মহাদেশীয় অবরোধ
ফ্রান্সের এক নম্বর শত্রæ হিসেবে চিহ্নিত ইংল্যান্ডকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করতে ব্যর্থ হয়ে নেপোলিয়ন
ইংল্যান্ডকে দুর্বল করার জন্য বিশেষ কতগুলো পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। নেপোলিয়ন কর্তৃক গৃহীত
ব্যবস্থাগুলির মধ্যে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা বা ঈড়হঃরহবহঃধষ ঝুংঃবস ছিল অন্যতম। রাশিয়া,
প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করার পর ইংল্যান্ডকে পরাজিত করার জন্য এটা ছিল নেপোলিয়নের
সর্বশেষ অস্ত্র। ঐতিহাসিকদের মতে ‘‘এটি ছিল ব্রিটিশ বাণিজ্যের পতনের জন্য মহাদেশের সকল বন্দর
বন্ধ করে দেয়ার একটি পরিকল্পনা। অর্থ্যাৎ ট্রাফালগোরের যুদ্ধে ইংল্যান্ডকে পরাভূত করতে না পেরে
নেপোলিয়ন অতি সুকৌশলে সমগ্র ইউরোপকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ করে একটি অর্থনৈতিক
অবরোধের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এটাই ইতিহাসে নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ বা
ঈড়হঃরহবহঃধষ ঝুংঃবস নামে পরিচিত।
মহাদেশীয় অবরোধের কারণ
যে সমস্তঘটনার প্রেক্ষিতে নেপোলিয়ন মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তা এখানে আলোচনা
করা হল :
১) ইংল্যান্ডের নৌ আধিপত্য
ইউরোপ নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য তাঁর পক্ষে ব্রিটেন জয় করা একান্ত
প্রয়োজন ছিল। কিন্তু নৌশক্তিতে ব্রিটেন অধিকতর শক্তিশালী থাকায় এবং সমুদ্রের উপর ব্রিটেনের
আধিপত্য থাকায় ফ্রান্সের পক্ষে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নৌযুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভবপর ছিলনা। এই কারণে
ব্রিটেনকে শাস্তিদিতে নেপোলিয়ন বদ্ধ পরিকর হন এবং অবরোধ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এর
উদ্দেশ্য র্অথনৈতিক অবরোধ নীতি প্রয়োগ করে ব্রিটেন ও তার উপনিবেশগুলিকে ইউরোপের বাজার
থেকে উৎখাত করে ব্রিটেনের ব্যবসা-বাণিজ্য ধবংস করা।
২) মন্টজেলার্ড রিপোর্ট
এ্যামিয়েন্সের সন্ধি ভঙ্গ হওয়ার পর ১৮০৫ সালে নেপোলিয়নের বিশ্বস্ত সেনাপতি মন্টজেলার্ড
(গড়হঃমধরষষধৎফ) একটি রিপোর্টে অর্থনৈতিক অবরোধের দ্বারা ইংল্যান্ডের শক্তি ধবংসের প্রস্তাব দেন।
মন্টজিলার্ডের রিপোর্টকে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার খসড়া বলা হয়। নেপোলিয়ন অনুভব করেন
যে, ইংল্যন্ড থেকে নিজ দেশে দ্রব্য আমদানি নিষিদ্ধ করে নিজ রাষ্ট্রের দ্রব্যের রপ্তানি বাড়ানো হলে
দেশের সমর্থন পাওয়া সহজ হবে।
৩) পূর্বতন নিয়মের প্রভাব
ফ্রান্সে বিদেশী দ্রব্যের কম আমদানি এবং আমদানিকৃত দ্রব্যের উপর চড়া হারে শুল্ক ধার্য করার নীতি
পূর্ব থেকেই চালু ছিল। সপ্তদশ শতকে ফরাসি মন্ত্রী কলর্বাট (ঈড়ষনবৎঃ) সর্বপ্রথম এই শুল্কনীতি বা
আমদানি নীতি চালু করেন। এ্যমিয়েন্সের সন্ধি ভেঙ্গে গেলে পুনরায় কলবার্টের নীতি চালু করা হয়।
ফ্রান্সের বিপ্লবী সরকার ও ইংল্যান্ড থেকে দ্রব্য আমদানির উপর বিধি নিষেধ চাপান। ডাইরেক্টরির
শাসন আমলে ১৭৯৬ সালে ফ্রান্স ও তার উপনিবেশে ব্রিটিশ দ্রব্য আমদানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা
হয়। নেপোলিয়ন ক্ষমতায় আসার পর এ সংরক্ষণ নীতি চালু রাখেন। হ্যানোভার দখলের পর তিনি
