ইউরোপীয় শক্তি সমবায় কি? এর সাফল্য ও ব্যর্থতা আলোচনা করুন ।
ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের ব্যর্থতার কারণ সমূহ আলোচনা করুন?
ঘ) পবিত্র চুক্তি বলতে কি বোঝেন? এর লক্ষ্য


 শক্তি সমবায়ের সদস্য দেশ সমূহের স্বার্থ-দ্ব›দ্ব ব্যাখ্যা করতে পারবেন।
ইউরোপীয় শক্তি সমবায় উদ্ভবের পটভুমি
ভিয়েনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ইউরোপীয় নেতৃবর্গের কাছে প্রধান সমস্যা ছিল এই চুক্তিকে স্থায়ী
করা এবং ইউরোপে শান্তিবজায় রাখা। ঐতিহাসিক ফিশারের মতে ‘‘ফরাসি বিপ্লবের ফলে ইউরোপীয়
শক্তিগুলো নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়। এ জন্য ১৮১৫ সালে তারা সিদ্ধান্তেউপনীত হয় যে, আর
কেনোভাবে ফরাসি বিপ্লব বা নেপোলিয়নের অভ্যুত্থান ঘটতে দেওয়া হবে না’’। সুতরাং ইউরোপীয়
নেতৃবর্গ ভিয়েনা চুক্তি রক্ষা, ইউরোপে শান্তিরক্ষা এবং নেপোলিয়নের পুনরুত্থানের পথ রুদ্ধ এই তিন
সমস্যা সমাধানের জন্য একটি স্থায়ী আন্তর্জাতিক সংগঠন স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। আর
এ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য রাষ্ট্রনায়কগণ যে পন্থা অনুসরণ করেন তার ফলে “ইউরোপিয় শক্তি
সমবায়’’(ঈড়হপবৎঃ ড়ভ ঊঁৎড়ঢ়ব) নামে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। নির্ধারিত লক্ষ্য
বাস্তবায়নের জন্যে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ “পবিত্র চুক্তি (ঐড়ষু অষষরধহপব) এবং চতুঃশক্তি চুক্তি
(ছঁধফৎঁঢ়ষব অষষরধহপব) নামে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই দুই চুক্তির মাধ্যমে ইউরোপীয় শক্তি গুলির
মধ্যে যে বন্ধুত্ব ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয় তাই ইউরোপীয় শক্তি সমবায় নামে পরিচিত।
পবিত্র চুক্তি (ঐড়ষু অষষরধহপব) রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার সর্বপ্রথম পবিত্র চুক্তি নামে এক
পরিকল্পনা রচনা করেন। জার ১৮১৫ তে পবিত্র চুক্তি ঘোষণা করে ইউরোপের রাজাদের এতে যোগ
দানের আহবান জানান। জার প্রথম আলেকজান্ডার ছিলেন ভাবপ্রবণ, ধর্মপরায়ণ ও আদর্শবাদী। তিনি
মনে করতেন যে ফরাসি বিপ্লবের ন্যায় প্রজা বিদ্রোহ ছিল খ্রিস্টীয় ধর্মশাস্ত্র বিরোধী। তিনি এও মনে
করতেন যে, খ্রিস্টীয় ধর্মশাস্ত্র অনুসারে রাজ্য শাসন ও পররাষ্টনীতি অবলম্বন করলে ইউরোপের সকল
অশান্তিদূর হবে।
বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে খ্রিস্টিয় রাজধর্ম সম্পর্কে যে সব আদর্শের উল্লেখ আছে ইউরোপীয়
রাজাদের সেগুলো পালন করার জন্য তিনি আহবান জানান। পবিত্র চুক্তিতে বলা হয় যে, ১) ইউরোপের
রাজাগণ খ্রিস্টিয় সমাজের অধীন পরস্পরকে ভাই হিসাবে বিবেচনা করবেন; ২) তারা প্রজাদেরকে নিজ
সন্তানের মত দেখবেন অর্থাৎ পিতৃতান্ত্রিক আদর্শকে কার্যকর করবেন; ৩) খ্রিস্টিয় রাজারা “ন্যায়, মানব
