাসন ও
শোষণের পাশাপাশি তাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটিয়েছিল। পাশ্চাত্য সভ্যতার কতগুলো মৌল
উপাদান-যেমন ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লব, আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম, ফরাসি বিপ্লব এই মহত্তম
ঘটনাবলিতে মানুষের অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকারের কথা বলা হয়েছিল। উপনিবেশগুলোতে যখন
পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিস্তার লাভ করে তখন এই মহত্তম ঘটনাবলিও একটি ক্ষুদ্রঅংশকে
আলোড়িত করে। প্রতিটি উপনিবেশেই একটি শিক্ষিত শ্রেণী গড়ে ওঠে। সংখ্যায় এরা ক্ষুদ্রহলেও
অর্থবিত্তে এরা ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী। কিন্তুরাজনৈতিক ক্ষমতা সাম্রাজ্যবাদী দেশের হাতে থাকায় এরা
অসন্তুষ্ট ছিল। ফলে তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ¡ী হিসেবে মনে করে। তাই প্রতিটি
উপনিবেশে যখন আন্দোলন ও বিদ্রোহ দেখা দেয় তখন এরা নেতৃত্ব দেয়। এই শ্রেণীটির নেতৃত্বেযে
জাতীয়তাবাদের বিকাশ হয় তা গণমানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যে যথেষ্ট ছিল না। কিন্তুতারা
গণমানুষকে জড়িত করেছিল জাতীয়তাবাদী আদর্শে। এ অবস্থায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ দেখল যে, যদি
এই শ্রেণীকে ক্ষমতা না দেয়া যায়, তাহলে শ্রমিক কৃষক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রæত সমাজতান্ত্রিক
আদর্শছড়িয়ে পড়বে। ফলে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো এই ক্ষুদ্রশ্রেণীর (উঠতি বুর্জোয়া) হাতে ক্ষমতা
প্রদান নিরাপদ মনে করেছিল।
উপনিবেশে জাতীয়তাবাদ বিকাশে কিছু আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি প্রভাব ফেলে। কিছু বিষয়
আন্তর্জাতিকভাবে সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। যেমনÑ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ১৩টি
রাজ্য ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছিল। ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা
সংগ্রামের ঘোষণায় মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছিল যা ব্যাপক মানুষকে অনুপ্রাণিত করে
ছিল। অনেক ঐতিহাসিক আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামকে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণমাইলফলক
(গরষংঃড়হব ড়ভ ফবসড়পৎধঃরপ ৎবাড়ষঁঃরড়হ) বলে অভিহিত করেছেন। ফরাসি বিপ্লব মানুষের


স্বাধিকার,স্বাধীনতা অর্জনের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে বক্তব্য রেখেছিল। ১৯০৪ সালে জাপানের মত
ক্ষুদ্রদেশের কাছে রাশিয়ার পরাজয় একটি গুরুত্বপূর্ণঘটনা। দু'টি কারণে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম
জাপান একটি ক্ষুদ্রও এশিয়ার দেশ, দ্বিতীয়ত এটি ইউরোপের একটি বড় শক্তিকে পরাজিত করেছিল।
এরপর ১৯১৭ সালের বলশেভিক বিপ্লবের কথা বলা যায় যা সর্বহারার বিপ্লব হিসেবে পরিচিত। এই
বিপ্লব উপনিবেশ বিরোধী বক্তব্যের জন্যে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে বেগমান করেছিল। সর্বশেষ