এলব ও ওয়েজার নদীতে ব্রিটিশ পণ্যবাহী জাহাজের অনুপ্রবেশ বন্ধ করেন ১৮০৩ সালে। সুতরাং
ব্রিটেনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য অবরোধ নতুন ছিল না তবে নেপোলিয়ন নতুন উদ্যমে এবং ব্যাপকভাবে
গোটা ইউরোপ মহাদেশ জুড়ে এই অবরোধ চালু করেন।
৪) সামরিক কারণ
ঐতিহাসিকরা বলেন যে, সামরিক অথবা অর্থনৈতিক ঠিক কোনো উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন মহাদেশীয়
অবরোধ চালু করেন তা বলা কঠিন। তবে সামরিক উদ্দেশ্য অবশ্যই ছিল তা হল ব্রিটেনকে নৌ
আক্রমণে ধবংস করতে ব্যর্থ হয়ে ব্রিটেনের অর্থনীতিকে ধবংস করে পরাজয় ঘটান। এক কথায় হাতে
মারতে না পারলেও ভাতে মেরে ফেলা। সে যুগে সকলেই বিশ্বাস করত যে ইংরেজরা হল দোকানদারের
জাত। ব্রিটেন উপনিবেশ থেকে সস্তা দরে দ্রব্য কিনে ইউরোপের বাজারে বিরাট মুনাফায় বিক্রয় করত।
ব্রিটেনের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ২
/৩ অংশ ছিল এই উপনিবেশিক দ্রব্যের পুণবিক্রয়। ইংল্যান্ডের
উৎপন্ন দ্রব্যের ১
/৩ অংশ ইউরোপে রপ্তানি হত। এই বাণিজ্যিক সমৃদ্ধিই ছিল ব্রিটেনের শক্তির উৎস।
নেপোলিয়ন মনে করেন ইউরোপের বাজারে ব্রিটেনের এই রপ্তানি বন্ধ হলে ব্রিটেনের অর্থনীতি ধ্বংস
হয়ে পড়বে। ইংল্যান্ডের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হলে ম্যাঞ্চেস্টার, লিভারপুলের কারখানাগুলো দ্রব্যের
চাহিদার অভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে সামাজিক শ্রেণীগুলির অসন্তোষ
ব্রিটিশ সরকারকে নতি স্বীকার করতে বাধ্য করবে। ব্রিটেন বাধ্য হয়ে তার সাথে সুবিধাজনক শর্তে সন্ধি
স্থাপন করবে।
৫) অর্থনৈতিক কারণ
আলফ্রেড কোব্বান মহাদেশীয় অবরোধের পিছনে সামরিক কারণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কারণেরও
উল্লেখ করেন। নেপোলিয়ন ভেবে ছিলেন যে, ইউরোপে যদি ব্রিটেনের দ্রব্য আমদানি বন্ধ হয়, সেই
শূন্যস্থান ফ্রান্স পূরণ করবে। ইউরোপীয় বাণিজ্য থেকে ব্রিটেন যে মুনাফা ভোগ করত, এখন থেকে তা
ফ্রান্স ভোগ করবে। তাই মহাদেশীয় অবরোধের লক্ষ্য ছিল একাধারে ব্রিটেনকে সামাজিক, অর্থনৈতিক
ও রাজনৈতিকভাবে নতজানু করা এবং একই সঙ্গে ফ্রান্সের রপ্তানি ও সম্পদ বৃদ্ধি করা। ১৮০৬-৭ সালে
টিলজিটের সন্ধির পর রাশিয়া ও অস্ট্রিয়া নেপোলিয়নের সঙ্গে শান্তিস্থাপন করার ফলে নেপোলিয়ন আশা
করেন যে, ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যে অবরোধ নীতি ফ্রান্স এতদিন সীমিত আকারে পরিচালিত করছিল এখন
তা সমগ্র ইউরোপে চালু করা সম্ভব হবে। রাশিয়ার সহযোগিতায় বালিটক ও অস্ট্রিয়ার সহযোগিতায়
এড্রিয়াটিক উপকূলে ব্রিটিশ বাণিজ্য ধ্বংস করা যাবে। এই শূন্যস্থান ফ্রান্স তার নিজ রপ্তানি বাণিজ্য দ্বারা
পূরণ করবে। আলফ্রেড কোব্বানের মতে নিছক সামরিক প্রয়োজন নয়, ইউরোপে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক
সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাও ছিল বোনাপার্টের উদ্দেশ্য। এই মতের সমর্থনে কোব্বান বলেন যে, ফ্রান্সের নিজস্ব
উৎপাদন চাঙ্গা করার জন্যে বোনাপার্ট সব রকম চেষ্টা করেন। তিনি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য পুরষ্কার
ঘোষণা করেন এবং শিল্প মেলা চালু করেন। এ্যামিয়েন্সের সন্ধির সুযোগে ফরাসি প্রযুক্তিবিদরা ব্রিটেনের