প্রেম ও শান্তি” অবলম্বন করে রাজ্য শাসন করবেন; ৪) ইউরোপিয় রাজারা অঙ্গীকার করবেন যে, শাসন
কার্যে তারা “ধর্মের মহান তত্বগুলিকে” পালন করবেন; ৫) প্রæশিয়া, রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার সম্রাট বিশেষ
ভাবে পরস্পরকে ভাই মনে করে উপরোক্ত আদর্শ গুলো নিজ রাজ্যে বাস্তবায়ন করবেন।
পবিত্র চুক্তির আদর্শ ঘোষিত হলে প্রæশিয়া, রাশিয়া ও অস্ট্রিয়া এতে যোগদান করে পর¯পরের স্বার্থ
রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। ফলে তিন শক্তি বিশিষ্ট একটি রক্ষণশীল জোটের সৃষ্টি হয়। এদের আসল



উদ্দেশ্য ছিল পবিত্র চুক্তির মাধ্যমে পুরাতন ব্যবস্থাকে স্থায়ী করা এবং বৈপ্লবিক ভাব ধারাকে প্রতিহত
করা। কারণ, বৈপ্লবিক ধারা ছিল খ্রিস্ট ধর্মের আদর্শের বিরোধী। পবিত্র চুক্তির মাধ্যমে জার মানব
প্রেম, শান্তিও ন্যায় নীতির কথা বললেও এর প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপের রাজাদের স্বৈরশাসন
ব্যবস্থাকে ধর্মের আদর্শ দ্বারা পাকাপোক্ত করা। এতে পরোক্ষভাবে ফরাসি বিপ্লবজাত ভাবধারাকে অগ্রাহ্য
করা হয় এবং রক্ষণশীলতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়।
বাস্তবে পবিত্র চুক্তি ছিল অকার্যকর। কারণ, এটি চুক্তির আকারে রচিত না হয়ে একটি ঘোষণাপত্র রূপে
পর্যবসিত হয়। এই রূপ বিমূর্ত নীতির উপর নির্ভর করে রাজ্য শাসন করা সম্ভবপর ছিলনা। পবিত্র
চুক্তিতে বাস্তববুদ্ধির অভাব ছিল। এর ফলে এই চুক্তি ছিল অষ্পষ্ট কয়েকটি নীতি বাক্যের সমন্বয় মাত্র।
পবিত্র চুক্তির ব্যর্থতার প্রধান কারণ ছিল অস্ট্রিয়া ও ইংল্যান্ডের বিরোধিতা। ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
দৃঢ়ভাবে এই চুক্তির বিরোধিতা করেন। তিনি এই চুক্তির লক্ষ্যগুলির অষ্পষ্টতার অভিযোগ তুলে একে
“একটি মহান রহস্যপূর্ণ অর্থহীন পাগলামি” বলে অভিহিত করেন। অন্যদিকে মেটারনিক পবিত্র চুক্তির
সমালোচনা করে বলেন যে, পবিত্র চুক্তি হলো একটি অর্থহীন ঘোষণা এবং ধর্মীয় ছদ্মাবেশে একটি
রাজনৈতিক উচ্চাকাঙক্ষা। রাশিয়ার জারকে খুশি করার জন্য অস্ট্রিয়া ও প্রæশিয়া এতে স্বাক্ষর করে।
মোট কথা অস্ট্রিয়া ও প্রæশিয়া চুক্তির প্রতি আন্তরিক ছিলনা। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার বিরোধিতার ফলে এ
চুক্তি ব্যর্থ হয়।
চতুঃশক্তি সন্ধি
পবিত্র চুক্তির ব্যর্থতার পর ইউরোপের শক্তি সমবায় গঠনের জন্য অস্ট্রিয়ার মেটারনিক চতুঃশক্তি সন্ধি
রচনা করেন ১৮১৫ সালের নভেম্বরে। অস্ট্রিয়া , প্রæশিয়া, ইংল্যান্ড ও রাশিয়া এতে স্বাক্ষর করে।
ইউরোপীয় শক্তি সমবায় মূলত চতুঃশক্তি সন্ধির দ্বারা স্থাপিত হয়। এই সন্ধিতে স্বাক্ষরকারী দেশ সমূহ
অঙ্গীকার করে যে, -১) ভিয়েনা চুক্তিকে রক্ষা করা হবে; ২) ইউরোপে যুদ্ধবিদ্রোহ পরিহার করে শান্তি
অব্যাহত রাখা হবে। বিভিন্ন শক্তির মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা
হবে; ৩) বিপ্লবী ভাবধারা ইউরোপের শান্তিবিঘœ ঘটালে তা দমন করা হবে এবং ৪) চতুঃশক্তির সন্ধির
ধারায় বলা হয় যে, ইউরোপের পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য চার শক্তি মাঝে মাঝে বৈঠক মিলিত হবে।
চতুঃশক্তি সন্ধির গুরুত্ব আধুনিক যুগের ইতিহাসে অস্বীকার করা যায় না। গ্রান্ট ও টেম্পারলির মতে
“কংগ্রেস কূটনীতি” বলতে যা বোঝায় তা চতুঃশক্তি সন্ধির ফলেই সৃষ্টি হয়। ইউরোপীয় শক্তি গুলি
পরস্পরের মধ্যে বিরোধ বাহুবলে না করে কংগ্রেসের দ্বারা শান্তিপুর্ণভাবে সমাধান করবে। এই
মনোভাবকেই “কংগ্রেস কূটনীতি” বলা হয়। ইউরোপীয় শক্তি সমবায় প্রকৃতপক্ষে চতুঃশক্তি সন্ধির উপর
ভিত্তি করে গঠিত হয়। সকল শক্তি একমত হয়ে কাজ করে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হওযায় এই জোটকে শক্তি
সমবায় বলা হয়।
শক্তি সমবায়ের কার্যাবলী
ইউরোপের শক্তি সমবায় ১৮১৮ সালে প্রথম পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। ভিয়েনা সন্ধি অনুসারে নির্ধারিত
ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করায় ফ্রান্স থেকে বিজয়ী সেনাদল অপসারণের প্রশ্নে আলোচনার জন্যে শক্তি
সমবায়ের বৈঠক এ-লা-শ্যাপেলে (অরী-খধ-ঈযধঢ়বষষব) আহুত হয়। ফ্রান্স সম্পর্কে চতুঃশক্তি বাস্তব
পদক্ষেপ নেয়। ফ্রান্সের ন্যায় বৃহৎ শক্তিকে বাইরে রেখে শক্তি সমবায় চলতে পারেনা একথা তারা
উপলবদ্ধি করেন। ফ্রান্সের রাজা অষ্টাদশ লুই ফ্রান্সকে বিপ্লবী মনোভাব গ্রহণ করা থেকে নিরস্তকরতে
সমর্থ হন একথা সদস্যগণ বিশ্বাস করেন। সুতরাং, সদস্যগণ একমত হয়ে ফ্রান্স থেকে তাদের দখলদারি
সেনা অপসারণ ও ফ্রান্সকে শক্তি সমবায়ের সদস্য হিসাবে গ্রহণ করেন। অতপর তারা ইউরোপের ক্ষুদ্র
রাষ্ট্র সমূহের অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে তাদের উপর নৈতিক আধিপত্য বিস্তার করেন। ক) সুইডেনের
রাজার বিরুদ্ধে নরওয়ে কুশাসনের অভিযোগ আনলে সুইডেনরাজ বার্নাদোতকে শক্তি সমবায় ভৎর্সনা
করে এবং পবিত্র চুক্তির আদর্শ অনুসরণ করতে পরামর্শদেয়। খ) মোনাকো নামে ক্ষুদ্র দেশের

জনসাধারণ তাদের রাজার বিরূদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ আনলে তাকেও ভৎর্সনা করা হয়। গ)
জার্মানির ব্যাডেন রাজ্যের উত্তরাধিকার সমস্যা এবং অস্ট্রিয়া ও প্রæশিয়ার প্রজাদের সমস্যা সম্পর্কেও
শক্তি সমবায় ঐক্যমতে উপস্থিত হয়।
কিন্তু এত সব ঐক্যমতের মধ্যেও একটি বেসুরো আওয়াজ বেজে উঠে এ-লা-শ্যাপলের বৈঠকে। এর মূল
কারণ ছিল চার বৃহৎ শক্তির স্বার্থ দ্ব›দ্ব। স্পেনের দক্ষিণ আমেরিকায় উপনিবেশিক অধিকার পুনপ্রতিষ্ঠায়
স্পেন-বৃটেন দ্ব›দ্ব, ভূমধ্যসাগরের জলদস্যু দমনে রাশিয়ার নৌবহর পাঠাবার প্রস্তাব বৃটেনের বিরোধিতা,
নিষিদ্ধ ঘোষিত ক্রীতদাস চোরাচালান বন্ধ করার জন্য সন্দেহ জনক জাহাজ তল্লাসীর অধিকার ব্রিটিশ