ঘটনাটি হচ্ছে, আটলান্টিক চার্টার। ফ্রান্স, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রও সোভিয়েক ইউনিয়নের মত বৃহৎ শক্তি
স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক চুক্তি হল আটলান্টিক চার্টার। এতে বলা হলো উপনিবেশের জনগণকে স্বাধীনতা
দেয়া হবে।
(খ) সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দুর্বলতা
বৃহৎ দুটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হচ্ছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। এদের দুর্বলতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রকট হয়ে
উঠে। এই দুর্বলতার কারণ কি? কিভাবে এই দুর্বলতা সৃষ্টি হয়েছিল-এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়
যে, সাম্রাজ্যবাদকে দুর্বল করার পেছনে দুই মহাযুদ্ধ দায়ী ছিল। বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে মূলত
অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দি¡তা ও ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দি¡তার ফলে। প্রধানত, পশ্চিম ইউরোপের পুঁজিবাদী ও
সাম্রাজ্যবাদী ক্ষমতার দ্বন্দে¡র কারণেই যুদ্ধ অনিবার্যহয়ে ওঠে।
ব্রিটেনের তুলনায় ফ্রান্সের অবস্থা শোচনীয় ছিল। যুদ্ধের পর ফ্রান্সের সমাজ ব্যবস্থার কাঠামো প্রায় ভেঙ্গে
পড়ে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দুর্বলতা সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় আর্থার মাবউইক (অৎঃযঁৎ
গধৎরিপশ) এর ঊীঢ়ষড়ংরড়হ ড়ভ ইৎরঃরংয ঝড়পরবঃু ১৯১৪-১৯১৮ গ্রন্থে। এখানে বৃটিশ সমাজে যুদ্ধের
কিরূপ প্রভাব পড়েছিল তা আলোচনা করা হয়েছে। আরো একজন লেখক হচ্ছেন ডি.এইচ. লরেন্স
(উ.ঐ. খধৎিবহপব) যিনি জাতিতে ইংরেজ এবং উদারপন্থী গণতন্ত্রেবিশ্বাসী ছিলে\ তিনি ডেথ-অব
ইংল্যান্ড (উবধঃয রহ ঊহমষধহফ) শিরোনামে একটি কবিতা লেখেন। তিনি এতটাই বিষন্নছিলেন যে,
ব্রিটেন ছেড়ে ইতালিতে চলে যান এবং এ কবিতা লেখেন। প্রকৃতপক্ষে ১৯১৯-এর আগে ব্রিটেন ছিল
সবদিক থেকে পৃথিবীর এক নম্বর সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। প্রথম মহাযুদ্ধের পর দেশটির অবক্ষয় শুরু হয়
এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর তার পতন ঘটে। ফ্রান্স ব্রিটেনের অনেক পরে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দি¡তায়
নামে। তুলনামূলকভাবে ব্রিটেনের পর ফ্রান্সের অবস্থান ছিল। প্রথম মহাযুদ্ধে সরাসরিভাবে ফ্রান্স
ব্রিটেনের চেয়ে ক্ষতিগ্রস্তহয়। কারণ প্রতিবেশী ফ্রান্সের উপরই জার্মানি সবচেয়ে বড় আগ্রাসন পরিচালিত
করেছিল। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হবার পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী চার্চিল ছিলেন ‘বিজয়ের নামক' বা
ডধৎ ঐবৎড়। অথচ তিনিই পরবর্তীনির্বাচনে পরাজিত হন। বিশ শতকের শুরু থেকে দেখা যাচ্ছে
ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের উপনিবেশ ধরে রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। তখন এ দু'টো রাষ্ট্রের ভিতর