শিল্প কারখানা পরিদর্শন করেন এবং ব্রিটেন থেকে প্রচুর যন্ত্রপাতি আমদানির ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাঁর
আশা ছিল ফ্রান্স শীঘ্রই এই ঘাটতি পূরণে সক্ষম হবে। বস্তুত, কেবল রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের জন্যে
নয়, অর্থনৈতিক লক্ষ্য পূরণও ছিল মহাদেশীয় অবরোধের লক্ষ্য।
মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার কৌশল
১। বার্লিন ঘোষণা ১৮০৬ (ইবৎষরহ উবমৎবব- ১৮০৬)
১৮০৬ সালের নভেম্বর মাসে নেপোলিয়ন বার্লিন ঘোষণার মাধ্যমে সমগ্র ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের অবরোধের
কথা ঘোষণা করেন। বালির্ন ঘোষণার মধ্যে নি¤েœাক্ত নির্দেশ গুলি জারি করা হয় ঃ
ক) ফ্রান্স অধিকৃত অঞ্চলে ব্রিটিশ নাগরিকগণকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ।
খ) ফরাসি বন্দরগুলিতে ব্রিটিশ জাহাজ অথবা ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে আগত সকল জাহাজের প্রবেশ
নিষিদ্ধ।
গ) ফ্রান্সের মিত্র বা নিরপেক্ষ কোনো দেশের বন্দরেও ইংল্যান্ডের জাহাজ প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয় এবং
ইংল্যান্ডকে কোনো দ্রব্য এসব দেশের বন্দরে নামতে দেওয়া হবেনা।
ঘ) যদি ইংল্যান্ডের কোনো দ্রব্য অন্য দেশের জাহাজ মারফত নামানো হয় তবে তাও বাজেয়াপ্ত করা
হবে।
২। অর্ডারস ইন কাউন্সিল ১৮০৭ বা ব্রিটেন কর্তৃক পাল্টা ব্যবস্থা
ফ্রান্স কর্তৃক বার্লিন নির্দেশ জারি করার পর ১৮০৭ সালে ইংল্যান্ড অর্ডারস ইন কাউন্সিল (ঙৎফবৎং রহ
ঈড়ঁহপরষ) নামে একটি নির্দেশ জারি করে। এই নির্দেশ নি¤েœাক্ত শর্তগুলো আরোপ করা হয়।
ক) ফ্রান্স ও তার মিত্র দেশগুলিতে ইংল্যান্ডের নৌ-অবরোধ ঘোষণা করা হয়।
খ) এই সকল দেশের বন্দরে কোনো দেশের এমন কি নিরপেক্ষ দেশের জাহাজ ও ঢুকতে পারবেনা।
কোনো জাহাজ আদেশ লঙ্ঘন করলে সেই জাহাজ ও তার দ্রব্য ইংল্যান্ড বাজেয়াপ্ত করবে।
গ) যদি কোনো নিরপেক্ষ দেশের জাহাজ নিতান্তফ্রান্স কিংবা তার বন্দরে যেতে চায় তবে সেই
জাহাজকে প্রথমে ইংল্যান্ডের যে কোনো বন্দরে আসতে হবে এবং ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ফি
ও শুল্ক দিয়ে লাইসেন্স নিলেই কেবল সেই জাহাজ ফ্রান্সের বন্দরে যেতে পারবে।
৩। মিলান নির্দেশ ১৮০৭
১৮০৭ সালের জুলাই মাসে ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে টিলজিটের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ইংল্যান্ডের আশংকা
আরো বেড়ে যায়। ফলে ব্রিটেন ১৮০৭ সালে দ্বিতীয় বার ঙৎফবৎ রহ ঈড়ঁহপরষ জারি করে এই
আদেশনামাতে ফ্রান্স কর্তৃক অবরোধকৃত যে বন্দরগুলোতে ব্রিটেনের পণ্য প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা
হয়েছিল, ইংল্যান্ড সেই বন্দর গুলোর কথা পুনরায় ঘোষণা করে। নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলিকে ব্রিটেনের সাথে
সুবিধাজনক শর্তে ব্যবসা বাণিজ্য করার সুযোগ দেওয়া হয়। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ঙৎফবৎ রহ ঈড়ঁহপরষ এর
প্রত্যুত্তরে নেপোলিয়ন ১৮০৭ সালে মিলান ডিক্রি ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা পত্রে বলা হয় :
ক) যে সকল জাহাজ তা মিত্র অথবা নিরপেক্ষ যে দেশেরই হোক না কেন (ঙৎফবৎং ড়ভ ঈড়ঁহপরষ)