নৌবহরকে দেওয়ার বৃটিশ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান প্রভৃতি কারণে এ-লা-শ্যাপেলের বৈঠক মনোমালিন্যের মধ্যে
শেষ হয়।
ট্রপোর ঘোষণা পত্র
ইতিমধ্যে ১৮২০ খ্রিঃ স্পেনের গণবিদ্রোহ ঘটে। স্পেন রাজ ফার্দিনান্দ এই বিদ্রোহের ফলে প্রজাদের
একটি উদারপন্থী সংবিধান দিতে বাধ্য হন। স্পেনে বিদ্রোহের ফলে রুশ জার আলেকজান্ডার স্পেনে
রুশ সৈন্য প্রেরণের জন্য প্রস্তাব দেন। কিন্তু বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যাসলরি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন
এবং এর অল্পদিনের মধ্যে দক্ষিণ ইতালি নেপলসে এবং পর্তুগালে স্পেনের মত উদারপন্থী বিদ্রোহ
ঘটে। অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেটারনিক এই সকল সমস্যা বিবেচনার জন্য শক্তি সমবায়ের দ্বিতীয় বৈঠক
ডাকেন ট্রপো শহরে। মেটারনিক ইতিমধ্যে তার পরিকল্পনা স্থির করে উদারপন্থি ভাবধারার গতি রোধ
করে রক্ষণশীলতাকে সুপরিকল্পিত ভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য শক্তি সমবায়কে ব্যবহার করার সংকল্প
নেন। তিনি শক্তিসমবায়কে ইউরোপে গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ দমনের একচেটিয়া হাতিয়ারে পরিণত
করার ব্যবস্থা করেন যাতে সকল সদস্য তার প্রবর্তিত নীতি গ্রহণ করে এজন্য মেটারনিক ট্রপোর
ঘোষণাপত্র নামে এক দলিল রচনা করেন। তিনি সদস্যদের এই ঘোষণা পত্রে স্বীকৃতি জানাতে আহবান
করেন। ট্রাপোর ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে- ১) রাজা স্বেচ্ছায় এবং বিনা প্ররোচনায় সংবিধান দান
করবেন একমাত্র সেই সংবিধান বৈধ বলে গণ্য হবে। ২) বহিঃ ইউরোপের কোনো দেশে বিপ্লবের ফলে
সেই দেশের রাজা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে সেই দেশকে ইউরোপিয় শক্তি সমবায় থেকে
বহিষ্কৃত বলে গণ্য করা হবে। ৩) যদি এই বিপ্লবের ফলে প্রতিবেশী রাজ্যের শান্তিভঙ্গের সম্ভাবনা দেখা
দেয় তাহলে শক্তি সমবায় বলপুর্বক বিদ্রোহ দমন করে সেই দেশে শান্তিও স্থিতিশিলতা ফিরিয়ে আনবে।
ট্রপোর এ ঘোষণা দ্বারা শক্তি সমবায় কার্যত ইউরোপের সকল প্রকার অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করার
দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং স্বৈরচারী রাজতন্ত্রগুলোকে স্থায়ী করার সিদ্ধান্তনেয়। এছাড়া গণতান্ত্রিক ও
জাতীয়তাবাদী সকল আন্দোলনকে প্রতিহত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। তবে ইংল্যান্ডের আপত্তি অগ্রাহ্য
করে অস্ট্রিয়া, প্রæশিয়া ও রাশিয়া এই তিন রক্ষণশীল শক্তি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে ট্রাপোর ঘোষণা পত্র
পাশ করলে ইংল্যান্ড শক্তি সমবায় যেকে দূরে সরে যায় এবং শক্তিসমবায়ের পতন আরম্ভ হয়।
লাইব্যাকের বৈঠক (১৮২১)
ট্রপোর বৈঠকের পর ১৮২১ সালে লাইব্যাকে শক্তি সমবায়ের তৃতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ট্রপোর