উপনিবেশ-বিরোধী জনমত গড়ে উঠে।
অতএব, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দুর্বলতাই ছিল অনুপনিবেশীকরণের বড় কারণ।
(গ) জাতিসংঘের ভ‚মিকা (জড়ষব ড়ভ ঃযব টহরঃবফ ঘধঃরড়হং)
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর সৃষ্টি হয়েছিল জাতিসংঘ। এই সংস্থাটি উপনিবেশীকরণ ত্বরানি¦ত করেছিল।
প্রথমত, জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর পৃথিবীর বিভিন্নউপনিবেশে স্বাধীনতা প্রদানের প্রশ্নেএকটি প্রস্তাব
উত্থাপিত হয়েছিল। এটা হচ্ছেÑ "উবপষধৎধঃরড়হ ড়হ ঃযব এৎধহঃরহম ওহফবঢ়বহফবহপব ঃড় ঃযব
ঈড়ষড়হরধষ ঈড়ঁহঃৎরবং ধহফ চবড়ঢ়ষবং." ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রস্তাবটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত
হয়। এ সময় থেকেই জাতিসংঘ বিশষভাবে অনুপনিবেশীকরণের ব্যাপারে সক্রিয় থাকে। এই ঘোষণায়
তিনটি মৌল বক্তব্য ছিলÑ
১. অনুপনিবেশীকরণ শর্তহীনভাবে ত্বরানি¦ত ও দ্রæত করতে পারে।
২. উপনিবেশীবাদ মানবাধিকার পরিপন্থী এবং বিশ্বশান্তির পক্ষে একটি বড় বাঁধা।
৩. জাতি, ধর্মনির্বিশেষে পৃথিবীর প্রতিটি উপনিবেশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে স্বাধীনতার উপযোগী
করে গড়ে তুলতে হবে।

এই তিনটি বক্তব্যের মাধ্যমে জাতিসংঘ অনুপনিবেশীকরণ সংক্রান্তবিষয়ে ভ‚মিকা পালন করেছিল। এই
ঘোষণার পর তা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জাতিসংঘ বেশ কয়েকটি অঙ্গসংগঠন গড়ে তুলল। এরকম ৭টি
প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নি¤œরূপÑ
১। অছি পরিষদ
২। অনুপনিবেশীকরণ সংক্রান্তবিশেষ কমিটি
৩। নিরাপত্তা পরিষদ
৪। অবরোধ
৫। বিশেষ মিশন প্রেরণ
৬। উপনিবেশে নির্বাচন তত্ত¡াবধান
৭। কারিগরী সহায়তা।
এই ৭টি প্রতিষ্ঠান বা প্রক্রিয়াকে জাতিসংঘ তার ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজে লাগিয়েছিল।
১. অছি পরিষদ ঃ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর জাতিসংঘ উপনিবেশগুলোকে তত্ত¡াবধানের দায়িত্ব দেয় অছি
পরিষদের হাতে। পরিষদ উপনিবেশে যাতে কোনো মানবতা বিরোধী কর্মকাÐ পরিচালিত না হয়
সেদিকে নজর দিবে।
দ্বিতীয়, উপনিবেশের জনগণকে স্বায়ত্তশাসনের উপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। প্রশিক্ষণ ও
শিক্ষা বিস্তারে সহায়তা করা, নিজেদের শাসন করার যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করে অছি পরিষদ।
২. অনুপনিবেশীকরণ সংক্রান্তবিশেষ কমিটি (ঝঢ়বপরধষ ঈড়সসরঃঃবব ভড়ৎ উব-পড়ষড়হরুধঃরড়হ) ঃ
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৬১ সালে এ কমিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কমিটির
উদ্দেশ্য হচ্ছে ১৯৬০ সালে ৪ ডিসেম্বরের ঘোষণা বাস্তবায়নের কাজ করে যাওয়া।
৩. নিরাপত্তা পরিষদ (ঝবপঁৎরঃু ঈড়ঁহপরষ) ঃ মূল দায়িত্বহচ্ছে বিশ্বশান্তিও নিরাপত্তা রক্ষা করা। এই
দায়িত্বের পাশাপাশি অন্য আরেকটি দায়িত্ব হচ্ছে উপনিবেশে ঔপনিবেশিক শক্তি ও জাতীয় মুক্তি
সংগ্রামীদের মধ্যে সংঘর্ষযাতে যুদ্ধে রূপ নিলে তা মধ্যস্থতা ও মীমাংসা করা। জাতিসংঘ ঘোষণা করে