অনুযায়ী ইংল্যান্ডের কাছ থেকে লাইসেন্স নিলে তাদের যে কোনো বন্দরে বা বহিঃ সমুদ্রে ব্রিটিশ
সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করে ফ্রান্স তা বাজেয়াপ্ত করবে।
খ) ব্রিটেনের কোনো বন্দরে শত্রæ পক্ষের জাহাজ ঢুকলেই তা শত্রæ পক্ষের জাহাজ হিসেবে গণ্য করা
হবে।
৪। ফন্টের বø্যু নির্দেশ ১৮১০ (ঋড়হঃধরহব নষবধঁ উবপৎববং-১৮১০)
১৮০৭ সালে মিলান নির্দেশ জারি করেই নেপোলিয়ন সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি ১৮১০ সালের অক্টোবর
মাসে ফন্টেন বø্যু নির্দেশ জারি করেন।
ক) এই নির্দেশ অমান্য করার অপরাধে ফ্রান্স কর্তৃক ইংল্যান্ডের যে সব দ্রব্য সামগ্রী আটক করা হবে তা
প্রকাশ্যে পোড়ানো হবে এবং
খ) এই নির্দেশ অমান্যকারী ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের বিচার করার জন্য বিশেষ আদালত স্থাপন করা হবে।
মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করতে নেপোলিয়নের প্রয়াস
নেপোলিয়ন মহাদেশীয় ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য বিশেষভাবে যতœবান হন। ১৮০৬ সালে তিনি
ফ্রেডারিখ উইলিয়াম এবং ১৮০৭ সালে প্রথম আলেকজান্ডারকে তা গ্রহণ করতে বাধ্য করেন। ১৮০৯
সালে তিনি প্রথম ফ্রান্সিসকে মহাদেশীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে অসম্মতি প্রকাশ করলে ১৮১০ সালে
নেপোলিয়ন হল্যান্ড দখলের জন্য একদল ফরাসি সৈন্য প্রেরণ করেন। সেই বছরই হেলিগোল্যান্ডে
ব্রিটেনের চোরাকারবার বন্ধ করার জন্য নেপোলিযন জার্মানির সমগ্র উত্তর পশ্চিম উপকূল অঞ্চল সরাসরি
দখল করেন।
মহাদেশীয় অবরোধের ফলাফল
মহাদেশীয় অবরোধের ফলাফলকে দুইভাগে ভাগ করে ব্যাখ্যা করা যায়
ক) অর্থনৈতিক ফলাফল ও
খ) রাজনৈতিক ফলাফল
ক. অর্থনৈতিক ফলাফল
নেপোলিয়ন বেশ কয়েকটি বন্দরের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করলেও চোরাকারবারির ব্যাপকতার কারণে
তিনি মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হননি। প্রকৃত পক্ষে ব্রিটেনের
উৎপাদিত এবং ব্রিটেনের উপনিবেশগুলোর পণ্য সামগ্রী ছাড়া ইউরোপের ব্যবস্যা-বাণিজ্য এক প্রকার
অচল হয়ে যায়। ১৮০৬ সালে নেপোলিয়ন ফ্রান্সে ব্রিটেনে উৎপাদিত পণ্য আমদানি করার জন্য
ফরাসি বণিকগণকে লাইসেন্স প্রদানে বাধ্য হন। এমন কি ইলুর (ঊুষধঁ) যুদ্ধে নেপোলিয়নের
সেনাবাহিনীর জন্য সামরিক পোশাক ব্রিটেনের লীডস ও নর্দাম্পটন হতে আমদানি করা হয়েছিল।
প্রকৃত পক্ষে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ফলে ব্রিটেন অপেক্ষা ইউরোপ মহাদেশই বেশি ক্ষতিগ্রস্তহয়।
১। ব্রিটেনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ফলাফল
মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ফলে ব্রিটেনই বিশেষ লাভবান হয়েছিল। কারণ সমুদ্রপথে ইউরোপের
নিরপেক্ষ দেশগুলোর বাণিজ্য জাহাজ যাতায়াত একপ্রকার বন্ধ হয়ে পড়লে ব্রিটিশ জাহাজ বিশ্বের সর্বত্র
পণ্য-সামগ্রী বহন করে। ফলে ব্রিটেনের উপনিবেশিক বাণিজ্যের এক অভূত পূর্ব বিস্তার ঘটে। (ঙৎফবৎং
রহ ঈড়ঁহপরষ) জারি করার ফলে ব্রিটেনের বন্দর গুলিতে যে সকল বিদেশী পণ্য আটকা পড়েছিল
ব্রিটেনের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তা যথেষ্ট সাহায্য করে। কিন্তু সেই সঙ্গে ইউরোপের বাজারে ব্রিটিশ