ঘোষণাপত্র অনুসারে নেপলসের বিদ্রোহ দমন করার জন্য অস্ট্রিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়। অস্ট্রিয়ার
সেনাবাহিনী বুরঁেবা ফার্দিনান্দকে নেপলসের সিংহাসনে পুনপ্রতিষ্ঠা করে। তারা পিডমন্টের উদারনৈতিক
সংবিধান দমন করে এবং ইতালিতে স্বৈরাচারি রাজতন্ত্রকে সক্রিয় করে। কিছুদিনের জন্যে গোটা
ইউরোপে মেটারনিকের আদর্শ বিজয়ী হয়।
ভেরোনার বৈঠক (১৮২২)
অতপর ভেরোনা শহরে ১৮২২ সালে শক্তি সমবায়ের চতুর্থ বৈঠক বসে। ইতিমধ্যে ক্যানিং ইংল্যান্ডের
পররাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ লাভ করেন। ক্যানিং মনে করতেন যে, শক্তি সমবায়ে যোগদানের ফলে ইংল্যান্ড
স্বাধীনভাবে তাঁর পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনা করতে সক্ষম হয়নি। তাছাড়া শক্তি সমবায়ের কার্যকলাপ


ইংল্যান্ডের স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় ক্যানিং শক্তি সমবায়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার চিন্তা করেন।
ভেরোনার সম্মেলনে মেটারনিক ইংল্যান্ডের আপত্তি অগ্রাহ্য করে স্পেনের বিদ্রোহ দমন করার জন্য
স্পেনে ফরাসি সৈন্য পাঠাবার প্রস্তাব পাশ করান। মেটারনিক রক্ষণশীল দেশগুলোর সমর্থন পেয়ে
ইংল্যান্ডকে কোণঠাসা করে শক্তি সমবায়কে নিজ ইচ্ছায় চালাতে থাকেন। ফরাসি সেনা স্পেনে প্রবেশ
করে স্পেন ও পর্তুগালের উদারনৈতিক বিদ্রোহ দমন করেন। আমেরিকার স্পেনের উপনিবেশের প্রশ্নে
এ-লা-শ্যাপলের বৈঠকে ইংল্যান্ডের আপত্তির ফলে মুলতবি ছিল। আত্মতৃপ্ত মেটারনিক এই প্রশ্ন পুনরায়
উত্থাপন করলে প্রতিবাদে ইংল্যান্ডে ভেরনার বৈঠক বর্জন করে। এই সময় ইংল্যান্ডের পদত্যাগের
ফলে চতুঃশক্তি ভেঙ্গে পড়ে ।
ভেরোনার বৈঠকের পর শক্তি সমবায় কার্যত ভেঙ্গে যায়। গ্রিসের বিদ্রোহের সমস্যা সমাধানের জন্য জার
প্রথম আলেকজেন্ডার সেন্ট পিটার্সবার্গে শক্তি সমবায়ের পঞ্চম সম্মেলন আহবান করেন। ইংল্যান্ড এ
বৈঠক বর্জন করে। তুরস্কের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা লাভের জন্য গ্রিস বিদ্রোহ করলে জার গ্রিসের পক্ষ নিতে
ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু মেটানিক ও অন্য নেতারা মনে করেন যে, জার তুরস্ককে হটিয়ে নিজ ক্ষমতা
বৃদ্ধির চেষ্টায় আছেন। সুতরাং তারা যুক্তি দেখান ট্রপোর ঘোষনাপত্র অনুসারে বিদ্রোহী গ্রিসকে রাশিয়া
সাহায্য দিতে পারে না। তুরস্ক এশিয়ার দেশ। ইউরোপিয় শক্তি সমবায়ের সাথে এশিয়ার কোনো সম্পর্ক
নেই। এতে জারের সঙ্গে শক্তি সমবায়ের অন্য সদস্যদের মনোমালিন্য দেখা দেয়।
শাক্তি সমবায়ের প্রকৃতি
ইউরোপীয় শক্তি সমবায় জনগনের প্রতিনিধিদের সংগঠন না হয়ে ইউরোপের রক্ষণশীল ও
প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিবর্গের একটি ঐক্যবন্ধনে পরিণত হয়। একমাত্র ইংল্যান্ড ছাড়া অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র