যে, অবিলম্বেনিরাপত্তা পরিষদ এজন্যে ব্যবস্থা নেবে।
৪. অবরোধ (ঝধহপঃরড়হং) ঃ এটা মূলত অর্থনৈতিক অবরোধ। অন্যান্য দেশসমূহের সাথে অবরোধভুক্ত
দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কছিন্নকরে দেয়া হল মূল কাজ। যদি কোনো দেশ জোর করে উপনিবেশ দখল
করে রাখে, তখন তার উপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা যেতে পারে। যেমন, ১৯৬১ সালে
দক্ষিণ আফ্রিকার উপনিবেশ নামিবিয়াকে জাতিসংঘ স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয়। কিন্তুদক্ষিণ
আফ্রিকা জোর করে তা দখল করে রাখলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা জাতিসংঘ অবরোধ আরোপ
করে।
৫. বিশেষ মিশন প্রেরণ (ঝঢ়বপরধষ গরংংরড়হ) ঃ এরকম বিশেষ মিশন প্রেরণের উদ্দেশ্য দু'রকম।
প্রথমত, কোনো একটি উপনিবেশে কি রকম অবস্থা বিরাজ করছে তা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করার জন্য
কোনো কোনো উপনিবেশে বিখ্যাত ব্যক্তিদের মিলিয়ে বিশেষ মিশন প্রেরণ করা হয়। এরা জাতিসংঘে
সরেজমিনে রিপোর্টপ্রেরণ করে।
দ্বিতীয়ত, উপনিবেশের জনগণ স্বাধীন হতে চায় কিনা অথবা কখন হতে চায় তা বিচার করা। কারণ
অনেক সময় উপনিবেশিক শক্তি জাতিসংঘে বলত, ‘আমার উপনিবেশের জনগণ স্বাধীনতা চায়না'। ফ্রান্স
এ কাজটি করেছে সবচেয়ে বেশি।


৬. উপনিবেশে নির্বাচন তত্ত¡বধান (ঊষবপঃরড়হ ঈড়-ড়ৎফরহধঃরড়হ রহ ঈড়ষড়হু) ঃ উপনিবেশে নির্বাচন
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করার জন্যে জাতিসংঘ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দল প্রেরণ করে।
৭. কারিগরী সহায়তা (ঞবপযহরপধষ অংংরংঃধহপব) ঃ উপনিবেশিক শাসনের দুটো প্রভাব রয়েছে (১)
ইতিবাচক ও (২) নেতিবাচক। নেতিবাচক প্রভাবটি হচ্ছে ঔপনিবেশিক শক্তির শোষণের ফলে দারিদ্র্য
বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বলতা, উন্নয়নের জন্যে দক্ষ জনশক্তির অভাব। এছাড়া কারিগরী শিক্ষা,
গণমুখী শিক্ষা কখনই থাকে না। ফলে স্বাধীন হবার ঊষালগ্নেউপনিবেশগুলো যথার্থঅর্থেঅসুবিধায়
পড়ে।
এজন্যে জাতিসংঘ উপনিবেশগুলোতে কারিগরী সহায়তা দেয়। প্রশিক্ষণ দেয় উপনিবেশের জনগণকে।
যেমন ১৯৯০ সালে নামিবিয়া স্বাধীন হবার অনেক আগে থেকেই জাতিসংঘ পার্শ্ববর্তী জাম্বিয়াতে
কারিগরী সহায়তা ও প্রশিক্ষণের জন্যে গড়ে তুলেছিল ইউনিন (টহরঃবফ ঘধঃরড়হং ওহংঃরঃঁঃব ভড়ৎ
ঘধসরনরধ টঘওঘ) যা কয়েক হাজার নামিবিয়ানকে প্রশিক্ষণ দেয়।
এশিয়া ও আফ্রিকার উপনিবেশবাদের পতন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বথেকেই এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্নউপনিবেশে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছিল।
যুদ্ধের প্রয়োজনে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো নানান শাসনতান্ত্রিক সুবিধা দানের বিনিময়ে অধীনস্থ
দেশগুলোর জনসাধারণের সমর্থন লাভের চেষ্টা করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সফল হয়নি। ঔপনিবেশিক
শক্তিগুলোর শোষণ ও অত্যাচারের সুযোগে অনেক সময় ফ্যাসিস্ট শক্তিবর্গতাদের মিত্রপক্ষ বিরোধী