পণ্য সামগ্রীর আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে ব্রিটেনের জন্য যথেষ্ট অসুবিধারও কারণ ঘটে। বিদেশ থেকে
আগত পণ্য সামগ্রীর মূল্য ব্রিটেন সোনার মাধ্যম দ্বারা পরিশোধ করত। কিন্তু ব্রিটেন থেকে সোনা রপ্তানি
বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্রিটেনের আমদানি ব্যবসার ক্ষতি হয়। কাগজি মুদ্রার ব্যাপক প্রচলনের ফলে মুদ্রা
স্ফীতি ঘটে এবং ব্রিটেনের খাদ্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পায় ও জনগণের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
কিন্তু তা সত্তে¡ও মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ফলে ইংল্যন্ডে ব্যবসা-বাণিজ্যের যথেষ্ট প্রসার ঘটে। তাই
বলা হয় (ঞযব ংুংঃবস ড়হ ঃযব যিড়ষব রহপৎবধংবফ ৎধঃযবৎ ঃযধহ ফবপৎবধংবফ ঃযব পড়সসবৎপরধষ
ঢ়ৎড়ংঢ়বৎরঃু ড়ভ ঊহমষধহফ)’’।
রাশিয়ার ক্ষেত্রে
মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ফলে রাশিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্যেরও যথেষ্ট ক্ষতি হয়। এ কারণে রাশিয়া
নেপোলিয়নের প্রতি অসন্তুুষ্ট হয়। ১৮১১ সালে রুশ সম্রাট ব্রিটেনের ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর হতে
সকল বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেন। ১৮১২ সালে রাশিয়া, ব্রিটেন ও সুইডেনের মধ্যে শান্তি চুক্তি
স্বাক্ষরিত হলে একই বছরে রাশিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের যুদ্ধ বাঁধে।
ইউরোপের অন্যান্য দেশে ফলাফল
মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থায় ইউরোপ মহাদেশে এক দারুণ অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ব্রিটেনের সঙ্গে ব্যবসাবাণিজ্যের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার ফলে ইউরোপীয় বণিকগণ ক্ষতিগ্রস্তহয় এবং ফন্টেনবøুর নির্দেশের ফলে
ইউরোপীয় বণিকদের পণ্য সামগ্রীর যথেষ্ট ক্ষতি হয়। দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য পণ্য সামগ্রীর মূল্য
দ্রæত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ইউরোপীয় জনসাধারণ এক দারুণ সংকটের সম্মুখীন হয়, বিশেষ করে
বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলিকে নিদারুণ অসুবিধা ভোগ করতে হয়। নেপোলিয়নের অর্থনৈতিক নীতির
ফলে এশিয়ার সঙ্গে তার পুনরায় বিরোধ দেখা দেয়।
খ. রাজনৈতিক ফলাফল
ঐতিহাসিক লজ (খড়ফমব) মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থাকে নেপোলিয়নের রাজনীতি জ্ঞানের চরম
ব্যর্থতার প্রমাণ বলে অবিহিত করেছেন। মহাদেশীয় ব্যবস্থা কার্যকর করতে গিয়ে নেপোলিয়ন
আক্রমণাত্মক নীতি গ্রহণ করেন। ফলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধে। এ কারণে
পোপের সঙ্গেও নেপোলিয়নের বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং তিনি ক্যাথলিক স¤প্রদায়ের বিরাগভাজন হন।
নেপোলিয়নের ভাই লুই হল্যান্ডে তাঁর নির্দেশ কার্যকর করতে অস্বীকৃত হওয়ায় তাঁকে সিংহাসনচ্যুত
করা হয় এবং নেপোলিয়ন হল্যান্ড দখল করেন। ইংল্যান্ডের মিত্রদেশ পর্তুগাল মহাদেশীয় অবরোধ
ব্যবস্থা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে নেপোলিয়ন পর্তুগাল দখল করেন। এর পর স্পেনকে কুক্ষিগত করার
জন্য নেপোলিয়ন নিজ ভাই যোসেফকে সিংহাসনে বসান। তার প্রতিবাদে স্পেনে এক অভূতপুর্ব