মাত্রই স্বৈরাচারে বিশ্বাসী ছিল। যে উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় শক্তি সমবায় গড়ে উঠেছিল পরবর্তী সময়ে
তাতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। প্রথমে যখন এটি সংগঠিত হয় তখন এর উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক
শান্তিরক্ষা করা। কিন্তএ-লা-শ্যাপেলের সম্মেলনের এটা প্রমাণিত হল যে, ইউরোপীয় সংঘের সদস্যগণ
স্বার্থপরতার নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়েছিলেন। দাস ব্যবসা বন্ধ করা এবং ভূমধ্য সাগরে জলদস্যুতা
নিবারণ নিয়ে সদস্য বর্গের মধ্যে যে মতবাদ হয তা এ স্বার্থপরতার পরিচয় বহন করে। ট্রপোর
সম্মেলনের সময় হতে ইউরোপীয় শক্তি সমবায় একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়। গণতন্ত্র ও
জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ বলপূর্বক দমন করা এর একমাত্র উদ্দেশ্য। মেটারনিকের হাতে এই
সংগঠনটি সর্বপ্রকার প্রগতিশীল আদর্শ দমনের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়।
শক্তি সমবায়ের ব্যর্থতার কারণ
নেপোলিয়নের পতনের পর ইউরোপের শান্তিও স্থিতি প্রতিষ্ঠার জন্যে শক্তি সমবায় স্থাপিত হলেও প্রায়
দেড় দশকের মধ্যে এই সংগঠন ভেঙ্গে পড়ে। শক্তি সমবায়ের পতনের প্রধান কারণ ছিল এটি
নেপোলিয়নের পুনরাক্রমণের ভয়ে গঠিত হয় নেপোলিয়নের আক্রমণের আশা তিরোহিত হতে না হতেই
শক্তি সমূহের পারস্পারিক স্বার্থ ও বিরোধ প্রকট হয়ে ওঠে এবং ঐক্য বিনষ্ট হয়। এছাড়া শক্তি সমবায়ের
কোনো গঠনমূলক উদ্দেশ্য ছিলনা। ফলে নেপোলিয়নের পতনের পর শক্তি সমবায়ের ভিত্তি দুর্বল হয়ে
পড়ে ও চতুঃশক্তি ছিল পরস্পবিরোধী। পবিত্র চুক্তি দ্বারা জার প্রথম আলেকজান্ডার ইউরোপের স্থল শক্তি
গুলিকে নিজ পক্ষে এনে নৌশক্তিধর ইংল্যান্ড চতুঃশক্তি সন্ধি করা ইউরোপের স্থল শক্তি গুলির মিত্রতা
লাভ করে রাশিয়ার উদ্দেশ্যকে ব্যহত করে। রাশিয়া ও ইংল্যান্ডের এই প্রতিদ্ব›িদ্বতার সুযোগে
মেটারনিক শক্তি সমবায়কে নিজ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কাজে লাগান। রাশিয়া ও বৃটেনের এই দ্ব›েদ্বর
ফলে শক্তি সমবায় অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্তইংল্যান্ড শক্তি সমবায় ত্যাগ করে।
শক্তি সমবায় সদস্যদের পরস্পারিক স্বার্থের সংঘাতে ধবংসপ্রাপ্ত হয়। নেপোলিয়ন ভীতি দূর হলে
সদস্যদের মধ্যে ঈর্ষা ও স্বার্থের দ্ব›দ্ব নগ্নভাবে প্রকট হয়। ইংল্যান্ডের নৌ শক্তির প্রতাপ এবং তুরস্কের


সঙ্গে ইংল্যান্ডের মিত্রতার জন্য রাশিয়ার জার ক্ষুব্ধ হন। এদিকে রাশিয়ার বিরাট স্থল বাহিনীর ভয়ে
অস্ট্রিয়া আতঙ্কিত হয়। এই কারণে গ্রিসের বিদ্রোহ উপলক্ষে রাশিয়ার হস্তক্ষেপে অস্ট্রিয়া বিরোধিতা
করেন। ইংল্যান্ড ট্রপোর ঘোষণার বিরোধিতা করায় ইংল্যান্ডের প্রতিবাদ আগ্রাহ্য করে অস্ট্রিয়া ও রাশিয়া
স্পেনের বিদ্রোহ দমন করার জন্য ফরাসি সেনা পাঠায়। এতে নিজেদের মধ্যে বিরোধ দানা বাঁধে ।