প্রচারক জোরদার করতে পেরেছে। ‘এশিয়া এশিয়াবাসীর জন্য' জাপানের এই শ্লোগান দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্বএশিয়ায় ইংরেজ, ওলন্দাজ ও ফরাসিদের বিরুদ্ধে তার প্রাথমিক সাফল্যকে ত্বরানি¦ত করেছিল।
উপনিবেশবাসীর ভুল ভাঙ্গতে অবশ্য বিলম্ব হয়নি। মিত্রপক্ষের প্রতি আক্রমণে তারা সহায়তা করেছে।
উপনিবেশবাসীগণ মিত্রশক্তির জয়কে স্বাগত জানালেও তার অন্তর্ভুক্ত ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে
আন্দোলনও তীব্রকরে তোলে। ফলে অনেক উপনিবেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। অনেকে সেই লক্ষ্যে
বহুদূর এগিয়ে যায়। ইংরেজ, ওলন্দাজ, ফরাসি প্রভৃতি রাষ্ট্রের সাম্রাজ্য একে একে হাতছাড়া হয়ে যায়।
নি¤েœবিষয়টি সংক্ষেপে দেশওয়ারী আলোচনা করা হল।
উত্তর আফ্রিকায় ইংরেজ উপনিবেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল সুদান। মিশরে জাতীয়তাবাদী
আন্দোলনের প্রভাবে সেখানেও আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৫৩ সালে ইঙ্গ-মিশরীয় সমঝোতা অনুসারে
সুদানে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মেনে নেওয়া হয়। ১৯৫৬ সালে সুদান স্বাধীনতা লাভ করে ও প্রজাতন্ত্র
প্রতিষ্ঠিত হয়।
ফ্রান্স ঃ ফরাসিগণ প্রথম উপনিবেশ স্থাপন করে কোচিন চীনে। তারপর আন্নাম, টংকিং, ক্যাম্বোডিয়া ও
লাওস অধিকার করে সম্মিলিতভাবে ফরাসি ইন্দোচীন গড়ে তোলে। এদের মধ্যে কৃষ্টিগত পার্থক্য
থাকলেও সকলেই ফরাসি সংস্কৃতি গ্রহণ করেছিল। মেইজি পুনরুদভ্যুদয়ের পর জাপানের দ্রæত উত্থান ও
রুশ জাপান যুদ্ধে তার অবিস্মরণীয় বিজয় ইন্দোচীনের অধিবাসীদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের স্ফূরণ
ঘটায়। ১৯১১ সালে চীনা বিপ্লবেও তারা অনুপ্রাণিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অসংখ্য স্থানীয় লোক
ফরাসিবাহিনীতে কাজ করলেও ফ্রান্স কোনো রকম রাজনৈতিক সুবিধা দান করেনি। ১৯২৫ সালের
দিকে সমাজতন্ত্রবাদী আদর্শেউদ্বুদ্ধ হয়ে হো চি মিন জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে
ফ্রান্সের বিপর্যয়ের সুযোগে জাপান ইন্দোচীন অধিকার করে নেয়।
ইতিমধ্যে হো চি মিন তাঁর সংগঠন জোরদার করেন। তিনি জাপান এবং ফরাসিদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের
জন্য প্রস্তুত হন। জাপানের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে হো চি মিন টংকিং-এর রাজধানী হ্যানয় অধিকার
করেন, আন্নাম ও কোচিন চীনেও তাঁর কর্তৃত্বপ্রতিষ্ঠিতা করেন। এই তিনটি অঞ্চলকে যুক্ত করে তিনি
ভিয়েতনাম প্রজাতন্ত্রপ্রতিষ্ঠা করেন। ফ্রান্স এই ব্যবস্থাকে মেনে নেয়নি। ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া
নিয়ে ইন্দোচীন ফেডারেশন তৈরির চেষ্টা হয়, যা হবে ফ্রান্সের একটি অংশ। হো চি মিন এই ব্যবস্থা


মানতে অস্বীকার করেন। যুদ্ধ শুরু হয়। ফরাসিগণ পূর্বতন সম্রাট বাওদাইকে ভিয়েতনামের সম্রাট
হিসেবে ঘোষণা করে। এক দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের সোভিয়েত রাশিয়া ও চীন হো চি মিনের