জাতীয় অভ্যুত্থান ঘটে। এই ভাবে ইংল্যান্ডকে শাস্তিদিতে গিয়ে নেপোলিয়নব ইউরোপের অন্যান্য
দেশের শত্রæতে পরিণত হন। এমন কি মহাদেশীয় অবোরধ ব্যবস্থা ফরাসি জনগণের অবস্থাও সঙ্গীন
করে তুলেছিল। ফরাসি মধ্যবিত্ত শ্রেণী নেপোলিয়নের প্রতি আস্থা হারায়। ঐতিহাসিকদের ভাষায়
ঋৎড়স ঃযরং ঢ়বৎরড়ফ ঃযবু নবপড়সব রহফরভভবৎবহঃ ঃড় ঘধঢ়ড়ষবড়হ’ং ভধঃব। প্রকৃত পক্ষে নেপোলিয়নের
মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা ছিল একটি অবাস্তব পরিকল্পনা যা বাস্তব রাজনীতির সীমা অতিক্রম
করেছিল।
মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ব্যর্থতার কারণ
নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রিটেনের রপ্তাণি বাণিজ্য হ্্রাস পায়
এবং দেশে বেশ আর্থিক সংকট দেখা দেয়। কিন্তু এই ব্যবস্থা অল্পকালের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়ে এবং
ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ব্যর্থতার কারণ গুলো ছিল প্রথমত, মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা চলা কালে
অনাবৃষ্টিতে ইংল্যান্ডের ফসল হানি ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এমতাবস্থায় নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডের খাদ্য
সংকট মোচনের জন্য ফ্রান্স থেকে ব্রিটেনে গম রপ্তানির আদেশ দেন। তিনি ইংল্যান্ডকে ভাতে মারার
সুযোগ হারান। তিনি ইংল্যান্ড থেকে আমদানিতে রাজি না থাকলেও ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডে খাদ্য শস্য
রপ্তানি করে ইংল্যান্ডের সঞ্চিত সম্পদ শুষে নিতে প্রস্তুত ছিলেন। এর ফলে ১৮১১ সালে তিনি খাদ্য
সংকটে বিব্রত ইংল্যান্ডকে নতজানু করার বিরল সুযোগ নষ্ট করেন।
২। ফ্রান্সে অর্থনৈতিক সংকট
দ্বিতীয়ত, মহাদেশীয় অবরোধ চলাকালে ইংল্যান্ডে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে ইউরোপের লোকেরা
এর জন্য মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থাকেই দায়ি করে। অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে যায়। ক্ষুধার্ত
জ্যাকোবিন জনতার বিপ্লবী মূর্তি নেপোলিয়ন ১৭৯২ সালে দেখেছিলেন। ১৮১১-১৩ সালে তিনি তাঁর
পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা লক্ষ্য করে শংকিত হন।
তৃতীয়ত, ব্রিটেন শ্রীঘ্রই তার সংকট কাটিয়ে মহাদেশীয় অবরোধ ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়। ফ্রান্স এ
অবরোধ রক্ষা করতে পারেনি। ব্রিটেন এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে ঙৎফবৎং রহ ঈড়ঁহপরষ শিথিল করে
ইউরোপের নিরপেক্ষ দেশের জাহাজগুলো উদার শর্তে লাইসেন্সে দিতে থাকে। এতে ইউরোপে
ব্রিটেনের প্রতি সদিচ্ছা দেখা দেয়।
চতুর্থত, বৃটেন তার উদ্বৃত্ত দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানির জন্য ল্যাটিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও এশিয়ার
তুরস্কের মত নতুন বাজার আবিষ্কার করতে থাকে। এছাড়া ইউরোপের গোটা উপক‚ল জুড়ে বৃটেনের দ্রব্য
চোরাপথে প্রবেশ করতে থাকে। কখনো বল প্রয়োগ করে কখনও নেপোলিয়নের কর্মচারীদের দুর্নীতির
ফলে বৃটিশ দ্রব্যের আমদানি অব্যাহত থাকে। ফন্টেনবøুর আদেশ নামা অনুযায়ী ব্রিটেনের বাজেয়াপ্ত দ্রব্য
পোড়াবার আদেশকে লোক দেখানো ভাবে কার্যকরী করার জন্য অপ্রয়োজনীয় জিনিস পোড়ানো হয়।