শক্তি সমবায়ের সদস্যদের মধ্যে রাষ্ট্রীয় আদর্শের পার্থক্য থাকায় সদস্যদের মধ্যে ঐক্য ছিলনা। বৃটিশ
সরকারের চরিত্র ছিল সাংবিধানিক, অপরদিকে অস্ট্রিয়া, প্রæশিয়া ও রাশিয়ায় সরকার ব্যবস্থা ছিল
স্বৈরতান্ত্রিক। এজন্যে উদারপন্থী ইংল্যান্ডের সংগে রক্ষণশীল শক্তিগুলির দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য দেখা দেয়।
ইংল্যান্ডকে দেশের পার্লামেন্ট ও জনমতের সমর্থন নিয়ে পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনা করতে হতো। অপর
দিকে স্বৈরতন্ত্রী শক্তিগুলির এই দায়িত্ব ছিলনা। তারা কেবল রাজার ইচ্ছাতেই নীতি নির্ধারণ করত।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যাসলরিকাশক্তি সমবায়ের প্রতি ইংল্যান্ডের দুর্বলতার জন্যে পার্লামেন্টে সমালোচিত
হন। এই কারণে ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্তশক্তি সমবায় ত্যাগ করে। ইংল্যান্ডের নতুন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্যানিং
এর নীতির ফলে এই শক্তি সমবায়ের পতন ঘটে।
মেটারনিক শক্তি সমাবায়কে ট্রপোর সম্মেলনের পর রক্ষণশীলতার বাহকে পরিণত করেন। শক্তি
সমবায়ের মূল লক্ষ্য চতুঃশক্তি সম্মেলনের গৃহীত হয়েছিল। মেটারনিকের প্রভাবে শক্তি সমবায় তার মূল
আদর্শ থেকে সরে যায়, ইংল্যান্ড এ জন্য হতাশ হয়ে পড়ে। ডেভিড টমসনের মতে, শাক্তি সমবায়ের
উচিৎ ছিল ভিয়েনা চুক্তিকে অলঙ্ঘণীয় না ভেবে ন্যায্য ঐতিহাসিক পরিবর্তন গুলোকে স্বীকার করা। যে
ক্ষেত্রে প্রকৃত জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্র দেখা দেয় তাকে স্বীকৃতি না দেওয়ার অর্থ ছিল ইতিহাসের গতির
বিরুদ্ধ যাওয়া। কিন্তু ট্রপোর ঘোষণা দ্বারা ইতিহাসের অগ্রগতি রূদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। শক্তি সমবায়ের
এই প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্র এর পতন তরান্বিত করে।
১৮১৫ সাল হতে ইউরোপে পরপর কয়েক বছর শস্যহানি, খরা এবং শিল্প মন্দা দেখা দেয়। বহু ব্যাংক
ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। সরকারগুলো ব্যয় নির্বাহের জন্য জনসাধারণের উপর বাড়তি কর
চাপিয়ে দেয়। ফলে রক্ষণশীল সরকার গুলোর উপর জনগণের আস্থা নষ্ট হয়। উদারনৈতিক নীতি ও
জাতীয়তাবাদী আন্দোলন প্রবল হয়। এমতাবস্থায় শক্তি সমবায় মেটারনিকের প্রভাবে দমন নীতি গ্রহণ
করে। এতে করে শক্তি সমবায় নৈতিক শক্তি হারিয়ে ফেলে ব্রিটেন শক্তি সমবায়কে এমন ভাবে
ব্যবহার করতে চেয়েছে যাতে প্রকৃত জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিয়ে বাস্তবকে
মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু মেটারনিক শক্তি সমবায়কে একটি দমন নীতির হাতিয়ারে পরিণত করায় ব্রিটেন
তার বিরোধিতা করে।
সারসংক্ষেপ
পবিত্র সন্ধি ও চতুঃশক্তি সন্ধির নীতি সমূহ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ইউরোপের শক্তি সমবায়ের মধ্যে যে
