বার্লিন সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং শর্তাবলি উল্লেখ কর । বার্লিন সম্মেলনের ত্রুটিসমূহ এবং মূল্যায়ন উল্লেখ কর।

উত্তরা ভূমিকা : ক্র্যাম্বলকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় শক্তিবর্গের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর ফলে ইউরোপের শক্তির ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম ঘটে। তাই ইউরোপের শক্তির ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য জার্মানির বার্লিনে ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যা বার্লিন সম্মেলন নামে পরিচিত।
বার্লিন সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : বার্লিন সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল প্রধানত দুটি যথা :
১. কঙ্গো ও নাইজার নদীকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও নৌ চলাচলের জন্য একক নীতি মাথায় আনয়ন করা, যাতে
কোন রাষ্ট্র এককভাবে কোনকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে।
২. আফ্রিকার ভবিষ্যতে ইউরোপীয় দেশগুলো কর্তৃক সাম্রাজ্য স্থাপনের নীতিমালা প্রণয়ন ।
বার্লিন চুক্তির শর্তাবলি : বার্লিন সম্মেলনের সমর্থনের এবং সিদ্ধান্ত অনুসারে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির শর্তাবলি নিম্নরূপ :
ক. কঙ্গো ও নাইজার নদীকে আন্তর্জাতিক নদী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বলা হয় যে, এ দুটি নদীতে সকল দেশের নৌ
ও বাণিজ্যিক জাহাজ অবাধে চলাচল করবে।
খ. আফ্রিকান দেশে কেউ ঔপনিবেশিক রাজ্য স্থাপন করতে চাইলে তাকে অবশ্যই সে ব্যাপারে বার্লিন সম্মেলনে
অংশগ্রহণকারী দেশসমূহকে অবহিত করতে হবে।
গ. আফ্রিকান দেশে ঔপনিবেশিক রাজ্য স্থাপনকারী শক্তিকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে, পূর্ব থেকে এখানে তার
উপস্থিতি ছিল এবং বর্তমানে স্থিতাবস্থা বজায় আছে। অর্থাৎ আফ্রিকান জনগণ ঔপনিবেশিক শক্তিকে মেনে নিয়েছে। উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, আফ্রিকার দখলকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় শক্তি বর্গের মধ্যে যে উত্তেজনা দেখা দেয় তা প্রশাসনের উদ্দেশ্যই বার্লিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের দ্বারা ইউরোপের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাস পায় ।

বার্লিন সম্মেলনের ত্রুটিসমূহ এবং মূল্যায়ন উল্লেখ কর।


উত্তরা ভূমিকা : স্ক্র্যাম্বলকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় শক্তিবর্গের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ইউরোপীয় শক্তির ভারাসাম্য ঠিক রাখার জন্য জার্মানির বার্লিনে ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যা বাৰ্লিন সম্মেলন নামে পরিচিত।
বার্লিন সম্মেলনের ত্রুটি : নিম্নে বার্লিন সম্মেলনের ত্রুটিগুলো উপস্থাপন করা হলো :
১. যদিও সিদ্ধান্ত হয় কঙ্গো ও নাইজার নদী সব দেশের জাহাজ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কিন্তু এটা বাস্ত
বায়ন করার লক্ষ্যে কোন আন্তর্জাতিক সংগঠন গঠিত হয় নি।
এখানে বলা হয়েছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কথা। কিন্তু বিষয়টি অস্পষ্ট ছিল এবং তা পরীক্ষা নিরীক্ষার কোন ব্যবস্থা করা হয় নি

‘বার্লিন’ সম্মেলন ছিল ইউরোপীয়দের জন্য সুখবর কিন্তু আফ্রিকানদের জন্য দুঃখকর'- ব্যাখ্যা কর।


অথবা, বার্লিন সম্মেলন মূল্যায়ন কর ৷
উত্তরা ভূমিকা : আফ্রিকা মহাদেশে ভবিষ্যতে ইউরোপীয় দেশগুলোর সাম্রাজ্য স্থাপনের নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্য নিয়ে ১৮৮৪ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ১৮৮৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বার্লিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বার্লিন সম্মেলন মূল্যায়ন : অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে সমগ্র ইউরোপে শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর নতুন বাজার, কাঁচামাল, পুঁজি বিনিয়োগ প্রভৃতি কারণে ইউরোপীয় ব্যবসায়ী শ্রেণি আফ্রিকার দিকে দৃষ্টি দেয় এবং সেখানে উপনিবেশ স্থাপনের জন্য তাদের সরকারকে চাপ দেয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সরকারও সাম্রাজ্যবাদী আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে আফ্রিকার দিকে ঝুঁকে পড়ে। ফলে একসাথে ইউরোপের অনেকগুলো দেশ বিশেষ করে ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, পর্তুগাল, ইতালি, স্পেন ও বেলজিয়াম আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের জন্য এগিয়ে যায় এবং ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয় যা ক্র্যাম্বল ফর আফ্রিকা নামে পরিচিত। এ ক্র্যাম্বল নিয়ে ইউরোপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে এবং ইউরোপের শক্তিভারসাম্য ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। এ পরিস্থিতিতে বার্লিন সম্মেলন ডাকা হয়। মূলত ইউরোপের শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য এ সম্মেলন ডাকা হয়। তাছাড়া আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল এ সম্মেলনের। সম্মেলন শেষে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তাতে দেখা যায় যে, আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের আইনগত অধিকার ইউরোপীয়দের দেয়া হয় এবং এর ফলে আফ্রিকা দ্রুত ইউরোপীয়দের উপনিবেশবাদের শিকার হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, বার্লিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় মূলত ইউরোপের শক্তিসাম্য নীতি রক্ষার জন্য এবং আফ্রিকার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য। কিন্তু এ সম্মেলনের মাধ্যমে আফ্রিকা উপনিবেশবাদের শিকার হয়। ফলে বার্লিন সম্মেলন ছিল ইউরোপীয়দের জন্য সুখবর কিন্তু আফ্রিকানদের জন্য দুঃখকর।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]