পঞ্চমত, ইউরোপে এমনকি ফ্রান্সে ব্রিটেনের দ্রব্যের অবরোধ শিথিল করতে হয়। তিনি তার ভাই
লুইকে এক গোপন আদেশ দ্বারা হল্যান্ড থেকে ডাচ-জিন বা মোটাকাপড় খরিদের সুযোগ ইংরেজ
বণিকদের দেন। তিনি নিজেও বিশেষ ব্যবস্থায় ফরাসি সেনাদের জুতা ও পোশাক ইংল্যান্ড থেকে
কিনেন।
৩। নেপোলিয়নের লাইসেন্স প্রথা
নেপোলিয়ন যখন দেখলেন ইংল্যান্ড থেকে দ্রব্য আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয় তখন তিনি
আমদানিকারকদের অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্স দিেেত শুরু করেন।নৌশক্তির অভাব থাকার কারণে
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অবরোধ কার্যকরি করা সম্ভব ছিল না। একথা বুঝতে পেরে নেপোলিয়ন লাইসেন্স
প্রথা চালু করেন এবং নীতিগত ভাবে তাঁর অবরোধের ভাঙন মেনে নেন।
৪। ফ্রান্সে স্বার্থ রক্ষানীতি
অনেকে মনে করেন যে, মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার পিছনে নেপোলিয়নের উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপীয়
জাতিগুলিকে নিয়ে একটি অর্থনৈতিক জোট গঠন করা এবং এই জোটের মধ্যমণি হিসেবে তিনি ফ্রান্সকে
প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। অর্থনীতিকে তিনি তাঁর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার
করেন। তাঁর অর্থনীতিতে তিনি ইউরোপের অন্য দেশ অপেক্ষা ফ্রান্সের স্বার্থকে সেরা মনে করতেন। এই
ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ইকোনোমিক ইউনিয়ন বা ইউরোপের দেশ গুলোর অর্থনৈতিক সংঘ গঠন কখনও
তাঁর কল্পনায় ছিলনা। অবরোধ শিথিল করে লাইসেন্স প্রদান শুরু করলে ফরাসি বণিকরাই প্রাধান্য
পেতে থাকে। এই অবস্থায় নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে শুরু করে ।
৫। ফ্রান্সের বাণিজ্যের প্রতি পক্ষপাত নীতি
শুধু নৌশক্তির অভাবের জন্যে নয় ফ্রান্সের প্রতি পক্ষপাত দুষ্ট একপেশে বাণিজ্য নীতি ইউরোপের অন্য
জাতিগুলির বিরোধিতা সৃষ্টি করে। ফ্রান্সের দাবিই অগ্রগণ্য (ঋৎবহপয ভরৎংঃ) এই নীতি গ্রহণে রাশিয়া,
অস্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশ ক্ষুব্ধ হয় এবং মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। তাদের বন্দর
ইংল্যান্ডের বাণিজ্য জাহাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
৬। ফ্রান্সে অবরোধের বিরোধিতা
ফ্রান্সের ভেতরে এক শ্রেণীর বণিক ও শিল্পপতি মহাদেশীয় অবরোধের বিরোধিতা শুরু করে।
নেপোলিয়ন তাঁর যুদ্ধ বিগ্রহ ও ইউরোপ অবরোধকে কার্যকরি করার জন্য বিরাট ব্যয়ের ভার নির্বাহের
জন্য বণিক ও শিল্পপতিদের উপর বর্ধিত কর ধার্য করেন। ইংল্যান্ড ঙৎফবৎং রহ ঈড়ঁহপরষ চালু করার
ফলে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ ছাড়া নেপোলিয়ন ফ্রান্সে শিল্প গঠনের যে উদ্যোগ
নেন তার গতি ছিল অত্যন্তমন্থর। ফ্রান্সে কৃষি ভিত্তিক রক্ষণশীল সমাজে তখনও শিল্প বিপ্লবের গুরূত্ব
অনেকে বোঝেনি। ক্ষুদ্রশিল্পের ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলেও বৃহৎ শিল্প দ্বারা উদ্বৃত্ত উৎপাদনের আশা পূরণ
হয়নি। ফলে ইউরোপের দেশগুলিতে ফ্রান্সে একচেটেয়া বাজার দখলের আশা দিবা স্বপ্নে পরিণত
হয়। স্বদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সমর্থন এবং বিদেশে ইউরোপীয় জনমত হারিয়ে নেপোলিয়নের