ঐক্য গড়ে ওঠে তাকেই শক্তি সমবায় বলে। শক্তি সমবায়ের কার্যাবলী দ্বারা ইউরোপে শান্তিও স্থিতি
বজায় রাখতে সচেষ্ট হয়। কিন্তু প্রগতিবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীলদের মধ্যে স্বার্থের দ্ব›দ্ব বিশেষ করে ইংল্যান্ড
বনাম অস্ট্রিয়া, প্রæশিয়া, রাশিয়ার বিরোধ শক্তি সমবায়ের সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করে এবং
শেষ পর্যন্তশক্তি সমবায় ভেঙ্গে পড়ে। একথা সত্য যে যদিও শক্তি সমবায় বিফল হয় তবুও “কংগ্রেস
কূটনীতি” বা শক্তি সমবায়ের কূটনীতির মূল ছিল সুদূরপ্রসারি। পরবর্তীকালে ইউরোপের বহু সমস্যা


কংগ্রেস কূটনীতির দ্বারা সমাধান করা সম্ভব হয়। ইউরোপীয় শক্তি সমবায় যুদ্ধ না করে শান্তিপূর্ণভাবে
সমস্যা সমাধানের নতুন পথ দেখায়।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
১। সঠিক উত্তরে টিক () চিহ্ন দিতে হবে
ক) পবিত্র চুক্তির পরিকল্পনা করেন কে?
১. প্রথম আলেকজ্যান্ডার ২. মোটরনিক
২. ৩.কাসলরি ৪. ক্যানিং
খ) পবিত্র চুত্তির উদ্দেশ্য কি ছিল?
১. রক্ষণশীল নীতির পুনপ্রতিষ্ঠা ২. উদারতান্ত্রিক নীতি প্রতিষ্ঠা করা
৩. জাতীয়তাবাদী মত প্রতিষ্ঠা ৪. ইতিহাসের গতি বজায় রাখা ।
গ) চতুঃশক্তি সন্ধি স্বাক্ষরকারী দেশ সমূহ কি কি?
১. স্পেন, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রæশিয়া ২. অস্ট্রিয়া রাশিয়া, প্রাশিয়া, গ্রিস
৩. ফ্রান্স, পর্তুগাল অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ৪.  অস্ট্রিয়া, প্রæশিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড ।
ঘ) এ-লা- শ্যাপলের বৈঠকে নতুন কোন দেশকে শক্তি সমবায়ের সদস্য করা হয়?
১. গ্রিস ২. বেলজিয়াম
৩. ফ্রান্স ৪. স্পেন
ঙ) ট্রপোর ঘোষণাপত্র কে রচনা করেন ?
১.নেপোলিয়ন ২. তৃতীয় নেপোলিয়ন
৩. কাসলরি ৪.  মেটারনিক ।
চ) কোন সম্মেলনে ইংল্যান্ড শক্তি সমবায় ত্যাগ করে ?
১. এ-লা-শ্যাপলে সম্মেলনে ২.  ভেরোনার সম্মেলনে
৩. ট্রপোর সম্মেলনে ৪. লুইব্যাকের সম্মেলনে ।
২। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
ক. ইউরোপিয় শক্তি সমবায় বলতে কি বুঝেন?
খ. পবিত্র চুক্তি কি?
গ. চতুঃশক্তি সন্ধি কেন স্বাক্ষরিত হয়েছিল?
ঘ. পবিত্র চুক্তির লক্ষ্য কি ছিল?
ঙ. ট্রপোর ঘোষণাপত্র আলোচনা করুন?
৩। রচনুামূলক প্রশ্ন
ক) ইউরোপীয় শক্তি সমবায় বলতে কি বোঝেন? শক্তি সমবায়ের কার্যাবলী বর্ণনা করুন।
খ) ইউরোপীয় শক্তি সমবায় কি? এর সাফল্য ও ব্যর্থতা আলোচনা করুন ।
গ) ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের ব্যর্থতার কারণ সমূহ আলোচনা করুন?
ঘ) পবিত্র চুক্তি বলতে কি বোঝেন? এর লক্ষ্য ও আদর্শ ব্যাখ্যা করুন? ইহা কেন ব্যর্থ হয়েছিল?
ঙ) চতুঃশক্তিসন্ধির পটভূমি বর্ণনা করুন। ইহার সাফল্য কি ছিল?

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]