পক্ষ নেয়। দীর্ঘলড়াইয়ের পর বিয়েন ফু'র যুদ্ধে ফরাসিগণ পরাস্তহয়। ১৯৫৪ সালের জেনেভা চুক্তি
অনুযায়ী ভিয়েতনাম উত্তর ও দক্ষিণ দুভাগে বিভক্ত হয়। উত্তরে হো চি মিনের অধীনে কমিউনিস্ট
সরকার, দক্ষিণে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রপ্রভাবাধীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। উত্তর দক্ষিণে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের
পর ঐক্যবদ্ধ ভিয়েতনামের জন্ম হয় এবং দেশটি সমাজতান্ত্রিক নীতি অনুসরণ করে।
ব্রিটেন ঃ ইংরেজ শাসনাধীন ভারতের স্বাধীনতা এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য। ইউরোপে ফ্যাসিস্ট শক্তির
উত্থান ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাদের ভ‚মিকাকে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ তীব্রভাষায়
সমালোচনা করেছেন, কিন্তুবিশ্বযুদ্ধ চলার সময়েই ১৯৪২ সালে ‘ভারত ছাড়ো' আন্দোলন শুরু হয়। এই
আন্দোলনের ব্যাপকতা ও তীব্রতা ইংরেজ কর্তৃপক্ষকে উদ্বিগ্নকরে তোলে। সুভাষ চন্দ্রবসুবিশ্বযুদ্ধের
সুযোগেই জাপানি সহায়তায় আজাদ হিন্দুফৌজ নিয়ে ভারত সীমান্তেএসে পৌঁছেন। ‘ভারত ছাড়'
আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে। আজাদ হিন্দ ফৌজও পরাস্তহয়। কিন্তুযুদ্ধের অবসানে বিপর্যস্তইংল্যান্ডের
পক্ষে ভারতীয় সাম্রাজ্যকে রক্ষা করা সম্ভব ছিল না। ১৯৪৭ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেওয়াই
ছিল ব্রিটেনের পক্ষে থেকে সম্মানজনক পথ। এভাবে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইন অনুসারে বার্মাকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার প্রদান করে ভারত থেকে
পৃথক করা হয়। কিন্তুবর্মার জনগণ সীমিত অধিকারে সন্তুষ্ট ছিল না। জাপান বার্মা অধিকার করে এক
তাঁবেদার সরকার প্রতিষ্ঠা করে। জাপানীদের অশুভ উদ্দেশ্য প্রকাশিত হয়ে পড়লে অং সাং-এর নেতৃত্বে
ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয় ঘটলে ১৯৪৫ সালে বার্মায় পুনরায়
ইংরেজ কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়। অং সাং পূর্ণস্বাধীনতার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যান। ১৯৪৮ সালের জুন
মাসে বার্মা পূর্ণস্বাধীনতা লাভ করে।
শ্রীলংকাকেও ১৯৪৮ সালে ফ্রেব্রæয়ারি মাসে ডোমিনিয়ান স্ট্যাটাস প্রদান করা হয়। পঞ্চাশের দশকে পূর্ণ
শ্রীলংকার স্বাধীনতা অর্জিত হয়। একই সময়ে যুদ্ধোত্তর স্বাধীনতা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটেন
১৯৫৭ সালে মালয়কে স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মিশরে তুরস্কের শাসনের অবসান
ঘটলেও ইংরেজ প্রভুত্ব স্থাপিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেখানে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তীব্র
আকার ধারণ করে। সুয়েজ খালের কর্তৃত্ব নিয়ে মিশরের সঙ্গে ইংল্যান্ডের দ্বন্দ¡ শুরু হয়। ১৯৫২-এ
সামরিক অভ্যুত্থানে রাজতন্ত্রের বিলোপ ঘটে। সেনাপতি নাগিব ও তার বিপ্লবী পরিষদের চাপে ইংরেজ
সৈন্য সুয়েজ ছাড়া অন্য স্থান থেকে চলে যায়। ১৯৫৬ সালে সুয়েজ খালের কর্তৃত্ব নিয়ে ইঙ্গ-ফরাসি
বাহিনীর সঙ্গে মিশরের যুদ্ধ হয়। এরপর ইংরেজ সৈন্য সুয়েজ ত্যাগ করলে মিশরের সার্বভৌমত্বপূর্ণতা
লাভ করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর জাপান ইন্দোচীন ত্যাগ করার পূর্বেলাওসের স্বাধীনতা প্রদান করে যায়।
স্বাধীন লাওস গড়ে ওঠে। ফ্রান্স ইন্দোচীন পুনরুদ্ধার করতে গেলে লাওসে মুক্তিযুদ্ধ শুর ুহয়। ১৯৪৯
সালে ফ্রান্সের অধীনে লাওসের স্বাধীনতা স্বীকার করা হয়। একটি নতুন সংবিধান ও জাতীয় পরিষদ
গঠিত হয়। কিন্তুআন্দোলন চলতে থাকে। ১৯৫৩ সালে লাওসের পূর্ণস্বাধীনতা স্বীকার করে নেয়।
আফ্রিকায় ফরাসি উপনিবেশ ছিল আলজিরিয়া। আলজিরিয়াকে ফ্রান্সের একটি প্রদেশ হিসেবে গণ্য করা
হতো। বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের পরাজয় আলজিরিয়দের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করে। যুদ্ধের পর ফ্রান্স
আলজিরিয়ার জন্য এক নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে ও সেইমত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আইন সভায়
আরব ও ফরাসিদের সামনে আসন সংখ্যা স্বীকৃত হয়েছিল। নির্বাচনে ফরাসি বিরোধীগণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা
লাভ করলে ফ্রান্স নির্বাচন বাতিল করে দেয়। ফলে স্বাধীনতা আন্দোলন সশস্ত্রসংগ্রামে রূপ নেয়। ফরাসি
সরকারও প্রচন্ড দমন নীতি অনুসরণ করে। জোট-নিরপেক্ষ দেশসমূহ আলজিরিয়ার সংগ্রামে সমর্থন
জানায়। ১৯৫৮ সালে দ্যগল ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি হলে আলজিরিয়া সমস্যার সমাধানের পথ সুগম হয়।
১৯৬২ সালে এক গণভোটের মাধ্যমে আলজিরিয়ার স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়।


উত্তর আফ্রিকার মরক্কো ফরাসি ও স্পেনীয় অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। ১৯৫০ সালে সুলতান ষষ্ঠ মহম্মদ
ফ্রান্সের কাছে স্বাধীনতার দাবি জানান ও মরক্কোর রাজনৈতিক দলগুলোও একে সমর্থণ করে। ফরাসি
সরকার দাবি প্রত্যাখ্যান করে ও দমননীতি শুরু করে। সুলতানকে নির্বাসিত করা হয়। মরক্কোয়
উপজাতিগুলো বিদ্রোহ শুরু করে। পরিস্থিতি আয়ত্তে¡র বাইরে চলে যেতে থাকলে ফ্রান্স এর মীমাংসায়
উপনীত হয়। সুলতানকে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৯৫৬ সালের ৫ এপ্রিল মরক্কোর স্বাধীনতা ফ্রান্স স্বীকার
করে নেয়। ফরাসি ও স্পেনীয় অঞ্চল মিলিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ মরক্কোর সৃষ্টি হয়।
মরক্কোর মতো তিউনিশিয়াও ছিল ফ্রান্সের একটি আশ্রিত রাজ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেখানেও
জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে। ফ্রান্স কঠোর হাতে আন্দোলন দমন করে। হাবিব বরগুইবার নেতৃত্বেনিও
দস্তুর দল অন্যান্য দলের সহযেগিতায় সংগ্রাম চালিয়ে যায়। বিদ্রোহী গেরিলাগণ ফরাসি বাহিনীর সঙ্গে
যুদ্ধে লিপ্ত থাকে। তিউনিশিয়ার স্বায়ত্তশাসন স্বীকৃত হয়। ১৯৫৬-এ স্বাধীনতা মেনে নেওয়া হয়।
লিবিয়া ইতালীয় উপনিবেশ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংরেজ ও ফরাসি সেনা সেখানে সামরিক ঘাঁটি
তৈরি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তাতে যোগ দেয়। লিবীয় জনসাধারণ স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন
করলে জাতিপুঞ্জের মধ্যস্থতায় ১৯৫২ সালের জানুয়ারি লিবিয়া স্বাধীনতা লাভ করে।
হল্যান্ড ঃ সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমে ইংল্যান্ড ইংরেজ ও পর্তুগিজদের বিতাড়িত করে ইন্দোনেশিয়া
অধিকার করে। বিংশ শতাব্দীর গোড়া থেকে সেখানে ওলন্দাজ-বিরোধী জাতীয়তাবাদের উন্মেষ হয়।
মুসলমান জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও সুকর্নের অধীনে ইন্দোনেশিয়া জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ছাড়াও
সেখানে কমিউনিস্টগণ সক্রিয় ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হল্যান্ড নাৎসিগণ বিধ্বস্তকরলে ইন্দোনেশিয়ার
ওপর ওলন্দাজদের কর্তৃত্ব কার্যত লোপ পায়। জাপান সহজেই ইন্দোনেশিয়া অধিকার করে। তাদের
অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্রসংগ্রাম শুরু হয়। জাপানিগণ বিতাড়িত হলে জাভা, মাদুরা ও সুমাত্রায় একটি
প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ওলন্দাজগণ ফিরে আসে ও এই প্রজাতন্ত্রকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৪ সালে
হল্যান্ডের সঙ্গে একযোগে একটি বৃহত্তর ইন্দোনেশিয় যুক্তরাষ্ট্রগঠনের কথা নয়। কিন্তুপারস্পরিক
অবিশ্বাস্যের ফলে তা ভেস্তেযায়। ফলে ওলন্দাজ নিপীড়ন শুরু হয়। শেষ পর্যন্তজাতিসংঘের মধ্যস্থতায়
১৯৪৯ সালে ইন্দোনেশিয়া পূর্ণস্বাধীনতা লাভ করে। সুকর্নহন ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি।
পর্তুগাল ঃ পর্তুগালের অধীনস্থএ্যাঙ্গালা ও মোজাম্বিকে অস্থিরতা দেখা দেয়, যদিও এ দুটি উপনিবেশের
স্বাধীনতা অর্জনে বিলম্ব হয়। ভারতে পর্তুগীজ উপনিবেশ গোয়া, দমন, দিউ অবশ্য কিছুকাল পর
স্বাধীনতা লাভ করে ও ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়। ১৯৬১ সালে ভারত সামরিক শক্তির মাধ্যমে গোয়ার
স্বাধীনতা এবং ভারতের সঙ্গে সংযুক্তি নীশ্চিত করে।


পাঠোত্তর মূল্যায়ন
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
১। ১৯৪৫ সালে পৃথিবীতে পরাধীন মানুষ কত ছিল?
(ক) ৫০ কোটি (খ) ৭৫ কোটি
(গ) ১০০ কোটি (ঘ) ১২৫ কোটি।
২। জাপানের হাতে রাশিয়ার পরাজয় ঘটেÑ
(১) ১৯০২ সালে (খ) ১৯০৩ সালে
(গ) ১৯০৪ সালে (ঘ) ১৯০৫ সালে।
৩। ‘ডেথ অব ইংল্যান্ড' কবিতা কে লিখেছেনÑ
(ক) ডি,এইচ, লরেন্স (খ) শেলী
(গ) কীটস (ঘ) বায়রন।
৪। অনুপনিবেশীকরণ প্রক্রিয়া ত্বরানি¦ত করতে জাতিসংঘের কয়টি সংস্থা ভ‚মিকা রাখেÑ
(ক) ৪টি (খ) ৫টি
(গ) ৬টি (ঘ) ৭টি।
৫। শ্রীলংকা স্বাধীন হয় কত সালে?
(ক) ১৯৪৭ (খ) ১৯৪৮
(গ) ১৯৪৮ (ঘ) ১৯৪৯ সালে।
উত্তর ১। (খ), ২। (গ), ৩। (ক), ৪। (ঘ)
রাচনামূলক প্রশ্ন
১। এশিয়া ও আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের পতনের প্রেক্ষাপট ও কারণ আলোচনা করুন।
২। অনুপনিবেশীকরণ প্রক্রিয়া দ্রæত সম্পন্নকরতে জাতিসংঘের ভ‚মিকা আলোচনা করুন।
৩। এশিয়া ও আফ্রিকা উপনিবেশবাদ পতনের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]