মহাদেশীয় অবরোধ ভেতর থেকেই ভাঙতে থাকে ।
সারসংক্ষেপ
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ইউরোপে নিজের পূর্ণ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য এবং ব্রিটেনকে অর্থনৈতিকভাবে
পরাস্তকরে ফ্রান্সকে আর্থিক দিক দিয়ে শীর্ষে পৌঁছে দেয়ার জন্য মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা প্রবর্তন
করেন। এই ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য ১৮০৬ সালে বার্লিন ঘোষণা জারি, ১৮১০ সালে ফন্টেনবøু
নির্দেশ জারি করেন এবং এই ঘোষণা গুলো কার্যকর করা জন্য রাশিয়া, অস্ট্রিয়া সহ কয়েকটি দেশকে
বাধ্য করেন। এছাড়াও হল্যান্ড ও জার্মানির উপকূল অঞ্চল দখল করেন। কিন্তু এটি বাস্তবায়নে কঠোরতা
প্রথম দিকে কিছুটা সফল হলেও শেষ পর্যন্ততা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এই ব্যবস্থা ফ্রান্সের অর্থনৈতিক
অবস্থা বরং আরো দুর্বল করে ইউরোপের অন্যান্য দেশের মত ফ্রান্সের জনগণও এই ব্যবস্থার বিরোধিতা
শুরু করে। শেষ পর্যন্তমহাদেশীয় অবরোধ নেপোলিয়নের জন্য ‘বুমেরাং’ হয়ে দাঁড়ায় এবং তাঁর পতন
ত্বরান্বিত করে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
নৈর্র্ব্যক্তিক প্রশ্ন
১। নৌশক্তিতে অগ্রসর ছিল কোন দেশ ?
ক. ব্রিটেন খ. ফ্রান্স
গ. রাশিয়া ঘ. জার্মানি
২। কোন সন্ধির ফলে ফ্রান্সে প্রযুক্তিবিদরা ব্রিটেনের শিল্প কারখানা পরিদর্শনের সুযোগ পায়?
ক.বার্লিন সন্ধি খ. এ্যামিয়েন্সের সন্ধি
গ. মিলান সন্ধি ঘ. কোনটিই নয় ।
৩। ব্রিটেন কর্তৃক মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার পাল্টা ব্যবস্থা কি ছিল ?
ক.বার্লিন ঘোষণা খ. মিলান নির্দেশ
গ. ফন্টেনবø্যু নির্দেশ ঘ. অর্ডারস ইন কাউন্সিল
৪। নেপোলিয়ন যখন দেখলেন ইংল্যান্ড থেকে দ্রব্য আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয় তখন কি
ব্যবস্থা নিলেন ?
ক. অবরোধ ব্যবস্থা আরো কঠোর করলেন খ. অবরোধ ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে নিলেন
গ. লইসেন্স প্রথা চালু করলেন ঘ. ইংল্যান্ডের সাথে শান্তিচুক্তি করলেন।
৫। কোন ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহাদেশীয় অবরোধ কার্যকর হয় ?
ক. বার্লিন ঘোষণা খ.অর্ডারস ইন কাউন্সিল
গ. মিলান নির্দেশ ঘ. কোনটি নয়।
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১। মহাদেশীয় অবরোধ কি ?
২। মহাদেশীয় অবরোধের কারণ কি ছিল ?
৩। ফ্রান্সের বিরোধিতা মহাদেশীয় অবরোধের ক্ষেত্রে কতটুক প্রভাব ফেলেছে ?
৪। মাহাদেশীয় অবরোধের রাজনৈতিক ফলাফল কি ছিল ?
৫। অর্ডারস ইন কাউন্সিল কি ? কেন ব্রিটেন এটা জারি করেছিল ?
৬। বালির্ন ঘোষণার নির্দেশ গুলি কি ছিল ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১। মহাদেশীয় অবরোধ কি ? এর বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করুন।
২। কেন নেপোলিয়ন মহাদেশেীয় অবরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ছিলেন? এই ব্যবস্থা কি সফল হয়েছিল?
৩। মহাদেশীয় অবরোধের পটভূমি ব্যাখ্যা করুন এবং এই ব্যবস্থার ফলাফল কি হয়েছিল ?
৪। মহাদেশীয অবরোধ ব্যবস্থার ব্যর্থতার কারণ আলোচনা করুন।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত